পোয়্যারোর শতবর্ষে
অক্টোবরে দুটো জিনিসের শতবার্ষিকী ছিল। একটা জন্মদিন। একটা আত্মপ্রকাশ। উনিশশো কুড়ির অক্টোবরে জন্ম নিয়েছিলেন এরক্যুল পোয়্যারো, আর বহু রিজেকশন পার হয়ে প্রথম উপন্যাস 'দ্য মিস্টিরিয়াস অ্যাফেয়ার অ্যাট স্টাইলস' সহকারে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন আগাথা ক্রিস্টি।
আমার পক্ষে প্রথমটার থেকে দ্বিতীয় উপলক্ষ্যটা উদযাপন করা বেশি স্বাভাবিক। আফটার অল, আগাথা ক্রিস্টি আমার প্রিয়তম লেখক আর পোয়্যারো প্রিয় গোয়েন্দার লিস্টে প্রথম তিনেও আসবেন না। টিভিতে ডেভিড সুশে আর রেডিওতে জন মোফ্যাট না থাকলে পোয়্যারোকে ও লিস্টে খুঁজে পাওয়া যেত কি না সন্দেহ।
তবু জন্মদিনটা উদযাপন করছি, কারণ পোয়্যারো আমার ঘরের লোক। আমার মনের ভেতর গোয়েন্দাগল্পের যে পার্মানেন্ট ঘরখানা আছে, যে ঘরের জানালার ওপাশে সর্বদাই সন্ধে নয়তো মেঘলা দিন, মাঝে মাঝে ছিটে, মাঝে মাঝে ঝমঝম, গ্যাঙর গ্যাং গ্যাঙর গ্যাং। জানালা ঘেঁষে খাট, চেয়ার হলে এমন বড়সড় যাতে পা মুড়ে বসা যায়। হাতের কাছে কাপভর্তি চা, মন্ত্রবলে কখনও ঠাণ্ডা হয় না। ত্রিসীমানায় জনমানুষ নেই, খালি আমি আর বত্রিশ ক্যালিবারের বন্দুক, চকচকে ছোরা, ডিজিটালিসের খালি শিশি, ঠোঁট গড়িয়ে একফোঁটা রক্ত আর দৃষ্টিতে অবিশ্বাস...
ওই ঘরটায় পোয়্যারো আমার ঘরের লোক।
কাজেই তার একশো বছরের জন্মদিন পালন করতে হয়। আর জন্মদিন কী ভাবেই বা পালন করতে পারি? আপনার ডিমের মতো মাথা, পালিশ করা গোঁফ, সাড়ে পাঁচ ফুটের কম (পাঁচ চার, টু বি প্রিসাইজ) হাইট আমার সন্দেহ উদ্রেক করে তো বলা যায় না। বললে সেটা সত্যবচনও হয় না। কারণ ভালো লাগা না-লাগায় বাহ্যিক দেখাশোনার ব্যাপারটা শেষমেশ খুব একটা কাজে দেয় না। টেড টক মার্কা শুনতে লাগলেও কথাটা সত্যি। না হলে আমার চেনা বেশিরভাগ লোককেই প্রেম করে খেতে হচ্ছিল না।
যেটা কাজে লাগে তা হচ্ছে স্বভাবচরিত্র। ঘুষ দেয় এবং নেয় কি না, পচা চুটকি বলে কি না, নিজেকে ছাড়া আর কাউকে নিয়ে ভাবে কি না। ওয়েল, সে দিকেও পোয়্যারোর অসুবিধে নেই। ঘুষটুস নেন না, ছোঁকছোঁকানি নেই, বন্ধুদের যে রেটে রেঁধে খাওয়ান কিপটে বলেও মনে হয় না, কিন্তু সব এসে ডুবে মরেছে মেগালোম্যানিয়ায়। ওই লেভেলের মেগালোম্যানিয়া গল্পের বইয়ের পাতাতেই ভালো। কস্তূরী-মৃগ টাইপটা পুরুষ, নারী, নন-বাইনারি নির্বিশেষে সমান অনাকর্ষণীয়।
দেখেছেন, সেই নিন্দে করে ফেলছি। আর বেশি কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। তার থেকে ঢের সেফ হবে, "বিশ্ব গোয়েন্দা সাহিত্যে এরক্যুল পোয়্যারোর তাৎপর্য" লাইনে রচনাটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বা আমার প্রিয় পোয়্যারোর পাঁচটি গল্পের লিস্ট বানানো।
