অযৌক্তিক



জীবনের মানে বেয়াল্লিশ তেতাল্লিশ বাহান্ন তিপ্পান্ন কিস্যু না, জীবনের মানে ঘুম থেকে উঠে সকালে কী খাব, সকালে খাওয়া হলে দুপুরে কী খাব, দুপুরের খাওয়া মিটলে রাতে কী খাব। ব্যস।

মাঝে মাঝে ভাবি, দুপুরে ভাতের বদলে টিফিন খাব। সামথিং লাইট অ্যান্ড হেলদি। খেয়ে উঠেই যে ছাদের সমান হাই ওঠে আর টেবিলের তুলনায় খাটটাকে ঢের বেশি লোভনীয় লাগে, এর কারণ আমার আলস্য হতেই পারে না, নির্ঘাত কার্বোহাইড্রেট। গুগল নিউজফিডে প্রায়ই আসে - টেন কুইক অ্যান্ড ইজি লাঞ্চ আইডিয়াস ফর পিপল ওয়ার্কিং ফ্রম হোম। হারিসা-লেপা টোস্টের ওপর জাপানি পাখার মতো অ্যাভোকাডো। ওপরে আবার কী যেন লাল রঙের গুঁড়ো গুঁড়ো ছড়ানো। শুকনো লংকা নাকি?

শুকনো লংকা কেন হবে বালাই ষাট, ওটাকে বলে পেরি পেরি।

জাতীয়তাবাদীদের জন্যও প্রচুর অপশন। হ্যান্ড পলিশড রাইস, উইথ ব্র্যান। হ্যাঁ হ্যাঁ, ওটাকেই মফঃস্বলের বাংলা মিডিয়ামরা ঢেঁকি ছাঁটা চাল বলে। অ্যামাজনে পাওয়া যায়। অ্যামাজনই হচ্ছে আসল হগ সায়েবের বাজার। গোমূত্র টু বাঘের দুধ, যা চাই সব আছে। একশো গ্রামের প্যাকেট, গলাকাটা দাম। রিয়েল ফুড খেতে হলে দাম দিতে হবে বৈকি।

ব্যস, এবার মেনুতে মোটা চালের ভাত উইথ অরগ্যানিক ভেজিটেবিলস। পেট পরিষ্কার। স্কিন চকচকে। সোশ্যাল মিডিয়ার ছেঁদো কেচ্ছায় সময় নষ্ট করতে আর ইচ্ছে করবে না, মলাট দিয়ে বই আর রাজনীতি দিয়ে মানুষ বিচার করার বদভ্যেসটাও যাবে। খাওয়ার সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে যদি কোক স্টুডিও চালিয়ে নেওয়া যায়, একহাতে উকুলেলে অন্যহাতে একতারা নিয়ে বাউল গানের ভিডিও, নিমেষে ঘর জুড়ে রিয়েল ইন্ডিয়ার সোঁদা গন্ধ ভাসবে।

আমার ফ্রিজে কোথায় হারিসা, কোথায় অরগ্যানিক মোলাসেস, ময়লামতো আধখানা লাউ গড়াগড়ি খাচ্ছে। এ কী বাকি আধখানা লাউ কে খেল বলে চেঁচিয়ে উঠতে যাব, মনে পড়ল আমিই খেয়েছি। আধখানা লাউ, একখানা শুকিয়ে ওঠা করলা, ভাজা বড়ি আর সানরাইজের সর্ষেবাটা পাউডার দিয়ে একটা তেতোচচ্চড়ি মতো বানিয়েছিলাম। বাকি আধখানা যে পড়ে আছে খেয়ালই নেই। এদিকে রীতা আরও একখানা লাউ গছিয়ে গেছে। এই অর্ধাংশের গতি করতে হবে জলদি।

একটা সন্দেহজনক বাটির ঢাকনা সরাতে ডালসেদ্ধ বেরিয়ে পড়ল। ভাতের মতো ডালসেদ্ধও একবারে বেশি করে করে রাখি। সম্বার দিয়ে তরল ডাল বানিয়ে নিলে ভালো, না নিয়ে আরও ভালো। লংকা পেঁয়াজ নুন ডলে, গরম ভাত আর ঝর্ণা ঘি-য়ের শিশিটা নিয়ে যেদিন বসি, অন্য তরকারি পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই পেট ভরে যায়।

একহাতে শুকনো লাউ, অন্যহাতে বাসি ডালসেদ্ধর বাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবলাম। লাউয়ের ডাল জীবনে একের বেশি দু'বার বানিয়েছি কি না সন্দেহ, কাজেই মাসল মেমোরির ব্যাপার নেই। মা থাকলে ফোন করে এক্স্যাক্ট রেসিপি জেনে নেওয়া যেত।

