বই নিয়ে দশটা কথা



১। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের বই-ই পড়ে যেতে হবে, তবে ট্রিলজি পড়ব না স্ট্যান্ড অ্যালোনঃ স্ট্যান্ড অ্যালোন। বেশির ভাগ লেখকই জে কে রোলিং নন, কাজেই একই বিষয়/ প্লটকে কেন্দ্র করে তাঁদের একাধিক বই লেখার চেষ্টা পাঠকদের বেঁধে মারার ফন্দি ছাড়া আর কিছু নয়।

২। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের লেখকেরই বই পড়ে যেতে হবে, তবে পুরুষ লেখকের বই পড়ব না মহিলা লেখকেরঃ আমি বরং সারাজীবন এমন বই পড়ব যার লেখকের নাম দেখে বোঝা যাবে না তিনি মহিলা না পুরুষ। 

৩। বই থেকে বানানো টিভি সিরিয়াল দেখব না বই থেকে বানানো সিনেমাঃ  চাঁদের পাহাড় সিনেমাটার কথা মনে পড়ে গিয়ে উত্তরটা লিখতে যাব, এমন সময় ব্যোমকেশ সিরিয়ালটার কথা মনে পড়ে গেল। বৃহস্পতি থেকে শনি, রাত ন'টা থেকে দশটা, কালার্স বাংলা। কলকাতা সি আই ডি-র থেকেও বেশি হাসির। দুঃখের বিষয়, গত সপ্তাহ থেকে সেটা আর হচ্ছে না। সে জায়গায় রবিঠাকুরের গল্প না কী একটা শুরু হয়েছে। সেই নিয়ে বেশ কয়েকঘণ্টা আমার মন খারাপ ছিল। সব ভালো জিনিসই সময়ের আগে ফুরিয়ে যায়। যাই হোক, ব্যোমকেশ সিরিয়ালকে ভয়ানক মিস করতে করতেও বলছি, পিণ্ডি যদি চটকাতেই হয় তাহলে সেটা শাঁসালো প্রযোজকের ঘাড় মটকে হাঁকডাক করে চটকানোই ভালো। আমার ভোট সিনেমার পক্ষে।

৪। লাইব্রেরিয়ান হতে চাই না বইয়ের দোকান দিতেঃ লাইব্রেরিয়ান হতে চাই। বেতনভুকের রক্ত শিরায়ধমনীতে বইছে, নিজের ব্যবসা ফাঁদার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে চাই না।

৫। প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব না প্রতি সপ্তাহে পাঁচটা বইঃ প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব। রাজার অযোগ্য ভাই হয়ে জন্মালে, অর্থাৎ রোজগার আর রাজ্যচালনা, কোনওটারই দায়িত্ব না থাকলে সপ্তাহে পাঁচটা বই পড়ার চ্যালেঞ্জটা স্বীকার করা যেত।

৬। আমাজন থেকে বই কিনব না বাহরিসন্‌স থেকেঃ বাহরিসন্‌স থেকে। অনেক অসুবিধে হবে। দাম বেশি পড়বে। স্টক কম থাকবে। তবু বাহরিসন্‌স থেকেই কিনব। (স্বীকার করা ভালো, এটা সম্পূর্ণ আবেগের উত্তর। কারণ গত ক'বছরে আমি বাহরিসন্‌স বা ওম বুক শপ বা ক্রসওয়ার্ড থেকে যত বই কিনেছি তার অন্তত দশগুণ বই কিনেছি অ্যামাজন আর ফ্লিপকার্ট আর ইনফিবিম থেকে। এবং মনে মনে জেনেছি আমার এই আচরণের কারণেই একদিন বইয়ের দোকানগুলো ঝাঁপ ফেলবে। তার দায় আমি এড়াতে পারব না।)

৭। একজন লেখক আর একজন চরিত্রকে যদি লাঞ্চ বা ডিনারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাইঃ আগাথা ক্রিস্টি আর মিস মার্পলকে নিয়ে যাব। আগাথা ক্রিস্টিকে জিজ্ঞাসা করব প্লট কীভাবে ভাবতে হয়, প্লটের ভেতর ক্লু কী করে গুঁজতে হয়, গোয়েন্দাকে দিয়ে সেসব ক্লু আবিষ্কারই বা কী করে করাতে হয়। আর মিস মার্পলের থেকে জেনে নেব লোক কী করে চিনতে হয়।

