বাংলা বিষয়ে



উৎস গুগল ইমেজেস


বিয়ে ঠিক হলে যেমন লোকে সর্বক্ষণ বিয়ের কথা বলে, বুড়ো হলে যেমন সর্বক্ষণ রোগের কথা বলে, তেমনি বাবামা হলে সবাই সর্বক্ষণ বাচ্চার কথা বলে।

সেইজন্য আমি বেছে বেছে কেবল সেই সব বন্ধুদেরই ফোন করি যারা সন্তানের জনকজননী হয়েছে। আমার দিক থেকে কথা বলার পুরো পরিশ্রমটা বেঁচে যায়। ওদিক থেকে বাচ্চার গুণপনা আর না খেতে চাওয়া আর সমবয়সী সব বাচ্চার থেকে বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার খবর শুনলেই কাজ শেষ। মাঝেমাঝে জায়গামতো “আরে বাঃ...তাই নাকি?...কী তুখোড় বাচ্চা হয়েছে রে তোর...আমরা এই বয়সে কত হাবলু ছিলাম ভাবা যায়?” এইসব ফিলার গুঁজে দিতে পারলে তো সোনায় সোহাগাযোগাযোগও রাখা হল, খাটুনিও হল না।

কপাল খারাপ হলে অবশ্য “মাসিকে এ বি সি ডি শোনাও” গোছের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়, তখন আধঘণ্টা ধরে ওপারের বকাঝকা কিংবা আধোগলায় ভুলভাল এ বি সি ডি শুনে ফোনের বিল তোলা ছাড়া উপায় থাকে না।

রবিবার সকালটা সাধারণত আমি সম্পর্করক্ষার খাতে খরচ করি। সেদিনও করছিলাম। করণীয় ফোনের লিস্টে টিক মারতে মারতে অবশেষে সু-দিদির নামে এসে পেনসিল ঠেকল।

আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। সু-দিদির ছানা হয়েছে বছরতিনেক হল। অবশ্য তিনবছর নামেই তিনবছর, আসলে সময়টা তিনমিনিটের দ্রুততায় কেটে গেছে। যেদিন শুনলাম সু-দিদির ছানা স্কুলে ভর্তি হয়েছে, চোখ কপালে উঠেছিল। এই নাকি সেদিন আমি মায়ের ফোন পেয়ে, দোকানের নবজাত সন্তানের আইলে দাঁড়িয়ে, প্রবল মাথা চুলকে, তার জন্য কিউট জামাপ্যান্ট কিনে পার্সেল করলাম, আর এই নাকি সে স্কুলে যাচ্ছে! ওয়াটার বটল গলায় ঝুলিয়ে, স্কুলভ্যানের বাকি বাচ্চাদের ওপর সারারাস্তা সর্দারি ফলাতে ফলাতে। ভাবা যায়?

হ্যালো আর কেমন আছিস-এর পালা শেষ হতে না হতেই কথোপকথন ছানার দিকে ঘুরল। আমি আরাম করে পিঠের তলায় বালিশ গুঁজে, মিউট করে রাখা টিভির দিকে চোখ পেতে বসলাম। নেক্সট আধঘণ্টার জন্য মাথা খাটিয়ে আবোলতাবোল কথা খুঁজে খুঁজে বার করা থেকে মুক্তি পাওয়া গেল ভেবে মন খুশি হয়ে গেল।

কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক।

দিদি বললেন, তাঁরা নাকি ভয়ানক খারাপ আছেন, দুশ্চিন্তায় নাকি তাঁদের চোখের ঘুম উড়ে গেছে।

সেকি, কেন?

কেন আবার, ছানা। আরও স্পষ্ট করে বললে, ছানার স্কুল। ছানার স্কুলের নাকি অ্যাফিলিয়েশন না কীসব নেই। ভর্তির সময় কাঁড়িকাঁড়ি ডোনেশন নেওয়ার বেলা প্রিনসিপাল ঝুড়িঝুড়ি মিথ্যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, বলেছিলেন অ্যাফিলিয়েশন এই এল বলে, কিন্তু ওই আসছে পর্যন্তই। এখনও সে এসে পৌঁছয়নি, আদৌ আসবে কি না তার ঠিকও নেই।

আমি বললাম, তা অ্যাফিলিয়েশনওয়ালা স্কুলে ভর্তি করালেই পারো। এখনও তো কচি আছে, শিকড় বেশি নিচে নামেনি, উপড়ে তুলে অন্য স্কুলে পুঁতে দাও। সিম্পল।

দিদি কাঁচুমাচু গলা করে বললেন, আরে সেখানেই তো হয়েছে মুশকিল। অ্যাফিলিয়েশন না থাকলে কী হবে, স্কুলটা ভীষণ ভালো। অ্যাডমিশনের সময় নাকি বাচ্চার বদলে বাবামায়ের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়, আর তার থেকেও ভালো ব্যাপার হচ্ছে, গোটা ইন্টারভিউটাই হয় ইংরিজিতে।

বলে দিদি অল্প হেসে যোগ করেন, সেইজন্যই তো এপাড়ার অর্ধেক বাচ্চার বাবামা ইন্টারভিউতে ফেল মেরেছে। যা সব অ্যাকসেন্ট একেকজনের, মুখ খোলামাত্র বাতিল।

আমার গলা শুকিয়ে যায়। নিজের বাবামায়ের ইংরিজি অ্যাকসেন্টের কথা মনে পড়ে, আর আমি ভগবানকে শতশত ধন্যবাদ দিতে থাকি যে বছরতিরিশ বাদে আমাকে পৃথিবীতে পাঠাননি।

