প্রাক্তন (স্পয়লার সহ)
এ বিষয়টা আর গোপন নেই যে আমার জীবনের মূল উদ্দেশ্য নিজের মন ভালো রাখা এবং সে উদ্দেশ্যসাধনের পথে যারা বাগড়া দেবে সবাইকেই দরজা দেখানো। দেখিয়েওছি। খবর দেখা-শোনা-পড়া বন্ধ করেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় খেলতে নামিনি, বিশেষ কিছু আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব পরিচিতর সঙ্গে কথোপকথনকে স্রেফ "তাই বুঝি?" তে পর্যবসিত করেছি।
সেই আমি কি না যেচে শিবপ্রসাদ নন্দিতার পরিচালিত সিনেমা প্রাক্তন দেখতে বসলাম।
বেলাশেষে, পোস্ত, সর্বোপরি হামি পার হয়ে আসার পর এ কাণ্ড, জেনেশুনে মনকে হাঁড়িকাঠে চাপানো।
দোষটা ওপর ওপর দেখলে অর্চিষ্মানের কিন্তু তলে তলে সময়ের। যে সময়ে কাজের চেহারা তো ভোল পাল্টেছেই, তার থেকেও বেশি পাল্টেছে ছুটির ভোল। প্যানডেমিকে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের থেকেও প্রাণঘাতী নট-ওয়ার্কিং ফ্রম হোম। বাইরে খেতে যাওয়ার জো নেই, সিনেমাহলে যাওয়ার জো নেই, সপ্তাহে একবার দু'নম্বর মার্কেটে যাব বললেও অর্চিষ্মান শিউরে ওঠে। দৈনিক পদক্ষেপের কোটা দশ থেকে তিরিশ হাজার করে ফেললাম, টানা তিন-চার রাত না ঘুমিয়ে দেখলাম কেমন লাগে, তবু এনার্জি খরচ হল না।
কষ্ট ভোলাতে ঝাঁপিয়েছি আমাদের প্রিয়তম যুগল বিনোদনে। বাংলা সংস্কৃতির যা কিছু বিতিকিচ্ছিরি, বিদঘুটে, বদখতের আশ্রয়ে। মরিয়াপনা চ্যাটবাক্সে সিরিয়ালের বিয়ের দৃশ্যের ক্লিপিং চালাচালিতে এসে থেমেছে। এমন সময় ইউটিউব চ্যানেলে সোহিনী সেনগুপ্তর একটি ইন্টারভিউতে শুনলাম 'ইচ্ছে' ছবিটিতে তাঁর অভিনয়ের ডাক পাওয়ার গল্প।
অর্চিষ্মান লাফিয়ে উঠল। এটা মাথায় আসেনি কেন আগে?
কোনটা?
আজ ব্যাক টু ব্যাক শিবু নন্দিতা।
খাতা খুললাম পরিচালকদ্বয়েরও খাতাখোলা সিনেমা 'ইচ্ছে' দিয়ে । মেসেজ দেওয়ার অভ্যেসটা থাকলেও যাবতীয় অসুবিধেজনক এবং অস্বস্তিদায়ক সত্যিকে জীবাণুনাশক ঘষে বিদায় করার ব্যাপারটা তখনও ছিল না। যা ঘটে, আলতো করে দেখানোর একটা সততা তখনও ছিল। মগজে গজাল পোঁতার ভঙ্গিটা তখনও আসেনি। বেসিক্যালি, পরিচালকরা তখনও রেগে ওঠেননি।
একটু নরম হয়ে এলাম, অমনি অর্চিষ্মান আমার গলায় প্রাক্তনের ফাঁস পরিয়ে ফেলল।
কাগজ টিভি সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ রেখে যেমন কোনও খারাপ খবরের হাত থেকেই পালানো যায় না (যদিও তীব্রতা কমে এবং সেটাই যথেষ্ট) তেমনি প্রাক্তন না দেখেও প্রাক্তনের মূল কথাটুকু কানে সেঁধিয়েছিল। এবং নিজেকে প্রমিস করেছিলাম যে আর যা দুরাচার করি নিজের ওপর, প্রাক্তনের নারীবিদ্বেষী প্রোপাগান্ডার তীর নিজের মগজে যেচে বিঁধব না।
কিন্তু অর্চিষ্মান নাছোড়বান্দা। বলে, অত আতুপুতু করতে হবে না মনকে। সিনেমাটা না দেখার পেছনে যুক্তি খাড়া করতে যে পরিমাণ এনার্জি খরচ হচ্ছিল তার থেকে দেখে মনখারাপ করা বেটার মনে হল। আর দেখেই ফেললাম যখন তখন সে বিষয়ে মতামত প্রকাশ না করলে ভালো দেখায় না।
আর মতামত মানে নিন্দেমন্দ। সমালোচনার মধ্যে যে সম-আলোচনার দাবি থাকে, বা শুধু আমার কেন মনে ধরেনি তার ফিরিস্তি সম্বল করে সিনেমার "রিভিউ" লেখা যায় না ইত্যাদি যুক্তিতে আমাকে দাবিয়ে রাখতে পারবেন না কারণ সমালোচনা, রিভিউ, ক্রিটিক্যাল অ্যানালিসিস - এসবের কিছুই আমি করতে জানি না।
জানি না বলে কি নিন্দেমন্দ করব না? নিন্দেমন্দ হচ্ছে প্যারেটো ইম্প্রুভমেন্টের উৎকৃষ্টতম উদাহরণ। যার নিন্দে করলাম তার কিস্যু যায় এল না, আমার মন ভালো হল। অনেকেই এ সব থিওরি জানেন, নিয়মিত প্র্যাকটিসও করেন কিন্তু ঘাড় পাততে চান না। সেদিন কয়েকজন কমন চেনাকে নিয়ে একজনের সঙ্গে চল্লিশ মিনিট গুচ্ছের নিন্দেমন্দ করে উঠে যেই না বললাম, খুব ভালো লাগল আপনার সঙ্গে পি এন পি সি করে, তিনি শিউরে উঠলেন। "বলছেন কী, ওসবে ঘৃণ্য ব্যাপারে আমি থাকি না। আমাকে পাবেন খালি কনস্ট্রাকটিভ ক্রিটিসজমে।" তা তো বটেই, মুখে বললাম, মনে করালাম না যে গত চল্লিশ মিনিটে আধখানা কনস্ট্রাকটিভ অক্ষর উনি বার করেননি দাঁতের ফাঁক দিয়ে, উগরেছেন কেবল বিশুদ্ধ বিষ।
