আজকাল যাকে ছাড়া চলছে না



দৈনিক ফোনাফুনির কয়েকটা চেকপোস্ট থাকে। কেমন আছ, কী চলছে, কী খেলে। কথোপকথনকারীরা কেউই ফুডি নয় যে নিত্যনতুন বাহারি খাবারের উত্তেজিত আলোচনাসভা বসবে। তবু জিজ্ঞাসা করা। এই আশায় যে রোজই যখন তিনবেলা খেতে হয়, সে বাবদে রিপোর্ট করার মতো কিছু থাকবে। রোজ বিয়েবাড়ি থাকলে বিয়েবাড়ি নিয়ে চর্চা করা যেত, রোজ পাড়ায় সন্তানজন্ম, অভিভাবকের মৃত্যু, কোভিড ফাঁস ঘটলে সে সব নিয়েই মত্ত থাকা যেত, কিন্তু স্যাডলি সে সব ঘটে না রোজ।

তাই কী খেলে আর কী খাব। কী খেলাম আর কী খাবে।

তবে মেনুতে বৈচিত্র্য থাকে। সে বৈচিত্র্য খাদ্যবিলাসের নয়। বয়স, পরিস্থিতি, জীবনাচরণের বৈচিত্র্যের পরিণতি।

একজন হাই তুলে বলে এই তো বিরিয়ানি খেলাম, আরেকজন জানায় সকালে ছাতুর শরবত দিয়ে শুরু করলাম, তারপর এগারোটা নাগাদ ডাবের জল। গাছের ডাব ফাইন্যালি ফুরিয়েছে, এখন একটা ছেলের সঙ্গে সিস্টেম করে রেখেছি, সপ্তাহে তিনদিন ডাব দিয়ে যায়।

চাকরি থেকে তাড়িয়ে দিলেই যে পশ্চিমবঙ্গে দৌড়ব তার প্রধান কারণ এই সিস্টেম। সাপ্তাহিক ডাব সাপ্লাইয়ের সিস্টেম, জানুয়ারি মাসে বাড়ি বয়ে নিয়ে আসা জয়নগরের মোয়ার সিস্টেম, সকালবিকেল ছাদ, বারান্দা থেকে চেঁচিয়ে এর ওর খবর নেওয়ার সিস্টেম। এই সব সিস্টেমওয়ালা একটা সমাজের অংশ হতে চাই আমি জীবনের শেষ বছরগুলো।

ডাবের জলের পর দুপুরে ভাত, পাঁচফোড়ন সম্বার দেওয়া মুসুর ডাল, ফুলকপি ভাজা, মৌরলার ঝালঝাল মাখোমাখো ঝোল। মুখ ধুয়ে ঘরে পাতা উপকারী দই। যেটা অল্প নুন ছড়িয়ে খেতে হবে। চিনি দিয়ে দই খাওয়া যা, একমুঠো হাওয়া জলে গুলে খেলেও তা। বিকেলে চায়ের সঙ্গে করাচি বেকারির ওসমানিয়া বিস্কুট (মেনুতে এই অবদানটুকু রাখতে পারাটা আমার সারাদিনের হায়েস্ট পয়েন্ট), রাতে রুটি আলুপোস্ত। ঘুমের আগে এক চামচ মধু গুলে এক গ্লাস দুধের সিস্টেমও অনেকদিনের।

আমিও দিই আমার খাওয়ার খবর। ফিরিস্তি দিই সেদিনের যাবতীয় হাবিজাবি অখাদ্যকুখাদ্যের।

এবং আলুভাজার।

কালও তো আলুভাজা খেলে শুনলাম। বিরিয়ানিভুক আঁতকে ওঠে।

কান খোঁচাতে খোঁচাতে বলি, পরশুও খেয়েছিলাম। আগামীকালও খাব।

আলুভাজার সঙ্গে সম্পর্ক আজকালপরশুর না। সেই সময়কার, যখনকার স্মৃতিও নেই আমার। মুখেভাত সদ্য পেরিয়েছে, জ্ঞানীগুণীরা চালডালতরকারি একযোগে প্রেশারে সিটি মেরে খাওয়ানোর উপদেশ দিচ্ছেন এবং মা সে উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে দুবেলা সিটি মারছেন এবং আমাকে খাওয়াচ্ছেন। আমার প্রভূত প্রতিরোধে টসকাচ্ছেন না। টসকাচ্ছে কেবল ব-দিদি, যার কি না সাড়ে চার বছর বয়স, যে আমার 'মেরে ফেলল রে' আর্তনাদ শোনা মাত্র দৌড়ে এ বাড়িতে চলে আসছে এবং হাতে খোলা ছাতা ধরিয়ে দিলেই প্রাণপণ ঘোরাচ্ছে। আমি বুরবক, সেই ঘুরন্ত ছাতার মোহে মা যা গেলাচ্ছেন গিলে নিচ্ছি।

