R. I. P./ প্রথম পর্ব
কালো দরজাটার সামনে দাঁড়িয়ে বুক দুরদুর করছিল অবিরামের। একবার অলরেডি টোকা
দিয়েছেন তিনি। আবার দেবেন কি না, দিলেও কতক্ষণ পর দেওয়া উচিত হবে – এ সব ভেবে
অস্থির হচ্ছিলেন। আর একবার ঘাড় উঁচু করে
দরজার আশপাশ পরীক্ষা করে দেখলেন অবিরাম। কলিং বেল বা কড়া, কোনওটাই নেই। অবিরামের কেন
যেন ধারণা ছিল এই জায়গাটা সেকেলে ধরণের হবে। বেশ সিংদরজা থাকবে, সিংদরজার গা থেকে
বেশ কাঁটা কাঁটা বেরিয়ে থাকবে, দু’পাশে বর্শা হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে ইয়া গোঁফওয়ালা,
সোনালি কোমরবন্ধ পরা দারোয়ান। সে সব কিছুই নেই দেখা যাচ্ছে। আছে কেবল একটা কালো
কুচকুচে কাঠের দু’পাল্লাওয়ালা দরজা, পাল্লার গায়ে খোপখোপ ডিজাইন করা। ব্যস্।
ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশটা আর একবার দেখলেন অবিরাম। খাঁ খাঁ করছে। জনমানুষের দেখা
পাওয়ার আশা তিনি করেননি, কিন্তু গাছপালা কুকুরবেড়ালের চিহ্নও নেই। দিগন্তজোড়া একটা
ঘাসহীন ধূসর মাঠ, মাঠের মধ্যিখানে একটা কালো বন্ধ দরজা, দরজার বাইরে ক্যারি-অন
সাইজের একটা সুটকেস হাতে দাঁড়িয়ে আছেন অবিরাম। দরজার আশেপাশে পাঁচিলটাঁচিল কিচ্ছু
নেই। মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে থাকার পর দরজার পাশের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ভেতরে ঢোকার
চেষ্টা করেছিলেন অবিরাম, পারেননি। চেষ্টা করা মাত্র হাওয়ার দেওয়াল তাঁকে ছিটকে
ফেলে দিয়েছে। তার মানে দেওয়াল একটা আছে, কিন্তু সেটা চোখে দেখা যাচ্ছে না।
আর একবার টোকা দিলেন অবিরাম। আগের বারের থেকে জোরে দেবেন ভেবেছিলেন, কিন্তু
হয়ে গেল আগের বারের থেকেও আস্তে। নিজের ওপর এমন ধিক্কার হল অবিরামের। এত বয়স হয়ে গেল, ঠিক করে একটা
টোকা তিনি মারতে শিখলেন না।
কান খাড়া করে রইলেন অবিরাম। ভেতর থেকে কোনও শব্দ আসছে কি? যে রকম চুপচাপ চারদিক, পিন পড়লেও শোনা যাওয়া উচিত। কিন্তু অবিরামের আবার কানে কম শোনার সমস্যা আছে। সমস্যা এতটা বেশিও নয় যে লোকে হিয়ারিং ইমপেয়ারড মনে করে সহানুভূতিশীল হবে আবার এতটা কমও নয় যে অবিরাম নিজে টের পাবেন না। কতবার যে বরাভয়দা’র জোকসের উত্তরে সবাইকে হাসতে দেখে তবে হাসতে শুরু করেছেন তিনি। জোকস বুঝতে পারেননি বলে নয় (বরাভয়দা অত সূক্ষ্ম জোকস বলতেন না) হাসতে দেরি হয়েছে জোকসটা ঠিকমতো শুনতে পাননি বলে।
নাঃ, কোনও আওয়াজ নেই। এ তো মহা ঝামেলা। উল্টোদিকে ঘুরে চলে যেতে পারেন অবিরাম কিন্তু ফেরার রাস্তা
জানা নেই তাঁর। এই দরজার বাইরে সারারাত দাঁড়িয়ে থাকতে হলেই তো হয়েছে। মরিয়া হয়ে আর
এক বার হাত তুললেন অবিরাম।
টোকাটা দরজার ওপর পড়ার আগেই ঘটাং করে দরজা খুলে গেল।
একটা ষণ্ডামার্কা লোক ভুরু কুঁচকে অবিরামের দিকে তাকিয়ে আছে। লোকটা অবিরামের
থেকে লম্বায় দেড়া, চওড়ায় দু’গুণ। বরাভয়দা’র বসার ঘরের দেওয়ালে ঝোলানো তিব্বতি
