নাটক দেখতে গিয়ে
আমাদের বাইরে খাওয়ার পাট একেবারেই চুকেছে। ডাক্তার বলেছেন মাসখানেক রেস্ট্রিকশনে থাকলেই যথেষ্ট, বাড়ির লোকেরা বলেছে অন্তত ছ’মাস, আর আমাদের বাড়িওয়ালা, যিনি আমাদের উল্টোদিকেই থাকেন এবং আমাদের দরজার সামনে পিৎজা আর ডোনার আর চিকেন চাউমিন আর বিরিয়ানির লাইন দেখে শিউরে শিউরে ওঠেন (উঠতেন এতদিন), তিনি বলেছেন সা-রা-জী-ব-ন।
সারাজীবন এইরকম খাবে, কুন্তলা। ওকে তো খাওয়াবেই, নিজেও খাবে। তারপর দেখবে তোমার স্কিন কত ভালো হয়ে গেছে, চুল কত কালো হয়ে গেছে . . .
সেসব হবে কি না সেটা পরীক্ষার বিষয়, তবে কয়েকটা বদল অলরেডি ঘটেছে। এক, আমি ডালভাত চচ্চড়ি (তাও আবার তেল ছাড়া) রান্নায় একেবারে দ্রৌপদী হয়ে উঠেছি। এবং রান্না ব্যাপারটা যে কত সোজা সেটা আবিষ্কার করে চমকে গেছি। অফিস থেকে এসে রান্না করতে হবে জানলে আগে মনে হত মরেটরেও যেতে পারি, এখন দেখছি সে সব করেও সি আই ডি, মাস্টারশেফ দেখতে দেখতে খেয়ে, সানডে সাসপেন্স শুনতে শুনতে ঘুমোনোর শক্তি দিব্যি বাকি থাকে। এটা আমার মায়ের আরেকটা কথা প্রমাণ করে। গায়ে খাটা পরিশ্রমের ক্ষেত্রে আমাদের শরীর সত্যি সত্যিই মহাশয়, যতখানি সওয়াবে ততখানিই সয়।
দুই, এখন আমরা নিয়মিত টিফিন নিয়ে অফিস যাচ্ছি। সকালে যখন সবথেকে বড় বাক্সটোয় রুটি, মাঝারিটায় তরকারি আর সবথেকে ছোট বাক্সটায় আঙুর ঠেসেঠুসে পুরি, তখন দুপুরবেলা সে সব ভালো ভালো জিনিস খাব ভেবে আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে একটা আলতো দুঃখও হয়। বাবামায়ের জীবনগুলোর থেকে যতখানি দূরে যাব ভেবেছিলাম, ঠিক ততখানিই তাঁদের মতো রয়ে গেছি।
তিন, গত তিনবছরে আমরা দুজনে মিলে যা খেয়েছি তার ডবল ফল খেয়েছি গত দেড়মাসে। কমলালেবু, কলা, পেয়ারা, আঙুর, বেদানা, আপেল, সবেদা, পেঁপে, কুল। (এই শেষ তিনটেয় আমি নেই)। ইন ফ্যাক্ট, এই ফল দেখেই আমার বাড়িওয়ালা
প্রথম ধরে ফেললেন যে গুরুতর কিছু একটা ঘটেছে। আমি সিঁড়ি দিয়ে উঠছি, উনি নামছেন, ওঁর মুখটা সবে হাসিহাসি হয়ে উঠেছে এমন সময় ওঁর দৃষ্টি আমার মুখ থেকে সরে আমার হাতের প্লাস্টিকের দিকে গেল। যার ভেতর ঘটের মতো বসে আছে একখানা সবুজহলুদ পেঁপে। অমনি হাসিকে কনুই মেরে সরিয়ে আতংক এসে জায়গা নিল। কী হয়েছে? হঠাৎ ফল খাচ্ছ? তখন বলতেই হল। অবশ্য ফল খেতে আমাদের খারাপ লাগছে না। আগে যে কেন খেতাম না সেটা ভেবে অবাক হচ্ছি।
মায়েরা তো বলার কোনও কসুর রাখেননি।
কিন্তু সবথেকে বড় যে বদলটা ঘটেছে সেটার কথা
