মার্গারেট মিলার
আগের বছর আমি গুডরিডস চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ করতে পারিনি। পঞ্চাশের জায়গায় সম্ভবতঃ কেঁদেককিয়ে ছেচল্লিশটা বই পর্যন্ত গিয়ে ক্ষান্ত দিয়েছিলাম।। এ বছর জুলাই মাসের পর যখন এক পাতা পড়তেও কনসেন্ট্রেশনে টান পড়ছিল, আমি সত্যিই ভেবেছিলাম এ বছরও গুডরিডস চ্যালেঞ্জে গাড্ডু পাব।
তার বদলে আমি অলরেডি, (অক্টোবরের গোড়াতেই অ্যাকচুয়ালি) পাস করে গেছি শুধু তাই নয়, থামার কোনও লক্ষণ দেখাচ্ছি না। পঞ্চান্ন হয়ে গেছে, কপাল ভালো থাকলে ষাটও হয়ে যাবে।
এর সিংহভাগ কৃতিত্ব মার্গারেট মিলারের। আর অল্প একটুখানি গার্ডিয়ান পত্রিকারও কারণ ওই পত্রিকারই অনলাইন সাইটে ‘ফরগটেন মিস্ট্রি রাইটার্স’ গোছের একটা প্রতিবেদনে আমি মার্গারেট মিলারের নাম আবিষ্কার করি। আরও কিছু অচেনা লেখক ওই লিস্টে ছিলেন যাঁদের লিখনশৈলী, সমসাময়িক সাহিত্যে অবদান ইত্যাদি গুরুতর প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হয়েছিল। কিন্তু স্বীকার করছি, তাঁদের প্রতি আমি ততটাও কৌতূহল বোধ করিনি যতটা মার্গারেট মিলার সম্পর্কে করেছিলাম। আমার চোখ টেনেছিল যে তথ্যখানা সেটা হচ্ছে আগাথা ক্রিস্টি মার্গারেট মিলারের ফ্যান ছিলেন।
মার্গারেট মিলার ছিলেন একজন অ্যামেরিকান ক্যানাডিয়ান রহস্যরোমাঞ্চ লেখক, জন্মেছিলেন উনিশশো পনেরোয়, মারা গিয়েছেন উনিশশো চুরানব্বইয়ে। উপন্যাস ছোটগল্প নাটক নানারকম লেখা লিখেছেন মিলার, অধিকাংশই রহস্যরোমাঞ্চ ঘরানার এবং আমি, বলা বাহুল্য, সেগুলোতেই আলোকপাত করব। রহস্যরোমাঞ্চর মধ্যেও ছোটগল্প আমি মোটে কয়েকটা পড়ে উঠতে পেরেছি, কাজেই এই পোস্টে তাঁর রহস্যরোমাঞ্চ উপন্যাস নিয়েই কথা হবে।
মার্গারেট মিলারের রহস্যরোমাঞ্চ উপন্যাসসমূহকে দুটো মোটা ভাগে ভাগ করা যায়। গোয়েন্দা সিরিজ আর স্ট্যান্ড অ্যালোন। মার্গারেট মিলার তিন জন গোয়েন্দাকে নিয়ে সিরিজ লিখেছেন, যদিও অন্যান্য গোয়েন্দালেখকদের তুলনায় তাঁর সিরিজগুলি স্বল্প দৈর্ঘ্যের। এক, সাইকায়াট্রিস্ট পল প্রাই (তিনটি গল্প) ; দুই, ইন্সপেক্টর স্যান্ডস (দুটি গল্প) এবং তিন, উঠতি উকিল টম অ্যারাগন (তিনটি গল্প)