ততক্ষণে আমার আরাম করে কথা বলার সাধ অন্তর্হিত হয়েছে। সত্যিই তো, ছেলেমেয়ের শিক্ষাসংক্রান্ত সমস্যার থেকে গুরুতর আর কী-ই বা হতে পারে। দিদির দুশ্চিন্তা আমাকেও কুরে কুরে খায়। সাহায্য করার জন্য বলি, আচ্ছা আমরা সে স্কুলগুলোতে পড়েছিলাম, ওই যে যাদের নামের শেষে বিদ্যালয় আর শিশুতীর্থ আর বিদ্যামন্দির সাঁটা ছিল, সেসব স্কুলগুলোতে চেষ্টা করলে কেমন হয়। আগাপাশতলা সরকারি, অ্যাফিলিয়েশনের কোনও দুশ্চিন্তাই নেই, আর মাইনেও নামমাত্র।

তোমাদের কত সেভিংস হবে ভাবো। তিনহাজারের বদলে তিরিশ টাকায় কাজ সেরে দিতে পারবে, আর পাটুলিতে যে ফ্ল্যাটটা চোখে চোখে রেখেছ সেটাও নামিয়ে ফেলতে পারবে। খানিকটা লোভ দেখানোর মতো করেই আমি বলি।

দিদি একেবারে ছ্যাঁকা খাওয়ার মতো করে লাফিয়ে ওঠেন। বলেন, বলিস কীরে সোনা, সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে নিজেদের সাধ মেটাবো? তোদের জমানা কি আর আছে? এখন ওসব বাংলা স্কুলে পাঠানো মানে ফিউচারে ছেলেমেয়ের না খেয়ে মরার পথ পরিষ্কার করা।

অ্যাঁ! আমি নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারি না। অবস্থা এতটাই সঙ্গীন শুনে হাতপা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। ভগবানের টাইমিং দেখে আরও একবার কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়ি। কী ভাগ্যিস কী ভাগ্যিস।

দিদি আমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যই বোধহয় বলেন, আর তাছাড়া ওসব বিদ্যালয়-ফিদ্যালয়ে পড়ার চাপ অনেক বেশি। বেঙ্গল বোর্ডের তো সবটাতেই পাকামি, জানিস। যেগুলো জীবনে কাজে লাগবে না, সেগুলোও শেখাবে।

তা বটে। আমরা যখন ক্লাস সেভেন-টেভেনে পড়তাম তখন পাড়ায় আমাদের বিকেলে খেলার গ্রুপে একজন অন্য বোর্ডের ছাত্র ছিল। তার মুখেই শুনেছিলাম, তাদের সিলেবাসে নাকি ভুবনের কানকাটা মাসির গল্পটা আছে, আর সেখান থেকে হাফইয়ারলিতে “মাসি কাকে বলে?” প্রশ্ন এসেছে। উত্তর ঠিক হলেই পাঁচ নম্বর।

সেই অতদিন আগের হিংসেটা আবার নতুন করে বুকের মধ্যে জ্বালা ধরিয়ে গেল।

সু-দিদি বলতে লাগলেন, ওদের স্কুলে এসব পাকামি নেই। যা করানোর সব নিজেরাই করিয়ে দেয়। বাড়িতে একগাদা হোমওয়ার্ক দিয়ে পাঠায় না।

এটা শুনে সত্যি ইমপ্রেস্‌ড্‌ হয়ে যাই। বলি, বাঃ তার মানে তো বাড়িতে এন্তার কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করা যায়। হোমওয়ার্ক নিয়ে মা-সন্তানের সম্পর্কের মধ্যে নিরন্তর যুদ্ধের আবহাওয়া সৃষ্টি হয়ে থাকে না।

দিদি বলেন, তবেই বল্‌। আমরা তো সন্ধ্যেটা হাতপা ছড়িয়ে আরাম করে টিভি দেখে কাটাই। আমার বাচ্চার আবার ভয়ানক মীরাক্কেল-এর নেশা।

ততক্ষণে বোধহয় দৃশ্যে ছানাটির আবির্ভাব হয়েছে। মায়ের মুখে চেনা শব্দ শুনে সে ভীষণ খুশি হয়ে চেঁচিয়ে উঠে বলে, “অসাম্‌ সালা-আ-আ-...”

দিদি একেবারে হেসে গড়িয়ে পড়েন। বলেন, শুনলি শুনলি? এত চালাক, একবার শুনলেই সব তোতাপাখির মতো মুখস্থ করে ফেলে। কী যে করব না একে নিয়ে আমি...

আমার কীরকম গোলমাল লাগে। মীরাক্কেল দেখার থেকে হোমওয়ার্ক করে সময়নষ্ট করা ভালো কি না, সে নিয়ে সিরিয়াস দোটানায় পড়ে যাই। দিদির গলার আওয়াজে ভাবনায় ছেদ পড়ে।

তাছাড়া দেখ্‌ না, এই বছরটা শুধু রাইম্‌স্‌ পড়াবে। লেখার কোনও ব্যাপারই নেই। নেক্সট ক্লাসে এ বি সি ডি লেখা শেখাবে। বাংলা লিখতেই হবে না।

লিখতেই হবে না? প্রশ্নটা মুখের কাছে চলে এলেও গিলে নিই। মনে পড়ে যায়, যা যা জীবনের কাজে লাগবে না, সেসব না শেখাই বুদ্ধিমানের কাজ। তারপর আরও কয়েকটা খুচরো কথাবার্তা হয়, সু-দিদির সংসারের তাড়া এসে পড়ে, ফোন রেখে দিই। কিন্তু কথাগুলো মাথা থেকে বেরোয় না।

