রোজ ক্যাফে
আমাদের
পছন্দের বেশিরভাগ খাওয়ার জায়গারই সন্ধান আমরা পাই লোকমুখে। সে রাস্তাটাই
নিরাপদ মনে হয়। যে সব বন্ধুর সঙ্গে বইয়ের পছন্দ, সিনেমার পছন্দ, ধ্যানধারণা
ন্যায়নীতির পছন্দ মেলে তাদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার পছন্দও মিলবে, এই ভরসাতেই আমরা
চলি এবং তার পুরস্কারও পাই হাতেনাতে।
রবিবার
সে নিয়ম ভাঙতে হল। মোটামুটি দীর্ঘ প্রবাস সেরে অর্চিষ্মান বাড়ি ফেরার পর ‘কিছু একটা
করা’, ‘কোথাও একটা খাওয়া’র ইচ্ছে আমাদের এমন প্রবল হয়ে উঠল যে হাতের কাছে উল্লেখযোগ্য
রেকমেন্ডেশন না থাকায় আমরা ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হলাম।
স্ক্রিন
থেকে লাফ মেরে চোখে বিঁধে গেল রোজ ক্যাফে-র নাম। দিল্লির হট অ্যান্ড হ্যাপেনিং ফুড
সিনের ‘হিডেন জেম’। যা থাকে কপালে বলে সি আর পার্কের মোড়ের কাছে একখানা চলন্ত অটো থামিয়ে
উঠে পড়লাম।
যাচ্ছি
তো যাচ্ছিই, যাচ্ছি তো যাচ্ছিই। দিল্লির চেহারা বদলাচ্ছে, রাস্তাঘাটের চেহারা বদলাচ্ছে,
দোকানপাটের নাম বদলাচ্ছে। অনেকক্ষণ যাওয়ার পর সাকেত মেট্রো স্টেশন পেরিয়ে আড়াইশো
মিটার মতো এগিয়ে গিয়ে বাঁদিকে মুড়েই একটা খাঁ খাঁ রাস্তা এসে পড়ল। এই রাস্তার
ওপরেই থাকার কথা ‘হিডেন জেম’ রোজ ক্যাফের। হাতে কথা-বলা ম্যাপ বাগিয়ে রেখেও, ঘাড়
অটোর জানালা থেকে যথাসম্ভব বাড়িয়ে রেখেও শেষরক্ষা হল না। শেষটা অটোভাইসাবকে বিদায়
দিয়ে রাস্তার পাশে চেয়ার পেতে বসে থাকা সিকিউরিটি ভাইসাবকে জিজ্ঞাসা করতে হল।
প্রতিক্রিয়া
চমকপ্রদ পাওয়া গেল। আশপাশ থেকে অন্তত পাঁচজন দৌড়ে এসে আমাদের রোজ ক্যাফের
পথনির্দেশ দিতে লেগে গেলেন। বুঝলাম এ কাজটা তাঁরা নিয়মিত করে থাকেন। বুঝলাম জেম হোক
না হোক, রোজ ক্যাফে ‘হিডেন’ নয় কিছুতেই। যদিও লুকিয়ে থাকার চেষ্টা সে করেছে
প্রাণপণ। রাস্তার পাশে একখানা একতলা গোলাপি দেওয়ালের বাড়ি, ছোট একখানা নীল গোলাপের
পাশে ততোধিক ছোট আলপনায় লেখা নাম রোজ ক্যাফে। দরজা ঠেলে ঢুকেই বুঝলাম দোকানের নাম
সার্থক। চারদিকে গোলাপের সাজ, বাতাসেও কেমন একটা গোলাপি গন্ধ মিশে আছে। ছাদ থেকে
ঝুলছে ঝাড়লণ্ঠন, কাঁচের জানালায় দুলছে সাদা লেসের পর্দা। সাদা রঙের পোঁচ দেওয়া
রাস্টিক কেঠো চেয়ারটেবিলে রয়েছে হিপস্টার-স্বর্গ হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি।
রোজ
ক্যাফের পেছনের বাগান। ঝলমলে রোদ্দুর দেখে ভুলবেন না। এখন, এই ভরদুপুরেও ওই বাগানে
বসতে গেলে আপনার হাড়ে হাড়ে ঠোকাঠুকি লেগে যাবে। এতক্ষণ অটোর হাওয়া খেয়ে আমাদেরও হাড়ে
হাড়ে ঠোকাঠুকি লেগে গিয়েছিল, তাই আমরা পত্রপাঠ স্টার্টার অর্ডার দিলাম।
শীতের
সকালে আমাদের পছন্দের স্টার্টার। আমার মসালা চায়, অর্চিষ্মানের ক্যাপুচিনো। গোলাপের
সাজ নেমে এসেছে রোজ ক্যাফের চায়ের কাপের গায়েও।
গা
খানিকটা গরম হওয়ার পর আমরা আসল খাওয়া শুরু করলাম। প্রথমে নেওয়া হল নিরামিষ Mezze প্ল্যাটার।
ঘড়ির ঘোরা মেনে সবথেকে সামনের ও মাঝের ছোট বাটিটায় আছে বাবাগনুশ (আমাদের