যে বিষয়টা দিয়ে নিন্দের খাতা খুলব সেটা একদিক থেকে দেখলে শিবুনন্দিতার দোষ নয়। সমগ্র বাঙালিজাতির বৈশিষ্ট্য। শিবুনন্দিতা ছাড়াও সমসাময়িক বহু চিত্রপরিচালক, গাইয়েবাজিয়ে, পত্রিকা-সম্পাদক সে বৈশিষ্ট্য বুঝে ফেলেছেন। তাঁদের শিল্পসংস্কৃতি চর্চা দেখলেই স্পষ্ট। বাচ্চাদের যেমন খাওয়ানোর সময় স্থির হয়ে বসিয়ে রাখতে গেলে ডোরা/ছোটা ভীম না দেখালে চলে না তেমনি বাঙালিকে আজকাল কিছু গেলাতে গেলে নাকের ডগায় সেলিব্রিটি দোলাতে হয়। শিবুনন্দিতা এটা বুঝেছেন তাই ট্রেনের একটি কুপে (গোটা গল্পটা ঘটছে বম্বে টু কলকাতা ট্রেনযাত্রার মধ্যে) গোটা পাঁচছয় বাংলা ব্যান্ড তারকাদের বসিয়ে রেখেছেন। গোটা কয়েক গান গাওয়া ছাড়া সিনেমায় তাঁদের আর অ্যাবসলিউটলি আর কোনও কাজ নেই।
এ ছাড়াও আরও ঠ্যাকনা আছে। নববিবাহিত দম্পতি আছেন এক জোড়া, যৌনতা এবং কমেডির ব্যাপারটা দেখেছেন। যে কোনও রুচিসম্মত সিনেমার অবশ্যম্ভাবী ক্রাইটেরিয়া হিসেবে মেমোরি গেমের বদলে অভিনব অন্তাক্ষরীর আমদানি হয়েছে। রুচিবান দর্শকদের মুখ চেয়ে সৌমিত্রও ট্রেনে সিট পেয়েছেন, ফাঁকে ফাঁকে কবিতা আবৃত্তি করেছেন। এতেও যদি কারও মন না ভরে তাদের জন্য ব্রহ্মাস্ত্র লাস্ট সিনে সাবিত্রীর হিন্দি। শুনে অতি বেরসিকও গড়াগড়ি খাবে। বাঙালি ভাষা নিয়ে অতি সেনসিটিভ। ইংরিজি বলতে না পারার লজ্জায় মরে আর হিন্দি খারাপ বলার গর্বে হেসে কূল পায় না।
কিন্তু এ সব নিয়ে কথা বলা মানে ঘরের মাঝখানে গোলাপি হাতি দাঁড় করিয়ে রেখে আজ কী গরম দেখেছ লাইনে আলোচনা চালানো। প্রাক্তনের বিপক্ষে যত প্রতিবাদ হয়েছে অধিকাংশেরই প্রতিপাদ্য লিঙ্গভিত্তিক অসাম্য। অবান্তরের রেসিডেন্ট নারীবাদী হিসেবে আমি প্রাক্তন-এর সেই অংশেই আলোকপাত করব।
রিভিউ মানে গল্প বলা নয়। কিন্তু এটা রিভিউ নয় কাজেই স্পয়লারটয়লারশুদ্ধু গল্পটা বলছি। সুদীপারূপী ঋতুপর্ণা বম্বে থেকে কলকাতা যাচ্ছেন ট্রেনে চড়ে। মালিনী বা মলিরূপী অপরাজিতা আঢ্য যাচ্ছেন মেয়ে (বাচ্চা মেয়েটির নাম পুতুল) নিয়ে, ওই কুপেই। সুদীপা বিবাহবিচ্ছিন্ন, মলির সুখের সংসার। কামরার চতুর্থ বাংকটি খালি। বাংকের যাত্রী নাগপুর থেকে উঠবেন।
সে যাত্রীর পরিচিতি এখনও আন্দাজ না করতে পারলে ক্ষুরদুটো এগোবেন।
মালিনী/মলিকে জন্মদিনের সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য নাগপুর থেকে উঠবেন মলির বর উজান। সুদীপার প্রাক্তন।
এর পর পূর্বাশ্রমের নানা টুকরোটাকরা ছবি ভেসে উঠবে। উজান সুদীপার বিয়ে কেন ভাঙল খোলসা হবে। সঙ্গে তুঙ্গ সাসপেন্স, পাছে মলির কাছে ধরা পড়ে যায় যে উজান সুদীপা আগে বরবউ ছিলেন।
এইখানে সিনেমা পজ করে আমরা রুটি বাঁধাকপি নিতে উঠেছিলাম এবং দুজনে দুজনকে একই প্রশ্ন একই সঙ্গে করেছিলাম। এই রকম ঘটনা মাঝেমাঝে ঘটলে আমি নিতান্ত উত্তেজিত হয়ে উঠি এবং দাবি করি এ সমপাত আমাদের মেড ফর ইচ আদার হওয়ার প্রমাণ। অর্চিষ্মান বলে, ঘেঁচু। প্রেমের বাড়াবাড়ির বদলে এ সমাপতন যা প্রমাণ করে তা হল আমাদের ভাবনাচিন্তার বহর এত সীমিত এবং সংকীর্ণ হয়ে এসেছে যে এক পরিস্থিতিতে একই প্রশ্নে আটকা পড়ে যাচ্ছি দুজনে।
ব্যাখ্যা যাই হোক না কেন যে প্রশ্নটা আমাদের মাথায় এসেছিল সেটা হচ্ছে যে আমরা যদি প্রসেনজিতের জায়গায় পড়তাম, কী করতাম। গোটা রাস্তা মুখে বড়া দিয়ে সাসপেন্স বজায় রাখতাম নাকি হাঁ বন্ধ করে পত্রপাঠ উপস্থিত পার্টিদের একে অপরের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিতাম?
