একটি মফঃস্বলি তদন্ত
বানিয়ে লেখার ক্ষমতা আমার চিরকালই কম, কিন্তু অন্যান্য গল্পের ক্ষেত্রে সে বাবদে যেটুকু যা পরিশ্রম করে থাকি, এবারের চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম-এ ছাপা গল্প ‘একটি মফঃস্বলি তদন্ত’-র ক্ষেত্রে সেটুকুও করিনি। লোকজন, রাস্তাঘাট, লেখার সময় সব চোখের সামনে জ্বলজ্বল করেছে। এমনকি যে ঘটনাটা কেন্দ্র করে গল্প শুরু হচ্ছে, রাইটিং ওয়ার্কশপে যাকে লোকে ‘ইনসাইটিং ইনসিডেন্ট’ বলে ডাকে, সেটাও সত্যি সত্যি ঘটেছিল আমাদের পাড়ায়।
পরের আনুষঙ্গিকগুলো বলা বাহুল্য, বিশুদ্ধ গপ্প। Any resemblance to actual persons, living or dead, or actual events is purely coincidental.
অনেক সময়ই, বেশিরভাগ সময়েই, একটা ঘটনা ব্যক্তিকে যেভাবে প্রভাবিত করে, সমষ্টিকে তার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে করে। ধরুন, একটা পরকীয়া হচ্ছে। অফিসের ডেস্কে বসে ফোনে খবরটা পেলে, আপনি "ও আচ্ছা,” বলে ফোন কেটে আবার ক্যান্ডি ক্রাশ খেলবেন। ক্যান্টিনে বসে রুটি বাঁধাকপি খেতে খেতে খবরটা শুনলে, “স্বাধীনতা পেলে লোকে মাথায় চড়ে বসবেই” জাতীয় দুচারটে বুদ্ধিমান মন্তব্য করে ক্ষান্ত দেবেন। আর যদি টুইটারের হ্যান্ডেলে কিংবা ফেসবুকের ওয়ালে পান, তখন আপনাকে দেখলে চেনা যাবে না। ঐতিহ্যময় ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে স্লোগান দেবেন, পরকীয়া নিয়ে পুরাণ বনাম কোরানের স্ট্যান্ড নিয়ে লড়ে যাবেন এমনকী লিপ্ত দুপক্ষের শাস্তির নিদানও দিয়ে ফেলবেন। একজনের প্রত্যঙ্গছেদ, অন্যজনের গ্যাংরেপ।
চার নম্বরের এবারের গল্প ‘একটি মফঃস্বলি তদন্ত'-এর বিষয় এই সমষ্টির প্রতিক্রিয়া। এই রইল লিংক।
এটা একেবারে একঘর হয়েছে ।
ReplyDeleteধন্যবাদ, অন্বেষা।
Deleteবাঃ। দিব্য হোয়েছে। সাবাশ মুনমুন।
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, সুহানি।
DeleteKhub bhalo laglo.. tomar lekhar sathe to amra porichito... jokhon tomar aro naam-josh-khyati jobe ei blog r ei comment gulo sweet memory hoye thakbe. Papiya
ReplyDeleteহাহা, ও সব কিছু না হলেও এই কমেন্টগুলো আমার প্রাপ্তি হয়ে থাকবে, পাপিয়া। থ্যাংক ইউ।
Deleteলেখা মচৎকার হয়েছে। চরিত্রচিত্রণ একেবারে সার্থক। কিন্তু একটা প্রশ্ন কিছুতেই মিলছে না।
ReplyDeleteআসামবউ খুন হল কেন? মোটিভটা কি!? লোকটা ওকে বিয়েই বা করেছিল কেন? টাকা পয়সার তো গন্ধ নেই, মামারবাড়িতে মানুষ ইত্যাদি।
থ্যাংক ইউ, চন্দ্রচূড়। প্রশ্ন একেবারে যথাযথ। মোটিভের ব্যাপারটায় আলোকপাত করে এক প্যারা লেখা হয়েছিল। পাড়ার লোকেরা নিজেদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল যে মুনমুন হয়তো মরবে না, কারণ মুনমুনের বা মুনমুনের মায়ের টাকা নেই। তখন আরেকজন পয়েন্ট আউট করেছিল যে আসামবউয়েরও টাকা ছিল না। তখন ন্যারেটর বলবে যে ওইসব মোটিভটোটিভ আসলে গল্পের বইয়ের ব্যাপার। কাউকে না কাউকে মেরে ফেললে পৃথিবীর অনেক লোকেরই সুবিধে হয়, গায়ের ঝাল মেটে, সম্পত্তি হাসিল হয়। তা বলে তারা খুন করতে বেরোয় না। খুনেরাই খুন করে। তাছাড়া আমাদের গল্পের ভিলেন দু'দুখানা খুন করে পার পেয়ে সাহস বেড়ে গেছে। একটা লাইন ছিল প্যারাটায়, চা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে বলে গলা টিপে ধরলেই বা দেখছে কে। লোকটা এখন রেকলেস। তদুপরি, খুন হওয়ার যথেষ্ট ভালো মোটিভ নেই বলেই তো একটা খুনের হাতে মুনমুনকে ছেড়ে দেওয়া যায় না... ইত্যাদি প্রভৃতি।
Deleteএই সবই লেখা হয়েছিল। কিন্তু গোটা গল্পটা আমি একমাস ধরে শুরু করে ফেলে রেখে শেষ করেছি ঠিক আড়াই দিনে, যে আড়াই দিনে আমি ঘুমিয়েছি খুব বাড়িয়ে ধরলে পাঁচঘণ্টা। এক তারিখ বেলা চারটেয় যখন ফাইন্যালি লেখা/রিভিশন শেষ হল তখন মাথা বাঁই বাঁই ঘুরছে। আর একবারও গল্পটা নিজে রিডিং পড়তে গেলেও বমি করে ফেলব মনে হচ্ছে। ওই প্যারাটা কিছুতেই ম্যানেজ করতে পারছিলাম না। শেষে হাল ছেড়ে ডিলিট করেছিলাম।
সমাধান হয়েছে। 😊
Deleteআপনার প্রশ্নটার উত্তর দিতে গিয়ে যেটা মনে মনে জানতাম সেটা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে হল। এই সুযোগে লাস্ট মোমেন্টে কাজ (খারাপ করে) শেষ করার বিশ্রী অভ্যেসটা যদি সামান্য হলেও কমে...থ্যাংক ইউ।
Deleteআপনার লেখা পড়ে যত হাসি, কাঁদি, আনন্দ পাই সে সব হিসেব করে ধন্যবাদ দিতে বসলে কমেন্ট বক্স কাবার হয়ে যাবে। লিখতে থাকুন। 😊
ReplyDeleteকখনও মন খারাপ হলে এই কমেন্টটা এসে পড়ব। মার্ক করে রাখলাম।
Delete