ইতালিয়ান পিৎজা আর ডিকনস্ট্রাকটেড সামোসা



আমার ছোটবেলায় সাদাকালো অস্কার টিভিতে দেখা যে ক’টা অনুষ্ঠান মনে আছে, তার মধ্যে জিগস কালরা-র রান্নার অনুষ্ঠান একটা। তখন এখনকার মতো চ্যানেলে চ্যানেলে রান্নার অনুষ্ঠান আর গলিতে গলিতে জিম ছিল না, কাজেই জিগস কালরার অনুষ্ঠানটা চোখে পড়ত বেশ। অবশ্য শুধু অন্যান্য রান্নার অনুষ্ঠানের অনুপস্থিতিই চোখে পড়ার কারণ ছিল তাই নয়, কালরার রান্নার ধরণ বা অভিনবত্বও দায়ী ছিল। এখন যেমন সকলেই ধপধপে প্লেটে ঝোল দিয়ে কমা সেমিকোলন এঁকে তার ওপর আলু, আলুর ওপর ডাঁটাশুদ্ধু ধনেপাতা আর গোটা কাঁচালংকা রেখে খায়, তখন সে রকম ছিল না। তখন থালার পাশে ঝাল ঝোলের মধ্যে লুচি দিয়ে থেঁতলানো আলু পড়ে থাকত, হলুদ গা, ফ্যাটফেটে সাদা পেট, সে ছবি ছাপলে ইনস্টাগ্রাম থেকে ব্যান হতে তিন মিনিটের বেশি লাগত না। সেই জমানায় জিগস কালরা ছিলেন উজ্জ্বল উদ্ধার। 

শনিরবিবার সকালবেলা আমি আর বাবা খাটের ওপর পাশাপাশি বসে আনফোটোজেনিক লুচি আলুরদম কিংবা রুটি বাঁধাকপি খেতে খেতে কালরার শো দেখতাম। একটা রেসিপি আমার এখনও মনে আছে। বেগুন দুধে ভিজিয়ে রেখে দই মাখিয়ে ভেজে তার ওপর মধু ছড়িয়ে ফাইন চায়নার ধপধপে প্লেটে সাজিয়ে পরিবেশন করেছিলেন কালরা। আমরা সেই দেখে এমন উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম যে চিৎকার করে মাকে ডাকাডাকি করছিলাম। শিগগিরি এস, মাংস পুড়ে যায় পুড়ে যাক, কিন্তু এ জিনিস মিস কোরো না। মা আমাদের মন রাখতেই হয়তো রান্না ফেলে দৌড়ে এসে সেই মধু ছড়ানো বেগুনভাজা দেখে খুব হেসেছিলেন। 

সেই জিগস কালরা দিল্লিতে রেস্টোর‍্যান্ট খুলেছেন বেশ কিছুদিন হল, নাম দিয়েছেন মসালা লাইব্রেরি। লুৎইয়েনস দিল্লির একেবারে বুকের মাঝে সে দোকান মিস করে কারও সাধ্য নেই, আমরাও করিনি। আসতে যেতে অর্চিষ্মানকে প্রত্যেকবার কনুইয়ের ঠেলা মেরে দেখিয়েছি আর সেই দুধে ভেজানো বেগুনের রেসিপি বলেছি। তিনবারের পর অর্চিষ্মানের মতো ভদ্রলোকের পক্ষেও আর হাসা সম্ভব হচ্ছিল না, তাতে আমি দমিনি মোটেই। 

জিগস কালরাকে নিয়ে এত উত্তেজিত থাকলেও তাঁর দোকানে খেতে যাওয়ার সম্ভাবনা আমাদের দুজনের কারও মাথাতেই কখনও উদয় হয়নি। কারণ মসালা লাইব্রেরির দাম আমাদের রেস্টোর‍্যান্টে খরচের আপার লিমিটের অনেকটা ওপরে।  

বাধা শুধু পয়সাকড়িসংক্রান্ত নয়। এ সব দোকানে মেনু থাকে না, থাকে মেনু ফিলজফি। এদের প্রতিটি পদ ওয়ার্ক অফ আর্ট, যেটা পরিবেশন করার সময় আর্টিস্ট এসে সে পদের ইতিহাসভূগোল ব্যাখ্যা করে দেন। রেস্টোর‍্যান্ট জুড়ে এক্সপেরিয়েন্স কিউরেটররা ঘোরাঘুরি করেন। ক্ষণে ক্ষণে আপনার ‘জার্নি’র খবরাখবর নেন, নিচু গলায়, পরিশীলিত ইংরিজিতে। 

ফ্র্যাংকলি, ব্যাপারটা কল্পনা করলেই আমাদের নার্ভাস লাগে। অত লোকের সঙ্গে অত কথা, তাও আবার ইংরিজিতে, বলতে গেলে আমাদের খাওয়া মাথায় উঠবে। তার থেকে আমরা বরং দাওয়াত এক্সপ্রেসের তন্দুরির রুটির গুঁড়ো ছড়ানো সানমাইকার টেবিলে তোবড়ানো স্টিলের প্লেটে আলু জিরা আর রুটি খাব, সেও ভি আচ্ছা। 

