Posts

Showing posts from November, 2019

মার্গারেট মিলার

আগের বছর আমি গুডরিডস চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ করতে পারিনি। পঞ্চাশের জায়গায় সম্ভবতঃ কেঁদেককিয়ে ছেচল্লিশটা বই পর্যন্ত গিয়ে ক্ষান্ত দিয়েছিলাম।। এ বছর জুলাই মাসের পর যখন এক পাতা পড়তেও কনসেন্ট্রেশনে টান পড়ছিল,  আমি সত্যিই ভেবেছিলাম এ বছরও গুডরিডস চ্যালেঞ্জে গাড্ডু পাব।  তার বদলে আমি অলরেডি, (অক্টোবরের গোড়াতেই অ্যাকচুয়ালি) পাস করে গেছি শুধু তাই নয়, থামার কোনও লক্ষণ দেখাচ্ছি না। পঞ্চান্ন হয়ে গেছে, কপাল ভালো থাকলে ষাটও হয়ে যাবে।  এর সিংহভাগ কৃতিত্ব মার্গারেট মিলারের। আর অল্প একটুখানি গার্ডিয়ান পত্রিকারও কারণ ওই পত্রিকারই অনলাইন সাইটে ‘ফরগটেন মিস্ট্রি রাইটার্স’ গোছের একটা প্রতিবেদনে আমি মার্গারেট মিলারের নাম আবিষ্কার করি। আরও কিছু অচেনা লেখক ওই লিস্টে ছিলেন যাঁদের লিখনশৈলী, সমসাময়িক সাহিত্যে অবদান ইত্যাদি গুরুতর প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হয়েছিল। কিন্তু স্বীকার করছি, তাঁদের প্রতি আমি ততটাও কৌতূহল বোধ করিনি যতটা মার্গারেট মিলার সম্পর্কে করেছিলাম। আমার চোখ টেনেছিল যে তথ্যখানা সেটা হচ্ছে আগাথা ক্রিস্টি মার্গারেট মিলারের ফ্যান ছিলেন। মার্গারেট মিলার ছিলেন একজন অ্যামেরিক...

স্বপ্নের গুঁতো

স্বপ্নের কার্যকারণ হয় বলে আপনি বিশ্বাস করেন? আমি কিছু কিছু ক্ষেত্রে করি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বপ্নের কার্যকারণ নিয়ে সন্দেহ করা বোকামি। যে শুক্রবার আমি দু’প্লেট ফুচকা (এক্সট্রা কাঁচালংকা দেওয়া) আর একপ্লেট আলুকাবলি (এক্সট্রা কাঁচালংকা দেওয়া) দিয়ে ডিনার সারি সে শুক্রবার সারারাত স্বপ্নে পাগলা হাতির তাড়া খেয়ে সি আর পার্কের অলিতে গলিতে দৌড়ে মরলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। অ্যাপ্রাইজালের আগের রাতে ভূগোল পরীক্ষার দিন ইতিহাস পড়ে চলে যাওয়ার স্বপ্নেও না। তবে সব স্বপ্নের কার্যকারণে আমি অত্যধিক জোরও দিতে চাই না। অনেক বছর আগে এক রাতে এক দূরসম্পর্কের (কিন্তু কাছের) দিদার স্বপ্ন দেখে উঠেই মাকে ফোন করে জেনেছিলাম দিদা গত রাতে মারা গেছেন। বেশি ভাবিনি ব্যাপারটা নিয়ে। ভাবলে ভয়ে পরের রাতগুলোর ঘুম মাটি হত। আর দিদা যদি সত্যি আমাকে ভালোবেসে থাকেন (যেটা সন্দেহ করার কোনও কারণ নেই), আমাকে ইনসমনিয়ায় ভোগাতে চাইবেন না। কাজেই ঘটনাটা কাকতালীয় ধরে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছি। তাছাড়া সবকিছুর পেছনে গভীর অন্তর্নিহিত ইউনিভার্সের সিগন্যাল খুঁজতে যাওয়া আমার নাপসন্দ। আজীবন দেখে আসছি আমি ডাউনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকলে যত ট্রেন আপ দিয়ে যা...

চার্জার

যাঁরা বিয়ে করতে চান না তাঁরা অনেক ক্ষেত্রেই এই ভয়টা পান যে বিয়ের পর নিজস্ব বলে কিছু আর থাকবে না। সেম হৃদয়, সেম ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সেম খাট, সেম বিছানা, সেম বাথরুম, সেম আলমারি. সেম নেটফ্লিক্স অ্যাকাউন্ট, সেম ভাতের থালা… শেষেরটা অবশ্য আমি অ্যাপ্লাই করে দেখিনি। এই ব্যাপারে ঠাকুমার বদলে আমি আমার মায়ের দলে। মা যখন আত্মজার এঁটো খাবার খেতে অস্বীকার করেছিলেন, তখনই সম্ভবতঃ এ প্রসঙ্গে দুজনের বিরোধটা প্রকট হয়। ঠাকুমা খাবার নষ্ট করার পক্ষপাতী ছিলেন না। আমার আধখাওয়া থালা মায়ের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বলেছিলেন, আমরা খাইতে পারি, আমাগো কিছু হয় না। মা নরমসরম লোক হলেও যে সব জায়গায় অনড় থাকতে চাইতেন, থাকতেন। তিনি বলতেন, প্রশ্নটা পারার না। প্রশ্নটা চাওয়ার। আমি চাই না।   ঠাকুমা বলতেন, এক পাতে খাইলে ভালোবাসা বাড়ে।   ভালোবাসা কম পড়ার ভয়েও মা কখনও আমার এঁটো খাবার খাননি। আমাকেও কারওটা খেতে দেননি।  অকওয়ার্ড হচ্ছে বুঝেও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দোকানে খেতে বসে কখনওই আমি তাঁদের খাবার চেখে দেখার প্রস্তাব দিই না এবং তাঁদের উদার আমন্ত্রণ বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করি। ঝালমুড়িদাদা ...

