বিরহী ও অথেনটিসিটি



(পোস্টটা লিখতে শুরু করার সময় বিরহী টাটকা ছিল। এখন মন্দারের বাজার তেজী। কিন্তু মন্দার দেখে হয়ে ওঠা হয়নি এখনও। আপনারা যখন অন্য কিছুতে মুভ অন করে যাবেন, তখন আমি মন্দার দেখে প্রতিক্রিয়া লিখব।)

বিরহী দেখলেন? নিশ্চয় দেখলেন। আমার চেনা অধিকাংশ লোকেই দেখেছে। যদি কেউ বাকি পড়ে গিয়ে থাকেন তাঁর জন্য বলি, বিরহী হচ্ছে প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য পরিচালিত ইউটিউব সিরিজ। প্রথম সিজন শেষ হয়েছে সবে। দ্বিতীয় সিজনের জন্য মুখিয়ে আছি।

নিজেরাই নিজেদের চমকে দিয়েছি। কারণ আমাদের কিছুই ভালো লাগে না। সবেতেই নাক কোঁচকাই। বিরহীরও যে সব ভালো তেমন নয়, খুঁত ধরতে বললে এক্ষুনি পঞ্চান্নটা ধরে দেব। কিন্তু পাঁচশো পঞ্চান্নটা কারণও একইসঙ্গে বেরিয়ে পড়বে যেগুলোর জন্য বিরহী আমাদের এক কথায়, দিব্যি লেগেছে।

এ অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়ার মূল কৃতিত্ব, ভেবে ভেবে বার করেছি, বিরহীর অথেনটিসিটির। সিরিজটা দেখলে বিশ্বাস করে নিতে ইচ্ছে করে। অথচ অবিশ্বাসের জায়গা প্রচুর। যেমন ধরুন, যে দুটো জায়গা ঘিরে ঘটনাপ্রবাহ, তাদের মধ্যে মফঃস্বলটার নাম ফুলকুমারী আর গ্রামটার নাম বিরহী। নায়কের নাম কৃষ্ণ, নায়িকার নাম রাধা। স্কুল ঝাঁটপাটের দায়িত্ব যার, (ছোটবেলায় আমরা যাকে মাসি বলতাম), তার নাম জমিদার। গ্রামশুদ্ধু লোক বাবা নামের বোমা বেঁধে হাবা নামের উত্তেজক পদার্থ সেবন করে দিন চালায়।

পরের স্তরের অবিশ্বাস্যতায় বিরাজ করছে সেই সব ঘটনা যেগুলোকে আলতো টোকা মারলেই বিশ্বাসযোগ্যতার বাউন্ডারিতে ঢুকে পড়বে। প্রভূত ঘুষঘাষ দিয়ে পাওয়া স্কুলের চাকরি। প্রত্যন্ত গ্রামে পোস্টিং। মাইলের পর মাইল বাস ঠেঙিয়ে, সাইকেল চালিয়ে শেষমেশ আন্ডারওয়্যার সম্বল করে পাঁকময় নদী পেরিয়ে স্কুল পৌঁছনো। স্কুলে একটিও ছাত্র আসে না। প্যারাটিচার পকেটে বন্দুক গুঁজে ঘুরে বেড়ায়, মাঝে মাঝে এসে গোটা মাসের অ্যাটেনডেন্স দিয়ে চলে যায়।

আমার বেশ কিছু প্রাণের বন্ধু এস এস সি দিয়ে স্কুলের চাকরি পেয়েছিল। গোড়ার দিকে তাদের স্কুলে যাতায়াতের অভিজ্ঞতা ওই আন্ডারওয়্যার আর পাঁকের জায়গাগুলো বাদ দিলে খুব একটা আলাদা নয়। একজনের স্কুলে ছাত্ররা নিয়মিত আসত, টিকি দেখা যেত না মাস্টারমশাইদের। তাঁরা এ বি টি এ করতেন আর দিনভর মিটিংমিছিলে ব্যস্ত থাকতেন। স্বাভাবিকভাবেই স্কুলে পড়াশোনা সুলভ ছিল না। ক্লাস এইটে বাংলা পড়াতে গিয়ে বন্ধু আবিষ্কার করেছিল যে ক্লাসের বেশ কিছু ছাত্র যুক্তাক্ষর ব্যাপারটা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। অর্থাৎ কিনা তাদের আমার বাংলা নামটা লিখতে দিলে পারবে না।