একদিন ছাতার মতো আমার ভাগ্যও ঘুরল। নুন দিয়েছেন কি না ভুলে মেরে মা সেই ঘ্যাঁট চেখে দেখলেন। এবং আত্মজার ওপর কী অত্যাচার যে দু’বেলা চালাচ্ছিলেন উপলব্ধি করে অনুতাপে দগ্ধ হলেন।

তারপর থেকে শুরু হল ভাত, মাখন এবং আলুভাজার ডায়েট। ব-দিদির ছাতা ঘোরানোর চাকরি গেল, কারণ আমার প্রতিবাদ তীব্রতর হলেও দাবি বদলে গেল খাবার আসতে এত দেরি হচ্ছে সেই মর্মে এবং দেখতে দেখতে দুই গাল গোল হয়ে আমি গালফোলা গোবিন্দর মা-তে পরিণত হলাম।

তাই বলে মা নিষ্কলঙ্ক ছিলেন না। আমাকে মিনি-মণিতে পরিণত করার তাগিদেই সম্ভবত, যা কি না সব অভিভাবকেরই থাকে, দোষটা সেখানে নয়, দোষটা ওই তাগিদের জেরে নিজে চা থিন অ্যারারুট খেতে খেতে আমাকেও থিন অ্যারারুট খাওয়ানোতে এবং প্রক্রিয়াটা সহজ করার জন্য সেটাকে জলে ভিজিয়ে খাওয়ানোতে।

চায়ে না চুবিয়ে খাওয়াও, অ্যাট লিস্ট দুধে ডুবিয়ে খাওয়াতে পারতে? জলে ভেজা থিন অ্যারারুটের স্বাদ কল্পনা করে মর্মাহত হয়েছিলাম।

মাও হয়েছিলেন। কাঁচুমাচু। সত্যি, বড় ভুল হয়ে গেছে সোনা।

দাঁড়াও না, তোমার যখন সব দাঁত পড়ে যাবে তোমাকেও আমি খাওয়াব জলে ভেজানো থিন অ্যারারুট। সঙ্গে সঙ্গে আরও একটা হিসেব মিটিয়ে নেওয়া থাবা তুলত। বছরের চার মাস, মুখের চারপাশে ফ্রিল দেওয়া উলের বউটুপি, চিবুকের তলায় দড়ি বাঁধা, পরিয়ে বসিয়ে রাখব।

তারপর যেটা হত সেটা শুনে বাড়ির বাকিরা চোখ ঘোরাত।

ওই শুরু হল। মা মেয়ের অট্টহাসি।

আমার প্রতিশোধের ভয়েই মা কেটে পড়লেন কি না কে জানে।

আলুভাজার সঙ্গে আমার যুগযুগান্তের আলাপ ইদানীং অবসেশনে পরিণত হয়েছে। আলুভাজা মানে কিন্তু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বলছি না, বা অবাঙালিরা যেটাকে আলুভাজি বলেন সেটাও না। একটি স্বরবর্ণ দুটো জিনিসের মধ্যে কী দুর্লঙ্ঘ্য দূরত্ব তৈরি করতে পারে আগে উপলব্ধি করিনি। বিয়েবাড়ির মতো ঝিরিঝিরি হওয়ারও দরকার নেই। একেবারে ঘরোয়া আলুভাজা, অল্প মুটিয়ে যাওয়া দেশলাই কাঠির আকৃতির। স্রেফ তেলে ভাজা, স্রেফ নুন হলুদ, স্রেফ দুটো কাঁচালংকা চিরে দেওয়া।

সেই আলুভাজার নেশা হয়েছে আমার। সারাদিনে আর যা-ই খাই বা না খাই, ওটা না খেলে আমার চলে না। কান্না পায়, মনে হয় কেউ ভালোবাসে না আমাকে।

কেন ভালোবাসে না?