*****

দিন পনেরো আগে একটা চিঠি এল ইনবক্সে। নেটওয়ার্কিং-এর  আমন্ত্রণ। জার্মানি থেকে ফ্রেন্ডরা এসেছেন, ইন্ডিয়ান ফ্রেন্ডদের মেল করে জানতে চাইছেন শনিবার রাতে একসঙ্গে ডিনার করলে কেমন হয়? মন্দ কেন হবে, বালাই ষাট।  ডিনার হবে সেটা কনফার্ম হল, কোথায় হবে সেটা তখনও সাসপেন্সে। 

ডিনারের ভেনু ঘোষণা করে দ্বিতীয় চিঠি এল শুক্রবার রাতে। যে পরিমাণ ফোরশ্যাডো করেছি, তাতে আপনাদের আন্দাজ করতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয় ডিনার কোথায়। 

আঁতিপাঁতি খুঁজে, ‘ইনভাইটেড’ শব্দটায় বারবার আঙুল বুলিয়ে, তারপরও পাছে বোঝাবুঝিতে ফাঁকি থেকে যায় আর খাওয়ার শেষে মসালা লাইব্রেরির মহার্ঘ কাপপ্লেট মাজতে হয় সেই ভয়ে এটিএম থেকে টাকা তুলে, ‘বিরিয়ানি আর কাবাব অর্ডার করে খেয়ো প্লিজ, না হলে আমার মারাত্মক বিবেকদংশন হবে’ অর্চিষ্মানকে হাতে পায়ে ধরে আমি শনিবার নির্দিষ্ট সময়ে উবারে চেপে বসলাম। মসালা লাইব্রেরি, হেভি ট্র্যাফিক, ফরটি ফোর মিনিটস।

নেটওয়ার্কিং হল, খাওয়াও হল। ছবি তুলে বাঁধিয়ে দেওয়ালে টাঙানোর মতো খাবার। আমার থেকে সাহসী অনেকে ছবি তুলেছিলেন, আমি তুলিনি কাজেই আপনাদের দেখাতে পারলাম না, মুখেই বলছি। আমাদের দলের জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছিল মসালা লাইব্রেরির বিখ্যাত উনিশ কোর্স টেস্টিং মেনু। অ্যামিউজ বুশে না কী বলে সেই থেকে শুরু করে স্ন্যাকস হয়ে প্যালেট ক্লিনসারের পেরিয়ে মেন কোর্স হয়ে ডেজার্ট। 

উনিশটা পদ অফ কোর্স মনে নেই। গুনিওনি। আমাদের টেবিলের একজন রসিকপ্রবর মাঝে মাঝেই পরিবেশক, থুড়ি, এক্সপেরিয়েন্স কিউরেটরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করছিলেন এখন কত নম্বর চলছে, চিটিং করছ না তো আর তারপর আমাদের দিকে ফিরে চোখ টিপে বলছিলেন, বুঝছ না, একটু চাপে রাখছি আরকি হাঃ হাঃ হাঃ। 

দামি দোকানের একটা বৈশিষ্ট্যের কথা আগে শুনেছি, টি এল সি, ফক্স লাইফ মার্কা চ্যানেলে দেখেওছি। যে খাবারটা যেমন দেখতে সেই খাবারটা তেমন খেতে নয়। ধরুন পাখির বাসার মতো দেখতে একটা বাটিতে করে আপনাকে ডিমসেদ্ধ দেওয়া হল, (গট ইট? পাখির বাসা, ডিমসেদ্ধ?) আপনি এত দাম দিয়ে শেষকালে ডিমসেদ্ধ খেতে এসেছেন ভেবে মনে মনে নিজের গালে চড়ালেন তারপর দীর্ঘশ্বাস চেপে ডিমসেদ্ধ মুখে দিয়ে টের পেলেন ডিমের সাদা অংশটা আসলে কী ভগবান জানেন কিন্তু কুসুমটা হচ্ছে আম আর কুসুমটা যে সাদা অংশের মধ্যে ভাসে, সেটা হচ্ছে নারকেলের জল! আপনি ধন্য ধন্য করতে লাগলেন, এত দাম দিয়ে আম আর নারকেল জলের কম্বো খাওয়া আপনার সার্থক হল, ডানহাতে ‘ডিমসেদ্ধ’র বাকি অর্ধেক মুখে পুরতে পুরতে বাঁ হাতে টুইট করলেন #মসালালাইব্রেরি #ভ্যালুফরমানি।

