ফুচকা ও সাফল্য



অ্যাসোসিয়েশন ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং। স্মৃতির সঙ্গে সুখের অ্যাসোসিয়েশন, মহালয়ার সঙ্গে রেডিওর অ্যাসোসিয়েশন, গোয়েন্দাগল্পের সঙ্গে নিচু কোয়ালিটির সাহিত্যের অ্যাসোসিয়েশন।

জীবনে দাঁড়ানোর সঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু পেশার অ্যাসোসিয়েশন।

গল্পটা আগেও বলেছি। ক্লাস সেভেন নাগাদ আনন্দবাজার বা সাপ্তাহিক বর্তমানে, বাড়ির ছাদে এক যুবকের মাশরুম ফলানোর ব্যবসার প্রতিবেদন পড়া ও তৎপরবর্তী প্রতিক্রিয়ার গল্প।

মন্ত্রগুপ্তির মাহাত্ম্য তখনও মর্মস্থ হয়নি। মাকে গিয়ে বললাম, জীবনের মোটো ঠিক করে ফেললাম।

'ঠিক করে ফেললাম’ উচ্চারণের সঙ্গে সাহসী সপাট অঙ্গভঙ্গি অ্যাসোসিয়েট করবেন না আবার। বরং এই দেখো মা কাগজে লিখেছে মাশরুম চাষের কথা, যদি তোমার অনুমতি পাই তো বড় হয়ে অ্যাটেম্পট নিয়ে দেখতে পারি, না দেখলেও অসুবিধে নেই তুমি যা বলবে শিরোধার্য সে তো জানাই কথা, আমার ভঙ্গিটা ছিল এটাই।

মায়ের চোখ উঠে এসে আমার চোখে স্থিত হয়েছিল, মাসল মেমোরিতে হাত যেমন চলার চলেছিল বঁটিতে, আমি সাডেন মুভমেন্ট বন্ধ রেখেছিলাম এবং বুঝেছিলাম এ স্বপ্ন ক্যান্সেল।

অনেক পরে গল্পটা মনে করাতে মা আফসোস করেছিলেন। মাতৃত্বের পরীক্ষায় ফেল মারার আফসোস। মেয়ের যাবতীয় স্বপ্নের আগুনে ঘি না ঢালার আফসোস। সান্ত্বনা দিয়েছিলাম, ঢাললেও লাভ কিছু ছিল না। স্বাধীন ব্যবসা করতে গেলে যে জিনিসগুলো লাগে - উদ্যম, সাহস, উপস্থিত বুদ্ধি, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস, ভেঙে না পড়া, ভয় জয় করা - একটিও আমার মধ্যে নেই। আমাকে হতে হলে চাকরই হতে হত।

মেয়ের জীবনের লক্ষ্যের সঙ্গে ছাদে মাশরুম চাষকে অ্যাসোসিয়েট করাতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু মেয়ের জীবনের নিরিখেই, আরও অনেক লৌহকঠিন অ্যাসোসিয়েশনে মা নিজ দায়িত্বে কাঁচি চালিয়েছিলেন। খেয়েপরে বাঁচার সঙ্গে ইংরিজি মাধ্যমের শিক্ষার অ্যাসোসিয়েশন। জীবনে সাফল্যের সঙ্গে সায়েন্স নেওয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

তখন আত্মীয়স্বজনদের সামনে 'সোনা, ছড়া বলে শোনাও'-এর স্টেজ পেরিয়ে 'বড় হয়ে কী হতে চাও'-এর স্টেজ ঢুকছে, এবং ক্লাস থ্রি-র মান্থলি টেস্টে কুড়িতে কুড়ি পাচ্ছি বলে সবাই ধরে নিয়েছে যা চায় তাই হতে পারা এ মেয়ের বাঁয়ে হাত কা খেল। সেজকাকু বলছে, বৌদি, জিমন্যাস্ট বানাও। জেঠু বলছেন, আই এ এস ইজ দ্য ওনলি ওয়ে টু গো। বাবা মুখে বলছেন না কিন্তু মনে মনে ভাবছেন, বাড়িতে একটা ডাক্তার থাকলে ভালো। মা গম্ভীর মুখে মাথা নাড়ছেন আর সন্ধেবেলা যখন সবাই টিভি দেখছে, অফিস থেকে ফিরে সব কাজ সেরে পড়তে বসিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করছেন, আমরা কিন্তু সায়েন্স নেব না, ঠিক আছে সোনা?