আমার অবশ্য এইরকমই হয়। যা-ই হয়। মাত্রাছাড়া। এবার না হয় আলুভাজার হয়েছে। এর আগে চায়ের হয়েছে, ক্যান্ডি ক্রাশের হয়েছে। খানকতক মানুষেরও হয়েছে। এতে নেশার বস্তুর কৃতিত্ব যত না, তার থেকে বেশি আমার চরিত্রের। যা আমি বাবার থেকে পেয়েছি। মা অত কাজ এত ভালো করে করতেন, কোনওটারই নেশা করতেন না। আমি আর বাবা, ভালোমন্দ বিচারবিবেচনা চুলোয় না দিয়ে কিছু করতে পারি না। তাস, ক্যান্ডি ক্রাশ, থিয়েটার, চা, ফুচকা, আলুকাবলি। সবই জ্ঞানগম্যি শূন্য হয়ে, দিকবিদিক ভুলে।

বাবা আপাতত পুরীর নেশা করছেন। মাসে একবার করে যান। বেহালার এক ভদ্রমহিলার চায়ের দোকানের লেবু চা আর বাপুজি কেকের সিস্টেম করে রেখেছেন সকালবিকেল। ভিডিও কলে ভদ্রমহিলার সঙ্গে আলাপও করিয়ে দিয়েছেন।

আমি যে মদ গাঁজা সিগারেটের ধার পাড়াইনি সারাজীবন, জুয়া খেলিনি, সাট্টায় ভিড়িনি - স্রেফ এই জন্য। উচ্চ নীতিসম্পন্ন ব্যক্তি বলে নয়। একবার ধরলে নীতি জলাঞ্জলি দেব বলে।

একমাত্র কাজের নেশা থেকে আমি সুরক্ষিত। ও রোগ আমাকে ধরবে না। প্রমাণিত।

এই সব নেশার তুলনায়, আলুভাজার নেশা, যদি জিজ্ঞাসা করেন, বরণডালা সাজিয়ে ঘরে তোলার নেশা। কিন্তু আমার এমন নিরীহ নেশাকে শেমিং করছে লোকজন। বলছে রোজ আলুভাজা খেলে আমার অলরেডি গোল গাল আরও গোল হয়ে রসগোল্লা হয়ে যাবে। সাবধান হও কুন্তলা, ভেজোনাকো ছাঁকা তেলে আলুভাজা রোজ, কানের কাছে জপছে সকালবিকেল।

শুনছি। আবার শুনছিও না। কারণ আমার একটা গাঁট জন্মেছে। গাঁট হচ্ছে বিজ্ঞান-অসম্মত বিশ্বাস, যেগুলোর যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারব না প্রাণ থাকতে কিন্তু যে অপারগতা সে সব বিশ্বাসের খুঁটি নড়বড়েও করবে না। করবে না বলেই অন্য কাউকে সে বিশ্বাসের দলে টানতে যাব না, অবিশ্বাসীদের সঙ্গে তর্কেও নামব না। সেদিন একজন বলছিল, তর্কের উদ্দেশ্য একটা হলেও (অন্যকে ভুল প্রমাণ করা), উদ্দেশ্যসাধনের পদ্ধতি একাধিক হতে পারে। তাদের মধ্যে দুটো নিয়ে সেদিন আলোচনা হচ্ছিল। প্রথমটা দুজনে নিজের নিজের অবস্থান থেকে শুরু করে চাপানউতোর। দ্বিতীয় রাস্তাটা অল্প অসাম্যের, অন্তত গোড়ার অবস্থানে। এই পদ্ধতিতে যাঁর আত্মবিশ্বাস বেশি তিনি নিজের অবস্থান জাহির করার বদলে প্রতিপক্ষের বিশ্বাসের যুক্তির টায়ার ফাঁসাতে চেষ্টা করবেন।

জীবনে কাউকে কখনও ভুল প্রমাণ করতে পারিনি। যতবার অ্যাটেম্পট নিয়েছি নিজে ভুল প্রমাণিত হয়েছি। তাতে অনেকসময় সুবিধেও হয়েছে। বেশ বড়বয়স পর্যন্ত আমার বিশ্বাস ছিল (কত বড় জিজ্ঞাসা করবেন না, লজ্জা পাব), মেরিট যার মুলুক তার। খুব হাঁইমাই করে বিশ্বাস করতাম না বা বিশ্বাস ফলাও করে ঘোষণাও করতাম না, কারণ সেটা করতেও আত্মবিশ্বাস লাগে কিন্তু এই অবস্থানটাকে মোটের ওপর যুক্তিযুক্ত মনে হত। তারপর একদিন এক আত্মবিশ্বাসী বন্ধু, ঘণ্টাখানেকের চায়ের বিরতিতে সে বিশ্বাসের টায়ার ফাঁসিয়ে দিয়েছিল।