মাসল মেমোরি ছাড়াও আরেকরকম মেমোরি হয়। পৃথিবীর সাতটা, দশটা, পাঁচটা এমনকী তিনটে আজুবার লিস্টেও একটা গল্পের ভেরিয়েশন থাকে দেখবেন, ডেথবেডে শুয়ে একজন মানুষ ঝড়ের মতো কথা বলে উঠেছেন। কেউ বুঝতে পারছে না কী বলছেন, সবাই ভাবছে মৃত্যুকালীন প্রলাপ, এমন সময় একজন এসে বললেন, একী উনি তো পূর্বপুরুষের মাতৃভাষায় কথা বলছেন। বলেই চলেছেন। শুদ্ধ ব্যাকরণ, পুঙ্খানুপুঙ্খ বাক্যগঠন, উচ্চারণ বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রকে লজ্জা দেবে।

ক্যাচটা হচ্ছে, ভদ্রলোকের আগের তিন পুরুষ ও ভাষা ব্যবহার করেননি। প্রপিতামহের বাবা দেশ ছেড়ে এসেছিলেন ভাগ্যসন্ধানে। তিনি তাঁর সন্তানসন্ততিকে নিজের ভাষা শেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর আত্মবিশ্বাস ছিল যে আর পাঁচটা প্রবাসী বাচ্চার মতো তাঁর বাচ্চা কুমড়োপটাশ কে খুমড়োহ্‌ফট্যাশ বলবে না আর একটা কবিতা বলে শোনাও তো-র উত্তরে ঝর্ণা ঝর্ণা সুন্দরী ঝর্ণা মুখস্থ বলবে। অচিরেই তিনি উপলব্ধি করবেন যে এই স্বপ্ন বাস্তব করতে হলে তাঁকে যে পরিমাণ পরিশ্রম করতে হবে, কস্ট বেনিফিট অ্যানালিসিসে যার কোনও মানেই দাঁড়াবে ন।

আমাদের আশ্চর্য গল্পেও এই রকমই হয়েছিল। শুরুতে সদিচ্ছা ছিল কি না জানি না, সদিচ্ছা সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিশ্রম ছিল কি না তাও জানা নেই, শুধু জানা আছে তিন প্রজন্ম কাটতে কাটতে দুটোই নিঃশেষে উবে গিয়েছিল। কিন্তু একেবারে গেছিল কি? কোথাও না কোথাও সরস্বতীর মতো বইছিল নির্ঘাত। জেনারেশনাল মেমোরি। প্রজন্মের স্মৃতি। মৃত্যুর আগে তাই নিজের দত্তক নেওয়া মাতৃভাষার বদলে ভদ্রলোক সেই ফেলে আসা ভাষায় কথা বলে উঠেছিলেন।

এই থিওরির সত্যতা মানলে লাউয়ের ডালের রেসিপি আমার শিরাধমনীতে বওয়ার কথা। যে ডাল আমার মা দিদিমা ঠানদিদিমা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে রেঁধে ফেলতে পারতেন। তাঁদের উত্তরাধিকারের ওপর ভরসা করে বিনা রেসিপিতেই (ইউটিউব থেকে কেন রেসিপি জেনে নিইনি তার কারণ আগের পোস্টে বলেছি, পাঁচজনের ভিডিও দেখলে পাঁচরকম লাউয়ের ডালের পাঁচরকম পদ্ধতি জানা হয়ে যাবে এবং গ্যারান্টি দেওয়া যাবে কোনও রকমটাই আমার বাড়ির মতো নয়।) লাউয়ের ডাল রেঁধে ফেলেছিলাম। পাঁচফোড়ন আর আদাবাটার সেফ কম্বিনেশন খেলে, ভুলভ্রান্তি খামতি সব চাপা দেওয়ার উচ্চাশায় লাস্টে এক চামচ ঘি গুলে দিয়েছিলাম।

উৎরোয়নি, বলব না।

রাতে আমরা নানারকম করার চেষ্টা করি। স্যান্ডউইচ, চাউমিন, পাস্তা হ্যানাত্যানা। পুরোটা যে জিভের কথা ভেবে তাও নয়। আলসেমির আলটেরিয়র মোটিভও আছে ষোলোআনা। সকালে দু'ঘণ্টা ধরে যে চারটে পদ নেমেছে সেটা দিয়ে যদি কাল দিনটা টেনে দেওয়া যায়। সত্যি বলতে, ওগুলোও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে খুব একটা কম সময় লাগে তা নয়, তবু কেন যেন মনে হয়, অ্যাট লিস্ট, ডাল ভাতের ঝামেলা করতে হল না।