দুজনেই নির্দ্বিধায় দ্বিতীয়টা বেছেছিলাম। এও বুঝে গিয়েছিলাম কেন আমাদের নিয়ে কোনওদিন সিনেমা হবে না।
যাই হোক মোদ্দা কথা হচ্ছে অ্যান্টি-নারীবাদী বললে যে ট্রোপগুলোর কথা মাথায় আসে, রিভিউ পড়ে রুদ্ধশ্বাসে সেগুলোর জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম। সুদীপা কেরিয়ার নারী, রাত করে বাড়ি ফেরে নির্ঘাত? বস্ ছুটির দিনে মেসেজ করে? উজানের দশটা পাঁচটার বেড়াভাঙা চাকরি, রাত বাড়লে সুদীপা জানালা ধরে দাঁড়িয়ে অল্প অল্প কাঁদে স্বামী সময় দিতে পারে না বলে? ভাগ্যিস ছেলেপুলে নেই, নাহলে সন্তানের জন্মদিনের পার্টি বাবা মিস করার এবং পরিণতিতে ডিভোর্সের চিঠি পাওয়ার প্লট পয়েন্ট থাকতই থাকত।
কিন্তু শিবুনন্দিতা আমাকে ফাঁদে ফেললেন। তাঁরা স্পষ্ট দেখালেন দোষ দু'পক্ষেরই। ইন ফ্যাক্ট, উজানের দোষ বেশি। তার পৌরুষাভিমান, পরিবারের গোঁড়ামো, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে (মিসক্যারেজ) সুদীপার কাছাকাছি না থাকা। শেষ গোলটা খেলাম লাস্ট সিনে। শুনেছিলাম হাওড়ায় নেমে চলে যাওয়ার সময় নাকি খালি সুদীপাই পেছন ফিরে উজানের দিকে তাকিয়েছে (যা অত-তেজ-না-দেখিয়ে-থেকে-গেলেই-হত আফসোসের ইন্ডিকেশন)। আদ্যন্ত অপপ্রচার। উজান এবং সুদীপা দুজনেই পেছন ফিরে ফিরে তাকিয়েছে। গুণে দেখেছি। যতবার এ, ততবার ও।
তা বলে কি নারীবাদের ঝাণ্ডা পতপতিয়ে উড়েছে? শিবুনন্দিতা নিক্তি মেপে ন্যায়বিচার বণ্টন করেছেন?
হাহা। না।
প্রাক্তন দেখে একটা ঘটনা মনে পড়ল। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়বৃত্তে এক মেয়ের ডিভোর্স হয়েছিল। ডিভোর্সের পর প্রথম অনুষ্ঠানে জমায়েত। মেয়েটি এসেছিল, মুখে সাহসী হাসি মেখে। আমার মতো অনেক স্বঘোষিত লিবারেলেরই নিশ্চয় বুক কাঁপছিল। কিন্তু আমাদের মুখে ঝামা ঘষে, বাড়িশুদ্ধু লোক মেয়েটিকে স্বাভাবিক উচ্ছ্বাসে আয়-বয় জানিয়েছিল। কেউ অস্বস্তিজনক কোনও প্রশ্ন করেনি। যিনি সবথেকে বেশি হাঁকডাক করে প্রগতিশীলতার পতাকা ওড়াচ্ছিলেন, তিনি তো এও বলে ফেললেন, বাঁচা গেছে ডিভোর্স হয়েছে, খারাপ বিয়ে টেঁকানোর থেকে ডিভোর্স একশোবার ভালো। তারপর মেয়েটির পিঠ চাপড়ে দিয়ে বললেন, তাছাড়া আধুনিক মেয়েদের ও রকম একটুআধটু ডিভোর্সটিভোর্স হয়েই থাকে।
প্রাক্তন-এর আমার ওই আত্মীয়ের সঙ্গে মারাত্মক মিল। প্রাক্তন বিচ্ছেদের জন্য সুদীপাকে দোষী বলে না। প্রাক্তন উজানকে নির্দোষ দেখায় না।
প্রাক্তন আরও পাতায় পাতায়। প্রাক্তন সুখী সংসারের সিক্রেট হিসেবে মলিকে দর্শকের সামনে উপস্থাপন করে।
মলি অল্পশিক্ষিত, অপরিশীলিত। সুখী সংসার গড়ার জন্য শিক্ষা, পরিশীলন কোনওটাই লাগে না বোঝাই যাচ্ছে, উল্টে সুদীপার সঙ্গে যদি তুলনা করেন ও দুটোর কম থাকা সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়ায়।
তা বলে মলি কি বোকা? অফ কোর্স না। মলির সুখের সংসার আকাশ থেকে পড়েনি, রীতিমত মগজাস্ত্র ব্যবহার করে এই সাফল্য রচনা করতে হয়েছে। সেই স্ট্র্যাটেজির নমুনা মলি যেচে সুদীপা (এবং দর্শকদের) শোনায়।
এক, রোজ ফোন করে শ্বশুরবাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলা। কথা বলতে ভালো লাগে বলে নয়, এখানে ভালোলাগাটাগার প্রশ্ন নেই, যদি এখনও বুঝে উঠতে না পারেন।
দুই, বাচ্চার নাম শাশুড়িকে রাখতে দেওয়া। হোয়াটস ইন আ নেম?