সনকা সেনের পরীক্ষা

Image
ভাবানুবাদের থেকেও ঝামেলার হচ্ছে ভাবানুবাদের উপযুক্ত গল্প খুঁজে বার করা। ‘গিফট অফ দ্য ম্যাজাই’ গল্প অতি ভালো কিন্তু পাগল না হলে কেউ ওতে হাত দেয় না। আবার অধিকাংশ অচেনা গল্পেরই অচেনা থেকে যাওয়ার পেছনে কারণ থাকে। হিডেন জেম আর ক’টা। থাকলেও তারা আমার চোখে পড়বে, আমি তাদের প্রতি সুবিচার করব, অনেক যদি কিন্তু বরং-এর ঘনঘটা।   তাছাড়া আমি যতই গলা ফাটাই ওই গল্পের নায়িকার ককেশিয়ান খাড়া নাক আমার গল্পে অস্ট্রো মোংগোলয়েড বোঁচা নাক করেছি, শেষমেশ সবই অন্যের ঘাড়ে রেখে বন্দুক চালানো। যে কোনও অ্যাসপায়ারিং লেখককে   বিকল্প দিন, সরেস ভাবানুবাদক হবেন না কি হরেদরে মৌলিক গল্প লেখক, তাহলেই পরিস্থিতিটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।   সোমেনকে ভয়ে ভয়ে লিখলাম। আমি কি নিয়ম ভেঙে একটা নিজের লেখা গল্প জমা দিতে পারি? সোমেন চোখ কপালে তোলার ইমোজি সহ উত্তর দিলেন, নিয়ম?! কীসের নিয়ম?! আপনার যা ইচ্ছে লিখে জমা দেবেন।   আমি বললাম, কিন্তু শুরুতে যে কথা হয়েছিল অনুবাদ ইত্যাদি…সোমেন বললেন আহা সে তো আপনি   অনুবাদ করেন জেনে আপনাকে অনুবাদ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে ছাড়া কিচ্ছুটি করতে পারবেন না এমন কোনও কথা নে...

সিম্পলের মধ্যে গর্জাস/ ওরছা ৩ (শেষ পর্ব)

Image
অল ফরওয়ার্ড! অল ব্যাক! স্টপ! আমাদের মতো নবীশদের জন্য আর বেতোয়ার অপেক্ষাকৃত শান্ত নদীবক্ষের (অন্তত আমার যে অংশটুকু পার হব) জন্য এই তিনটে ইন্সট্রাকশনই যথেষ্ট। বললাম, আমরা কিন্তু জীবনে এইসব র‍্যাফটিংম্যাফটিং করিনি। পুষ্পেন্দ্রজী আর লক্ষ্মীনারায়ণজী বললেন, 'চিন্তা মত কিজিয়ে, আজ করা দেঙ্গে।' ওঁদের কনফিডেন্সকে অবিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই। শুধু যে হৃষীকেশ গিয়ে র‍্যাফটিং-এর ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন তাই নয়, গত সেপ্টেম্বরে বেতোয়ায় যে বান এসেছিল আর যাতে বেশ কিছু লোক আটকা পড়ে গিয়েছিলেন তাঁদের উদ্ধারের জন্যও এঁদেরকেই পাঠানো হয়েছিল। হলিডিফাই আর ট্রিপোটো আরও প্রভূত সাইট থেকে ইমেলে ক্রমাগত বেড়াতে যাওয়ার সাজেশন আসে। বাজেট, লাক্সারি, রোম্যান্টিক, পকেট ফ্রেন্ডলি, উইকএন্ড,লং উইকেন্ড, যে রকম চান সে রকম। ডেডলাইন সামনে থাকলে আমি সে মেলগুলো খুলে খুলে দেখি, এমনকি ফরেন ট্রিপগুলোও বাদ দিই না। সেই আমিও কোনওদিন অ্যাডভেঞ্চার ডেসটিনেশনের লিংক খুলে দেখিনি।  অর্চিষ্মানকে জিজ্ঞাসা করিনি কিন্তু ওর আচরণ অন্যরকম কিছু হওয়ার আশংকা নেই। সেই আমরা হঠাৎ রিভার র‍্যাফটিং করার সিদ্ধান্ত নিলাম কেন? হতে পারে এ...