সাইকোথেরাপিস্টরা এ স্মৃতি আনপ্যাক করতে তিনটে সেশন নামাবেন, কিন্তু আমরা সে রাস্তায় হাঁটব না। আমরা শুধু মায়ের বিপ্লব দেখেই মুগ্ধতার ভান করব। বিপ্লবটা মা করতে পেরেছিলেন, বা করেছিলেন, নিজের যন্ত্রণার স্মৃতি জাগরূক ছিল বলে। শরীরের প্রতিটি রক্তবিন্দু চেয়েছিল ইংরিজি পড়তে, কিন্তু উদবাস্তু বাড়ির মেয়ের চাকরি সুনিশ্চিত করা নন-নেগোশিয়েবল ছিল এবং বিজ্ঞান পড়াও। মা আজীবন যে চাকরিটা করেছিলেন তার সঙ্গে বিজ্ঞানের ব-এর দূরদূরান্তের সম্পর্ক ছিল না কিন্তু অত দূরদৃষ্টি আর ক'জন অভিভাবকের থাকে। 

অন্যের জীবনের পছন্দঅপছন্দ নিয়ে কমেন্ট করি না, নিজের বাড়িতে দরজা জানালা বন্ধ করে ন্যাতাকানি পরে চায়ের কাপ হাতে বিশ্বস্ত শ্রোতৃমণ্ডলীর সামনে ছাড়া, তবু বারো বছরে অবান্তর প্রায় ওপরের ছবিটার‍ কাছাকাছি চলে গেছে তাই বলে ফেলছি। কত কিছু দেখে পরে অবাক হয়েছি, কিন্তু জীবনের শুরুর দিকের একটি বিমুগ্ধ বিস্ময় ছিল ইলেভেন টুয়েলভে সায়েন্স নেওয়ার জন্য লোকের হাঁকপাঁক। শুধু অভিভাবকদের না, ছাত্রছাত্রীদেরও। গত দশ বছরের পড়াশোনা এবং পরীক্ষার রেজাল্ট যে মেয়ের সায়েন্সের তুলনায় নন-সায়েন্স বিষয়ে প্রতিভা ও প্রবণতা পুনঃপুনঃ প্রমাণ করেছে, সন্দেহের সমস্ত অবকাশ অতিক্রম করে, সেও মাধ্যমিকের পর সায়েন্স নেওয়ার ঘোষণা করত। কারণ আর্টস পড়লে "মুখস্থ" করতে হয়, আর সে "মুখস্থ" করতে নিতান্ত অপারগ। 

তখন সবই ফেসভ্যালুতে নিতাম। হয়তো সায়েন্সের প্রতি এই আনুগত্য সত্যিই মুখস্থবিদ্যার অনুপস্থিতির জেরে, বা হয়তো চাকরিবাকরি পাওয়ার বাস্তবতার মুখ চেয়ে। 

এখন জানি, তা নয়। পৃথিবীর নিরানব্বই শতাংশ লোকের জীবনভরের নিরানব্বই শতাংশ সিদ্ধান্তের মতই সায়েন্স নেওয়ার সিদ্ধান্তটাও প্র্যাকটিকাল নয়, সেন্টিমেন্টাল।

লোকে নিজেকে অসফল বলে মেনে নিতে রাজি থাকে। অমেধাবী বলে নয়। আর সায়েন্স ইকুয়ালটু মেধা, মেধা ইকুয়ালটু সায়েন্স, এ সমীকরণ আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে।