তিন, পাঁচ বছর, হ্যাঁ মলি স্পেসিফিক্যালি সময়ের সীমানা বলে দেয়। পাঁচ বছর শ্বশুরবাড়িতে ভালো বউ হয়ে থাক, তুমি ভালো বলে কিংবা শ্বশুরবাড়ির লোকদের তোমার ভালো লাগছে বলে নয়, ষষ্ঠ বছর থেকে এই ইনভেস্টমেন্টের সুদ গুণবে বলে।
স্বতঃস্ফূর্ত সততা, স্বতোৎসারিত ভালোবাসা ইত্যাদির সিন নেই নারীজীবনের সাফল্যের ব্লুপ্রিন্টে। ওসব মহৎ গুণরাজি তোলা থাকবে অন্য কারও জন্য। আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, রাতে একা বেরোতে না দেওয়ার থেকে কোনও অংশে কম নয় এই মহত্বের ভাগ না দেওয়ার নির্মমতা। আমাদের প্রোটোটাইপ এ জন্মে মৈত্রেয়ী বা মাতঙ্গিনী হবেন না, হবেন মন্থরারা।
সুদীপা শোনে, শেখে। আড়ালেআবডালে উজান সুদীপার কথা হয়। উজান স্বীকার করে এখন সে নিয়মিত বাজারে যায়। কানা বেগুন কিনে এনে গালি খায়। একদা পুরুষসিংহের কেশর এমন কী করে মুড়োল মলি, সুদীপা (এবং দর্শকদেরও) অনুচ্চারিত প্রশ্নের উত্তর উজান নিজেই দেয়।
মলির বয়সটা কম। আবদার করলে উজান ফেলতে পারে না।
বলা বাহুল্য, লাস্টে মলি ধরে ফেলে উজান আর সুদীপার সম্পর্কটা। যে রকম সেয়ানা মহিলা, না ধরলেই অদ্ভুত হত। ধরে ফেলে মলি কী করে বলে আপনার ধারণা? চেঁচায়, কাঁদে? গত ঘণ্টাকয়েকের শঠতায় পাথর হয়ে থাকে?
আপনি মলিকে কী ভেবেছেন বলুন দেখি? মলি তাই করে, যা যে কোনও বুদ্ধিমান মহিলা ওই পরিস্থিতিতে করত। স্রেফ চেপে যায়। কাঁদে না, রাগে না, একটিবারও তার মনে ঈর্ষার প্রবল আগুন দাউদাউ করে জ্বলে না (জ্বললেও মলি মুহূর্তের জন্য তার আঁচ পেতে দেয় না কাউকে)।
পাওয়ার অফ উইমেনস' সাইলেন্স নিয়ে অ্যাকাডেমিক পেপার পর্যন্ত লিখেছে লোকে, নিজের চোখে পড়েছি। অ্যাফ্রিকার ঘোর পিতৃতান্ত্রিক সমাজের মারের মুখে মেয়েদের চুপ করে থাকাটা যে আসলে অসহায়তা নয়, অসামান্য স্ট্র্যাটেজি, সেই মর্মে। এ অ্যাকনলেজমেন্ট অবশ্য নতুন নয়। এনার্জি ড্রিংকের বিজ্ঞাপনে খেলার মাঠে বালকদের খেলতে না নেওয়ার সটান অপমানের প্রত্যুত্তরে বালিকা ঝকঝকে হাসি হেসে দাঁড়িয়ে থাকে, সাইডলাইন থেকে বালিকার মা মেয়েকে সঠিক শিক্ষা দেওয়ার (নীরব) গর্বে ঝকঝক করেন। অকুস্থলে উপস্থিত বালকদের মায়েদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কারও হেলদোল নেই, কারণ মায়েরা শিক্ষা দিয়ে করবেনই বা কী, বয়েজ উইল বি বয়েজ। সেই বালিকাই যখন বড় হয়ে অফিস যাবে, বসের কুপ্রস্তাবের উত্তরে ঠাটিয়ে একটি চড়ের বদলে কথার প্যাঁচে বসকে কুপোকাৎ করবে, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির