মিতুলের মাদার্স ডে
মা তুমি মাদার্স
ডে-তে কী চাও? সত্যি সত্যি?
অনেকবার, অনেকরকম
ভাবে প্রশ্নের উত্তরটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মিতালী। সত্যি উত্তরটা। কিচ্ছু চাই
না, লাটাইসোনা। এই যে তোমাকে পেয়েছি, তাতেই আমার সবটুকু পাওয়া হয়ে আবার খানিকটা
উপচেও পড়েছে। কিন্তু তাতে তাঁর মুখের ওপর অচঞ্চল ফোকাস ফেলে তাকিয়ে থাকা বড় বড়
চোখদুটো থেকে অবিশ্বাস যায়নি। জ্যান্ত লোক কী করে মাদার্স ডে-র গিফট হতে পারে? তাও
আবার সেটা যদি সে নিজেই হয়? লাটাই কি চকোলেট? নাকি গ্রিটিংস কার্ড?
মাদার্স ডে-র
উপদ্রবের উৎসটি বাকি সব উপদ্রবের উৎস থেকে ভিন্ন নয়। স্কুল। সন্তানের মনে মায়ের
মর্ম যাতে একেবারে রন্ধ্রে রন্ধ্রে গাঁথা হয়ে যায় সে দিকে টিচারদের নজর কড়া।
ক্র্যাফট ক্লাসে মহা ধুমধাম করে কার্ড আঁকা চলছে। হাতে রং মেখে কাগজে
ছাপ ফেলে মেমোরি মেকিং। তারপর সাদা ইউনিফর্ম থেকে সে রঙের মেমোরি কে তুলবে সেটা ভাববেন
মায়েরা। দিদিমণিদের দায়িত্ব ততক্ষণে শেষ।
এই তো তুমি কী
সুন্দর কার্ড বানাচ্ছ আমার জন্য? ওতেই হয়ে যাবে তো লাটাই, আর কিচ্ছু চাই না।
লাটাইয়ের মুখ দেখে
বোঝা যায় কথাটা তার মনে ধরেনি। কার্ড তো ক্লাসের সবাই বানাচ্ছে। সবাই কার্ডে লাল
কাগজের হার্ট সেঁটে তার নিচে চুমকি দিয়ে লিখছে, ‘আই লাভ ইউ, মা’। ওতে স্পেশাল কী হল? বাকিদের থেকে আলাদা
হতে চায় লাটাই। তার মাকে অন্য মায়েদের সঙ্গে একাসনে বসানোর কথা ভাবলেই লাটাইয়ের
রাগ ধরে যায়।
মিতালীর কাছে ছেলের
দুশ্চিন্তা লুকোনো থাকে না। অন্য সময় লোকের মুখে ‘ছেলে তো পুরো মায়ের কার্বন কপি’
শুনলে তাঁর গর্বই হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে গর্বের থেকে দুঃখের ভাগটাই বেশি। গেল রে
লাটাই, সারাজীবনের মতো তোর সব আরাম গেল।
অফিসে বসে কাজের
ফাঁকে ফাঁকে লাটাইয়ের চিন্তিত মুখটা ভেসে উঠতে থাকে মিতালীর মনে। বেচারা। মিতালী
প্রাণপণ চেষ্টা করেন লাটাইয়ের হয়ে নিজের জন্য একটা ভালো দেখে উপহার খুঁজে বার
করতে, পান না। ফুল? বড় ক্ষণস্থায়ী। গল্পের বই? মিতালীর আন্দাজ আছে ছেলের টেবিলে
রাখা পেটমোটা শুয়োরছানার পেটে কত টাকা জমে থাকতে পারে। সে দিয়ে ‘100 Ways to Tell Your Mom You
Love Her’ গোছের বইও হবে না।
সারাদিন ফাইল চালানোর ফাঁকে ফাঁকে ভাবেন মিতালী। একবার ভাবেন টিফিনটাইমে
ক্যান্টিনে গিয়ে মেয়েদের জটলার দ্বারস্থ হবেন। ওখানে মায়ের অভাব নেই, মাদার্স ডে-র
যোগ্য উপহারের সাজেশনেরও অভাব হবে না। কিন্তু শেষমেশ গিয়ে উঠতে পারেন না। গেলে
সবাই নির্ঘাত ভাববে মিসেস মিত্রর মাথাটা গেছে।
বাড়িতে ফেরার পথে গাড়ির জানালার ওপারে আকাশটার দিকে তাকিয়ে থাকেন। শেষ বৈশাখের আকাশে
মেঘের ছিটেফোঁটা নেই কোথাও। সাড়ে ছ’টা বেজে গেছে কখন, এখনও চারদিকে ফটফট করছে আলো।
সিগন্যালে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেন মিতালী। এই সময়টা তাঁর নিশ্ছিদ্র অবসর।
অফিস নেই, বাড়ি নেই, আশা নেই, আনন্দ নেই, দুঃখ নেই, এমনকি মাঝে মাঝে চমকে উঠে
মিতালী আবিষ্কার করেছেন, লাটাইও নেই। অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি। এই সাতাশ মিনিট
মিতালী সম্পূর্ণ একা, সম্পূর্ণভাবে নিজের।
আজ সেই স্বাধীনতাটুকুতেও ছেদ পড়ছিল বার বার। লাটাইয়ের মুখটা ভেসে উঠছিল
মিতালীর চোখের সামনে। বড় বড় দুটো চোখ মিতালীর চোখের দিকে সোজা তাকিয়ে জানতে
চাইছিল,
কী চাও মা তুমি? সত্যি সত্যি?