গোড়াতেই বললাম। আমাদের বাইরে খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। তবে দুঃখের ঝোঁকটা যত না ‘খাওয়া’য়, তার থেকে বেশি ‘বাইরে’ শব্দটার ওপর। কারণ হোম ডেলিভারিও বন্ধ হয়েছে, কিন্তু সেটা বিশেষ গায়ে লাগছে না। আমাদের পাশের পাড়ায় খিদমৎ বলে একটি মোগলাই রেস্টোর্যান্ট আছে। ধ্রুপদী দোকান। সর্বাঙ্গ দিয়ে রেসপেক্টেবিলিটি চুঁইয়ে পড়ছে। গাঢ় রঙের ফাঁপানো সিটের সোফা, টেবিলের ওপর টুপির মতো ভাঁজ করা ধপধপে সাদা মোটা কাপড়ের ইস্তিরি করা রুমাল। যাঁরা সবুজসাদা ইউনিফর্ম পরে দুহাত জড়ো করে আমাদের টেবিলের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা এটিকেট ক্লাসে হেসেখেলে আমাদের থেকে বেশি নম্বর পাবেন। সত্যি বলতে তাঁদের মুখের দিকে তাকালে আমার বেশ ভয়ই লাগে। কিন্তু মাসে দু’বার খিদমৎ-এর বিরিয়ানি না খেলে অর্চিষ্মানের মন খারাপ হয়। তখনও হত, এখনও হচ্ছে। তাই আমরা তখন বাড়িতে বিরিয়ানি আনাতাম। ময়দার লেই দিয়ে মুখ আঁটা মেটে হাঁড়ির ঢাকা খুললে যে সুবাস ছড়াত তা ভাষায় বর্ণনা করার দুঃসাহস আমার নেই। সে সুগন্ধ আমাদের নাকে আসেনি বহুদিন। এদিকে রোজ দুজনের ফোনে মেসেজ আসছে। খিদমৎ-এর চব্বিশ বছর বয়স হল, সেই উপলক্ষ্যে চব্বিশ শতাংশ ছাড়। দীর্ঘশ্বাস চেপে মেসেজ ডিলিট করে দিচ্ছি। কষ্ট হচ্ছে, তবে বেশি নয়। তার থেকে ঢের বেশি কষ্ট হচ্ছে কফি শপে গিয়ে মুখোমুখি বসে বিশ্রী তেতো আর আধঠাণ্ডা কফিতে চুমুক না দিতে পারার জন্য।
কিন্তু বাইরে যেতে অসুবিধেটা কোথায়? এমন সুন্দর শহর, এমন সুন্দর আবহাওয়া, এমন সুন্দর ক্লাসিকাল জলসার সিজন? গানবাজনা শুনতে না ইচ্ছে করে শহরের শ’খানেক ভাঙাচোরা প্রাসাদের একটায় গিয়ে ঘোরাঘুরি করা যায়, ছবি তোলা যায়, আর্ট একজিবিশন, মিউজিয়ামে গিয়ে টাইমপাস কর। বাইরে খাওয়ার তুলনায় এসব বিনোদনে পয়সাও লাগে যৎসামান্য। কিন্তু আমরা ওসবের কিছুই করি না। কারণ বাইরে খেতে গিয়ে যে বিনোদন সেটা পকেটের দিক থেকে ভারি হলেও মগজের দিক থেকে ভীষণ সোজা। আর মগজ খরচ করা পয়সা খরচ করার থেকে অনেক শক্ত কাজ। আমার মাতামহ বলতেন, "সাত হাত মাটি কাটতে রাজি হয়, সাত পাতা পড়তে রাজি হয় না"।
বাড়িতে বসে থেকে থেকে শেষটা এমন অবস্থা হল যে হাতের কাছে "আইনের চোখে নারী"মার্কা সেমিনারও যদি পাই তো গিয়ে বসে শুনি। আর কী ভাগ্য, তক্ষুনি ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার বার্ষিক ভারত রঙ্গ মহোৎসব শুরু হল। প্রতি বছরই হয়। সারা ভারত থেকে নাটকের দল আসে। আমরা খুঁজে খুঁজে বাংলা নাটকগুলো বার করলাম (মগজ দরকারের বেশি খরচ করা চলবে না)। তার মধ্যে থেকেও ঝেড়েবেছে দু'জন সেলিব্রিটির নাটক পছন্দ করা হল। কৌশিক সেনের আন্তিগোনে আর ব্রাত্য বসুর বোমা।