মুখোশটার কথা মনে পড়ে গেল অবিরামের। ঘোর সবুজ রঙের মুখমণ্ডলের হাঁমুখ থেকে ঝুলন্ত
রক্তবর্ণ জিভ। ঠিকরে আসা চোখের কালো মণি ঘিরে হলুদ মাংস। এই ষণ্ডা লোকটার মুখের সঙ্গে মুখোশটার মুখের ভাবের অনেকটা মিল
আছে। অবিরাম হাসতে চেষ্টা করলেন, পারলেন না। ‘নমস্কার’ বলার চেষ্টা করলেন, মুখ হাঁ
হল শুধু, আওয়াজ বেরোলো না। গলা শুকিয়ে খটখটে হয়ে গেছে। এবার ষণ্ডা লোকটা নিজের মুখ
হাঁ করল। লাল টকটকে মুখ থেকে পুচ্ করে খানিকটা পানের পিক ফেলে চোখ পাকিয়ে বলল,
চলুন।
পেছন ফিরে জোরে জোরে হাঁটতে শুরু করল লোকটা।
অবিরাম দরজার ভেতর পা রাখলেন। দরজার এ পাশটা একেবারে অন্যরকম। সবুজ পাতায় ছাওয়া বড় বড় গাছ, গাছের ডালে ডালে ফল। ঘন বাগানের মধ্যে দিয়ে
কিচিরমিচির পাখির ডাক শুনতে শুনতে ষণ্ডার পেছন পেছন চললেন অবিরাম। গাছের পাতার
ফাঁক দিয়ে সোনালি রোদ্দুর অবিরামের গায়ে মাথায় এসে পড়তে লাগল। একটা খুব চেনা সোঁদা
গন্ধ আসছিল নাকে। একটু মনঃসংযোগ করে ভাবতেই মনে পড়ে গেল। ছাতিম। ছোটনাগপুরের দিকের
জঙ্গলে ছাতিম গাছ হয় খুব। ছোটবেলায় মামার বাড়ি গিয়ে সারাদিন এই গন্ধের ভেতর ডুবে
থাকতেন অবিরাম।
ষণ্ডাটার হাফ ছোটা হাফ হাঁটার সঙ্গে তাল মেলাতে বেশ কষ্টই হচ্ছিল অবিরামের।
তার ওপর হাতে সুটকেস। লোকটা কি সুটকেসটা নিতে পারত না? পারত, কিন্তু নিল না। ওই যে
দরজা খুলে ভাঁটার মতো চোখ দিয়ে মাপল, তখনই ঠিক করে ফেলল যে এর সঙ্গে সুটকেস বয়ে
দেওয়ার ভদ্রতাটা না করলেও চলবে। হনহনিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ছোটবেলায় পড়া অমরচিত্রকথায় দেখা একটা
ছবির কথা মনে করতে লাগলেন অবিরাম। মেদিনীপুরের কোনও এক স্টেশনের খাঁখাঁ
প্ল্যাটফর্মে এসে থেমেছে একটা ট্রেন। ট্রেন থেকে নেমেছে একটা সুটবুট পরা একটা
চালিয়াৎ মার্কা লোক। নেমে ‘কুলি কুলি’
বলে চেঁচিয়ে একটা ধুতি পরা লোককে ডেকে তার হাতে নিজের সুটকেসটা তুলে দিয়েছে। তারপর
স্টেশনের বাইরে এসে যেই না পয়সা দিতে গেছে তখন লোকটা বলেছে ‘আমি কুলি নই, আমি
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।’ তখন চালিয়াৎটার
যা লজ্জা। কান ধরে পায়ে পড়ে একাকার। বিদ্যাসাগর তখন চালিয়াৎকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, ‘নিজের বোঝা নিজে বওয়ার মধ্যে
কোনও লজ্জা নেই।’
লজ্জা নেই, লজ্জা নেই। বিড়বিড় করতে করতে জোরে জোরে পা চালাতে লাগলেন অবিরাম।
কাজে দিল না। কোনওদিন দেয়নি। মাথার ভেতরের যুক্তিবাদী গলাটা ক্রমাগত বাগড়া দিতে
লাগল। হাইটটা যদি আর একটু বেশি হত, বুকের খাঁচাটা আর একটু বেশি চওড়া, মুখের
চামড়াটা আর একটু পরিষ্কার। চিবুক বলে যদি একটা বস্তু থাকত অবিরামের তাহলে আজ
সুটকেসটা তাঁর বদলে থাকত ষণ্ডাটার হাতে। অবিরামের মনটা খারাপ হতে শুরু করল। মনের
কোণে কোথাও একটা আশা কি জমতে শুরু করেছিল তাঁর, যে এবার থেকে সব অন্যরকম হবে? আগের
সব উপেক্ষা অবহেলা মুছে গিয়ে নতুন করে সব শুরু করতে পারবেন অবিরাম?