এটা একটা মানসিক ব্যাপার। প্রিভিলেজড বাড়িতে বড় হওয়ার কারণে শুধু ডাল ভাতে আমাদের মন ওঠে না। মাছ নেই! ঠিক আছে তাহলে মাছের ঝোল হোক একটা। শুধু মাছের ঝোল হলে চলবে না, ডাল কী দিয়ে খাব, শুধু শুধু? একটা ভাজাভুজি তো চাই। ওকে, তাহলে মেনু দাঁড়াল ডাল ভাত পটলভাজা মাছের ঝোল। আর নিরামিষ যে খাবে তার জন্য? প্রোটিন না হয় মাছ সামলাবে, ফাইবার? শাকসবজিও কিন্তু শরীরের পক্ষে ভালো। আর পিতৃমাতৃ দুই কুলেই যখন ডায়াবেটিসের হিস্ট্রি আছে, রোজ মেনুতে একটা তেতো রাখার আইডিয়া খারাপ না।

ঘাট হয়েছে আমার ভাত খেতে গিয়ে, এই নাককান মুলছি। এর থেকে ঢের ভালো স্যান্ডউইচ। অন্তত পাতের পাশে পটেটো চিপস আর কোল্ড ড্রিংকস কেন নেই বলে কেউ শেমিং করতে আসবে না।

অনেকটা এই কারণের জন্যই রাজমা চাওল আমাদের বাড়িতে একটা কমন পদে পরিণত হয়েছে। নামের মধ্যেই পারমিশন দেওয়া আছে, এক কুকার রাজমা আর এক হাঁড়ি ভাত বানালেই খেল খতম, আর কিচ্ছু লাগবে না। অবশ্য এই দুই পদে খাওয়া সারার ব্যাপারটা বাঙালিরা মারাত্মক অপছন্দ করে। কেউ বাড়িতে ডেকে রাজমা চাওল খাইয়েছে শুনলে বাঙালি ভয়ানক নিন্দে করে। নেমন্তন্ন করে নিরামিষ খাওয়ালেই বাঙালিরা অফেন্স নেয়, এর ওপর যদি দুই পদে সারে তাহলে সে অবিশ্বাস্য ছ্যাঁচড়ামিতে বাঙালির মাথাকাটা যায়। আমাদের হয় বাংলাদেশে জমিদারি ছিল নয় বাগবাজারে দালানকোঠা, মাছের গন্ধ ছাড়া আমরা মুখে তুলতে পারি না, প্রতি মিলে আমাদের মিনিমাম পাঁচ পদ লাগে। অনেক বছর আগের কথা, রাতে কী খেলি-র উত্তরে রুটি বাঁধাকপি শুনে আমাদের এক আত্মীয় ভিরমি খেয়েছিলেন। অবশেষে যখন তাঁকে সত্যিই বিশ্বাস করানো গেল যে আমরা রাতে রুটি এবং বাঁধাকপি ছাড়া আর কিছু খাইনি, খাব না, স্রেফ এক গেলাস জল খেয়ে শুয়ে পড়ব, রসিক আত্মীয় বলেছিলেন, সে খেয়েছিস খেয়েছিস, লোককে বলার সময় একটু বাড়িয়েচাড়িয়ে বলবি তো।

আমার এক কাকু পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে আলুপরোটা দিয়ে যাওয়ার পর বসেই আছেন বসেই আছেন। এদিকে সবাই খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। কী গো, খাও, বাস তো ছাড়বে। কাকু অবাক হয়ে বলছেন, মাংস অর্ডার করিসনি? সবাই হেসে বলছে, ঢোকার সময় বোর্ডে লেখা দেখোনি শুদ্ধ শাকাহারী? কাকু মুখ ছেতরে বললেন, আচ্ছা আলুর তরকারি তো থাকবে। তখন সবাই গম্ভীর হয়ে বলল, বলে দাও তাহলে ওঁর জন্য এক প্লেট। কাকু আকাশ থেকে পড়ে বললেন পরোটার সঙ্গে তরকারি আলাদা করে বলতে হবে নাকি? খাব কী দিয়ে পরোটা? তখন সবাই আঙুল দিয়ে টেবিলে রাখা আচার আর দইয়ের বাটি দেখানোয় কাকু নেক্সট পাঁচ মিনিট হাঁ বন্ধ করতে পারেননি।

ওই নামের পারমিশনের ছুতো দেখিয়েই আমরা আজকাল ঢালাও কঢ়ি চাওল খাচ্ছি। কড়াইয়ে খুন্তি চালাতে চালাতে অর্চিষ্মান বলে, আজ থেকে বছর বারো আগে যখন হোস্টেলের মেসের থালায় চোখের জল ফেলতে ফেলতে কঢ়ি গিলছিলাম তখন যদি কেউ বলত, একদিন উনুনের সামনে দাঁড়িয়ে আমি দই বেসনের ঘোল ক্রমাগত নাড়তে থাকব, যাতে ফেটে না যায়, তাহলে তাকে উন্মাদ বলে উড়িয়ে দিতাম।

