কথোপকথন



ক্যায়সে ইংলিশ বোলতে হ্যায় ইয়ে লোগ। 

অভিযোগটা মিস করে যেতে পারতাম। কারণ সমস্ত মনোযোগ ন্যস্ত ছিল দুহাতে ধরা পাসপোর্টে। কাজটা যতটা কঠিন হবে ভেবেছিলাম তার থেকেও কঠিন। জানালার সিট চেয়ে এমারজেনসির এক্সিটের জানালার সিট পেয়েছি। ওটা অনেকের কাছেই কভেটেড কারণ পা ছড়ানো যায়, সামনের সিট অসভ্যের মতো নাকের ওপর পড়ে না। মুশকিল একটাই, ওই সিটে বসলে পায়ের সামনে তো বটেই, কোলেও কোনও রকম হ্যান্ড লাগেজ রাখা বারণ। সব তুলে দিতে হবে ওভারহেড বিনে। ব্যাগ, মানিব্যাগ, পাসপোর্ট সব। 

প্রশ্নই ওঠে না। কারণ আমার এ বারের বনযাত্রার থিম পাসপোর্ট না হারানো। ব্যাগ তুলে দিয়েছি, কিন্তু পাসপোর্ট দুই হাতের মধ্যে নিয়ে বসে আছি। নেক্সট আটঘণ্টা এই ভাবেই বসে থাকব। এদিকে প্লেন ছেড়েছে রাত আড়াইটেয়। যখনতখন ঘুমিয়ে পড়তে পারি এবং হাতের গ্রিপ খুলে পাসপোর্ট পড়ে যেতে পারে। কাজেই ওই মুহূর্তে অন্য কোনও দিকে মন দেওয়ার প্রশ্নই নেই। 

আমি সাধারণত পারিপার্শ্বিকের দিকে দরকারের বেশিই নজর দিই। সামনের লোকের অর্ধেক কথা মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে অথচ তিনটে টেবিল পেরিয়ে চতুর্থ টেবিলের কে কার বাবা কে শ্বশুর, ফার্স্ট ডেট চলছে নাকি ব্রেক আপ হবে হবে, কে তারকভস্কি দেখে কে তারানতিনো সে সব আমি ক্যাচ করে ফেলেছি - এ রকম অনেক বার ঘটেছে।  

এই রকম কমপালসিভ লোক-দেখিয়ে হওয়া সত্ত্বেও ওই মুহূর্তে আমি আমার আশেপাশের লোকজনের দিকে দেখিনি। দেখিনি মানে কি একেবারেই দেখিনি? আমার যে রকম দেখা স্বভাব তার তুলনায় কম দেখেছি, কিন্তু যাঁরা একেবারেই দেখেন না তাঁদের তুলনায় বেশি দেখেছি। ভদ্রমহিলার চেহারা কেজো। পোশাকআশাকে ফ্যাশনের থেকে ফাংশানের ওপর জোর বেশি। ছোট চুল, সালওয়ার কামিজ। আর দেখেছি, দেখিনি কারণ ও জিনিস দেখা যায় না, কিন্তু টের পাওয়া যায় অব্যর্থ - আত্মবিশ্বাসের অভাব। মহিলা টিকিট হাতে নিয়ে ঠিক রো-তে ঠিক সিটের সামনে এসে সবাইকে জিজ্ঞাসা করছিলেন যে ঠিক জায়গায় এসেছেন কি না। আমাকেও করেছিলেন, পাসপোর্ট থেকে চোখ না সরিয়ে হুঁহাঁ-তে সেরেছি। কিছুক্ষণ বাদে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এসে মহিলাকে বলেছেন যে ওঁর হাতব্যাগ ওপরে রাখতে হবে। মহিলা নির্বাক। অ্যাটেনডেন্ট জিজ্ঞাসা করছেন, ডু ইউ স্পিক ইংলিশ ডু ইউ স্পিক ইংলিশ, মহিলা হ্যাঁ না-ও বলতে পারছেন না, জাস্ট তাকিয়ে আছেন। সেই একবার পাসপোর্টের সাধনা ভঙ্গ করতে হয়েছিল। ভদ্রমহিলা উঠে গিয়ে ব্যাগ রেখে এসেছেন। এবং আমি আবার আমার সাধনায় ফিরে গেছি। 