প্রগতিশীল অ্যাড উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেবে। বলবে, দেখেছ? আদর্শ মেয়ে হতে হলে ফর্সা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর যা লাগবে তা হল যে কোনও মূল্যে চেঁচানো পরিহার করা। বাংলার অতি বিখ্যাত লেখকের গল্প পড়েছিলাম, এক বউ রেখে বর চলেছে আরেক বিয়ে করতে। গোটা ব্যাপারটার অনাচার পাঠকের বুকে এসে বিঁধছে, কিন্তু ভিক্টিম অর্থাৎ প্রথম বউ কিচ্ছু বলছে না। ঘুরছে ফিরছে, রান্না করছে, বাসন মাজছে, গুরুজনের সেবা করছে এবং ভালো বউ বলে নাম কিনছে। বর বরং ভাবছে, বউ কিছু বলে না কেন। একবার একলা পেয়ে মুখ ফুটে জিজ্ঞাসাও করে, তোমার আপত্তি নেই? বউ স্মিতমুখে বলে, তোমার ইচ্ছেতে আমার আপত্তি থাকতে পারে না। তারপর যখন গেটে প্রজাপতি বসানো অ্যামবাসাডর এসে দাঁড়িয়েছে, বরবাবাজি দ্বিতীয়বার ধুতিপাঞ্জাবী চন্দন পরে আসনপিঁড়ি হয়ে গুরুজনদের আশীর্বাদ নিচ্ছে, এমন সময় উলুর সঙ্গে সঙ্গে প্রথম বউয়ের ঠোঁটে লাগানোর শাঁখের ধ্বনি বরের ঘোর ভেঙে দেয়। সবাইকে থমকে দিয়ে সে ছিটকে পিঁড়ি থেকে উঠে পড়ে গলার মালা টেনে ছেঁড়ে।
অর্থাৎ প্রথম বউ যে বরের বিয়ের সংবাদ পেয়ে চেঁচিয়ে পাড়া মাথায় না করে শান্ত হয়ে অপেক্ষা করল বরের ভেতরের বিবেক জাগ্রত হওয়ার, তাতে আখেরে তার লাভই হল। বরের বিবেক লাস্ট মোমেন্টে জাগ্রত না হলে কী হত সেটা ভেবে দেখার। "টাফ লাক" বলে মেয়েটির কাঁধ চাপড়ে সবাই বরযাত্রী চলে যেত সম্ভবতঃ।
যাকগে মরুকগে। প্রাক্তন দেখে এ সব চুল চিরতে বসা মানে কাঁঠাল খেয়ে 'ইস কী গন্ধ!' বলে আকাশ থেকে পড়া। বরং সিনেমার শেষের দৃশ্যের তাৎপর্য পর্যালোচনা করা যাক। দৃশ্যটি ইন্টারেস্টিং। পরদিন সকালে হাওড়ায় ট্রেন ঢোকে ঢোকে তখন সুদীপা কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়ে মালিনীকে বলে, গত কয়েকঘণ্টায় সে মালিনী আর পুতুলের কাছ থেকে জীবনের শিক্ষা এত কিছু শিখেছে যে কী আর বলা। মালিনীর থেকে কী শিখেছে সে তো বোঝাই যাচ্ছে, পুঁচকে পুতুলের থেকে কী শেখা হল সেটা জানার কৌতূহল রয়ে গেল। শর্তহীন হিরো ওয়রশিপ, আই গেস।
তখন মালিনী বিন্দুমাত্র মালিন্যে না ভুগে সুদীপাকে জড়িয়ে ধরে। বলে গিভ অ্যান্ড টেক কিছুমাত্র অসম হয়নি দিদিভাই, আমি তোমাকে নারীজীবনের সার্থকতার ম্যানুয়াল পড়িয়েছি কিন্তু তুমি আমাকে উজানকে দিয়েছ।
বলে যে যার রাস্তায় চলে যায় আর আমি বসে বসে ভাবি। এ কী দেওয়ালঘড়ি নাকি? যে গৃহপ্রবেশ এক মহিলা আরেকজন মহিলাকে হস্তান্তরিত করে যাবেন?
