Posts

লখনৌ ২০২৪

অটো থেকে নামতে নামতে অর্চিষ্মান বলল, দোকানে যে লোকগুলো বসে আছে তাদের চেহারাগুলো দেখ। নিজেদের অগোচরে যখন লোকজন বসে থাকে - জাস্ট বসে থাকে, কোনও কথা না বলে, ফোন না ঘেঁটে - তাদের বিশ্বমানের পেন্টিং-এর মতো দেখায়। আমিনাবাগের নেত রাম মিঠাইয়ের সামনে বসে থাকা লোকগুলোকেও দেখাচ্ছে। চোখেমুখে শূন্যতা, ক্লান্তি, হতাশা মিলিয়ে যে ভাবটা ফুটে উঠেছে, সেটার এক কথায় প্রকাশ আমাদের জানা। অনেকক্ষণ কথা না হলে বা কথা বলার মতো কিছু না পেলে যখন একজন লেখে, ‘আজ রাতে কী মজা হবে?’ আর অন্যজন সটাং লিখে দেয় ‘জানি না’ বা ‘কে জানে’ বা ‘কোনও মজা হবে না কাল সাবমিশন’, তখন প্রথমজন যে শব্দটা টাইপ করে। হেউ। অন্ততঃ লিখে প্রকাশ করতে গেলে 'হেউ'-ই টাইপ করতে হয়। আসলে ব্যাপারটা একটা ধ্বনি। কুকুরের রিয়েলিস্টিক ডাক যেমন ঘেউ-ও না, ঘৌ-ও না, মাঝামাঝি, হেউ-ও তাই। উচ্চারণ করতে এক সেকেন্ডের কম লাগবে। উচ্চারণ অস্পষ্ট হবে, ঠোঁট যথাসম্ভব কম ফাঁক হবে, উৎস হবে পেটের বদলে গলার পেছন। যে আবেগটা প্রকাশিত হবে সেটাও ধূসর। ধুসও না, হুসও না, মাঝামাঝি। শেষ হয়ে গেলে নিচের ঠোঁট উঠে এসে ওপরেরটার সঙ্গে মিশবে। হেউ-এর মর্মার্থ হচ্ছে, আপনার জ

পুজো ২০২৪

Image
ষষ্ঠী অর্চিষ্মানকে অন্ততঃ পুজোর সময় আমার সঙ্গে চিচিঙ্গার চচ্চড়ি খেতে বাধ্য করব না। নির্মলবাবুর চ্যালাচামুন্ডারা যতক্ষণে চিংড়ি ছাড়াবেন, সৌরভ থেকে নারকেলের দুধফুধ নিয়ে নেব। দুশো মিটার হবে না। কিন্তু হাঁটতে সময় লাগছে। প্রচুর নতুন দোকান। পুরোনোরা আরও এগিয়ে এসে জায়গা দখল করেছেন। খদ্দের, বিক্রেতা, ভিখিরি, পুলিশ। শুধু মোটকা কুকুরটা এর মধ্যেও নিজের রিয়েল এস্টেট ছাড়েনি। বাজারে ঢোকার মুখটায় শুয়ে আছে। লোকের অসুবিধের কথা ছেড়েই দিলাম। ওর নিজের ভালো বুঝলেও সরে যাওয়া উচিত। যে কোনও মুহূর্তে ল্যাজে পাড়া দেবে কেউ, নয়তো আশপাশ থেকে গরম তেলের ছিটে লাগবে। সৌরভ শেষ, বাঁদিকে বেঁকলে নির্মল, ডানদিকে অন্নপূর্ণা। শেলফ এক্সটেন্ড করে অন্নপূর্ণার ফাঁকা মেঝেটুকু ঢেকে দেওয়া হয়েছে। রসালো, টাটকা মিষ্টির উঁচু থাকে প্রতিটি খোপ ভর্তি। থাকের প্রথম সারি খালি হতে শুরু করেছে কিন্তু মিষ্টির গাড়ি বাঁক নিচ্ছে মার্কেটের পার্কিং-এ, অন্নপূর্ণার ব্র্যান্ড টিশার্ট পরা ছেলে দৌড়ে যাচ্ছে। যেখানে থাকার কথা শিঙাড়ার ঝুড়ি নেই। শেষ হয়ে গেছে অলরেডি? শুরুই হয়নি বৌদি। পুজোর ক’দিন শিঙাড়া থাকবে না। ফুচকা খুঁজছি। আমার যিনি রেগুলার তাঁর

