লাল ঘোড়া সাদা ঘোড়া
অবশেষে সমস্ত সন্দেহের নিরসন। রূপকথা পড়তে তেমন উৎসাহ না থাকলেও (চোখের সামনে, হাতের সামনে আছে তাই পড়ছি ছাড়া) লিখতে (বা নতুন করে লিখতে) আমার মারাত্মক ভালো লাগে।
আমি বলে বুঝতে এত সময় লাগল, আমাকে যাঁরা হাড়ে হাড়ে চেনেন তাঁদের এই উপলব্ধি অনেক আগেই হয়েছে নিশ্চয়।
ব্যাপারটা পরিশ্রমজনিত। রূপকথার চরিত্ররা ঘোড়ায় জিন দিয়ে রেডি, প্লট তৈরি। যুদ্ধ, প্রেম, প্রতিহিংসা, অভিযান, দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন এবং অন্তে চিরদিনের মতো সুখেশান্তির আশ্বাস। যুগ যুগ ধরে শান্ত বাচ্চাদের চুপটি করে বসিয়ে রাখার টেস্টে, কিছুতেই ঘুমোতে না চাওয়া ল্যাজছাড়া হনুমানদের চোখের পাতা এক করার টেস্টে, ভৌগোলিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সীমানা পার করে, পোশাকআশাক আর ভাষা বদলে দিলে যে সাইবেরিয়ার গল্প গাঙ্গেয় অববাহিকায় আর গাঙ্গেয় অববাহিকার গল্প মরুভূমির ঊষরতায় লকলকিয়ে বাড়তে পারে সে টেস্টেও রূপকথারা দলে দলে হেসে খেলে পাশ। গদ্যের মধ্যে পদ্য। পদ্যের মধ্যে গদ্য। অসামান্য সেটিং। রাজপ্রাসাদ, পুকুরঘাট, সবুজ জঙ্গল, নীল আকাশ, শূলে চড়ানোর মাঠ।
ওই শেষের সেটিংটা আমার ফেভারিট। তাই আসল রূপকথারা সেখানে শেষ হলেও আমার রিটেলিং কেবল ওখান থেকেই শুরু করতে মন চায়। এ বারের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের লাল ঘোড়া সাদা ঘোড়া গল্পটাও ওই মাঠ থেকেই বা মাঠের প্রসঙ্গ থেকেই শুরু হচ্ছে।
মোদ্দা কথা কুঁড়েদের মহা সুবিধে। কুঁড়েদের আর অকারণ খুঁত ধরিয়েদের (বেসিক্যালি, আমার) দৌড়নোর জন্য রূপকথা আদর্শ মাঠ।
খুঁতখুঁতের জায়গাটা হচ্ছে, রূপকথাদের গায়ের জামা, চুলের ছাঁট, মুখের ভাষা এবং মগজের ভাবনা - মারাত্মক সেকেলে। অসুবিধে নেই। কাঠামোটা অবিকল রেখে (ওই পারফেক্ট কাঠামো বদলাতে যাবই বা কেন) আধুনিক সাজ পরিয়ে দিলেই আর সমসাময়িক সেন্সিবিলিটির অঞ্জন চোখে এঁকে দিলেই সব সমস্যার সমাধান। তারপর মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থেকে, জামার এদিকসেদিক টেনেটুনে ঠিক করে, 'বাঃ এই তো কেমন প্রগতিশীলটি দেখতে লাগছে' বলে নিন্দুকের কুদৃষ্টির বিরুদ্ধে কড়ে আঙুল জিভে ছুঁইয়ে কপালের কোণে টি'-এর বর্ম এঁকে সম্পাদকের উদ্দেশে সেন্ড করারই যা অপেক্ষা।
চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম-এ আমার নতুন করে বলা রূপকথার লিংক নিচে রইল।
ফাটাফাটি। 👌👌
ReplyDeleteগুড। থ্যাংক ইউ।
Deleteকুন্তলা, আরো অন্ততঃ আধডজন বার পড়ার পর আমি নিশ্চিত হয়েছি যে এই গল্পের মান অত্যন্ত উঁচুদরের। আপনার সাহিত্যের অভ্যাস সার্থক।
Deleteশুধু এই যেটুকু লিখেছেন, "রূপকথারই পৃথিবী হোক বা বাস্তবের, এ পৃথিবীর সবার একটা সত্যি থাকে। একটাই জীবন, সে জীবনের একটাই সত্যি। যা যতদিন প্রাণ থাকে ততদিন বুকের ভেতর জ্বলে, অপেক্ষা করে কেউ মনোযোগ দেয় নাকি। দশের মধ্যে নজনই দেয় না। কিন্তু দশের মধ্যে দশজনই টের পায়। ফাঁকা দুপুরের ফেরিওয়ালার ডাকে, আচমকা ছাতিমের গন্ধে, শীতের রাতে ভেসে আসা ট্রেনের ভোঁ কিংবা অন্য ভাষার গানে, ঘরভর্তি ভিড়ের এপারে ওপারে আচমকা কারও চোখে চোখ পড়ে যাওয়ায় ওই যে মুহূর্তের টাল খাওয়া, ওটা আসলে বিস্মরণ নয়, যাকে ভুলে আছি তাকে মনে পড়ে যাওয়া।" - এটা যাকে বলে একটা generalized মানবিক অনুভূতি - সর্বকালীন। প্রত্যেক লেখক তাঁর ক্ষুদ্র গল্পে এই বৃহতের ছায়াটুকু পাওয়ার চেষ্টা করেন। আপনি পেরেছেন। এই একই প্যারাগ্রাফ পড়ে কখনো অজান্তে হেসে উঠেছি, কখনও একটু চোখে জল এসেছে।
শুধু এইটুকু প্রতিবার পড়ার সময় আমাকে আটকে রেখেছে, থামিয়ে দিয়েছে, চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। বাণী আপনার লেখনীকে আশীর্বাদ করেছেন।
খুব ভালো থাকবেন।
আপনার মন্তব্যটা যে কত ডজন বার পড়লাম আর আরও কত ডজন বার পড়ব যদি জানতেন, চন্দ্রচূড়।
Deleteইয়ার্কি বাদ, সত্যিটা বলি। এই গল্পটা লিখে আমার আনন্দ হয়েছিল জানেন। একটা বেশ ছেয়ে থাকা ভালোলাগা। সেই ভালো লাগাটা আরও কাউকে ছুঁয়েছে জেনে ভারি শান্তি পাচ্ছি।
আপনিও ভালো থাকবেন।
হাহা! জাস্ট দারুন।
ReplyDeleteধন্যবাদ, আধিরা।
Deleteuffff!!!!!! ki darunnn....ranimar migrain ar candy crush ta khub chena theklo...amar kintu mitun kei pochondo..jodio ei choshma pora rajputturer poti maya pore gelo...pleaseee rupkotha lekho aro sotyi rupkotha jegulo chelemeyeke poralo orao rupkothay bachte shikhbe....
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, পারমিতা।
Deletekhub khub bhalo laglo... thank you.. bhalo thakun.. Indrani
ReplyDeleteআপনিও, ইন্দ্রাণী।
DeleteDarun valo laglo
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, সুহানি।
Delete