অমৃতসর ৩ঃ জালিয়ানওয়ালাবাগ, পার্টিশন মিউজিয়াম
দেখেশুনে আমি সিদ্ধান্তে এসেছি নেচার, নারচার দিয়ে সবটা ব্যাখ্যা করা যায় না। কিছু লোক স্রেফ খুঁতো প্রোগ্রামিং নিয়ে জন্মায়। উদাহরণ, জেনারেল ডায়ার। বিচারের সময় নাকি বলেছিলেন নেহাত গাড়ি ঢোকার জায়গা ছিল না, না হলে উনি মেশিনগানওয়ালা গাড়ি নিয়ে ঢুকে ভিড়ের ওপর গুলি চালাতেন।
গুরুদ্বারার নাকের ডগায় জালিয়ানওয়ালাবাগ। মাঠের মাঝখানে স্টেজ বেঁধে আলোচনাসভা চলছিল। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষণামূলক একটি বই লিখেছেন এক মহিলা। বইয়ের নাম, লেখকের নাম খোঁজ নেওয়া উচিত ছিল। ভদ্রমহিলা বলছিলেন, বইয়ের জন্য রিসার্চ করতে গিয়ে, জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংসতার নমুনার নতুন করে মুখোমুখি হয়ে ওঁর ঘুম উড়ে গিয়েছিল। হাজার হাজার লোক, অসহায়ের মতো মরে গেল, কেউ বাঁচাতে এল না। ভদ্রমহিলা বলছিলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে জালিয়ানওয়ালাবাগ পিকনিক স্পট নয়।
জায়গাটার চেহারাটা এখন পিকনিক স্পটেরই মতো হয়েছে সন্দেহ নেই। স্কুলের বাচ্চা, কলেজের ছেলেমেয়ে, প্রেমিকপ্রেমিকা, সিংগল, কাপল, ইট’স কমপ্লিকেটেড - গিজগিজ। গুলির গর্ত খুঁজে পাশে দাঁড়িয়ে ভিক্টরি সাইন দেখিয়ে ছবি তুলছেন দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ ঘাসে শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। হাই তুলছেন, উল বুনছেন, কমলালেবু ছাড়িয়ে খাচ্ছেন। খাওয়া হয়ে গেলে খোসা বিচি অদূরবর্তী ডাস্টবিনে ফেলে আসবেন, হোপফুলি।
ভাবলাম, কোনটা হওয়া উচিত। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের দগদগে ক্ষত জালিয়ানওয়ালাবাগ; সেই অন্ধকুয়ো, গুলি থেকে বাঁচতে যার মধ্যে স্বেচ্ছায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিলেন নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু; ডাঁই হওয়া মৃতদেহের ছিন্নভিন্ন পায়ের পাতা, কারণ মাথা বাঁচাতে শুয়ে পড়েও রক্ষা হয়নি, ডায়ারের লোকেরা বন্দুকের নলের তাক অ্যাডজাস্ট করে নিয়েছিল; সেই সব শত শত নিরস্ত্র নিরপরাধের যন্ত্রণা, ভয়, আতংক, অসহায়তার কথা মনে রেখে, তাঁদের প্রিয়জনদের অপূরণীয় ক্ষতির কথা মনে করে সেই জায়গাটার শোকস্তব্ধতাকে সংরক্ষণ করা?
নাকি মনে রাখা যে উনিশশো উনিশ সালের তেরোই এপ্রিলের আগে জালিয়ানওয়ালাবাগ একটি সুরম্য উদ্যানই ছিল। সে উদ্যানে বাচ্চারা দৌড়ত, বড়রা গল্প করত, উল বুনত, রোদ্দুরে বসে খোসা ছাড়িয়ে কমলালেবু খেত। তারপর একটা খুঁতো প্রোগ্রামিংওয়ালা লোক এসে ওই অকথ্য ঘটনা ঘটালো। সে ঘটনার ক্ষত তো মুছবে না, দেওয়ালে দেওয়ালে তার চিহ্ন থেকে যাবে। কিন্তু সেই ক্ষতকে স্রেফ দাগে পর্যবসিত করে বাগকে আবার জনতার উল্লাস দিয়ে ভরে দেওয়াও কি একরকমের জয় হিসেবে প্রতিভাত হতে পারে না?