হুড়মুড় করে একগাদা স্মৃতি মনে পড়ে গেল।

আমি নিজেকে ব্যতিক্রম বলে চালাতে চাইছি না, আমাদের ফুচকা ভালো, তোমাদের পানিপুরি/গোলগাপ্পা পাতে দেওয়ার যোগ্য না, এই নিয়ে আমিও গলা কিছু কম ফাটাই না। এক ধাপ এগিয়ে, মানুষে সুজির ফুচকা খায় কী করে সে নিয়েও তেঁতুলজলে তুফান তুলি। যেন আমি যে খাই না সে বাবদে আমাকে মেডেল দেওয়া উচিত।

কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে হোস্টেলে প্রথমবার কঢ়ি খেয়ে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। বুধবার বুধবার মেনুতে কঢ়ি পকোড়া থাকত এবং আমি সেদিন বিন্দুমাত্র গড়িমসি না করে চামচ আর জলের বোতল সহযোগে মেসে উপস্থিত হতাম। আমাকে কঢ়িপকোড়া চেটেপুটে খেতে দেখে টেবিলে বসা বাঙালিরা যারপরনাই ঠাট্টা করত। এমনকি আমার কঢ়িপ্রীতি ঘোচানোর জন্য কেউ কেউ খাওয়া চলাকালীন জঘন্য সব বর্ণনা দিত, ওয়াক তোলার ভঙ্গি করত। সবই বন্ধুত্বপূর্ণ রসিকতায়, বলা বাহুল্য।

কিন্তু পুরোটাই কি রসিকতা? অন্যের খাওয়া, অন্যের ভাষা, অন্যের বিশ্বাসের প্রতি আমাদের সন্দেহ থাকেই। তার ওপর যখন বিশ্বাসও থাকে উক্ত পক্ষ আমার থেকে কম বুদ্ধিমান, কম প্রগতিশীল এবং কম শিক্ষিত, তখন প্রচ্ছন্ন সন্দেহটা খুল্লমখুলা তাচ্ছিল্যে বদলে যায়।

আমি বিভীষণ হতে চাই না। দোষ শুধু বাঙালির নয়। মাড়ওয়াড়ি পাঞ্জাবী সিন্ধি ভুটানি নেপালি সকলেই যে এটা করে থাকে তা নিয়ে আমার সন্দেহ নেই। এই যেমন ক'মাস আগে অর্চিষ্মানের এক সহকর্মী নালিশ করল, ডু নট মাইন্ড ইয়ার, তুমলোগ সবজি কো অকেলে নহি ছোড় সকতে হো কেয়া? তার বাঙালি রাঁধুনি নাকি যা-ই রাঁধে সবেতেই আলু ডেলে দেয়। সপ্তাহ ফুরোতে না ফুরোতে আরেক বন্ধু চ্যাটে নানা কথার পর লিখল, বস্‌, রান্নার লোকটাকে নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না। সব রান্নায় সব মশলা দেয় আর জিরে ফোড়ন ছাড়া রান্না শুরু করতে পারে না। একটা বাঙালি রাঁধুনি পাই তো বেঁচে যাই।

দু'জন একই পাড়ায় থাকে। এর পরেও যদি কেউ বলে গ্রহ নক্ষত্র বলে কিছু হয় না, কিছু বলার নেই। এর ফোন নম্বর ওকে দিলাম, ওর ফোন নম্বর একে। ও ওর রাঁধুনিকে এর ফোন নম্বর দিল, এ এর রাঁধুনিকে ওর ফোন নম্বর দিল। কথা হল, পাকা কথা হল। এখন দুজনেই সুখে আছে শুনেছি।

কাজেই কেউ কম যায় না। যাওয়ার কথাও না। শুধু তো নিজের বয়সটুকু না, শত শত বছর ধরে চলে আসা জলবায়ু, চাষবাস, আচারবিচার হ্যানাত্যানার মধ্যে দিয়ে আমাদের খাওয়াদাওয়ার ধরণ, জিভের স্বাদ গড়ে উঠেছে, সেটার প্রতি পক্ষপাতিত্ব থাকবেই। না থাকলেই অদ্ভুত হত। সঙ্গে সঙ্গে এটাও স্বাভাবিক যে আমরা মানুষ বলেই, প্রক্রিয়াটা যে দুমুখো, সত্যিটা যে সবার ক্ষেত্রেই সত্যি, সেটা আমাদের মাথা থেকে বেরিয়ে যায়।

অন্যের খাওয়াদাওয়ার ধরণ আমাদের যত উদ্ভট লাগে, আমাদের খাওয়াদাওয়াও যে অন্য কারও কাছে বিস্বাদ ঠেকতে পারে সেই সম্ভাবনাটা চট করে মাথায় আসে না। এই যেমন আমাদের কথাই ধরুন, আমাদের বাঙালি বন্ধুর সর্বজনীন জিরেফোড়নের প্রতি বিদ্বেষটা আমরা মন থেকে অনুভব করতে পারলাম বটে, কিন্তু মুখে না বললেও, তরকারিতে আলু দেওয়ায় কার কী অসুবিধে থাকতে পারে, বা আলু ছাড়া তরকারি কেন কেউ খেতে চাইতে পারে, সেটা আমাদের মাথায় ঢুকল না। কঢ়ি খেয়ে ওয়াক তোলাটা আমাদের যতখানি জলভাত মনে হয়, আমাদের মহার্ঘ মোচার ঘণ্ট খেয়ে কেউ যে ম্যা গো বলতে পারে, সেই সত্যিটা সামনে এসে পড়লে থতমত লাগে।