৮। বুককেসে আগুন লাগলে আর কেবলমাত্র একটা বইকে বাঁচানোর সুযোগ থাকলেঃ রিষড়ার বাড়ির বুককেস থেকে 'পথের পাঁচালী' বাঁচাব। যেটা আমাকে দেওয়া আমার মায়ের প্রথম বই। আর দিল্লির বুককেসে আগুন লাগলে লাল রঙের সুকুমার রায়ের সমগ্র শিশুসাহিত্য বগলদাবা করে বারান্দা থেকে ঝাঁপ দেব।

৯। "টু রিড" লিস্টে সবথেকে বেশিদিন ধরে যে বইটা ঝুলে আছেঃ কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারত।

১০। আমার সংগ্রহের সেরা প্রচ্ছদওয়ালা বইঃ  কারও সংগ্রহে যদি এমন একটা বই থাকে যার টকটকে লাল মলাটের গা থেকে একখানা সবুজ রঙের আউটলাইনওয়ালা ধুমসো বেড়াল তার দিকে তাকিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা ফ্যাচ ফ্যাচ করে হাসে তাহলে তাকে এই প্রশ্নটা করা অবান্তর।


উৎস গুগল ইমেজেস


Comments

  1. কিভাবে ঘুরতে ঘুরতে অবান্তরে এসে পৌঁছেছিলুম এখন আর খেয়াল নেই। বরং রোজ রাতে বিছানায় ঢুকে অবান্তর চেক না করলে মনে হয় কিছু একটা বাকি থেকে গেল। আর আজকের পোস্ট টার জন্য তোমায় এত্তখানি আদর কুন্তলাদি।
    ইয়ে, আবেগ টাবেগ বেশি হয়ে গেল বোধহয়। তুমি এবং দিদি বললে আপত্তি আছে কি?

    ReplyDelete
    Replies
    1. এক্কেবারে নেই, শাল্মলী। এই আমি তোমাকে বোন বলে স্বীকার করলাম। আশা করি অবান্তরের প্রতি তোমার আবেগ অমর হোক। সকাল সকাল মন ভালো করে দেওয়ার জন্য তোমার প্রতিও অনেক আদর আর ভালোবাসা রইল। থ্যাংক ইউ।

      Delete
    2. তোমায় থেংকু, নামের বানানটা এক্কেরে ঠিক রাখার জন্য। এই নাম নিয়ে বড় বিপদে পড়তে হয়।

      Delete
  2. Amaro achhe! Amaro achhe! Lal molater Sukumar Somogro! Ar baritey agun lagle amio bodh hoy ota niyei palabo.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হায়েস্ট ফাইভ, বিম্ববতী।

      Delete
  3. Ei boita amar baba amake 5 bacharer janmodine diechilo, :) ei post ta khub bhalo

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, তিন্নি। বাবার কিন্তু পছন্দ আছে, বল?

      Delete
    2. :) amar mone hoy oi samayer adhikangsho baba ma-i ei boi bacchader upohar dito :)

      Delete
  4. ek ghar hoyeche Kuntala....lal malater ta amar o ache tabe meyer jonno jeta kinechi sheta shada r beralta missing :(.....ei boi shada malate kemon jeno bhaba jay na

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, দেবশ্রী। হ্যাঁ, মলাটটা ইমপরট্যান্ট। তবে ভেতরের ভালো ভালো জিনিসগুলো তো আদিঅকৃত্রিম ভালো আছে, সেটা বাঁচোয়া। তোমার মেয়ের প্রতি (আমি ভুল করছি কি না জানি না, তোমার মেয়ের নাম কি ঋদ্ধি? ভুল বললে ভেরি সরি) আমার হিংসে হচ্ছে। প্রথমবার ওই বইটা পড়ার আনন্দ, আহা।

      Delete
    2. amar meyer nam Riddhi-i. tumii ektuo bhul balo ni. bhalo meyer bhalo smaran shokti.

