সাপ্তাহিকী



"স্বপ্ন তো অনেক দেখেছি। তবে একবার একটা ইন্টারেস্টিং স্বপ্ন দেখেছিলাম। কেওড়াতলা শ্মশান থেকে যে সিঁড়িগুলো নেমে গেছে জলের দিকে, ওটাকে অনেকে আদি গঙ্গাও বলে থাকেন, ওখানে গঙ্গায়  জোয়ার ভাঁটা আসে। কেন জানি না ওই ঘাটটাকে নিয়ে আমি অনেক স্বপ্ন দেখেছি। যা হোক, স্বপ্নটা ছিল এইরকম, আমি দেখলাম সেই ঘাটটায় একটা নৌকো এসে দাঁড়িয়েছে। ওটা যেন ঘাট পেরিয়ে গঙ্গা, গঙ্গা থেকে মোহনা তারপর সমুদ্রে পড়বে। …তো আমি দেখছি ঘাটে একজন মেয়ে মাঝি সেই নৌকার পাটনি। সে-ই নৌকা বাইবে আর কি। চারদিকে খুব ভিড়। অনেক টেম্পো বোঝাই জিনিসপত্র। এমন সময় দেখি ভিড় ঠেলে বঙ্কিমচন্দ্র আসছেন, সেই মাথায় শামলা যেমন সাজতেন আর কি। তাঁকে দেখেই মেয়ে মাঝি স্পষ্ট বীরভূমের ভাষায় বলল, আপনি ধড়াচুড়ো ছেড়ে আসেন কেনে। উনি তাড়াতাড়ি সব ছেড়ে-টেড়ে একটা খেটো ধুতি পরে এলেন।…।

…এরপর রবীন্দ্রনাথ। তাঁর সঙ্গে বহু মালপত্র। তাঁকেও মাঝি এত জিনিসপত্র নিয়ে উঠতে দিলেন না। শুধু হাতে একটা চটি বই, সম্ভবত চতুরঙ্গ হবে, নিয়ে উঠে পড়লেন তিনি। সবচেয়ে হাইট হয়েছিল শরৎচন্দ্রের বেলায়। তাঁকে তো মাঝি সরাসরি বলেছিল, তুমি বাপু পরের খেপে। …পরের খেপ শোনার সঙ্গে সঙ্গে তীরে দাঁড়ান যত শারদ ঔপন্যাসিকরা ছিল তাদের মালপত্র নিয়ে সরে গেল, আর যেমন গ্রিক কোরাসে হয় এমন একটা রব শুনলাম। জায়গাটা এক্কেবারে ফাঁকা হয়ে গেল, বেশ মনে আছে। তারপর দেখলাম মানিকবাবু এলেন। হাতে একটা টিনের সুটকেস দড়ি দিয়ে বাঁধা, তাতে লতাপাতা ইত্যাদি আঁকা। তো তাঁকে আমরা ঠেলেঠুলে নৌকায় তুলে দিলাম। কমলদা অর্থাৎ কমলকুমার মজুমদার গটগটিয়ে উঠে পড়লেন। সুনীলকে নিয়ে বেশ মজা হয়েছিল। সে কিছুতেই উঠতে চাইছে না আর আমরা তাঁকে তুলবই। এমনটা হতেই সুনীল শক্তির খোঁজ করল। কে যেন বলল, স্বপ্নে বোঝা যায়নি, শুধু তার কণ্ঠস্বর শুনেছিলাম, শক্তি তো আগেই একটা বয়া ধরে দূরে অপেক্ষা করছে। নৌকা এগোলেই সে উঠে পড়বে।…

…নৌকা ছাড়ার মুহূর্তে দেখেছিলাম কোথা থেকে একটা কাক কুয়াশার ভেতর থেকে উড়ে এসে মাস্তুলে বসল। এভাবেই স্বপ্নটা শেষ হয়েছিল, তো স্বপ্নটা বলার পর উৎপল (উৎপলকুমার বসু) বলেছিল কাক কোথায়, ওতো জীবনানন্দ দাশ। প্রান্তরের কুয়াশায় উড়ে যেতে দেখিনি কি কাক, পড়েননি?"

(৯-২-১৯৯৭ এ প্রতিদিন-এ 'খোয়াবনামা' নামে সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের একটি লেখার অংশ। লেখাটিকে অনুলিখন বলে জানানো হয়েছে।) 

*****



ব্রেন সুস্থ রাখতে অষ্টপ্রহর কানে গান গুঁজে রাখা বন্ধ করুন। 

এম আই টি-র বিজ্ঞানীরা এমন ক্যামেরা বার করেছেন যা বন্ধ বই পড়ে ফেলতে পারে। 

আমার যদি অনেক টাকা থাকত তাহলে আমি অবান্তরের সব পাঠককে এই কার্ডটা পাঠাতাম। 

স্পয়লার সম্পর্কে আমারও ঠিক এই মত।

অর্চিষ্মান আর আমার সংসারে এই যন্ত্রটা একটা জরুরি সংযোজন হতে পারে। 

কুইজ/খেলা

অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিতে টাটকা যোগ হওয়া গোটা দশ শব্দের মানে বলতে পারেন কি না দেখুন তো। 

এই বইগুলো কেন ব্যান হয়েছিল বলুন দেখি। 

এ সপ্তাহের গান



Comments

  1. সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের একটি লেখার অংশ।

    puro chumu lekha.complete ta khujte hobe to..

    prosenjit

    ReplyDelete
    Replies
    1. এটা সন্দীপনের গদ্যসমগ্রর দ্বিতীয় খণ্ডে আছে, প্রসেনজিৎ।

      Delete

Post a Comment