যত বয়স হচ্ছে তত বুঝছি, পুরুষরা কী মারাত্মক পিতৃতন্ত্রের শিকার। যেখানে যেখানে তাদের দেখতেশুনতে জয়ী মনে হচ্ছে সেখানেও। এ বাবদে চক্ষুরুন্মীলন ঘটেছিল বছর বারো আগে, সে গল্প অবান্তরে নিশ্চয় করেছি। একজন জানতে চেয়েছিলেন (খুব বেশি ঘুরিয়ে নয়, মোটের ওপর এই ভাষাতেই), যে আমার সংসারের সেইরকম কর্ত্রী হতে ইচ্ছে করে না কেন যেখানে আমিবিহনে সবাই চোখে অন্ধকার দেখবে। একবেলা বাপের বাড়ি যাওয়ার জো আমার থাকবে না কারণ আমার বর আমি না দিলে জল গড়িয়ে খেতে পারবে না। নিজেকে কারও কাছে এমনতর অপরিহার্য করে তোলার সোনার সুযোগ এলে আমি সেটাকে পায়ে ঠেলব নাকি।
ফ্র্যাংকলি, আমার বর যদি সত্যিই এ রকম হতেন এবং তাঁর প্রতি আমার বিন্দুমাত্র মায়াদয়া থাকত, তাঁর এই অকালকুষ্মাণ্ডতার প্রমাণ প্রাণ দিয়ে আড়াল করতাম। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ নিজের বেসিক প্রাণধারণের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল এতে অন্যের তো ছেড়েই দিন, উক্ত পুরুষটির কী মুখ উজ্জ্বল হয় আমার মাথায় ঢোকে না। কিন্তু এই অক্ষমতাকে অক্ষমতা বলে চিহ্নিত করা হয় না, একে দাগানো হয় অসুবিধে বলে। আমার আর অর্চিষ্মানের আলাদা থাকার সময়গুলোতে রেগুলারলি অর্চিষ্মানকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় যে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা কী হচ্ছে। প্রশ্নগুলো আসে মারাত্মক কৌতূহলোদ্দীপক পরিস্থিতিতে। বিয়েবাড়িতে মাটনের নরম তুলতুলে কচি পাঁঠা মুখে পোরার সময় বা বাজারে দাঁড়িয়ে জিভ পোড়ানো আলুর চপে কামড় দেওয়ার মুহূর্তে।
(কুন্তলা হয়তো তখন আবিষ্কার করছে যে ম্যাগি আসলে রান্না করার কোনও দরকার নেই। ওই দু'মিনিট এবং পরিশ্রমও বাঁচানো যায়। ব্যাপারটা অলরেডি ডিপ ফ্রায়েড, প্যাকেট খুলে কুড়মুড়িয়ে খেতে শুরু করলেই হয়।)
প্রশ্নকারকরা সবাই প্রগতিশীল, ভালোমানুষ এবং পিতৃতন্ত্রের শিকার। আমি সেটা বুঝি কাজেই মাইন্ড করি না। তাছাড়া আমি আশাবাদী, আমি জানি এখান থেকে এগোনোই যাবে শুধু। অর্চিষ্মান যদি সিনে না থাকত, কারও কি মাথায় আসত আমাকে খোঁচানোর যে ভাতকাপড়ের জোগাড় কী করে হচ্ছে?
আসত না, কারণ ওই প্রশ্নটা অ্যাদ্দিনে অবশেষে সিস্টেমের বাইরে বেরিয়ে গেছে।
অর্চিষ্মানের প্রতি প্রশ্নটাও যাবে। দাঁতে দাঁত চেপে আরও কয়েকদিনের অপেক্ষা।
"আমার আর অর্চিষ্মানের আলাদা থাকার সময়গুলোতে রেগুলারলি অর্চিষ্মানকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় যে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা কী হচ্ছে। " বাবাগো ।
ReplyDeleteবাই দ্য ওয়ে , গল্পটা জগদীশ গুপ্তের না ?
ReplyDeleteযদ্দূর মনে পড়ছে, না।
Deleteবনফুল| গল্পের নাম মনে নেই |
Deleteআমার স্পষ্ট মনে নেই, কিন্তু মন বলছে আপনি ঠিক।
Deleteগল্পের নাম তিলোত্তমা - জেনে নিয়েছি |
Deleteসর্বনাশ, আপনি তো করিৎকর্মা, মশাই! ঠাট্টা সাইডে রেখে, থ্যাংক ইউ।
Deleteকুন্তলাদি, দিবাকর ব্যানার্জীর সন্দীপ আউর পিঙ্কি ফারার দেখে ফেলুন না দেখা হয়ে থাকলে।এই স্টিরিওটাইপিং কে প্রতি পলে ঠুকেছে।আমাজন প্রাইম।
ReplyDeleteদিবাকরের জন্যই অর্জুন কাপুরের বিরক্তিকর এক্সপ্রেশন বসে দেখা যায়
ওটা দেখলাম, ঋতম। আমার তেমন কিছু একটা লাগেনি, তবে স্টিরিওটাইপ ভাঙার ব্যাপারটা ঠিকই বলেছ।
DeleteEi cinema ta amar otyontyo bhalo legechhe duto karone - kintu bolle spoiler hoye jabe. Se jak. Er porei jodi keu por tar dosh. 1) hero heroine ke khun korar chesta korechhe 2) tader bishesh bhalobasa hoyni , manush a manush a jotota hoy totota chhara
Deleteহাহা, মানুষে মানুষের প্রেমের পরিমাণের জায়গাটা পড়ে খুব হাসলাম।
DeleteEnaader cinema niye kothao alochona hole khub bhoy bhoy thaaki, pachhe keu jiggesh kore phele amaar kemon legechhe...
ReplyDeleteএখানে নির্ভয়ে থাকো, বলা বাহুল্য।
DeleteObaba.. Ek bondhu bolechhilo je prakton holo ijaazat et bangla. Shei shune khub asha nie dekhte giechhilam ar kono review na porei. Tar por bari phire, torighori youtube khule, abar ijaazat dekhe tobe daant kirmir kora ta bondho hoechhilo.
