প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে



বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ আমাদের প্রত্যক্ষদর্শী মিলনমেলার মাঠে ঢুকলেন। কত নম্বর গেট দিয়ে? সেরেছে। ওই যেটা দিয়ে ঢুকেই ডান দিকে একটা বড় নীল রঙের জলের ড্রাম রাখা আর বাঁদিকে বাঁশ বার করা কয়েকটা ফাঁকা ফাঁকা ত্রিপলের ছাউনি। প্রত্যক্ষদর্শী নিজের পিঠ চাপড়ে দিলেন। ভালোই হয়েছে দুপুরবেলা এসে। ভিড় শুরু হওয়ার আগে ঘুরে, কয়েকটা বই ট্যাঁকে পুরে পালানো যাবে। কিন্তু বিধি বাম। খালি ত্রিপলগুলো পেরিয়ে বাঁ দিকে বাঁক নিতেই  মানুষ, ধুলো, বই, প্যান্ডেল, মাইক, জলের বোতল, এগরোলের গন্ধওয়ালা ভিড় তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।

প্রত্যক্ষদর্শী নিজেকে দমে যেতে দিলেন না। মেলায় যদি ভিড় না হয় তাহলে সেটা আবার মেলা কীসের? সুনীল গাঙ্গুলীর একটা কথা মনে পড়ে গেল তাঁর। বইমেলায় বেনফিশের দোকান থাকা উচিত কি উচিত না সে প্রশ্ন নিয়ে কেউ একজন সুনীলের কাছে গিয়েছিল। সুনীল বলেছিলেন, অবশ্যই থাকা উচিত। শুধু বেনফিশ কেন, নাগরদোলাও থাকা উচিত।  জিনিসটার নাম মেলা দেওয়া হয়েছে যখন। 

কথাটা মনে পড়ে প্রত্যক্ষদর্শীর মেজাজ ফুরফুরে হয়ে গেল। ভিড়ের মধ্য দিয়ে তিনি হেঁটে চললেন। ভ্রাম্যমান কবিতার দোকান, ফুড কোর্ট, গিল্ড প্যাভেলিয়ন, লিটল ম্যাগাজিনের তাঁবু। তাঁবুর জায়গাটা দ্রুত পা চালিয়ে পেরিয়ে এলেন প্রত্যক্ষদর্শী। এক্ষুনি বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা এসে ধরবে। আমাদের পত্রিকাটা দেখুন। নিতে হবে না, জাস্ট দেখুন। প্রত্যক্ষদর্শী নরম মনের মানুষ। যদিও দেখতেই বলা হয়েছে, তবু দেখে ফেরৎ দিতে খারাপ লাগে। কিনে নেওয়া যায়, কিন্তু বাড়িতে রাখার জায়গা নেই। লেখাগুলো পদস্থ হলে তবু একটা কথা ছিল। গিল্ড প্যাভেলিয়নের সামনে একটা জটলা চোখে পড়ল। জটলার মধ্যে একজন মানুষ বিশেষ করে চোখে পড়লেন। তিনি যদিও জটলার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে তিনি জটলার অংশ নন। তাঁকে ঘিরে জটলা। প্রত্যক্ষদর্শী একবার থেমে ভালো করে তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলেন। নাঃ, চেনা নয়। নতুন যুগের তারকা।

হঠাৎ ঠাণ্ডায় গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল প্রত্যক্ষদর্শীর।  পশ্চিমের সারির স্টলগুলোর ওপারে সূর্য নেমে গেছে। এবার যা কেনার কিনে বাড়ি ফেরা যাক। নিজের জন্য তেমন কিছু কেনার নেই। গোটা চারেক চেনা বাচ্চা আছে, তাদের জন্য কয়েকটা বই কিনবেন প্রত্যক্ষদর্শী। এতক্ষণ উদ্দেশ্যহীন হাঁটছিলেন, এবার দোকানের নাম খেয়াল করে চলতে শুরু করলেন।