বাগানের একদিকে মিউজিয়াম। সেখানে জালিয়ানওয়ালাবাগ ম্যাসাকারের নথিপত্র সংরক্ষিত আছে। একদিকের দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবির ওপর টাঙানো নাইটহুড ত্যাগ করার ঘোষণাজনিত চিঠির বয়ান।
“The time has come when badges of honour make our shame glaring in their incongruous context of humiliation, and I for my part wish to stand, shorn of all special distinctions, by the side of my country men.”
*****
ছড়ানো চাতাল ঘিরে লাল বাড়ি, থামওয়ালা বারান্দা, বাহারি উঁচু গেট মিলিয়ে অমৃতসরের টাউন হল কলোনিয়াল স্থাপত্যের একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন।। সাতচল্লিশ সালের আগে এই বাড়িই ছিল অমৃতসরের প্রশাসনিক হেডঅফিস। এক দিকের হাতায় ছিল পুলিস বিভাগ, সেই হাতাতেই এখন খুলেছে পার্টিশন মিউজিয়াম।
ভারত পাকিস্তানের পার্টিশন চোদ্দ মিলিয়ন মানুষকে ঠাঁইনাড়া করেছিল। পার্টিশনের নজিরবিহীন নৃশংসতা, রাজনৈতিক ঘুঁটি চালাচালির অপরিসীম স্বার্থপরতা ইত্যাদি যদি ছেড়েও দেওয়া হয়, স্রেফ মাত্রার দিক থেকে এই ঘটনা পৃথিবীর অন্যতম ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। তা সত্ত্বেও ভারত পাকিস্তানের পার্টিশন যে বিশ্বইতিহাসে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে নেই, তার কারণ অনুমান করা কষ্টকর নয়।
ঘটনাটিকে তার যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে সংরক্ষণ করার জন্য এই পার্টিশন মিউজিয়ামের অবতারণা। অবতারণা করেছেন আর্টস অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ ট্রাস্ট। তাছাড়াও এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছে ব্রিটিশ লাইব্রেরি, ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টারি লাইব্রেরি, আমাদের ন্যাশনাল আর্কাইভ, পাঞ্জাব ডিজিটাল লাইব্রেরি, কেম্ব্রিজ ইউনিভারসিটি, লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স, সাউদ্যাম্পটন ইউনিভারসিটি, অ্যামিটি ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি।
আমাকে সবথেকে বেশি ছুঁয়েছে, মিউজিয়াম অমৃতসরে হলেও দেশের অন্যপ্রান্তের আরেকটি অঞ্চলও যে পার্টিশনের কোপ সয়েছিল তার সমান সমান স্বীকৃতি। ঢোকার আগে থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মিউজিয়ামের ভেতর ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ বারংবার, ঘুরে ঘুরে, বাজে।