আমার এক সহকর্মী ছিল, ভারি ভালো ছেলে, গলা তুলে কথা বলে না। একবার বাইরে খেতে যাওয়ার কথা উঠতে কে যেন ওহ ক্যালকাটা-র নাম তুলতেই সে একেবারে আঁতকে উঠেছে। নেহি ইয়ার, নো বেঙ্গলি ফুড, প্লিজ। তারপর তার খেয়াল পড়েছে জটলায় আমিও বসে আছি। ফরসা ছেলে মিনিটে টমেটোর মতো লাল। সরি সরি কুন্তলা, প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড। আমি যত বলি, কিছু মাইন্ড করিনি আমি, তত সে বলে, ইটস নট বেঙ্গলি ফুড, ইটস মি।

যতবার অর্চিষ্মান লাউয়ের ডাল দিয়ে ভাত খেতে খেতে বলে, লক ডাউন উঠলে একবার ওহ ক্যালকাটায় যাই চল। ডাব চিংড়ি আর গন্ধরাজ মুরগি, আআআহ্‌.... ততবার ঘটনাটার কথা মনে পড়ে।

আরেকজনের কথা জানি, কলকাতা সফর সেরে ফেরার পথে অনেক আশা করে বংগালি মিঠাইয়ের বাক্স কিনে কিছুতেই গলাধঃকরণ না করতে পেরে শেষে আধভর্তি মিষ্টির প্যাকেট দিল্লি এয়ারপোর্টের ডাস্টবিনে বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। জেরা করে জানা গিয়েছিল দোকানটা ছিল গাঙ্গুরাম আর সন্দেশটা জলভরা।

Comments

  1. Replies
    1. হাহা, ঠিক এই প্রশ্নটাই নিশ্চয় ভদ্রলোক জলভরা খেতে খেতে আমাদের সম্পর্কে করেছিলেন, অন্বেষা।

      Delete
  2. Last para? Eta sotyi? Bangali anyanyo khadyo niye joto abhijog thak sandesh bole sobai k lafate dekhechhi. Jodio jolbhora sandesh amar prio na : P : papiya

    ReplyDelete
    Replies
    1. অক্ষরে অক্ষরে সত্যি, পাপিয়া। ঘটনাটা আমার খুব একটা অবিশ্বাস্য লাগেনি। আমি এদিককার বিখ্যাত এবং গলাকাটা দামের অনেক মিষ্টিই খেতে পারি না, ঘি আর বাদামের চোটে। সেই স্বাদে যদি কেউ অভ্যস্ত হয়, বাঙালি মিষ্টি তার জিভে ফ্যাকাশে ঠেকাটা আশ্চর্য নয়।

      Delete
    2. সন্দেশ নিয়ে আমার গল্পটাও জুড়ে দি। বছর দশেক আগের কথা, তখন ব্যাঙ্গালোরে থাকি। কলকাতা থেকে অনেক তোড়জোড় করে সন্দেশ নিয়ে গেছি। রাত্তিরবেলা খাওয়া দাওয়ার পরে সেই মহামূল্যবান সুখাদ্য আমার লখনৌয়া রুমমেটকে দিলাম। সে খুব মন দিয়ে খেয়ে নিল। আমি তো "তোর মানবজনম সার্থক হয়ে গেছে" মার্কা ভাব করে "ক্যায়সা লগা!" জিগেস করেছি। ছেলে খুব সাধারণ মুখ করে "ঠিক হ্যায় দাদা, পেড়া জ্যায়সা..."

      তারপর 3 দিন কথা বন্ধ।

      আপনার গল্প পড়ে বন্ধুকে ফোন করলাম। আর খুব একচোট হাসাহাসি হল।

      Delete
    3. হাহা, এটা দারুণ গল্প। তবে ভেবে দেখুন, আমাদের কড়াপাকের ক্ষীরের মিষ্টিগুলো পেড়ারই রকমফের বটে। আমি এই জন্য চিরকাল ছানার মিষ্টির দলে। সেগুলো আবার ট্রান্সপোর্টেশনের পক্ষে সুবিধের নয়।

      Delete
    4. Oi ghee r badam et atyachar off! Besan ki laddu bole ki j ekta bostu chalu achhe ... eto baje kheteo kono jinis hote pare ! : Papiya

      Delete
    5. ওটা বহ লোকে দারুণ ভালোবেসে খায়, পাপিয়া। ইউটিউবে থিকথিক করছে রেসিপি ভিডিও। আমারও পোষায় না অবশ্য।