কিউরেটর ঘোষণা করলেন আমাদের ‘জার্নি’ শুরু হবে সোল কড়ি শট দিয়ে। প্রমাদ গুণলাম। সোল কড়ি হচ্ছে কোকম আর নারকেলের দুধ দিয়ে বানানো মহারাষ্ট্রের বিখ্যাত গোলাপি পানীয়। যতবার খেয়েছি ব্যাপারটা মোটেই সুবিধের লাগেনি। কিন্তু আমার সামনে যে জিনিসটা রাখা হল সেটা তো সোল কড়ির মতো একটুও দেখতে নয়। ছোট ছোট চকচকে কালো সেরামিকের ছোট কলসির কানা ছাপিয়ে সাদা ফেনা উথলে উঠেছে। গোলাপির গ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।  যা থাকে কপালে বলে ঘটি তুলে বটম আপ করলাম। 

চমৎকার। স্মৃতির সোল কড়িরা ধারেকাছেও লাগে না। বোধ হয় সে সব দোকানে সঞ্জয় লীলা ভানসালিকে নাক কেটে দেওয়ার মতো ঝিরিঝিরি ঝাড়লন্ঠন ছিল না, কালো সেরামিকের ঘটি ছিল না, সুটবুট পরা এক্সপেরিয়েন্স কিউরেটররা ছিলেন না বলে হবে।

তারপর এল মেদুর বড়া আর রসম। এল একটা দুইদিকে দুই ফুটোযুক্ত কাঁচের চ্যাপ্টা নৌকোর … দাঁড়ান, গুগল ইমেজেস থেকে ছবি বার করে দেখাই। 


উৎস গুগল ইমেজেস

ওই যে দুদিকে ফুটোওয়ালা কাঁচের পাত্র মতো দেখছেন, ওর ফাঁপা পেটের মধ্যে পোরা আছেন রসম। আর একদিকের কোণায় মাঝির মতো গ্যাঁট হয়ে বসে আছেন মেদুর বড়া। আপনি ডানদিকের অংশটা হাতে ধরে উল্টোদিকটা মুখের ওপর উপুড় করলেই ফুটো দিয়ে গরম রসম আর তপ্ত মেদুর বড়া একসঙ্গে মুখের ভেতর ঢুকে যে গ্যাস্ট্রোমলিকিউলার বিস্ফোরণ ঘটাবে তা ব্যাখ্যা করার ভাষা আমার নেই, চেষ্টাও করছি না।

তারপর ক্রমে ক্রমে এল দইবড়ার নবতম ইন্টারপ্রিটেশন (দই তো নয়, মুখে দিয়ে মনে হল একটুকরো মেঘ) ঝালমুড়ির প্যানকেক (এটা, দুঃখের বিষয়, হয়নি। ঝালমুড়িকে চেপে চেপে প্যানকেকের চেহারা দেওয়া পর্যন্ত ঠিক ছিল, কিন্তু তার ওপর একটা কী রকম চাটনি দিয়েছে যেটা মিষ্টি। বেসিক্যালি ভেলপুরি। ঝালমুড়ির সঙ্গে যার আসমানজমিন ফারাক।) এল কাশ্মীরের পদ্মডাঁটার চিপস আর আখরোটের ডিপ, বিহারের সত্তু পরাঠার ফ্যান্সি অবতার, কে জানে কোথাকার মাশরুম ‘চা’ আর সর্বভারতীয় সামোসা। ডিকনস্ট্রাকটেড। ময়দার আয়তাকার পাতের (বেকড, নট ফ্রায়েড!) ওপর তিনটে সমদূরত্বের বিন্দুতে আলুর টুকরো, কড়াইশুঁটি, বাদামের কুচি সাজানো। কিউরেটর নির্দেশ দিলেন তিন কামড়ে গোটা ব্যাপারটা খান, খাওয়ার সময় চোখ বন্ধ রাখুন আর ব্যাপারটা কীরকম অবিকল সামোসার মতো খেতে রিয়েলাইজ করে অভিভূত হোন। 

টেবিলের বাকিরা কী করেছিলেন জানি না, আমি সত্যি সত্যি চোখ বুজেছিলাম (কর্তৃপক্ষের ইন্সট্রাকশন অমান্য করা আমার পক্ষে অসম্ভব)। সত্যিই সামোসার মতো খেতে। তবে চোখ খুলে খাওয়া কনস্ট্রাকটেড সিঙাড়াকে হারাতে এখনও অনেক দূর যেতে হবে।

প্যালেট ক্লিনসারগুলোও দারুণ। আমাদের লোকাল ট্রেনে প্লাস্টিকের টিউবের মধ্যে রঙিন বরফ পোরা একরকমের ‘পেপসি’ পাওয়া যায়, মা দাবি করেন খেলেই কলেরা, সে জিনিস। অফ কোর্স, কলের নোংরা জল (মা বলেন নর্দমার) জমিয়ে নয়, হিমাচলের পাহাড়ের ঘন জঙ্গল থেকে পেড়ে আনা অরগ্যানিক বেরি দিয়ে বানানো, সস্তা থার্মোকলের বাক্সে জুলাই মাসের লেডিজ কম্পার্টমেন্টের ভিড়ে আধাগলা নয়, স্টেট অফ দ্য আর্ট ব্লাস্ট চিলারে জমাট বাঁধা। আর আমাদের পেপসির মতো মুখে দেওয়ার তিরিশ সেকেন্ডের মধ্যে রং, স্বাদ উড়ে গিয়ে শুধু বরফ পড়ে থাকে না, শেষ কামড় পর্যন্ত বন্য বেরির স্বাদ নিটোল থাকে। প্লাস্টিকের গায়ে আবার লেখা ছিল Frooti, ডিটেলিং-এর ওপর জোর কেমন ভাবুন।