আমি মিলারের প্রথম যে বইটা পড়েছিলাম তার নাম হচ্ছে 'দ্য ডেভিল লাভস মি', তার হিরো ছিলেন ডক্টর পল প্রাই। মনোচিকিৎসক পল প্রাইয়ের গোয়েন্দাগিরিতে তিনখানা উপন্যাস লিখেছিলেন মিলার, আমি পড়েছি তার মধ্যে মোটে একটা, কাজেই এইটুকুতেই মতামত জাহির, তাও আবার কি না নেগেটিভ, অন্যায় হতে পারে কিন্তু তবু ঝুঁকি নিচ্ছি। চাল একটা টিপেই ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রাইয়ের প্রধান অসুবিধেটা হচ্ছে ভদ্রলোক মারাত্মক স্মাগ। তাছাড়াও গল্প শুরুর তিন পাতার মধ্যে তিনি কুপিত হয়ে তাঁর বাগদত্তাকে ঠাস করে একটি চড় কষালেন এবং পরমুহূর্তেই বুকে টেনে নিয়ে পরম আশ্লেষে চুম্বন করলেন এবং বাগদত্তা কপট রাগে প্রাইকে “বিস্ট!” ভর্ৎসনা করলেন। যদিও সব মধুরেণ সমাপয়েৎ হল কিন্তু আমার মেজাজটা যে চটকে গেল, আর ঠিক হল না।
মিলারের দ্বিতীয় গোয়েন্দা ইন্সপেক্টর স্যান্ডসের দুটি উপন্যাস ‘ওয়াল অফ আইজ’ আর ‘দ্য আয়রন গেটস’ দুটোই আমার পড়া হয়েছে। এঁর চরিত্রে বলার মতো তেমন কিছু বিশিষ্ট নেই। গতে বাঁধা, শান্তশিষ্ট, ভদ্রসভ্য, মিতবাক পুলিস অফিসার। সেটা অ্যাকচুয়ালি আমার মতে ভালো। কানা মামার তুলনায় শূন্য গোয়াল আমার চিরকালই বেশি পছন্দের।
মার্গারেট মিলারের তিন নম্বর গোয়েন্দা টম অ্যারাগন আমার মতে সবথেকে ইন্টারেস্টিং। অর্ধেক স্প্যানিশ এই তরুণ উকিল মিলার কেন, আমার পড়া গোয়েন্দাদের মধ্যে অন্যতম ছক-ভাঙা গোয়েন্দা। এক নম্বর, এঁর এথনিসিটি। দুই, এঁর কেসের অনেকগুলোই ঘটে মেক্সিকো অ্যামেরিকার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বা মেক্সিকোতে। টম অ্যারাগন নববিবাহিত এবং অ্যারাগনের স্ত্রী লরি একজন সফল এবং একনিষ্ঠ শিশুচিকিৎসক। টম এবং লুসির লং ডিসট্যান্স দাম্পত্য যাকে বলে #কাপলগোলস। এই রকম আধুনিক দাম্পত্য আমি আধুনিক সাহিত্যেও বেশি দেখিনি। কথোপকথনে প্রেম এবং সারকাজমের (কখনও একে অপরের প্রতি নয়) এমন মাপমতো মিশেল, বিরল।
মিলারের যে গোটা পনেরো উপন্যাস পড়েছি, সবগুলোর প্লট বলে আপনাদের বোর করব না, তার থেকে মিলারের লেখার যাকে বলে স্যালিয়েন্ট পয়েন্ট, আমার বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী তুলে ধরার চেষ্টা করি।
মিলারের গল্পে একের পর এক খুন, বসে বসে ক্লুয়ের হিসেবনিকেশ, এগুলো কম থাকে। ইন্সপেকটর স্যান্ডের গল্পগুলোতে তবু এই ধ্রুপদী চলন দেখা যায়, কারণ সেখানে পেশার কারণেই স্যান্ডকে একটা নির্দিষ্ট পথে রহস্যের সমাধান করতে হয়। তবুও সে যৎসামান্য। টম অ্যারাগনের অনেকটা অ্যাডভেঞ্চারমূলক, দেশেবিদেশে ছোটাছুটি, জালজালিয়াত ধরার ব্যাপার, অজ্ঞাতবাসী আততায়ীদের পশ্চাদ্ধাবন, আর প্রাইয়ের গল্পে, অন্ততঃ আমি যেটা পড়েছি, তাতেও ধাঁধা সমাধানের থেকে অন্যান্য বিষয় বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বলেই আমার মনে হয়।