      Delete
    3. হাহা, দেবশ্রী, আসলে ছোটবেলা থেকেই মুখস্থবিদ্যার কষে ট্রেনিং হয়েছে তো, তারেই স্মৃতিশক্তিটা বেড়েছে আরকি।

      Delete
  5. Miss Marple ke jiggesh koro jodi lok ki kore chintey hoy then she would say :
    "But dear..I'm sure you are much smarter than I am. If you are an old woman like me in a village..you justsee a lot of things"

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, এটা একেবারে অকাট্য, অর্পণ।

      Delete
  6. ১। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের বই-ই পড়ে যেতে হবে, তবে ট্রিলজি পড়ব না স্ট্যান্ড অ্যালোনঃ স্ট্যান্ড অ্যালোন। বেশির ভাগ লেখকই জে কে রোলিং নন, কাজেই একই বিষয়/ প্লটকে কেন্দ্র করে তাঁদের একাধিক বই লেখার চেষ্টা পাঠকদের বেঁধে মারার ফন্দি ছাড়া আর কিছু নয়।

    ২। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের লেখকেরই বই পড়ে যেতে হবে, তবে পুরুষ লেখকের বই পড়ব না মহিলা লেখকেরঃ স্ট্যাটিস্টিক্সের দিক থেকে পুরুষ লেখকেরা বেশি ভালো বই লিখেছেন। যাহ, হ্যারি পটার বাদ গেল।

    ৩। বই থেকে বানানো টিভি সিরিয়াল দেখব না বই থেকে বানানো সিনেমাঃ বই থেকে বানানো সিনেমা। যেমন পথের পাঁচালি।

    ৪। লাইব্রেরিয়ান হতে চাই না বইয়ের দোকান দিতেঃ লাইব্রেরিয়ান হতে চাই।

    ৫। প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব না প্রতি সপ্তাহে পাঁচটা বইঃ প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব।

    ৬। আমাজন থেকে বই কিনব না বাহরিসন্‌স থেকেঃ বাহরিসন্‌স থেকে।

    ৭। একজন লেখক আর একজন চরিত্রকে যদি লাঞ্চ বা ডিনারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাইঃ লেখকদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ। চরিত্রদের কনটেস্টে ফেলুদা, শার্লক হোমস এবং অ্যালবাস ডাম্বলডোরের মধ্যে দারুণ ফাইট হল। শেষমেশ জিতলেন ডাম্বলডোর।

    ৮। বুককেসে আগুন লাগলে আর কেবলমাত্র একটা বইকে বাঁচানোর সুযোগ থাকলেঃ পথের পাঁচালি।

    ৯। "টু রিড" লিস্টে সবথেকে বেশিদিন ধরে যে বইটা ঝুলে আছেঃ কাশীরাম দাসের মহাভারত। আদিপর্ব শেষ করে আর এগোতে পারছি না।

    ১০। আমার সংগ্রহের সেরা প্রচ্ছদওয়ালা বইঃ পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা কি এই লিস্টে রাখা যাবে? প্রতি বছর দেবাশিস দেবের প্রচ্ছদগুলো ভালো লাগে। ইদানিং প্রচ্ছদ ছাড়া কোনকিছুই ভালো হয়না।

    ReplyDelete
    Replies
    1. পথের পাঁচালীতে হাই ফাইভ, দেবাশিস। আমারও আপনার নেমসেকের প্রচ্ছদ বেশ ভালোলাগে। তবে এ বছরের প্রচ্ছদটা বেশ অন্যরকম ছিল, মানে দেবাশীষ দেবের বলে চেনা যাচ্ছিল না। উনিই এঁকেছেন না কি অন্য কেউ সেটা অবশ্য এখন মনে করতে পারছি না। দুজন দাড়িওয়ালার সঙ্গে আপনার ডিনারের আইডিয়াটা চমৎকার লেগেছে।

      Delete
  7. ১। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের বই-ই পড়ে যেতে হবে, তবে ট্রিলজি পড়ব না স্ট্যান্ড অ্যালোনঃ স্ট্যান্ড অ্যালোন। ট্রিলজিতে শেষের দিকে আর ধৈর্য থাকে না।