বেগুনপোড়ার দুঃখী ভায়রাভাই), তার পাশে তাজিকি নামের দই, অলিভ অয়েল, রসুন, শশাকুচি
ও পার্সলে পুদিনা ইত্যাদি নানারকম ঘাসপাতা দিয়ে বানানো একরকম রায়তা, খেতে অমৃতের
মতো। তার পর রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত হামাস। আর কাসুন্দি খাওয়ার জন্য যেমন লালশাক, এইসব
ভালো ভালো জিনিস খাওয়ার জন্যও প্ল্যাটারে তেমনি রয়েছে ভিনিগারে চোবানো শশা, ফালাফেল নামের মধ্যপ্রাচ্যীয় বড়া,
লাভাশ নামে একরকম আর্মেনিয়ান রুটি (যেগুলো বর্শার মতো উঁচিয়ে রয়েছে) আর তিনকোণা করে কাটা লেবানিজ
রুটি।
লাভাশের
ব্যাপারে বিশদে জানতে গিয়ে একটা ভালো ব্যাপার জানা হয়ে গেল। হেরিটেজ শব্দটা আগে
যতবার শুনেছি বাড়িঘর, জায়গার সম্পর্কেই শুনেছি। বহুদিন আগের রাজাগজাদের বানানো
বাড়ি রাজপ্রাসাদ মন্দির মসজিদ গির্জা নাট্যশালা ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে, কর্তৃপক্ষ
তাকে হেরিটেজ ঘোষণা করলেন। অমনি সে সব বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খাতে লক্ষ লক্ষ টাকার
অনুদান পাস হতে লাগল। চারদিকে পাহারা বসল, যাতে প্রেমিকপ্রেমিকারা নিজেদের নাম না
খোদাই করতে পারে। যাতে গরিব গ্রামবাসীরা সে সব বাড়ির পাঁচিলের ইঁট ভেঙে বিক্রি করে
দু’পয়সা আয় না করতে পারে।
কিন্তু
ঐতিহ্য কি শুধু ভাঙা রাজপ্রাসাদের ইটপাথরের গায়ে লেগে থাকে? মুখের ভাষায়, রান্নার
রেসিপিতে, গানের সুরে থাকে না? আমার মতে তো অনেক বেশি থাকে। আমি বুঝেছি আর ইউনেসকোর
কর্তাব্যক্তিরা সেটা বুঝবেন না সে তো হতে পারে না, তাই তাঁরা ইনটেনজিবল কালচারাল
হেরিটেজের পত্তন করলেন। যে সব ঐতিহ্যকে ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, দিনক্ষণ দিয়ে মাপা
যায় না, যে সব ঐতিহ্য লোকের জীবনে মাখামাখি হয়ে থাকে সে সব ঐতিহ্যকেও সমান মনোযোগে
রক্ষা করার জন্য।
এই
সব ঐতিহ্যের তালিকায় আছে বাংলাদেশের বাউল গান, ভারতবর্ষের আছে আরও অনেক কিছুর
সঙ্গে আছে ছৌ নাচ, আর আর্মেনিয়ার আছে লাভাশ। লাভাশ দেখতেশুনতেবানাতে অনেকটা আমাদের
তন্দুরি রুটিরই মতো। তবে তন্দুরি রুটি বানানোর সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলতে হয়, আর
চাইলে আপনি লাভাশ রুটি আপনি জমিয়ে রেখে দিতে পারেন পাক্কা এক বছর। শুকনো খটখটে হয়ে
যাবে, কিন্তু টসকাবে না। যখন দরকার পড়বে, খানিক জলের ছিটে দিলেই আবার যে কে সেই।
আমার
আর অর্চিষ্মানের খাওয়াদাওয়ার ধরণধারণ এই সব প্ল্যাটারের পক্ষে একেবারে অর্ডার দিয়ে
বানানো। আমি বেগুন বলতে অজ্ঞান, অর্চিষ্মান বেগুন ছোঁয় না, হামাস আমার খেলে ভালো
না খেলে আরও ভালো, অর্চিষ্মান একচামচ হামাস দিয়ে একথালা ভাত মেখে খেতে পারে, ভিনিগারে চোবানো টোকো শশা দেখলেই আমার গা জ্বলে
যায়, অর্চিষ্মান নিজের ভাগেরটুকু খেয়ে আমার ভাগেরটাও মহানন্দে কচমচিয়ে খেয়ে ফেলে।
মেন
কোর্সে আমরা নিয়েছিলাম গ্রিলড ফিশ উইথ লেমন কেপার সস। সঙ্গে ম্যাশড পটেটো আর
তরিতরকারি। কী ভালো, কী ভালো। কাঁটা বেঁধানো মাত্র চাক চাক হয়ে মাছ ভেঙে