মিনিট দশেক হাঁটার পর বনের ভেতর একটা বাড়ি দেখতে পেলেন অবিরাম। সাদা রঙের
দোতলা বাড়ি। আরেকটু কাছে গিয়ে দেখলেন বাড়ি ঘিরে সাদা পাঁচিল, পাঁচিলের গায়ে সবুজ
রঙের গ্রিলগেট। ষণ্ডার পেছন পেছন গেটের ভেতরে ঢুকে অবিরাম দেখলেন একটা লালচে নুড়ি
বেছানো রাস্তা, রাস্তার পাশে বসানো তিনকোণা উঁচু উঁচু ইঁটের কেয়ারি, কেয়ারির ওপারে
আগাছাভর্তি বাগান। অবিরামের হাত নিশপিশ করে উঠল। গাছপালার সঙ্গে অবিরামের সম্পর্ক
চিরকালই নিবিড়। সবাই হাল ছেড়ে দেওয়ার পর মহিষাদলের বাড়ির অত বড় বাগান একা হাতে
সামলাতেন তিনি। মানুষের
টান অনেকদিন ফুরিয়েছিল, কিন্তু বাগানের টানে মাসে অন্তত দু’বার বাড়ি যেতেই যেতেন অবিরাম।
পাটুলির ভাড়াবাড়িতে ছিল রুমালের সাইজের বারান্দা। সকালে আধঘণ্টা ছাড়া সে বারান্দায়
রোদের পা পড়ত না। সেই বারান্দায় টবে জুঁই ফুটিয়েছিলেন অবিরাম। গ্রীষ্মে জুঁই বেল,
শীতে চন্দ্রমল্লিকা। বাজারে একদিন ফ্রি ধনেপাতা নিয়ে অপমানিত হওয়ার পর ধনেপাতার
বীজ কিনে এনেও পুঁতেছিলেন। দেখতে দেখতে টব উপচে জঙ্গল। ওপরের ফ্ল্যাটের ভদ্রমহিলা একদিন
অবিরামের দরজায় এসে উপস্থিত। একটু ধনেপাতা নেব, দাদা? অবিরাম খুশিই হয়েছিলেন।
গাছের ছুতোয় যদি পড়শিদের সঙ্গে দূরত্বটা ঘোচে। ঘোচেনি। মহিলা সপ্তাহে তিনদিন অবিরামের
অফিস বেরোনোর ঠিক মুখটায় এসে বেল বাজাতেন, গটগটিয়ে বারান্দায় এসে টব প্রায় ন্যাড়া
করে ধনেপাতা মুড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় মিষ্টি করে থ্যাংক ইউ বলতেন, ব্যস্।
এরা যদি অনুমতি দেয়, এই বাগানের ভোল পালটে দিতে পারেন অবিরাম। কত জায়গা! টব
নয়, আসল মাটি! অনেকক্ষণ পর লম্বা একটা শ্বাস নিলেন অবিরাম। কাঁধদুটো একটু হলেও
শিথিল হল।
রাস্তা পেরিয়ে বারান্দা, বারান্দা পেরিয়ে কালো দরজা। দরজার ভেতর ঢুকে অবিরামের
চোখ টেরিয়ে গেল। পাঁচতারা হোটেলে যাওয়ার সুযোগ কখনও পাননি তিনি, কিন্তু মনে মনে
যে রকম হবে বলে কল্পনা করেছিলেন, এ ঘর সে কল্পনার ওপর কয়েক কাঠি। কড়া এসি, পুরু
কার্পেট, ঝাড়লণ্ঠন। ঘরের মাঝখান দিয়ে চওড়া বেঁকানো সিঁড়ি উঠে গেছে। বাঁদিকে কালো
চামড়ার সোফাসেটি, নিচু কাঁচের টেবিলের ওপর দু’তিনটে বাহারি বই, দামি ফুলদানি। ফুলদানি থেকে উঁকি মারছে শুকনো
ফুলের গোছা।
ডানদিকে তাকালেন অবিরাম। মেহগনি রঙা কাঠের রিসেপশন ডেস্কের উঁচু আড়ালের ওপারে
কম্পিউটারের মাথা দেখা যাচ্ছে। ষণ্ডা গিয়ে কনুইয়ের ভর রেখে দাঁড়াল।
চলে আসুন।
অবিরাম এগিয়ে গেলেন। কম্পিউটারের আড়ালের মুখটা এতক্ষণে নজরে এল তাঁর। কুতকুতে
চোখ, বাঁকা নাক, তোবড়ানো গাল। তেলচিটে চুল মাথার সঙ্গে লেপটে আঁচড়ানো।
অবিরাম সুটকেস নামিয়ে রাখলেন কার্পেটের ওপর। লোকটা অবিরামের দিকে তাকাচ্ছে না।
লোকটার চোখের মণি স্ক্রিনের ওপর সাঁটা। লোকটার আঙুল মাউসের ওপর ক্রমাগত ক্লিক করে
চলেছে। অবশেষে আঙুল স্থির হল।
নাম? খ্যানখেনে তিতিবিরক্ত গলা।
অবিরাম ভট্টাচার্য।
কী?
টেনশনে গলার আওয়াজ বেশি নেমে গেছে অবিরামের।
অবিরাম। অবিরাম ভট্টাচার্য।
মায়ের মেডেন নাম?
বীণাপাণি গাঙ্গুলী।
সিক্রেট আনসার?
সিক্রেট?