মাদার্স ডে-তে কী চান তিনি? লাটাইয়ের স্বর্গীয় সঙ্গ ছাড়া? নিজের বুকের মধ্যে
ডুব দিয়ে উত্তর খুঁজতে থাকেন মিতালী। মাদার্স ডে-তে কী পেলে মন ভরবে তাঁর?
চেতনার অতলে একটা নড়াচড়া শুরু হয়। একটা ইচ্ছে যেন দানা বেঁধে উঠছে? মিতালী
একমনে অপেক্ষা করে থাকেন। কখন
সে অবয়ব ধরে তাঁর সামনে এসে দাঁড়াবে। বুকের ভেতর জমে থাকা সময়ের পলি ওলটপালট হয়,
ভাঙে গড়ে, ঢেউয়ের মতো ওঠে আর পড়ে। অবশেষে সে ভাঙচুরের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে
একটিমাত্র চাওয়া।
আর যদি শুধু একটিমাত্র দিন। আর যদি মাত্র চব্বিশটা ঘণ্টা।
মিতালী চমকে ওঠেন। এখনও,
এতদিন বাদেও এই ইচ্ছেটা বেঁচে আছে? আনমনে হাতের কর গোনেন। স-তে-এ-রো বছর। সতেরো বছর পরেও একটিমাত্র দিনের আকাঙ্ক্ষা তাঁর ফুরোয়নি?
মিতালীর গলার কাছটা টনটন করে। ইচ্ছে পূর্ণ হবে না বলে নয়, লাটাইয়ের জন্য।
লাটাইয়ের ছোট্ট হতাশ মুখটার জন্য। বেচারা কী করে এনে দেবে মাকে, যে জিনিসটা মায়ের
সত্যি সত্যি চাই? পৃথিবীর কেউ যেটা পারবে না সেটা কী করে পারবে ওই একফোঁটা ছেলে?
রাতে খাওয়াদাওয়ার পর লাটাইকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ান মিতালী
মিত্র। আকাশ জুড়ে চাঁদ উঠেছে। চাঁদের
গায়ের চারদিকে ঘিরে রয়েছে একটা মেঘের বলয়। চাঁদের গা ঘিরে মেঘ করলে কি বৃষ্টি হয়?
নাকি চাঁদের রং লালচে হলে? মা কী যেন বলত? মনে পড়ছে না। মাত্র সতেরো বছরে তিনি এত
জরুরি কথাটা ভুলে গেলেন কী করে? চাঁদের দিকে তাকিয়ে চোখ জ্বালা জ্বালা করে ওঠে
মিতালীর। নাছোড়বান্দা ইচ্ছেটা আবার ফিরে আসে। আর যদি একটা মাত্র দিন . . . মাত্র
চব্বিশটা ঘণ্টা . . .
*****
রুমালে খুচরো পয়সা গিঁট বাঁধতে বাঁধতে মা অবশেষে যখন ঘর থেকে বেরোলেন, তখন
মিতুলের মাথা চারবার গরম হয়ে, পাঁচবার ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।
হল তোমার? অবশেষে?
হল। লজ্জিত হেসে বলেন মা। মিতুল
ভুরু কুঁচকে পরীক্ষকের ভঙ্গিতে মায়ের দিকে তাকাল। মাথার দুপাশের কুচো
অবিন্যস্ত চুল উড়ছে, প্রসাধনের ‘প’ বিবর্জিত মুখে জ্বলজ্বল করছে একটি লাল সিঁদুরের
ফোঁটা। মাড়হীন শাড়ি সাধারণ করে পরা। কড়কড়ে মাড় দেওয়া শাড়ি পড়তে নাকি লজ্জা করে
মায়ের। মিতুল নিজের মনেই চোখ ঘোরাল। মুখে
কিছু বলল না। আজ মা’কে বকবে না ও। মনে মনে ঠিক করেছে। তবু সামলানো গেল না।
মা, আবার তুমি রুমালে পয়সা বেঁধে চলেছ? মেজদি যে বটুয়াটা এনে দিয়েছিল সেটা
কোথায় গেল?