দেশভাগজনিত বিবিধ দলিলদস্তাবেজ, নথিপত্র, ছবি, অডিও ভিস্যুয়াল নথিপত্র দিয়ে তৈরি পার্টিশন মিউজিয়াম ওই সময়ের ভারতীয় রাজনীতির এক অসামান্য দলিল। এ শুধু পরাধীনতার শেকল ছেঁড়ার সময় নয়, নিজেদের রাজনৈতিক সাবালকত্ব অর্জনেরও সময়। স্বার্থ বুঝে, নিক্তি মেপে আমার তোমার বুঝে নেওয়ার সময়। ছবিতে, কোটেশনে, কাগজের কাটিং-এ সে বোঝাবুঝি, মাপামাপির দড়ি টানাটানি দেখলে গা শিরশির করে। তার থেকে পরের শয়তানির সাক্ষী হওয়া যেন কম কষ্টের।
সান্ত্বনার বিষয়, সে শয়তানির সাক্ষ্যের অভাব নেই। বড় বড় ঝোলানো ম্যাপ, সেই উনিশশো পাঁচ থেকে শুরু হওয়া কাটাকুটি খেলার মাঠ। একবার নদীয়া ওদিকে, খুলনা এদিকে; পরের রিভিশনে খুলনা ওদিকে, নদীয়া এদিকে। সবুজ লাইনের ওপর দিয়ে লাল লাইন। একটা ভূখণ্ড ভাগ হয়ে যাচ্ছে, লক্ষ লক্ষ লোক বেঘর হয়ে যাচ্ছেন। যারা ভাগ করছেন তারা সেই ভূখণ্ডের মাটিতে কোনওদিন একঘণ্টা পায়ে হাঁটেননি। সেপাইসান্ত্রী সুরক্ষিত প্রাসাদকক্ষে বসে মানচিত্রের ওপর লালনীল আঁক কাটছেন।
দেওয়ালে টাঙানো টিভি থেকে কথা বলেন কুলদীপ নায়ার। সিরিল র্যাডক্লিফকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন উনি, আপনার মনে হয় দাগটা যুক্তিযুক্ত টানা হয়েছিল? র্যাডক্লিফ জবাব দিয়েছিলেন, আমাকে যা সময় দেওয়া হয়েছিল তাতে আমি ওর থেকে ভালো করতে পারতাম না। আরও সময় পেলে আরেকটু বেটার দাগ টানার চেষ্টা করে দেখতে পারতাম।
আরেক ঘরের দেওয়ালে টাঙানো টিভি থেকে এক বৃদ্ধ বলছিলেন, গ্রামের বাড়ি থেকে মা পাঠাতেন অমৃতসরে দিদির বাড়ি, দিদি নিয়ে যেতেন লাহোরে দাঁতের ডাক্তার দেখাতে। একদিন জানা গেল আর লাহোর যাওয়া যাবে না। ওটা অন্য দেশ। অন্য পার। অমৃতসর রইল এদিকে। কেন? কারণ আমরা তোমাদের কলকাতা দিয়েছি। ওদের একটা বড় শহর দিতে হবে। অতএব লাহোর ওদের, তোমরা অমৃতসর নিয়ে তুষ্ট থাকো।
নথিপত্র, দলিলদস্তাবেজ ঐতিহাসিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই কিন্তু কোনও অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় অলিপিবদ্ধ ইতিহাস। মুখের কথার ইতিহাস। স্মৃতির ইতিহাস। মাঝরাতে অনেক লোকের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যাওয়ার স্মৃতি। চিৎকার দ্রুতবেগে গলি দিয়ে এগিয়ে আসছে। সামনে দিয়ে বেরোনো নিশ্চিত মৃত্যু, পেছনের দরজায় অলরেডি কোপ পড়তে শুরু করেছে। ছাদের দিকে দৌড়নো ছাড়া উপায় নেই। এতদিন গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকা মানুষ ছিটকে গেছে, কী ভাগ্যিস মহল্লার ছাদগুলো এখনও সেতুর মতো জুড়ে আছে। ছাদ থেকে ছাদে লাফাচ্ছি, আর উদ্বাস্তু হয়ে যাচ্ছি একটু একটু করে।