একটু এগোতেই চোখে পড়ল। রঙিন প্যান্ডেলের মাথায় চেনা ছাঁদের অক্ষরে চেনা নাম। উঁচু চৌকাঠ পেরিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ভেতরে ঢুকলেন। চারদিকে টানা টেবিলে, দেওয়ালের র‍্যাকে, ধুলোধূসরিত সবুজ কার্পেটের ওপর দ্বীপের মতো ছোট ছোট সাজানো টেবিলে বই। পঞ্চতন্ত্র, রাশিয়ান রূপকথা, মনীষীদের জীবনী, রামায়ণ মহাভারত, হাঁদাভোঁদা।

প্রত্যক্ষদর্শী খুশি হলেন। এগিয়ে গেলেন বইয়ের দিকে। নাড়তেচাড়তে হঠাৎ একটা বইয়ের দিকে নজর পড়ল। কথাসরিৎ সাগর। বছর তিরিশ আগে এই বইটা তিনি কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন না? বইমেলা থেকেই কি? উঁহু। কলেজ স্ট্রিট থেকেই হবে। তখন বইমেলার অত চল হয়নি। আর তাছাড়া কলেজ স্ট্রিটে কমিশনও বেশি। বইটার দিকে সবে হাত বাড়িয়েছেন তিনি, এমন সময় একটা আচমকা ধাক্কায় তাঁর ভারসাম্য টলে গেল। টেবিলের কোণ ধরে কোনওমতে নিজেকে সামলে নিলেন প্রত্যক্ষদর্শী।

সাত আট বছরের একটা বাচ্চা ছেলে। বেশ জোরে দৌড়ে এসে টেবিলের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। এসেই বই ঘাঁটতে শুরু করেছে, সাজানো বইগুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শী বিরক্ত হলেন। দুষ্টু বাচ্চা কোনওদিনই  তাঁর ধাতে সয় না। ছেলেটার থেকে দূরত্ব সামান্য বাড়াতে যাবেন এমন সময় একটা হাত এসে বাচ্চাটার কাঁধের ওপর পড়ল। খয়েরি রঙের চকচকে নেলপালিশ উদ্বেগে কাঁপছে।

বাবু! কতবার বলেছি সঙ্গে সঙ্গে থাকবে?”

অল্পবয়সী মহিলা। ঠোঁটে নখের সঙ্গে মেলানো রং, চোখে সানগ্লাস। এক হাতে বাবুকে সামলে অন্য হাত দিয়ে সানগ্লাসটা মাথার ওপর ঠেলে দিলেন। ফাঁপানো চুলে বাদামি হাইলাইট।

বাবু একটা বই মায়ের দিকে তুলে ধরল।

এটা কিনে দাও।

এই সময় দৃশ্যে একজন পুরুষের আবির্ভাব ঘটল।  এঁর চেহারা মহিলার মতো চকচকে নয়।  লম্বায় সাড়ে পাঁচ ফুটের কম, মাথার চুল প্রায় ফাঁকা, উইকএন্ডের বিয়ারের বদভ্যেস টি শার্ট ঠেলে বেরিয়ে এসেছে। হাঁটু আর গোড়ালির মাঝামাঝি এসে শেষ হয়েছে খাকি রঙের প্যান্ট। প্যান্টের পকেটে আলতো করে গোঁজা মোটা বেঁটে আঙুলে রুপোয় বাঁধানো পাথরের আংটি। একটা, দুটো। ওহ্‌, তিনটে! নিশ্চয় বিশ্বাস করে না। প্রিয়জনের উপরোধে ধারণ করেছে। লাভ না হতে পারে, ক্ষতি তো নেই।

