চেনা চেনা



আমার খুব খারাপ লাগছে অবান্তরে রোজ এই রকম কাঁদো কাঁদো পোস্ট করতে, কারণ এত কথা যাকে নিয়ে তিনি কান্না পেলে কাঁদলেও (মা মরে যাওয়া দাদাদিদির কথা মনে করে কাঁদতেন, মরে যাওয়া বাবামায়ের কথা মনে করে কাঁদতেন, কাবুলিওয়ালা দেখে কাঁদতেন, পথের পাঁচালী পড়ে কাঁদতেন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় 'এমন দিনে তারে বলা যায়' কিংবা সংসার যবে মন কেড়ে নেয়'-এর স্থায়ীটুকু পেরোতে না পেরোতে মা কেঁদে ফেলতেন), কাঁদো কাঁদো একেবারেই ছিলেন না। মায়ের ডিফল্ট মেজাজ ছিল হাসিখুশি। যে ফিরিস্তি দিলাম তার থেকে অনেক বেশিসংখ্যক পরিস্থিতিতে মা গড়াগড়ি খেয়ে হাসতেন। হাসি পেলে চাপার চেষ্টা মায়ের রেগুলার ব্যর্থতা ছিল। মিটিং-এ বসে মাকে কত হাসিকে কাশিতে পরিণত করতে হয়েছে শুনে দুজনে মিলে কত হেসেছি। আর মা হেসে ফেললেন বলে নয়, মা ছাড়া অন্য কেউ হাসল না কেন ভেবে অবাক হয়েছি। কাজেই মাকে নিয়ে এবার থেকে যত গল্প লিখব আনন্দেরই লিখব। তবু শেষবারের মতো এই দুঃখের ঘটনার কান টেনে কয়েকটা কথা বলি। যার প্রসঙ্গ মায়ের হলেও কথাগুলো আসলে আপনাদেরই বলার।

বেশিরভাগ লোকেই করে, আর আমি যদি বেশিরভাগ না হই তো কিছুই নই, কাজেই আমিও করেছি নির্ঘাত, রিয়েল লাইফ আর ভার্চুয়াল লাইফের তুলনা। রিয়েল ভালো, ভার্চুয়াল খারাপ। বিশেষ করে বন্ধুত্বটন্ধুত্ব, কমরেডারিটারির মতো মহৎ ব্যাপারে রিয়েলের শ্রেষ্ঠত্ব অবিসংবাদিত। এরা হচ্ছে বন্ধু, ওরা হচ্ছে ফ্রেন্ড। বিদ্রূপ পাছে কম পড়ে তাই অনেকে বলে ফ্র্যান্ড। দুঃখের সময় কাঁধ জড়াবে এরা, আমার সুখে সুখী হবে এরা, বিপদের সময় নিঃশর্ত পাশে দাঁড়াবে এরা।

বলা যত সোজা, কাজে তত সোজা নয়। বিশেষ করে ওই নিঃশর্ত পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারটা। মায়ের মৃত্যুর পর বেশিরভাগ আত্মীয়, প্রতিবেশীই দাঁড়িয়েছেন। কেউ কেউ দাঁড়াননি। প্রশ্ন তুলেছেন। শর্ত রেখেছেন। তাঁদের দোষ নয়। তাঁদের মনে হয়েছে এ কথাগুলো বলা দরকার। তাঁরা বিশ্বাস করেছেন কোথাও মারাত্মক ভুল হয়েছে, যেগুলো শুধরে নিলে এ পরিণতি এড়ানো যেত।

এঁরা সকলেই রিয়েল।

আর ভার্চুয়াল আপনারা, আমার না দেখা, না শোনা, না ছোঁয়া অবান্তরের বন্ধুরা, আমাকে নিঃশর্ত সান্ত্বনা দিয়েছেন। আপনাদের আন্তরিকতা স্ক্রিনের অক্ষর থেকে বেরিয়ে আমার হাত ধরেছে। আপনারা নিজেদের মায়ের গল্প আমাকে শুনিয়েছেন, এ দুঃসহ শোকের মধ্য দিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার সঙ্গে ভাগ করেছেন। বলেছেন, আমার মাকে আপনারা চিনতেন। জানতেন।  