সেদিন একটা সিনেমা দেখতে বসে এ সারস্বত সত্য আবার ঝলসে উঠল। ধরা যাক সিনেমার নাম বনি। ধরা যাক স্ট্রিমিং সার্ভিসের নাম হইচই। একজন ভালো বাঙালি বিজ্ঞানীর বানানো প্রযুক্তি চুরি করে একদল দুষ্টু ককেশিয়ান বিজ্ঞানী ষড়যন্ত্র ফেঁদেছে। সুপারহিউম্যান সেনাদল বানিয়ে গোটা হিউম্যান সভতা নয়ছয় করার ষড়যন্ত্র। ক্যাচ হচ্ছে এই সেনাদের তৈরি হতে হবে জন্মেরও আগে থেকে, গর্ভবতী মায়ের পেটে কী যেন একটা ইঞ্জেকশন প্যাঁট করে ফুটিয়ে। তাও যে সে গর্ভবতী মা (এবং বাবা) চলবে না। এমন বাজখাঁই গোলমাল বাধাতে  হেঁজিপেঁজি হিউম্যান শিশু নয়, চাই সুপারহিউম্যান শিশু। বড়মাসির গুরু বলতেন আধারই সব। হিমসাগর খেতে গেলে আমগাছই পুঁততে হবে, আমড়া পুঁতলে চলবে না। কাজেই সুপারহিউম্যান সেনা হতে গেলে চাই সুপারহিউম্যান, অর্থান্তরে মেধাবী শিশু। এবং মেধাবী বাবামা। আর যেই না মেধাবী বাবামায়ের সন্ধান পড়েছে, অমনি সায়েন্স পড়া বাবামায়েদের ধরে ধরে কিডন্যাপ করতে লেগেছে।  আমাদের পরমব্রত এবং কোয়েল সে রকম একজোড়া বাবামা। একজন কম্পিউটার এঞ্জিনিয়ার, একজন বায়োসায়েন্টিস্ট 

কেন?

বাংলায় যে ছেলে লেটার পাচ্ছে, সে মেধাবী নয় কেন?

যে মেয়ে পাঁচ বছর বয়সে ঝাঁপতালে নিখুঁত বন্দিশ গাইছে সে মেধাবী নয় কেন?

যে টপাস করে অক্ষাংশ দ্রাঘিমাংশ বুঝে ফেলছে ক্লাস ফাইভে এবং পাশের বন্ধুকে, আরে এটা তো সোজা ব্যাপার বলে খাতার ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে জিভ টিভ বার করে এঁকে বুঝিয়ে দিচ্ছে, সে মেধাবী নয় কেন?

যে একাই সব নম্বর পাওয়ার হিংসুটেপনায় তুড়ি মেরে সবাই মিলে নম্বর পাওয়ার বেস্ট পলিসি প্র্যাকটিস করছে ওই পুঁচকে বয়স থেকে সে মেধাবী নয় কেন?

যে ক্লাসের পড়া বুঝতে না পেরে  ভয়ে না কেঁপে, লজ্জায় না মরে বন্ধুর দ্বারস্থ হচ্ছে সে মেধাবী নয় কেন?

এটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে জানা সত্ত্বেও যে আসল খেলার মাঠে ফস ফস করে অংক কষে ফেলার থেকে অনেক বেশি কাজে লাগবে ওই 'বুঝিনি, বুঝিয়ে দে,' আত্মসমর্পণের আত্মবিশ্বাস?

সবথেকে অদ্ভুত, এই সব নাটক নভেল সিনেমা যাঁরা বানাচ্ছেন তাঁরা নিজেরা অন্য পথে হেঁটেও নিজেদের সৃষ্টিতে মেরিটোরিয়াস নামে এমন কিছু লোককে দেখিয়ে যাচ্ছেন যারা ভীষণ স্পিডে কিছু অদ্ভুত শব্দ পাশাপাশি বলে যাচ্ছে যেগুলো ধীরে বলতে বললেই প্রমাণ হয়ে যাবে যাদের আলাদা আলাদা ভাবে তো বটেই, পাশাপাশি বসালে কোনও মাথামুন্ডু দাঁড়ায় না। বিশুদ্ধ প্রলাপ।

ফুচকার সঙ্গে সাফল্যের অ্যাসোসিয়েশন দিয়ে আগের পোস্ট শেষ করেছিলাম। সেটা করতে গিয়েই মনে হয়েছিল মা হয়তো এই অ্যাসোসিয়েশনটা মাথার ভেতর করতে পারতেন না।

