Posts

Showing posts from October, 2019

বেত্রবতীর তীরে/ ওরছা ২

Image
এ যাবৎ যাঁদের ওরছা যেতে দেখেছি সকলেই বিদেশী। আমাদের ধারণা ছিল এত বিদেশী যে জায়গায় যায় সেটা আর কত ইন্টারেস্টিং হবে। তাঁরা ফিরে এসে পজিটিভ রিভিউ দেওয়ায় সংশয় জোরদার হয়েছিল। ওরছা নির্ঘাত বিদেশীদের মন ভোলানোর মতো ভারতবর্ষ।   যেন সেটা কিছুতেই আমাদের মন ভোলানোর মতো হতে পারে না। ওরছা যাওয়ার সপক্ষে যুক্তি ছিল একটাই। ভীষণ সোজা রাস্তা। দিল্লি থেকে হাবিবগঞ্জ শতাব্দী ছাড়ে সকাল ছ'টায়, ঝাঁসিতে থামে দশটা পঁয়তাল্লিশে। ঝাঁসি থেকে ওরছা অটোতে যেতে লাগে তিনশো টাকা আর তিরিশ মিনিট।   সুবিধের মুখ চেয়ে, মনের সংশয় মনে চেপে চলে গেলাম ওরছা। বুক করলাম মধ্যপ্রদেশ ট্যুরিজমের বেতোয়া রিট্রিট, সকলেই চেনে, অটোওয়ালা শামসুদ্দিন সাঁ করে বাঁক নিয়ে গেটের ভেতর ঢুকে ব্রেক কষলেন। অভ্যর্থনা জানাতে ম্যানেজারবাবু বেরিয়ে এসেছিলেন, তাঁকেও এ তল্লাটে সকলেই চেনেন, শামসুদ্দিন শুদ্ধু। পরস্পর পরস্পরকে হাত তুলে নমস্তে জানালেন।  বেতোয়া রিট্রিটের ম্যানেজারবাবু অতি করিৎকর্মা লোক। সাধারণতঃ সরকারি লোকেদের প্রোঅ্যাকটিভ হতে দেখা যায় না। ইনি উজ্জ্বল উদ্ধার। বা ‘সরকারি’র চরিত্র বদলাচ্ছে, এখন আর চোখ উল্টে থা...

বাজরার রুটি আর গোস্ত/ ওরছা ১

আমার জন্য করওয়াচওথ পালন করনি না হয় মেনে নেওয়া গেল, আমার এতদিন বাদে বাড়ি ফেরা উদযাপন করতে অন্ততঃ ভালো কিছু খাই চল।  এই "ভালো"র সঙ্গে কিন্তু গুণগত ভালোর কোনও সম্পর্ক নেই। এই ভালো খাওয়ার মানে হচ্ছে বাড়ির বাইরে কোথাও, যে কোনও জায়গার খাওয়া। যে খাওয়া খেতে ধড়াচুড়ো পরে গাড়ি চড়ে যেতে হয়, পয়সা খরচ করতে হয় আর খাবারগুলো হজম হতে অনেএএক সময় নয়। অনেকসময় হয়ও না। যেতে যেতে অর্চিষ্মান বলল, আজ খেতে যাব, পরশু বেড়াতে যাব...  আমি বললাম, কোথায় যাবে? বলনি তো? মোটে তো ছ'বছর কেটেছে কি কাটেনি, সম্পর্কে কী সব যেন 'ইচ' টিচ হয় শুনেছি, তাতেও তো মিনিমাম সাত বছর লাগে, আর তুমি কি না এখনই একা একা বেড়াতে যাবে? অর্চিষ্মান বলল, আহা আমি একা যাব নাকি, তুমিও যাবে আমার সঙ্গে।   লোকে বলে একটা মানুষকে চিনতে অনেক সময় লাগে, নিজেকেই গোটা জীবনে চেনা হয়ে ওঠে না হ্যানোত্যানো, কিন্তু অর্চিষ্মানের শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য বলতে বললে আমি লম্বা রোগা চশমা ইত্যাদির সঙ্গে আর যেটা যোগ করব তা হল যে অর্চিষ্মান ইমপালসিভ নয়। ইচ্ছে হল আর অমনি একটা কিছু ঘটিয়ে ফেললাম, এ জিনিস ওর ধাতে নেই। ওটা আমার স্পেশালিট...