    ২। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের লেখকেরই বই পড়ে যেতে হবে, তবে পুরুষ লেখকের বই পড়ব না মহিলা লেখকেরঃ আমি বরং সারাজীবন এমন বই পড়ব যার লেখকের নাম দেখে বোঝা যাবে না তিনি মহিলা না পুরুষ।

    ৩। বই থেকে বানানো টিভি সিরিয়াল দেখব না বই থেকে বানানো সিনেমাঃ খুব কঠিন প্রশ্ন। কোনোটাতেই ভরসা পাচ্ছি না। শেষ সম্বল বেনেডিক্ট কামারব্যাচ, ওইটাই শুধু ভাল লেগেছে।

    ৪। লাইব্রেরিয়ান হতে চাই না বইয়ের দোকান দিতেঃ বইয়ের দোকান দিতে চাই। সেখান থেকে বই কিনে, বা নিছক উল্টেপাল্টে দেখে যদি কারো মুখে হাসি ফোটে।

    ৫। প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব না প্রতি সপ্তাহে পাঁচটা বইঃ প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব। রাজার অযোগ্য ভাই হয়ে জন্মালে, অর্থাৎ রোজগার আর রাজ্যচালনা, কোনওটারই দায়িত্ব না থাকলে সপ্তাহে পাঁচটা বই পড়ার চ্যালেঞ্জটা স্বীকার করা যেত।

    ৬। আমাজন থেকে বই কিনব না বাহরিসন্‌স থেকেঃ অ্যামাজন থেকে কিনব কারণ অনেক বই কিনতে এবং পড়তে চাই। দোকান থেকে সব কেনা রেস্তয় পোষায় না। কিন্তু দোকানে গিয়ে পাতা উলটে আর চার পাতা পড়ে নেওয়াতে যে আনন্দ সেটা অ্যামাজন দিতে পারে না।

    ৭। একজন লেখক আর একজন চরিত্রকে যদি লাঞ্চ বা ডিনারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাইঃ আগাথা ক্রিস্টি। আগাথা ক্রিস্টিকে জিজ্ঞাসা করব প্লট কীভাবে ভাবতে হয়, প্লটের ভেতর ক্লু কী করে গুঁজতে হয়, গোয়েন্দাকে দিয়ে সেসব ক্লু আবিষ্কারই বা কী করে করাতে হয়। আর দ্বিতীয়টি 'দূরবীন' এর ধ্রুব চৌধুরী। তার প্রেমে বহুদিন হুব্বা হয়ে আছি, একবার ডিনারে গেলে হেব্বি হয়।

    ৮। বুককেসে আগুন লাগলে আর কেবলমাত্র একটা বইকে বাঁচানোর সুযোগ থাকলেঃ কলকাতার বাড়ি থেকে 'দূরবীন', আর পুণে থেকে 'ব্যোমকেশ সমগ্র'।

    ৯। "টু রিড" লিস্টে সবথেকে বেশিদিন ধরে যে বইটা ঝুলে আছেঃ জিত তায়িলের 'নার্কোপলিস'

    ১০। আমার সংগ্রহের সেরা প্রচ্ছদওয়ালা বইঃ আই হ্যাভ সাদা মলাট, নো লাল মলাট। তাই এই শিরোপাটা পাচ্ছে 'সেরা সন্দেশ'।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ও, তোমারও সাদা মলাটের ছোটদের সুকুমার রায়, প্রিয়াঙ্কা? দেবশ্রীও মেয়ের জন্য ওই মলাটের বইটা কিনেছে বলল। এই প্রেমে পড়া চরিত্রের সঙ্গে ডিনারে যাওয়ার আইডিয়াটা ভালো। আমিও গোড়াতে সেইরকমই ভাবছিলাম যে মিস্টার মিটারকে নিয়ে যাব ডিনারে। তারপর মনে হল সামনে থেকে দেখে যদি মুগ্ধতাটা কেটে যায়, সেটা খুব খারাপ হবে। তার থেকে মিস মার্পলই ভালো।