শিক্ষাব্যবস্থা অনেক বড় ব্যাপার। তার ভালোমন্দ বিচার করার স্পর্ধা বা যোগ্যতা কোনওটাই আমার নেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বসে বাঙালির বাচ্চার বাংলা শেখাটা কবে অনাবশ্যক হয়ে গেল, সেটা নিয়ে চিন্তা করার অধিকার বোধহয় আছে। বিশেষত, এই ঘটনাটা ঘটার পেছনে যদি আমাদের নিজেদেরই অবদান থাকে, তাহলে তো আছেই।

বাংলা শিখে কোন্‌ মোক্ষলাভটা হবে, সেসব তর্কে যেতে চাই না আমি। কারণ তাতে হেরে ভূত হয়ে যাওয়ার অবকাশ আছে। বাংলাসাহিত্যের রসাস্বাদন করতে পারবে বলে? কেন ইংরিজির করলেই হয়। পাগলেও মানবে যে বাংলার থেকে ইংরিজি সাহিত্য বেশি সম্পদশালী। সরকারি কাজকর্মও সব আজকাল ইংরিজিতে হয়, বেসরকারির কথা তো ছেড়েই দিলাম। বরং ইংরিজিটা ছোট থেকে ফটাফট্‌ বলতে শিখলে, জীবনের একটা সময়ে যে মনোকষ্টের শিকার হয়েছিলাম, সেটা হতে হবে না। চলাবলা, ওঠাবসা থেকে আগাগোড়াই আত্মবিশ্বাস উপচে পড়বে।

তবু আমি নিজের মনকে প্রবোধ দিতে পারি না। কোথায় যেন কী ফাঁক পড়বে মনে হয়। বাংলা আর ইংরিজি দুটোই শিখলে কী ক্ষতি হত, সেটা মাথায় ঢোকে না। বাচ্চাদের তো শুনেছি একটা বয়সে ভাষা শেখার ক্ষমতা চৌখস থাকে। সেই সময় ফাঁক বুঝে অ আ ক খ আর এ বি সি ডি দুটোই শিখিয়ে দিলে হয় না? ফ্রেঞ্চ স্প্যানিশ শেখালেও চলে অবশ্য, হয়তো তাতে উপকারও বেশি দেয়, কিন্তু পূর্বপুরুষের ভাষাকে একটু একচোখোমি করে কম্পিটিশনে জিতিয়ে দিলেই বা ক্ষতি কী?

নাকি বাংলা নিয়ে আমাদের নিজেদের মনের গভীরেই কোথাও লজ্জা কাজ করে? অ্যাভারেজে পাঁচফুট লম্বা আর সত্তর কেজি ওজনের একটা জাতির, জীবনের সর্বক্ষেত্রে নাকাল হওয়ার পেছনে মাতৃভাষাটারই ষড়যন্ত্র আছে বলে সন্দেহ হয়? তাই কি সেটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে, সাহেবদের ভাষাটাকে নিজেদের করে নেওয়ার জন্য আমাদের এত আছাড়িপিছাড়ি?  

শুদ্ধ ইংরিজি বলতে পেরে আমরা যতখানি গর্ব বোধ করি, ভুল ইংরিজির দেখা পেলে যেরকম রেগে আগুন তেলে বেগুন হই, বাংলার প্রতি আমাদের সে আবেগের ছিটেফোঁটাও কাজ করে কি? করলে হয়তো পরিস্থিতিটা এই জায়গায় এসে দাঁড়াত না।


Comments

  1. লেখাটা তো বটেই,তোমার বক্তব্য পুরো সমর্থন করতেই হবে । যা লিখেছ একেবারে আয়নার মত ফুটে উঠেছে এখনকার ছবি । এই অসাম সালার হাত থেকে কি মুক্তি নেই?

    মিঠু

    ReplyDelete
    Replies
    1. মিঠু, মুক্তি পাওয়া শক্ত। টিভি দেখা বন্ধ করা তো চলে না, তাহলে ভালো জিনিসও মিস হয়ে যাবে। আমার মতে শুরু থেকেই মগজে গজাল মেরে গুঁজে দিতে হবে, কোনটা পাতে দেওয়া যায়, কোনটা যায় না। তাতে অবশ্য একটু নাকউঁচু বাচ্চা হওয়ার বিপদ থাকে, কিন্তু আর তো রাস্তা দেখি না।

      Delete
  2. যে দেশে কোনও গাছ নেই সেখানে ভ্যারেণ্ডা গাছও মহীরূহ । সমস্যার মূলটা এখানেই। আর স্রোতের বিপরীতে চলার মতো বাবা মা কোথায়? যারা পারবেন তারা নাক উঁচু ছানাই তৈরি করুন সেই বেশ ভাল ।
    মিঠু

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমারও তাই মত মিঠু।

      Delete
  3. Khub bhalo post.Darun moja kore ekhonkar ekta serious problem tule dhorechho.
    Ami charidike ja dekhchhi tate eituku bujhchhi je ma baba ra jodi ektu chesta kore ba barite jodi seirakom ekta abohaoa thake tobe ekhonkar bachharao je interest nie 'Harry Potter - 1' pore eki interest nie ' আম আঁটির ভেঁপু' -o pore.
    Ar sotti oi “অসাম্‌ সালা-আ-আ-...” jatio byapar je paat-e debar jogyo noi seta tader surutei bujhie deoa bhalo.