আন্তিগোনের গল্প সকলেই জানেন। থেবস দেশের রাজা অওদিপাউস। তাঁর দুই ছেলে, ইতিওক্লিস আর পলিনাইসিস, আর দুই মেয়ে, আন্তিগোনে আর ইসমেনে। দেবতাদের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি করে অজান্তে নিজের পিতাকে হত্যা করে, নিজের মায়ের গর্ভে সন্তান উৎপাদন করে, শেষে এই সব ভয়ানক সত্য উদ্ঘাটন করে নিজেই নিজের চোখ অন্ধ করে অওদিপাউস থেবস ছেড়ে চলে গেলেন। অমনি রাজপুত্রদের নজর খালি সিংহাসনের ওপর পড়ল। মারামারি বাধল। মারামারিতে নিজেরাই নিজেদের হত্যা করলেন। থেবস-এর হাড় জুড়োল। সিংহাসনে বসলেন রাজপুত্র রাজকন্যাদের মামা ক্রেয়ন।
ক্রেয়নের প্রথম কর্তব্য হল রাজপুত্রদের খেয়োখেয়িতে ছিন্নভিন্ন থেবস-এ শান্তিস্থাপন। আর শান্তিস্থাপনের সবথেকে সহজ উপায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিপ্রদান। ক্রেয়ন হুকুম দিলেন ইতিওক্লিস-এর মৃতদেহ তুলে নিয়ে গিয়ে রাজসম্মানে কবরস্থ করার, আর রাজদ্রোহের অপরাধে পলিনাইসিস-এর দেহ অনাবৃত, অসৎকৃত ফেলে রেখে চিলশকুন দিয়ে খাওয়ানোর।
রাজার আদেশের বিরুদ্ধে কথা বলার কারও সাহস হল না। এক আন্তিগোনে ছাড়া। ভাইয়ের সম্মান রক্ষার জন্য আন্তিগোনে বিচলিত হলেন। রাতের অন্ধকারে পলিনাইসিসের দেহ ভূমিস্থ করতে গিয়ে ধরা পড়লেন এবং রাজার আদেশ অস্বীকার করার দায়ে অন্ধকূপে নিমজ্জিত হলেন। শেষটায় যখন রাজার মন নরম হয়ে এসেছে, হাজার হোক ভাগ্নি, তখন রাজা শাস্তি
মকুব করতে গিয়ে দেখলেন আন্তিগোনে অন্ধকূপের ভেতর আত্মহত্যা করেছেন।
আন্তিগোনে নাটকের দৃশ্য। উৎস গুগল ইমেজেস
আন্তিগোনে আমার ভালো লেগেছে। বিশেষ করে শেষ দৃশ্যে যখন থেবস-এর রাজপথে জমে ওঠা মৃতদেহের তলায় ক্রেয়নরূপী কৌশিক সেন চাপা পড়ে যাচ্ছেন আর মৃতদেহের ঢিপির তলা থেকে তাঁর ডানহাত কাঁপতে কাঁপতে আকাশের দিকে উঠতে চাইছে সেই জায়গাটা বেশ গায়ে কাঁটা দেওয়া। নাটকের শুরুতে কিছু চমক ছিল, সেগুলো আমার বিশেষ কার্যকরী মনে হয়নি।
পরের দিনের নাটক ব্রাত্য বসুর বোমা। একই সময়, একই ভেনু। সোয়া ছটা নাগাদ কামানি অডিটোরিয়ামের সামনে নেমে অটোভাড়া দিচ্ছি, হঠাৎ শুনি "কুন্তলা!" মুখ তুলে দেখি রাস্তার ঠিক উল্টোদিকের ফুটপাথে অর্চিষ্মান। ও-ও তক্ষুনি অটো থেকে নেমেছে। এই যে দিল্লির রাস্তায় হঠাৎ দেখা,
আমাদের উদ্দেশ্য সফল হল। নাটকটাটক তো ছুতো।