যখন আর কোনও গান কোনও কথা শুনতে ইচ্ছে করছে না, আপনাদের পাঠানো গান আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়েছে। সে গান শুনে প্রথমটা ‘মাগো, কোথায় গেলে গো’ চেঁচিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করেছে। বুকের ভেতরের যত বিষ যখন চোখ দিয়ে বার হয়ে গেছে, গান কবজি এগিয়ে ধরেছে। 

ধর।  

অনুরোধ নয়, আদেশ। ভয়ে ভয়ে আলতো ছুঁয়েছি।

ধর। শক্ত করে। 

যে আজ্ঞা। 

কী? অন্তরগ্লানি আছে?

গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোয়নি, দুদিকে মাথা নেড়েছি।

সংসারভার আছে?

গানের হাত আঁকড়ে জোরে জোরে মাথা নেড়েছি। নেই।

মা আছে?

আছে, আছে, আছে। পাঁচফুট বেয়াল্লিশ কেজি দেহটার মধ্যে ছাড়া বাকি সর্বত্র আছে। আকাশে বাতাসে সজনেপাতায় অমলতাসের পাপড়িতে, আমার মগজে, হৃদয়ে, শিরায়, ধমনীতে মা আছে, মা বইছে।

সূচনা যেমন বলল, ফোনলাইনটাই যা লাগছে না। সামনে থাকলে মাকে বলতাম, ‘বস্‌, তোমাদের বি এস এন এল… ‘ বিপন্ন মা মাথা চুলকোতেন। মায়ের ওপর গোটা ভুবনের ভার, কুড়ি বছর বয়স থেকে শেষ দিন পর্যন্ত যার নুন খেয়েছেন তার খামতির দায়িত্ব মা এড়ান কী করে।

নিন্দুকে বলতে পারে, সে তো আড়াল ছিল তাই। কী কবে কোথায় কেন এই সব ইনফরমেশন যদি ঝেড়ে কাশতে তোমার কুলাঙ্গারতায় এঁরাও শিহরিত হতেন। আঙুল তুলে চেঁচিয়ে বলতেন, মার্ডারার!

হয়তো বলতেন। হয়তো মুখোশ খুলে সামনে দাঁড়ালে আমাকে দেখে শিউরেই উঠতেন। 

কিন্তু আমার মন বলে, হয়তো চায় বলেই বলে, উঠতেন না। আমার এই মুহূর্তের শোক আর সারাজীবনের ক্ষতিটাই আপনারা বড় করে দেখতেন, মায়ের চলে যাওয়াটাই আপনাদের কাছে সবথেকে বড় ট্র্যাজেডি বলে প্রতিভাত হত। আড়াল থেকে আপনারা যা করেছেন, সামনে থাকলেও তাই করতেন। আমার হাত ধরতেন। আমাকে ঠ্যাকনা দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখতেন। এই শোকের সমুদ্রে ডুবে মরা থেকে তখনও আপনারা আমাকে বাঁচাতেন, এখন যেমন বাঁচিয়েছেন। অবান্তরের ওই লালসাদা পাতাটার আড়াল থেকে আপনারা আমাকে কতবার, বারবার যে বাঁচান, সে আমি গোনা ছেড়ে দিয়েছি। 

আমি যেন আপনাদের মতো হতে পারি। যেন দুঃখের সময় প্রশ্ন না তুলে, শর্ত না রেখে লোকের পাশে দাঁড়াতে পারি। আপনারা আমার কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনাদের এ দান আমি ভুলব না।