কিন্তু কোন গল্প? রহস্যসাহিত্যে পোয়্যারোর উপস্থিতি ঘটেছে নভেলে, নাটকে, ছোটগল্পে। শুধু ঘটেনি, ঘটেই চলেছে। দু'হাজার পনেরো থেকে শুরু করে পোয়্যারোর চার নম্বর প্যাস্টিশ উপন্যাস বার করেছেন সোফি হ্যানা এই বছরেই - The Killings at Kingfisher Hill, যেটা আমি আজই পড়তে শুরু করছি, শেষ হলে আপনাদের জানিয়ে দেব কেমন লাগল। (শেষ করলাম সবে। নির্দ্বিধায় আমার ২০২০ তে পড়া ওয়ার্স্ট বই। বসে পড়া যায় না। বিশদ নিন্দেমন্দ পরে আসছে।)
পোয়্যারোর উপন্যাস বহুলচর্চিত। মার্ডার অফ রজার অ্যাকরয়েড, এ বি সি মার্ডারস, মিস্টিরিয়াস অ্যাফেয়ার অ্যাট স্টাইলস, মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস - সবই গোয়েন্দাসাহিত্যের আকাশে তারার জায়গা নিয়েছে। সে সব গল্প নিয়ে কত সিনেমা বানানো হয়েছে, আরও কত হবে। পোয়্যারোর ছোটগল্প নিয়েও একসময় একধারসে টিভিতে পর্ব বানানো এবং সম্প্রচার চলেছে। আপনারা যারা একটু সেকেলে ছবি, অভিনয়, কথাবলা, সাজপোশাক, স্ক্রিপ্ট, হাঁটাচলা (অভিনেতা এবং ক্যামেরা দুজনেরই) ভালোবাসেন নির্ঘাত দেখতে পছন্দ করবেন। আমার এই লিস্টে আমি সেই সব পর্বগুলোর (ইউটিউবে যা আছে) লিংক জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করব)।
তবু উপন্যাসের তুলনায় ছোটগল্পগুলো নিয়ে, আমার মতে, চর্চা কম হয়েছে।
কেন হয়েছে সে নিয়ে রহস্য নেই। বুকের ভেতর আমার যে গোপন ঘরটার গল্প বললাম, ওই ঘরটা অনেকের বুকের ভেতরেই আছে। আফটার অল, বিশ্বসাহিত্যের শ্রেণীবিভাগে গোয়েন্দাগল্প জনপ্রিয়তায় ফার্স্ট। অনেকে বলে ফার্স্ট নাকি রোম্যান্স, আমার বিশ্বাস হয় না। খুনখারাপির সামনে প্রেমভালোবাসা? কে জানে বাবা। যাই হোক, সে স্বপ্নের ঘরে ষাট হাজারি গল্প নিয়ে সে ঘরে ঢুকে দরজা দেওয়ার যা আরাম, পনেরোশো শব্দের একখানা গল্প সে আমেজ দিতে অক্ষম হবে, বলাই বাহুল্য।
তাছাড়াও ছোটগল্পের আরও অনেক অসুবিধে আছে, যেগুলো সম্ভবতঃ আগে উল্লেখ করেছি। প্রথমত, বেশিরভাগ গোয়েন্দাগল্পই কমবেশি গোঁজামিল থাকে, (হ্যাঁ, ক্রিস্টির গল্পেও) ষাটহাজারি গল্পে সে সব গোঁজামিলগুলো অন্য মালমশলা দিয়ে চাপাচুপি দেওয়া যায় বা পাঠকের সে গোঁজামিল অগ্রাহ্য করতে সুবিধে হয়। অনেকগুলো চরিত্র থাকে - তারা চলে, বলে, প্রেম করে। ধাঁধার খামতি অগ্রাহ্য করতে বেশি খাটনি হয় না।
নাম করছি না, কিন্তু পোয়্যারোর একটি ছোটগল্পের দাবি হচ্ছে একজন নিজের বাড়ির সিন্দুক হাতুড়ি ঠুকে ভাঙার আওয়াজ আওয়াজ চাপা দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ মিউজিক্যাল পিস গ্রামোফোনে চালাতেন। সেই পিসের মাঝে মাঝে একেকটা প্রকাণ্ড দুম দুম বিট থাকত। দুষ্কৃতী হাতুড়ি উঁচিয়ে তক্কে তক্কে থাকত ওই বিটের তালে তালে হাতুড়ির বাড়ি মারবে বলে।
লেখার খামতি চাপা দিতেও স্বাস্থ্যবান গল্প অধিক কার্যকরী। অনেকগুলো চলনসই বাক্যের মধ্যে একটা দুটো বিতিকিচ্ছিরি বাক্য লুকোনো সোজা, চোখে পড়ে গেলে পাঠকের পক্ষে উপেক্ষা করাও। কোনও একটা ক্লু পেলে নাকি পোয়্যারোর চোখের মণির রং সবুজ থেকে সবুজতর হয়ে উঠতে থাকে। এটা ক্রিস্টি অম্লানবদনে লিখে গেছেন। বারবার লিখে গেছেন। ফেলুদা যখন চুপ করে যায় তোপসে বোঝে যে সমাধান আর দূরে নেই, তেমনি পোয়্যারোর চোখ যখন সবুজ থেকে সবুজতর হয়ে ওঠে হেস্টিংস বোঝে এইবার মিটিং ডাকার সময় হয়েছে।