আবার পারতেও পারতেন। মায়েদের পারা না পারা নিয়ে মেয়েদের মাপামাপি অনেকসময়েই ভুল হয়। জীবনে প্রথমবার 'প্রথম প্রতিশ্রুতি' পড়ে পরের তিনমাস ঘোরের মধ্যে ঘুরেছিলেন মা।  স্কুলের যে দিদিমণি মাকে বইটা পড়িয়েছিলেন, মায়ের মুগ্ধতায় মুচকি হেসে বলেছিলেন, মাকে পড়াস, এবং উনুনের সামনে অপেক্ষারত দিদিমার শান্ত মুখ একঝলক মনে করে ষোলবছরের মা বলে উঠেছিলেন, এ জিনিস মা বুঝবে না।

আমিও বিষম খেয়েছিলাম যেদিন শুনেছিলাম মা একসময় বেড়াতে যাওয়ার আগে মনে করে লিপস্টিক মাখতেন আর আইলাইনার আঁকতেন। আমার মুখচোখ দেখে মা লুটোপুটি খেয়েছিলেন, যেমন মায়ের উত্তর শুনে অট্টহাসি হেসেছিলেন দিদিমণি।

হয়তো ফুচকার সঙ্গে সাফল্যের অ্যাসোসিয়েশনের অপারগতা আমারই অন্তরের। মায়ের ঘাড়ে চাপাচ্ছি। অন্তরে যা-ই থাকুক না কেন, বাহিরে অ্যাদ্দিনে নিশ্চিত হয়েছি। সি আর পার্কের যাবতীয় সফল লোককে ধর্তব্যের মধ্যে রেখেই বলছি, এক নম্বরের ফুচকাবিক্রেতার মতো সফল তাঁরা কেউ না। পয়লা বৈশাখে দু'নম্বরের ফুচকাওয়ালাকে ঘিরে গড়ে ওঠা সপ্তম দূরবর্তী কক্ষপথ থেকে শুরু করে কুড়ি মিনিট পরে ফুচকা পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছিলাম, এক নম্বরে থাকলে ও কুড়িটা কত মিনিট, রাদার ঘণ্টায় পর্যবসিত হত ভেবেই শিউরে উঠছি।

সাফল্যের বিচার শুধু বিক্রিবাট্টা দিয়ে করছি না। যেদিন Buzzfeed India চ্যানেলে ফুচকার ছেলেটাকে দেখেছিলাম, সম্ভ্রমের সীমা আপার লিমিট ছুঁয়েছিল। একজন ফুচকাবিক্রেতা যে প্যানইন্ডিয়ান দর্শক পেতে পারেন, ধপধপে সাদা শেফের ইউনিফর্ম পরে মিলিয়ন ভিউজওয়ালা ভিডিওর স্টার হতে পারেন এটা আমার ফুচকা ও ফুচকার পারিপার্শ্বিকতাসংক্রান্ত আজন্মলালিত "গেজ"টাকে ঘাড় ধরে ঘুরিয়ে দিয়েছে। 

এ যদি সাফল্য না হয় তাহলে আর কিছুই সাফল্য না। 

তবু মন খুলে মুগ্ধ হতে পারি না।

অত হিংসুটে হলে পারবেনই বা কী করে বলে উড়িয়ে দিতে পারেন, কিন্তু অপারগতা পুরোটাই ষষ্ঠরিপু সংক্রান্ত নয়। হিংসুটে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি একজন আগাপাশতলা বিফল মানুষও বটে। যে কারণে সাফল্য এবং সফল মানুষেরা আমার কাছে চুম্বক। আমি দাউদ ইব্রাহিমকে দেখেও গোপনে ইমপ্রেসড হই। গুণ্ডা, কিন্তু সফল গুণ্ডা।

একনম্বরের ফুচকাবিক্রেতার সাফল্য যে আমাকে কাছাখোলা মুগ্ধতা দিতে অপারগ হয় তার পেছনে কাজ করে আমার আরেকটা রিপু। মলাট দিয়ে বই বিচারের রিপু। ফুচকার ঠেলা ঘিরে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দেওয়ালে Buzzfeed India এবং আরও অন্যান্য কর্পোরেট পৃষ্ঠপোষকদের শংসাপত্র যতই উচ্ছ্বসিত, বিক্রেতাদের ইউনিফর্ম যতই ধপধপে, গ্লাভস ও টুপি যতই যথাস্থানে, ফুচকার খোলা যতই পাতলা আর কুড়মুড়ে, টকমিষ্টি জলের চয়েস যতই অনন্ত, আলু যতই মনের মতো ঝাল, সে সব চৌষট্টি রকম চয়েসের জল ও আলুরা যে স্টিলের হাঁড়ি ডেকচির বদলে আলপনা আঁকা টেরাকোটার হাঁড়িতে বিরাজমান হন, সেটা আমার ফুচকার অ্যাপ্রিশিয়েশনে অনতিক্রম্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।