ফিলজফি মেনে মেন কোর্সেও ভারতবর্ষের কোণা কোণার কুইজিন রিপ্রেজেন্টেড হয়েছে, নাগা পর্ক থেকে কেরালার ট্রাউট থেকে উত্তরপ্রদেশের মটর মাশরুম।। সবাই খাবার দেখে আহা উহু করছিল, আমি তো ভাবছিলাম মসালা লাইব্রেরির পাত্রের বাহার নিয়ে গোটা একটা থিসিস নামানো যায়। পাথর, শিলনোড়া, গাছের গুঁড়ি, কিচ্ছু বাদ নেই। মেন কোর্সে শেষ পর্যন্ত যখন সাদা প্লেট এসে হাজির হল নিজেদের চোখকে নিজেরাই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। 

মেন কোর্সের কথা ব্যাখ্যান করে লিখতে গেলে আরও তিনদিন ধরে পোস্ট লিখতে হবে কাজেই বাদ দিচ্ছি। কিন্তু যার কথা কোনও অজুহাতেই বাদ দেওয়া যাবে না তা হচ্ছে ডেজার্ট। এত ভালো মালাই কুলফি আমি খাইনি আগে, কলাপাতা পোড়ানো ছাই দিয়ে তৈরি অ্যাশ কুলফি তো চোখেই দেখিনি। আর কেমিস্ট্রি ল্যাবের কাঁচের গোলকের মধ্যে রাবড়ির মধ্যে মিহিদানার মতো জলেবি ‘ক্যাভিয়ার’? উমদা।

লাস্টে ম্যাজিশিয়ানের মতো একজন এসে দাঁড়ালেন। পেছনে ট্রে-তে রাখা পাত্রের ভেতর থেকে গলগল করে সাদা ধোঁয়া বেরোচ্ছে। টেবিলের কোণায় তিনি রাখলেন  দুই প্রান্তে লোহা সাঁটা একটা মোটা কাঠের পাত। ধোঁয়ার মধ্য থেকে চিমটে করে দুটো চৌকো কয়লার মতো কী তুললেন, তাদের তাপমাত্রা নাকি মাইনাস একশো ছিয়ানব্বই ডিগ্রি সেলসিয়াস, ছুঁয়ে দেখার কৌতূহল সংবরণ না করতে পারলে রেস্টোর‍্যান্ট দায়ী নহে। 

কয়লার দুটি টুকরো দুই প্রান্তের লোহার কাছে নিয়ে যাওয়া মাত্র……চোখে চশমাও ছিল, জোছনা রাতও ছিল না, ঝাড়লন্ঠনের প্রখর আলোয় পষ্ট দেখলাম, তারা শূন্যে ভাসতে লাগল! অন গড ফাদার মাদার। ও তো লোহা নয়, চুম্বক।  সেই মাইনাস একশো ছিয়ানব্বই কয়লার ওপর মার্বেলের দুটো সরু টাইল রাখা হল আর টাইলের ওপর রাখা হল ছোট দুখানি চকোলেট ট্রুফল। 

লেভিটেটিং চকোলেট। মসালা লাইব্রেরির উনিশ কোর্স টেস্টিং মেনুর ওস্তাদের মার। ভাসন্ত ভৌতিক চকোলেট ট্রুফল দু’আঙুলে তুলে ভয়ে ভয়ে মুখে পুরলাম। এবার আর ইন্সট্রাকশন লাগল না, চোখ আপসেই বুজে এল। ও জিনিস শূন্যে না ভাসলেও মাহাত্ম্য কিছু কম পড়ত না। এমনকি জার্মান চকোলেট খেয়ে বুড়ো হওয়া লোকেরাও স্বীকার করলেন, ফার্স্ট ক্লাস।

একটাই ব্যাপার, আড়াইঘণ্টার ওপর ধরে ওই খাবারের মিছিল, সে যতই মডেলোচিত হোক না কেন, ক্লান্তিকর। মারকাটারি ফুডি না হলে, খিদে-পায়-তাই-খাই ফিলজফিতে বিশ্বাস রাখলে মিছিলের শেষ দিকে ছেড়ে-দে-মা-কেঁদে-বাঁচি অবধারিত। সাতটায় টেবিলে বসেছিলাম, প’নে দশটায় যখন ট্রুফল মুখে পুরে চেয়ার ঠেলে উঠলাম, বুকের ভেতরটা ছুটি! ছুটি! বলে চটি হাতে ছুট লাগাল। 