অক্টোপাসের স্বপ্ন

Image

পুজো

যতখানি ডিসাস্ট্রাস ভাবে শুরু হওয়া সম্ভব ততখানিই হল। ষষ্ঠীর সকালেই সি আর পার্ক ঘিরে দিল্লি পুলিসের হলুদ ব্যারিকেড, অটোভাইসাব আসতে নিলেন ঝাড়া কুড়ি মিনিট। আঠেরো মিনিটের মাথায় রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আমি আবিষ্কার করলাম শাড়ির সঙ্গে পাম্পশু পরে বেরিয়ে পড়েছি। দৌড়ে ঘরে গিয়ে চটি পরে আসতে যাব, দেখি হাতে ভুল চাবি। অর্থাৎ আমি লকড আউট। অর্চিষ্মানকে ফোন করলাম, ও বলল ওর ট্যাক্সি নাকি “অনেএএএএক” দূর চলে গেছে।   শুক্রবার এথনিক ড্রেস ডে-তে অনেকদিন পর শাড়ি পরে সেই কথাটাই ভাবলাম, প্রত্যেকবার শাড়ি পরার পর যেটা ভাবি। কেন যে আরও ঘন ঘন পরি না। পরার আগে মনে হয় অনেক ঝামেলা। একটা তো নয়, তিনটে পোশাক। তার ওপর বারো হাত ফ্যাব্রিক। এমনি যেটা পরে অফিস যাই সেটাও কিন্তু থ্রি পিস। টপ, বটম, ওড়না। আসলে অভ্যেসটাই চলে গেছে।   পরতে হাঙ্গামার অজুহাতও দেওয়া যাবে না। শাড়ি আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পরতে পারি। নাইন থেকে টুয়েলভ শাড়ি আমার স্কুল ইউনিফর্ম ছিল। এই তথ্যটা যখন দিই টিমের জুনিয়ররা এমন মুখ করে যেন আমি সেই যুগের লোক যে যুগে লোকে দোয়াতে হাঁসের পালক ডুবিয়ে লিখত আর বলদে টানা গাড়ি চড়ে এদিক ওদিক যেত। আর চাঁদে পা ...

প্রথম দেখা

মেগাচতুর্থী আর গান্ধীজয়ন্তী একই সঙ্গে পড়ায় অনেক সুবিধে হল। প্রতিবারই পড়ে পাওয়া ছুটির আগে ভাবি এই করব সেই করব, কিছুই করে ওঠা হয় না।  এবার ঠিক করেছিলাম করবই।  করলাম। আরাম। সকালটা আরাম করতে করতেই চলে গেল। পুজো এত তাড়াতাড়ি আসার একটা ভালো ব্যাপার হল চ্যানেলে চ্যানেলে পুজোর হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে গেছে। ওখান থেকেই ‘মেগা’টা পিক আপ করেছি। ‘মহা’র দিন শেষ। এখন মেগাপুজো, মেগাপ্রতিমা, মেগাভোজ। একটা মেগাভোজের ভিডিওতে দীপকদা, আমাদের চিরঞ্জিৎ, ভজহরি মান্নায় খাচ্ছিলেন। শুনলাম দিনাজপুরের দম চিকেন ওঁদের সিগনেচার ডিশ। আপনারা কেউ খেয়েছেন নাকি?   চিরঞ্জিৎ বললেন ওঁরা নাকি একবার কলকাতার চারটে দোকানের মোগলাই পরোটা আনিয়ে খেয়ে দেখেছিলেন, কোনটা ভালো। অর্চিষ্মান বলছে এবার সি আর পার্কে পুজোয় বসা সব দোকানের বিরিয়ানি নাকি ও খেয়ে খেয়ে নম্বর দেবে। পুজো আজকাল নম্বর দেওয়ার সিজনও বটে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে সেলিব্রিটিরা বেরিয়ে পড়েছেন মা দুর্গাকে নম্বর দিতে। আবীর, ঈশা,পাওলি, আরও সব কারা কারা। এ বারে সোনার দুর্গা অনেক নম্বর পাচ্ছে। আপনারা দেখলেন নাকি? একটু পরে অর্চিষ্মান বলল, এই দেখো,...