তা বলে কিন্তু ভেবে নেবেন না যে মিলারের গল্প টানটান নয়। একেবারে লাস্ট পাতা পর্যন্ত আপনাকে বসিয়ে রাখার মতো ক্ষমতা মিলারের আছে, কিন্তু তাঁর টুলবাক্সে ক্লু, রেড হেরিং, আঙুলের ছাপ, ফরেনসিক রিপোর্ট ইত্যাদির থেকে জোরালো হল অপরাধ ও অপরাধীর বিশ্লেষণ।
রুথ রেন্ডেলের লেখাতে অনেক সময় আমি চরিত্রের এবং অপরাধের ওপর এই ঝোঁকটা লক্ষ করেছি, তবে দুজনের লেখার মিলের ওইখানেই ইতি। মার্গারেট মিলারের লেখা অনেক বেশি “সুখপাঠ্য”। কারও লেখাকে সুখপাঠ্য শিরোপা দেওয়ার বিপদ হচ্ছে সিরিয়াস পাঠকরা ছিটকে উঠতে পারেন। কিছু লেখককে গর্ব করে বলতে শুনেছি, আমি সুখপাঠ্য লিখি না। তাঁদের ফানুস আমি ফুটো করতে চাই না। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে কোনও না কোনও পাঠককে তাঁদের লেখা সুখ দেবেই দেবে, আটকানো যাবে না। ডেভিড ওয়ালেস আর অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় পড়েও বহু পাঠক সুখ পেয়েছেন। ওঁরা বড়জোর যেটা দাবি করতে পারেন যে ওঁদের লেখা কেবল বুদ্ধিমানদেরই (ওঁদের সংজ্ঞায়) সুখদান করবে, সিরিয়াল যারা দেখে তাদের করবে না।
যাই হোক, মিলার কমার্শিয়াল সাকসেস পেয়েছিলেন কাজেই ওর লেখা পাঠককে কী ধরণের সুখদান করে সেটা আপনি আন্দাজ করে নিতে পারেন। টানটান গল্প, বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ, শোয়িং অ্যান্ড টেলিং-এর নিখুঁত ব্যালেন্স, কমার্শিয়াল সাফল্য পাওয়ার জন্য যা যা দরকার সব ছিল মার্গারেট মিলারের বইতে। মিলারের হিট উপন্যাস ‘বিস্ট ইন ভিউ’ নিয়ে হিচকক তাঁর গল্প নিয়ে একটা এপিসোড বানিয়েছিলেন তাঁর 'অ্যালফ্রেড হিচকক প্রেজেন্টস’ সিরিজে।
আর আছে প্রেক্ষাপট, চরিত্র, মোটিভ আর অপরচুনিটির অপার বিস্তার। বন্ধ ঘরে খুন জাতীয় লেখা মিলার কম লিখেছেন কাজেই দেশ ঘুরে, শহরের পথে পথে, অভিজাতের প্রাসাদ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত পাড়া থেকে জালিয়াত আধ্যাত্মিক সোসাইটি, সর্বত্র মিলার তাঁর গল্প ফেঁদেছেন।
মার্গারেট মিলারের লেখা পড়লে আরও যে বৈশিষ্ট্য যে কারও নজরে পড়বে, এবং আমার মিলারের প্রেমে পড়ে যাওয়ার একটা বড় কারণ, তা হল মিলারের লেখায় মেয়েদের সবল, সপাট উপস্থিতি। মিলারের তিনজন গোয়েন্দার কেউই মহিলা নন ঠিকই, কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে ও সব গল্পেও সব থেকে ইন্টারেস্টিং চরিত্রগুলো কেউই গোয়েন্দারা নন। প্রায় প্রতি উপন্যাসেই সেই সিংহাসনটা অবধারিত কোনও না কোনও মহিলাচরিত্রের জন্য নির্ধারিত থাকে।