(আর তখনই সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলাম, গোটা ব্যাপারটা ‘ইনভিটেশন’ই ছিল। খাবারগুলো খাওয়ার সময় যত ভালো লেগেছিল, সেই মুহূর্তে দ্বিগুণ ভালো লাগল।) 

বলতেই পারতাম, সেদিনের সন্ধ্যের পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা ভোজ, তাও আবার ছোটবেলার সাদাকালো অস্কার টিভির জিগস কালরার রেস্টোর‍্যান্টে, আমার রিসেন্ট অতীতের, অন্তত সেই শনিবারের একটা হাইলাইট, কিন্তু পারছি না। কারণ আমি যখন মাশরুম চায়ে চুমুক দিচ্ছিলাম আর চোখ বুজে ডিকনস্ট্রাকটেড সামোসা চিবোচ্ছিলাম, সেই মুহূর্তে ভারতবর্ষের অন্য প্রান্তে একটা ঘটনা ঘটছিল যার খবর আমি পেয়েছিলাম রবিবার সকালে মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে গিয়ে। আপনারা শুনলেই বুঝতে পারবেন, কেন আমার সেই শনিবারের সবথেকে ভালোলাগার বিষয় ওই ঘটনাটা, এই উনিশ কোর্সের ভূরিভোজ নয়।

*****

ঠাকুমা বাড়ি খালি করে চলে যাওয়ার পর যা হবে আশংকা করেছিলাম তাই হয়েছে। মাবাবা একা হয়ে গেছেন। বাড়িতে আর মন টিকছে না।  নিয়মভঙ্গের পর নাকি জ্ঞাতিগুষ্টির বাড়িতে খেতে হয়, বাবামা জেঠুজেঠি কাকা সবাই মিলে গাড়ি ভাড়া করে করে আত্মীয়দের বাড়ি নেমন্তন্ন খেলেন, এখন লোকের মুখ দেখা বলতে মীরামাসি আর মাঝে মাঝে বিকেলে চায়ের নেমন্তন্নে বিজলিদিকে আসতে বলা। আর একাদশীর দিন কাকু খেতে আসেন। সামনের এক বছর আসবেন। ব্যস।

ভালো লাগে না রে সোনা বাড়িতে।

ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণে নাকতলার বাবামায়ের সঙ্গে আমার ছোটমামার মাঝে মাঝেই দেখা হয়ে যায়। মামা জিজ্ঞাসা করেন, বম্বেতে মেয়ে কেমন আছে? বাবামা বলেন, ভালো। দিল্লিতে ছেলে কেমন আছে? সেও ভালো। তারপর মামা জিজ্ঞাসা করেন, কী লাভ হল? বাবামা হেসে স্বীকার করেন, সত্যিই লাভ কিছুই হল না।

একা বাড়িতে মাবাবার মনখারাপের কথা শুনে মামার প্রশ্নটা মনে পড়ছিল বারবার।  সঙ্গে কথা বলে আমারও এই ফিলিংটা হচ্ছিল ক’দিন। আমাকে এতরকম ঠ্যাকনা দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড় করিয়ে কী লাভ হল তাঁদের? এখন একা বাড়িতে মন খারাপ করে বসে থাকতে হচ্ছে। তারপর মা একদিন ফোন করে খবর দিলেন, যথেষ্ট হয়েছে, তাঁরা আর পারছেন না, টিকিট কেটেছেন, কাল বেরোবেন, চেন্নাই হয়ে ম্যাংগালোর হয়ে কন্যাকুমারী। আমি বললাম, ফিরবে কবে?

টিকিট কাটিনি। ওখানে গিয়ে চেষ্টা করব, যবে পাব তবে। 

হোটেল বুক? 

করিনি। কোটি কোটি হোটেল, কোনও একটাতে উঠে পড়ব।

‘বুঝেছি’ বলে ফোন রেখে দিলাম। মাথা ঘুরতে লাগল। আমি স্পষ্ট জানি যে এই পঁয়ষট্টি বছর বয়সেও আমার বাবামা শারীরিকভাবে সমর্থ, ঘোরাঘুরিকে, বিশেষ করে দেশের ভেতর ঘোরাঘুরিকে তাঁরা প্রায় নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের মতো প্র্যাকটিস করে নিয়েছেন। কাজেই বেড়াতে বেরিয়ে তাঁরা বিপদে পড়বেন এ সম্ভাবনা ক্ষীণ।

কিন্তু বাবামায়ের ব্যাপারে যুক্তিবুদ্ধি খাটে না। এই রকম হুট করে বেরিয়ে যদি তাঁদের এক কণা অসুবিধেও হয়, হোটেল খুঁজতে যদি দরকারের থেকে এক সেকেন্ডও বেশি সুটকেস বইতে হয় তাহলেও আমার সেটা আনঅ্যাকসেপটেবল মনে হবে। 