তারপর বিশ্বস্তসূত্রে গল্প শুনলাম। বাংলাভাষার এক মহৎ লেখক স্নাতকস্তরে ইংরিজি পড়াতেন। কলেজে ক্লাস নিতে নিতে তাঁকে দুয়েকবার বোর্ডে এ বি সি ডি লিখতে হয়েছিল। শুনে গ্রামের স্কুলের ক্লাস এইটে ন্ত-এর বাড়ন্ত হওয়ার দুঃখটা কেটে গিয়েছিল।

অদ্ভুত ততক্ষণই অদ্ভুত, যতক্ষণ না আরও অদ্ভুত কিছুর সঙ্গে মোলাকাত হচ্ছে।

মোদ্দা কথা বিরহী টপ করে বিশ্বাস করে নিতে ইচ্ছে করে। এর একটা কারণ লোকগুলোর চেহারা, সাজপোশাক, মুখের ভাষা। জায়গাগুলোর চেহারা।  আমার ছোটবেলার রিষড়া ফুলকুমারীর মতো ছিল।  বিরহী, যারা আধুনিক গ্রাম দেখেছে, বলেছে এক্স্যাক্টলি ওই রকম।

প্রেক্ষাপটের বিশ্বাসযোগ্যতা দিয়ে শুরু করলাম কারণ প্রেক্ষাপটের অবিশ্বাস্যতা ক্রমশ আকাশ ছুঁচ্ছে। সম্প্রতি হইচইতে আরেকটি থ্রিলার সিরিজ দেখলাম (অবশ্য থ্রিলার ছাড়া আজকাল বানানোই বা কী হয় যে দেখব। বিরহীও নাকি রোম্যান্টিক-থ্রিলার, কাগজে লিখেছে দেখলাম)। তা সেই থ্রিলারের একটা প্রেক্ষাপট সরকারি ক্রিমিনোলজিস্ট আর তাঁর স্ত্রীর বাড়ি। স্ত্রী চাকরিবাকরি কী করেন দেখানো হয়নি, গোয়েন্দাগিরিটা ক্রিমিনোলোজিস্টের থেকে এনি ডে বেটার করেন। যাই হোক,সে বাড়িতে যে ধরণের সোফাসেট আর ইতিউতি গাছ আর ল্যাম্পশেড সে সব অ্যাদ্দিন দেখেছি কেবল সেলেব্রিটিদের বাড়িতে। আন্তর্জাতিক সেলেব্রিটি। চাক্ষুষ নয়, বলা বাহুল্য। আমি সে রকম সেলেব্রিটিদেরই চাক্ষুষ দেখিনি তো তাদের সোফা কোত্থেকে দেখব। ভোগ, আর্কিটেকচারাল ডাইজেস্ট গোছের পত্রিকা তাঁদের বাড়িতে ইন্টারভিউ নিতে গেছে, ভিডিও তুলে আপলোড করেছে, সেই সব দেখেছি।

অর্চিষ্মান সোফাসেট নিয়ে অবসেসড হয়ে পড়ল। বারবার বলতে লাগল, কার বাড়িতে এ রকম সোফা থাকে গো? অবসেসড না হওয়ার কারণ নেই। ও জিনিস সোফা কম, সিংহাসন বেশি। সেগুন কাঠের বাজখাঁই  শরীর জুড়ে কলকা। 

আমি আলোকসজ্জা লক্ষ করছিলাম।

টিউবলাইট না হয় ছেড়েই দিলাম, এঁদের কারও বাড়িতে সি এফ এল বা এল ই ডি বাল্বও নেই। ঘরের চতুর্দিকে ঘোমটা দেওয়া মৃদু আলোর ল্যাম্পশেড, যে ডিজাইনটা পেপারফ্রাইতে আগের মাসেই দেখছিলাম। বড় বেশি মৃদু সন্দেহ হচ্ছিল বলে কিনিনি। ভাগ্যিস। ক্রিমিনোলজিস্টের বাড়িতেও একই ঘরে তিনটে রাখতে হয়েছে। একই ডিজাইনের তিনটে ল্যাম্প, ছোটবড় মিলিয়ে। তাতেও আবছায়া কাটেনি। তারপর ক্রিমিনোলজিস্ট টিম সহযোগে সম্ভাব্য দুষ্কৃতীর খোঁজে উত্তরবঙ্গ গেলেন। দুষ্কৃতীর বাড়ির দরজা বলপূর্বক ভেঙে ঢূকে উদ্যত বন্দুক হাতে বলশালী পুরুষরা দৌড়োদৌড়ি করছেন, দুষ্কৃতী ব্যাকইয়ার্ডে বসে আলগোছে কাঁধের ওপর শাল ফেলে ফাইন চায়নার চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন, এমন সময় দেখি তাঁর বাড়িতেও এক্স্যাক্টলি ওই ল্যাম্পশেড!

