গত তিন বছরে আমি যা যা ভেঙেছি



উৎস গুগল ইমেজেস


(জিনিসগুলোর প্রতি আমার অনুরক্তির অধঃক্রমে সাজানো)

১। মায়ের দেওয়া একটা সাদা পোর্সিলিনের বাটি।

২। একটা লাল কাপ। নিজের কেনা। খুব শখের ছিল।

৩। ইলেকট্রিক কেটলি। কেটলিটা ভাঙেনি, ভেঙেছে ঢাকনাটা। বাকি শরীরের থেকে আলাদা হয়ে গেছে। আর এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত একটা চিড় ধরেছে। জল গরম করা যায়। তবে কাপে গরম জল ঢালার সময় সতর্ক থাকতে হয়, না হলে ঢাকনা আলগা হয়ে কাপের ওপর পড়ে যেতে পারে। পড়েওছে কয়েকবার। কিন্তু কোনও কাপ ভাঙেনি। এখনও পর্যন্ত। ভাঙলে সেগুলোকেও এই লিস্টে ঢোকাতে হত। কারণ প্রত্যক্ষভাবে না হলেও দুর্ঘটনাটার জন্য পরোক্ষভাবে আমিই দায়ী থাকতাম।

৮। একটা ল্যাপটপ। (আমার জীবনের প্রথম ল্যাপটপ। দু’হাজার আটে কেনা। তার আগের আঠাশটা বছর নাকি আমি নিজস্ব ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই, খেয়েদেয়ে, নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে, মানুষের সমাজে দিব্যি চলেফিরে বেড়াতাম। অন্তত কমন সেন্স তো সে রকমটাই দাবি করছে। যদিও আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।)

৯। আরেকটা ল্যাপটপ। রাতে চোখ বন্ধ করার আগে অর্চিষ্মানকে টপকে টেবিল অবধি হাত বাড়াতে কুঁড়েমো লাগছিল বলে খাটের নিচে নামিয়ে রেখেছিলাম। ঘুম থেকে উঠে রোজ যেখানটায় পা দিই,ঠিক সেইখানটায়। ভেবেছিলাম কাল সকালে ঘুম ভেঙে উঠে মনে করে এই জায়গাটা এড়িয়ে পা ফেলব। তারপর যা হওয়ার তাই হল। অর্চিষ্মান বলে আমি নাকি সকালবেলা উঠে ল্যাপটপের ওপর “নৃত্য” করেছিলাম, কিন্তু সেটা অতিশয়োক্তি। আমি খুব আলতো করেই পা রেখেছিলাম, তাতেই মট করে একটা আওয়াজ হল। তারপর কম্পিউটার অন করে দেখি স্ক্রিনে সারিসারি রামধনু। অথচ আমি সুগতর মুখে গল্প শুনেছি, ওঁর কোন চেনা লোক নাকি তোশিবা ল্যাপটপের টেঁকসয়িতার প্রমাণ দিতে গিয়ে বুটজুতো পরে ল্যাপটপের ওপর কোমরে হাত দিয়ে বুক ফুলিয়ে পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। তোশিবা টসকায়নি। ভাবুন, প্রমাণ সাইজের একজন মানুষ। আর সোনি ভায়ো আমার মোটে একখানা পায়ের ওজন নিতে পারল না। একেই বলে কপালের নাম কুন্তলা।

১০। ওপরের ল্যাপটপটা আরেকবার। সারিয়ে আসার ঠিক পরে পরেই। এবার স্ক্রিন ঠিক ছিল। মনিটরটা কি-বোর্ড থেকে আলাদা হয়ে গেল। এটা কখন, কী করে হল আমি অনেক ভেবেও মনে করতে পারি না। অর্চিষ্মান হাই তুলে বলে, “কী করে আবার হবে। নিশ্চয় আবার ওটার ওপর চড়ে নৃত্য করেছিলে।“ ডাহা মিথ্যে কথা। করলে আমার মনে থাকত।