    ReplyDelete
  4. “অসাম্‌ সালা-আ-আ-...” ta tomaro kaan e legechhe bole tomar bhasai ekta HI-V,

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাড়িতে আবহাওয়া থাকলে তো ভালোই ইচ্ছাডানা। কিন্তু স্কুলগুলো যদি দায়িত্ব থেকে একেবারে হাত ধুয়ে ফেলে তাহলে বাড়িতে বেশিদিন চার ধরে রাখা শক্ত। আজকাল শুনেছি দামি স্কুলে শুক্রবার নামাজ পাঠ, বৃহস্পতিবারে গুরুবন্দনা, রবিবারে সানডে স্কুল এইসবও করার সময় থাকে। সেগুলো বাদ দিলে বাংলা পড়ানোর সময় বেরোবে না, এটা আমার বিশ্বাস হয় না।

      "অসাম্‌ সালা" কানে লেগেছে মানে? কানের ভেতর দিয়ে গলন্ত সীসার মতো একেবারে মরমে পশে ছ্যাঁকা দিয়েছে।

      Delete
    2. setao thik School er daityo ta ekebare jhere phele deoa jaina, sekhane onekkichhu asha niei amader bachhader pathano. Abar sudhu system ke dosh die boshe thakleo baba ma-eder cholbena, amar nijosho mot holo baba ma-eder jodi bangla bhasar proti bhalobasa thake tahole tara nijera ektu chesta korle hoitoba bachharao bhalobasbe, ar ekbar sei taan jonmale take jhere phela sahoj noi.

      nami dami school gulo ajkal abar etto kichhur time rakhchhe?ami atonkito.

      ei galonto-sisa r upomata ekkebare s-thik.

      - ICHHADANA

      Delete
    3. আমি আপনার কথা বুঝতে পারছি ইচ্ছাডানা, তবে সব বাবামায়েরা কিন্তু ছেলে পড়ানোর মতো যোগ্যতা রাখেন না। এটা আমি তাঁদের প্রতি কোনওরকম অশ্রদ্ধা থেকে বলছি না। আমার বাবামাও আমাকে ইলেভেন টুয়েলভের অংক করাতে পারতেন না, তাই প্রাইভেট টিউটরের কাছে পাঠিয়েছিলেন। তেমনই অনেক বাবামায়ের হয়তো ক্লাস ফাইভের অংক দেখাতেও কষ্ট হয়, হতেই পারে। হয়তো তাঁরা নিজেরা ইংরিজি তত ভালো জানেন না। সেই জন্যই তো স্কুলব্যবস্থার আবির্ভাব, যোগ্য লোকের হাতে নিজেদের শিশুর ভবিষ্যৎ ভরসা করে সঁপে দেওয়া। না হলে তো আমরা সবাই হোমস্কুলিং করাতাম।

      আমার মনে হয়, বাবামায়ের ওপর সব দায়িত্ব দেওয়াটা অবিচার। তাহলে তো কিছু প্রিভিলেজড, সচ্ছল বাবামায়ের বাচ্চারা ছাড়া আর কেউই পড়তে শিখবে না। নিরক্ষর চাষির ছেলের তো হয়েই গেল।

      Delete
    4. This comment has been removed by the author.

      Delete
    5. ami thik bojhate parini mone hoi, amar baktobya chhilo tader jonye jara jor kore, bangla bhule gelei bhalo hoi mone kore bachhader ke অ্যাফিলিয়েশনওয়ালা স্কুলে ভর্তি na kore 'কাঁড়িকাঁড়ি ডোনেশন নেওয়া' English medium school e debar chesta korchhi tader jonye,tader modhye hoito amio ekjon.

      Delete
    6. চিন্তা করবেন না ইচ্ছাডানা। পরিস্থিতির ফেরে আমাদের সবাইকেই অনেকরকম আপোষ করতে হয়। আপনি সচেতন, আপনার মেয়ে ঠিকই বাংলা শিখবে।

      Delete
  5. eta shudhu Bangali'r dosh noy, biswas koro. Praay protyek community te vernacular baad diye English sekhanor probonota bereche.
    Ami pen ke kolom bolate 10 bochhor boyoser bachchao naak sitkeche, 50 bochhor boyos er amar physics teacher o.
    Amar British manager jokhon boleche j Indian ra bhalo English bolte pare na, tar sathe gola fatiye torko korechi j bolte parte hobe keno, ota toh amader mother tongue na.
    Kintu jokhon swajati'r mukhe shuni 'Bangla sikhe ki hobe', ami kono uttor khuje pai na.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ব্রিটিশ ম্যানেজার পর্যন্ত যেতে হবে না টিনা, ভালো ইংরিজি বলা নিয়ে বাঙালির ছুঁৎমার্গ দেখলেই যথেষ্ট। ভালো ইংরিজি বলতে পারা খুবই ভালো ব্যাপার, যে কোনও জিনিস ভালো পারার মতোই ভালো। কিন্তু এই একই মনোভাব আমাদের নিজের ভাষাটার প্রতি আমরা দেখাতে পারি না কেন সেটাই আমার মাথায় ঢোকে না।

      স্কুলে বাংলা বলে আদৌ কোনও বিষয় শেখানো হয় না শুনলেই তো সে স্কুলের প্রতি সমস্ত ভক্তি চটকে যাওয়া উচিত। এখন দেখছি সেসব স্কুলের ডিম্যান্ডই গগনছোঁয়া। অদ্ভুত।

      Delete
  6. eta shudhu bangla bhasha'r khetre noy, pratyekti bharatiyo bhasha'r eki abostha. in fact anya bhashar gulo abostha aaro kharap.

    ei je goto koyek bochar dhore sahitya akademi puraskar prapt boi gulo anubaad hochhe....ahamiya to bangla, ba oriya to bangla, ba tamil to telugu etc etc...boi gulo'r khub kom daam atocho pathok nei :(

    amar asholey "culture and country in transition"...kon dike jabo thik korte parchi na...ekdike engrezi-engrezi kore nachchi, anyadike shei engrezi bhasha sikhe porchi kintu chetan bhagat!