*****

আপনাদের এরকম হয়? পুরোনো জায়গায় গেলে সবাইকেই চেনা চেনা লাগে? চিরকালই আমার লোকের দিকে তাকিয়ে থাকা স্বভাব ছিল, এখন মাত্রা ছাড়িয়েছে। চেনা চেনা ঠেকছে, যতক্ষণ না চিনি চোখ সরাই কী করে বলুন দেখি। কিন্তু এও বুঝছি, গোলমাল হচ্ছে কোথাও। সতেরো বছর আমি রিষড়ার বাইরে। গত সতেরো বছরে ও তল্লাট যতখানি বদলে গেছে আগের সতেরোশো বছরে তা বদলায়নি। তাহলে এত লোককে আমি চিনলাম কী করে?

তবু চেনা চেনা লাগে। লেভেল ক্রসিং-এ আমার টোটোর পাশে বাইক। তাকিয়ে থাকি। চোখ থেকে চশমা খুলে নিই, গাল থেকে চর্বি চেঁছে ফেলে দিই, মুখ থেকে অভিজ্ঞতার পোঁচ মুছি, দামি সুটের বদলে খাকি প্যান্ট আর সাদা শার্ট আর ক্রস শোলডার ব্যাগের জায়গায় দুই কাঁধে ঝোলানো হলদে দড়ির ব্যাকপ্যাক, তারপর যেই না বাইক বদলে সাইকেল অমনি ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং বেল পক্ষীরাজ সাইকেল উড়ে চলে বিদ্যাপীঠের দিকে। ঘড়িতে তখন সকাল সাড়ে দশটা, আমার কি না জন্ডিস তাই স্কুল নেই। ঠাকুমার ঘরের জানালায় বসে আছি। সাইকেল আবার ফিরবে সাড়ে চারটের সময়। চারটে সাঁইত্রিশ থেকে তেতাল্লিশের মধ্যে। তখনও আমি জানালাতেই থাকব।

মাঝে বছর দুই তিন করে খড়গপুর আর তেজপুর বাদ দিয়ে বাবা ঠাঁইনাড়া হননি গত পঞ্চাশ কি আরও বেশি বছর, তাই সকলকেই চিনতে পারেন। দাসপাড়ার মোড় থেকে টোটোতে উঠলেন একজন মান্যগণ্য মহিলা। দামি শাড়ি, এই গরমেও চুল ঘাড়ের কাছে ফাঁপানো। চোখে কালো চশমা। যে হাল্কা সুগন্ধটা টোটোতে ছড়িয়ে পড়ল, যেটা বাজারের শ্যামলী কিংবা সানন্দা থেকে কেনা বোতল থেকে বেরোয়নি। নতুন দোকান খুলে থাকলে জানি না, তবে চান্স কম। উদ্ভ্রান্তি শব্দটা এঁর জন্য লেখা হয়নি অভিধানে। ওটা আমার আর মায়ের একচেটিয়া। আমি আর মা এসি বাস থেকে নামলেও আমাদের মাথার সামনের সবক'টা কুচো চুল মেডুসার মতো ফণা তুলে থাকে। আসলে পাঁচটা চল্লিশের তারকেশ্বর থেকে সন্ধের পর সন্ধে নামতে নামতে আমাদের চেহারাটা ওইরকমই হয়ে গেছে। সবার হয় না। আমাদের হয়েছিল। আমরা পাঁচটা চল্লিশ ছাড়লেও, পাঁচটা চল্লিশ আমাদের ছাড়েনি। ছাড়বে না এ জীবনে।

টোটো চলতে শুরু করল। আড়চোখে মহিলাকে দেখছি। এঁকে চেনা চেনা ঠেকছে না। একটু ভয় ভয়ই করছে। এঁদেরকেই এক্সিকিউটিভ বলে নির্ঘাত। অর্চিষ্মানও সতর্ক হাঁটু যথাসম্ভব বেঁকিয়ে রেখেছে যাতে এক্সিকিউটিভের হাঁটু রাখার জায়গা কম না পড়ে।

বাবা বিনা ইন্ট্রোডাকশনে শুরু করেন, ও কে জানিস তো? পাঁচুর পিসতুতো বোনের মেয়ে।

আমরা সচকিত। এক্সিকিউটিভ থতমত খেয়ে বাবার দিকে ঘাড় ঘুরিয়েছেন। 

বাবাও ঘোরান। তোমাদের বাড়ি ওই গমকলটার পাশের গলিতে না? তোমার বাবা এখনও টি বোর্ডে? 