কিন্তু ছোটগল্প, বিশেষ করে ক্রিস্টির এবং পোয়্যারোর ছোটগল্পের অনেক ভালো দিকও আছে। প্রথম কারণটা যে কোনও ছোটগল্পের ক্ষেত্রেই খাটে। সম্ভবতঃ রমাপদ চৌধুরীর ছোটগল্পের সংকলনের শুরুতেই লেখা ছিল, সেনাবাহিনী যুদ্ধ জিতে এলে কাড়ানাকাড়া বাজানো সে মিছিলের কথা লিখবেন ঔপন্যাসিক আর জানালায় দাঁড়ানো মিছিলে কাউকে খুঁজে চলা একজোড়া চোখের কথা লিখবেন ছোটগল্পকার।
আমি ক্রিস্টির ছোটগল্পে অত মহত্ব আরোপ করার দাবি জানাচ্ছি না, শুধু বলতে চাইছি, যে সব প্রেক্ষাপট আদতে ভীষণ তুচ্ছ বলে মনে হয়, সেগুলো নিয়ে ক্রিস্টি নিয়মিত ছোটগল্প লিখেছেন। লন্ডনের আগুনদাম প্রপার্টি মার্কেটে হঠাৎ জলের দরে একখানা ফ্ল্যাট বাগিয়েছে রবিনসন দম্পতি - প্রাইম লোকেশন, টিপটপ কন্ডিশন। এটাও কি একটা রহস্য হতে পারে? আমি বলব, এর থেকে বড় রহস্য কীই বা হতে পারে? আমার আর অর্চিষ্মানের প্রথম যুগল বাড়িতে ট্রেনের কুপের মতো দুটো ঘর আর জুতোর বাক্সের সাইজের রান্নাঘর বাথরুমে আমরা যে ভাড়া দিয়ে থাকতাম তার থেকে পাঁচহাজার টাকা বেশি দিয়ে আমার কলিগ, পাশের ব্লকে তিনরুমওয়ালা একটা গোটা তলা নিয়ে থাকত। রহস্য বৈকি। নেহাত আমার উদ্যম নেই তাই কেঁচো খুঁড়তে নামিনি, কিন্তু পোয়্যারো নেমেছেন এবং কী আবিষ্কার করেছেন? প্যাসিফিকের এপারওপার মেলানো একটি আন্তর্জাতিক মাফিয়াচক্র। আমার এ জীবনের প্রিয়তম গোয়েন্দা মিস মার্পলের কেরিয়ারও শুরু হয়েছিল বদলে যাওয়া কাশির গুলি, হারিয়ে যাওয়া টুপি, চুরি হওয়া মাছ/মাংসের পিস ইত্যাদি রোমহর্ষক রহস্যের - যেগুলো পুলিস পর্যন্ত পৌঁছবে না, পৌঁছলেও তারা রহস্যবুভুক্ষু লোনলি স্পিনস্টারের কপোলকল্পনা বলে হেসে ওড়াবে - সাফল্যের সঙ্গে সমাধান করা দিয়ে। ধাপে ধাপে উঠে শেষে খুন।
কাজেই এই পোস্টে আমি আমার পছন্দের পোয়্যারোর ছোটগল্প নিয়ে আলোচনা করব। পছন্দের, সেরা নয়, কারণ তিনমাস বাদে গল্পগুলো পড়তে বসলে অন্য আরেকটা সেরা মনে হবে, হবেই। বাছাবাছির জন্য রয়েছে তেরোটার মতো সংকলনে পঞ্চাশটার বেশি ছোটগল্প। একান্নটা, টু বি প্রিসাইজ।
একটা কথা বলে রাখা দরকার, আগাথা ক্রিস্টির মাথাতেও বা কত আর আইডিয়া আসবে, কাজেই এই একান্নটা গল্প একান্নটা মৌলিক আইডিয়া নিয়ে তৈরি নয়। থিমের কথা যদি ছেড়েও দিই, অর্থাৎ কি না, পুরোনো পাপের প্রত্যাবর্তন, প্রতিশোধ, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ইত্যাদি বাদ দিয়েও প্লট প্রেক্ষাপটেরও পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
