Posts

Showing posts from February, 2024

নভেম্বর (২)

Image
বাবা বললেন, জগদ্ধাত্রী পুজোতে আসিসনি অনেকদিন। নাকতলার মামার পঁচাত্তর বছরের জন্মদিন উদযাপনের দিনও ছিল কাছাকাছি। দুটো মিলিয়ে বাড়ি যাওয়া হল। দুটোতেই ভালো জামাকাপড় পরার ব্যাপার আছে। আজকাল সাজের দিকে মন গেছে খুব। সাজ অর্থে টিপ। কুর্তা শাড়ি জিনস, বাকি শরীরে যাই থাকুক, কপালে একখানি টিপ ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোই না। একটি নির্দিষ্ট রঙের, নির্দিষ্ট সাইজের টিপ। মা যেটা পরতেন। মায়ের মেয়ে হতে পারিনি। পারব না। আয়নায় আচমকা চোখ পড়ে গেলে যদি এক সেকেন্ডের জন্য নিজেকে বোকা বানাতে পারি সেই আশায় টিপ পরা। টিপসর্বস্ব সাজের সুবিধে হচ্ছে ব্যাপারটা সরল ও সস্তা। সাজগোজের দাম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে একবার বিপদে পড়েছিলাম। কসৌলি গেছিলাম। ফেরার পর অফিসে ফলাও করতে সহকর্মী হাহাকার করলেন। আগে বললে না? কসৌলিতে নাকি কসমেটিকসের কুটিরশিল্পের রমরমা। ওঁর কোন বন্ধু গিয়েছিল, গোটা মাসের মর্নিং অ্যান্ড নাইট বিউটি রুটিনের মালমশলা চারশো টাকায় কিনে এনেছে। যেটা দিল্লিতে এনি ডে চার হাজার। যখনকার কথা তখন চুল কাটার সময় ঘনালে অর্চিষ্মানকে ধরি। তোমার নাপিত আমার চুল কেটে দিতে পারবে না? স্ট্রেট কাঁচি চালিয়ে দেওয়া তো। অর্চিষ্মান হিংসুটেমো...

আজকের জন্য

Image
 

নভেম্বর

আমাদের ওদিকে চিরকালই হিংসার ঐতিহ্য জ্বলজ্বলে। রিষড়ার জাগ্রততম ভগবান সিদ্ধেশ্বরী কালীঠাকুর, যার থানে নিয়মিত মুণ্ডু কাটা পড়ত। রিষড়ার বিখ্যাততম বাসিন্দা রঘু ডাকাত। ব্রাত্য বসুর সিনেমা 'হুব্বা' মুক্তি পেয়েছে, এবার রঘুবাবুর জনপ্রিয়তা কমতে পারে। হুব্বা শ্যামলও, এখনও যদি কেউ না জেনে থাকেন, আমাদের পাড়ার লোক। শ্বশুরবাড়ির পাড়ার গুণ্ডার সিনেমা দেখার জন্য অর্চিষ্মান পাগল হয়ে উঠেছে। এদিকে 'হুব্বা' দিল্লিতে এখনও রিলিজ করেনি, করবে কি না বোঝা যাচ্ছে না। ওয়ার্স্ট কেসে হইচইতে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার দেখতে হবে। যেখানেই দেখি না কেন অবান্তরে প্রতিক্রিয়া দেব। উইথ ব্যক্তিগত অ্যানেকডোট। যার খোঁজ ব্রাত্য বসুর রিসার্চারদের পক্ষে পাওয়া অসম্ভব। রঘু, হুব্বা দুজনেই গত হয়েছেন, পাড়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নতুন সিন্ডিকেট। দাপটের আঁচ পেলাম বাড়ি গিয়ে। আমার আর মায়ের শোয়ার ঘরের সিলিং ফ্যানের পাশেই একটা এস-হুক থেকে ঝুলছে মায়ের পুরোনো শাড়ি দিয়ে বানানো প্রকাণ্ড পুঁটলি। আগের বছর তিনটে পাকা কাঁঠাল চুরি হয়ে যাওয়ার শোক বাবা কাটাতে পারেননি। এ বছর কলার একটা কাঁদি মোটামুটি কাঁচকলা স্টেজে যাওয়া মাত্র কেটে এনে ঘরের ভেতর সিলিং...

Bondhu: কুণাল সেন

Image
অর্চিষ্মানের জন্মদিনের আগের দিন পৌঁছল তিন্নির পাঠানো কেক। পরের দিন 'বন্ধু'। অ্যাকচুয়ালি, ' Bondhu '। বইটা ইংরিজি, কিন্তু বইয়ের নাম বন্ধু-র ইংরিজি 'ফ্রেন্ড' নয়। কারণ 'বন্ধু' এখানে একটা নামবাচক বিশেষ্য, প্রপার নাউন। যে নামে কুণাল সেন তাঁর বাবা মৃণাল সেনকে ডাকতেন। 'বন্ধু' তিনটি বিভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগ 'বন্ধু'। দ্বিতীয় ভাগ 'ফিল্মমেকার'। তৃতীয় ভাগ 'ফাদার'। একজন মানুষের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্রোনোলজিক্যালি বলে যাওয়ার থেকে একেকটা দিকে একেকবারে আলো ফেলায় সে দিকটা অনেক ভালো করে আমাদের নজরে পড়ে। এ বিন্যাসের হয়তো অন্য কারণও ছিল। কুণাল সেনই লিখলেন নাকি অন্য কোথাও পড়লাম - তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্ত পৌঁছতে পৌঁছতে আমরা অধিকাংশই সম্পূর্ণ বিস্মৃত হব। ঠিকই। ঠাকুরদার মায়ের শুধু নাম জানি, চপলা। আর একটা ছবি। আর একটা গল্প। একটাই গল্প। বরিশালের মাঠে তরোয়াল চালাতে চালাতে এক যাত্রাভিনেতার তরোয়ালশুদ্ধু স্টেজ থেকে ভদ্রমহিলার কোলে পড়ে যাওয়ার গল্প। ঠাকুমাও কিছু গল্প বলেছেন বটে কিন্তু সে সবই অত্যাচারিত বউমার পার্স্পেকটিভ থেকে জাঁদরেল শাশুড়ির...