ReplyDeleteকীসে আর কীসের এর থেকে ভালো উদাহরণ আমি আর দেখিনি, ঈপ্সিতা। আপনার বন্ধুকে এ বাবদে ধন্যবাদ রইল।
Deleteএদের কোন ন্যাকামি কস্মিনকালেও দেখি না । কিন্তু কাঁঠালকে খারাপ বলবেন না, মনে লাগে ।
ReplyDeleteআরে, খারাপ বললাম কোথায়! কাঁঠালের কাছে বরং আমি কৃতজ্ঞ, এমন সুন্দর একখানা উপমায় ফিট করার জন্য 😀
Deleteঅফিস কেটে ফার্স্ট ডে সেকেন্ড শো দেখতে গেছিলাম প্রাক্তন।
ReplyDeleteআমায় ভুল ভাববেন না, নেহাত অচল সময় কাটছিলোনা, এবং বস আসেননি। সহকর্মী বন্ধুটির মন খারাপ ছিল, তাই সে দাবি জানাতে চলেই গেছিলাম।
ফেরার পর আমাদের দুজনকে সবার প্রশ্নের সামনে পড়তে হয়.. কেমন লাগলো ইত্যাদি।
আমার বন্ধুটি মাঝখানে আছে, তার বয়স্ক আর হানিমুন কুপের কমেডি পছন্দ হয়েছে, সুদীপার প্রতি নানা রকম সহানুভূতিও অনুভব করেছে।
এদের সবাইকে এতো বছর ধরে চিনি বলেই আমি আমার মনের কথাটা মুখ ফুটে বলতে পারিনি।
বিশেষত আমার টিম লিডকে তার আগে একবার কথায় কথায় ভুল করে বলে ফেলেছিলাম বেলাশেষে অসহ্য। সে আমায় এতো জাজ করেছিল, বলবার নয়..
অ্যাপ্রেসালের সময় সেই রেটিং দেয়, তাই প্রাক্তন আমার দারুণ ভালো লেগেছে।
বাই দ্য ওয়ে, ফার্স্ট ডে সেকেন্ড শো-এর সিনেমাগুলো খতরনাক হয়, প্রমাণ হল। আমিও গেছিলাম কাজল-আমিরের ফানা দেখতে, ফার্স্ট ডে সেকেন্ড শো। মা গো।
Delete*প্রথমবার নাম ভুল লেখার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী, বৈজয়ন্তী। আমার মন ও মগজ আপনার কথাই ভাবছিল উত্তর লেখার সময়, আঙুলের ডগায় বিম্ববতী এসে ঘাপটি মেরে বসে ছিল।*
Deleteআমিও জাজ করলাম, বৈজয়ন্তী। না চেনা সত্ত্বেও আপনার টিমলিডকে, বেলাশেষে ভালো লাগার জন্য। বাবামায়ের ঘরে ক্যামেরা ফিট করে দামড়া ছেলে বউ মেয়ে জামাইদের পপকর্ন নিয়ে মনিটরের সামনে বসা, অমন প্রগতিশীলতার মুখে আগুন।
তবে এ সব জাজমেন্ট সবই আড়ালে। আমার অ্যাপ্রাইসালের রেটিং দিলে তার সামনে আমিও প্রাক্তনকে অস্কার দিতাম। কাজেই হাই ফাইভ
O ma go, ami khub asha kore cha-muri niye enader cinema dekhte bosi, jhokjhoke print, tok toke bari ghor, chak chake jama kapor, Ma certificate diyeche blao --- ar tar porei hoy bejaay gondogol !!! Ar kichu bolbo na. Tobe Gotro ta bhalo legeche, cha-muri niye boshini, kichu asha korei boshini -- mondo laglo na.
ReplyDeletePrakton e je ki hoyechilo kissuti mone nei, oi Kolkata gaan ta chhara !!!
হাহা, হ্যাঁ চকচকে বটে, বং মম। ও দিকে কোনও খামতি পাবেন না। চা বানাতে যাচ্ছিলাম, বিস্কুটের বদলে মুড়ি নিয়ে বসব। অনুপ্রেরণার জন্য থ্যাংক ইউ।
Delete"আমার আর অর্চিষ্মানের আলাদা থাকার সময়গুলোতে রেগুলারলি অর্চিষ্মানকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় যে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা কী হচ্ছে।" আপাতত তিন মাস আলাদা থাকছি, তাতে আমাকে আর বেটার হাফকে সবাই একই প্রশ্ন করে যাচ্ছে, যদিও সে বছর কুড়ি ধরেই রান্না করে প্রায় রেগুলারলি।
ReplyDeleteঅনেক দিন পর এ পাড়ায় এলাম, আশা করি সুস্থ আছ কোরোনাকালে :)
বেঁচেবর্তে আছি, প্রিয়াঙ্কা। এ বাজারে তাই ঢের। হ্যাঁ, বর বেচারাদের এ জন্মে আর স্বাবলম্বী হওয়ার গর্ব জুটল না।
Deleteনাগপুর খুব গোলমেলে জায়গা, তখনও আর এখনও।
ReplyDeleteদেখেছেন, আমারও তলে তলে সেইরকম সন্দেহই হচ্ছিল। কনফার্মেশন পেয়ে ভালো লাগল। থ্যাংক ইউ।
Deleteআহা... এঁদের সিনেমার যতো নিন্দা শুনতে যে কি ভাল লাগে... আমিও এক বন্ধুর কথা শুনে হল এ গেছিলাম উফ.. তারপর থেকে তার কোনো রিভিউ বিশ্বাস করিনা.. বেলাশেষে যে নাটকটা থেকে নেওয়া সেটা গণভবনে দেখতে গেছিলাম ... ভালো লেগেছিল বলে সিনেমাটা আশা নিয়ে দেখতে বসেছিলাম... নমস্কার ঠুকেছি...
