চা + বই
এক সপ্তাহ ছুটি নিয়ে আবার ছুটি কেটে ফেরৎ আসা? আমার ডিরেক্টর এ জিনিস আশা করবেন না, কিন্তু এটা অফিস নয়, অবান্তর। যে কাজটার জন্য ছুটি চেয়েছিলাম সেটা ঘাড়ের ওপর খাঁড়ার মতো ঝুলে আছে এখনও, কিন্তু যে ভেবেছিলাম ফাঁকে ফাঁকে একটুও সময় বার করতে পারব না, সেটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তাই এই পোস্ট। হয়তো এই একটাই ছাপতে পারব, কিংবা আরও দু’চারটে, কিছু বলা যায় না। ছুটির আবেদনটা বলবৎ রইল।
এই ট্যাগের আইডিয়া এসেছে, আমার বইসংক্রান্ত সব আইডিয়াই আজকাল যেখান থেকে আসে, সেই বুকটিউব থেকে। আমার বই ভালো লাগে, চা বাড়াবাড়ি রকম বেশি ভালো লাগে। কিন্তু এ দুটোর থেকেই যেটা বেশি ভালো লাগে সেটা হচ্ছে চা খেতে খেতে বই পড়তে। তাই দুটোকে মিলিয়েমিশিয়ে দেওয়ার আইডিয়া দেখে লোভ সংবরণ করতে পারলাম না।
*****
রাস্তার ধারের ফোটানো চা। এ জিনিস বাড়িতে রেপ্লিকেট করা অসম্ভব। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দোকানে রেপ্লিকেট করা অসম্ভব। মোড়ে মোড়ে পাওয়া যায়। স্বাদের রেঞ্জ বিরাট। কোনওটা ভীষণ ভালো কোনওটা না খেলেই হত। কিন্তু ব্যাপারটা এমন সর্বব্যাপী যে খাওয়াটা অলমোস্ট বাধ্যতামূলক। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই ছাড়া এই মুহূর্তে কারও কথা মনে পড়ছে না।
ইংলিষ ব্রেকফাস্ট/ দার্জিলিং চাঃ কেউ বলতে পারে বোরিং, আমি বলব যখনই খাও যেখানেই খাও যেভাবেই খাও, ভালো লাগবেই। আমার জন্য এঁরা আগাথা ক্রিস্টি আর সত্যজিৎ রায়। যা লিখেছেন সব।
গ্রিন টিঃ এ চা খাওয়ার সঙ্গে ভালো লাগার কোনও সম্পর্ক নেই। রোগা হতে চাইলে খেতে হয়। যে কোনও পাঠ্য বই আর সেলফ হেল্প বই এ গোত্রে পড়বে।
হানি জিঞ্জার লেমন টি। এটাও স্বাস্থ্যের জন্যই খায় লোকে। কিন্তু গ্রিন টি-র সঙ্গে তফাৎটা হচ্ছে যে জিনিসটা খেতেও ভালো। খেলে মন পেট মাথা তিনটেই ঠাণ্ডা হয়ে আসে। এ রকম বই নিশ্চয় অনেক আছে কিন্তু সম্প্রতি এলিজাবেথ স্ট্রাউটের লেখা ‘অলিভ কিটরিজ’ পড়ার পর ওই নামটাই বলতে ইচ্ছে করছে। অক্টোবর মাসের বইয়ের তালিকায় এই বইটির কথা বিশদে থাকবে।
লেমন মসালা টিঃ এই বস্তুটি নিশ্চয় নানারকমের হয়, আমি রাজুদার দোকানেরটার কথাই বলি। চা, চিনি, লেবু, জিরা মসালা, আমলকি, বিটনুন, চাট মশলা এবং আরও গোটাতিনেক সিক্রেট অনুপান মিলিয়ে টোটাল পয়সা উশুল। এর তুলনা নিঃসন্দেহে হ্যারি পটার।
আইস টিঃ শুরুতে ভালোই, মাঝপথ থেকে পুরো জল। ড্যান ব্রাউনের বই। আলাদা আলাদা বইগুলো তো বটেই, গোটা সিরিজটার সম্পর্কেও এই উপমাটা খেটে যায়। দা ভিঞ্চি কোড বেশ উপভোগ করেছিলাম। তারপর থেকে মান ক্রমশ পড়তে শুরু করেছে। ইনফার্নো শেষ করতে পারিনি।
*****
ওপরের চা-গুলোর নাম শুনলে আপনার কোন কোন বইয়ের কথা মনে পড়ে জানার আগ্রহ রইল।
daarun post.. khuuuub bhalo laglo...