আজ সারাদিন

Image

১৫-২১ সেপ্টেম্বর

স্পোকেন ইংলিশ শুনলেই যেমন বলে দিতে পারি কে বাংলা মিডিয়াম কে ইংরিজি মিডিয়াম কে সাউথ পয়েন্ট, বাংলা লেখা পড়লেই ধরে ফেলতে পারি কে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আয়নায় নিজেকে দেখার মতো সহজ আর নির্ভুল। আমরা একটা লোককে তার নাম পর্যন্ত দিয়ে চিহ্নিত করতে পারি না। হয় কবিগুরু, নয় গুরুদেব, নয় ছন্দের জাদুকর, নয় বাংলার বাঘ। সুকুমার রায় এতদিন ফুরফুরে ঘুরছিলেন, এ সপ্তাহে অন্ততঃ পাঁচজনকে বলতে শুনলাম/লিখতে দেখলাম প্রফেট সুকুমার রায়। একজন আবার লিখেছেন প্রফেট তাতা। মেয়েরা হুলিয়ে মিছিলে নেমেছে (হুলিয়ে বাদ দিলে আমার আপত্তি নেই) লিখতে আমাদের নার্ভাস লাগে। পাছে ব্যাপারটার ঐতিহাসিকত্ব চোট খায়। আমাদের লিখতে হয় শতশত পাখি খাঁচা খুলে রাতের আকাশে ডানা মেলে উড়ছে। ***** এ সপ্তাহে জীবনে প্রথম চিয়া সিডস খেলাম। মন দড়ি ছিঁড়ে কে জানে কোন মাঠে দৌড়চ্ছে, শরীরটাকেই মন্দির বানিয়ে পুজোফুজো করে টাইমপাস করব। ইন্টারনেটে লিখেছিল পনেরো মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই চিয়া ফুলে উঠবে, উঠল না। হতে পারে ব্লিংকিটের কুড়ি টাকা প্যাকেটের চিয়া হদ্দবাসি কিংবা জলের দোষ। পনেরো মিনিটে এক্স্যাক্টলি যেমন কে তেমন রয়ে গেল। আধঘণ্টা পরে সামান্য মুটোল নাকি কল্পনা করলা

হেমিংওয়ে

There is no left and right in writing. There is only good and bad writing. These little punks who have never seen men street fighting, let alone a revolution, writing and saying how can you be indifferent to great political etc. etc. I refer to an outfit in, I believe, Davenport, Iowa. Listen—they never even heard of the events that produced the heat of rage, hatred, indignation, and disillusion that formed or forged what they call indifference. I’m no goddamned patriot nor will I swing to left or right. I’ve seen a lot of patriots and they all died just like anybody else if it hurt bad enough and once they were dead their patriotism was only good for legends; it was bad for their prose and made them write bad poetry. …don’t let them suck you in to start writing about the proletariat, if you don’t come from the proletariat, just to please the recently politically enlightened critics. In a little while these critics will be something else. I’ve seen them be a lot of things a

পনেরো

কথাটা আমার মাথাতে এসেছিল। রাদার কথাটা যে উঠতে পারে সেই কথাটা। কসোল পোস্ট অত ডিটেলে লিখলাম কী করে? যে রকম ক্লেম করলাম সে রকম নেশা হলে তো এত খুঁটিনাটি মাথায় থাকার কথা নয়। রইল কারণ খুঁটিনাটিগুলো যখন ঘটছিল সবগুলোতে আমি আঙুল দিয়ে দিয়ে রাখছিলাম যাতে লেখার সময় মনে থাকে। অবান্তরে লিখব বলে দিবারাত্রের যাবতীয় অভিজ্ঞতা পাহারা দিচ্ছি ধরা পড়ে গেলে এখনও লজ্জা হয়। যে লজ্জার ইংরিজি শেম, সেই লজ্জা। কবিতা না, উপন্যাস না, প্রবন্ধ না, ফেসবুক না, ওয়র্দি গেটকিপারের পাহারা পেরোনো ওয়র্দি সাহিত্যসৃষ্টি করব বলে না । অবান্তরে লিখব বলে। অর্চিষ্মানের কাছে হয় না। 'এখানে চল' 'ওখানে যাবে?' দুয়ের বেশি তিনবার বললে ও বলে কেন গো? ব্লগ লিখবে? পাত্তা দিই না। বাড়ি থেকে দরজা এক ইঞ্চি ফাঁক রেখে 'চাবি তোমার কাছে তো?' জিজ্ঞাসা করতে করতেই পোস্টের প্রথম লাইনটা অলরেডি মাথায় এসে গেছে লজ্জা না পেয়ে ওর কাছে স্বীকার করতে পারি। বাকিদের কাছে লজ্জা পাই। এই লজ্জা পাওয়া আমাকে আরেক প্রস্থ লজ্জা পাওয়ায়। লজ্জার অনন্ত আয়নাঘরের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে থাকি। সকালে চোখ খোলার আগে ছি ছি ছি ছি ছি শুরু হয়, রাতে চোখ