কারণ বাবামায়ের প্রতিটি সুটকেস আমার বয়ে দেওয়ার কথা ছিল, প্রতিটি নিঃসঙ্গ মুহূর্তে সঙ্গ দেওয়ার কথা ছিল। যে কথা আমি দিনের পর দিন, বছরের পর বছর রাখছি না।

ওঁদের বেড়াতে যাওয়া সম্পর্কে উৎসাহ দেখানোর বদলে আমি ফোনেই আমার যত গিল্ট এবং গিল্টজনিত দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে ফেললাম। তাতে আমার মনের ভার নামল কিন্তু  ঝামেলা হল মাবাবার। তাঁরা বেড়াতে গিয়েও শান্তিতে ঘুরতে পারলেন না, ক্ষণে ক্ষণে আমাকে ফোন করে জানান দিতে হল যে তাঁরা ভীষণ আনন্দ করছেন, একটুও কষ্ট হচ্ছে না। হোটেল? এক মিনিটে পেয়ে গেছি। সুটকেস? পাখির মতো হালকা। ট্রেন? ঝকঝকে তকতকে। সহযাত্রী? সিভিক সেন্সের টেক্সটবই থেকে উঠে এসেছে। 

কন্যাকুমারী রক থেকে ফিরে মা বললেন, পঁয়ত্রিশ বছর আগে তোকে কোলে করে যে কন্যাকুমারীর রক দেখতে এসেছিলাম সোনা, সে কন্যাকুমারী আর নেই। শুনে কিছুই মনে না থাকা সত্ত্বেও (সাদাকালো বর্গাকার কতগুলো সাদাকালো ছবি অ্যালবামে দেখা ছাড়া) ওই সময়টার জন্য আমার বুক হু হু করে উঠল। পঁয়ত্রিশ বছর আগের সময়টার জন্য, দু’বছরের আমার জন্য, আমার তিরিশ বছর বয়সী মাবাবার জন্য। 

রবিবার সকালে মাকে ফোন করে আমার গত সন্ধ্যের ভোজের কথা ব্যাখ্যান করে বললাম। মা খুব খুশি হলেন আর আশ্বাস দিলেন তাঁরাও শনিবার রাতে নাকি দারুণ মজা করেছেন। 

আমি কনভিন্সড হওয়ার ভান করে জিজ্ঞাসা করলাম, শুনি শুনি কেমন মজা? ওঁরা ম্যাঙ্গালোরের কোন একটা দুর্গ দেখতে গিয়েছিলেন, সারাদিন হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে (বেশি ক্লান্ত হইনি কিন্তু, প্রমিস, অল্প ক্লান্ত) হোটেলে ঢোকার আগে পাশের এক শপিং মলে গিয়ে পিৎজা খেয়েছেন। আশেপাশের স্টলের ইডলি দোসা, ছোলে ভাটুরের প্রলোভনে বিন্দুমাত্র কাত না হয়ে। 

আমি বললাম, আরিব্বাস, কী পিৎজা খেলে গো মা?

কী যেন খেলাম? মায়ের মুখ ফোন থেকে সরে বাবার দিকে।

হ্যাঁ হ্যাঁ, ইতালিয়ান। ইতালিয়ান পিৎজা খেলাম রে সোনা। কী ভালো খেতে। আবার সঙ্গে কোল্ড ড্রিংকসও নিয়েছিলাম। ওই যে লিমকার মতো সাদা সাদা দেখতে কিন্তু লিমকা নয়… সেভেন আপ। সেভেন আপ খেয়েছিস কখনও সোনা? দারুণ খেতে।

একেবারে বুকে হাত দিয়ে বলছি, আমার বাবামা যে শপিং মলে দুজনে মুখোমুখি বসে সন্দেহজনক পিৎজা খাচ্ছেন তাও আবার সেভেন আপ সহকারে, এই দৃশ্যটা কল্পনা করে উনিশ কোর্স ভোজের তুলনায় আমার অন্তত উনিশগুণ বেশি আনন্দ হচ্ছে। 

আমাকে শান্তিতে রাখার জন্য কি না কে জানে, কেল্লা দেখা আর সেভেন আপ খাওয়ার মাঝে মাঝে দৌড়োদৌড়ি করে তাঁরা ফেরার টিকিট কেটে আজ ট্রেনে উঠে পড়েছেন, কাল বাড়ি। 