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, ইন্দ্রাণী।
Deletegreen tea ta ekdom thik...sonali ranger shobuj cha....darun post
ReplyDeleteধন্যবাদ, ধন্যবাদ।
Deleteআমি একটা যোগ করতে চাই - অরেঞ্জ টি। ট্রানকুলাইজার। খেলে খুব ভালো ঘুম হয়।
ReplyDeleteএটা বিশেষ প্রয়োজন হয় সৃজিত মুখার্জীর জুলফিকর চিত্রনাট্যের সম্মুখীন হলে।
পোস্টটা পড়েছি, অনির্বাণ। কিছু না বলাই ভালো বলে আর বলিনি। অরেঞ্জ টি আমি খাইনি কখনও সাহস করে। তুমি বললে যখন খাব।
Deleteগুজরাট ভবনের পোস্টের নিচে এক সপ্তাহ ছুটির নোটিশ দেখে প্রথমেই মনে হল, বা বা আরও একটা বেড়ানোর সিরিজ পাবো। এবারও কি বন গিয়েছেন, না অন্য কোথাও?
ReplyDeleteখেলাটা ভালো, আমিও চান্সে একটু খেলে নিই।
রাস্তার ধারের ফোটানো চাঃ প্রায় সবাই ভালো বলে, অনেকে বলে না খেলে জীবন বৃথা। আমার অখাদ্য লাগে। সুচিত্রা ভট্টাচার্য, বাণী বসু, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
ইংলিশ ব্রেকফাস্ট/ দার্জিলিং চাঃ আমার ফেভারিট চা টা এই লিস্টে দিলেন না, তাই আমি কোশ্চেনটা একটু বদলে নিলাম। দুধ চিনি ছাড়া চা, তারিণীখুড়োর মত। আমি যদিও আসাম টি প্রেফার করি। এই চা বোরডমের ওষুধ, এই চা মন্ত্রণাদাতার কাজ করে, এই চা কর্মক্ষমতা বাড়ায়। নিঃসন্দেহে শার্লক হোমস।
গ্রিন টিঃ সবাই ভালো বলে, কিন্তু শেষ করতে বড় বেগ পেতে হয়। সলমন রুশদি।
হানি জিঞ্জার লেমন টিঃ খাইনি কোনদিন, কিন্তু ডেসক্রিপশন পড়ে বুঝলাম খেতে ভালো, তারই সাথে স্বাস্থ্যবর্ধক। রবীন্দ্রনাথ।
লেমন মসালা টিঃ এটিও খাইনি, কিন্তু যা বর্ণনা দিলেন, আমার চয়েসও হ্যারি পটার।
আইস টিঃ কোন বিকল্প না থাকলে লোকে এটি খায়। দেশ পত্রিকায় কবিতার পাতাটা।
আপনি এরকম মোক্ষম আন্দাজ করলেন কী করে, দেবাশিস? একটু কান ঘেঁষে বেরিয়েছে, তবে এখন যেখানে সেটাও ব দিয়েই শুরু। বার্লিন এসেছি ঝটিকাসফরে।
Deleteআরে আমি দুধচিনি ছাড়া চা লিখেও মুছে দিলাম। আমারও ওটাই ফেভারিট। ফেভারিট না শুধু আমি দিনের প্রথম চা-টা ছাড়া (সেটা দুধ সহ, চিনি ছাড়া) বাকি সাতখানা চা ওইরকম ভাবেই খাই। আমি লিখতে যাচ্ছিলাম যে দুধ চিনি ছাড়া চা বেশি লোকে খায় না, কিন্তু যারা খায় তারা জানে যে এ রকম ভাবে ছাড়া অন্য কোনও রকম ভাবে চা খাওয়া পাপ। তারপর এত স্ট্রং স্টেটমেন্ট ঠ্যাকনা দিতে পারব না বলে বাদ দিয়ে দিলাম।
হানি লেমন জিঞ্জার টি, শুনেই বোঝা যাচ্ছে কী কী পড়বে কাজেই ইচ্ছে করলেই খেতে পারেন। কিন্তু আমি বলি ম্যাকলয়েডগঞ্জ যান, সেখানের ক্যাফেতে বসে দূরে পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হানি লেমন জিঞ্জার চায়ে চুমুক দিন। সন্দেহ হবে, হয়তো জীবনের মানে একটু একটু বুঝতে পারছেন।
Ar vending machine er non-descript cha?