আরে মশাই ছোটবেলায় কুকুরবেড়ালইঁদুরবাদুড় যা পুষেছিলেন তার নাম বলুন। ষণ্ডা
খেঁকিয়ে উঠল।
ওহ্। টুকটুকি।
সাদা রঙের এই এত্তটুকু একটা লোমের বলের ভেতর থেকে বাদামি রঙের কাঁচের গুলির
মতো দুটো চোখ অবিরামের বুকের ভেতর ভেসে উঠল।
পেশা?
সরকারি কেরানি।
নেশা?
চা।
আরে ধুর মশাই, সে সব নেশার কথা হচ্ছে না। হবি হবি। পাসটাইম। প্যাশন। প্যাশন কী আপনার?
অবিরাম থমকে গেলেন। প্যাশন দিয়ে কী হবে? পেশা
জানাই তো যথেষ্ট। বারান্দাটার কথা মনে পড়ল। সারি সারি টব। কী জুঁইই না ধরেছিল এবার। গত ক’ঘণ্টার ঘটনার
ঘনঘটার মধ্যে এই প্রথম সামান্য আফসোস টের পেলেন অবিরাম। গাছগুলো সব মরে যাবে এবার।
ওপরতলার মহিলা যদি খবর পেয়ে বুদ্ধি করে ধনেপাতার টবটা নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান তবে
সেটা বাঁচলেও বাঁচতে পারে।
কিন্তু চোখের সামনে বারান্দা আবছা হয়ে আসছে কেন? তার জায়গায় অন্য একটা দৃশ্য
ভেসে উঠছে। অবিরামের বারো বাই চোদ্দ বেডরুম। সিংগল খাট। খাটের ডানদিকে দেওয়ালে
ঝুলছে মহাদেবের মুখ আঁকা ক্যালেন্ডার। ক্যালেন্ডারের নিচে টেবিল। টেবিলে পেনদানি,
জোয়ানের আরক, ফুটপাথ থেকে কেনা চাইনিজ অ্যালার্ম ঘড়ি। আর একটা খোলা খাতা। নীলগগন
ব্র্যান্ডের। ব্র্যান্ডেড খাতার দাম বেশি, কিন্তু এই জায়গাটাতে কোনও দিন কাটছাঁট
করেননি অবিরাম। খাতার পাতায় একটা নীলকালির পেন, সেটাও খোলা। তার নিবের কাছে কতগুলো
বিক্ষিপ্ত শব্দ ছড়িয়ে আছে। শব্দগুলো চোখে পড়ে যাওয়ার আগেই আগেই চোখ টিপে বন্ধ করে ফেললেন
অবিরাম।
‘ধনেপাতা’ শব্দটা মুখ থেকে বেরোতে বেরোতে কী করে যে দুমড়েমুচড়ে ‘কবিতা’ হয়ে
গেল, অবিরাম টের পেলেন না।
কবি?
লোকটা এই প্রথম অবিরামের মুখের দিকে তাকাল।
পুরস্কারটুরস্কার পেয়েছেন?
আজ্ঞে না।
ক’টা বই?
আজ্ঞে?
বলছি ক’টা বই বেরিয়েছে?
বেরোয়নি।
নিজের গালে ঠাস ঠাস করে চড় মারতে ইচ্ছে করছিল অবিরামের। কেন প্যাশনের জায়গায়
বাগান করার কথাটা বললেন না।
পূজাবার্ষিকী? পত্রপত্রিকা? লিটল ম্যাগাজিন? ছেপেছে কোথাও?
না।
অবিরামের গলা আবার ক্রমশ শ্রবণসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। কিন্তু এবার আর উত্তরগুলো
বুঝতে লোকটার কোনও অসুবিধে হচ্ছে না।
ওয়েবজিন?