এটা তুমি বুঝবে না, বাবু। এটা বাংলায় লেখা।”  মহিলা বললেন।

বুঝতে পারব, কিনে দাও না।

খয়েরি রঙের আঙুলগুলো বাবুর হাত থেকে বইটা নিয়ে টেবিলের ওপর রেখে দিল। যেখানে ছিল ঠিক সেখানে নয়, একটু পাশে, তেরছা হয়ে পড়ল বইটা। আরেকটা বাংলায় লেখা বইয়ের ওপর। কাউন্টারের ওপাশে দাঁড়ানো ভদ্রলোক ঘটনাটা দেখলেন, কিন্তু বইটা তুলে নিয়ে ঠিক জায়গায় রাখার কোনও উদ্যোগ দেখালেন না।

বিয়ার ভুঁড়ি এগিয়ে এল। স্বামীস্ত্রীর চেহারায় কোনও মিলই নেই। মনের কিংবা শরীরের মিল আছে কি না সেটা প্রত্যক্ষদর্শীর পক্ষে বোঝা অসম্ভব। কিন্তু যেটা বোঝা সম্ভব, এবং যেটা তিনি বুঝতেও পারলেন সেটা হচ্ছে বাবুকে মানুষ করার ব্যাপারে এঁদের বোঝাপড়া মসৃণ। ব্যাড কপ যখন সুবিধে করতে পারবে না, তখন গুড কপ সিনে ঢুকবে।

বাবা বাবুর মাথায় হাত রেখে বললেন, “পাশের দোকানে চল, ওখানে ইংরিজি বই আছে। কিনে দেব।

না, আমার এটাই চাই।বাবু নির্ঘাত এক সন্তান।

ওখানে গিয়ে তোমরা কিছু দেবে না। আমি জানি। এটা কিনে দাও, আমি বুঝতে পারব।মায়ের হাত গলে দ্রুত শরীর বেঁকিয়ে টেবিল থেকে বইটা আবার তুলে নিল বাবু।

গুড কপ ব্যাড কপের দিকে তাকালেন। দৃষ্টিতে হাত তুলে দেওয়ার ভঙ্গি। ব্যাড কপ এগিয়ে এলেন। বাবুর হাত থেকে  বইটা কেড়ে নিয়ে এবার বেশ জোরের সঙ্গে টেবিলের ওপর ছুঁড়ে দিলেন তিনি কাউন্টারের ওপারের ভদ্রলোক একটা বিকট হাঁ করে হাই তুললেন। পান খাওয়া দাঁতগুলো স্পষ্ট দেখা  গেল। প্রত্যক্ষদর্শী চোখ ফিরিয়ে নিলেন। নোংরা দাঁত তিনি সহ্য করতে পারেন না।

বাবুর কাঁধে চেপে বসা নেলপালিশে এখন উদ্বেগের বদলে নিয়ন্ত্রণ। বাবু যতই তৎপর হোক না কেন আর পালাতে পারবে না। চোরপুলিশের টিম দোকান থেকে বেরিয়ে গেল। কোথায় গেল? প্রত্যক্ষদর্শী দোকানের ভেতরেই রয়ে গেলেন, কাজেই তিনি দেখতে পেলেন না। দোকানের বাইরেই রুপোলি কাগজের একটা এঁটো প্লেট পড়ে ছিল। গোড়ালি-ফাটানো হাওয়ায় সেটা উড়তে উড়তে ওদের পেছন পেছন গেল। হয়তো দেখতে যে বাবুর বাবামা বাবুকে দেওয়া কথা রাখলেন কি না। বাংলা বইয়ের দোকান থেকে বেরিয়ে বাবুর বোধগম্য ভাষার বইয়ের দোকানে ঢুকলেন কি না।

হয়তো ঢুকলেন। ইন ফ্যাক্ট, আমি নিশ্চিত ঢুকলেন। কারণ বই যে বাচ্চার বিকাশের পক্ষে জরুরি এই খবরটা বাবুর বাবামা জানেন না এটা হতে পারে না। না হলে তারা বাবুকে নিয়ে এতদূর ঠেঙিয়ে বইমেলা দেখাতে আসতেন না। তাঁরা শুনেছেন, বই শিশুর বিকাশের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি। বইয়ের পাতার ওপর সারি সারি কালো কালো যে শব্দগুলো শুয়ে থাকে সেগুলো নাকি পড়ার সময় শিশুর চোখ দিয়ে শরীরের ভেতর ঢুকে পড়ে। রক্তের সঙ্গে সঙ্গে ছোটে। চুলের ডগা থেকে পায়ের নখে, ব্রেন থেকে বুকে, পেটে পিঠে, লিভারে কিডনিতে পুষ্টি যোগায়। ইনফরমেশন। নলেজ। মার্কস।