আবার কারও কিছু ক্ষতিবৃদ্ধি করছিল না, এমন নিরীহ বিশ্বাসের জমিও নির্মমভাবে কেড়ে নিয়েছে লোকে। সেই থেকে স্থির করেছি, আঙুলে গোনা যে ক'টা বিশ্বাস এখনও বেঁচেবর্তে আছে সেগুলো অক্ষত নিয়ে চিতায় উঠব। বাঙাল বনাম ঘটি রান্না, ফুচকা বনাম গোলগাপ্পা, কবীর সুমনের ভালোমন্দ  - ইত্যাদি বিষয়ে যে মুখে পার্মানেন্ট তালা ঝুলিয়ে রেখেছি তার কারণ এই নয় যে বিষয়গুলোর পক্ষেবিপক্ষে আমার বিশ্বাস নেই। রেখেছি কারণ সে সব বিশ্বাসকে তর্কের ময়দানে বাজি ধরতে চাই না আমি।

সেই রকম একটা বিশ্বাস ইদানীং জন্মেছে আমার যে আলুভাজা খেলে আমার অলরেডি গোল গাল গোলতর হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বলছি না কিন্তু, বা চিজ ফ্রাইজ। নাদুস দেশলাইমার্কা, নুন হলুদ চেরা কাঁচালংকা দেওয়া আলুভাজা। আমাদের আলুভাজা। আমি বিশ্বাস করি না রোজ ওই আলুভাজা খেলে লোকে মোটা হয়। উঁহু, তিনবেলা খেলেও না। বাড়ির আলুভাজা হয়ে যাওয়া অ্যালবাম উল্টেপাল্টে দেখেছি। সাতপুরুষ পেছোনোর দরকার পড়েনি। আগের প্রজন্ম পর্যন্ত  গিয়েই প্রমাণ হয়েছে। আমি তো স্রেফ আলুভাজা খাচ্ছি। তাঁরা আলু, বেগুন, পটল, উচ্ছে, ফুলকপি, ঢ্যাঁড়স, কুমড়ো, কুমড়োর ফুল, বকফুল, শিউলি পাতা, এবং যে সব তরকারি ভাজা যায় না, যেমন লাউ, হার মানতে অস্বীকার করে তাদেরও খোসা ভেজে খেয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। যাবতীয় তরকারির উপাদান, আলাদা আলাদা ভেজে তুলেছেন। মাছের ঝোলের মাছকেও কাঁচা ছাড়েননি। এবং এ সবের কোনওটাই এয়ার ফ্রায়ারে ভাজেননি। অলিভ অয়েলেও না। কড়াইভর্তি ফুটন্ত সর্ষের তেলে অম্লানবদনে ছেড়ে দিয়েছেন।

এবং হিলহিলে রোগা থেকে গিয়েছেন।

এখন বাঙালি কিছুই খাচ্ছে না প্রায়, খেলেও স্ট্রিক্টলি হেলদি জিনিসপত্তর, সকালে ওটস আর বিকেলে কিনুয়া। এদিকে শপিং মলে এক্স এক্স এল সাইজের র‍্যাক নুয়ে পড়ছে।

কোরিলেশন কজেশনের চুল আপনি চিরতেই পারেন। বলতেই পারেন এ যুক্তি তো অনেকটা ব্লকবাস্টার রুচিশীল সিনেমার যুক্তির মতো হল। সিসিটিভি লাগানোর পর থেকে পেডোফাইল বেশি বেরোচ্ছে কাজেই সিসিটিভি বিদেয় কর।

আমি নিশ্চিত ঠিকই বলছেন। কাজেই তর্ক করছি না। হেরে যাওয়ার বিশ্রী অনুভূতি এড়াতে, বাঙালির খাদ্যাখাদ্যবিষয়ক গোপন বিশ্বাসে চোট না খাওয়াতেও। কিন্তু সবথেকে বেশি করে যে কারণটার জন্য তর্ক করছি না সেটা হচ্ছে, সারাদিনের সাকুল্যে তিনটের মধ্যে একটা ডোপামিনের উৎস এখনও অনেকদিন, সম্ভব হলে আজীবন, অনবরুদ্ধ রাখতে।

খিদে খিদে পাচ্ছে। যাই আলু ভাজি।

Comments

  1. Alu bhajar shotturer mukhe chhai diye tumi kheye jao Kuntala di. Torker khatirey jodi dhoreo niyi alu khele gaal gol hobe, tatei ba ki. Gol gaal chupshano gaaler theke kom kishe.