যাচ্ছে, একটুখানি লেমন কেপার সস চামচে করে নিয়ে সেটার ওপর ছড়িয়ে মুখে পুরলেই সোজা
স্বর্গ। আমরা অবশ্য শুধু অবশ্য সসেই আবদ্ধ ছিলাম না, তাজিকি আর বাবাগনুশ আর হামাস,
সবকিছুই মাছে মাখিয়ে মাখিয়ে খাচ্ছিলাম। শেষে খেতে খেতে এমন পেট ভরে গেল যে ম্যাশড
পটেটো খানিকটা ফেলে রেখেই উঠতে হল। ডেজার্ট মেনুর লেমন কেক দেখে গোড়াতে যে লোভ
জেগেছিল সেটা পূর্ণ করার আর সাহস হল না।
খাওয়া
শেষ হল যখন তখন ঘড়িতে প্রায় বেলা দু’টো। রোজ ক্যাফের প্রতিটি টেবিল ততক্ষণে ভর্তি।
নাঃ, রোজ ক্যাফেকে কিছুতেই হিডেন বলা যাবে না, তবে জেম বলা যাবে চোখ বুজে। দুপুরের
রোদ ততক্ষণে জানালা দিয়ে আমার পিঠে এসে পড়েছে। আর কিছুক্ষণ বাদে সে রোদের তাপ
কমবে। তার কিছুক্ষণ বাদে ফুরিয়ে যাবে রবিবার। আর তার কিছুক্ষণ বাদেই হইহই করে ঘাড়ের
ওপর এসে পড়বে সোমবার। সে দুর্ঘটনাটাকে যত পারা যায় ঠেকিয়ে রাখার আশায় আমরা আর এক
পট মসালা চায়ের অর্ডার দিলাম। মুখোমুখি বসে সে চায়ে চুমুক দিতে দিতে অর্চিষ্মান কী
ভাবছিল জানি না, আমি খালি ভাবছিলাম, গোটা জীবনটাই কেন এই মুহূর্তটার মতো হয় না?
Archishman da r asar thik ager muhurte r ekta lekha expect korchilam je....:)
ReplyDeleteআমিও ভাবছিলাম লিখব, রাখী। তারপর ভেবে দেখলাম সেই মুহূর্তে যা যা মনে হচ্ছে সবই আমি আগে অবান্তরে লিখে ফেলেছি। কাজেই আর চর্বিতচর্বণ করলাম না ।
Deletesei sweater ta porecho... :)
ReplyDeleteঠিক, ঊর্মি।
DeleteJaaygata sottie opurbo
ReplyDeleteহ্যাঁ। আমাদের আবার যেতে ইচ্ছে করছে অলরেডি।
Deletesweater ta chena :-)
ReplyDeletejaigta to darun ... cup ta khub bhalo dekhte...
হাহা, ঠিক চিনেছেন, ইচ্ছাডানা। দেখুন আমি কেমন কথা রেখেছি। মনে করে সর্বত্র পরে যাচ্ছি। কাপ প্লেটগুলো আমাদের দুজনেরই খুব পছন্দ হয়েছে। এ রকম তো আর দেখা যায় না, বাড়িতেও ব্যবহার করি না। এই দোকানটা থেকে ফিরে কাপপ্লেট কিনতে ইচ্ছে করছে খুব।
DeleteShotti ... eto shundor sweater ta na pore etodin tumi ki kore chile bolo toh. Ki mishti rong ta. Ebaar puro sheetkaal ta jeno eta pore katao ar prochur photo tule rekho. :-)
ReplyDeleteEyi robibaar amrao purono kono jayega e na giye duto notun khabar jayega khuje ber korlam. :-)
হ্যাঁ, সোয়েটারটা শুধু যে ভালো দেখতে তাই নয় শর্মিলা, গরমও খুব। আশা করি তোমাদের নতুন খাওয়ার দোকানের এক্সপেরিমেন্ট সফল হয়েছে।
Deleteআই মাস্ট সে, আপনার দৌলতে দিল্লির অনেক অজানা অচেনা খাবার জায়গার সাথে পরিচয় হয়ে যাচ্ছে। সবগুলো সেরে উঠতে পারিনি, কিন্তু অচিরেই পারবো বলে আশা আছে। থ্যাংক ইউ।
ReplyDeleteদিল্লির ঠান্ডাটা কেমন পড়েছে বলুন দিকি? ঠান্ডা নিয়ে একটা লেখা চাই এবার।
বাপ রে বাপ রে বাপ। কাল (সোমবার) সকালের কুয়াশাটা কেমন হয়েছিল, দেবাশিস? লিখব কি, আঙুল জমে যাচ্ছে তো।
Deleteসত্যি দিল্লি অনেকটা তোমার চোখ দিয়ে দেখে এবং চেখে ফেললাম - thank you !