মাঝে মাঝে গরম কম থাকলে, সুন্দর হাওয়া দিলে এইসব প্রেজুডিস জয় করার উচ্চাশা জাগে। তেমন এক বিকেলে, এই চারটে হবে, একনম্বরের পাশ দিয়ে হেঁটে আসতে আসতে আবিষ্কার করলাম টেরাকোটার হাঁড়ি ঘিরে মোটে তিনজন দাঁড়িয়ে। অর্থাৎ আমাকে অপেক্ষা করতে হবে মাত্র এক ব্যাচ, চাই কি এই ব্যাচেও সুট করে গলে যাওয়া যেতে পারে।

গেলাম। প্লেট পেলাম। জল টক না মিষ্টি না টকমিষ্টি, আলু ঝাল না আর একটু না আরও একটু ঝাল সে বাবদে পছন্দ জানালাম, তিনজনের পর আমার পালা এল, আসন্ন উল্লাসের অপেক্ষায় গায়ে কাঁটা এমন সময় 'দেখেছেন আরেকটু হলেই হচ্ছিল' মুখ করে ছেলেটা যাবতীয় কার্যক্রম থামিয়ে জিজ্ঞাসা করল,

জল নরম্যাল না মিনারেল?

ওই মুহূর্তে উত্তরটা দিতেই হত। অবান্তরে সে ট্রমা খুঁড়ে তুললাম না। আপনার বুঝবেন জানি। আমিও জানি। হয়তো ওই প্রশ্নটার মুখোমুখি আর হতে চাই না বলেই একনম্বরের ফুচকার সামনে আর আমার কখনও দাঁড়ানো হবে না, সে যতই ফাঁকা থাকুক না কেন, যত সুন্দর রোদই উঠুক না কেন।

Comments

  1. Khub bhalo laglo. Anekdin por Abantor e comment korchhi. Amar khub pochhonder bishoy niye likhechhen. Prothomoto Science-Arts samajik bibhajon aar dwitiyoto fuchka r association. Ekbar bocchor dui aage sujog hoyechhilo maharghyo paanchtara hotel e fuchka khaoar. Ammar chheler tokhon 11 bochhor boyos. Bideshe adyonto boro hoya chhele bolechhilo je hoini eta fuchka r swad. Mondir er fuchkawala r dhare kaachhe jaini. Amar o tai mot. Amar chheleo oi boyose fuchkar association bujhte bindumatro bhul koreni.
    Aar Science-Arts er bishoye aami bhuktobhugi. Chhotobela theke aami ekprokar thik korechhilam je science nebo na. Aami bhalobastam na. Aamar baba-maa ke anek koste raji koriyechhilam. Kintu madhyomik e amar science er bishoyei sab letter chhilo. Shokhe arts niyechhilam. Aneke naak sitkiyechhilo. Aar science er chhatro maane prothom srenir nagorik --- ei abantor paglamir jonyo anek manush jibone ja cheyechhilen ta korte pareni. Aar mukhostho satti bolte arts er bishoye toto korte hoina---aasole kintu bishoygulo bodhmulok. Kintu amader education system take note-mulok korar karone ei dharona. Borong amar simito gyane mone hoyechhe Medical er anekkichhu, Chemistry ba Biology er anekkichhu mukhostho korte hoi. tarpor sei science neoa bidushi manushder beshir bhag keo aami mukhostho kortei dekhechhi. Mukhostho byaparta amader education system er fol bolei anekangshe amar mone hoyechhe. Sarajibon sabar sathe amai torko korte hoyechhe. Ekhono kore jai.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ছেলেকে এমন বিবেচক করে বড় করার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন, সুস্মিতা। ফুচকা নিয়ে ফাজলামিটা আমারও সয় না।

      মুখস্থবিদ্যার ব্যাপারটায় যে কত উঁচু হাই ফাইভ দেব স্থির করতে পারছি না। আমাদের সিস্টেমে মুখস্থ করাই শেখানো হয়। কী সায়েন্স, কী আর্টস। কে কাকে বোঝাবে।

      খুব ভালো লাগল কমেন্ট পড়ে আপনার। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  2. ওইটা ভালো বলেছ। লোকে অসফল মেনে নেবে কিন্তু অমেধাবী না। কারন সেক্ষেত্রে ভাগ্যকে দোষ দেওয়ার উপায় থাকেনা কিনা!