মা উত্তর না দিয়ে মিতুলের হাত ধরে টানতে টানতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন। রুমালপুঁটলি ধরা হাত
আকাশের দিকে তুলে ডাক দিলেন, রিকশা, এই রিকশা।
মায়ের সঙ্গে মায়ের মামাবাড়ি যাচ্ছে মিতুল। উঁহু, মনে মনে নিজেকে সংশোধন করে
মিতুল। মাকে নিয়ে মিতুল মায়ের মামাবাড়ি যাচ্ছে। মায়ের সঙ্গে তো যেত সেই কোন
ছোটবেলায়। মান্ধাতার আমলে। রাস্তাঘাট ভালো
করে মনে নেই, কিন্তু ২ নম্বর বসাক লেনের বাড়িটা পরিষ্কার মনে আছে। বড়বাজারের গলি,
তস্য গলির ভেতর প্রকাণ্ড তিনতলা ইমারত। শরিকে শরিকে ছয়লাপ। বাইরে দেখলে মনে হয়
তাপ্পি মারা ধুধ্ধুড়ে কাঁথা। মায়ের বড়মামা উকিল ছিলেন, ছেলেদেরও কোর্টে
ঢুকিয়েছেন, তাঁর অংশে রঙের পোঁচ। ছোটমামার মনিহারি দোকান চলছে না, ছোটমামার
জানালার পাল্লার কবজা ভেঙে গেছে, নারকেল দড়ি দিয়ে শিকের সঙ্গে শক্ত করে তাকে বেঁধে
রাখা হয়েছে।
ওর থেকে মিতুলদের টানাবারান্দাওয়ালা ভাড়াবাড়ি অনেক ভালো। মনে মনে ভাবল মিতুল।
জোরে বলল না। মা কিছুতেই মানতে চাইবেন না। যেমনই হোক, বাড়ি তো? বাসা তো নয়? তাছাড়া
প্রসঙ্গ উঠলে মা এখনও মনে করান, বসাক লেনের ওই তাপ্পিমারা বাড়ি ছিল বলে শেয়ালদা
স্টেশন থেকে সোজা রিফিউজি ক্যাম্পে গিয়ে উঠতে হয়নি। তাঁদের সঙ্গে ট্রেনে
আসা বাকি বেশিরভাগ পরিবারকেই যা করতে হয়েছিল।
মামাবাড়ির স্টপেজে বাস থেকে নামল ওরা। মায়ের হাত শক্ত করে
চেপে রাস্তা পার হল মিতুল। করণীয়
কাজের লিস্ট স্টেপ বাই স্টেপ মাথার ভেতর পুরে নিয়েছে ও। এবার একটা মিষ্টির
দোকান খুঁজতে হবে। ওই তো। মিষ্টির দোকানে ঢুকে মিতুল মাকে হুকুম দিল মিষ্টি পছন্দ করতে।
কিপটেমো করবে না মা, খবরদার। বেশি করে নেবে।
মায়ের ওপর মিতুলের এই গার্জেনগিরির ভাবটা বেশিদিনের পুরোনো নয়। মাস ছয়েক।
গার্জেনগিরির মূলে আত্মবিশ্বাস, আত্মবিশ্বাসের মূলে সদ্য পাওয়া চাকরি। পুঁচকে,
কিন্তু সরকারি। সেটা পাওয়ার পর গত ছ’মাসে বাবা, দাদা, দিদি, ছোটবোন সবাইকে উপহার
কিনে দিয়েছে মিতুল। মা বাকি ছিলেন। তার কারণ এই নয় যে মিতুল মাকে ভালোবাসে না,
কারণ হচ্ছে মা কিছুতেই বলছিলেন না তিনি কী চান। মায়ের নাকি কিছুই চাই না। মিতুল যে
চাকরি পেয়েছে তাতেই নাকি মায়ের সব পাওয়া হয়ে গেছে। ছ’মাসের সাধ্যসাধনার
পর অবশেষে মায়ের মন গলেছে, মা মুখ ফুটে বলেছেন, একবার যদি বড়বাজার যাওয়া যায় . . .
অনেকদিন যাওয়া হয়নি আসলে . . .
মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে ওরা রাস্তায় নামে। ততক্ষণে রোদ্দুর প্রায় মধ্যগগনে। বড়বাজারের জনস্রোতের
মধ্য দিয়ে মামেয়ে হাঁটে। এতদিন বাদে এলেন, তবু মাকে দেখে মনে হচ্ছে রাস্তাঘাট
ভোলেননি তিনি। আত্মবিশ্বাসী পদক্ষেপে হাঁটছেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ, ঠ্যালাগাড়ির
ধাক্কা এড়াতে মিতুলকে রাস্তার ধারের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছেন মা। পথের পাশে ঝুড়ি সাজিয়ে
ফলওয়ালারা বসেছে। মিতুল মায়ের হাত ধরে টেনে থামায়। ফল নেবে মা?