১১। ফোনের ফ্ল্যাপ-কভার। এটাও কী করে ভাঙল আমার মনে নেই। শুধু এটুকু মনে আছে যে ভাঙার পর ঘটনাটাকে এতই তুচ্ছ মনে হয়েছিল যে আমি আরেকটা ফ্ল্যাপকভার কেনা দরকার মনে করিনি। তাছাড়া একটা পাতলা প্লাস্টিকের স্ক্রিনগার্ড তো আছেই। জিনিসপত্রের প্রতি আমার মতো যত্নশীল লোকের পক্ষে ওই যথেষ্ট মনে হয়েছিল। তবু কেন এটাকে লিস্টে পরের আইটেমটার আগে জায়গা দিলাম সেটা এক্ষুনি স্পষ্ট হবে।

১২। ফোনের স্ক্রিন। এই সেদিন রাতে চোখ বন্ধ করার আগে অর্চিষ্মানকে টপকে টেবিলে রাখতে গিয়ে হাত ফসকে টেবিল আর খাটের মাঝখানের সরু গলিটায় পড়ে গেল। গিয়ে স্ক্রিনটা ফেটে গেল। প্লাস্টিকের স্ক্রিনগার্ডটা কোনও কাজেই দিল না। দোকানে গেলাম। দোকানি দেখেশুনে বললেন, “এই জন্যই বলি ফ্ল্যাপ কভার লাগান। আপনারা তো ভাবেন আমরা খালি ইচ্ছে করে আপনাদের পয়সা খরচ করাই।" নতুন স্ক্রিন বসানো হল। বাড়ি এসে দেখলাম কলিং সেন্সর খারাপ হয়ে গেছে। অর্থা একবার ফোন করার পর বা ধরার পর স্ক্রিন অন্ধকার। আমার পক্ষে আর কিছু করা সম্ভব নয়। অন হোল্ড রাখা সম্ভব নয়, লাউডস্পিকার চালু করা সম্ভব নয়। সবথেকে অসুবিধের ব্যাপার যেটা হয়েছে সেটা হচ্ছে ফোন কাটা পর্যন্ত যাচ্ছে না। এই চক্করে পড়ে গত দু’দিনে অন্তত পাঁচবার ইভেন-অড নিয়ে কেজরিওয়ালের বক্তৃতা শুনেছি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।

*****

অথচ আমার জন্মের সময় উপহার পাওয়া প্লাস্টিকের গোলাপি হাতি, চারটে থামের মতো পা, দুটো কুলোর মতো কান, দুটো মার্বেলের মতো চকচকে চোখ, একটা সমীহ উদ্রেককারী শুঁড় আর একটা হাস্যকর ল্যাজ নিয়ে এখনও শো-কেসের ভেতর অক্ষত দাঁড়িয়ে আছে। এই পঁয়ত্রিশ বছর পরেও। অদ্ভুত।


Comments

  1. chomotkar lekha. :) office er kaaj phnaki diye porchi aar haschi.. dhonnobaad... aar ekta laptop je aapnaar 8 bochor tikechilo, se jonno aapnaar osonkhyo sadhubaad prapyo.. aamaar laptop 1 bochorer mathatei aste aste khnrate thake.. jemon ekhon jetai kaaj korchi taar koyekta key bhenge geche aar mousepad ta oswabhabik pichol hoye geche.. :) :)

    bhalo thakun and likhte thakun..

    Indrani

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, ইন্দ্রাণী। আমার প্রথম ল্যাপটপটা আট বছর টেকেনি, আপনি আমাকে ওভারএস্টিমেট করছেন। তবে পরেরটার তুলনায় অনেক বেশি টিকেছিল সেটা ঠিক। আসলে দোষটা আমাদেরও নয়। সময়ের। যত দিন যাচ্ছে তত ভুষিমালে বাজার ছেয়ে যাচ্ছে। আমি নিশ্চিত আমার বর্তমান ল্যাপটপটা বছরদুয়েকের বেশি টিকবে না।

      Delete
  2. বেশ মজা লাগলো লিষ্টটা দেখে। :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, অরিজিত।

      Delete
  3. Amar mone ache kono ek post e likhechile shokal byala uthe e laptop er opor pa porlo ... tarpor google kore Archisman babu tomake shantona dilen je shara prithibi te thik kotojon manush eyi bhabe laptop er opor podarpon koren. :)
    Ar emon kichu jinish bhangnoni eyi eto bochor e ... amar toh haat theke phone, plate,glass shob shomoye porte thake. List korte gele hoyeto duto post lagbe. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. যাক, আমার মতো আরও কেউ আছে জেনে ভালো লাগল, শর্মিলা।