      Delete
  8. অন্বেষা সেনগুপ্তDecember 3, 2015 at 11:21 AM

    ১০ নম্বরটার জন্যে এক্কেবারে হায়েস্ট ফাইভ|
    আর ট্রিলজি? ওরে বাবা! ফিফটি শেডস অফ গ্রে নিয়ে যা বিপদে পড়েছিলাম ! একখানাই শেষ করতে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল :P

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, ওই বইটার সম্পর্কে খুব খারাপ খারাপ কথা শুনেছি। তাই আর পড়ার সাহস দেখাইনি, অন্বেষা।

      Delete
    2. অন্বেষা সেনগুপ্তDecember 5, 2015 at 12:09 AM

      একেবারে ঠিক কাজ করেছেন | ওর'ম বইয়ের থেকে শতহস্ত দূরে থাকাই মঙ্গল|
      তবে ট্রিলজি বলতে এখুনি মনে পড়ল, 'পথের পাঁচালী' 'অপরাজিত' 'অপুর সংসার' ও ট্রিলজি :) 'মৌষলপর্ব' লেখা হওয়ার আগে পর্যন্ত 'কালবেলা' সিরিজটাও তাই|
      আর বই থেকে সিনেমা বানানোর কথা যদি ওঠে, তাহলে 'পথের পাঁচালী' , ' গুপী গাইন বাঘা বাইন' ' সোনার কেল্লা' ইত্যাদি অনেকগুলো অপূর্ব সিনেমা রয়েছে, যদিও একই পরিচালক 'চিড়িয়াখানা' নিয়ে সুবিধে করতে পারেন নি| হালফিলের ' এবার শবর'ও বেশ ভাল| 'চাঁদের পাহাড়' আর ব্যোমকেশ সিরিজ নিয়ে কিছু বলতে চাই না ;)

      এই একই কথা সিরিয়ালের ক্ষেত্রেও| রজত কাপুরের মত ব্যোমকেশ আজও খুঁজে পেলাম না, 'মালগুড়ি ডেজ' ' সেই সময়' এগুলো এখনও দূরদর্শনের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে| তবে কয়েকদিন আগে 'এপিক চ্যানেল'-এ রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প নিয়ে হিন্দিতে অনুরাগ বসুর বানানো একটি সিরিজ দেখানো হচ্ছিল| ট্রেলার দেখে দিব্য লেগেছে|

      Delete
    3. আমারও 'এবার শবর' বেশ লেগেছে অন্বেষা। ইন ফ্যাক্ট, আমার শবর দাশগুপ্ত সিরিজ পড়া ছিল না, সিনেমাটা দেখেই পড়ার উৎসাহ পেয়েছি।

      Delete
  9. ১। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের বই-ই পড়ে যেতে হবে, তবে ট্রিলজি পড়ব না স্ট্যান্ড অ্যালোনঃ স্ট্যান্ড অ্যালোন। ট্রিলজিতে বড্ড মনে রাখতে হয়।

    ২। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের লেখকেরই বই পড়ে যেতে হবে, তবে পুরুষ লেখকের বই পড়ব না মহিলা লেখকেরঃ এটা কখনও ভেবে দেখিনি তো!

    ৩। বই থেকে বানানো টিভি সিরিয়াল দেখব না বই থেকে বানানো সিনেমাঃ কোনোটাই না। সিনেমা বা সিরিয়াল যা-ই হোক, বইকে টেক্কা দেওয়া মুস্কিল। (তবে ইটিভিতে ব্যোমকেশ আমিও দেখেছি, পুরোটা, আর প্রচুর হেসেছি)।

    ৪। লাইব্রেরিয়ান হতে চাই না বইয়ের দোকান দিতেঃ লাইব্রেরিয়ান। পুরোনো বাঁধানো বইয়ের গন্ধটা অসাধারণ লাগে।

    ৫। প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব না প্রতি সপ্তাহে পাঁচটা বইঃ প্রতিদিন পাঁচ পাতাটা বড্ড কম, আর সপ্তাহে পাঁচটা বই অত্যন্ত বেশী। দুটোর মাঝামাঝি থাকার চেষ্টা করব।