*****

আমি ভাসমান চকোলেট খেলাম আর অর্চিষ্মান খালি গল্প শুনল, এ প্রাণে সইছে না বলে সেই থেকে অর্চিষ্মানকে তা দিচ্ছি। চল তোমাকে একবার মসালা লাইব্রেরিতে নিয়ে যাই, আমার ট্রিট। অর্চিষ্মান মাথা নেড়ে বলছে, পাগল নাকি? প্রথমত শাস্ত্রে যদি বিশ্বাস কর তাহলে সতীর ভোজনেই পতির ভোজন হয়েছে। তাছাড়া মসালা লাইব্রেরিতে দ্বিতীয়বার না খেয়ে যা টাকা বাঁচবে তা দিয়ে আমরা পঁচিশবার দাওয়াতের আলু জিরা অর্ডার করে খাব। আর আমাদের মিনিমাম পঁচিশগুণ আনন্দ হবে।

মুখে মানিনি, কিন্তু মনে মনে জানি কথাটা সত্যি। 


Comments

  1. আগের বৃহস্পতিবার হঠাৎ অবান্তর খুঁজে পাই। বললে বিশ্বাস করবেন, আপনার সবকটা বাংলায় লেখা ব্লগপোস্ট তারপর থেকে 7 দিনে পড়ে ফেলেছি এবং পড়েই চলেছি, পড়েই চলেছি। বহুবার ভেবেছি, একবার জানাই কিন্তু ল্যাদ খাওয়া উপেক্ষা করে একটা mail ড্রাফট করে উঠতে পারলাম না, তার আগেই লুক আর ইতালিয়ান পিৎজার পোস্টদুটো এসে গেল।
    এক এ শহরে থেকেও মা বাবার সাথে থাকি সপ্তাহে দেড়দিন। এদের জন্য তেমন কিছু করে না উঠতে পারার guilt যে আপনি এত একদম আমার মত করে বলে দিলেন, এই খানেই আপনি লা-জবাব।
    আরও অনেক লিখতে থাকুন কুন্তলাদি, আমার মতো আরও অনেক মানুষের না লিখতে/বলতে পারা কথাগুলো আপনার লেখায় পড়ে আবারও অবাক হোক, আরে এতো একদম আমা(দে)র কথা। খুব ভালো থাকুন।

    ময়ূরী।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, ময়ূরী। আলস্য কাটিয়ে মন্তব্য করলেন বলে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার সারাদিন আজ ভালো কাটবে।

      অবান্তর আরও অনেকদিন ধরে পড়ার ইচ্ছে বজায় থাকুক এই কামনা করি।

      Delete
  2. Yes, ei je eto shrom samay sab bifole giye kono luv holo na, ebong seta ekdom na bujhte para, eta boro jontronadayok.
    Tobe khabarer bornona pore ei boyeseo jerokom uttejito hoye porechhi, siggiri daamtuku bole diye nirosto hote sahajyo korun.

    ReplyDelete
    Replies
    1. নিরামিষাশী মাথাপিছু ২১০০ + ট্যাক্স, আর আমিষাশী মাথাপিছু ২৩০০ + ট্যাক্স, শিবেন্দু।

      Delete
  3. আহা ! পড়েই নোলা সকসক করে উঠছে কিন্তু :)
    ইয়ে, নিজের ট্যাঁক থেকে দিতে হলে কত খসত ? ;)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওপরে দ্রষ্টব্য, অন্বেষা।

      Delete
  4. এমন বর্ণনা করতে পারলে ছবির কি দরকার মশাই? ঘ্রানে অর্ধভোজন হয় শুনেছি, বর্ণনায় কি হয় সেটা শাস্ত্রে লিখেছে বলে জানিনা। কিন্তু আপনার লেখা পড়ে আমিও যে ওই উনিশ কোর্সের মেনু খানিকটা চেখে ফেললাম তাতে সন্দেহ নেই। ভাসমান চকোলেটটাও যেন স্বচক্ষে দেখলাম। এভাবেই ভাল ভাল খান আর ব্লগে লিখতে থাকুন। আমরা পড়ে পয়সা বাঁচাই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, সুগত।

      Delete
  5. Lekhata pare amar khide peye gelo.Kintu eto mahargho khabar khete gele khali bill er amount er katha mane pare khoa nasto habe.Tar cheye pizza r seven up e valo.Antoto santi kare khoa jabe.-Sunanda.

    ReplyDelete
    Replies
    1. না না, এগুলো স্ট্রিক্টলি নেমন্তন্নের খাওয়া, সুনন্দা। নিজে খেতে হলে আমরাও পিৎজা আর সেভেন আপ।

      Delete
  6. যে গিল্টের কথা লিখলে সে আজ আমার বহুবছরের নিত্যসঙ্গী। কিছু করার নেই, মেনে নেই, কিন্তু ভালো লাগেনা। তোমার লেখা পড়ে পড়ে এখন দিল্লিতে একটা ফুড টুর করতে যেতেই হবে মনে হচ্ছে। তুমি গাইড হবে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, আমি গাইড হতেই পারি, চুপকথা, কিন্তু দিল্লিতে রীতিমত প্রফেশনাল ফুডিরা ফুড টুর করান। তাঁদের বাদ দিয়ে যদি তুমি আমাকে বাছো...