এই বেলা আরেকটা খুঁতও ধরে নিই, ধরছিই যখন, এটা অবশ্য আমি ধরিনি, মা ধরেছিলেন অনেক বছর আগে। সিরিয়ালটিরিয়াল দেখার সময় হত না মায়ের, ইচ্ছে হত কি না জানি না। কিন্তু যখনই টিভির মুগ্ধ দর্শকমণ্ডলীর সামনে খাবারের থালা নিয়ে আসতেন যেতেন, ‘আর লাগবে কি না’ ঘুরে ঘুরে জানতে চাইতেন, টিভির দিকে একটুআধটু চোখ পড়েই যেত। এ ঘরে এসে হো হো হাসতেন। বই খুলে বোরোস্য বোর হওয়া আমাকে বলতেন, টিভির স্বামীস্ত্রীরা খুবই অদ্ভুত হয়, বুঝলি সোনা। একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে না। তখন আমার স্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা দূরদূরান্তেও ছিল না কাজেই মায়ের পর্যবেক্ষণের মর্ম অনুধাবন করিনি। সেদিনের থ্রিলার দেখতে বসে কটাং করে চোখে লাগল। এ অল্প পিঠ বাঁকিয়ে দাঁড়িয়ে, ও অল্প মুখ ঘুরিয়ে বসে কথোপকথন চালিয়ে যাচ্ছে। অর্চিষ্মান নড়তেচড়তে রাজি হল না, কাজেই আমিই দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে স্বাভাবিক কথাবার্তার স্রোত চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে লাগলাম। মা ঠিকই বলেছিলেন, কঠিং ব্যাপার।

যাই হোক, নিন্দেমন্দ ছেড়ে পজিটিভিটিতে ফেরত আসি। বিরহী আমাদের ভালো লেগেছে, তার একটা কারণ প্রেক্ষাপট, লোকজনের পোশাকআশাক, মুখের ভাষা মিলিয়ে বিরহী অথেনটিক।

অথেনটিসিটির বাংলা আমি জানি না। বাস্তবসম্মত, বিশ্বাসযোগ্য, খাঁটি, নির্ভেজাল, ভড়ংহীন - অথেনটিকের প্রতিশব্দ হিসেবে সবগুলোই খাটে আবার কোনওটাই খাটে না।

বিশ্বাসযোগ্যতার কথা তো হলই। অবিশ্বাস্য একগাদা এলিমেন্ট থাকা সত্ত্বেও বিরহীকে কেমন অথেনটিক বোধ হচ্ছে। সিনেমায় এ জিনিস হামেশাই হয়। সাধারণ লোকের চরিত্রে অসাধারণ চেহারার লোকেরা অভিনয় করে যান। বিশ্বাসযোগ্যতা বা বাস্তবসম্মতির খাতিরে খেঁদিপেঁচির রোলে খেঁদিপেঁচিদের কাস্ট করা হয় না। হলে, অথেনটিসিটি নিয়ে গলা ফাটানো পাবলিকরাই টিকিট কেটে লাইন দিতে দু'বার ভাবতাম। গত আটচল্লিশঘণ্টায় এই গানটা খুব শুনছি। আলিয়া ভাটের থেকে চোখ সরাতে পারছি না। মনে মনে বিশ্বাস করছি যে স্টকহোম সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে কিডন্যাপারদের সঙ্গে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা একটি মেয়ের মুখচোখ, চুল, ত্বক পোশাকআশাক ওইরকমই হয়।