তারপর ধরুন, একই প্লট নিয়ে ছোটগল্প এবং নভেল দুইই লেখা। এটা অনেক লেখকই করে থাকেন, কেন করেন সে বিষয়ে একটা থিওরি অনেকেই দিয়ে থাকেন - সেটা হচ্ছে যে এটা আগে থেকে জানা খুব শক্ত যে কোন প্লট কতখানি টানা যাবে। সাজিয়েগুছিয়ে বললে - কোন প্লট আশিহাজারের একটা উপন্যাস ঠ্যাকনা দিতে পারবে আর কোন প্লট হাজার পায়ে ধরলেও দুশো শব্দের ফ্ল্যাশ ফিকশনের বাইরে বেরোতে পারবে না - এটা লিখতে বসার আগে জানা শক্ত। অনেক সময়েই নির্ঘাত এমন হয়েছে যে ছোটগল্প লিখে সম্পাদকের কাছে পাঠিয়েও ক্রিস্টির মাথায় গল্পটা ঘুরছে, নতুন চরিত্ররা উঁকি দিচ্ছে, প্লটের কোন শাখা থেকে আরও প্রশাখা বেরিয়ে প্লটকে আরও ঘুলিয়ে তুলতে পারে সে সম্ভাবনা আকার নিচ্ছে। (এইজন্যই বেশিরভাগ সময়েই লেখকরা নিজের ছোটগল্পের প্লট নিয়ে পরবর্তীকালে উপন্যাস লেখেন, উপন্যাসের প্লট কেটে ছোটগল্প হিসেবে রিসাইক্লিং দেখা যায় না।)
ক্রিস্টির একাধিক ছোটগল্প পরে উপন্যাসের চেহারা নিয়েছে। ট্রায়াংগল অ্যাট রোডস হয়েছে ইভিল আন্ডার দ্য সান। দ্য সেকেন্ড গং-এর বন্ধ ঘরে মৃত্যুর প্লটটি নিয়ে ক্রিস্টি পরে খেলিয়ে লিখেছেন ডেড ম্যান'স মিরর। হাউ ডাজ ইয়োর গার্ডেন গ্রো-র চমৎকার প্লট পরবর্তীকালে হ্যালোউইন পার্টি নামক উপন্যাসে পর্যবসিত হয়েছে। কাল ইউটিউবে নাটক শুনতে শুনতে মনে পড়ল পোয়্যারোর ইয়েলো আইরিস ছোটগল্পের প্লট নিয়ে ক্রিস্টি পরে লিখেছেন দ্য স্পার্কলিং সায়ানাইড উপন্যাস। শুধু যে আকার বদলেছে তাই নয়, গোয়েন্দা হিসেবে পোয়্যারোর চাকরি পর্যন্ত গেছে।
যাই হোক, অনেকে অবান্তর কথা হল এবার আমার পছন্দের পোয়্যারোর ছোটগল্পে আসি। একান্নটা থেকে পাঁচটায় নেমে আসা সোজা ছিল না, আবার খুব একটা শক্তও ছিল না। কিডন্যাপিং অফ প্রাইম মিনিস্টার, জুয়েল রবারি অ্যাট দ্য গ্র্যান্ড মেট্রোপলিটান এই সব গল্প নিয়ে আমি মাথা ঘামাইনি গোড়া থেকেই। কারণ আমি জানি এগুলো তালিকার নিচের দিকেই থাকবে। পুরোটা যে মলাট দেখেই বই বিচার তা নয়, খানিকটা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গিয়ে নিশ্চিত হওয়া সত্য। হোমরাচোমরা রাষ্ট্রপিতারা কোভিডেই ভুগুন বা কিডন্যাপডই হোন, আমি সমব্যথী হতে পারি না। ওগুলো দামি পদ আর দামি গৌরবের নেগেটিভ এক্সটার্নালিটি বলে ধরে নিই। আর গয়নাগাঁটি হার চুরি গেলে প্রথমেই যে ভাবনাটা আসে সেটা হচ্ছে, কিনেছিস কেন অত দামি মুক্তোর হার এবার বোঝ। হ্যাঁ, যে সব বাড়িতে মোরাম বিছোনো রাস্তায় গাড়ি এসে দাঁড়ায় আর ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে লোকজন নেমে আসে আর উঁচু চিমনি দিয়ে ধোঁয়া বেরোয়, সে সব বাড়ির ভেতর ফাঁদা খুনখারাপির গল্প আমার পড়তে ভালো লাগে বটে, কিন্তু ভালোলাগা দ্বিগুণ হয়ে যায় সে বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বসে পড়তে থাকলে। বড়মানুষির চালের থেকে একদা-বড়মানুষির কারুণ্য একশোগুণ বেটার। আমার যত কৌতূহল কার উৎকট রসবোধ এবং পয়সাওয়ালা ঠাকুরদা উইল লুকিয়ে রেখে গেছেন, কার কুকুর চুরি গেছে, কে রাগের মাথায় প্রতিবেশীকে খুন করে ফেলেছে এই সবে।