আর সেজন্যই তাঁরা এত সচেতন। বই নিয়ে, বইয়ের ভাষা নিয়ে। ভালো ভালো বই বেছে দেবেন তাঁরা বাবুর জন্য। তাঁদের প্রেশাস বেবির জন্য। শক্তিশালী বই। শক্তিশালী ভাষার বই। যে ভাষার শব্দরা বাবুকে তাগদ জোগাবে। বাবুর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে বাবুকে স্ট্রং, স্ট্রংগার, স্ট্রংগেস্ট বানাবে। দুনিয়ার যত শালারা বাবুর ভালো দেখতে পারে না, বাবুর উন্নতি দেখে যাদের চোখ টাটায়, চান্স পেলেই বাবুকে লেঙ্গি মারার জন্য যারা ঘাপটি মেরে বসে আছে স্কুল, কলেজে, ম্যানেজমেন্টের স্কুলের দরজা আটকে, চাকরির ইন্টারভিউর প্যানেলে কোট টাই বেঁধে, শক্তিশালী শব্দের ঢাল তরোয়াল নিয়ে তাদের সঙ্গে সঙ্গে যুঝতে যুঝতে জীবনের পথে এগিয়ে যাবে বাবু। স্ট্রং, সাকসেসফুল। যেগুলো বাবুর মাবাবা কোনওদিন হতে পারেননি।

অন্তত স্বপ্ন দেখতে তো ক্ষতি নেই।

     

Comments

  1. Replies
    1. হ্যাঁ, মন খারাপ হয় বৈকি, তিন্নি।

      Delete
  2. "Jegulo babur baba ma konodin hote parenni": nishondehe dukkojonok.
    Bratati

    ReplyDelete
    Replies
    1. আগে আমার রাগ হত, ব্রততী। তারপর মনে হল হয়তো গোটাটাই সন্তানের ভালো চেয়ে। তবে কতটা ভালো হবে সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ এখনও পুরোমাত্রায় বর্তমান।

      Delete
    2. sondeho amaro puromatray bortoman... amar sudhu monehoy erokom korle bachchara to consciously chinta korbe konta bhalo laga uchit r konta noy, tader sotyikarer bhalo laga bole to kichhu thakbe na..ei bishoy ta ki sudhu bangali der modhyei beshi naki janina...
      Bratati.

      Delete
    3. ekta jinish ami kolkatar baire theke shikhecchi j amra bangali ra boi k joto ta bhalobashi shob bhashabhashira totota bashe na, aar amar mone hoy boi er khetre, banglai english k ato ta competition dite pare, onno bhashar literrary background ato paka noy, tai amader khetrei ei tulona ta eshe jay bangla boi aar english boi, onno bhashay, unnotir jonno shudhui english boi...ami bhul o hote pari, eta just observation...lekha ta shotti e mon kharap kore day, ami nije english medium e porashona korecchi kintu robindronath theke shuchitra bhottachorjo, Shuktara, anondomela chhara chotobela bhabtei parina....shomoy ki shotti e ato bodle gacche...

      Delete
    4. সময় অবশ্য বদলানোই ভালো, কিন্তু আমাদের পছন্দমতো কায়দায় না বদলালে একটু মনখারাপ হয়, এই যা।

      Delete
  3. barite bangla ar school e english sone bole bacchar language sikhte osubidhe.. tai bariteo baba maa nijeder modhye english bolen emon o hoy.. bideshe noy.. edesher kothai bolchi.. age obak hotam.. ekhon hoina... ekhon chena chobi..chena shona onek loker songe mil.. tobe dukkho hoy boi ki.. feludar golpo english e pore dekhecho Kuntala di? oboshyoi amar bangla ta age pora chilo.. jader porte hoy tader jonno kharap lage.. Chandril er ei haha hihi hoho boi ta porechi.. je bochor berolo kinechilam..