না না লাগবে না, মিষ্টি নিলাম তো।
মিতুল ততক্ষণে ফলওয়ালার সামনে। দুই ঝুড়ি ভর্তি করে আম নিয়ে বসেছে ফলওয়ালা।
একটা ঝুড়িতে মোটা মোটা সোনালী হিমসাগরের ঢিপি, অন্য ঝুড়ির আমগুলো অপেক্ষাকৃত দুঃখী
দেখতে। মা স্বাস্থ্যবান ঝুড়ির আমগুলো হাতে তুলে নিয়ে দেখতে গিয়েও হাত সরিয়ে দুঃখী
ঝুড়ির দিকে বাড়ান। মিতুল ঝাঁপিয়ে পড়ে।
দাদা দিন তো ওই আমগুলো, পাঁচ কেজি।
ওরে পাগলী, পাঁচ না পাঁচ না, কেজি দুই দাও তো বাবা। ভালো দেখে দিও, হ্যাঁ?
বিকেলে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যে নেমে যায়। কী ক্লান্ত লাগছে, বাপরে। একে এই গরম,
তার ওপরে সারাদুপুর ঘুরে ঘুরে মামিদের দুঃখ আর নালিশের পাঁচালী শোনা। মা-ও ক্লান্ত হয়েছেন,
কিন্তু মুখের হাসিটা জ্বলজ্বল করছে। মিতুলের ইচ্ছে করছিল ব্যাগট্যাগ ছুঁড়ে ফেলে
মেঝেতে চিৎপাত হয়ে শুয়ে পড়তে। রোজ যেমন পড়ে। কিন্তু ইচ্ছেটাকে কড়াগলায় শাসন করল ও।
রান্নাঘরে গিয়ে দুমদাম করে বাসন সরিয়ে চায়ের বাটি খুঁজতে খুঁজতে চেঁচিয়ে বলল, মা
তুমি গা ধুয়ে এস, আমি চা-মুড়ি নিয়ে আসছি।
এইবার মা আর চুপ করে থাকতে পারলেন না। অনেক গার্জেনগিরি সহ্য করেছেন তিনি
মিতুলের। আর না। মিতুলের কি কম পরিশ্রম হয়েছে? এই গরমে তাঁর মতো একটা নড়বড়ে লোককে
নিয়ে সারা শহর চষে বেড়ানো কি এইটুকু মেয়ের পক্ষে সোজা? কাল আবার অফিসও তো যেতে
হবে? মা আর কোনও কথা শুনবেন না। এইবার মিতুল স্নান করবে আর মা চা বসাবেন। নাকি ঘোল
করে দেব রে মিতুল? এই গরমে এতবার চা খাওয়া ভালো না কিন্তু।
মিতুল উত্তর দেয় না। দড়িতে ঝুলন্ত গামছা নামিয়ে এনে মায়ের কাঁধে চাপিয়ে ঠেলতে
ঠেলতে বাথরুমে ঢুকিয়ে দরজা টেনে দেয়।
চা আর মুড়ির বাটি নিয়ে বারান্দায় এসে বসল যখন ওরা তখন সেনবাড়ির তিনতলা ছাদের
কোণ কালো করে এসেছে। বৃষ্টি হলে কী মজা হবে না মা?
মা হাসেন। মেয়ের
মাথায় হাত বুলোন। কী ভালো রং হয়েছে রে চায়ের মিতুল। আমার থেকে একশোগুণ ভালো। মিতুল
রাগ দেখিয়ে বলে, উফ রং দিয়ে কী হবে, খেয়ে দেখো আগে। কিন্তু মনে মনে খুশি
হয়। মায়ের থেকে ভালো হওয়ার
দরকার নেই, মায়ের মতো ভালো হলেই মিতুল বর্তে যাবে।
মা, সেই গানটা গাও না গো।
ধুর আমি কি গাইতে পারি?
কেন, রান্না করতে করতে গাও তো। কী
সব দুর্গতিটুর্গতি . . .
ওঃ ওটার তো কথা মনে নেই। নিজের
কথা বসিয়ে গোঁজামিল দিই।
গোঁজামিলই শুনি না।
মেয়ের সঙ্গে তর্কে হার মানেন মা। দু সেকেন্ড চোখ বুজে থেকে শুরু করেন।
কোথা ভবতারা, দুর্গতিহরা/ কতদিনে মাগো করুণা হবে . . .
মাথা অল্প দুলিয়ে দুলিয়ে মা গান। ক্ষীণ গলায়। গানের লাইন শেষ হওয়ার আগেই দম
শেষ হয়ে যাচ্ছে, তবু কী মিষ্টি। মিতুলের গলাটা যদি এমন হত।
কবে দেখা দিবি, কোলে তুলে নিবি/ সকল জ্বালা জুড়াবে . . .