এমন সময় ওপরের মন্তব্য। স্বগতোক্তির মতো শোনালেও যেটা আসলে বলা হয়েছে আমাকেই উদ্দেশ্য করে। সাড়া না দেওয়া অভদ্রতা। সেকেন্ড তিনেক খরচ করে কনটেক্সটটা বুঝলাম। পেছনের সিটে একদল জার্মান যাত্রী বসে আছেন। অ্যাটেনডেন্টদের ডেকে ডেকে জল চা কফি চাইছেন। খালি বিশেষ্য পদ আর থ্যাংক ইউ, প্লিজ, এক্সকিউজ মি। টি, প্লিজ। ওয়াটার, থ্যাংক ইউ। 

পাসপোর্ট থেকে চোখ সরিয়ে মহিলার দিকে তাকালাম। 

মহিলা আবার বললেন, ক্যায়সে ইংলিশ বোলতে হ্যায় শুনা হ্যায়? 

না হেসে যতখানি হাসার ভঙ্গি করা যায় করলাম। তাতেই গড়গড়িয়ে বেরিয়ে এল। 

মহিলার বাবা কাকা দাদা সবাই প্রফেসর। হোমরাচোমরা ব্যাপার। আমার পেশা জানতে চাইলেন। ভয়ে ভয়ে বললাম। ভাবছি খারাপ ইংরিজি বলার সঙ্গে এসবের সম্পর্ক কী, তখনই মহিলা বললেন উনি নিজে স্কুলে পড়ান। ফ্যামিলির সবার মতো ওঁরও পি এইচ ডি আছে। মুখের আলো অল্প ডিম করে জুড়ে দিলেন, হিন্দিতে।  

কুয়াশাটা অল্প কাটল কি? 

মহিলা বললেন, এমন শিক্ষিত বাড়ি, কিন্তু বাড়িতে কথাবার্তা, পড়াশোনা, লেখাজোখা সবই হিন্দিতে। উনি ইংরিজি জানেন না তা নয়, পড়তে পারেন, বুঝতে পারেন, দিব্যি লিখতেও পারেন। খালি মুখে বলতে গেলে হ্যাজ বিন, হ্যাভ বিন গুলিয়ে একাকার। আর এরা দেখুন ইজ, আর পর্যন্ত উড়িয়ে দিয়েছে এবং বিন্দুমাত্র লজ্জা পাচ্ছে না। 

বড় করে শ্বাস নিলাম। নিজেকে সংযত রাখা জরুরি। না হলে ব্রেক কষা মুশকিল হবে। একবার শুরু করলে থামতে পারব না। বলে ফেলব, আমি জানি আপনি ইংরিজি জানেন। পড়তে পারেন, বুঝতে পারেন, লিখতে পারেন। কিন্তু বলতে গেলে জিভ জ্যাম, হার্ট ঢেঁকি। ওদের সে রকম হয় না কারণ ওরা কনফিডেন্ট। তার অনেকটাই বিনা পরিশ্রমে পাওয়া। সুবিধেজনক গায়ের রং, সুবিধেজনক গোলার্ধে জন্ম। তার ওপর ওরা ইংরিজি বলাকে জীবনের মোক্ষ মনে করে না। আমাদের অনেক সুবিধে অলরেডি কম তার ওপর ইংরিজির জুজু। আমাদের সিনেমার ভাঁড়েরা ভুল ইংরিজি বলে। সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে দিলে শুভানুধ্যায়ীরা বলে যায় এর থেকে হাত পা বেঁধে জলে ফেলে দিলেই পারতে। ইংরিজি বলতে পারা আমাদের তূণের ব্রহ্মাস্ত্র, যা ছুঁড়ে আমরা সব প্রতিকূলতাকে জয় করতে পারি। আর সেই ব্রহ্মাস্ত্র বিনে শত কবচকুণ্ডল নিয়েও আমাদের কর্ণের কপাল, পি এইচ ডি বাগিয়েও আমরা নিরক্ষর সমতুল। 