বোমা নাটকের বিষয়বস্তু হল আলিপুর বোমা মামলা। উনিশশো পাঁচে বঙ্গভঙ্গর সিদ্ধান্ত পাশ হওয়ার পর থেকেই বাঙালি যুবকদের মধ্যে বিপ্লবের বীজ মাথা তুলছিল। মেদিনীপুর, ঢাকা ইত্যাদি জায়গায় ছেলেপুলেরা ইংরেজ শাসকদের তিতিবিরক্ত করে তুলছিল কিন্তু সবথেকে বেশি ডানপিটে ছিল মানিক তলায় অরবিন্দ ঘোষের বাগানবাড়িতে জড়ো হওয়া ছেলেপুলেরা। হেমচন্দ্র দাস কানুনগো প্যারিস থেকে বোমা বানানো শিখে এসেছিলেন, নিজের বাড়ির ল্যাবরেটরিতে বোমা বানানোয় হাত পাকাচ্ছিলেন উল্লাসকর দত্ত। ওই বাগানবাড়িতে বসে যুক্তি করেই বদমাশ ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার জন্য প্রফুল্ল চাকী আর ক্ষুদিরামের মুজফফরপুর পাঠানো হয়েছিল। তিরিশে এপ্রিল তাঁরা কিংসফোর্ড ভেবে কেনেডিদের গাড়িতে বোমা ছুঁড়লেন, আর দোসরা মে ভোররাতে বাগানবাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ তেত্রিশজন বিপ্লবী আর প্রচুর কাগজপত্র উদ্ধার করল। এর পর বিচার, অরবিন্দের মুক্তি এবং সম্পূর্ণভাবে অধ্যাত্মবাদে ডুবে যাওয়া, বাকি বন্দীদের সেলুলার জেলে যাওয়া, বারো বছর পর ছাড়া পাওয়া, সবই আছে নাটকে।
বোমা নাটকের দৃশ্য। উৎস গুগল ইমেজেস
যদিও এই সব ঐতিহাসিক তথ্যের বর্ণনা দেওয়া বোমা-র উদ্দেশ্য নয়। বোমা-র উদ্দেশ্য এইটা প্রমাণ করা যে দেশপ্রেমের উদ্দীপ্ত হয়ে, সুখী, নিরাপদ, ঝুঁকিহীন জীবনের প্রলোভন, প্রাণের মায়া ত্যাগ করে দেশের কাজে ঝাঁপানো মানুষদের মধ্যেও হিংসা, ক্ষমতার লোভ, স্বার্থচিন্তা টইটম্বুর থাকে। বোমা আমার খুবই ভালো লেগেছে, আন্তিগোনের থেকেও বেশি ভালো। জমজমাট বিষয়, অভিনয়, মঞ্চসজ্জা। তবে অরবিন্দ আগাপাশতলা ভালোমানুষ আর বারীন ঘোষ আদ্যোপান্ত পাজির পাঝাড়া। কালোয়ভালোয় আরেকটু মেশামিশি হলে মনে হয় ভালো হত।
আসল হল বেড়াতে যাওয়া, সুদ হল নাটক দেখা। আর সে সুদের ওপর আরও বড় সুদ হল সেলিব্রিটি দর্শন। স্থানকালপাত্র বিচার করে আমাদের আন্দাজই ছিল যে এখানে বেশ কিছু নক্ষত্রের দেখা মিলবে। শুরু থেকেই তক্কে তক্কে ছিলাম। অবশ্য বেশি তক্কে না থাকলেও চলে,
সেলিব্রিটি দেখলেই চেনা
যায়। এক, তাঁরা কখনওই একা চলেন না। দুই, তাঁদের মুখেচোখে একটা দীপ্তি থাকে। আগে আমি ভাবতাম দীপ্তিটা ফেশিয়ালের, এখন বুঝেছি সেটা নয়। ওই দীপ্তিটায় ইন ফ্যাক্ট ওঁদের কোনও হাতই নেই। ওর গোটাটাই আমার অবদান। এই যে আমি, আমার
মতো আরও শত শত হাজার হাজার লোক ওঁদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছি, সেই দৃষ্টির মুগ্ধতা ওঁর গাল, কপাল, নাকের ডগায় পড়ে সেগুলোকে চকচকে করে তুলেছে। তাছাড়াও ওই দীপ্তিটার আরও একটা উপযোগিতা আছে। ওটা ওঁদের একরকম সুরক্ষা দেয়। মুগ্ধতা জমে জমে চারপাশে একটা অদৃশ্য দেওয়াল তোলে। সে অদৃশ্য দেওয়ালের গায়ে অদৃশ্য কাঁটা বেরিয়ে থাকে, অসম্ভব সেনসিটিভ কাঁটা। সামনে কোনও মানুষ এলেই সেটা কাজ শুরু করে। আগুন্তক কি সেলিব্রিটি? উত্তর হ্যাঁ হলে তারা গুটিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়, আর না হলে তেড়েফুঁড়ে খোঁচা মেরে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।