সংলাপের ক্ষেত্রেও একই কেস। আমার সংলাপ যদি কেউ বাস্তবসম্মত উপায়ে রেপ্লিকেট করতে চায় তাহলে তাকে বাক্যের শুরুতে, মাঝে ও অন্তে 'সরি' বসাতে হবে, পাঁচবার 'মানে' জুড়তে হবে, পঞ্চান্নবার 'ইয়ে'। বিরহী-র মতো অথেনটিক সিরিজেও কেউ সেভাবে কথা বলে না। অন্যজনের কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করে, নিজের মনের ভাব সংক্ষিপ্ত বাক্যে গুছিয়ে প্রকাশ করে, পাশের লোকটা পনেরো সেকেন্ড চুপ করে থাকলে “কী ভাবছ?” বলে কনুইয়ের গুঁতো মারে না। 

অনেককেই বলতে শুনেছি কাউকে, বা কিছুকে, ভালোলাগার একটা আবশ্যক কারণ অথেনটিসিটি। অর্চিষ্মান খুব ভ্লগ দেখে আজকাল। কেউ বেড়াতে যাওয়ার ভ্লগ করে, কেউ বাড়িতে সকালবেলা মেঝেতে বঁটি পেতে কুমড়ো কাটা হচ্ছে, তার ভ্লগ তুলে দেখায়। অর্চিষ্মান স্বভাবত কৌতূহলী, নিষ্ঠাভরে দেখে। ওর পছন্দের কিছু কিছু ভ্লগার, নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও করোনার বাজারে ক্যাপটিভ দর্শকের ঘাড়ে ভর দিয়ে কী পরিমাণ উন্নতি করেছে, মাঝে মাঝেই আমাকে ব্যাখ্যান করে বলে। 

সেই ভ্লগগুলোই ভালো লাগে যেগুলো “অথেনটিক”, দাবি করে অর্চিষ্মান।

তারপর জুড়ে দেয়, মানে অভিনয় তো সবাই করছে। দাঁতনখ তো সবাই লুকোচ্ছে। কিন্তু লুকোনোর মধ্যেও একটা সত্যের ছায়া আছে কি না বোঝা যায়। পুরোটা অভিনয় করা যায় না। সে অভিনয় ধরে ফেলতে সময় লাগে না।

আমি ওর সঙ্গে একমত।

অথেনটিসিটি সর্বদাই ভালো বা কাম্য কি না সে বাবদে আমার অস্বস্তি আছে অবশ্য। মনের সব কথা, ভাব উইদাউট ফিল্টার প্রকাশ করে ফেলছে, সে রকম লোক কি হয়? না হওয়া উচিত?

অথেনটিক খারাপ লোকদের আমার মতে অথেনটিসিটি বর্জন করে ভালো লোক হওয়ার ভড়ং করা উচিত। অথেনটিক অভদ্রদের নিয়ম করে ভদ্রতার ভান করা উচিত। অথেনটিক সম্পর্ক যদি চুলোচুলির হয়, শান্তি বজায় রাখার অভিনয় করা উচিত। ফেক ইট টিল ইউ মেক ইট।

সংজ্ঞায়িত করা কঠিং বাকি সব জিনিসের মতো, যেমন প্রেম, অথেনটিসিটির সুবিধে হচ্ছে ও জিনিস কাকে বলে না জানলেও চেনা যায়। না থাকলেও ধরে ফেলা যায়, থাকলে তো যায়ই।

এই যেমন রোজ একটি অথেনটিক বিষয়ের মুখোমুখি হয়ে আমার দিন শুরু হয়। যখন হলুদসবুজ ব্রাশে কোলগেট লাগিয়ে চোখ তুলি আর আয়নার ওপার থেকে একটা লোক, ক্রমশ প্রশস্ত হওয়া সিঁথি, ক্লান্ত ত্বক, শ্রান্ত দৃষ্টি নিয়ে চোখ তোলে।