অবিরামের গলা দিয়ে আর আওয়াজ বেরোল না। মাথাটা দুদিকে নড়ল শুধু।
হুম্।
লোকটা কী যেন ভাবছে। স্ক্রিনের দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে তর্জনী
দিয়ে অন্যমনস্কভাবে মাউসের ওপর টোকা মারছে। দশ সেকেন্ড পর লোকটার হাত মাউস থেকে সরে কি-বোর্ডের
ওপর চলে গেল। খটাখট টাইপ করে ক্লিক করল লোকটা।
ঘড়ঘড় শব্দ শুনে অবিরাম তাকিয়ে দেখলেন পাশে রাখা একটা প্রিন্টার থেকে কাগজ
বেরিয়ে আসছে। কাগজগুলো বার করে সেগুলো দুটো আলাদা সেটে ভাগ করে, স্টেপ্ল্ করে,
দুটো সেটের নিচেই নিজের সই করে একটা সেট অবিরামের দিকে এগিয়ে দিল লোকটা।
এটা সঙ্গে রাখুন। হারাবেন না। ইম্পরট্যান্ট। রিলিজের সময় লাগবে। এর সঙ্গে চলে যান। ঘর দেখিয়ে দেবে।
ষণ্ডা লোকটার দিকে কথা শেষ করল লোকটা। লোকটার চোখ আবার কম্পিউটারের স্ক্রিনে
সেঁটে গেল।
কাগজটা দেখলেন অবিরাম। হোস্টেল অ্যালটমেন্ট লেটার। ওপরে ডানদিকে তাঁর একটা আবছা ছবি।
তাঁর ভোটার আই কার্ডের ছবি। নাকচোখমুখ কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এদের কাছে আর ভালো
ছবি নেই নাকি? ভেবেই মনে পড়ল, আর ছবি ছিলই বা কোথায় তাঁর? গ্রুপ ছবি হয়তো থাকলেও
থাকতে পারে, অফিসে বছরে একটা করে তোলা হত, তার বাইরে আর কিছু নেই। ছবির নিচে
আবাসিকের নাম, বয়স, ডেট অফ ডেথ, গতজন্মের পেশা, নেশা, অ্যাওয়ার্ডস অ্যান্ড
অ্যাচিভমেন্টস (বোল্ড লেটারে লেখা নট
অ্যাপ্লিকেবল শব্দদুটোয় নিজেকে থামতে অ্যালাউ করলেন না অবিরাম), সবশেষে
হোস্টেলের নাম রুমনম্বর, তারও নিচে ‘ফর অফিশিয়াল ইউজ ওনলি’।
‘মধ্যমেধা’, গ্রাউন্ড ফ্লোর, রুম নম্বর 009।
এক হাতে হোস্টেলের ফর্ম গোল পাকিয়ে ধরে অন্য হাতে সুটকেস তুলে নিয়ে ষণ্ডার
পেছন পেছন আবার হাঁটা লাগালেন অবিরাম। আবার বন, ঝিলিমিলি রোদ্দুর, কিচিরমিচির পাখির ডাক আর
ছাতিমের গন্ধ পেরিয়ে মিনিট পাঁচেক হেঁটে আবার একটা সাদা রঙের বাড়ির কাছে এলেন
অবিরামরা। এই বাড়িটায় বাগানটাগানের বালাই নেই। সমস্ত রকম বাহুল্য ও শ্রী বর্জিত
একটি ইঁটসিমেন্টের কাঠামো ধাঁইধাঁই উঠে গেছে ওপরের দিকে।
জন্মে রোদ না ঢোকা একতলার বারান্দা দিয়ে সোজা হেঁটে গিয়ে একেবারে শেষের
বাঁদিকের ঘরটার সামনে থামল ষণ্ডা। পকেট থেকে চাবির গোছা বার করে একটা চাবি বেছে
নিয়ে দরজা খুলে সরে দাঁড়াল। অবিরাম ঘরের ভেতর ঢুকলেন।
একটা বেশ বড় ঘর। পাটুলির ঘরের অন্তত দ্বিগুণ। ঘরের মাঝখানে একটা খাট। খাটের
একদিকে একটা ছোট টুল, অন্যদিকে একজোড়া টেবিলচেয়ার। টেবিলের ওপর একটা ঝকঝকে আকাশি
রঙের টেবিলল্যাম্প নতমস্তকে দাঁড়িয়ে আছে। টেবিলের পাশেই একটা কাঁচের জানালা। খাটের
পায়ের দিকের দেওয়ালের গায়ে লাগানো একটা দেওয়াল আলমারি।
অলরাইট?
ষণ্ডা পেছন ফিরে চলে যাওয়ার উপক্রম করল। অবিরাম জিজ্ঞাসা করলেন,
এটা কি স্বর্গ?
ষণ্ডা ঘুরে তাকাল। এই প্রথম ষণ্ডার মুখে একটা ভাব ফুটল যেটাকে হাসি বলে ভুল
করা যেতে পারে। দরজার গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়াল ষণ্ডা।
কী মনে হচ্ছে?
অবিরাম চুপ করে রইলেন।
স্বর্গনরক বলে কিছু নেই। ও সব থাকে শুধু মানুষের মনে। ভাবসম্প্রসারণ করেননি ইসকুলে? এখানেও আপনাদের ওখানের মতোই ব্যাপার। জায়গা সেম, তারই মধ্যে কেউ কেউ
ভালো হোস্টেল পায়, কেউ খারাপ। ভালো হোস্টেলে চব্বিশঘন্টা কারেন্ট, রানিং ওয়াটার,
গরমে এসি, শীতে হিটার।
খারাপ হোস্টেলের ব্যাপারটা আর বিশদ করল না ষণ্ডা। সে তো চোখেই দেখা যাচ্ছে।
এখানে থাকুন আপাতত। যতদিন না আবার ফেরত যাওয়ার টিকিট পাচ্ছেন।
যেতেই হবে?
ষণ্ডা দু’সেকেন্ড অবিরামের দিকে তাকিয়ে থাকল। হাসিহাসি ভাবটা চলে গিয়ে মুখ
আবার তিব্বতি মুখোশ। দৃষ্টি আবার জ্বলন্ত ভাঁটা।
না গেলে হোস্টেল খালি হবে কী করে? নতুন পাবলিকরা থাকবে কোথায়? আর এখানে
থেকে করবেনটাই বা কী? সিনেমা নেই থিয়েটার নেই মিটিং নেই মিছিল নেই
প্রেমভালোবাসাবিচ্ছেদবিরহ প্রোমোশন কিস্যু নেই। বলি টাইমপাসটা হবে কী করে?