এক্সিকিউটিভ সামলে নিয়েছেন। না, বাবা তো গত বছর রিটায়ার করেছেন। 

অ্যাঁ, রিটায়ার করেছে মানে কী? সন্তোষ আমাদের থেকে কত ছোট তো? বাবার মুখে বিষাদ। সন্তোষের বুড়ো হয়ে যাওয়ায় নাকি নিজের আরও বুড়ো হয়ে যাওয়ায়?

তোমার নাম মৌ না কী…

মামণি।

হ্যাঁ হ্যাঁ মামণি। জলট্যাংকির মাঠে তোমাদের ফাংশান হত কত দেখেছি। বাচ্চুর বউয়ের আবৃত্তির ইস্কুল ছিল না? তোমরা ওই স্কুলে আবৃত্তি শিখতে তো? কী যেন নাম... 

বীণাপাণি সংস্কৃতি কেন্দ্র।

হ্যাঁ হ্যাঁ। বাচ্চুর বউয়ের নাম বীণাপাণি নাকি? আচ্ছা সংস্কৃতিকেন্দ্র বলে রেখেছে, বুঝেছি। 

এক্সিকিউটিভ চশমা খুলে ফেলেছেন। এঁকে এখন মামণি বলে মেনে নিতে আর ততটাও অসুবিধে হচ্ছে না।  

টোটো চলেছে সাঁ সাঁ। নর্দমা ঢাকা হয়নি, কিন্তু বিরাট বিরাট বাম্পার বসেছে রাস্তায়। অর্চিষ্মানের মাথা অলরেডি দু’বার ঠুকে গেছে। 

বাবা বলেন, তুমি হীরালাল পালে পড়তে তো? 

মামণি ধাতস্থ হয়েছেন খানিকটা। টেন পর্যন্ত। ইলেভেন টুএয়লভ আখনা। 

আমি কথোপকথনে ঢুকে পড়ি। আরে, আমিও ইলেভেন টুয়েলভ আখনা। তুমি নিশ্চয় অনেক পরের ব্যাচ। কী সাবজেক্ট ছিল তোমার?

ইকো জিও ম্যাথ।

ওরে বাবা, এ যে আমার আত্মার আত্মীয়। আমার ইমোশনাল অবস্থা এ মুহূর্তে যে রকম নড়বড়ে, ভয় হয় জড়িয়ে না ধরে ফেলি। 

এবি পড়িয়েছেন তোমাদের? আর সিডি? রিটায়ার করেছেন? 

মামণি আর আমার চোখে চোখে এক সেকেন্ডের গোপন আঁতাত হয়। সিডি, মনে আছে? বাপরে বাপ।

টোটো ব্রেক কষে। স্টেশন এসে গেছে। বাবা নেমে পকেট থেকে খুচরো বার করছেন। এই দিকে তিন হাত দূরে খোলা নর্দমা, আমি নেই। মামণি আর অর্চিষ্মান অন্যদিক থেকে নামলে পেছন পেছন নামি। 

ভালো লাগল তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে। 

আমারও। আসি হ্যাঁ?