    ৬। আমাজন থেকে বই কিনব না বাহরিসন্‌স থেকেঃ ইদানিং কিলোদরের বইমেলা থেকে বই কিনছি - এককিলো একশ টাকা। একটু খুঁজতে হয়, তবে মনমতো বই পাওয়াও যায়।

    ৭। একজন লেখক আর একজন চরিত্রকে যদি লাঞ্চ বা ডিনারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাইঃ আগাথা ক্রিস্টি আর পাগলা দাশু।

    ৮। বুককেসে আগুন লাগলে আর কেবলমাত্র একটা বইকে বাঁচানোর সুযোগ থাকলেঃ কি সব্বোনেশে প্রশ্ন! উত্তর দিমু না!!

    ৯। "টু রিড" লিস্টে সবথেকে বেশিদিন ধরে যে বইটা ঝুলে আছেঃ দ্য লুমিনারিস

    ১০। আমার সংগ্রহের সেরা প্রচ্ছদওয়ালা বইঃ ধনপতির সিংহলযাত্রা, বেশ ভাল লাগে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. পাগলা দাশুকে নিয়ে ডিনারে যাওয়াটা কিন্তু বেশ ঝুঁকির ব্যাপার, অরিজিত। কখন যে কী করে বসবেন ভদ্রলোক তা বলা যায় না। অবশ্য যা-ই করুন না কেন, সেটা যে সারাজীবনের মতো একটা অভিজ্ঞতা হবে সেটাও সত্যি। আগাথা ক্রিস্টির ব্যাপারটা মিলেছে দেখে খুব খুশি হলাম। আপনার এই কিলো দরে বই কেনার ব্যাপারটা দারুণ। আমাদের এখানে এরকম কিছু হয় কি না জানা নেই। লুমিনারিস সমুদ্রে সাহস করে ঝাঁপ দিয়ে ফেলুন। পস্তাবেন না।

      Delete
  10. আমার ল্যাপটপ সারাতে গেছে প্রায় তিন সপ্তাহ হয়ে গেল, তাই ভয়ানক অসুবিধায় রয়েছি। কাজের অসুবিধে তো হচ্ছেই, তার থেকেও অসুবিধে হচ্ছে অকাজ করার। এর-ওর থেকে কম্পিউটার চেয়ে-চিন্তে কাজ চালাচ্ছি। ব্লগ পড়ার কাজটা তাও ফোনে সারা যায়, কিন্তু বাংলায় গুছিয়ে কমেন্ট করতে হলে কম্পিউটার ছাড়া গতি নেই। এ লেখাটা কদিন আগেই পড়েছি, কিন্তু এখন পৌলমীর ল্যাপটপটা হস্তগত করে কমেন্ট করছি।