    ReplyDelete
    Replies
    1. আচ্ছা, বাকি ইউরোপের দেশগুলোতো দিব্যি নিজেদের ভাষার গরিমা বজায় রেখেছে? জাপানিরাও? আইদার অর কেন হতে হবে। ইংরিজি আর প্রাদেশিক ভাষা, দুটোতেই কেন আমরা সমান জোর দিতে পারব না? আমার সেটাই বক্তব্য।

      Delete
    2. european desh gulo kokhono britain er colony chilona. south america aar africa ke dyakho...colonial master er language kintu pradhannno pachhe...french/belgian etc in africa and portuguese/spanish in south am.

      tai shei colonial hangover ta tow achei. tar opore amader desher higher education (unlike japan and germany and even russia jekhane engrezi bhalo na parelo chakri/promotion shob sohojei hoye jay) ta engreji te.

      tai baba maa-era bhaben je oi bhasha ta bhalo bhabe janle, future e nijer moner bhab ba baktabbo ta shahoje prokash korte parbe.

      bharatborshe ba paschim bange local bhasha na janle dibbi chole jete pare...chakri ba jibon e unnati'r janne tow aar banglar dorkar nei. tai either or kore pradeshik bhasha out hoye jay

      Delete
    3. তাও বটে। ঠিকই বলেছ।

      Delete
  7. আমার আহাম্মক পিতৃদেবের আবার উলটো বাতিক ছিল। নিজে ইঞ্জিরির মাস্টার, তাই ছেলেকে ভর্তি করার সময়- "শুধু ইংলিশের জন্য আর পচা ইংলিশ মিডিয়মে ভর্তি হতে হবে না, ওটা বাড়িতেই হবে" বলে বাংলা মাধ্যমে ঠেলে দিয়েছিলেন।
    আমার মনে হয়, ও সবে কিছু যায় আসে না, ভাষা ভাল লাগলে বাংলা, ইংলিশ, ফ্রেঞ্চ- সব ভাল লাগবে- না ভাল্লাগলে অন্য কিছু ভাল লাগবে। কিন্তু ওই "ওসব বিদ্যালয়-ফিদ্যালয়ে পড়ার চাপ অনেক বেশি...যেগুলো জীবনে কাজে লাগবে না, সেগুলোও শেখাবে।"- এইটা বেজায় ভয়ের কথা। বাচ্চার জীবনে ঠিক কোন জিনিসটা কাজে লাগবে, সেটা বাবা-মা আগে থেকেই বুঝে গেলে সে বাচ্চার 'হইল আর কি'...
    উলটো দিকে, বাংলা মাধ্যমে পড়লে ঠিক কতটা ইঞ্জিরি চর্চা হয়, সন্দেহ আছে। ভাল ছাত্রী-ছাত্রদের কথা বলছি না, তারা দরকারে সব করে নেয়- কিন্তু অধিকাংশের ওই খাদটা পেরনো হালকা মুশকিল হয়ে পড়ে, এটাও ঠিক।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ইংরিজি মাধ্যমে পড়লে কতটা বাংলা চর্চা হয় বলে তোমার ধারণা সুনন্দ? আমি অ্যামেরিকার পি এইচ ডি দেখেছি, কলকাতার মোটামুটি নামকরা ইংরিজি স্কুলে পড়া। খুব খারাপ ছাত্র নয় নিশ্চয়, নিজের নাম বাংলায় লিখতে গিয়ে র-ফলা আর ৃ তে গুলিয়ে ফেলছে। ফেলে সে নিজেও হাসছে, তার বউও। বলছে, "সিরিয়াসলি, বাংলাটা এত খারাপ হওয়ার কিন্তু কোনও মানে নেই।"

      আমি লিখে দিতে পারি, বাংলা মাধ্যমের গড়পড়তা ছাত্র যা ইংরিজি জানে, ইংরিজি মাধ্যমের গড়পড়তা ছাত্র তার থেকে খারাপ বাংলা জানে। কিন্তু বাংলা মাধ্যমের ছাত্রটিকে ইংরিজি না জানা নিয়ে মরমে মরে থাকতে হয়, আর ইংরিজি মাধ্যমের ছাত্রটি নিজের ভাষা না জানার লজ্জা তো দূরে থাক, বরং বেশ আত্মপ্রসাদেই ভোগে। সে নিজে, এবং তার বাড়িশুদ্ধু লোক।

      আমাদের মাথায় কে ঢুকিয়ে দিল যে নিজের মাতৃভাষায় দক্ষ না হওয়াটা লজ্জার নয়, আর ইংরিজিতে কাঁচা হওয়াটা একেবারে ছিছিক্কারের যোগ্য, সেটাই আমার কাছে রহস্য। যতদিন না এই মনোভাবের পরিবর্তন হচ্ছে, যেটা হওয়ার কোনও আশা দেখছি না, ততদিন জাতি হিসেবে আমাদের খুব বড় কিছু করার আশাও নেই।

      Delete
    2. ইঞ্জিরি মিডিয়ামে যে মোটেই বাংলা শেখানো হয় না, সে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। আমার এক বন্ধুপত্নী, কলকাতায় জন্ম-কর্ম, বাংলা পড়তে পারেন না। তিনি ভাল ইঞ্জিরি জানেন, তা নিয়ে গর্ব আছে, উপরন্তু ফ্রেঞ্চ শিখবেন বলে মনস্থ করেছেন। কিন্তু তবু, বাংলা শেখার ইচ্ছে নেই! এবার, তাকে গাল দেওয়ার আগে তাঁর বর, মানে আমার বন্ধুটির গল্প শোনো- বারো ক্লাস অবধি বাংলায় স্বপ্ন দেখেছে- এখনো অধিকাংশ বাংলা শব্দ ভুল করে। ছাত্র খারাপ নয়, অনুসন্ধানী মনের অধিকারী- কিন্তু বাংলা লিখতে-বলতে বেজায় সমস্যা।
      কাকে কি বলবো বলো!
      তবে তোমার পোস্টটা দেখে একটা জোর পেয়েছি, আইডিয়াও। হাতের অসংখ্য কাজ সেরে একটু সময় পেলেই 'কথা' য় একটা লেখা বের করার চেষ্টা করবো।