তারপর ধরা যাক প্রগতিশীলতার ব্যাপার। আমার মতে ক্রিস্টি ছোটগল্পে, উপন্যাসের তুলনায় অনেক সাহসী এবং উদার। বয়স্ক মহিলার সঙ্গে অল্পবয়সী পুরুষের শারীরিক সম্পর্ক জাতীয় বিষয় ক্রিস্টি তাঁর ছোটগল্পে অবলীলায় তুলে এনেছেন। ক্রিস্টির উপন্যাসের তুলনায় ছোটগল্পে এমন মহিলারা অনেক বেশি সংখ্যায় এসেছেন যারা কারও মা, দিদিমা, পিসিমা, মেয়ে, বোন, ননদ, নাতনি নন। আরও যেটা চমকপ্রদ সেটা হচ্ছে মহিলাদের জীবনের যে সম্পর্কটা নিয়ে গোয়েন্দাগল্প তো ছেড়েই দিলাম, অন্যান্য শিল্পকর্মও আতসকাঁচ দিয়ে খুঁজলে পাওয়া যাবে না, অর্থাৎ কি না বন্ধুত্ব, সেটাকে কেন্দ্রে রেখে ক্রিস্টির রহস্যবিস্তার। যেমন ধরা যাক নিচের গল্পটা।
Murder in the Mews: এমন ধরতাই দিয়ে শুরু করলাম যেন গল্পে এমপাওয়ারড এবং বন্ধুবৎসল নারী আছে বলে গল্পটা আমি রেকমেন্ড করছি। সেটা সত্যি নয়। গল্পটা আমি রেকমেন্ড করছি কারণ এটা আমার ভীষণ প্রিয় একটা গল্প। একেবারে শুরুর সিন থেকে। গাই ফক্স নাইটে, আতসবাজির সশব্দ উদযাপনের মধ্যে দিয়ে পোয়্যারো, হেস্টিংস আর ইন্সপেক্টর জ্যাপ বাড়ি ফিরছেন আর বলাবলি করছেন, এই দুমদামের মধ্যে যদি শব্দবাজির মধ্যে যদি একটা গুলি চলেই আর একটা খুন হয়েই যায় তাহলে টের পাওয়া শক্ত। পরদিন সকালে ফোনে খবর আসে। কী খবর, সেটা আমার মতো আনাড়ি গোয়েন্দাগল্প পাঠক, যে প্রথম প্যারাগ্রাফে খুনীর নাম লিখে দিলেও লাস্ট পাতা পর্যন্ত টের পায় না কে খুন করেছে, সেও আন্দাজ করতে পারবে।
তারপর বিবিধ প্যাঁচ, খুন না আত্মহত্যা, ডানহাতি না বাঁহাতি, ব্লটিং পেপারে ছিঁড়ে ফেলা চিঠির আবছা স্মৃতি, ব্ল্যাকমেল। রোমহর্ষের হেস্তনেস্ত। আপনারা নির্ঘাত পড়েছেন, না পড়লে অবশ্য করে পড়বেন আর এই রইল নিচে ইউটিউব ওই এপিসোডের লিংক।
The King of Clubs: লোকে সিনেমায় নামলে বাঁকা চোখে তাকায়, আমার মতে কেউ সিনেমা প্রোডিউস করতে নেমেছে শুনলে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত, প্রোডিউসারদের যা ট্র্যাক রেকর্ড। ক্রিস্টির সময়েও তাঁরা একই রকম বদের বাসা ছিলেন বোঝা যাচ্ছে। এবং সে রকম একজন বদের বাসা সিনেমা-প্রযোজক খুন হন। যেহেতু বদের বাসা, শত্রু এবং সাস্পেক্টের অভাব নেই।
স্পটে একজন সেলেব্রিটি হিরোইনকে পাওয়া যায়। হিরোইনকে সন্দেহমুক্ত করার দাবি নিয়ে তাঁর দয়িত হোমরাচোমরা রাজপুরুষ পোয়্যারোর দ্বারস্থ হন কারণ হিরোইন যতই প্রতিভাবান, সুন্দরী হোন না কেন, স্ক্যান্ডালের স-এর আঁচ পাওয়া গেলে রাজপরিবারের বধূ হিসেবে তাঁর অ্যাপ্লিকেশন বাতিল হয়ে যাবে।
পোয়্যারো লাফিয়ে রাজি হন। একা পোয়্যারোকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, অধিকাংশ লেখকই নিজেদের গোয়েন্দাদের বড়মানুষদের সংসর্গে ফেলতে পারলে বর্তে যান। শার্লক হোমসও গোড়াতে এমন গা মোচড়ান যেন কে কোথাকার প্রাইম মিনিস্টার, দেশেরদশের কোথায় যুদ্ধই লাগল কি বোমাই পড়ল সে ব্যাপারে তিনি আগাপাশতলা ডিসইন্টারেস্টেড, কিন্তু ওয়াটসন একটু দেশপ্রেমের পালক ছোঁয়াতেই যে রকম লাফিয়ে রাজি হয়ে যান, সন্দেহজনক ঠেকে। আমাদের দেশী গোয়েন্দারাও সরকার বাহাদুরের তরফ থেকে রহস্যসমাধানের বরাত পাওয়াকে অসামান্য গৌরব বিবেচনা করেন।