আনলাইকেবল মহিলা, পাপপুণ্য ভালোমন্দের সীমারেখা অনায়াসে পারাপার করা মহিলা, মানসিক অসুস্থতার শিকার হয়ে অপরাধ সংঘটনকারী মহিলা, স্রেফ লোভের বশবর্তী হয়ে দুষ্কর্ম করা মহিলা, প্রেমে পাগল মহিলা, মন বলে বস্তু নেই মহিলা, যুবতী সুন্দরী মহিলা, গতযৌবনা কুচ্ছিত মহিলা - মার্গারেট মিলারের নায়িকাদের রেঞ্জ অবিশ্বাস্য এবং গল্পের স্টিয়ারিং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদেরই হাতে।
দেখেশুনে আমি মিলারের অনুরাগী হয়ে পড়লাম। তাছাড়া টম অ্যারাগন সিরিজও ছিল। যে সময় এবং যে ঘরানায় ডাইভারসিটি বলতে লালমুখো আর সাদামুখো সাহেব আর বড় জোর ফিল গুড কালো চাকর, সেখানে একটা নন-শ্বেতাঙ্গ দেশে গল্প নিয়ে ফেলা, গল্পে সে দেশের মানুষকে অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে অ্যালাউ করা - সোজা কথা নয়।
দেখেশুনে আমি মিলারের অনুরাগী হয়ে পড়লাম। তাছাড়া টম অ্যারাগন সিরিজও ছিল। যে সময় এবং যে ঘরানায় ডাইভারসিটি বলতে লালমুখো আর সাদামুখো সাহেব আর বড় জোর ফিল গুড কালো চাকর, সেখানে একটা নন-শ্বেতাঙ্গ দেশে গল্প নিয়ে ফেলা, গল্পে সে দেশের মানুষকে অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে অ্যালাউ করা - সোজা কথা নয়।
অচিরেই মুগ্ধতা চোট খেলো। ক্রমে আবিষ্কার হল যে মিলারের গল্পে মেক্সিকোর প্রধান উপযোগিতা হচ্ছে অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দুষ্কৃতীদের লুকিয়ে রাখা। তাতেও আমার অসুবিধে ছিল না, যতক্ষণ না মিলার মেক্সিকোর "ন্যাশনাল ক্যারেকটারিস্টিকস" লিখতে শুরু করলেন। এবং সে ক্যারেক্টারিস্টিকসগুলো হচ্ছে, অনৃতভাষণ, চৌর্যবৃত্তি, মাতলামো ইত্যাদি আরও সব ভালো ভালো ব্যাপার।
এইটা আমার ইন্টারেস্টিং লাগে। সারা পৃথিবী যাঁদের ন্যাশনাল ক্যারেক্টারিস্টিকস বলতে রসবোধ, সময়ানুবর্তিতা, সাহসিকতা ইত্যাদি চমৎকার সব গুণ বেছে নিয়েছে, বাকি পৃথিবীর বাকি দেশের বাকি জাতির লোকদের ক্যারেক্টারিস্টিকস বাছার সময় তাঁরা আরেকটু উদারতা দেখাতে পারেন না কেন কে জানে।
সবথেকে অদ্ভুত হচ্ছে ডিসঅ্যাডভান্টেজিয়াস অবস্থানে থাকার জ্বালা মার্গারেট মিলার নিজে বোঝেন না তো হতে পারে না, তাঁর বইয়ের প্রতি ছত্রে সে জ্বালার প্রমাণ আছে। নারীচরিত্রের "ক্যারেকটারিস্টিকস" নিয়ে কেউ লিস্টি বানাতে বসলে মিলারের যে গা জ্বলে যেত তাতে কোনও সন্দেহ নেই, অথচ তিনিই অম্লানবদনে গোটা মেক্সিকানজাতির মিথ্যেবাদিতা নিয়ে রসিকতা করে গেলেন কী করে?