চশমা থাকে না বলেই হয়তো রোজ মুখোমুখি হতে অসুবিধে হয় না।

না না, ওই লোকটা অথেনটিক না, খেপেছেন? ভণ্ডামোর ডিপো, নীতিহীনতার চুড়ো, সংকীর্ণতার ঝুড়ি, মিথ্যের গোডাউন। অথেনটিক হচ্ছে ওই লোকটার প্রতি আমার অনুভূতি। এত কিছুর পরেও, এত কিছু সয়েও, ওই লোকটাকে আমি ভালোবাসি। শুধু ভালোবাসি না, রীতিমত পছন্দ করি। অথেনটিক পছন্দ। আর করি বলেই দাঁত মাজতে মাজতে ওই বিতিকিচ্ছিরি, ঝাপসা লোকটাকে রোজ কথা দিই। তোমার সঙ্গে থাকব আমি আমার গোটা আয়ুরেখা জুড়ে। পৃথিবী এধার থেকে ওধার হয়ে গেলেও।


এবং টের পাই আমার এই প্রতিশ্রুতিও, অথেনটিক।

Comments

  1. ভাল লাগল। অনেকটাই এক মত। তবে কোথাও একটা গিয়ে মনে হয়েছে, স্ক্রিপ্ট খানা "বাকিটা ব্যক্তিগত"-র একদম পরের পাতাতেই লেখা হয়েছে, আগেই পাতার কলমের আঁকিবুঁকিগুলো এই পাতায় দিব্যি থেকে গেছে কিছু কিছু। কাছাকাছি কাস্টিং এর জন্যও হতে পারে। আবার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের জন্যও হতে পারে। তবে নিজের সিনেমা কেই হোমাজ দেওয়া এমন কিছু দোষের না।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, তন্ময়। আমি অনেকদিন আগে দেখেছিলাম 'বাকিটা ব্যক্তিগত'। কাজেই 'বিরহী'র সঙ্গে মিল অমিল বেশি ধরতে পারিনি। হোমাজ হতে পারে, আবার এও হতে পারে যে প্রতি স্রষ্টার কিছু কমন বিষয়/সংকেত থাকে, যেগুলো সব সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে আসে, বেরোতে বাধ্য। একেবারে ট্রেসিং পেপার ছেপে কপি করা না হলে তাতে আমিও দোষের কিছু দেখি না। আপনার সঙ্গে একমত।

      Delete
    2. একদম 😊

      ভাল কথা, এখানে বলা ঠিক হবে কিনা জানি না, তবু বলেইদি।
      বইটার কথা তো অনেক আগেই সৈকত দার পোস্ট পড়ে জেনেছিলাম। ভুল বললাম আমি পড়িনি, কেও একটা পড়ে আমাকে জানিয়েছিল "সৈকতদা রিভিউ দিয়েছে বইটা কিনিতে হবে।" আমিও কিনতে হবে, কিনতে হবে গলা মিলিয়েই ভুলে গেছিলাম।

      দু দিন আগে ব্লগটা হুট করে খুঁজে পেয়ে পর পর পড়ে যাচ্ছি লেখাগুলো। নেশার মতই হয়ে এসছে প্রায় 😊

      Delete
    3. খুবই ঠিক হয়েছে এখানে বলা, তন্ময়। এই ডেডলাইনের বাজারে এই যে আপনি আমাকে দুটো ভালো কথা বললেন এ জন্য কৃতজ্ঞতা। অবান্তর আপনার ভালো লাগছে জেনে সুখী হলাম। আশা করি ভালোলাগা দীর্ঘজীবী হবে।

      Delete
  2. বিরহী আমার বড্ড ভালো লেগেছে। বিশেষ করে গান, music.
    সব ফর্মুলা আছে, মনে হল পরিচালক অত্যন্ত বুদ্ধি করে বানিয়েছেন -- প্রতিটা পর্ব শেষ হচ্ছে নিখুঁত ভাবে, সব রসদ আছে মাপ বুঝে। এখন একটা কথা শুনতে পাই -- sanitized version -- সেরকম-ই লেগেছে। (এ প্রসঙ্গে আপনি https://www.youtube.com/watch?v=-sGkhbsQgns interviewটা দেখতে পারেন। Fandry র পরে Sairat বানিয়ে পরিচালকের interview). তাও বিরহীর একটা নিজস্বতা আছে (জায়গাগুলো বড্ড চেনা -- সেটাও আমার ভালো লাগার একটা কারণ হতে পারে)
    Without any constraint পরিচালক কি এটা বানাতেন? -- না মনে হয়. আমারও কি এতটা ভালো লাগতো? -- জানিনা। but এখন যে মানের জিনিস হয় সে জায়গায় এটা দারুন। এত মারপিট, ষড়যন্ত্রর মাঝে দুর্দান্ত।
    আমার দেখতে দেখতে বারবার TVFer `Panchayat'-এর কথা মনে আসছিল। Panchayat আমার ভালো লেগেছিল কিন্তু ওটা আরো sanitized, সেটাই মনে হচ্ছিল।