স্পটে পাওয়া গেছে বললাম বটে, কিন্তু হিরোইনকে আসলে পাওয়া গেছে প্রোডিউসারের বাড়ির বাগান পার করে প্রতিবেশীর বাড়িতে। বডি আবিষ্কার করে ভয় পেয়ে দৌড়ে নায়িকা যে বাড়ির দরজা ধাক্কিয়েছেন। বাড়ির লোকজন বসে তাস খেলছিলেন, পুলিসে খবর দিয়েছেন।
পোয়্যারোর এই গল্পটা, ক্রিস্টির বেশ কিছু গল্পের মতো, অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে শেষ হয়। এ ঘটনা গোয়েন্দাসাহিত্যে অমিল নয়। সম্প্রতি হইচই সাইটে একটি গোয়েন্দা সিরিজ দেখলাম, সেখানেও একই ঘটনা। একসময় আমার শরীরে মায়াদয়া বেশি ছিল, আইনকে কাঁচকলা দেখানোতে বিচলিত হতাম না। এখন হই। আইনের প্রতি আনুগত্য বেড়েছে বলে নয়, হই কারণ লেখকের সিদ্ধান্তের নেপথ্যের কারণটা ধরতে পারি বলে। কারণ হল পাঠকদের অনুভূতিতে আঘাত না দেওয়া জনিত অতিরিক্ত সতর্কতা। যে খুন হয়েছে গোড়াতে যদি তাকে দানব করে দেখানোর ভুল করে বসা হয়, তাহলে তার খুনীকে শাস্তি দিতে অনেক স্রস্টারই বুক কাঁপে। ফল, অপরাধী বেকসুর খালাস। (বাই দ্য ওয়ে, প্লট ফেঁদে প্রমাণের ক্লু জোগাড় করতে না পেরে বা ছাড়ান দিয়ে, লেখক গোয়েন্দাকে দিয়ে বুক ফুলিয়ে বলিয়েছেন যে, "প্রমাণের অভাবে অপরাধীকে ছাড়ান দিলাম" তেমনও মাঝেসাঝে ঘটেছে। যেমন পোয়্যারোর ছোটগল্প The Cornish Mystery, শার্লক হোমসের A Case of Identity।)
The mystery of Hunter’s lodge: এই গল্পটা আমার যে কারণে বিশেষ পছন্দের তার সঙ্গে যে কারণে আমার প্রাইম মিনিস্টারদের কিডন্যাপিং জাতীয় গল্প পছন্দ না তার মিল আছে। রাষ্ট্রপিতারা ব্যস্ত মানুষ, এক জায়গায় বসেন না আর ওঁদের খুঁজে বার করতে গোয়েন্দাকেও হিল্লিদিল্লি দৌড়ে বেড়াতে হয়। আমি কুঁড়ে মানুষ, একই শহর কিংবা গ্রাম কিংবা কাউন্টি (মিডসমার মার্ডারস) বা বাড়ির ভেতর বসে বসে সব খুনখারাপি তদন্ত সব সেরে দেওয়া গেলে বেঁচে যাই।
গ্রামদেশে বড় বাড়ির ধেড়ে খোকারা বন্দুক কার্তুজ নিয়ে পাখি মারা-পাখি মারা খেলতে গিয়েছিলেন, একজন, দলের হোতাই বলা যায়, খুন হয়েছেন। অধিকাংশ হোতাদের মতো ইনিও বিরক্তিকর এবং বাজে লোক ছিলেন কাজেই সাস্পেক্ট থিকথিক।
এদিকে পোয়্যারো ভুগছেন ইনফ্লুয়েঞ্জায়। ঠিক হল হেস্টিংস ওঁর হয়ে তদন্ত চালাবে। তদন্ত করতে নেমে হেস্টিংস প্রচুর হাসালেন এবং শেষমেশ পোয়্যারোর আশ্চর্য বুদ্ধিবলে রহস্য সমাধান হল। ফাউ হিসেবে পোয়্যারো একটি চুরি যাওয়া সাইকেলও খুঁজে দিলেন। ছোটগল্পেও সাবপ্লট রাখা, একমাত্র ক্রিস্টির পক্ষেই সম্ভব।
চিত্ররূপে গল্পটা সামান্য বদল হয়েছে, পোয়্যারোকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তারপর জ্বর আনানো হয়েছে। কাজেই হরেদরে সেই একই হল। পোয়্যারো শুয়ে শুয়ে তদন্ত করলেন আর আমার গল্পটার প্রতি ভালোবাসা একই রকম রইল।