এটা আবারও প্রমাণ করে, যে আমাদের বেশিরভাগেরই ব্লাইন্ড স্পট থাকে। যিনি নারীবাদ নিয়ে উত্তেজিত, আগাপাশতলা সাম্প্রদায়িক হতে তাঁর কোনও বাধা নেই, আবার বর্ণাশ্রমজনিত গোলযোগ যিনি গুলে খেয়েছেন তিনি হয়তো মন থেকে বিশ্বাস করেন ছেলে আর মেয়েতে হাজার হলেও তফাৎ থেকেই যায়।
যাই হোক, মোদ্দা কথা হল এইরকম ছুটকোছাটকা বাদ দিলে আমার মার্গারেট মিলার পড়ে দারুণ লেগেছে। একেবারে গোগ্রাসে গিলেছি।
সত্তর সাল থেকে মিলারের উপস্থিতি ফিকে হতে থাকে। বিখ্যাত অমর অ্যামেরিকান মিস্ট্রি লেখকদের লিস্টে রেগুলার মার্গারেট মিলার দেখা দিতেন, কিন্তু বইয়ের দোকান থেকে তাঁর বইগুলো হারিয়ে গেল। পুরোটাই আমার অনুমান বলা বাহুল্য, কিন্তু এর একটা কারণ হতে পারে যে উনি যে গল্পগুলো লিখছিলেন তারা মার্গারেটকে কোনও একটা নির্দিষ্ট গোত্রে বাঁধতে তখন অসমর্থ হয়েছিল। উনি স্বর্ণযুগের কোজি মিস্ট্রিও লেখেননি, যেখানে একটা সুস্পষ্ট ধাঁধা আছে, সাদাকালোর সোজাসুজি বিভেদ, গল্পের শেষে দুষ্টের দমন - অনেক ক্ষেত্রেই মার্গারেট মিলারের গল্পের শেষে এই স্যাটিসফ্যাকশনের কোনও গ্যারান্টি মার্গারেট মিলার দেন না - আবার হার্ডবয়েলড গোলাগুলিসমৃদ্ধ রহস্যও ফাঁদেননি।
নব্বইয়ের গোড়া থেকে মিলার আউট অফ প্রিন্ট হতে শুরু করলেন। বছরকয়েক ধরে তাঁকে আবার বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে খুঁড়ে বার করার চেষ্টা শুরু হয়েছে, খুব একটা এখনও পালে হাওয়া লাগেনি। অ্যামাজনে মিলারের বইয়ের বাড়ন্ত সম্ভার এবং দাম দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়।
তাহলে আমি বইগুলো জোগাড় করলাম কী করে? মার্গারেট মিলার একা আমার গুডরিডস চ্যালেঞ্জ সফল করেননি, আরও একজনের, বা একখানা ওয়েবসাইটের কৃতিত্ব আমাকে স্বীকার করতেই হবে। Internet Archive Digital Library. এখানে আপনি অ্যাকাউন্ট খুলুন, একেবারে ফ্রি। (কোনও রকম কার্ড ডিটেলস ইনপুট করতে হবে না, হলে আমি পত্রপাঠ পিঠটান দিতাম।) এইবার আপনার পছন্দমতো বই খুঁজুন। সে বই যদি “ফাঁকা” থাকে তাহলে আপনি তৎক্ষণাৎ চোদ্দ দিনের জন্য পেয়ে যাবেন।সে বই ডাউনলোড করা যাবে কি না, সে সব আমি খোঁজ নিইনি। যে হেতু আমার স্ক্রিনে পড়ায় কোনও আপত্তি নেই, পড়ার সময় হলে অ্যাকাউন্টে লগ ইন করেই পড়েছি। যদি বই ফাঁকা না থাকে তাহলে আপনাকে লাইনে দাঁড়াতে হবে, আপনার আগে কতজন আছেন সব ইনফরমেশন আপনি পেয়ে যাবেন। আমি মিলারের বেশিরভাগ বই লাইনে না দাঁড়িয়েই পেয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু গোটাতিনেক বইয়ের জন্য লাইন দিতে হয়েছিল। বলা বাহুল্য আর্কাইভে এ বছরের ম্যান বুকার পাওয়া বই পাওয়া যাবে না, কিন্তু মার্গারেট মিলারের মতো বিস্মৃত নক্ষত্রদের আবিষ্কার করার জন্য আর্কাইভ মচৎকার।
আপনারা যদি কেউ মার্গারেট মিলার আগে পড়ে থাকেন তাহলে জানাবেন আপনাদের কেমন লেগেছে।
Otibo sundor post Kuntala.