প্রোমোশনের কথাটা মনে পড়েই বোধহয় ষণ্ডার মুখটা ছেতরে গেল।
থাকুন না তিন মাস, তারপর নিজেই ‘পাঠান পাঠান’ করে স্যারের পায়ে চার বেলা ধন্না
দেবেন। সাধ করে পাগলেও থাকে না এখানে।
এবার ষণ্ডা সত্যি সত্যি চলে গেল। ফাঁকা করিডরে দুম দুম পায়ের আওয়াজটা মিলিয়ে
যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন অবিরাম। তারপর দরজা বন্ধ করে জানালাটার পাশে এসে
দাঁড়ালেন। বন দেখা যাচ্ছে। রোদটা কি পড়ে এসেছে একটু? এই বেলা সুইচটুইচগুলো দেখে
রাখতে হবে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অবিরাম ঘণ্টাকয়েক আগে ফেলে আসা জীবনটার কথা ভাবতে
লাগলেন। কী কী জিনিসের জন্য মন কেমন করতে পারে তাঁর? ফিরে যেতে ইচ্ছে করতে পারে?
কেরানির চাকরি? কবি হওয়ার ব্যর্থ, হাস্যকর চেষ্টা? সপ্তাহে তিনদিন বরাভয়দার বাড়ির
সাহিত্য-আড্ডায় দেওয়ালের টিকটিকির মতো অপ্রয়োজনীয় উপস্থিতি? মুড়োনো ধনেপাতার টব?
নিশ্চিত হলেন অবিরাম। নাঃ, ফিরতে তিনি চান না।
*****
কাল অফিস যেতে হবে, ঘুমে চোখ ঢুলে আসছে, তবু ফেসবুক
খুলে বসে ছিল শুভ্র। এই ইডলিদোসার রাজত্বে তিনমাস হল চাকরি করতে এসেছে সে। অলরেডি
ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি দশা। বন্ধু নেই, ভাষার অসুবিধে, খাওয়া রোচে না। কিন্তু কিছু
করার নেই। পেটের দায়। একমাত্র সান্ত্বনা ফেসবুক। হাজার দেড়েক ফ্রেন্ডস আছে শুভ্রর।
সকালবিকেলদুপুররাত্তির যখনই পারে তাদের সান্নিধ্যে মনের ব্যাটারি রিচার্জ করে নেয়
শুভ্র।
কিন্তু আজ রিচার্জের বদলে ব্যাটারি ক্ষয়ই হচ্ছিল
শুধু। কারও ওয়ালেই ইন্টারেস্টিং কিস্যু নেই। সেই রাঁধছেবাড়ছে খাচ্ছে পিটিশন সাইন
করছে সেলফি তুলছে। নতুন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসেনি একটাও, ওর পাঠানো রিকোয়েস্টগুলোও
কেউ অ্যাকসেপ্ট করেনি। কেউ কারোর সঙ্গে ঝগড়াও করছে না যে সেই দেখে খানিকটা টাইমপাস
করা যাবে।
কবিরা যে মাইরি নিজেদের মধ্যে এত ঝগড়া করে, নিজে চোখে
না দেখলে বিশ্বাস করত না শুভ্র। এই এ ওকে চোর বলছে, ও তাকে ‘আরে ধুর ওর আবার কিছু
পড়াশোনা আছে নাকি’ বলে চেটে দিচ্ছে, সে আবার এর ব্যাকরণ শুধরে দিয়ে স্মাইলি মারছে –
ক্যাঁচাল আর কাকে বলে। এদিকে আবার হাফ লাইন কবিতা লিখে একে অপরকে ট্যাগানোও চাই। শুভ্রও
একদিন এদের মতো হয়ে যাবে নির্ঘাত। ও এখনও ঠিক ফুল-কবি হয়ে উঠতে পারেনি, ও এখনও
যাকে বলে প্রতিশ্রুতিমান। চাকরিতে ঢোকার পর থেকে খানিকটা সময় কাটাতেই উইকএন্ডে লেখালিখি
শুরু করেছে শুভ্র। আফটার অল, মাধ্যমিকে বাংলার নম্বরটাই সবথেকে ভালো ছিল। বাংলায়
অনার্স পড়ার সাহস হয়নি তখন, এখন তার ক্ষতিপূরণের পালা চলছে। এর মধ্যেই বেশ কয়েকটা