কাঁটার খোঁচা অ্যাভয়েড করার
জন্য আমরা নিরাপদ দুরত্বে দাঁড়িয়ে সেলিব্রিটি দেখছিলাম। কাউকে কাউকে দেখামাত্র চিনে ফেললাম, কাউকে অর্চিষ্মান চিনতে পারল আমি পারলাম না বা উল্টোটা, কাউকে আমাদের দুজনেরই চেনা চেনা ঠেকল আর কাউকে একেবারেই চিনতে
পারলাম না। কিন্তু সব লক্ষণ মিলে যাওয়ায় বুঝলাম তিনি একজন “কেউ”।
যাকে নিশ্চিত করে দু'দিনই চিনতে পারলাম তিনি অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় নি পাল। কিন্তু যাকে দেখে আমরা উত্তেজিত
হলাম তিনি হচ্ছেন তসলিমা নাসরিন। বোমা
নাটকের শেষে পৌলমী বসুর হাতে ফুলের তোড়া দিতে মঞ্চে উঠেছিলেন। ভদ্রমহিলা যে এত লম্বা কেন যেন আশা করিনি। বেরোবার সময় আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ ছিল, নেহাত নিজের দোষেই হল না। সিঁড়ি দিয়ে নেমে হলের ঠিক মাঝখানে সুন্দর করে ফুলের আলপনা দেওয়া ছিল। ওই আলপনার নাকের ডগাতেই দেওয়ালজোড়া ছবি। এই রকম পরিস্থিতি সবসময়েই আমাকে নার্ভাস করে দেয়। পাছে আমি ছবি দেখতে গিয়ে আলপনা পাড়িয়ে দিই। অ্যাকচুয়ালি, আমি যে আলপনা পাড়িয়ে দেব না সে কনফিডেন্স আমার আছে, কিন্তু অন্য কেউ যে পাড়াবে না, সে কনফিডেন্স নেই। না থাকার কারণও আছে। কারণ কেউ না কেউ থাকবেনই যিনি প্রায় তাঁর শরীরের মাপের আলপনা না দেখতে পেয়ে গটগটিয়ে তার ওপর উঠে যাবেন।
নাটক দেখে দোতলা থেকে নেমেছি,
একতলার বেশি দামি টিকিটের দরজা দিয়ে দলবল নিয়ে সেলিব্রিটিরা বেরোচ্ছেন, আমরা সশ্রদ্ধ
পায়ে ধীরে ধীরে দূরে দূরে হাঁটছি, এমন সময় বিরাটকায় বুট পরা একজন দর্শক এসে উপস্থিত
হলেন। আলপনার বিপজ্জনক রকম কাছে। আলপনার অস্তিত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ অচেতন হয়ে ব্যস্তমুখে তিনি হাঁটাহুটি করতে লাগলেন, মাঝেমাঝেই তাঁর
বুটের ডগা গাঁদাফুলের পাপড়ি আলতো ছুঁয়ে গেল। যেন বড়লোকের পোষা অ্যালসেশিয়ান রাস্তার ধারে সদ্য জন্মানো বেড়ালছানাকে শুঁকে দেখছে। আমি মুখে হৃৎপিণ্ড নিয়ে ওঁর জুতোর দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। অবশেষে যখন তিনি গতিপথ বদলে অন্যদিকে গেলেন এবং দৈবের কৃপায় ফুলগুলো রক্ষা পেল, অর্চিষ্মান বলল ততক্ষণে তসলিমা গেট দিয়ে বেরিয়ে গেছেন। গেছেন নাকি একেবারে আমার কাঁধের পাশ দিয়েই।
sundor lekha,omn bhalo kore deoa lekha.