      Delete
  8. কাটা। বাংলা একটা মৃতপ্রায় ভাষা, আর আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে আমাদের জীবদ্দশাতেই এর অবলুপ্তি দেখে যেতে পারব। কথায় কথা বাড়ে, আর সঙ্গে রক্তচাপও। ভাল লাগছে না।

    We're fighting a losing battle, Kuntala.

    ReplyDelete
  9. কি আর বলব, পাঁচ বছর বয়েসে এলাহাবাদ গেছি, তখন আমার বোনের বয়স ৮ মাস। তার পর থেকে স্কুলে কোনদিন বাংলা না পড়লেও আমরা দুজনেই যে স্বচ্ছন্দে বাংলা পড়তে লিখতে পারি সেটা সম্পূর্ণ আমার বাবা মায়ের সেকেলে হওয়ার গুণে। তাই ছোটবেলায় বাংলা না শেখানোর ব্যাপারটা আমি ঠিক বুঝিনা। আর জীবন যা লাগবেনা সেটা না শেখানোর ব্যাপারটা আরও গোলমেলে। সামান্য একটু অঙ্ক আর বেসিক সেন্টেন্স পড়া ছাড়া বিশেষ কিছু না শিখেই জীবনধারণ করা যায়। তাহলে কি আর কিছুই শেখার দরকার নেই?

    শেষে কবি অপূর্ব দত্তর এই কবিতাটা 'কোট ' না করে পারলামনা:

    বাংলা-টাংলা

    অ্যানুয়ালের রেজাল্ট হাতে বাড়ি ফিরল ছেলে
    মা বলল - কোন পেপারে কত নাম্বার পেলে?
    হিস্ট্রিতে মম, এইট্টি ফোর, ম্যাথসে নাইন জিরো,
    মা বলল - ফ্যানটাস্টিক, জাস্ট লাইক এ হিরো।
    সায়েন্সে ড্যাড, নট সো ফেয়ার, ওনলি সিক্সটি নাইন,
    ইংলিশে জাস্ট নাইনটি টু, অলটুগেদার ফাইন।
    জিয়োগ্রাফির পেপারে তো হান্ড্রেডে হান্ড্রেড,
    ডুবিয়ে দিল বেংগলিটাই ভেরি পুয়োর গ্রেড।
    ছেলের মাথায় হাত রেখে মা ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে-
    নেভার মাইন্ড, বেংগলিটা না শিখলেও চলে।
    বাবা বলল- বেশ বলেছ বঙ্গমাতার কন্যে,
    বাংলা-টাংলা আমার মতো অশিক্ষিতের জন্যে।
    বিদ্যাসাগর রবীন্দ্রনাথ নেহাৎ ছিলেন বোকা,
    না হলে কেউ শখ করে হয় বাংলা বইয়ের পোকা!
    মা বলল - চুপ করো তো, ওর ফল্টটা কিসে
    স্কুলে কেন বেংগলিটা পড়ায় না ইংলিশে ?

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাঃ, সুন্দর কবিতা।

      বাংলাদেশে অবিলম্বে বেশ কয়েক লাখ সেকেলে বাবামায়ের দরকার সুগত, না হলে আর দেখতে হবে না।

      Delete
  10. মৌচাকে ঢিল মেরেছ দি। আগেও (মানে আমাদের সময় বা তারও আগে) ইংলিশ মিডিয়াম ছিল, ছিল বাংলা মিডিয়ামও। ভালোই ছিল, পাশাপাশি ছিল। ইংরিজি মিডিয়ামের ছেলেপুলে দেখলে হীনমন্যতায় ভুগতাম, এটাও ঠিক। তখন মনে হত কত কি মিস্‌ করছি। এখন তো কেমন জানি মনে হয়, বোধহয় সেরকম কিছু মিস করিনি। কিছু জিনিস - যেমন বলিয়ে-কইয়ে হওয়া বা ইংরিজিতে মনের ভাব প্রকাশ করা - এগুলো হয়ত বেশ খানিকটা পরে শিখেছি, কিন্তু অঙ্কটা, ভূগোলটা, ইতিহাসটা তো ভুল কিছু শিখিনি। তার থেকেও বেশী মনে হয়, শিখতে চাওয়ার ইচ্ছেটা তো বেশ ভালোই তৈরী হয়েছে। এতে মনে হয় শিক্ষককূলের একটা বড় ভূমিকা ছিল। বাংলা মিডিয়াম মানেই পাতে না দেওয়ার মত শিক্ষক এরকমটা ছিল না। এখন কি অবস্থা জানিনা। আর যেটা ছিল, সেটা হচ্ছে সহপাঠীরা। তারা সবসময় একে অন্যকে এক পায়ে খাড়া করে রাখতো। ঢিলেমির সুযোগই ছিল না। তবে সত্যি কথা বলতে কি আমাদের নিয়ে (বা আমাদের পড়াশুনো নিয়ে) বাবা-মা এর এতো আদিখ্যেতা ছিল না। দুটো ইংরিজি শিখলো কি না শিখলো তাতে কিছু যায় আসত না। ছেলেটা ঠিক সময়ে স্কুলে যাচ্ছে কিনা, টিউশন কামাই করে বিড়ি-টিড়ি খাচ্ছে কিনা আর সব ক্লাসে পাশ করছে কিনা এই ছিল বাবার দেখার বিষয় আর মা দেখত খেলাটেলা সেরে ঠিক সময়ে পড়তে বসছি কিনা, ব্যাস। এই যে গুরুত্বহীনতার মধ্যে বেড়ে ওঠা - এর যে কি আনন্দ বলে বোঝান যাবে না। পরে কি হবে তা নিজে তো ভাবিই না, অন্য কেউও যে ভেবে তার মাথার চুল পাকিয়ে ফেলছে এটাও দেখতে হয় না। আমি তো এই একটা ব্যাপারে এখনকার বাচ্চাদের থেকে র‍্যালা নিই। আমার ইংরাজি শেখা বা না শেখা, আমার সাঁতার কাটা বা না কাটা, আমার এ-বি-সি-ডি বলা বা না বলা এইসবের ওপর আমার বাবা-মা র সুখদুঃখ নির্ভর করছে এটা দেখলে যে কি 'অসাম শালা' চাপ নিজের ওপর নিতে হত সেটা ভেবেই আমি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যাচ্ছি। সুনন্দর এই কথাটা তাই আমার বেশ লেগেছে -- বাচ্চার জীবনে ঠিক কোন জিনিসটা কাজে লাগবে, সেটা বাবা-মা আগে থেকেই বুঝে গেলে সে বাচ্চার 'হইল আর কি'...