অফ কোর্স, এ সব বলব না। কারণ আমি নিজেকে পাগল প্রমাণ করতে চাই না। এ সব বললে ভদ্রমহিলা সান্ত্বনা তো পাবেনই না, উলটে ভয় পেয়ে যাবেন। হয়তো অ্যাটেনডেন্টকে ডেকে বলবেন সিটটা চেঞ্জ করে দিতে। বলার সময় ইংরিজি ঠিক হল কি না কেয়ার করবেন না কারণ প্রাণ বাঁচানোর তাগিদ ভুল ইংরিজি বলার হেনস্থাকে অবশেষে অতিক্রম করে যাবে। 

সেটা অ্যাকচুয়ালি খারাপ হবে না। 

কিন্তু আমার মানইজ্জতের পক্ষে ভালো হবে না। গোটা প্রলাপটা গিলে নিয়ে শুধু বললাম, ইংরিজি বলাটা স্রেফ কনফিডেন্সের ব্যাপার। না ঘাবড়ে বলে যাবেন। বোঝানো নিয়ে তো কথা। 

নতুন কথা নয়। উনিও জানেন নিশ্চিত। কিন্তু জানলেও সোজা নয় এতদিনের ভয় কাটানো। অনেকবার, বারবার, শুনতে শুনতে, মনে পড়তে পড়তে আজন্ম জমানো হীনম্মন্যতার পাহাড় যদি এতটুকুও টোল খায়, সেও অনেক। 

***** 

যে রেটে চোখে চোখে রেখেছিলাম, নিজে হারিয়ে গেলেও পাসপোর্ট হারাত না। তা বলেই যে যাত্রা স্বস্তির হয়েছিল তেমন নয়। ব্রেন সে ব্যাপারে কলকাঠি নেড়েছে। বার বার জিজ্ঞাসা করছে, পাসপোর্ট তো হাতেই আছে কিন্তু বাড়ির চাবি? সেটা কোথায় রেখেছ? রেখেছ কি আদৌ? চোখের সামনে তো দেখছি না। হারালে নাকি আবার? তুমি...সিরিয়াসলি। 

আমি ফিরে আসার আগে অর্চিষ্মান বেরিয়ে যাবে, ফিরবে মিনিমাম দশ দিন পার করে। কাজেই বাড়ির চাবি সঙ্গে থাকাটা ক্রুশিয়াল। 

ট্রেন স্টেশনে নেমে পাসপোর্ট আর ঘরের চাবি পরীক্ষা করে ফাঁকা বেঞ্চ দেখে বসলাম। 'তেরো ডিগ্রি অ্যান্ড লাইট ড্রিজল' ওয়েবসাইটের স্ক্রিনে যতখানি নিরীহ পড়তে লাগে বাস্তবে ততটা নয়। ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে দেজা ভু হল। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ফ্রাংকফুর্ট এয়ারপোর্টের লাগোয়া রেলস্টেশনের মেঘলা স্যাঁতসেঁতে ঠাণ্ডা প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আমি আগেও কেঁপেছি। কাঁপার বিকল্প হচ্ছে দরকার অনুপাতে জামাকাপড় প্যাক করে সুটকেস চেক ইন করা। ঝলমলে এয়ারপোর্টে কোটি কোটি লোকের সঙ্গে কনভেয়ার বেল্টের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা আর যতবার একেকটা করে সুটকেস মুখ বাড়ায় মনে করা, এইটা... না এইটাও আমার না...সর্বনাশ ওই লোকটা তুলে নিল যে, ওটাই কি আমার? দৌড়ে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করব? সিনক্রিয়েট হবে…তাছাড়া যদি আমার না হয়? আর ততক্ষণে যদি আমারটা এসে চলে যায়?… সবার সুটকেস চলে এল…আমার পাশে যে মহিলা ট্রলি নিয়ে আমাকে গুঁতোচ্ছেন, একে একে পাঁচটা সুটকেস তুলে নিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেলেন…একটা ক্লান্ত সুটকেস ঘুরছে সেই শুরু থেকে, হয়তো মায়ের দেওয়া ছোট্ট লাল সুটকেসটাও অন্য কোনও বেল্টে ঘুরছে গোঁত্তা খেয়ে খেয়ে… 