    Ami roj dupure khawar por ghore pata doi te ek chamuch chini gule khai. Tatey gaal aro gol hochche thik-i, kintu monta je ki bhalo thakchhe ki bolbo. :D

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই দেখো, বিম্বম্বতী, মা তোমাকে হাই ফাইভ দিতেন এইটা শুনে যে তুমি বলেছ যে গোল গাল চুপসানো গালের থেকে কম নয়। মায়েরও তাই মত ছিল।

      আহা, খাওয়ার পর ঘরে পাতা দইয়ের থেকে আরামের, শান্তির, সৌভাগ্যের আর খুব কম জিনিসই আছে, বল? জীবনের শত বেঁধে মারকে ওই পাঁচ মিনিট কাঁচকলা দেখানো যায়। তোমার জীবনভর ওই সুখটুকু ছেয়ে থাক, এই প্রার্থনা করি।

      Delete
  2. Aloo bhaja amar ki je priyo!! Se jhiri jhiri hok ar gol gol batasar moton. Alu bhajar oi swarnali ronge amar mon mojechhe sei chhotobela thekei. Agge mamma (Amar thakuma) ei roser jogan dito, ekhon maa kore dey... French fry er theke bangali aloo bhaja onek gun egiye. Amader putro Puttush-ero prochhonder prothom jinish aloo bhaja. Ei lekhata pore darun valo laglo.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, মন মজার লাইনটা যে কী ভালো লিখেছেন, সায়ন। হ্যাঁ, ফ্রেঞ্চরা (রাদার অ্যামেরিকানরা, ঐতিহাসিক সত্যতা বজায় রাখতে গেলে) অন্য অনেক বিষয়ে বাজিমাত করলেও আলুভাজাটা ভালো পারেনি। বাতাসা কাটিং আলুভাজা অর্চিষ্মানের প্রিয়। বাবাও ভালোবাসেন। আসলে দেখতে অন্যরকম হলে বেশ নতুনত্ব হয় খাওয়াতেও, সেই জন্য বোধহয়।

      পুট্টুসের রুচিপছন্দের ট্রেনিং ভালো হচ্ছে। আপনি, রাকা এবং বাড়ির বাকি বড়রা এবাবদে আমার অভিনন্দন জানবেন।

      Delete
  3. Aha ... aloo bhaja, ektu muchmuche, patla patla tobe oi jhiri jhiri deep fried noye ... ektu kalo jeere ar shukno lonka diye , ek dike halka sonali ar ek dike halka badami .... ki bhalo je lage.
    Ami abar muri diye khub bhalobashi.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, মুড়ি আলুভাজাও দুর্দান্ত, শর্মিলা। কালোজিরে শুকনোলংকা ফোড়নের আলুভাজা বহুদিন খাইনি, মনে করালে। করব একদিন। আর হাই ফাইভ, আলুভাজার একদিক অল্প লাল লাল হয়ে যাওয়াতে। ওটা ফ্যান্টাস্টিক লাগে।

      Delete
  4. Lunch er age porechilam, tarpor tomar recipe te alubhaja kore kheye nilam, 2 tor bodole 1 ta lonka diye :D

    ReplyDelete
    Replies
    1. 😄 জুনিয়রকে উদ্দীপিত করতে পারলে কী ভালো যে লাগে। খুব ভালো করেছিস, ঊর্মি।

      Delete
  5. আলুভাজা আমার অন্যতম প্রিয় খাবার। আমার ছবি তো আপনি দেখেছেন, দেখে কোনওদিন মনে হয়েছে কি, যে আমি গোল গাল নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত? শুধু আলুই নয়, আলুর খোসা ছাড়িয়ে আবার আলাদা করে ভাজা হত আমাদের বাড়িতে। সুতরাং এ ব্যাপারে লজ্জা পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আমারও বাংলা আলুভাজাই সবথেকে প্রিয়, তবে তা বলে যদি ভাবেন পৌলমী আমার ম্যাকডোনাল্ডস-এর ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের ঠোঙা থেকে দুটো সরালে আমি কিছু মনে করিনা তাহলে ভুল ভাববেন। ঝগড়া হয়ত করি না শান্তি বজায় রাখতে, কিন্তু প্যাসিভ-এগ্রেসিভ দৃষ্টি দিতে ছাড়িনা।