      Delete
  3. রাজমা চাওয়াল আমার বেশ ভাল লাগে, কিন্তু ওই দই
    বেসনের বেদনা আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার চেয়ে তেহরি বেস্ট। দারুণ লাগল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ সুদীপ, আমার থিওরি হচ্ছে ওই দই আর বেসনের কম্বিনেশনে বাঙালিদের কোনও খাবার (অন্তত আমার জানা) নেই বলে ওই টেস্টটা আমরা অ্যাকোয়ার করে উঠতে পারিনি। তেহরি আমার ধারণা আমারও ভালো লাগবে।

      Delete
  4. খুব খুব ভালো লাগলো- কাকুর গল্পটা দুর্দান্ত| সত্যি তো কি দিয়ে আলুপরোটা খাবেন! বাঙালি মিষ্টি যে অনেকের ভালো লাগেনা সেই সত্যিটা আস্তে আস্তে বোধগম্য হয়েছে| বিশেষত অনেক আমেরিকান যারা 'ইন্ডিয়ান' রান্না যথেষ্ট ভালোবাসে তারাও কিন্তু বাঙালিদের মিষ্টির মাহাত্ম বুঝে উঠতে পারেনি| এই প্রসঙ্গে না বলে পারছিনা, কিছুদিন আগে আমার বানানো সন্দেশ কজন সাদা ভদ্রলোক ও মহিলার খুব ভালো লেগেছে| তাতে আমার সন্দেশের কোয়ালিটি নিয়েই সন্দেহ হচ্ছে|
    আমাদের নিজেদের খাদ্যাভ্যাসও কত চেঞ্জ হয়েছে, আগে যা ভাবতে পারতাম না আর হাসাহাসিও করতাম এখন দিব্যি ভালো লাগে সেসব খেতে|

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা অমিতা, আমি নিশ্চিত আপনার মিষ্টি খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। সত্যি, এ জীবনে আমাদের টেস্ট যে কত পাল্টালো। বেশিদূর যেতে হবে না, আমি যে একসময় উচ্ছেভাতে এমন আদর করে খাব, সেটা কখনও ভেবেছিলাম?

      Delete
    2. আমি জানি যে তুমি মূলত বাঙালি অবাঙালি নিয়ে লিখেছো আর আমার কমেন্টটা ঠিক appropriate না কারণ আমি বাঙালি ইন্ডিয়ান আমেরিকান সব জগাখিচুড়ি পাকিয়েছি| তাই আরো একটা কমেন্ট করছি| সবাই বলছে অবাঙালিরা বাঙালি মিষ্টি ভালোবাসেনা, রান্নাও না| আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু একটু অন্য| আমি তো শুনি সবাই বাঙালিদের রসগোল্লার প্রশংসা করে, তাছাড়া কালাকাঁদের প্রশংসাও শুনি| তবে আমার বাড়িতে অবাঙালি গেস্ট এলে আমি বাঙালি রান্নার কোনো রিস্ক নিইনা| আফটার অল আমাদের রান্নায় মশলার স্বাদ গন্ধ subtle, পেঁয়াজ টমেটো রসুন, কারিপাতার strong গন্ধ নেই| যাদের ওই খেয়ে অভ্যেস তাদের আমাদের খাবার ভালো লাগার কথা না| অবশ্য মিষ্টির ব্যাপারেও একই যুক্তি খাটে, আমাদের মিষ্টিও হালকা বিশেষত সন্দেশ| আমার খুব ভালো লাগে নরম পাকের নলেন গুড়ের সন্দেশ, কম মিষ্টি কালাকান্দ বা কাঁচাগোল্লা|
      কড়ি জিনিষটা বোধহয় একবার দুবারই খেয়েছি, ভালো লাগেনি| তবে আরো এক্সপোজড হলে হয়তো taste grow করতো |

      Delete
    3. অমিতা, আপনার কমেন্ট একটুও ইনঅ্যাপ্রোপ্রিয়েট হয়নি। এই ঘটনা বাঙালি অবাঙালি ছাড়িয়েও সমান সত্য। আমার নিজের দেখা একাধিক উদাহরণ আছে। যেমন ধরুন, থ্যাংকসগিভিং ডিনার। একবার খেয়ে পরের বছর ওমুখো হইনি। ওরা তো খুব আদর করে খায়। একবার সাউথ কোরিয়ান একটি মেয়েকে খুব জাঁক করে দোসা খাওয়াতে নিয়ে গেছিলাম। ভদ্রসভ্য মেয়ে, মুখে বলছে ওয়াও, অ্যামেজিং, এদিকে আমি স্পষ্ট দেখছি, নারকেলের চাটনির গোটা সর্ষে মুখে পড়ছে আর মেয়ে শিউরে শিউরে উঠছে।