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, সন্তানের ভালোর জন্য বাবামা বাড়িতে ইংরিজিতে কথা বলে শুনলে আমার একটাই ভয় হয়, ঊর্মি। যে বাবামা নিজেরা ইংরিজিটা কেমন বলেন। তাঁদের যদি "ইউ নো" আর "লাইক" অবধি দৌড় হয়, তাহলেই তো চিত্তির।

      চন্দ্রিলের লেখাগুলো আলাদা আলাদা ভাবে পড়েছিলাম, বই আকারে এই প্রথম।

      Delete
  4. esob bap me er adikhyeta dekhle rage amar ga pitti chirbir kore jolte thake. jotosob ordhoshikkhito bhuiphor boroloker dol. ei baccha gulo na bangla shikhbe, na english shikhbe. notun generation er english dekhle amar choti chhure marte icche kore hotovaga der. ar amra jeno sob bangla pore gobet chasha toiri hoyechi. amra bangali rai bodhoy akmatro indian community jara nijeder bhasha niye ato lojjito. othocho bangla indian sob bhashar modhye sobcheye somriddho bhasha.
    ki odvut coincidence. ajkei sokale pokaye kata duto mouchak er badhano copy fele dite holo bole dukkhe amar chole jol ese gechilo.

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই ব্যাপারে আমি তোমাকে গ্যারান্টি দিতে পারি কুহেলি। একমাত্র না হলেও, আমরা বাঙালিরাই অন্যতম ইন্ডিয়ান কমিউনিটি যারা ছোটরা কেন বাংলা শিখছে না সে নিয়ে এখনও নিয়মিত হাহুতাশ চালিয়ে যাচ্ছি। বাকিরা ওসব ঝেড়েকেটে বেরিয়ে গেছে বহুদিন হল।

      Delete
    2. Maante parlam na. Tamilnadu aar kerala (Evan Karnataka, moter upor south india) r lokeder sange tomar tamon aalaap hoini bodhhoy.

      Delete
    3. আমার দিল্লির দক্ষিণপূর্ব, পাঞ্জাবের উত্তরমধ্যম, হরিয়ানার পশ্চিমদক্ষিণ, রাজস্থানের খাপছাড়া কিছু অঞ্চল, তাছাড়াও বিহার উড়িষ্যা আসাম ত্রিপুরার পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণের কিছু লোকের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, চন্দ্রচূড়। তবে আপনি যে রাজ্যগুলোর কথা বললেন, সে রাজ্যের লোকদের সঙ্গে হয়নি, স্বীকার করছি। এবার সে খামতিটা মিটিয়ে নেব। অনেক ধন্যবাদ।

      Delete
  5. Ami probashi, Bangla'r baire manush, convent e porashuno ... shudhu boi porte parbo bole nije nije Bangla porte shikhechi Ma kakima der dhore dhore. Ekhono afsosh hoye lekhata shikhini bole. Bacchar bhalor jonne onek shomoye bacchar icche ta o jodi baba ma era dekhto tate bacchar bhaloi hoye bujhto. Cheleta toh boi ekta cheye chilo, kono video game toh noye.
    Btw ... ebaar boi mela bayrate eshechi.
    Sharmila

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে শর্মিলা, তুমি কলকাতায় এখন? ভেরি গুড। বইমেলা ঘুরলে? একটা পোস্ট লিখবে নাকি সেটা নিয়ে?