মিতুল দেখে গাইতে গাইতে দু’ফোঁটা জল এসে জড়ো হয়েছে মায়ের চোখের কোলে। মুক্তোর
মতো টলটল করছে, কিন্তু গড়িয়ে পড়ছে না।
কালো ছায়াটা সেনদের ছাদ টপকে, তালগাছের মাথা পেরিয়ে ঝাঁপ মারল ওদের বারান্দার
ওপর। নিমেষে ধুলোয় ধুলোময় চারদিক। একটা কান ফাটানো আওয়াজ। পাশের বাড়ির তিনতলার
ছাদের অ্যাসবেসটসের ছাদটা পাখির মত ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে। ধুলোর কুণ্ডলী পাকিয়ে
পাকিয়ে উঠছে রাস্তার ওপর। মিতুল আর মিতুলের মা দ্রুত হাতে চায়ের কাপডিশ তোলে,
মাদুর গোটায়। পর্দাগুলো পাগলের মতো উড়ছে। শিগগিরি ওঘরের জানালাগুলো দিয়ে আয় মিতুল,
এই সবে ঝাঁট দিয়ে গেছে। লোডশেডিং। ঘরের
ভেতর ঘুরঘুটে অন্ধকার। মিতুল মায়ের আদেশ পালন করতে ছোটে। মা চেঁচান, আস্তে যা,
চৌকাঠে হোঁচট খাবি।
বৃষ্টি ধরল যখন তখন অনেক রাত। খাওয়াদাওয়া সেরে শুয়ে পড়েছে মিতুলরা। মায়ের
বিয়েতে পাওয়া আদ্যিকালের খাট, খাটে জানালার দিকে মা, মায়ের পাশে মিতুল। মা ঘুমিয়ে
পড়েছেন অনেকক্ষণ। মিতুলের ঘুম আসছে না। মিতুলের মনে হয় মা’কে ঠ্যালা দিয়ে তুলে
দেয়, দিয়ে বলে গল্প করো। কিন্তু মা এত অকাতরে ঘুমোচ্ছেন, দেখে মায়া হয় ওর। জানালার ফাঁক দিয়ে ফিকে
জ্যোৎস্না এসে পড়েছে মায়ের ভাঙাচোরা রোগা মুখটার ওপর। মিতুল তাকিয়ে থাকে।
জ্যোৎস্নার আলোতে মায়ের মুখটা অন্যরকম দেখতে লাগছে। চোখের কোলের কালিটা
পাতলা হয়ে এসেছে, বলিরেখাগুলো মিলিয়েই গেছে প্রায়। ঠোঁটের কোণে একটা আবছা
হাসিও কি লেগে আছে মায়ের?
তাকিয়ে থাকে মিতুল। আধবোজা চোখের পাতার নিচে কী স্বপ্ন দেখছে মা এখন? মিতুলের
খুব জানতে ইচ্ছে করে। মায়ের স্বপ্নে কি এই টানা বারান্দাওয়ালা বাড়িটা আছে? নাকি ওই
জানালার শিকে নারকেল দড়ি বাঁধা বসাক লেন? নাকি অন্য কোনও একটা জগৎ, শেয়ালদা
স্টেশনের ওপারে ফেলে আসা? যে জগতের ছবি কল্পনাতেও চোখের সামনে আঁকতে পারবে না
মিতুল। কারণ মায়ের সে জগৎটায়
মিতুল নেই। মিতুল নেই, মেজদি নেই, মামাবাড়ি নেই, মামিদের ঘ্যানঘ্যানানি নেই, দুর্গতি,
ভবতারা-টারা কেউ নেই।
কিচ্ছু নেই।
হঠাৎ মায়ের জন্য ভীষণ মায়া হয় মিতুলের। প্রকাণ্ড একটা মমতার স্রোত ফুলেফেঁপে
উঠে বুকের ভেতর ধাক্কা মারে। হাত দিয়ে মাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে মিতুল। মায়ের শরীরটা
কেমন ছোট্ট আর হালকা হয়ে এসেছে। পাখির মতো। মিতুল সাবধানে জড়িয়ে রাখে মাকে। কেন
যেন মনে হয়, ওর এই দু’হাতের ভেতর থেকেই মা এক্ষুনি টুক করে স্বপ্নের মতো মিলিয়ে
যাবেন। খোলা জানালা দিয়ে উড়ে গিয়ে জ্যোৎস্নার সমুদ্রে মিলিয়ে যাবেন মিতুলের মা।
মিতুলকে একলা ফেলে রেখে। কী হবে তখন মিতুলের? ভয়ে বুকের ভেতরটা হু হু করে ওর। মাকে
ভালো করে আঁকড়ে ধরে মিতুল, যাতে মা পালাতে না পারেন। মায়ের গা ঘেঁষে শুয়ে থাকার এই
মুহূর্তটাকে প্রাণপণে বুকের মধ্যে পুরে নিতে চায়। বোকার মতো চোখ থেকে