    আর আমি বেশ কয়েক বছর হল লোকজনকে ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করা ছেড়ে দিয়েছি। এক সময়ে ইন্টারনেটে আর চায়ের আড্ডায় লোকজনের সঙ্গে কত যুদ্ধ করেছি, এখন মনে করলে নিজেই লজ্জা পাই। আমি ইদানিং সুকুমার রায়ের কথাই মেনে চলি, " আজ পর্যন্ত তর্ক করে কোনো বড় কাজ হয়নি, এই যে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, যাতে করে চন্দ্র সূর্য গ্রহ নক্ষত্রকে চালাচ্ছে, সে কি তর্ক করে চালাচ্ছে?"

    ReplyDelete
    Replies
    1. 😄😄😄😄 এই না হলে আমাদের তিনি? সারসত্য উচ্চারণ করে দিয়েছেন। সত্যিই। তর্ক করে কেউ কখনও বড়লোক হয়নি।

      আলুর খোসা আমাদের বাড়িতেও হত ভাজা। এমন উপকারী বন্ধু, আনাজপাতির দুনিয়ায় দুটো পাওয়া মুশকিল।

      আমাদের বাড়িতে আলুভাজার সিনটা উল্টো হয়। 😄 আমরা প্রচণ্ড পরিশ্রম করি শেষ পিসটা অন্যর জন্য কুরবানি দিতে। যেন সারাদিনের যে স্বার্থপরতা আর টেটিয়াপনাগুলো করেছি একে অপরের সঙ্গে ওইভাবে তার প্রায়শ্চিত্ত হবে। তুমি খাও, না তুমি খাও করতে করতে শেষে প্রেমপূর্ণ নিবেদন হুমকিতে পরিণত হয়, যে তুমি না খেলে কিন্তু আমিও খাব না। একজন শ্রাগ করে। ফেলে দাও। দাও ফেলে। অন্যজন হাঁটু নাচায়। তারপর ওই এক কর লম্বা আলুভাজাকে অর্ধেক করে সাম্যবাদ ও প্রেমের জয়গান গাওয়া হয়।

      Delete
    2. সুকুমার রায়ের কোটেশনটা অসাধারণ। শেয়ার করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ

      ইন্দ্রানী

      Delete
    3. হ্যাঁ, আমার তরফ থেকেও, সুগতকে।

      Delete
  6. আলুভাজা আমারো অত্যন্ত প্রিয়। মাখন ভাত আলুভাজা হচ্ছে স্বর্গসুখ। তাছাড়া ও রুটি, পরোটা, লুচি, দল ভাত,খিচুড়ি সব কিছুর সব চেয়ে ভালো সাইড ডিশ। আমিও ভাবছি এবার রোজ আলুভাজা খাবো লজ্জা না করে। আলু ভাজা না খেয়েও গাল রসগোল্লা আছে ও খেলেও থাকবে। আমিও ভেবে চিনতে দেখলাম আরামের খাবার না হয় একটু কম করে খাবো , কিন্তু আরামের খাবারই খাবো। quinoa খেয়ে আত্মাকে কষ্ট দিয়ে লাভ নেই। খুব যদি কষ্ট করতে ইচ্ছে হয়, নাহয় অফিসের কাজ একটু বেশি করে নেবো।

    খুব খুব ভালো থাকবেন।

    ইন্দ্রানী

    ReplyDelete
    Replies
    1. আজ থেকে আলুভাজা শুরু করুন, ইন্দ্রাণী। আমি অপয়া কথা বলছি ভাববেন না, কিন্তু জীবন সায়াহ্নে গিয়ে রোজ আলুভাজা কেন খেলাম হে ভগবান আফসোস করার থেকে কেন খেলাম না সেই আফসোসটা হওয়ার প্রব্যাবিলিটি অনেক বেশি।

      মনে রাখবেন, YOLO. বা WOLO. You/we only live once.

      সে বাঁচায় যদি আলুভাজা হামসফর না থাকে, তাহলে আর কী হল।

      "আরামের খাবার না হয় একটু কম করে খাবো , কিন্তু আরামের খাবারই খাবো।" এইটা বাঁধিয়ে রাখার মতো উপলব্ধি। আমিও ফলো করব। থ্যাংক ইউ।

      Delete

Post a Comment