ReplyDeleteআমার ও জিনিস খেয়ে দেখার সাহস হয়নি। তবে স্বাদটা আন্দাজ করতে পারি। কোনও স্বাদ নেই সেটাই ওর স্বাদ। কিন্তু কোন বইয়ের সঙ্গে তুলনা করব বুঝতে পারছি না।
Deleteকিন্তু আমি বলি ম্যাকলয়েডগঞ্জ যান, সেখানের ক্যাফেতে বসে দূরে পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হানি লেমন জিঞ্জার চায়ে চুমুক দিন। সন্দেহ হবে, হয়তো জীবনের মানে একটু একটু বুঝতে পারছেন।
ReplyDeletejiohhhh....mamah....ki line...solidh...full solidh..just..mane ki bolbo..tomar kalam na taroal...
prosenjit
tejpata darchini elach misti besi dudh besi ghano cha....ar sathe jhal lonkar guro makhano lomba lomba toast biscut(khub rare ajkal kolkatatei pawa mushkil)..ba jhal chanachur...ei combo ta bhalo lage na..majhe majhe baniye khaoa jay..cup e noy baro gelash e...er tulonawala boi..dharo....jharpoch korte giye hotat pata ulte dekhte giye porte bose gele emon kono pujabarshiiki...jharpoch ta multubi roilo...dhuulo mekhei boita niye aste kore sedhiye gele bichanay
ReplyDeleteprosenjit
jodio ami cha khai khub kom...9 mas e 6 mas e.hotat eeche korle..kintu tomar sathe khub e sahamot ami je...bhalo darjeeling cha e chini ba dudh meshano holo ekta paap...sacrilege...bhalo scotch whiskey te sprite meshanor motoi samatulyo paap...
ReplyDeletejaat er cha khete hobe neat...pachando na hole kheo na..kintu khele unmixed..
ঝাল লংকার গুঁড়ো মাখানো টোস্ট? এ জিনিস তো কখনও খেয়েছি বলে মনে পড়ে না, প্রসেনজিৎ। এবার থেকে চোখ কান খোলা রাখব। ঝাল চানাচুরের ব্যাপারটায় হায়েস্ট ফাইভ। (টকমিষ্টি চানাচুর বললে খুব দুঃখ পেতাম।)
DeleteJokhon Chhoto chhilam....
ReplyDeleteAha, apnar bornito chayer description gulou khubbhalo legeche, r amar songe mileo gechhe :)
হাই ফাইভ, অরিজিত।
Deleteকুন্তলা, বহুযুগ পরে লিখছি। তোমার আর সব লেখার মতই এটাও অনবদ্য। এটা জানাতে আমার খুব ইচ্ছে করছে যে অলিভ কিটরিজ বইটা পড়ে আমার ভীযণ ভালো লেগেছে। এই বইটা আমি বছর দুই আগে মেয়ের সুপারিশে প্রথমবার পড়লাম। HBO এটা নিয়ে একটা মিনি সিরিজ করেছে, সেটাও একই রকম ভালো। অলিভ এর ভূমিকায় যিনি অভিনয় করেছেন চরিত্রটা যেন ওনার জণ্যই তৈরী। তোমার রিভিউ এর অপেক্ষায় রইলাম অনেক অনেক ভালোবাসা জানাই।
ReplyDeleteআরে অমিতা, কেমন আছেন? অলিভ কিটরিজ-এর ব্যাপারটা কী মজার হল শুনুন। বইটার নাম আমি শুনেছিলাম। পড়ব পড়ব বলে তুলে রেখেছিলাম। তারপর শুনলাম আমার ফেভারিট অভিনেতা ফ্রান্সিস ম্যাকডরম্যান্ড অলিভ কিটরিজ মিনি সিরিজের নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ওটা দেখতে হতই, কিন্তু তার আগে বইটাও পড়তে হত। বইটা পড়ে ফেলেছি, এবার সিরিজটা দেখতে হবে।
Deleteসত্যি মজার। তুমি ফ্রান্সিস ম্যাকডরম্যান্ডের জণ্য বইটা পড়লে আর আমি সিরিজটা দেখে ওনার ফ্যান হয়ে গেলাম। আর বইটা পড়ে এলিজাবেথ স্ট্রাউটের। একটা বই পড়েই উনি মোস্ট ফেবারিট অথর হয়ে গেলেন।
ReplyDeleteonekdin por ese ei post ta age chokhe porlo keno ke jane . darun obhinob post . kintu dudh chini dewa kora cha ar ada diye dudh cha ta bad gelo je :D
ReplyDeleteঅনেক রকম চা-ই বাদ পড়েছে, প্রদীপ্ত। আসলে তাড়াহুড়োয় লিখেছি, তাই ভাবার সময় দেওয়া যাচ্ছিল না। তোমার পোস্টটা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। থ্যাংক ইউ।
Delete