অঝোরে জল পড়ে চলে। সে জলে মিতুলের বালিশ ভেসে যায়।
আকাশে চাঁদের গায়ে মেঘ জড়িয়ে আসে।
*****
মিতালী চোখ খুললেন যখন তখন জানালার বাইরে আলো ফটফট করছে। কতক্ষণ ঘুমিয়েছেন
তিনি? কী যেন একটা স্বপ্ন দেখছিলেন, সেই বড়বাজারের মামাবাড়িটা, হিমসাগর আমটাম। এ কী, বালিশটা এত ভিজল
কী করে, কাঁদছিলেন নাকি তিনি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে? বোঝো।
খুট করে একটা শব্দ হয়ে দরজাটা অল্প ফাঁক হয়। ফাঁক দিয়ে একটা ছোট্ট
শ্যামলা মুখ উঁকি মারছে।
ও মা, তুমি উঠে পড়েছ লাটাই? ইস, কতক্ষণ ঘুমোচ্ছি। ধড়মড় করে বিছানায় উঠে
বসলেন মিতালী।
লাটাই উত্তর দেয় না। খুব সাবধানে দরজা ঠেলে ঘরের ভেতর ঢোকে। উত্তর দেওয়া সম্ভব
না এখন লাটাইয়ের পক্ষে। কাপপ্লেট বসানো একটা ট্রে হাতে ধরে ভীষণ সাবধানে পা টিপে
টিপে হাঁটছে লাটাই। মনঃসংযোগে ভুরু কুঁচকে আছে।
মিতালী লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নামতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেন। দ্রুত হাত চালিয়ে
বেডসাইড টেবিল থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে জায়গা করে দেন। লাটাই সাবধানে ট্রে টেবিলে
নামিয়ে রাখে।
মিতালী ছেলেকে টেনে এনে কোলের কাছে বসান। থ্যাংক ইউ, লাটাই। তুমি আমার জন্য এত
কষ্ট করেছ সোনা?
কষ্ট হয়নি তো। বড়দের মতো করে বলে লাটাই। তারপরেই সমস্ত সংযমের বাঁধ ভেঙে আসল প্রশ্নটা বেরিয়ে আসে।
তুমি খুশি হয়েছ মা?
ওমা হইনি আবার? এর থেকে বেশি খুশি কি আর কিছুতে হতাম আমি? তুমি কী করে জানলে
লাটাই, আমি সত্যি কী চাই?
মিতালীকে অভিনয় করতে হয় না। সত্যি সত্যিই সকালের এক কাপ গরম চা ছাড়া মিতালীর
জীবনে আর বেশি কিছু চাওয়ার নেই।
চায়ের ট্রে-র দিকে দৃষ্টি ফেরান মিতালী।
কী সুন্দর চা হয়েছে! পারলে এত কাজ করতে তুমি একা একা?
আগে খেয়ে দেখ।
মিতালী চায়ের কাপে চুমুক দেন। চিনি নেই। দরকারও নেই। তাঁর দিকে আকুল আগ্রহে
তাকিয়ে থাকা মিষ্টি মুখটাই যথেষ্ট।
বুকের একদম ভেতর থেকে একটা সুখের ‘আঃ’ বেরিয়ে আসে মিতালীর। কী ভালো, কী ভালো। আমিও পারতাম না এত ভালো
চা করতে।
লাটাইয়ের টেনসড্ কাঁধদুটো এতক্ষণে শিথিল হয়। সত্যি বলছ মা?
সত্যি, সত্যি, সত্যিইইই বলছি।
চায়ের কাপ হাত থেকে নামিয়ে রেখে ছেলেকে বুকে টেনে নেন মিতালী।
হ্যাপি মাদার্স ডে, মা।
হ্যাপি মাদার্স ডে। ছেলের পশমের মতো চুলে চোখে চলে আসা জলটুকু মুছে ফেলেন মিতালী। মিতুলের মাদার্স ডে
কানায় কানায় ভরে উপচে পড়ে।
amar o Mother's day aaj kanai kanai bhore gechhe... meye ghum theke uthe e amai dekhte peye fokla mukhe ekgal hasi diyechhe..
ReplyDeletekhub bhalo laglo...
আরে কেয়া বাত কেয়া বাত, গোবেচারা। কনগ্র্যাচুলেশনস। কী নাম রাখলে তোমার মেয়ের?
Deletemeye ke dakchhi Kuhu bole!! :D
Deleteবাঃ, খুব সুন্দর নাম হয়েছে, গোবেচারা।
Deleteদারুণ...