      Delete
    2. না না প্রফেশনাল গাইড দিয়ে কি হবে? তোমাকেই চাই। বেশ তোমার সাথে গল্প করতে করতে দিল্লি ঘুরবো। আজকে অনেক দিন পর সফরনামার একটা নতুন লেখা পোস্ট করলাম, তোমায় লিংক দি দাঁড়াও :)
      https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=10103407615997297&id=27617989

      Delete
    3. থ্যাংক ইউ, চুপকথা।

      Delete
  7. আহাহা কি বর্ণনাটাই দিলে , খালি ভাবছি এটা খারাপ লাগবে না ভালো (মানে খাবারটা ) ।গিল্ট ফিল নিয়ে অত কষ্ট পেওনা , আমি মা বাবাকে নিয়ে বছরে একবার বেড়াতে যাই আর নিজে এর সাথে আরো বেশ কইয়েক্টা ...প্রতিটা জায়গায় মা বাবাকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না , কারন আমার অত আগে থেকে প্ল্যান করা যায় না প্রতিবার , আর সত্যি বলতে কি মা বেড়াতে ভালোবাসলেও বাবা ভালোবাসে না সব মিলিয়ে , আমি না পারি সব ট্যুরে মা বাবাকে নিয়ে যেতে না পারি গিল্ট ফিল ত্যাগ করে ঘুরতে ।
    এক শহর এক বাড়িতে থেকেও অখন আমার এর থেকে মুক্তি নেই , পেটের দায়ে আলাদা শহরে থাকতে হলে তা থাকবেই :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. এটা ঠিক বলেছ, প্রদীপ্ত, বর্ণনা শুনে বোঝা মুশকিল খাবারটা ভালো লাগবে না মন্দ। আমিও রিভিউতে ভালো ভালো শুনেও সন্দেহ তাড়াতে পারিনি।

      গিল্ট এর ব্যাপারটাও হয়তো অবধারিত।

      Delete
  8. bhoutik chocolate...besh bolecho.
    bhalo lekha..khub bhalo
    chotobelar part tuku amar sob somoy e besi bhalo lage,khab bhalo lage,chotobelay fire jai mone hoy.

    ekdin ekta chotobelar lekha hok,altu faltu abantor ghatona eisob.

    prosenjit

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, প্রসেনজিৎ। ছোটবেলার কথা কিছু মনে পড়লে নিশ্চয় লিখব।

      Delete
  9. Pizza ta kothay khawa hocche seta o boro kotha... Kolkatar mall er theke Mangalore e ghure beriye pizza onek taste besi... Otai best.. Tomar description er por photo dorkar nei.. Osadharon..

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, ঊর্মি।

      Delete
  10. Oi guilt ta amaro achhe :( Onno somoy hole boltam - High five..kintu ebar hoyto - low sympathetic pat on the back :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. LSP রইল আমার তরফ থেকেও, রণদীপ।

      Delete
  11. আচ্ছা এইসব খাবারকেই কী food for thought বলে ?

    ReplyDelete
  12. আট দিন হয়ে গেল পোস্ট নেই। দমবন্ধ লাগছে তো। এই সিঙ্গাড়া 3 বার খেলাম। :P

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, আমারও দমবন্ধ লাগছে, চন্দ্রচূড়। দ্রুত পোস্ট ছাপানোর চেষ্টা করছি। আজকালের মধ্যে কিছু একটা হয়ে যাবে মনে হয়।

      Delete
  13. Onekdin Lekha nei.. Ekta onno kotha bolchi.. Sahaj pather golpo dekhlam onekdin por sujog holo.. Talnabami pore kotota dukkho hoyeche otota Hobe na mone hoy.. Onekdin por ekta sohoj Bangla cinema dekhlam.. Acting, story telling amar bhalo legeche.. Sajano set er bodole natural set o bhalo laglo.. Chance Pele dekho.. Shibprasad der bajar ekta boro sonkhyok loker kache thakbei.. Tobe antlami nyakami ebong pakami borjito erokom fresh Bangla cinema hocche seta bhebeo bhalo lagche..

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, এটা সুযোগ পেলেই দেখব, ঊর্মি। সাহস দেওয়ার জন্য থ্যাংক ইউ।

      Delete
  14. arre oi plastic er bhitore barof khelei diarrhea eta amar ma o bolto ar ki jani ki okaron karone ami khub biswas kortam, ma ke lukie current nun khetam kintu ejinish jibone taste korini.

    E restaurant er khabar er songe samna samni dekha hobe bole mone hoina, kintu tumi ja barnona diechho tate porte porte mone holo oi table chair e amio bose achhi. eto ritimoton art work.

    Kanyakumari abar jabar ichheta jege uthchhe. post er seshe tomar sobcheye khusi hobar karonta khub khuub bhalo laglo. - Ichhadana

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, ইচ্ছাডানা। ইউ কারেন্ট নুনের কথা শুনেছি অনেক, খাইনি কখনও। আফসোস রয়ে গেছে।

      Delete

Post a Comment