এস।

মামণি সানগ্লাস পরে আবার এক্সিকিউটিভ হয়ে গট গট লাইন পেরোয়। আশেপাশের লোকেরা আড়চোখে দেখে, তফাৎ যায়। 

মামণির পাশ দিয়ে উল্টোদিক থেকে নীল শাড়ি পরা মহিলা আসছেন। বাঁ হাতে স্কুলফেরতা বাচ্চার হাত, ডান হাতে ছাতা একেও যেন...আমি ভুরু কুঁচকে ঘাড় এগোই। অর্চিষ্মান হাত ধরে টান মারে।

আর লোক দেখতে হবে না, কাকু এগিয়ে গেছেন, চল।



Comments

  1. তুমি আর তোমার অবান্তর ... সব অসাধারণ ..

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, কী যে বলিস, ঊর্মি।

      Delete
  2. "আকাশে বাতাসে সজনেপাতায় অমলতাসের পাপড়িতে, আমার মগজে, হৃদয়ে, শিরায়, ধমনীতে মা আছে, মা বইছে।"
    এর পরের টুকু পড়লাম বটে, কিন্তু মনটা এখানেই আটকে রইলো, আর এগোতে পারলো না।
    এমন সত্যি আর কটা হয়, বড় ভালো বলেছো।
    ভালো থাকো কুন্তলা।

    ReplyDelete
  3. ভার্চুয়াল বলেই আমরা হয়তো নিঃশর্ত হতে পারি কুন্তলা, কে জানে রিয়েল হলে আমরাও সাতশো সতেরোটা শর্ত বার করতাম কিনা! যাকগে, বাদ দাও। ভালো থেকো। যখনই ইচ্ছে করবে মনে মনে মার সঙ্গে খুবসে গল্প করে নিও একটু। মায়ের ফোনটায় চার্জ নেই এখন, সরাসরি কথা বলতে একটু অসুবিধে তো থাকবেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এইটা ভালো বলেছ, অদিতি। আমার মায়ের অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যে একটা ছিল ফোনে চার্জ না থাকা। কোথাও যাওয়ার আগে খেয়েছ তো, জল নিয়েছ তো, আইডি নিয়েছ তো বলার সঙ্গে সঙ্গে ফোনে চার্জ দিয়ে নিয়েছ তোও বলতেন। সেই মা-ই এখন এতদিন হয়ে গেল বিনা চার্জে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

      Delete
  4. এসব পোস্ট-এর কমেন্ট হয় না। তাই সুস্থ থাকুন, শক্ত থাকুন ছাড়া, আবারও, কিছু বলার নেই ।
    বাবা কি এখন আপনাদের সঙ্গে দিল্লি যাবেন না যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন? হয়তো একটু বেশি ব্যক্তিগত প্রশ্ন হল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাবা দিল্লি এক্ষুনি আসছে না, অন্বেষা। এখন যাতায়াতের মধ্যেই থাকব। আমি যাব বাবা আসবেন, টিকিট কেটে রাখা আছে। ওই বাড়ি ছেড়ে বাবা আসতে চান না, আর আমাদেরও মনে হয় না তাতে কোনও সুবিধে হবে। ওখানে বাবার পঞ্চাশ বছরের নেটওয়ার্ক, সাপোর্ট সিস্টেম। সবাই চেনে। বড় খোলামেলা বাড়ি, বাগান, ছাদ। এখানে এই দেড়কামরার ভাড়াবাড়ি, আমরা বেরিয়ে গেলে বাবা বন্দী, এর থেকে ঢের ভালো।

      Delete
  5. Welcome back. Wait korchhilam

    ReplyDelete
  6. আমি কিছু লেখার সাহস করতে পারছিলাম না এযাবৎ - কারণ সান্ত্বনাবাক্য বেশির ভাগই বড় শুকনো লাগে নিজের কাছেই | কিন্তু আজ যেটা দেখে খুব ভালো লাগলো, সেটা হলো সাধারণ জীবনে ফিরে আসা.. বাবা মা নিশ্চই ওটাই সব চেয়ে বেশি চাইবেন| প্রত্যাবর্তন-এর থেকে ভালো তর্পণ আর কি হতে পারে.. বেস্ট অফ লাক |