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ।
DeleteAmi jantam aaj erom kichu ekta chapte choleche Abantor-e. :)
ReplyDeleteদেখেছেন, রহস্যটা মেন্টেন করতে পারিনি।
Deleteamar bari peye gelo!!!!!! bari jabooooo....
ReplyDelete'বাড়ি পেয়ে যাওয়া' কথাটা ভালো তো। শিখে নিলাম।
Delete*Sniff*
ReplyDeleteসেরেছে।
DeleteAha
ReplyDeleteসবাই এ রকম মোনোসিলেবলে কথা বলছে কেন?
DeleteLekhata pore bakyihara.tai.
Deleteহাহা, হ্যাঁ নিচে অদিতি সেরকমটাই বলেছে।
DeleteShundor laglo.....
ReplyDelete;-)
থ্যাংকস, দয়িতা।
Deleteখুব সুন্দর লেখা হয়েছে কুন্তলা। আর মা দের নিয়ে এটা ভারী সমস্যা, তাই না? কিছুতেই কিছুই নিতে চায়না। দেশে যাওয়ার সময়ে কি চাই কি চাই করে মাথা খারাপ করে ফেললেও কিছুতেই বলতে পারেনা কিছু চাই কিনা। খালি বলে কিছুই চাইনা।
ReplyDeleteমাদের নিয়ে আরও অনেক সমস্যা আছে, আমার মতে এটা তাদের মধ্যে সবথেকে সোজা সমস্যা।
DeleteKhub bhalo laglo. :-)
ReplyDeleteআপনি যেহেতু মাদার, তাই আপনাকে আমার তরফ থেকে সুখী মাতৃদিবসের শুভকামনা জানাই ইচ্ছাডানা।
DeleteOnek dhonyobad Kuntala, ma hobar por sotti bujhechhi ma era "Ma" sabdotai amader kachhe sobtheke boro paoa , sobtheke priyo gift ta oidini paoa hoe jai. - ichhadana
Deleteআমার মায়েরও হাবভাবটা সেরকমই দেখি। খুবই ইললজিক্যাল।
Deleteবাঃ!
ReplyDelete(সবাই মনোসিলেবলে কমেণ্ট করছে কারণ যে জিনিস তুমি দিয়েছ তার পরে আর কথা বেরোয় না)
হাহাহাহা, তোমার ব্যাখ্যাটা পড়ে আমার এমন জোরে হাসি পেয়ে গেল অদিতি। এ যেন অনেকটা 'থোঁতা মুখ ভোঁতা করে দেওয়ার মতো'। তোমার যে গপ্পটা ভালো লেগেছে সেটা জেনে আমি খুব খুশি হলাম অদিতি। থ্যাংক ইউ ভেরি ভেরি মাচ।
Deletekhub khub khub bhalo laglo... a huuuge thanks and a large hug...
ReplyDeleteIniya
তোমাকেও ফেরৎ 'হাগ' ইনিয়া। লেখা ভালো লেগেছে বললে বলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। মারাত্মক টেনশন হচ্ছিল।
DeleteChokhe jol eshe gelo, Kuntala! Ar opore Arnaber comment ta dhar kore bolchhi amar "ma peye gelo"! Bhalo theko ar bhalo likho Kuntala!
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ রুণা। তুমিও খুব ভালো থেক, আর যেমন ভালো করে অবান্তরকে মনোযোগ দিচ্ছ, তেমনি ভালো করেই আরও অনেক অনেকদিন দিও।
Deleteঅফিসে বসে আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে কখন যে গালদুটো ভিজে গেল, টের পেলাম না।
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, অরিজিত।
Deletekhub bhalo likhecho kuntala di.. darao, ekkhuni bari te akta ph kore kal ke mayer opor je raag korechilam tar jonye sorry bole nii..
ReplyDeletetumi ei lekha gulo sotyi boddo bhalo lekho..
কাকিমার সঙ্গে ভাব করে নাও স্বাগতা, শিগগিরি। লেখা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
Deletedarun lekha-ta.office-e boshe porte porte chokh bhije gelo. Ma kathata-r moddhei ekta aram lukiye ache... tai na? aamar meye-ta aajkeo khub kendeche amar office ashar shamay...lift obdi kandte kandte esheche...mamma tumi jeo na....last week chuti niyechilam ami r o khub maja korechi...jal diye mati diye shakpata diye ranna korechi, galpo shunechi...shuniyechi, nach korechi...khub maja korechi ma r meye...kintu kato chuti neoya jay balo!
ReplyDeleter ma dant-er byatha r pa-yer byathay kator...kal khub kashto kore katha boleche...ma-r shathe katha bala-r par amar khub kanna pacchilo...
amar dui ma-i kono na kono karane aaj kendeche...kashto hay na balo!
jodi superlady hote partam ba niden pokkhe bhut-er raja-r bar petam khub bhalo hoto...