তার থেকে বরং মেঘলা, স্যাঁতসেঁতে ঠাণ্ডা প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আরও অনেকবার কাঁপব। 

ট্রেন এসে গেল। সুটকেস লাগেজের র‍্যাকে রেখে ব্যাকপ্যাক নিয়ে সিটের খোঁজে এগোলাম। সিট আগেভাগে বুক করা যায়। আমি করি না। কারণ এ সব দেশে মানুষের তুলনায় সিট বেশি। কোনওদিন কাউকে দাঁড়িয়ে যেতে দেখিনি। জানালার ওপর সরু ফিতের মতো স্ট্রিপে দাগানো কোন কোন সিট অলরেডি বুকড। নন-দাগী একখানা সিট দেখে বসলাম। মাঝরাস্তায় একবার ট্রেন বদল নিয়ে ঘণ্টা দেড়-দুইয়ের রাস্তা। এই সময়টায় অনেক কিছু করা যায়। যে কাজে যাচ্ছি সেটা ঝালানো যায়। অবান্তরের পোস্ট ভাঁজা যায়, ছোটগল্পের আউটলাইন করা যায়। রাস্তার দুপাশের দৃশ্যগুলো চেনা। তবু তাকিয়ে রইলাম। শহরের কাছাকাছি অঞ্চলে রেললাইনের ঘাড়ের ওপর বাড়ি, ছোট ছোট জানালায় সাদা লেসের পর্দা। কোনও জানালায় ইনডোর প্ল্যান্ট, কোনও জানালার শিক থেকে ঝুলছে সসপ্যান, হাতাখুন্তি, কোনও জানালার পাশে মিনিম্যালিস্ট টেবিলল্যাম্প। রাতে এই ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়াশোনা করে কেউ একাগ্র হয়ে। দৃশ্যটা কল্পনা করে আমার পড়তে বসতে ইচ্ছে করে হঠাৎ। শহর ছাড়ালে গাছপালা জঙ্গল। জঙ্গলের মাঝে মাঝে তিনকোণা ছাদ, জানালায় ফুলওয়ালা বাড়ি। বিস্তৃত মাঠ। 

ডু ইউ থিংক দিজ আর ফার্মল্যান্ডস? 

সহযাত্রীর নাম জিজ্ঞাসা করা হয়নি। মালয়েশিয়ার মেয়ে। ফ্রাংকফুর্টের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আমি যখন কাঁপছিলাম এ তখন মাথায় টুপি, হাতে দস্তানা গলাচ্ছিল। কোলের ওপর রাখা ঠোঙা থেকে অল্প মাথা বার করা প্রেটজেলের ওপর ফোন তাক করে ছবি তুলছিল। পিঠে ব্যাকপ্যাক, হাতে প্রায় নিজের সমান সাইজের একটা হলুদ সুটকেস। বেড়াতে এসেছে। ওরও নাকি বনে যাওয়ারই কথা ছিল, গন্তব্য বদলে যাচ্ছে কোবলেনজ। আর কোথায় কোথায় যাবে জিজ্ঞাসা করতেই ডিফেন্সিভ হয়ে গেছে। হওয়া অস্বাভাবিক নয়। বেশি সময়ে কম ঘুরছ কি না, কম সময়ে বেশি ঘুরছ কি না, আসল জিনিসটাই বাদ দিয়েছ কি না, লোক্যাল কুইজিন টেস্ট করেছ কি না, করলেও কোন দোকানে করেছ - বেড়ানো নিয়ে লোকে যা জাজ করে, বই পড়া নিয়েও তত করে কি না সন্দেহ।  

মেয়েটি জানাল যে ও তাড়াহুড়ো করে ঘুরতে বেড়াতে ভালোবাসে না। আশ্বাস দিলাম আমিও বাসি না। প্রসঙ্গ ঘোরালাম। জিজ্ঞাসা করলাম, প্রেটজেল খেতে ভালোবাস? 