    ১. স্ট্যান্ড অ্যালোন। কারণটা আপনি যা বলেছেন তাই।
    ২. এটা বাছা খুব শক্ত। রবীন্দ্রনাথ, সুকুমার রায়, সত্যজিৎ রায়, শরদিন্দু, কোনান ডয়েল সবাই একদিকে, অথচ লীলা মজুমদার, আশাপূর্ণা দেবী, রোলিং, হার্পার লি, আগাথা ক্রিস্টি আরেক দিকে। শেষমেষ একটা বাছতেই হলে হয়ত রবীন্দ্রনাথ একা জিতিয়ে দেবেন পুরুষ লেখকদের।
    ৩. আমার সিনেমা বেশি পছন্দ, তবে সিরিয়ালটা যদি ডেভিড সুশের পোয়ারোর মতন হয় তাহলে সিনেমা ধারে কাছে আসতে পারবেনা অবশ্য।
    ৪. অবশ্যই লাইব্রেরিয়ান হতে চাইব।
    ৫. প্রতিদিন পাঁচ পাতা। ইদানিং তার কমই পড়া হচ্ছে গড়ে।
    ৬. বাহরিসন্‌স টা কি আমি জানিনা, কিন্তু আমি বইয়ের দোকান সম্পর্কে নিজের বানানো একটা নিয়ম মেনে চলি। সেটা হল যে বই আমি দোকানে গিয়ে প্রথম দেখি, পছন্দ করি, সে বইটা আমি সেই দোকান থেকেই কিনি, অনলাইন নয়। অনলাইন দাম কম হলেও নয়। দোকানে গিয়ে বই ঘেঁটে দেখার আনন্দটার একটা দাম আছে। আর কদিন সেটা পাব জানিনা, কিন্তু আমি সেটা টিকিয়ে রাখার জন্য একটু বেশি দাম দিতেও রাজি। আর ইদানিং বার্নস এন্ড নোবলের পুরনো বইয়ের সেকশনের খোঁজ পেয়েছি, তাই পকেটেও অত চাপ পড়েনা।
    ৭. হয়ত সত্যজিৎ রায় আর হার্মাইওনি গ্র্যাঞ্জার। সত্যজিতের মতন এতরকম বিষয়ে আর কেউ কথা বলতে পারবেন বলে মনে হয়না। আর হার্মাইওনিও বই পড়ে তার মধ্যে বেশিরভাগ বিষয়েরই খবর নিয়ে রাখবে। তাই কথাবার্তাটা জমবে ভাল।
    ৮. হুগলির বাড়ির ক্ষেত্রে "সেরা সন্দেশ", যে বইটার প্রথম পাতায় নিল কালিতে সত্যজিৎ রায়ের সই আছে। এখানে... তেমন প্রিয় বই খুব একটা নেই। কিছুদিন আগেই পুরোনো বইয়ের দোকান থেকে "The Ascent of Man" বলে একটা বইয়ের ছবি-টবি দেওয়া স্পেশাল এডিশন কিনেছি, আজকাল সেই বইটার পাতি পেপারব্যাক ছাড়া কিছু পাওয়া যায়না। সেই বইটাই হয়ত বাঁচাব।
    ৯. আমার লিস্টে অনেক কিছুই আছে, তবে কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারত খুব ওপরের দিকে থাকবে। আমার তো পরশুরামেরটাও পড়া হয়নি।
    ১০. আমাদের বাড়ির বেশিরভাগ পুরনো বইতেই ক্যালেন্ডারের রংচঙে ছবি দিয়ে মলাট দেওয়া, তাই প্রচ্ছদ বললে চট করে মনে পড়েনা। তাই প্রিয় প্রচ্ছদ বললে আমিও হয়ত ওই লাল মলাটে সবুজ রঙের বেড়ালঅলা সুকুমার সমগ্রই বাছব। এটাও আপনার সঙ্গে মিলে গেল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাঃ, আপনার সঙ্গে বেশিরভাগই মিলেছে দেখছি, সুগত। বইয়ের দোকান সম্পর্কে আপনার নীতিটা বেশ ভালো। আমার আজকাল বইয়ের দোকানেই এত কম যাওয়া হয় যে সেই বই নেড়েচেড়ে দেখার আনন্দ পাওয়ার আর সুযোগ হয় না।