ReplyDeleteঅল্প বয়েসে কর্মসূত্রে দিল্লি কয়েকবার গেছি, তখন নিরুলাস আর জন্তর মন্তর এতেই আটকে ছিলাম।
আরে ধুর, থ্যাংক ইউ-র কিছু নেই, কাকলি। আমিও দিল্লির চেনা অলিগলিতেই ঘোরাঘুরি করি। নতুন জায়গায় যাওয়াই হয় না।
Delete"বাবাগনুশ (আমাদের বেগুনপোড়ার দুঃখী ভায়রাভাই)"....eita porey heshe goragori khachhi :)
ReplyDeleteসত্যি কি না বল, শম্পা? আমি জীবনে যখন প্রথমবার বাবাগনুশ খেয়েছিলাম, খুব শুনেছিলাম, এটা নাকি ওদের একেবারে সিগনেচার ডিশ, সংস্কৃতির ধারকবাহক ইত্যাদি। প্রথম চামচ মুখে দিয়েই . . . কী আর বলব, হাসিকান্না সব একসঙ্গে পেয়ে গিয়েছিল। হায় রে, এ জিনিস বিশ্বজয় করে ফেলে আর আমাদের বেগুনপোড়া কি না মুখ লুকিয়ে পড়ে থাকে আমাদের ভাতের পাতের এক কোণে? 'বহোৎ না ইনসাফি'-র এর থেকে ভালো উদাহরণ আর হয় না।
Deleteহেইডা বড়ই দূরে মালুম হোতা হ্যায়... কি আর করা যায়গা... আমার বাড়ির কাছে একখান লেবানিজ পাঞ্জাবী দোকানকা পতা চলা হ্যায়। উসমে লেবানীজ মুর্গ মাখনি মিলতা হ্যায়। কেয়া পোতা কেয়া হ্যায়। বইমেলা শেষ হোনে কে বাদ দেখেঙ্গে...
ReplyDeleteবইমেলার জন্য অনেক অল দ্য বেস্ট রইল, সৌরাংশু। লেবানিস মুর্গ মাখনি নিশ্চয় খেতে অপূর্ব হবে। খেয়ে জানাবেন প্লিজ।
Deleteeta to sei sweater ta. ei khawa dawa post gulo porte amar darun lage. tomar post pore ajkal amar dilli thakte icche kore.
ReplyDeleteচলে এস, চলে এস, কুহেলি। দিল্লি ভালো জায়গা।
Deleteএই খাবারগুলো আমার বেশ ভালই লাগে জানো ? মিসেস বাগলিকে তো ফোন করেই ফেলেছি । এখানেও যাব ।
ReplyDeleteতুমি আমার একটা বিরাট সোর্স জানো তো ? ভিভা ও ভিভাতেও ঘুরে কাঁকড়া কড়মড়িয়ে এসেছি ।
মিঠু
বাঃ বাঃ মিঠু। কারও কোনও কাজে লাগতে পেরেছি জেনে ভালো লাগছে। বাগলিতে কবে খেতে যাচ্ছ?
Deleteabantor porar onek +ve effect poreche amar.. ami age khub e khadyo berosik hosabe porichito chilam.. kal obantor pore r chobi dekhe ajkei grilled fish with lemon caper sauce khelam.. :)
ReplyDeleteভেরি গুড, ঊর্মি। কেমন লাগল?
Deletese to hebbi laglo... amader mashed potato deyni.. mota mota french fry diyechilo..baki sob same.. majhe majhei ota khabo bhabchi.. :)
ReplyDeleteতোর কথা জানি না, আমার ম্যাশড-এর থেকে ভাজাই বেশি পছন্দ।
Deletekuntala toke apurbo lagche dekhte :) besh rose cafe r manansoi :) - tinni
ReplyDeleteমন খুশি করে দিলি, তিন্নি।
DeleteHigh five to grilled fish and hummus :) lebanese food durdanto lage. tomar ei delhi r khawa-dawa r post gulo porlei mone hoy ekhuni chole jai r kheye asi..- Bratati.
ReplyDeleteহাহা, গুড ব্রততী। দেশে এলে সময় করে দিল্লি ঘুরে, খেয়েদেয়ে যেও।
Delete