গায়ে কাঁটা দেয় একটা ঘরে ঢুকে। দেওয়ালজোড়া ছবির দিকে তাকানো যায় না। মৃতপ্রায় মানুষের ওপর ঝুঁকে প্রাণের শেষ আশা হাতড়াচ্ছে আরেক মৃতপ্রায় মানুষ। তাকানো যায় না সেই সব ছবিগুলোর দিকেও, যেখানে আপাতভাবে কোনও বিপদ নেই। ওয়ার্স্ট ইজ ওভার। একজন মানুষ রাস্তার ধারে ঝুড়িতে কয়েকটা ফল নিয়ে উবু হয়ে বসে আছেন গালে হাত দিয়ে। দৃষ্টি কোনদিকে বোঝা যায় না। তাঁর আর প্রাণের ভয় নেই। তিনি ভাগ্যবান। কিন্তু তাঁর শূন্য দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে সে কথা বলার সাহস হবে না আপনার।
আরেকটা ঘরের দেওয়াল জুড়ে রিফিউজি ক্যাম্পের ছবি। মাইকে ঘোষণা ভেসে আসছে। একের পর এক নাম। প্রিয়জনের নাম। কোন লরিতে এসে পৌঁছেছেন তাঁরা ক্যাম্পে, আদৌ পৌঁছেছেন কি না তাই বা কে জানে। তবু না খুঁজে তো থাকা যায় না। খুঁজতে তো হবেই। ঘোষণা হচ্ছে মেয়েদের সন্ধের বাইরে তাঁবুর বাইরে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা।
কারণ সবাই রিফিউজি হলেও সবার সমান বিপদ নয়। রিফিউজি ক্যাম্পেও নারী ইজি টার্গেট। নারীর বিপদ বেশি। একটা ঘরের মাঝখানে কুয়ো খোঁড়া। অনার কিলিং কুয়ো। আক্রান্ত হওয়ার আগে মেয়েদের ফেলে দাও। পুরুষের প্রাণ যাবে। মেয়েদের যাবে আরও বেশি কিছু। রিফিউজি ক্যাম্পেও দলিতরা দলিত। অতীত রক্তাক্ত, ভবিষ্যতের ঠিকঠিকানা নেই, এমন সময়েও বর্ণপরিচয় টনটনে। রিফিউজি ক্যাম্পেও নিচু জাতের সঙ্গে থাকতে ঘেন্না করে।
সরকারি এবং ব্যক্তিগত অবদানে ভরে উঠেছে মিউজিয়াম। কাঁচের আড়ালে খাঁটি ফুলকারি শাল মেলা। ওপার থেকে অনেক জিনিসের সঙ্গে কী মন্ত্রবলে অক্ষত এসে পৌঁছেছে। দু’খানা ঢাকাই শাড়ি দিয়েছেন কেউ। বাড়ির মা জেঠি আসার সময় নিয়ে এসেছিলেন। এখন মলিন, কিন্তু একসময় সে শাড়ির দাপট আন্দাজ করতে অসুবিধে হয় না। কেউ পছন্দ করে কিনেছিল, বা ভালোবেসে দিয়েছিল সেই ভালোবাসায় নরম হয়ে আছে।
জায়গায় জায়গায় কালি ধেবড়ানো চিঠিতে, অভূতপূর্ব ইংরিজি হাতের লেখায় বন্ধুকে লেখা বন্ধুর চিঠি। কৈশোরে ছাড়াছাড়ি হয়েছিল, ভিসাপাসপোর্টকে কাঁচকলা দেখিয়ে চিঠির স্রোত এপার থেকে ওপারে বয়েছে সারাজীবন। এর খবর, তার খবর, কে ভালো চাকরি বাগিয়েছে, এমনকি কে ভয়ানক মোটা হয়ে পড়েছে তারও খবরও। চোখ ছলছল আর গলা টনটনের মধ্যেও হাসি এসে যায়।