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ। আপনাদের সব কথাই আমাকে ভালো থাকার দিকে ঠেলে দিয়েছে। যেমন দিয়ে থাকে। সাধারণ জীবনে ফিরে না আসার মতো শক্তি আমার নেই, তাই ফিরে এলাম। এই সময় অফিসটা যে কী পরিমাণ সাহায্য করেছে বলতে পারব না। জীবনে এই প্রথম আমার শনিরবি নার্ভাস লাগছিল। কী করব ভেবে।

      Delete
  7. এ কদিন রোজ একবার করে অবান্তরে এসে দেখে গেছি তোমার কোনো খবর পাওয়া যায় কিনা। ইমেল করতে একটু বাধো বাধো লাগছিল, যদি তোমাকে অসুবিধেতে ফেলি এই ভেবে। আজকে তোমার পোস্টটা পড়ে একটু নিশ্চিন্ত লাগলো। আমার মা এখনো আছেন তবে মায়ের মতনই একজনকে হারিয়েছি ২০১৭ তে। আমাকে দুমাস বয়েস থেকে হাতে ধরে মানুষ করেছিল এই দিদি। আমার সব গল্প, আবদার ছোটবেলা থেকে দিদিকে ঘিরে। খুব মিস করি এখনো। তাই তোমার মনের অবস্থাটা অনুভব করতে পারছিলাম। মন খারাপ লাগলে একটু চোখ বুজে মায়ের সাথে মনে মনে গল্প করে নিও। দেখবে মন ভালো হয়ে যাবে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, চুপকথা। ভালো লাগল তোমার কমেন্ট পড়ে।

      Delete
  8. Kuntala, ei kodin roj tomar katha bhebechhi....aar abantor e ghure gechie je tomra sabai kemon achho kichu khobor pawa jay kina. Bhalo theko...sabdhane theko.

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, শম্পা। তোমাদের এই ভাবনা আমাকে কতখানি জোর দেয় যদি বলে বোঝাতে পারতাম।

      Delete
  9. Bhalo theko Kuntala..... er theke beshi kichhu bolar khamota jotate parchhina... Ichhadana

    ReplyDelete
    Replies
    1. খারাপ বেশিদিন থাকা যায় না, ইচ্ছাডানা, এই শিক্ষা হল আমার। ফুচকাও খেতে ইচ্ছে করে, হাসির কথায় হাসিও পায়। নিজেকে অদ্ভুত ঠেকে তখন, কিন্তু যা সত্যি তা তো সত্যিই।

      আপনাদের পাশে থাকা অনেকটা মনের দুঃখ ভুলিয়েছে।

      Delete
  10. কুন্তলা দিদি, নাটুকে শোনালেও কতগুলো কথা বলার আছে. আর এভাবে না বললে আমি জানিনা আর কিভাবে বলতে হয়। তোমার লেখাগুলো পড়লে বুকের ভেতরটা কেমন করে, মনে হয় যে সান্তনা দেওয়ার নয়, যে কষ্ট ভাগ করার নয় সেই কষ্ট টা ভাগ করে নিই দিদির সাথে, যাতে আবার আগের হাসিখুশি সব ফিরে আসে. সত্যি বেশিদিন কাঁদো কাঁদো হয়ে থাকা টা বড্ডো কষ্টের , আগের মতো হয়ে যেতে খুব ইচ্ছে করে, আর পছন্দের কাউকে কষ্টে দেখলেও ইচ্ছা করে টেনে টুনে আগের মতো করে দিতে, কিন্তু সব কষ্টে তা হয় না এটাই সমস্যা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি জানি সূচনা, তোমরা আমার কতটা কাছের আর কতখানি ভাব আমার কথা। তোমরা না থাকলে আমার কষ্ট আরও কোটিগুণ বেশি হত।

      Delete

Post a Comment