      আপনার মিষ্টির পছন্দের সঙ্গে হাই ফাইভ। বানাতে জানলে, কাঁচাগোল্লা = অমৃত।

      Delete
  5. ¨শুকনো লংকা কেন হবে বালাই ষাট, ওটাকে বলে পেরি পেরি।¨

    jake bole ekebare ROFL :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ব্যাপারস্যাপার দেখে আমি তো হাসব না কাঁদব মাঝে মাঝেই গুলিয়ে ফেলি, কাকলি।

      Delete
  6. যারা জীবনের একটা বড় এবং মূল্যবান অংশ, উত্তর ভারতীয় ছাত্রাবাসে কাটিয়ে এসেছেন, তাদের কয়কটি জিনিষ খারাপ লাগা বাধ্যতামূলক। তাঁর মধ্যে একনম্বর অবশ্যই কঢ়ি পকোড়া। দুই নম্বর ছোলে ভটুরে। তিন নম্বর অ্যাসর্ট্মেন্ট অফ পনীর ডিশেস। এরকম নয় যে শুধু কানপুরেই আমার ছোলে ভটুরে খারাপ লাগতো, আপনাদের কাভেরী হস্টেলেও সেটা ইকুয়ালি অখাদ্য লেগেছেে। সেখানে আবার ভটুরার সঙ্গে দিস্তে খবরের কাগজ দিত, যতক্ষণ না ভটুরার তেল শুকিয়ে তাতে নিউজপ্রিন্টের ছাপ চলে আসছে, ততক্ষণ ছেলেরা খাওয়া শুরু করতো না।

    তবে পরে আমার ধারণার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে, আমি জীবনের শ্রেষ্ঠ কঢি পকোড়া, ছোলে ভটুরে আর দহি ভড়া খেয়েছি, দক্ষিণ কোরিয়ায়, ওখানকার উত্তর ভারতীয় কম্যুনিটির সৌজন্যে। ভটুরে তে যে ময়দা আর দই দিয়ে মেখে তৈরী করা হয়, সেটা আমি কানপুরে জানতুম ই না। হস্টেলে আমি ঐ বস্তুটিকে রাবার ব্যান্ডের মতোই এড়িয়ে যেতুম। কঢ়ি পকোড়া নিয়েও হস্টেলে একটা বিতৃষ্ণা ছিল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, ছোটোবেলার ভালোমন্দ লাগায় একটা পিয়ার প্রেশার কাজ করে বোধহয়। আপনি কাবেরীর ছোলে ভাটুরে খেয়েছেন? রাস্তার এপারের গোদাবরীর মেসে বসে আমিও যে কত খেয়েছি, মনে পড়ে গেল।

      Delete
  7. এ দেশে নন্দ বলে একজনের ওই পেরি পেরি মাখানো মুরগির দোকান বেশ জনপ্রিয়। আমরা ইউরোপেও দেখেছিলাম নন্দবাবুর দোকান। দোকানের মালিক দেশি কিনা জানিনা, তবে ওরা যে হাত দিয়ে মাখামাখি করে খাওয়া প্রোমোট করে সেটা দোকানের চারিদিকে লিখে রাখে। পেপার ন্যাপকিনের গায়েও লেখা থাকে যে যত খুশি ন্যাপকিন নিলেও জাজ করবেনা। 
    কি আশ্চর্য ব্যাপার, রাজমাচাওল আর কঢ়িপকোড়া দুইই আমার ভীষণ প্রিয় খাবার। আমি অবশ্য এলাহাবাদে মানুষ হওয়ার ফলে হাফ খোট্টা, তাই দই আর আচার (বা এর যে কোনও একটা) দিয়ে দিব্যি আলুর পরোটা সাবাড় করে দিতে পারি। আপনার লেখা খুবই ভাল লাগল, তবে শেষ লাইনটা পড়ে ভারী দুঃখ পেলাম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. নন্দবাবুর দোকান দিল্লিতেও আছে, সুগত। ওল্ডেন গোল্ডেন দিবসে আমরা খেতে যেতাম। রাজমাচাওল অতটা না হলেও কঢ়িপকোড়ার প্ৰিয় হওয়ায় হায়েস্ট ফাইভ।

      Delete
  8. Ei topic ta eto close to home je bohudin por supreme lyaad er gheratop theke beriye eshe commment korchi - Kanpur-er ghor vegetarian ek bhodrolok ke biye kore ei khadyo somoshya amar doinondeen jiboner ongo hoe geche - ilishmaacher tel die bhaat makha chere dilam - but posto/mocha/bhaatebhaat/dhonka ei shob e food rejects- taropore jokhon shashuri ma thakte ashen tokhon sholo kola purno hoe(aata r puri, aata r porota, mishti chara polao, khejur gur chere aakher gur aar koto bolbo).
    Jolbhora, notun gurer rosogolla shoshurbarir shobai reject koreche - tobe homemade narkel naru ta utre geche. Ekhon ami nijei beshon er laddu banai - 1piece kheyeo nie. Tobe kadhi amar bor one of the favouite food holeo ei jonome otake apon korte parbo bole mone hoena.