ReplyDeleteApnar kalyane aaro ekjon rohosyo-romancho lekhoker sandhan pawa gyalo :)
Pora to duur asto, ami ei post porar age Margaret Millar er naam i shunini. Cultivate korte hocche tahole.
আমিও তো এই সবে জানলাম, অরিজিত। আপনি আর্কাইভে একবার ট্রাই নিয়ে দেখতে পারেন। আমার তো বেশ ভালো লেগেছে।
Deleteআমি বেশ কয়েকবছর আগে এক অপ্রত্যাশিত গোয়েন্দার সন্ধান পেয়েছিলাম, যার কীর্তিকাহিনি ব্ল্যাক মাস্ক পত্রিকার পাঠকদের বাইরে খুব বেশি মানুষ জানতেন বলে মনে হয় না। রাউল হুইটফিল্ডের সৃষ্টি এই ভদ্রলোকের নাম 'জো গার'। দুই বিশ্বযুদ্ধের মাঝের সময়ে আমেরিকা শাসিত ফিলিপিন্সের নাগরিক এই ভদ্রলোক যে অপরাধগুলোর মোকাবিলা করেছিলেন তারা এমন কিছু অভিনব নয়। কিন্তু চিনা, মালয়, জাপানি, স্প্যানিশ, মার্কিন, ব্রিটিশ, ডাচ, ভারতীয় - এমন নানা দেশের, নানা ভাষা ও জাতিগত পরিচয়ের মানুষের ওই মেল্টিং পটে এসেছেন। তাঁদের কেউ শত্রু, কেউ মিত্র, কেউ বাইস্ট্যান্ডার। গার নিজেও বর্ণশঙ্কর। মানুষটি অত্যন্ত শান্ত, ধীরস্থির। তাঁর গলা আর মেজাজ দুটোই নিচু, কিন্তু এই মানুষটির মতো টেনাশিয়াস এবং বিপজ্জনক গোয়েন্দা হার্ড-বয়েল্ড সাহিত্যের সম্পদ। একটি ডাকাতির সময় এঁর বন্ধুস্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী এক পুলিশ অফিসার খুন হন। কার্যত দুনিয়ার অন্য প্রান্ত অবধি ধাওয়া করেন গার - যতক্ষণ না ওই প্লটের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি অপরাধী হয় ধরা পড়ে, নয়তো মারা যায়!
ReplyDeleteযদি সুযোগ পান, অতি-অতি অবশ্যই পড়ে ফেলুন "West of Guam: The Complete Cases of Jo Gar".
আরে থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, ঋজু। আমি এঁর অস্তিত্ব জানতাম না। শুনে ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। বিশেষ করে নন-ককেশিয়ান গোয়েন্দার স্টক আমার অতি ক্ষীণ। নিশ্চয় জো গার খুঁজে পড়ব। অসংখ্য ধন্যবাদ আবারও।
DeleteTomar kaach theke eto bhalo writers der kotha jaante pari … taar jonne ekta boro thanks Kuntala. Ar onnoder comments thekeo.
ReplyDeleteKhub shiggiri Margaret Millar ar Gar er lekha r khoj korbo.
আমার কমেন্টস সেকশনের উপযোগিতা বিষয়ে আমি তোমার সঙ্গে একমত, শর্মিলা। যদি সুযোগ হয় মার্গারেট মিলার পড়ে দেখতে পার, ভালো লাগবে মনে হয়।
DeleteAmi jodio tomar ei boi ba writer related lekha gulo theke ekhono odbi 3-4 te porechi .. tobu se tuku je korechi tateo ami satisfied.. ei blog na porle hoyto Kichu bhalo boi pora miss hoto..
ReplyDeleteআরে থ্যাংক ইউ, ঊর্মি। অবান্তরে বইয়ের পোস্ট লিখতে গিয়ে আমারও যে কত নতুন বইয়ের কথা জানা হয়েছে।
Delete