    তবে গান, সুর ভীষণ ভালো লেগেছে। প্রসঙ্গত `আমার ভুল হয়ে গাছে প্রিয়' গানটাও আমার খুব প্রিয়।

    ReplyDelete
    Replies
    1. দ্যোতনা, হাই ফাইভ! বিরহীর গান, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, খুব খুব ভালো। ইন ফ্যাক্ট, প্রদীপ্ত ভটচাজের সিনেমা/সিরিজের এটা একটা বলার মতো হাই পয়েন্ট। কী সব গান, বাকিটা ব্যক্তিগত, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত-র। 'সবার কিছু দুঃখ আছে', 'আমার এটুক শুধু চাওয়া'... অভূতপূর্ব।

      ইন্টারভিউটা দেখব নিশ্চয়। যদিও সাইরাট বা পঞ্চায়েত কোনওটাই আমার দেখা হয়নি। দেখব সুযোগ হলে। অনেক অনেক থ্যাংক ইউ।

      Delete
  3. lekha aapnar as usual durdanto laglo.. aami toh birohi dekhini.. dekhe phelbo chotpot aar recommend o korbo.. aar mandar niye aapni joto deritei likhun, sombhoboto aami tokhono dekhe uthte parbo na :)

    bhalo thakben

    Indrani

    ReplyDelete
    Replies
    1. যাক, আমার মতোই কেউ ল্যাগে দৌড়চ্ছে জেনে স্বস্তি পেলাম, ইন্দ্রাণী। বিরহী ভালো লাগবে, দেখবেন।

      Delete
  4. আমি আরও ল্যাগে চলছি, এই পোস্টটি পড়ার আগে অবধি বিরহী যে আমি শুধু দেখিনি তাইই নয়.. এ পর্যন্ত বিরহী-র নামটাও আমার কানে আসেনি।
    এই মাত্র দেখা শেষ করলাম। দেখার সময় আমারও বারবার 'বাকিটা ব্যক্তিগত'-র কথা মনে এসেছে। তবে সব মিলিয়ে আমার বিরহী ভীষণ ভালো লেগেছে.. বিশেষ করে গানগুলো এক কথায় অসাধারণ।
    'মন্দার' এর কথা কানে আসছে। তবে অপনার পতিক্রিয়া পড়ার পরই দেখবো। অপেক্ষায় রইলাম।
    আপনার লেখাটা বাকিসব লেখার মতোই খুব সুন্দর হয়েছে...নতুন করে আর কী বলব। লাস্ট প্যারা-টা একঘর।

    ReplyDelete
    Replies
    1. পুনশ্চঃ- হইচই এর থ্রিলার সিরিজটার নাম জানতে ভীষণ ইচ্ছে করছে। বলা যায় কি?

      Delete
    2. বিরহী ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম, আধিরা। গানগুলো সত্যি সুন্দর। ঠিকই বলেছ। সিরিজ ভুল বলেছিলাম, এটা সিনেমা। নাম 'মুখোশ'।

      Delete
  5. Dekhechi, besh bhalo legeche, kintu sesh episode tay jotno kom mone holo, ektu gondogol laglo jeno... onyorokom, ei bajare khub fresh laglo..chena lokeder experience er golpo sune besh authentic o legeche.. tumi Panchayat dekhte paro, amar khub bhalo legeche, hoyto ota age na dekha thakle birohi ektu besi bhalo lagto.. haha.. lekhata khub bhalo.. mandar dekha hoyni.. dekhi kobe hoy..

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, শেষটা একটু তাড়াহুড়ো আমারও মনে হয়েছে, ঊর্মি। হাই ফাইভ। পঞ্চায়েত দেখিনি, দেখব। বলছিস যখন। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  6. আয়না দিয়ে দেখতে পাওয়া মানুষ কে ভালবাসতে থাকার এই অবহমানতা বড় আরাম দিল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. একদম। ভালোবাসতে থাক। ভীষণ ভীষণ ভালোবাসতে থাক।

      Delete

Post a Comment