    ReplyDelete
    Replies
    1. "তখন মনে হত কত কি মিস্‌ করছি। এখন তো কেমন জানি মনে হয়, বোধহয় সেরকম কিছু মিস করিনি।"

      হায়েস্ট ফাইভ আবির। আর তোমার বাকি মন্তব্যের সঙ্গেও একমত। ইংরিজির পরশপাথরের খোঁজে ছুটতে গিয়ে বাবামায়েরা যে আরও কত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ভুল করে ফেলছেন, ভাবা যায় না। আমি আমাদের ছোট মফস্বল শহরের কথা বলতে পারি। যার সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে নেহাত কম নয়। যোগ্য শিক্ষক নিয়ে বসে বাংলা স্কুলগুলো মাছি তাড়াচ্ছে, আর বাবামায়েরা ছুটেছেন ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা হ্যানা পয়েন্ট ত্যানা পয়েন্টে। সেখানে যারা পড়ান, তাঁদের দেখলে...যাই হোক সে বিষয়ে কথা না বাড়ানোই ভালো। ওই স্কুলে তো বাংলা দূর অস্ত, ইংরিজিও শিখবে না। এই সহজ সত্যটা যে কেন মাথায় ঢুকছে না, বুঝতে পারছি না।

      Delete
  11. achha, ei assam sala ta ke? eta ki kono TV program. sudur americay tow NDTV 24X7 news channel ta chara aar kichu paina, tai ei program tar katha shunini. bariteo keo kichu bolte parlo na. tnarao bibhinno bhashay shudhu khobor shonen :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. মীর কে চেন নিশ্চয়? সেই যে রেডিও মিরচির জকি ছিলেন, সানডে সাসপেন্সের মূল অভিনেতা এখনও আছেন, আর ভূতের ভবিষ্যতে ভিলেন প্রোমোটারের ভূমিকায় ফাটাফাটি অভিনয় করেছিলেন আর ঋতুপর্ণকে ভেঙিয়েছিলেন? তিনি মীরাক্কেল বলে একটি প্রোগ্রাম করেন। আগেই সাফাই গেয়ে রাখছি, আমি ব্যাপারটা দুমিনিট দেখেছি, এবং শিউরে উঠে চ্যানেল ঘুরিয়েছি। ওই অনুষ্ঠানেরই একটা জনপ্রিয় স্লোগান হচ্ছে, "অসাম সালা..."

      আমার ধারণা, ওখানে এসে অনেকে নাচ গান কবিতা আবৃত্তি করেন, আর তাঁদের পারফরম্যান্স ভালো লাগ্লে মীরবাবু "অসাম সালা" বলে তাঁদের উৎসাহ দেন।

      Delete
    2. ha bhagoban...ota slogan!!!

      Delete
    3. স্লোগান মানে, পপুলার ডায়লগ আরকি।

      Delete
  12. EkTa somoy jokhon prothom bari chhere baire elam tokhon amar obostha thik oai engreji na jana chheleder moton morome more jete hoto ... tokhon mone mone bhebechilam je bangla medium-e keno porechhi ... kintu ekhon rr ta mone hoy na ...

    erokom ekTi somoyupojogi upolobdhi aapni khub sundor bhabe tule dhorechhen, tar jonye aapnar dhonyobaad prapyo ...

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে ধন্যবাদ আবার কীসের রাজীব, আমার ধারণা এটা আমাদের সকলেরই মনের কথা।

      Delete
  13. হ্যাঁ রে কুন্তলা, আমার মেয়েটাকে তো সেই ইন্জিরি ইস্কুলেই পাঠাচ্ছি।
    তাকে নিয়েও এই দশা হবে না তো।
    মানে ইস্কুলের অ্যাফিলিয়েসন আছে, আর মেয়েও "ক্ষীরের পুতুল","ঠাকুমার ঝুলি" পড়লে শোনে, তাও ....

    ভয় দেখাস নি মা!