      Delete
  4. Phone laptop esob vangbei. Ei jonno phone jinista jotota somvob sosta kenai valo. vangle dukkho ta kom hoi. Kuremi kore oi laptop ta amio onek somoy matite namiye rakhi tobe ota khater tolay vetorer dik kore dhukiye dei, jate idurer pa porte pare ote kintu manusher pa noi.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমারও মাথা খাটিয়ে সেরকমই কিছু করা উচিত ছিল, সুহানি। তবে আমার যা ল্যাপটপের কপাল হয়তো ইঁদুরের পা পড়লেও ভাঙবে, কে জানে।

      Delete
  5. কপালের নাম কুন্তলা-ই বটে। পড়ে হাসছি তো হাসছি। রসের নাগড়ি একটুও টস্‌কায়নি। ভাবছ কি এত দুঃখের কথায় হাসে কি করে, অ্যাঃ! আরে, তেমন কিছু কাজ না করেও আমি তো দুটো ল্যাপটপ সাবাড় করে দিলাম। প্রথমে একটু হুঁ হুঁ হয়েছিল বটে, কিন্তু পরে মনে হল পুরাতন না সরলে নবীন আসে কি করে? আর তোমাদের কাছে মেসিনগুলো তো ত্রাহি মাং করে। আট বছর ধরে তোমার আঙ্গুলগুলি ওর মাথায় কিভাবে নৃত্য করেছে ভাবো? বেচারারা।
    বাকি লিস্টটাও কিন্তু মজার। আর গোলাপি হাতিটা যে শোকেসে সুরক্ষিত ছিল মাজননী।
    পুরো লিস্টটাও কিন্তুখুব মজার।

    ReplyDelete
    Replies
    1. বিশ্বাস করুন, মালবিকা, হাতি নিয়ে আমি যথেষ্ট খেলেছি। কিন্তু তখন আমি শান্তশিষ্ট বাচ্চা ছিলাম, এখন আক্‌কুটে মাঝবয়সী মহিলা হয়েছি। এই যা তফাৎ।

      Delete
  6. ধুস ! এ আর এমন কি? ছাতা ভেঙেছ? ক্যাল্কুলেটার? ফ্রাইং প্যান? দেওয়াল? (একটুও বাড়িয়ে বলছি না)

    ReplyDelete
    Replies
    1. দেওয়াল! তোমার নাম সোমনাথ না হয়ে সানি দেওল হওয়া উচিত তো। ছাতাটা কী করে ভেঙেছিলে? কারও পিঠে?

      Delete
  7. kancher glass ar kaancher thala, chatar baant !!

    ReplyDelete
    Replies
    1. তুইও কি কাউকে ছাতাপেটা করেছিলি নাকি, তিন্নি? আর কাচের থালাবাটি না ভাঙলেই অদ্ভুত হতো, কাজেই ওতে নম্বর দেওয়া যাচ্ছে না।

      Delete
    2. আমি একবার একটা ছাতা ভেঙেছিলাম। তবে সেটা প্রায় সাত বছর আগের কথা।

      Delete
  8. দিলে তো ব্যথার জায়গায় নুন ছিটিয়ে? গত সপ্তাহে ফোনের স্ক্রিন ফাটিয়েছি, যাচ্ছি যাবো করে আর সারাতে দেওয়া হচ্ছেনা। এদিকে সারালে ফোনের হাল যদি তোমার ফোনের মত হয়ে যায়? কি হবে? চিন্তায় ফেলে দিলে যে!!

    ReplyDelete
    Replies
    1. না না, আমার মতো ফাটা কপাল সবার হয় না। সারিয়ে ফেলো, শাল্মলী।

      Delete
  9. Dhurdhorsho post. Amio laptop bhengechhi :-D
    Boiporar moto pore niye guimiyeporechhilam. Ghum bhenge gelo je shobde, tate ghumta ekebare venge giyechhilo :-P

    Bhangar list to onek. Tobe bhanger cheyeo ekhon jeta hole monta beshi kharap hoy, bukta chhNat kore othe, seta holo kono boier cover onobodhane bhNaj hoye gele...