      Delete
  11. ১। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের বই-ই পড়ে যেতে হবে, তবে ট্রিলজি পড়ব না স্ট্যান্ড অ্যালোনঃ stand alone. tomar sathe akmot. sobai J K Rowling hoy na. in fact Stephanie Meyer der sonkhyai beshie ei duniya te.
    ২। যদি কেউ বলে সারাজীবন শুধু একরকমের লেখকেরই বই পড়ে যেতে হবে, তবে পুরুষ লেখকের বই পড়ব না মহিলা লেখকেরঃ lekhok er gender niye ami least bothered.
    ৩। বই থেকে বানানো টিভি সিরিয়াল দেখব না বই থেকে বানানো সিনেমাঃ cinema. jodi na seta Sherlock ba Game of Throne level er kichu hoy. tomar kotha dhore boli, oi Byomkesh serial ta dekhlei amar mathaye khun chepe jeto. Byomkesh jehetu amar Feluda'r cheyeo onek beshi priyo tai otar erom durdosha dekhle matahr thik rakha daye. morkot marka Byomkesh. tar cheyeo osojyo Satyabati. kothakar akta bimbo dhore enechilo.
    ৪। লাইব্রেরিয়ান হতে চাই না বইয়ের দোকান দিতেঃ library. etao tomar sathe akmot. business jinis ta too much to handle.
    ৫। প্রতিদিন পাঁচ পাতা করে পড়ব না প্রতি সপ্তাহে পাঁচটা বইঃ jodi lottery jite millionaire hoi talei shudhu soptahe 5ta boi porar kotha vaba jete pare.
    ৬। আমাজন থেকে বই কিনব না বাহরিসন্‌স থেকেঃ Bahrin's ta ki kono bookshop er nam? Kolkata te highly nei. bookshop theke boi kenar mojai alada. aro beshi mojar holo college street er footpath theke purono boi kena. tobe amio haale online ei boi beshi kini. tobe amazon noy, flipkart.
    ৭। একজন লেখক আর একজন চরিত্রকে যদি লাঞ্চ বা ডিনারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাইঃ Highest of five Kuntala di. arekjon character holo, Lalmohan Ganguly. plus ini lekhok ar choritro duto criteria simultaneously satisfy korchen.
    ৮। বুককেসে আগুন লাগলে আর কেবলমাত্র একটা বইকে বাঁচানোর সুযোগ থাকলেঃ Prize/gift e pawa boi ar amar baba'r illustrate kora sob boi, esp purono Mouchak ar Kishor Bharati
    ৯। "টু রিড" লিস্টে সবথেকে বেশিদিন ধরে যে বইটা ঝুলে আছেঃ Debotatma Himalaya full series. aktai volume porechi ei porjonto.
    ১০। আমার সংগ্রহের সেরা প্রচ্ছদওয়ালা বইঃ Satyajit Ray er sonar kella sketch er molat wala purono Anandamela. ar obossoi baba'r aka boi.
    akta proshno. ei laal molat wala Sukumar samagra ta ki edited by Premendra Mitra edition?

    ReplyDelete
    Replies
    1. মেরেছে, এক্ষুনি তো মনে পড়ছে না, কুহেলি প্রেমেন্দ্র মিত্রর সম্পাদনা করা এডিশন কি না। দেখে বলতে হবে। তোমার সঙ্গে অনেকগুলো বিষয়ে একমত হয়ে দিব্যি লাগছে। আমাজন বনাম ফ্লিপকার্টে আমিও ফ্লিপকার্টের পক্ষে। তবে ইদানীং কয়েকটা বইয়ে দুজনের দামের এতই তফাৎ যে আমাজন থেকে কিনেছি। তবে অন প্রিন্সিপল, দামের তফাৎ পঞ্চাশ টাকা বা তার কম হলে আমি সবসময় ফ্লিপকার্ট থেকে কিনি। #দেশাত্মবোধ।

      বাহরিসনস-এর ব্যাপারটা আমার খোলসা করা উচিত ছিল। ওটা হচ্ছে দিল্লির একটা পুরনো এবং আইকনিক বইয়ের দোকানের নাম। বাড়ির মধ্যে একজন শিল্পীকে পাওয়ার ব্যাপারটাও তোমাকে খুব হিংসে করছি।

      Delete
  12. amar chhotobelay sona o pora je boita amar bhishon priyo (kichhuta sukumar somogro r thekeo beshi) ta holo Upendrakishore er tuntunir boi. amke ghum parano hoto sei golpo bole; ekhono bari gele luchi bhaja boita tene bar kori .. anekbar bhebechhi meyer jonyo nie asbo oke pore sonabo , tarpor abar smriti thek boltei beshi bhalo lage. Shree er kobita bola suru thas thas drum dram r katukutu buro diye..- Bratati.

    ReplyDelete
    Replies
    1. শ্রী০এর জীবনের প্রথম কবিতা সিলেকশনের জন্য তোমাকে একা উঁচু হাই ফাইভ, ব্রততী। লুচি ভাজা বইগুলো কেন যেন পুরনো বাড়িতেই ভালো লাগে। ঠাঁইনাড়া করতে ইচ্ছে হয় না। ঠিকই বলেছ।

      Delete

Post a Comment