জায়গায় জায়গায় কালি ধেবড়ানো চিঠিতে, অভূতপূর্ব ইংরিজি হাতের লেখায় বন্ধুকে লেখা বন্ধুর চিঠি। কৈশোরে ছাড়াছাড়ি হয়েছিল, ভিসাপাসপোর্টকে কাঁচকলা দেখিয়ে চিঠির স্রোত এপার থেকে ওপারে বয়েছে সারাজীবন। এর খবর, তার খবর, কে ভালো চাকরি বাগিয়েছে, এমনকি কে ভয়ানক মোটা হয়ে পড়েছে তারও খবরও। চোখ ছলছল আর গলা টনটনের মধ্যেও হাসি এসে যায়।
পার্টিশন মিউজিয়ামের সবথেকে বড় কেরামতিটা ওখানেই। যারা পারল না, হারিয়ে গেল, মরে গেল, তাদের জন্য হৃদয়বেদনা, আর যারা সব হারিয়ে আবার নতুন করে শুরু করার সুযোগটুকু পেল, তাদের সংগ্রামের প্রতি সমান শ্রদ্ধা জাগানোর ক্ষমতা রাখে। নবযুগের লোকদের শিল্পসৃষ্টির অক্ষমতা সম্পর্কে আফসোস করতে গিয়ে সম্ভবতঃ ঋত্বিক ঘটকই বলেছিলেন, যারা দাঙ্গা দেখেনি, দেশভাগ দেখেনি,
সমস্ত দুর্ভাগ্যের আঁচ থেকে গা বাঁচিয়ে জন্মেছে, বেড়ে উঠেছে - তাদের থেকে কতখানিই বা সংবেদনশীলতা আশা করা যায়? শিল্পসৃষ্টির জন্য যা সাফিশিয়েন্ট না হলেও নেসেসারি শর্ত? একটুও আঁচ না পোহালে খাদমুক্ত কি হতে পারে মানুষ?
পার্টিশন মিউজিয়ামে গেলে সেই আগুনের আঁচও নয়, আঁচ নিভে যাওয়ার পরের ছাইটুকু দেখেও হলেও বুকের ভেতর কিছু একটা গলতে শুরু করে। বড়লোক দেশের কয়েকখানা ট্রমা মিউজিয়াম দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার, নিঃসংশয়ে বলতে পারি অমৃতসরের টাউন হলের পার্টিশন মিউজিয়াম তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে।
মিউজিয়ামের কিছুই ভোলার নয়, কিন্তু একটা ছবি আমার চিরদিন মনে থাকবে। ফেরিঘাট। পূর্ববঙ্গ থেকে আসা একটি পরিবার সদ্য নেমেছে স্টিমার থেকে। প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে নিশ্চয় খানিকক্ষণ আগে, সকলেই ভিজে চুবড়ি। পায়ের কাছে ট্রাংক। ঢোলা হাফপ্যান্ট আর হাফশার্ট পরা দুটি ছেলে, একজন ভুরু কুঁচকে ক্যামেরার দিকে সোজা তাকিয়ে আছে। আর আছেন তিন মহিলা। তরুণী। একজনের কোলে ক্রন্দনরত শিশু। এক তরুণীর হাতে সেতার। ঘরোয়া কায়দায় শাড়ি পরা অন্য মেয়েটির হাতে রাইফেল। এই শেষের দুজন মুখভঙ্গি করে শিশুটিকে ভোলানোর চেষ্টা করছেন।
দুর্দশা, ক্ষতি, আর মানুষের বেঁচে থাকার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা বা মির্যাকল, একই ফ্রেমে এমন করে কোথাও ধরা পড়তে দেখিনি আমি কখনও। আপনারাও যদি দেখতে চান, যদি কখনও অমৃতসর যাওয়ার সুযোগ হয়, টাউন হলের পার্টিশন মিউজিয়াম মিস করবেন না।
Darun bornona. Khub siggiri jabar ichhe roilo. Ami kichudin age Sariska'r 'Jhotika safar' kore elam. Tobe amrao bagh dekhte paini..