Four and Twenty Blackbirds: এই গল্পটার কথা যতবার মনে পড়ে ততবার আমার কেন যেন ধারণা হয় যে গল্পটা আসলে উপন্যাস, ছোটগল্প নয়। একই ভুল বারংবার ঘটার কারণ কী? একটা হতে পারে যে এই গল্পের একটা গোড়ার ঝামেলা, দুই থুত্থুড়ে বুড়োর কে আগে মরেছে এবং সেই বুঝে উইলের ভাগবাঁটোয়ারা এবং খুনের মোটিভ ইত্যাদি নির্ধারণ - ডরোথি সেয়ার্সের The Unpleasantness at the Bellona Club উপন্যাসেরও মূল গোলযোগ। বুক ছ্যাঁত করে উঠল। দৌড়ে দেখতে গেলাম। সেয়ারসের উপন্যাস বেরিয়েছিল উনিশশো আঠাশে, আর ক্রিস্টির উপন্যাস বই না হলেও একটি ম্যাগাজিনে ছেপে বেরিয়ে গিয়েছিল উনিশশো ছাব্বিশেই।
আমি কিন্তু সেয়ারসকে কটাক্ষ করছি না। একেবারেই না। পাঁচ পাতার গল্পের আইডিয়া চুরি করে দুশোর বেশি পাতার উপন্যাস নামানো যায় না। তাছাড়া গল্পের আইডিয়া যে কপিরাইট করা যায় না সেটার যুক্তিগ্রাহ্য কারণ আছে। একই আইডিয়া নিয়ে লোকে স্বর্গের মতো ভালো আর নরকের মতো পচা গল্প লিখে ছেপেছে, এমন উদাহরণ ভূরিভূরি আছে। তাছাড়া প্লট চুরির থেকে অনেক বেশি আপত্তিজনক প্র্যাকটিস সাহিত্যে দিবারাত্র চলে। অনেকে তো অন্যের জিনিস চুরি করার পরিশ্রমটুকুও করেন না। নিজেকেই নিজে টুকতে থাকেন এবং সারাজীবন হয় দেশভাগ, নয় বঞ্চিত বড় ছেলে, নয় দুখিনী মা, নয় নারীস্বাধীনতা, নয় কবির বোহেমিয়ানতা নিয়ে শিল্পসৃষ্টি চালিয়ে যান। এই সব বড় বড় পুকুরচুরি নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই, যত লাফালাফি প্লটের বেলায়।
এই ছোটগল্পের শুরুটাও একটা অসামান্য ছেঁদো রহস্য দিয়ে। বাই দ্য ওয়ে, সবাইকে বলে রাখছি, আপনাদের কারও সঙ্গে যদি কোনওদিনও সারাভানা ভবনে যাওয়ার উপলক্ষ আসে আর যদি আমি প্লেন দোসার বদলে অন্য কিছু অর্ডার করি, তৎক্ষণাৎ পুলিস ডাকবেন। ওটা আমি না। পোয়্যারোও একদিন সন্ধেবেলা বন্ধুর সঙ্গে ডিনারে গেছেন আর পরিবেশক এসে বলতে লেগেছেন যে লোকের ধারাবাহিকতায় আজকাল ভয়ানক টান পড়েছে, এই যেমন ওই কোণের টেবিলের বুড়ো থুত্থুড়ে ভদ্রলোক চল্লিশ বছর ধরে একই দিনে একই সময়ে রেস্টোর্যান্টে হাজির হয়ে একই পদ অর্ডার করে খাচ্ছেন, হঠাৎ এই আগের সপ্তাহে একটা অন্য দিনে এসে, অন্য টেবিলে বসে, মেনু বেছে সম্পূর্ণ অন্য পদ খেয়ে মুখ মুছে, টাকা দিয়ে বেরিয়ে গেছেন। আজও এসেছেন। ভুল দিন, ভুল টেবিল, ভুল অর্ডার।
পোয়্যারো উপযাচক হয়ে রহস্য সমাধানে নেমেছিলেন। বুড়োর দরজার সামনে দেখতে পেয়েছিলেন নিউজ পেপার আর দুধের বোতলের ঢিবি। বাকিটুকু পড়ে নিতে পারেন, বা নিচে দেখে নিতেও।
Wasps' Nest: এই গল্পটা রাখছি আমার লিস্টে কারণ এটা একটা ভারি স্পেশাল কেস। গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে একটি ত্রিকোণ প্রেম, যেটা নিতান্ত হরেদরে। প্রেমটা হরেদরে নয়, হরেদরে হল ত্রিকোণ প্রেম কেন্দ্রে রেখে গল্প লেখার জরাজীর্ণ আইডিয়াটা। ক্রিস্টির রহস্যসম্ভারে ত্রিকোণ প্রেমঘটিত আমার আপাতত দুটো গল্পের কথা মনে পড়ছে, এই ওয়াস্প'স নেস্ট আর প্রবলেম'স অ্যাট পোলেন্টা বে, তবে আরও থাকতে পারে। ওইরকম প্রোলিফিক কেরিয়ারে