ReplyDeleteহাহা, তোর এই সৎ উচ্চারণ ভারি আরাম দিল, ঊর্মি। আমাদের আছেন কিছু স্টক সেলেব্রিটি, মন খারাপ কিংবা বোর হওয়ার দিকে এগোচ্ছে দেখলেই তাঁদের কাউকে তাক থেকে নামিয়ে নিন্দেমন্দ শুরু করি। একশো শতাংশ কার্যকরী।
Deleteওই রকম সংসারের কর্ত্রী হতে হলে মনে হয় দুদিনেই সংসার ছেড়ে পালাতাম। আমার আগের অফিসের এক ভারতীয় কলিগ, রোজ সকালে আমার বর আমার লাঞ্চ গুছিয়ে ব্যাগে ভরে দেয় শুনে প্রথমে ভেবেছিলেন অভারতীয় কারোকে বিয়ে করেছি। তারপর যখন শুনলেন চ্যাট খাঁটি বাঙালি তখন আমাকে বোঝাতে এসেছিলেন যে আমি কত খারাপ মানুষ যে বরকে দিয়ে বাড়ির কাজ করাই। অনেকক্ষণ চুপ করে শুনছিলাম, শেষে যখন বললেন যে বর যদি আমার ওপরে কমপ্লিটলি ডিপেন্ডেন্ট হয় সেটা আমার জন্য পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার এবং এই জন্যই ওঁর বৌ ওঁকে বাড়ির কুটোটিও নাড়তে বলে না, তখন আর সহ্য হয়নি, বলে ফেলেছিলাম, আমি একজন অ্যাডাল্ট মানুষকে বিয়ে করেছি যে নিজের দায়িত্ব নিতে পারে। যদি পরে কখনো মনে হয় যে আমার আমার ওপরে এতটা ডিপেন্ডেন্ট কারোকে নিজের লাইফে চাই তাহলে হয় নিজে একটা বাচ্চার জন্ম দেব নয়তো অনাথাশ্রম থেকে কারোকে অ্যাডপ্ট করবো। আমার বাড়িতে ফুল গ্রোন ডিপেন্ডেন্ট বেবি পোষার কোনো শখ নেই। ভদ্রলোক তারপর থেকে কেন জানিনা আমাকে দেখলেই অন্যদিকে হাঁটা মারতেন।
ReplyDeleteহ্যাঁ, চুপকথা। প্রোপাগান্ডাটার বহুমুখিতা আমাকে যতবার ভাবি চমৎকৃত করে। এই যে তুমি অপরিহার্য ভুজুং দিয়ে হোল লাইফের দিবানিশির দাসীগিরি , এ মতলব যার মাথা থেকে বেরিয়েছিল তার ক্ষুরে ক্ষুরে।
Deletedarun hoyeche lekha ta.. khub bhalo laaglo.. especially ekhon je aar keu meyeder bhaat kapor ke dicche jiggesh kore na, eta hothat notice kore darun laglo.. aamaaro kheyal holo je keu ei baje kotha ta aamake jigges koreni
ReplyDeletepraktan aamaar besh osojhyo legechilo.. jodio aami beshi kichu na bhebei sob suddhu bhule gechilam.. posto ta start korechilam dekhte.. premise bujhe emon matha gorom holo je aar dekhini..
jai hok at least cinema hall e giye dekhini ei bhaggi.. aamar o jaanen cinema hall er luck khub kharap.. je cinema tai dekhte jai hall e, setai baaje beroy..
bhalo thakben.. sabdhane thakben
Indrani
হলে গিয়ে আমারও নানারকম অভিজ্ঞতা হয়েছে, ইন্দ্রাণী। সে সব নিয়ে লিখব কখনও। পোস্টের আইডিয়ার জন্য থ্যাংক ইউ। আপনিও খুব ভালো আর সাবধানে থাকবেন। ভ্যাকসিন হয়ে গেলেও সাবধানে থাকবেন।
DeleteOti chamatkar , pore khub bhalo laglo
ReplyDeleteধন্যবাদ, শিবেন্দু। আমার সবসময়েই ভালো লাগে আপনার কমেন্ট পেলে।
DeletePrakton ba Belaseshe r msg ta bhalo (bhoy bhoy e likhlam keu na marte bose). Baki cinema, ei porichalok gon , dorshoker nari bhalo bojhen. R oi golpota Tilottama. BANFUL er, dwitiyo patri r naam Usha, sei chena purush, Usha noi Dwiprahar, Gokul kul Harailo.. r e jibon e keu I aporoharjoaporoharjo noi.. ekjon adult manush se male female jei hok na keno nijer kaaj j korte parena tar upbringing er problem royechhe. :Papiya
ReplyDeleteমারতে আসার প্রশ্নই নেই, পাপিয়া, কিন্তু মতভেদের অনুমতি চেয়ে বলি, প্রাক্তনের মেসেজ ভালো না। অতি খারাপ। বেলাশেষের মেসেজেও গোলমাল আছে। এই পরিচালকরা মেসেজও নাড়ি বুঝে দেন। অবশ্য নিজেরা বিশ্বাস করি না, স্রেফ পাবলিকের নাড়ি বুঝে মেসেজ দেব, এত বুদ্ধি বা প্রতিভা এঁদের নেই। এঁরা রন্ধ্রে রন্ধ্রে এগুলো বিশ্বাস করেন। আর দর্শকের বিশ্বাসের লেভেল নিয়ে আলোচনায় বসা সময় নষ্ট।
DeletePrakton bolte etai bujhechhi, oi middle age e ese, nijer bhul bujhte para .. baki sob ghotona r kotha na bolai bhalo..
ReplyDelete