    ReplyDelete
    Replies
    1. এ ব্যাপারে হাতেকলমে আপনার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি, পরমা। জলভরার থেকেও গুড়ের রসগোল্লার বাতিল হওয়ায় দুঃখ পাচ্ছি বেশি।

      Delete
  9. Sob jayga tei tai go.. Banglar baire amader mishtir oto bhokto nei.. trivandrum e amar ek bondhu kc das er rosogolla niye gechilo sobai naki bolechilo ok type .. ami tai sudhu milkcake niye jetam ota bhalo lagto.. ar ami oi Mysore paak khete partam na.. ki ghee ar kitkite mishti.. in fact jolbhora ta amar o pochondo na tar bodole sheet kaal e ekta khejur gur bhora sondesh hoy ota bhalo lage.. tai amar keu mishti bhalo na bolle temon kharap lage na..

    ReplyDelete
    Replies
    1. যা বলেছিস, ঊর্মি। সত্যি বলতে রসগোল্লা এখানে যেটা বিক্রি হয় বা খাওয়া হয়, তার সঙ্গে বাঙালি রসগোল্লার খুব একটা মিল নেই। অন্তত আমি পাই না। এটা যাদের ভালো লাগে, ওটা তাদের হাইলি ভালো লাগবে না।

      মাইসোর পাকে হায়েস্ট ফাইভ। এককামড়ের বেশি এগোনো শিবের বাবারও অসাধ্য। অর্চিষ্মান খুব আদর করে খায় দেখি, আমার মাথায় ঢোকে না।

      Delete
  10. আমার এক কলেজের বন্ধু ওখানে ইকোনোমিকস নিয়ে পড়াশুনা করত, সেই সময়। পরে তার বিয়ে হয়ে যায়, তারা মেহরৌলীতে ঘরভাড়া নিয়ে চলে যায়। পরে মহানদীতে ফিরে এসেছিল। সে অনেক গল্প। আমি ক্যাম্পাসের রিঙ রোডে কতবার যে ঘুরপাক খেয়ে নাকাল হয়েছি তা বলার নয়।

    হ্যাঁ, পীয়ার প্রেশারের কথাটা সত্য। কিন্তু জীবনের প্রথম তিন দশকের প্রায় অর্ধেক আমি উত্তর ভারতে কাটিয়েছি, ফলে ভেতো উন্নাসিকতা মোর নাই। আমি নিজেকে হাফ বাঙালী আর কোয়ার্টার বিহারী + ঔধি বলতেই ভালোবাসি। এখন তো রাজপুতানায় থাকি, প্রায় বছর সাতেক ধরে। ৪ তে সাধারণ আর ২ টি মসালা বাটি একাসনে বসে খাই। সব খাবারই ভালো যদি টেস্ট তৈরি করা যায়। কাঢ়ি ভালো, ভটুরাও। কিন্তু কানপুরের ৫ নম্বর হলে বা কাভেরী তে বসে সেটা বোঝা যাবে না। এটাই বক্তব্য। গোদাবরী নিয়ে বলতে পারব না, কিন্তু সেখানকার শেফরা ভালো হবেন বাকীদের তুলনায়, সেটা বিশ্বাস করা শক্ত। সিপিএমের চক্রান্ত থাকলে অন্য কথা। :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, এটা ভালো বলেছেন।

      Delete
  11. আমার আসলে যেটা ভালো লাগে সেটা দেশ জাতি নির্বিশেষে ভালো লাগে, এবং উলটোটাও একইরকম সত্যি। কঢ়ি বেজায় ভালো লাগে, রাজমাও। মাছ একেবারে পোষায় না, অথচ রীতিমতো মেছো বাড়ির মেয়ে। বাংলা মিষ্টি বিশেষ সুবিধের লাগে না, গুড়ের মিষ্টি তো একেবারেই না। কিন্তু আবার শ্রীকৃষ্ণার মাইসোর পাক পেলে আমি অন্য কোনোদিকে চাই না। স্বাদ ব্যাপারটা মনে হয় ভীষণ ভাবেই ইনডিভিজুয়ালিস্টিক।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেটা হওয়াই স্বাভাবিক হয়তো, অদিতি। কিন্তু আসলে এত বাঙালির কঢ়ি খারাপ লাগতে দেখেছি, এত বাঙালির পানিপুরি খারাপ লাগতে দেখেছি, এবং এত বাঙালিকে মাছ না হলে খেতে পারি না বলতে শুনেছি, কোথাও একটা ধারণা জন্মেছে অতটাও বোধহয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়। অভ্যাসের একটা ছাপ হয়তো কোথাও পড়ে। কে জানে। ভুলও হতে পারি।

      কঢ়ি আর রাজমা ভালো লাগার মিল পেয়ে খুব খুশি হলাম।

      Delete

Post a Comment