ওয়েবজিনে লেখাপত্র ছাপা হয়েছে ওর। অনেকেই উৎসাহটুৎসাহ
দিচ্ছেন। এই রেটে চললে কিছুদিনের মধ্যে একটা বইয়ের ভাবনাচিন্তা করা যেতেই পারে।
নাঃ। এবার শুয়ে পড়তেই হবে। স্ক্রিনের নিচে ডানদিকে
একবার চোখ বোলালো শুভ্র। দু’টো বাজতে তিন। আর তিন মিনিট দেখবে, তারপর ল্যাপটপের
ঝাঁপ ফেলবে। একবার মিষ্টি মেয়েটার প্রোফাইল ঘুরে এল, (রিকোয়েস্টটা অ্যাকসেপ্ট কর
মা, আর পেন্ডিং রাখিস না) একবার প্রাক্তন প্রেমিকার (রিলেশনশিপের বিষয়ে এখনও কিছু
আপডেট নেই দেখে খুশি হল), তারপর ল্যাপটপের ডালা ধরে টানতে যাবে এমন সময় ওর চোখ
আটকে গেল।
R. I. P.
দু’টোর সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও থামল শুভ্র। কে আবার
ফুটে গেল? ব্যাপারটা দেখা দরকার।
একটা আবছা ছবি। নাকচোখমুখ কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না।
মাঝবয়সী একটা লোক সেটুকু বোঝা যাচ্ছে। কে বাবা তুমি? ছবিটার নিচে লেখা লাইনগুলোর
দিকে মনোযোগ দিল শুভ্র।
Abiram Bhattacharya, eminent Bengali poet, passed away
today at 2:30 PM at his house in Patuli. God rest his soul. RIP.
এমিনেন্ট বেংগলি পোয়েট? অবিরাম ভট্টাচার্য? শুভ্র হাঁ
করে রইল কিছুক্ষণ। কবিতা লিখছে সে ছ’মাস, কিন্তু পড়ছে তো সেই স্কুল লাইফ থেকে।
ভালো-মন্দ, খাজা-গজা, আধুনিক-অত্যাধুনিক সব রকম কবিতাই নেড়েঘেঁটে দেখেছে সে, এই
অবিরাম ভট্টাচার্যের নাম তো জম্মে শোনেনি?
নোটিসটা ভালো করে পরীক্ষা করল শুভ্র। চেনা কেউ লাইক দিলে
তাকে খুঁচিয়ে ব্যাপারটা জেনে নেওয়া যেত, কিন্তু কোনও লাইক পড়েনি এখনও। নতুন ট্যাব খুলে অবিরাম ভট্টাচার্য টাইপ করে এন্টার মারল শুভ্র। একগাদা
ভট্টাচার্যর লিংক বেরোলো, গোটা তিনেক বিরাম ভট্টাচার্য, পাঁচের পাতায় গিয়ে শেষে একজন
অবিরাম ভটচাজ, তাও সে আবার অ্যামেরিকার কোন ইউনিভার্সিটিতে রকেট সায়েন্স নিয়ে
গবেষণা করে। বাংলা কবিতার ত্রিসীমানায় ঘেঁষে বলে তো মনে হয় না।
এমিনেন্ট পোয়েট, অথচ লোকটার চিহ্নমাত্র নেই কোথাও?
পুরস্কারসংবর্ধনা নেই, রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতা নেই, ফেসবুকে একটা অ্যাকাউন্ট
পর্যন্ত নেই?
পোস্টটা শেয়ার করবে ঠিক করল শুভ্র। ক্লিক করতে যাবে
এমন সময় কী ভেবে থমকালো ও। খটাখট টাইপ করল,
খ্যাতি, প্রতিপত্তি, প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতার মুখে
লাথি মেরে বেঁচে থাকার মতো কলজেওয়ালা আরও একজন চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। এই দুঃসময়ে
যে আপনার বড় দরকার ছিল, কবি।
শেষে একটা RIP জুড়ে দিয়ে ল্যাপটপটা এবার সত্যি
সত্যি বন্ধ করল শুভ্র। মোবাইলে অ্যালার্ম সেট করে, উল্টোদিক ফিরে, গভীর
ঘুমে তলিয়ে গেল।
(চলবে)
shuruta to besh :) porer porber apekhyay - tinni
ReplyDeleteআমিও, তিন্নি।
Deletebesh lagchhe. opakhai roilam.
ReplyDeleteধন্যবাদ, ইচ্ছাডানা।
DeleteHate the silkworm, tar moddhe apni o suspense dite suru korlen!!! Ebare ki last e mirakkel dekha suru korte hobe abar???
ReplyDeleteকী সাংঘাতিক অর্ণব, তুমি মীরাক্কেল দেখা বন্ধই বা করেছিলে কেন?
DeleteHostel e tv dekhte ar ichhe korto na... kintu kal thekei abar youtube e dekha suru korechi...
ReplyDeleteগুড, অর্ণব।
Deleteতারপর? তারপর?
ReplyDeletealright! রইলাম পরের পর্বের অপেক্ষায়।.
ReplyDeleteএইরকম একটা দুর্দান্ত শুরুর পরেও পাঠক আরো বেশী করে মন্তব্য করে নি দেখে চরম দুঃখকিত (পুলকিত'র বিপরীত) হলুম।
ReplyDeletePorer kisti! Shiggir!