মেয়ে একেবারে লাফিয়ে উঠল। বলল, কী দাঁতভাঙা খাবার রে বাবা। ওর কোন এক জার্মান ফ্রেন্ড নাকি মালয়েশিয়ান খাবার খেয়ে দুয়ো দিয়েছে এই বলে যে তোমাদের খাবার তো চিবোতেই হয় না। ও নাকি প্রেটজেলের ছবি তুলে ওই বন্ধুকেই পাঠাচ্ছিল এই লিখে যে তোমাদের খাবার চিবোতে দাঁত ভেঙে যায়। জার্মান খাবারের নিন্দে করে খানিক বন্ডিং হল। বললাম আমার যদিও প্রেটজেল মচৎকার লাগে। একটা নিয়ে বসলে টাইমপাস হয় আর খাওয়ার পর অনেকক্ষণের জন্য নিশ্চিন্তও থাকা যায়, কিন্তু আমার চেনাশোনা অনেকেই প্রেটজেল দু’চক্ষে দেখতে পারে না। বললাম, মালয়েশিয়ার খাবার আমার খুব ভালো লাগে। মালয়েশিয়ার খাবারদাবারের ব্যাপারে যেটুকু জানা ছিল, যথাক্রমে পেনাং কারি এবং রোটি চানাই, সে দুটোর নাম করে দাবিটা জোরালো করার চেষ্টা করলাম। 

ভাবলাম এবার নিশ্চয় ভারতীয় খাবারের কথা উঠবে। মিষ্টি দই, রসগোল্লার প্রত্যাশা করাটা বাড়াবাড়ি, সম্ভবতঃ বাটার চিকেন সম্পর্কে জানতে চাইবে। বাটার চিকেন সম্পর্কে কী কী ভালো কথা বলা যায় মনে মনে পয়েন্ট করার চেষ্টা করছি এমন সময় মেয়েটা আমাকে জিজ্ঞাসা করল, 

ডু ইউ ফিল সেফ ইন ইন্ডিয়ান রোডস? 

ওর কোন বন্ধু নাকি শ্রীলংকা ঘুরে গেছে, ইন্ডিয়া আসার জন্য মহা এক্সাইটেড। কিন্তু বন্ধুর স্বামী ভয়ে কাঁটা। সে বলেছে একা একা ইন্ডিয়া আসার কোনও দরকার নেই, যবে তার অফিস ছুটি পাওয়া যাবে তবে দুজনে মিলে আসা যাবে ইত্যাদি। 

ইংরিজি বলা নিয়ে কেউ কিছু বলতে এলে উত্তর আমার তৈরি আছে, কিন্তু একাধিকবার এই প্রশ্নটার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও এর উত্তর আমার তৈরি করা নেই। অ্যাঁ, মানে, ইয়ে এইসব করতে করতেই কোবলেনজ এসে গেল। ঢাউস হলুদ সুটকেস নিয়ে নেমে গেল মেয়েটা। যাওয়ার আগে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেল। বন আসতে তখনও খানিকটা পথ বাকি। আমি ফের জানালা দিয়ে দৃশ্যাবলী দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।


Comments

  1. Replies
    1. সত্যি? থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ।

      Delete
  2. Replies
    1. থ্যাংক ইউ, সায়ন। আপনার ভালোলাগা সর্বদা মন ভালো করে।

      Delete
  3. Khub Bhalo lekha Kuntala. Bonn-bas sukher hok. :)
    Ei english bola niye amraa jotota bhabi, Europe er chhotto chhotto deshgulo eke du-poyshar patta dyay na. amraai sudhu ei bhashata niye etto lafalafi kori :|