      Delete
  6. good cop bad cop er upama ta darun dile,....kintu sotyi ki etota bhodami keu korbe?(er cheye kharap gali ekhane lekha jabe na)...mane boi to boi e,obossoi bhalo engriji boi o obbossoi pora uchit,jemon engriji te tintin guloi to roeche...bangla galper boi theke durrotto toiri kora..sotyi ki keu eta korbe,,,hoyto korbe..amrai to boli..hehe ei je ini amar mrs...amar husband oi je..bou..bor shabdo gulo bolte lojja pai,pache keu kichu bhabe..boubhat keo sobai ojana karone sobai reception bolche..jas sala..kar reception...

    tomar ei bangarthe lekhata khub bhalo..laglo,,besh kose chabuk kosale didibhai...besh korecho...ei chabuk amader khawai uchit..

    prosenjit

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই ঘটনাটা কিন্তু একেবারেই সত্যি, প্রসেনজিৎ। মানে আগেপিছের ওই নীল ড্রাম আর এঁটো থালা আমার কল্পনা, কিন্তু কথাবার্তা যা হয়েছে সব প্রত্যক্ষদর্শীর নিজের কানে শোনা।

      Delete
  7. ami erom baba mader anek real life example dekhechhi. dekhlei birakto lage. protibad kore ba bojhate gele kono labh hoy na jodio eder

    ReplyDelete
    Replies
    1. না না, ছেলেপিলে মানুষ নিয়ে বাবামাদের না বোঝাতে যাওয়াই ভালো, চুপকথা।

      Delete
    2. তবে অনেক দেখে আবিস্কার করেছি এই ব্যাপারটা primarily পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাই করে থাকেন। আমেরিকায় বসবাসকারী আমার দেখা সব বাংলাদেশী ছেলে মেয়েই কিন্তু ফ্লুয়েন্টলি বাংলায় কথা বলতে পারে আর লিখতেও পারে। এদের বাবা মায়েরা রীতিমতন টিচার রেখে এদের বাংলা শেখান। পশিমবঙ্গের প্রবাসী বাঙালিদের ছেলেমেয়েরা বাংলা বলতেও নারাজ।

      Delete
    3. পশ্চিমবঙ্গে থাকা অনেক বাঙালি বাবামাও নারাজ, চুপকথা। আমার চেনা বাচ্চাদের ইংরিজি ডাকনাম রাখা হচ্ছে। মুদির দোকানে দেখেছি তাঁরা বাচ্চাদের সঙ্গে ইংরিজিতে কথা বলছেন। গো। সিট। স্ট্যান্ড। ফেচ।

      Delete
    4. অন্বেষা সেনগুপ্তFebruary 10, 2016 at 5:28 PM

      খাইসে |" গো। সিট। স্ট্যান্ড। ফেচ।" তো কুকুরটুকুরকে বলা হয়ে থাকে জানি| আজকাল মানুষের ছানাও এ ভাষা শিখছে?? সব্বোনাশ|

      Delete
  8. লেখাটা খুব ভালো লাগলো | প্রবাসী বাঙালিদের বাংলায় এলার্জি নিয়ে আমার একটি রম্যরচনা সম্প্রতি দেশ পত্রিকায় মনোনীত হয়েছে | কবে প্রকাশিত হবে জানি না | লেখাটার মূল ভাবের সাথে তোমার এই লেখাটার খুব মিল, তাই তোমায় জানালাম |

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে কনগ্র্যাচুলেশনস, তিলকমামা। কোন সংখ্যায় বেরোলো জানিও, কিনে পড়ব।

      Delete
  9. Valo laglo... tobe pun tay ar ektu khawyer jorda hole jomto beshi....