বুঝতে পারছি তোমার জঘন্য একটা দিন কেটেছে, দেবশ্রী। কালকের দিনটা ভালো কাটবে, দেখো।
Deleteতোমাকে মাতৃদিবসের অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
Lekhata samparke Kichu bolar r bhasha nei Kuntala Di...:).tai ektu katha dhar karte hacche...
ReplyDelete"E tumi kamon tumi...chokher taray ayna dharo..."
ওরে বাবা, কী ভালো প্রশংসা। থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ।
DeleteSuper Like !!!
Deleteঅজস্র ধন্যবাদ, আত্মদীপ।
DeleteEi lekhatay comment na karata annyay habe. Er modhhye besh kichhu lekha khub bhalo hoyechhe jaar modhhye Auto aar Sumon ke niye lekha duto asadharon. Aajker lekhata pore mone holo ki korchho tumi- ei sab lekha blog-e like kano nashto korchho! Jai hok, aamaro tray hate chhele saat sakaale haajir hoyechhe. Sei tray-te chhilo cha, pancake, hash brown aar fruit salad. Kayek bachhor age chini chhara cha-o peyechhi. Akta card-e kobita lekha hoyechhe. Sei kabita shuru aar sesh cha diye. O amake tatotai bhalobase jatota ami cha bhalobasi. Nijer janmodine paoya giftcard diye gift-o kena hoyechhe ami hajarbaar na kara satteo.
ReplyDeletePorte shuru kore bhablam Mother's day-r commercialization niye kichhu likhchho bujhi. Seta naa karataa attyonto 'cool' hoyechhe.
Amita
দেখেছেন অমিতা, সব ফেলে আমার মন আবার মিলের দিকে ধেয়েছে। চা চা চা। মানবসভ্যতার শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার।
Deleteআপনি কী ভালো ব্রেকফাস্ট খেয়েছেন অমিতা। আমি এদিকে চা আর ডাইজেস্টিভ বিস্কুট ঠুকরেছি। হিংসে হিংসে। তবে আপনার মাদার্স ডে এত ভালো কেটেছে শুনে খুশি হলাম। আমার তরফ থেকেও বিলেটেড শুভকামনা রইল।
আসল কথাটায় আসি এবার। লেখা ভালো লেগেছে বলে খুশি তো হয়েছি, সবসময়ই হই, কিন্তু আপনার মন্তব্যের কি-ওয়ার্ড ওটা নয়। আমাকে যে আপনি 'কুল' বললেন অমিতা... আমার সারাদিনের চেহারা অন্যরকম হয়ে গেল। থ্যাংক ইউ।
Bhalo ketechhe thik-i. Kintu ami amaar maa-ke to kachhe paaini. Meyekeo naa. Meye dorm-e. Aar jodio ei sab day tey-te bishawash korina, kintu hypocrite-er moto chhele meyera kichhu korle bhaloi laage. Biggyapon je katobhabe manushke probhabito kare.Aami aboshhyo aamaar maa-ke phone kara chhara kichhui korinaa.
Deleteচোখ যদি জলে ভরে যায় তাহলে কিছু কি লেখা যায়?এত মন ভরানো লেখা আরো লেখ কুন্তলা।
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ সুমনা। তোমার ভালো লেগেছে জেনে আমারও খুব ভালো লাগল।
DeleteApni awdbhut sundor tukro tukro visuals toiri kawren. Khub i bhalo laglo lekhata.
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, sanbandyo.
Deleteমিতুলের মাদার্স ডে কত মা-দের মন ভরিয়ে দিল। এই দিনে এরকম বিশেষ উপহারের জন্য মা-দের পক্ষ থেকে কুন্তলাকে অশেষ ধন্যবাদ। ধন্যবাদ দিচ্ছে সহস্র মিতুলও, মা-দের জন্য এরকম একটা উপহার তৈরী করার জন্য।
ReplyDeleteঅনেক ধন্যবাদ মালবিকা।
Deletetomar lekhata amar sei gorom cha...jogan diye jao klantihin bhabe....
ReplyDeleteএক্কেবারে গরম চায়ের আসন দিলি? থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ।
Deletetumi dekhchi kandateo paro.....
ReplyDeleteআরে ষাট ষাট, রাখী।
DeleteKhub sundor likhechchen..valo laglo pore
ReplyDeleteধন্যবাদ, সৌগত।
Deleteosadharon , khoooob bhalo laglo , kintu mitalir aro akta din chaoar ortho ta thik dhorte parchina ,
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, অনিন্দিতা। মিতালীদেবী আর একটা দিন ওঁর মৃতা মায়ের সঙ্গে কাটাতে চাইছিলেন আরকি।
DeleteThanx Kuntala :)
ReplyDelete