    ReplyDelete
    Replies
    1. যাক, আপনিও ভুক্তভোগী তাহলে, সায়ন। বই মুড়ে গেলে নিজেকে ক্রিমিনাল মনে হয়। ঠিকই বলেছেন।

      Delete
  10. ক্ষণভঙ্গুর জিনিস কিছু কিছু আমিও ভেঙেছি, তবে সবচেয়ে বেশি ভেঙেছি প্রতিজ্ঞা। আর হৃদয়।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওয়াহ, ওয়াহ, কেয়া বাত। সবাই তো যে যখন পারল আমার হৃদয় ভেঙে চলে গেল, আপনি যে লোকের হৃদয় ভাঙতে পারলেন এ জন্য আপনাকে অনেক অভিনন্দন, দেবাশিস।

      Delete
  11. Tumi to besh akkhute public dekhchi. Laptop r opor uthe break dance korcho. Pun intended. Phone e akta gorilla glass screen protector lagiye felo, ar pichone akta silicone r transparent backcover. Bhalo grip o pabe ar screen o dumdam venge jabe na.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, সে আর বলতে, কুহেলি। দাঁড়াও ফোনের দোকানে গিয়ে তুমি যেগুলো বললে সেগুলোর খোঁজ করব। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  12. Tomar memory ki bhalo. ami onek chesta koreo tin bochhore bhanga total jinis er list korte parlam na.

    ReplyDelete
    Replies
    1. তার একটা সহজ ব্যাখ্যা হচ্ছে যে তুমি কিছুই ভাঙোনি, চুপকথা।

      Delete
  13. ভাঙাভাঙ্গির কথায় আমার জীবনের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেলো। বছর পনেরো আগেকার কথা - তখন বাজারে স্মার্টফোন বলে কিছু আসেনি - সাধারন ঢ্যাবা টাইপের একটা মোবাইল ফোন থাকাটাই একটা বিশেষ অ্যাচিভমেন্ট হিসাবে দেখা হতো। ডিসেম্বরের দিকে আমার এক বন্ধু সপরিবারে এক মাসের জন্যে ইন্ডিয়া যাচ্ছিলো - সে কাজ করতো একটা ফোন কোম্পানির IT ডিপার্টমেন্টে। কোম্পানি থেকেই তাকে একটা মোবাইল ফোন দিয়েছিলো, আর কোম্পানিই সেই ফোনের বিল পে করে দিতো। তাকে বলে আমি তার সেই মোবাইল ফোনটা আমার কাছে রেখে দিলাম, আমার নিজের কোনও ফোন ছিলো না, আর সেও রাজী হয়ে গেলো কারণ দেশে থেকে কোনও কারণে এখানে যোগাযোগ করতে হলে, বা এয়ারপোর্ট থেকে দরকারে পিক-আপ করতে হলে ওই ফোন দিয়েই করা যাবে।ফোন নিয়ে সপ্তাহদুয়েক বেশ আনন্দেই কেটে গেলো - সময় পেলেই ফোনে 'Snake' বা 'Tetris' টাইপের কিছু বোকাবোকা খেলা খেলি। বুঝতে পারি যে আশেপাশের লোকেরা আমার দিকে আড়ে আড়ে তাকাচ্ছে। হঠাৎ করেই মাথায় ভুল চাপলো আমার - ঠিক করলাম সৌজন্যতাবশত: ফোনটাতে একটা মেটাল কভার কিনে লাগিয়ে দেবো - তাহলে এই একমাসের ফোন-ব্যাবহারের কিছুটা মুল্য চুকিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু ভুল করে অন্য সাইজের একটা ফোন-কভার কিনে সেটাতে লাগাতে গিয়ে, চাপচাপিতে ফোনটার স্ক্রিনটাই দিলাম চটকে। তখন কোনো কল এলে ফোনের স্ক্রিনে শুধু কয়েকটা বুদবুদ ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। আমার তো গায়ের রক্ত জল হয়ে গেলো, বন্ধু ফিরে এলে তাকে কি ভাবে এই দুর্ঘটনার ব্যাখ্যা দেবো সেটা ভাবতেই আমার গোটা শরীর অবশ হয়ে এলো। পরের দিনই আমি ফোনটা নিয়ে সেই ফোন কোম্পানির এক লোকাল সেন্টারে গিয়ে দেখালাম। তারা বললো স্ক্রিন চেঞ্জ করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই, কিন্তু সেটা এখানে করা যাবেনা, ওদের রিপেয়ার সেন্টার মেক্সিকোতে, সেখানেই পাঠাতে হবে আর কম করে হলেও একমাস লেগে যাবে। এদিকে আমার বন্ধুর ফিরে আসতে তখন আর দিন দশেক বাকী। কি করবো তা ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। তারা বুদ্ধি দিলো যে ঠিক ওই মডেলেরই একটা ফোন কিনে নিয়ে সেটাতে এই ফোনটার সিম-কার্ডটা পুরে দিতে - ব্যস, তাহলেই আর কিছু ধরা যাবে না। আমারও মনে হলো সেটাই একমাত্র ক্যুইক এবং ফুল-প্রুভড সল্যুশান !! ট্যাক্স নিয়ে নতুন ফোনের দাম পড়লো ৩২৫ ডলার (এখনও মনে আছে !!!) - সপ্তাহখানেক বাদে বন্ধু ফিরে এলে আমি তাকে তার ফোনটা যথারীতি ফেরৎ দিয়ে দিলাম। সে একবার খেয়াল করেও দেখলো না যে ফোনটা বদলে গেছে, করার কথাও অবশ্যি ছিলো না। এর মাস দুয়েক পরের কথা - তার বাড়িতে এক উইকেন্ডে ডিনারের নেমতন্ন খেতে গিয়ে দেখলাম যে সে অন্য একটা ফোন ব্যবহার করছে। আমি নিজের কৌতুহল যতোটা সম্ভব পারা যায় গোপন করে জানতে চাইলাম তার সেই আগের ফোনটার কথা। সে নির্বিকার ভাবে জানালো,'আরে ওই ফোনটা বদলে দিয়ে অফিস একটা নতুন ফোন দিয়েছে - এটাতে অনেক নতুন ফিচার আর গেমস আছে' - আমার মুখটা লিটার‍্যালি পেটমোটা কাতলা মাছের মুখের মতোই 'হাঁ' হয়ে গেলো - আর সেভাবেই হয়ে থাকলো বেশ অনেকক্ষণ ধরেই !!!