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, প্রতীক।

      Delete
  10. Replies
    1. ধন্যবাদ, অনির্বাণ।

      Delete
  11. "God save us from people who mean well" Vikram Seth
    "Most of the evil in this world is done by people with good intentions" TS Eliot

    ReplyDelete
    Replies
    1. এক্কেবারে, শম্পা।

      Delete
  12. অন্বেষা সেনগুপ্তFebruary 9, 2016 at 2:23 AM

    ইসস, সবে বইমেলা শেষ হল তো, লেখাটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল ফের :(

    এমনিতে বইমেলার শেষ দিনে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়নি আগে| এবারে গিয়ে মনে হল গোটা কলকাতা নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গটাই বুঝি ঝাঁপিয়ে পড়েছে ওই এক দিন বইমেলার সমস্ত আনন্দটুকু শুষে নেবে বলে| অতি অবশ্যই, এঁদের সকলে বই কেনেন না| হয়তো, বই পড়েনও না| কিন্তু বইমেলায় আসেন| দু-চারটে ফ্রি প্যামফ্লেট, টুপি, ক্যালেন্ডারে হাত বোঝাই করেন, মাছের চপ, বিরিয়ানি, আরামবাগস চিকেনের সদগতি করে সামাজিক কর্তব্য সম্পাদন করেন| তাঁদের ঠেলায় হাঁটাই দায়| ঘণ্টাদেড়েক ঘোরাঘুরি করে বুঝলাম এই বিপুল জনতরঙ্গের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বইয়ের স্টলে বই দেখা বা কেনা আমাদের কর্ম নয়, অতএব এক প্লেট টার্কি কাবাব নিয়ে জুত করে বসে ভীড় দেখতে লাগলাম|
    অনিচ্ছুক বাচ্চার হাত পাকড়ে মা-বাবা(কখনো উল্টোটাও), প্রথম-শাড়ি-পরে-বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে-আসা তরুণী, গিটার হাতে লিটল ম্যাগাজিনের দল, বইয়ের ভারে বেঁকে যাওয়া পিঠের মধ্যবয়স্ক, তাঁতের শাড়ি, ধ্যাবড়ানো কাজল আর ডোকরার গয়না বা পঞ্জিকা-প্রিন্টের পাঞ্জাবী পরা আঁতেল – কে নেই সেই ভীড়ে! মাইকে বাজছে বইমেলার থিম সং, উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে সবাই যেন অন্তত একটা করে বই কেনেন, বা ‘জাগো বাংলা স্টলের সামনে বাউল গানের আসর থেকে একটি চার বছরের বাচ্চা হারিয়ে গেছে, তাকে গিল্ড অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে, সে নিজের নাম বলতে পারছে না, যার বাচ্চা তিনি উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে বাচ্চাকে নিয়ে যান’( দুচ্ছাই, প্রমাণ দেখাতে কি করতে হবে, ডি এন এ টেস্ট?), ঘোষণা করা হচ্ছে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সমাপ্তি অনুষ্ঠান শুরু হতে চলেছে, আর এ সব ছাপিয়ে বড় গোলাম আলির কণ্ঠে, বুক মুচড়িয়ে বাজছে – 'ক্যা করু সজনি, আয়ে না বালম|’ বাতাসে মেয়ে-বিদায়ের সানাই, আসছে বছর আবার হবে|

    ReplyDelete
    Replies
    1. চমৎকার লিখেছেন, অন্বেষা। আপনার চোখ দিয়ে বইমেলাটা স্পষ্ট দেখানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

      Delete
    2. অন্বেষা সেনগুপ্তFebruary 9, 2016 at 5:46 PM

      মচত্কার হয়েছে বলছেন ?? থ্যাঙ্ক ইউ, থ্যাঙ্ক ইউ :)

      Delete
  13. issshhh.. babur jonno boddo mon kharap holo..

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমার সঙ্গে আপনার মনের ভাব একেবারে মিলে গেছে, ইন্দ্রাণী।

      Delete
  14. Babu ar tar baba ma, sobar jonyei dukhyo holo. baba ma erao ki ektu obosthar swikar?
    R boimela sutro dhore arekta khabor dite ichhe korlo.. Boimela theke kena "Abantor" amar ma r meye ke prothom "Abantor" nije porar swad diechhilo. ekhon shunlam konye amar google blog e "Abantor" pore... amake khabor dichhilo tomar lekhar ki ki tar bhalo lage.. r dhorao pore galo Internet search kore sudhu Project work hoina aro onek kichhuo hoi.. mone mone ektu khusi o hoechhi ekhane swikar kore gelam.