ReplyDeleteকদিন একটু অনিয়মিত থাকার ফলে লেখাটা পড়তে দেরী হয়ে গেল।
ReplyDeleteবাকিটা শিগগিরি লিখে ফেলুন। :)
অবিরামের গপ্পটা তো জব্বর ফেঁদেছেন, কিন্তু মাঝে এত বিরাম কেন? ততঃ কিম?
ReplyDeleteTarpor?
ReplyDeleteউৎসাহ প্রকাশের জন্য সকলকে ধন্যবাদ। আশা করি পরের পর্বগুলোতেও উৎসাহ বজায় রাখার মতো কারণ থাকবে।
ReplyDeleteসে থাকবে যে সেটা জানি| কিন্তু তার সাথে হাতে কলমে প্রমানটাও চট করে দিয়ে দিলে ভালো হত না? কবে থেকে অপেক্ষা করে আছি যে.. :(
ReplyDeleteআমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত, অপরাজিতা। একটু সময় লেগে যাচ্ছে এই লেখাটায়।
Deleteএমা দুঃখ কোরোনা.. আমরা তো আছিই| তাড়া নেই|
DeleteEither 'অবান্তরের' বিক্রি দারুন - অথবা একেবারেই না - কারণ Amazon.in বলছে এটা "currently unavailable" !!
ReplyDeleteঅবশ্য India থেকে একে এখানে আনতে কতো লাগবে তা ভাবা একেবারেই 'অবান্তর' !!!
http://www.amazon.in/Abantar-Kuntala-Bandyopadhyay/dp/1631024469/
কুন্তল, যেন প্রথম সম্ভাবনাটাই সত্যি হয়।
Deleteঅপেক্ষা করে আছি
ReplyDeleteমিঠু
okay, swarge tahole hostel system! eta janar bohudin ichhe chilo, thanks :)
ReplyDeleteRIP ... শুরু করে এমন শান্তি তে বিশ্রাম নিচ্ছেন কেন ?
ReplyDeleteতারপর ???
ReplyDeleteএক হপ্তা হল!
ReplyDeleteআমি একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছি। সুস্থ হয়ে এসে আবার বাকিটা লিখব। অসুবিধের জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
ReplyDeletetaratari sustho hoe otho Kuntala. Opekhai roilam.
Deleteথ্যাংক ইউ, ইচ্ছাডানা। আমারও আর ভালো লাগছে না।
Deleteসোনামণি গো, অবান্তর পালিয়ে যাবে না, আমরাও যে যার দিব্যি ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকব, তুমি ব্লগপোস্টের বিষয় ভেবে ভেবে আর চাপ নিও না মা! এত ঘন ঘন শরীর বিগড়োচ্ছেই বা কেন? দিব্যি করে গরম গরম সরুচালের ভাতে মাখন দিয়ে আলুসেদ্ধ মেখে কদিন খাও তো দেখি। অর্চিষ্মান এটুকু নিশ্চয়ই করে দিতে পারবে!
ReplyDeleteসেই অদিতি। সাড়ে তিন হাত একটা জিনিস যে এত ভোগাতে পারে কে জানত।
Deleteসাড়ে তিন হাত ... ব্যাপার টা ঠিক বুঝলাম না তো ...
Deleteসাড়ে তিন হাত দেহের কথা বলছিলাম আরকি, আত্মদীপ।
DeleteLekhar shuru ta to besh bhalo...opekkhay roilam....eta ki uponyash hote cholechhe ? hole kintu besh hoy...besh ekta shirshendu shirshendu byapar hote paare bole kolpona korchhi....
ReplyDeleteAchha Abantar-e ekta abantar proshno kora jete paare ? tumi ki roddur ray bole kauke cheno ? chinle obhimot ki..r na chinle chine niye ekta obhimot janiyo...chai ki ekta blog-o post korte paaro :)
খবর্দার না! কুন্তলা অসুখ থেকে সবে একটু সুস্থ হয়েছেন, আপনি কি চান উনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়ুন?
Deleteহাহা, উপন্যাস এখনও বহু দূর শ্রমণ। রোদ্দুর রায়কে এই সেদিন অবান্তরে একজনের পাঠানো লিংক থেকেই চিনলাম তো। অভিমত খুবই সামান্য। ভদ্রলোক বিখ্যাত হতে চেয়েছেন এবং বিখ্যাত হওয়ার সবথেকে সোজা রাস্তাটা বেছে নিয়েছেন। অর্থাৎ, একটা কাজ পাতে দেওয়ার অযোগ্য করে করেছেন। তাঁর বুদ্ধিকে আমি সেলাম জানাই। তবে এই খ্যাতি বেশিদিন টিকবে না বলেই আমার ধারণা। অচিরেই মেঘলা সাহা নামে কেউ একটা এসে আরও খারাপ গাইবে, ততদিন।
DeleteSharir kharap?? Besh kaekdin pore ese dekhi 11th August er post! Shiggir bhalo hoe otho :)
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, কোয়েল।
Delete