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, আমার শুনে হাসি পাচ্ছে, কুন্তল, কিন্তু আপনার নিশ্চয় হাসি পায় না। সারাজীবনের মতো একটা গল্প হল, এ ছাড়া এসব অভিজ্ঞতাগুলোকে সইয়ে নেওয়ার আর কোনও সান্ত্বনা নেই।

      Delete
  14. বাবাঃ, আপনার সেই ভদ্রলোকের তোশিবা ল্যাপটপে দাঁড়াবার গল্পটা মনে আছে! আমার ল্যাপটপটা একবার ঠুকে হার্ড ডিস্ক ঘেঁটে গেছিল, কিন্তু সেটা গত তিন বছরে নয়। অনেক ভেবেও মাত্র একটাই জিনিস ভেঙেছি বলে মনে করতে পারলাম, আর সেটা ভেঙেছি এই তিনদিন আগে - পৌলমীর ল্যাপটপের তারটায় হোঁচট খেয়ে তারের মাথাটা, মানে যেটাকে 'জ্যাক' বলে সেটা, দু টুকরো হয়ে গেল। এই কমেন্টটা লেখার আগে খুব গর্বিত ভাবে পৌলমীকে বললাম, "বুঝলে, কুন্তলার লেখা পড়ে দেখলাম উনি রাশি রাশি জিনিস ভেঙেছেন আর আমি বলতে গেলে কিছুই ভাঙিনি।" পৌলমী গম্ভীর ভাবে জবাব দিল, "ভাঙতে গেলে ঘরের মধ্যে নড়ে-চড়ে বেড়াতে হয়। তুমি এক জায়গায় এমন চুপ করে বসে থাক যে ভাঙার সুযোগ পাওনা।" জঘন্য।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, পৌলমীকে আমার তরফ থেকে লং ডিসট্যান্স হাই ফাইভ দিয়ে দেবেন, সুগত। যদিও আমি জানি না, ওর দাবিটা সত্যি কি না, আর আপনি যে যথেষ্ট কাজের লোক সে নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই, তবু। কারণ পরের বার অর্চিষ্মান যখন ওর লক্ষ্মীশ্রীর সঙ্গে আমার আকখুটেপনার তুলনা করবে আমি পৌলমীর ডায়লগটা দেব।

      Delete
    2. সত্যি। সেইজন্যই জঘন্য।

      Delete

Post a Comment