ReplyDeleteঅমৃতসরের প্রেমে পড়ে গেছি, রণদীপ। যেমন ভালো খাওয়া, তেমন ভালো দেখার জায়গা, লোকজন। গেলে পার্টিশন মিউজিয়ামটা অবশ্য করে যেয়ো।
Deletetai bujhi? Kulcha, Chole, Lassi? ..khub bhalo legeche nischoi!
Deleteআরে যা খাবে তাই ভালো লাগবে, রণদীপ। অমৃতসর স্রেফ খাওয়ার জন্য যাওয়া যায়। মানে বাকি সবও চমৎকার, কিন্তু প্রথমবার সে সব দেখে নিয়ে তারপর বার বার খাওয়ার জন্য যাওয়া উচিত। আমরা কী কী খেয়েছি সে সম্পর্কে নেক্সট পোস্টে লিখব।
DeleteEbar bujhlam kaeno ebarer lekhata ashte ektu deri holo ... Apnar shob lekhai mon chhuye jaay, kintu eita pore monta huhu kore uthlo ... shomriddho holam lekhata pore ... Apni bhalo thakben ...
ReplyDeleteহাহা, দেরিটা বিশুদ্ধ ফাঁকিবাজির কারণেই, অনুরাধা। তবে লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম। থ্যাংক ইউ।
DeletePorte porte gaaye kaanta dilo, Kuntala di. Bidesher holocaust, genocide, war museum dekhe baar baar bhebechhi amader deshe erom kichu nei kano. Barir kachhei je emon ekta jinish achhe jantam-i na. Taratari ei bhul songshodhon korte hobe. Er porer weekend ei Amritsar er ticket katchhi.
ReplyDeleteআশা করি পার্টিশন মিউজিয়াম আমাদের যত ভালো লেগেছিল, তোমাদেরও ততটাই ভালো লাগবে, বিম্ববতী। ভালো করে কুলচা খেয়ে এসো।
DeleteBoimelay tomar photo dekhe bhablam deri hocche sei karone.. eita pore mon bhore gelo.. partition museum somporke temon kichu age jantam na..Amritsar gele somoy niye dekhte hobe oboshyoi..
ReplyDeleteএকদম, ঊর্মি। এটা ভালো লাগবেই। বইমেলায় আমার ফোটো কোথায় দেখলি?
Deletefacebook e go... laal jama.. maroon shawl.. :)
Deleteএই রে, আমিই তো মনে হচ্ছে।
Deleteapnar lekhata poranor jonne amar jethtuto dada amake thanks diye apnake kurnish janiyecge. lekhata pore o amake ei chobita pathiyechilo. dadar torof theke ami apnake ei link ta pathalam.
ReplyDeletehttps://rarehistoricalphotos.com/warschauer-kniefall-1970/
তোমাকে আর তোমার জ্যাঠতুতো দাদাকে আমার তরফ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, ময়ূরী। খুব ভালো লাগল।
DeleteDesh bhag-partition ... nah aar kichhu bolbo ba
ReplyDeleteধন্যবাদ।
Deleteনা, এই বারের লেখায় উল্লিখিত জায়গা গুলোতে যাব না । মানুষের এই সীমাহীন নির্বুদ্ধিতা আর নিষ্ঠুরতা আর নিতে পারিনা। কিন্তু এই লেখার প্রয়োজন আছে।
ReplyDeleteআমার এক সহকর্মী আপনার মতের লোক, নালক। সে অন্ততঃ পাঁচবার অমৃতসর গেছে, জালিয়ানওয়ালাবাগের গেটের সামনে দিয়ে হাঁটার সময় ঘাড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দৌড়ে পেরিয়ে গেছে প্রত্যেকবার। বলে, ওর মধ্যে আমি নেই।
DeleteGaye kanta diye gelo. Partition museum bole erokom ekta manikyo ache, ekebarei jana chilo na. Jodi Amritsar jaoar bhagyo hoy, Swarnamondir ar Jalianwalabagh chhara etao miss korbo na.
ReplyDeleteভুলেও মিস করবেন না, শমীক।
Delete