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাস নয়, ঝটিকসফর ছিল, অরিজিত। ফিরে এসেছি দিল্লিতে। আমার আর কিছুতেই আপত্তি নেই, বাঙালি হয়ে ইংরিজি বলতে না পারাটার সঙ্গে যে হেনস্থা, অপমান, লজ্জা জড়িয়ে আছে, সেটা নিয়ে হৃদয়বেদনা আছে। আর আপনি যেমন বললেন, অন্যদের এই পারা না-পারাটাকে পাত্তা না দেওয়াটা দেখলে সেটা আরও প্রবল হয়।

      Delete
  4. বড় ভালো লাগলো কুন্তলাদি,মনটা একটু খারাপ হলো, ইংরেজি বলতে না পারলে হেনস্থা নিয়েও আর ইন্ডিয়ান রোড সেফ এই প্রশ্ন আসে বলেও। আমি ইউএসে ভারতীয়দের সাথে কথা বলতে গেলে ইংরেজি ভুল হলো কিনা ভাবতাম, আমেরিকানদের সাথে বলতে অত ঘাবড়াতাম না,আমাদের যে মাতৃভাষা ইংরেজি না ওরা জানতো, ভারতীয়রা জানতো না কিনা।

    পাসপোর্ট নিয়ে সমস্যা হয়নি বলে অনেক শুভেচ্ছা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, আসল কাজটার থেকেও পাসপোর্ট নিয়ে এবার বেশি চিন্তায় ছিলাম, প্রদীপ্ত। তোমার ইংরিজি বলার ব্যাপারটার সঙ্গে রিলেট করতে পারছি।

      Delete
  5. Khub sundor lekha.. kopaler fere ami Germany er pashei achi ekhon.. Denmark e.. besirbhag lokjon kaj chalano english bole.. karur kono chap nei.. ar Durgapujor somoy bangali mayeder dekhlam.. baccha k bolche...this is also jhal.. and that is begun and all bhaja, u cant have it... I will finish this, then u take that mishti... Ekta word o bariye bollam na.. sotti...

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাড়িয়ে যে বলিসনি বিশ্বাস করছি ঊর্মি। আমার পাড়ার বাবামায়েরাও ওইভাবেই কথা বলেন। বলাই উচিত। বাংলাটা খারাপ না হলে ইংরিজিটা ভালো শেখা যায় না, সমীক্ষা করে দেখা গেছে।

      সেদিন কোথায় একটা পড়লাম ডেনমার্ক পৃথিবীর হ্যাপিয়েস্ট কান্ট্রি। তুইও আনন্দে আছিস আশা করি।

      Delete
    2. Hmm 2018 happiest na holeo 1st 5 ta desher modhye thake to dekhchi.. karon ekhane basic jinis gulo mane khabar, jol, electricity,rastaghat, all transports esob niye karur kono chinta korte hoyna.. tatei birokti ardheker besi kome jay.. ek jaygay porlam Germany te ekjon politician besi gach lagacchen na seijonno vote kom pawar chance... koto ar Obak hobo..

      Delete
  6. Khub shundor lekhata re Kuntala ..

    ReplyDelete
  7. bhishon bhalo laglo - prabasi bangalider ekhane dekhi bangla bhalo kore na janar anonde uchhosito puro! pretzeler byapare highest five. erokom bichhiri khabar duto nei.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আনন্দ হওয়াই উচিত, কাকলি। খেয়েপরে বাঁচার পথে যেটুকু বাধা ছিল সেটুকুও ঘুচল যখন।

      ওহ আমার আসলে প্রেটজেল দারুণ লাগে। মনে সত্যি সত্যি দারুণ লাগে। আমার চেনা অনেকের খুব খারাপ লাগে যেমন অর্চিষ্মানের। কিন্তু আমি পেলেই খাই।

      Delete

Post a Comment