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে ধুর আমার কথায় আবার ভয়। আর সব ঠিকই হবে, চিন্তা কোরো না।

      Delete
  14. Bhalo likhechen..kajer chap e porte deri hoye gelo...sob comment pore otha holo na...but ja bujlam besh serious alochona choleche...

    ami beshi gobhir e jabo na...ek khub bhalo bondhur comment bolbo..amar sohokormi..jamalpur nibasi..obangali..eksathe career suru kori...bohudin kolkata e chilo..se ekhun 'jobantor'(job change) kore gujrat nibashi...kichudin age dekha korte ese ekti ukti korechilo..
    'yaar bangali kitna mitha lagta hai re..idhar aaya to kan me sunai de raha hai...man bhar jata hai..nahi to udhar kuch bhi samajta nahi gujrati...'
    eta sune pran juria gechilo.. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. তবেই বুঝুন সৌমেশ, এমন মিষ্টি ভাষা আমাদের আর আমরাই কি না পায়ে ঠেলছি।

      Delete
  15. ei lekhatar jonye tomar bhashay "highest five" kuntala di..ar amar to mone hoy nijer matribhasha niye ei heenomonyota thakle seta kintu choritrer akta ongo i hoye daray..baba-ma ra bhabchhen unnotir siri banachhen kintu ko bochhor baadei ei "awesome sala" ta tnader i kachhe bumerang hoye fire asbe na to?

    ReplyDelete
    Replies
    1. সে ভয়টা যে আমারও লাগে না তা নয় স্বাগতা। তবে সেরকমটা না হলেই সব দিক থেকে মঙ্গল আরকি।

      Delete
  16. আমার দক্ষিণ ভারতীয় বন্ধুদের সাথে কথা বললে মনে হয় ওদের রাজ্যগুলোতেও এই একই ব্যাপার
    ঘটছে। অ-ইংরেজী স্কুলগুলোর হাল ভালো নয়। তবে মাতৃভাষা নিয়ে ওদের মাথাব্যথা আমাদের চাইতে বেশী, তাই জল এখনো অতদূর গড়ায়নি। আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করেছি, এখন বাংলা স্কুল্গুলোতে প্রধানতঃ সেইসব ছেলেমেয়েরা আসে, যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই "এইরকম পরিবেশে" বাচ্চাকে পাঠাতে চাননা। ফলে যেটা হয়, সেটা একটা vicious cycle, আর কি।

    স্বস্তিক

    ReplyDelete
    Replies
    1. স্বস্তিক, আপনার "এইরকম পরিবেশে"র কথাটা ঠিক। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, একসময় এই পরিবেশের যুক্তিটা ইংরিজি মাধ্যমের উল্টোদিকেও কাজ করত। আমি নিজের কানে লোকজনকে বলতে শুনেছি, "ইংরিজি মিডিয়ামে পড়লে মানুষকে আর মানুষ মনে করবে না, কাজেই বাংলা মিডিয়ামই মাথায় থাক।"

      তবে এই বাজারে হয়তো গরিব হওয়াটা নাকউঁচু হওয়ার থেকে বেশি দোষের, কাজেই।

      Delete
  17. আপনার লেখাটার কিছুকিছু অংশের সাথে একমত হলেও, কয়েকটা বিষয়ে আপনার সাথে ভিন্নমত পোষণ করি।

    ১। বাংলা বোর্ডের স্কুলগুলো পড়াশুনোর দিক থেকে যুগপোযোগী হতে পারেনি, তাই সেন্ট্রাল বোর্ডের স্কুলে পাঠানোর পিছনে বাবা মায়েদের যথেষ্ঠ সঙ্গত কারণ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বাচ্চাদের ঘাটতি তৈরি হয়ে যায় অনেক সময় । এটা থেকে বাঁচার উপায় হল বাংলা বোর্ডের স্কুল আর সিলেবাসের উন্নতি করা, তাহলে আপনিই আবার ছেলেপুলে হৈ হৈ করে বাংলা শিখবে।

    ২। শব্দভাণ্ডারে খালি সাধুশব্দ রাখবো, এই অযথা কৌলীন্য বরং বাংলাভাষার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। 'অসামসালা' শব্দটা খুব 'ক্যাচি', এবং বাংলা শব্দভাণ্ডারে স্বাগত। বাংলায় প্রচুর শব্দ খুবই 'জঘন্য' (প্রসঙ্গত, এই 'জঘন্য' শব্দটাও বেশ 'জঘন্য' !) । আবার
    ইংরাজী অন্য ভাষা থেকে নিত্যনতুন শব্দ ধার করছে, এবং নিয়ত বিস্তার লাভ করছে।

    তবে বাঙ্গালী হিসেবে বাংলার চর্চা আর শ্রীবৃদ্ধি আমাদের কর্তব্য- এ বিষয়ে একমত।

    ReplyDelete
  18. বড়ো ভাল লিখেছেন, কুর্নিশ!
    ইংরেজি ভাল জানতে হলে বাংলাটা যে কেন ভুলতে হবে (বা না জানলেও চলবে) সেটা আমিও ঠিক বুঝলাম না আজও। :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. বোঝা খুবই শক্ত বলেই বোঝেননি অরিজিৎ। ওতে আপনার কোনও দোষ নেই।

      Delete
  19. Hothat kore kajer faanke lunch time-e purono golpo porchhilam Abantar-e. ei lekhati khub bhalo laaglo ebong samayopojogi. aamra baire thaki bole prai somoyei amar saat bochhorer chhele-ke bishesh kore bangalider kaach theke shunte hoi je se bangla bolte pare kina ba barite ki bhashai kotha bole. Tokhon amar chhele khanik abak hoye tader dike takai.

    Aamar khub parichito lokjon jara Kolkatabasi tader dekhechhi English medium school-e bachcha-ke bhorti koriyei khanto honni abar second language keo change kore Hindi korechhe bangla-r bodole karon bangla janle kono laabh nei. Amar ei byaparta khub-i kharap legechhe.

    Susmita.

    ReplyDelete

Post a Comment