দু'তিনটে ত্রিকোণ প্রেম অগ্রাহ্য করাই উচিত। যাই হোক, ওয়াসপ'স নেস্ট-এর ত্রিভুজের তিন বিন্দুতে রয়েছেন একজন চোখঝলসানো মডেল মহিলা, মহিলার মারাত্মক সিরিয়াস (হয় প্রফেসর নয় লেখক, এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না) দয়িত এবং গুড ফর নাথিং প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড। পোয়্যারো ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন, খুনী ধরতে নয়, খুন আটকাতে, আর এটাই এই গল্পের তুরুপের তাস। একটা খুন যে ঘটতে চলেছে সেটার আঁচ পাওয়া পোয়্যারোর ক্ষেত্রে নতুন নয়। ইভিল আন্ডার দ্য সান, মার্ডার ইন মেসোপটেমিয়া ইত্যাদি গল্পে বারংবার পোয়্যারো বিপদের আঁচ পেয়েছেন। কিন্তু কোনওবারই খুনোখুনি আটকাতে সক্ষম হননি। ভাগ্যিস হননি, তাহলে আর গল্প বলার মতো কিছু থাকত না। কিন্তু আমার স্মরণে এই একটিমাত্র গল্পে ক্রিস্টি সে অসীম সাহস দেখিয়েছেন, খুনের বদলে খুনের ফাঁদ পাতা নিয়ে একটি রহস্য ফেঁদে তার সমাধান করেছেন। মহীয়সী মহিলা।
Eibar koutuhol jege uthechhe. Poirot prothom tineo na ele prothom tinjon kara?
ReplyDeleteএক নম্বর, মিস মার্পল। দু'নম্বরে বেশ কয়েকজনের মধ্যে মারামারি চলছেঃ টম বার্নাবি, লর্ড পিটার উইমসি, ভেরা স্ট্যানহোপ। তিন নম্বর উইলিয়াম অফ বাস্কারভিল (ইনি হাইলি দু'নম্বরে যেতে পারতেন কিন্তু এঁর তদন্ত করা একটি গল্পই পড়েছি কি না, আর দু'নম্বরের গোয়েন্দাদের সঙ্গে বারংবার মোলাকাত হয়েছে।)
Deleteপ্রথম জনের জায়গা ফিক্সড। তিন নম্বরও মোটামুটি ফিক্সড। দু'নম্বরে জায়গা পেতে পারতেন এমন হয়তো কেউ কেউ মিস হয়ে গেলেন।
আর প্রদোষ মিত্রর নাম নিলাম না মানে উনি আমার প্রিয় গোয়েন্দা নন এমনটা না। উনি আমার বাংলাভাষার প্রিয়তম গোয়েন্দা সেটাও যেমন সত্যি, এটাও সত্যি যে গোয়েন্দা হিসেবে আরেকটু খারাপ হলেও ওঁকে ভালোলাগার কারণের আমার অভাব হত না। কিশোরী বয়স থেকে কখনও হয়নি। কাজেই কনফিউশন এড়াতে ওঁকে লিস্টের বাইরে রাখলাম।
খুব, খুব ভাল লাগল। ছোটগল্প থেকে উপন্যাস লেখার লিস্টে আরেকটাও আসবে - The Plymouth Express থেকে The Mystery of the Blue Train. আপনার পছন্দের গল্পের তালিকার সবগুলোই আমার ভীষণ ভাল লাগে। কদিন ধরেই ভাবছিলাম পোয়ারোটা আরেকবার রি-ওয়াচ করলে হয়, আপনার লেখাটা সে ইচ্ছেটা বাড়িয়ে দিল।
ReplyDeleteগোয়েন্দা গল্পের জগতে আমার প্রবেশ ফেলু মিত্তিরের হাত ধরে, আর ফেলু মিত্তির মানে আমার কাছে একজনই। তাই তাঁর চলে যাওয়ার খবরটা শুনে থেকে মনটা খারাপ হয়ে আছে। আপনার লেখাটা কিছুক্ষণের জন্য হলেও সেই মনখারাপটা দূরে সরিয়ে রাখল।
চমৎকার মনে করিয়েছেন, সুগত। প্লাইমাউথ এক্সপ্রেস আর ব্লু ট্রেন - অবিকল এক প্লট। মাঝে মাঝে রি-ওয়াচ আর রি-রিডের ইচ্ছে আমারও জাগে। ক্রিস্টির দুটো সিরিজ আমি অবশ্য লাগাতার 'ওয়াচ'-এর লিস্টে রেখেছি। বেশ কিছুদিন ধরে ইচ্ছে হচ্ছে ফেলুদাকে ফের পড়ে দেখার। দেখি।
Delete