ReplyDeleteghorer khabar best option.ami bahudin agei switch over korechi,ebong sobaike gyan o dei.eibar tumi biswas karo emon hoe jabe je restaurant er khabar gandho lagbe..sotyi,fresh khabar er alada ekta bepar thake...
tobe ha..biryani ta bairer khabar noy ota soptahe 3 din o cholbe...ota alada genre..
koushik sen er barir samnei amar bari,23 pally mandir..or cheler cinema ta dekho...open tee bioscope...100 bar abar dekhbe..miliye nio..
prosenjit
বাবা, একেবারে সেলিব্রিটির পাড়ায় থাকো তো তুমি প্রসেনজিৎ! খুব হিংসে করলাম।
Deleteuni khub e struggle korechen,ekdin e celebrity hon ni..se jag ge oprasngik kotha..
Deleteprosenjit
Jaundice naki?! Khub shabdhane theko. Taratari shustho hoye utho. Amra Kolkata r street food er dhokol boichi ekhon.
ReplyDeleteজন্ডিসই বটে, শর্মিলা। তবে এখন সেরে গেছে। যদিও বুঝেসুঝে চলতে হবে এখনও বেশ কিছু দিন। তোমরাও সব সামলে ওঠো এই কামনা করি।
DeleteArchismaan taratari shushtho hoye uthun ... onek get well soon er wishes roilo. Tumio shabdhane theko. Dekhbe koyek maash pore abar normal khawa dawa shuru hoye jabe. Bairer jol ta na khele e bhalo. Ar kaancha penpe toh achei. :-)
Deleteহ্যাঁ, জল সামলে চলার কথা ডাক্তারবাবুও বলেছেন। আর কাঁচা পেঁপের পথ্য মা বলেছে।
Deleteএই যাহ, আর রেস্টুরেন্ট রিভিউ পাব না নাকি! অর্চিশ্মান শিগগির সুস্থ হয়ে উঠুক।
ReplyDeleteকলকাতার সেলেব্রিটি রা এখানে যখন আসেন, সবাইকে এখানে দেখি কি সহজে মেশে, হাসি মশকরা করে, আমি আবার মোটেও পারিনা।
ওই মেশার ব্যাপারটা সবার দ্বারা হয় না, কাকলি। রেস্টোর্যান্ট রিভিউ ভছরের প্রথমার্ধে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, শেষদিকে দেখা যাক।
Deleteঅর্চিষ্মানবাবু খুব তাড়াতাড়ি সেরে উঠবেন, আর তারপর আপনারা আবার বিরিয়ানি পিৎজা চালাতে পারবেন। তবে একটু রয়েসয়ে করলেই ভালো।
ReplyDeleteসে তো বটেই, দেবাশিস।
DeleteKhub taratari puropuri sere uthun Archisman. jaundice - rogtike khubi bhoi pai.
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, ইচ্ছাডানা। জন্ডিস এমনিতে নিরীহ, কিন্তু বিগড়োলে বাজে চেহারা নিতে পারে। তবে অর্চিষ্মান এখন সেরে গেছে। অফিসটফিস সব শুরু হয়েছে। এখন খালি সাবধানে থাকা।
Deletekhub taratari sere uthun Archisman da(babu tabu poshay na amar) .
ReplyDeleteBaki lekhata chomotkar legeche, bishesh kore celebrity bornona .
Sabdhane theko bhalo theko. -PB
থ্যাংক ইউ, প্রদীপ্ত।
DeleteBhui amla bole ekta gach hoy. Oi gach ta dudh ba doi er sathe bete khawate paro. Ekmatro obstructive jaundice na hole r sob khetrei bilirubin ta khub taratari namiye diye liver function normal kore dey. Amar baba der research team (Botanical Survey of India) study korechhilo gachta. https://en.wikipedia.org/wiki/Phyllanthus_niruri. wiki link dilam.
ReplyDelete