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাবামারা তো অবস্থার শিকার বটেই, ইচ্ছাডানা। আমার নিজের মনে হয়, অবস্থাটা তাঁরা যতটা ঘোরালো বলে মনে করেন, ততটা হয়তো নয়। কিন্তু নিজের সন্তানের ক্ষেত্রে সব সর্দিকাশিকেই টারমিনাল নিউমোনিয়া বলে বোধ হয়, কাজেই বাংলা পড়েও ইংরিজি শেখার সম্ভাবনা যে শূন্য দেখাবে তাতে সন্দেহ নেই। এ জন্য আমি তাঁদের দোষ দিচ্ছি না। আমি নিজে হলে কী করতাম তাও যখন জানি না।

      আপনার খবরটা পেয়ে দারুণ দারুণ দারুণ লাগল, ইচ্ছাডানা। আপনি যত খুশি হয়েছেন, আমি তার থেকেও বেশি খুশি হয়েছি বলাই বাহুল্য। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  15. Boddo bhalo likhecho Kuntala Di , mon Kharap holo, oi bababutio boro hoye omni baba-ma holei (jeta howar sombhabona khubi probol) chittir--PB

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, প্রদীপ্ত।

      Delete
  16. চাবুক হয়েছে। :) খুব কষ্ট হলেও এই কথাটা দিনে দিনে সত্যি হয়ে যাচ্ছে মনে হয়ঃ
    “এটা তুমি বুঝবে না, বাবু। এটা বাংলায় লেখা।” মহিলা বললেন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. যে রেটে সাধনা চলছে, সিদ্ধিলাভ না হয়ে যায় না, অরিজিত।

      Delete
  17. Ami Tuktuk er jonno rashi rashi Bangla boi kinechhi ebong kini. Kintu she sab boi pore shonate gelei se Ekta English boi tule ane. Ek matro batikrom Panta buri, tutu bhutu ar tuntunir boi. Ei kata boite baro baro chhobi achhe. Kheerer putul, bhombal Sardar, sadashib esab na porei jodi Amar meyeta baro hoye jai Seta Amar sabcheye baro bhoi. Protyeker chhana Manush korar process alada kintu ami anek cheyeo, anek cheshta Koreo Amar meyeke bangla boi porate parchhi na.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমার একটা ব্যক্তিগত বিশ্বাস আছে, রুচিরা। শিকড় থেকে যত দূরে যাবে, শিকড়ের ভাষা শেখা তত শক্ত হবে। এর ব্যতিক্রম আমি দেখিনি। তবু তুমি চেষ্টা করছ জেনে ভালো লাগল।

      Delete
  18. আপনার লেখাটা পড়ে শিউরে উঠলাম। ভবিষ্যত ভেবে।
    তবে এই লোকের হাতে ১০টা আংটি থাকার কথা - এরকম রাক্ষস প্রজাতির হাতে।

    আর “এটা তুমি বুঝবে না, বাবু। এটা বাংলায় লেখা।” শুনতে হলেও লালমাটিতে গিয়ে ময়ূখ চৌধুরী সমগ্র কেনা বাচ্চাও দেখেছি। সেটাই আশার কথা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সে তো থাকেই, কৌশিক। বই চিরকালই কম লোকে পড়ে। বুড়ো বাঙালিরাও যে গোগ্রাসে বাংলা বই (বা যে কোনও ভাষার বই) পড়ত বা পড়ছে তেমন তো নয়। নতুন যে ব্যাপারটা হয়েছে সেটা হচ্ছে সক্রিয়ভাবে বাংলা বই না পড়ানোর ব্যাপারটা। দেখা যাক জল কোনদিকে গড়ায়।

      Delete
  19. এ হে এই লেখাটা কি করে জানি মিস হয়ে গেসল। বেশ হয়েছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, অনির্বাণ।

      Delete

Post a Comment