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি গোটাটাই ইগোর অ্যাংগল থেকে ভাবছিলাম, প্রদীপ্ত। কিন্তু তোমার কারণটাও যুক্তিযুক্ত। ভাগ্যর থেকে নন্দ ঘোষ কমই আছে।

      Delete
    2. না আমার কথাটাও তোমার দৃষ্টিকোনকেই সমর্থন করছে ঘুরেফিরে। নন্দ ঘোষ লাগে কেন, আমার ইগো মেনে নিতে পারে না আমি কম পারি।

      Delete
  3. প্রেজুডিস শব্দটা খুব ইন্টারেষ্টিং। ডিকশনারি (আসল ডিকশনারি খুলে দেখিনি, ফাঁকি দিয়ে গুগল কেই ডিকশনারি বলে চালিয়ে দিচ্ছি) বলছে: "preconceived opinion that is not based on reason or actual experience." এবার কথা হচ্ছে, preconceived টা হলো কিভাবে? কল্পনা? কোনো এক সাময়িক স্থান-কাল এ প্রযোজ্য ছিল, এখন প্রযোজ্য নয়, এবং তার সাথে ভ্রান্ত চিন্তাধারা জুড়ে, বেপারটা প্রেজুডিস হয়ে গেছে?

    বিজ্ঞান তো অনেকটাই অ্যাসোসিয়েশন এর ওপর দাঁড়িয়ে (প্যাটার্ন খুঁজে প্রেডিক্ট করা), আর অ্যাসোসিয়েশন থাকলে প্রেজুডিসও তো চলেই আসে। "ইংলিশ প্রাইম" ভাষাটা হয়তো প্রেজুডিস মুক্ত হবার দিকে একটা চেষ্টা ছিল।

    মান্থলি টেস্টে কুড়িতে কুড়ি পাওয়া আর জিমন্যাস্ট হওয়ার অ্যাসোসিয়েশন আগে মাথায় আসেনি, নোট রাখলাম, ভেবে দেখবো।

    মিনারেল ওয়াটার দিয়ে ফুচকাটা একদম ব্রেকিং নিউস, ভেবে দারুন মজা লাগছে!

    ReplyDelete
    Replies
    1. "মান্থলি টেস্টে কুড়িতে কুড়ি পাওয়া আর জিমন্যাস্ট হওয়ার অ্যাসোসিয়েশন আগে মাথায় আসেনি, নোট রাখলাম, ভেবে দেখবো।"

      😁 ওটা কেবল বাড়ির লোকেদের মাথাতেই আসতে পারে, রাজর্ষি। চরম একচোখোমি বা স্নেহজনিত সম্পূর্ণ অন্ধত্ব এইরকম অ্যাসোসিয়েশনের জন্য প্রিরিকুইজিট।

      প্রেজুডিস নিয়ে আমি এত ভাবিনি, ধাঁই করে লিখে দিয়েছি। এখন ভাবছি, লাগসই হল কি না।

      মন্তব্য পেয়ে বরাবরের মতোই খুশি। থ্যাংক ইউ।

      Delete
    2. যেভাবেই লিখুন, ভাগ্যিস সেইভাবেই লেখেন, তাই হয়ত পড়তে ভালো লাগে।

      তাছাড়া যা লিখেছেন সবই তো সত্যি।

      আর সত্যি বলতে কি - বেশি অংক কষা বিশ্লেষণের জন্যে অনেক মোটা মোটা বই আছে, সেগুলো খুলে একটু পড়ার ভান করে নিলেই কাজ চলে যাবে।

      জিমন্যাস্ট হওয়ার অ্যাসোসিয়েশনটা একদম সুপারহিট ছিল।

      Delete

Post a Comment