কুমারডুবির সূর্যাস্ত
ট্রেনটা ভোঁ বাজিয়ে চলে গেল আর দেখলাম একটা খাঁ
খাঁ প্ল্যাটফর্মে আমরা তিনজন দাঁড়িয়ে আছি। আমি বাবা আর মা।
মাথা নিচু করে দেখলাম প্ল্যাটফর্মের ধুলোর নিচে
প্রায় চাপাই পড়ে গেছে গোলাপি রঙের স্ট্র্যাপওয়ালা পুজোয় পাওয়া আমার নতুন জুতো। হঠাৎ
বাবা বলে উঠল, ‘ওই তো!’ মুখ তুলে দেখলাম একটা লম্বা লোক হেঁটে আসছে আমাদের দিকে।
লোকটা আমাদের দেখে হাসছে। বাবামাও লোকটাকে দেখে হাসছে, মাথার ওপর হাত তুলে টা টা
করার ভঙ্গি করছে। এই লোকটার নামই নিশ্চয় মুখার্জিদা।
মুখার্জিদা প্রায় বাবার মতোই লম্বা আর রোগা। বাবার মতো কালো ফ্রেমের চশমাও পরেছে। কিন্তু বাবার সঙ্গে আর বেশি মিল নেই। বাবার থেকে বেশি বড় নয়, কিন্তু বুড়োদের মতো ধুতি পাঞ্জাবি পরেছে। আমার বাবাকে আমি কখনও ধুতি পরতে দেখিনি। না না দেখেছি। সেই যখন দাদু মারা গিয়েছিল তখন। তারপর আর কখনও দেখিনি।
এই রবিবারের ছুটিটা বাকি রবিবারের ছুটির মতো হবে
না গোড়াতেই বুঝেছিলাম। বেড়াতে কেউ কুমারডুবি যায়? যাওয়ার জন্য এত ভালো ভালো জায়গা
থাকতে? নিকো পার্কে যদি নাও নিয়ে যায়, জেঠুর বাড়িতে তো যাওয়া যায়? খাটের ওপর বাবু
হয়ে বসে স্টিলের প্লেটে করে জেঠির হাতের ধোঁয়া ওঠা ডবল ডিমের অমলেট খাওয়া যায় তবে
কেমন সুন্দর। জেঠির বানানো অমলেট আমাদের বাড়ির অমলেটের থেকে অনেক ভালো। বায়না করলে
মা অফিস যাওয়ার সময় মাঝে মাঝে ডিমসেদ্ধর বদলে আমাকে অমলেট করে দেয়, কিন্তু সেটা
খেলেই বোঝা যায় অফিসটাইমে বানানো হয়েছে। একদিন তো নুন দিতেই ভুলে গিয়েছিল। আমি
অবশ্য ভুল ধরিয়ে দিইনি। জেঠির অমলেটে নুনঝাল সব ঠিকঠিক হয় সবসময়। ঝাল কখনও কখনও
একটু বেশি হয়ে যায় অবশ্য, আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যায়। আমি জল মুছতে মুছতেই
হুশহাশ করে খাই।
সেই সব ফেলে নাকি কুমারডুবির ধুলোর সমুদ্রে?
কারও বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার আগে আর বেড়িয়ে ফেরার পর
তাদের নিয়ে আলোচনা করা বড়দের স্বভাব। মুখার্জিদা রোজ কুমারডুবি থেকে কলকাতা ডেলি
প্যাসেঞ্জারি করে। যেতে আসতে ঝাড়া চার চার আট ঘণ্টা। পয়সার অভাব নেই, কলকাতায় ভাড়া
কেন, একটা বাড়ি কিনেই নিতে পারে। তবু নেয় না। বলে নাকি কুমারডুবি ছেড়ে থাকতে পারবে
না। বাবা হাসছিল। বলছিল ‘মুখার্জিদা পুরো ক্ষেপচুরিয়াস।’
কতগুলো ভ্যানগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল স্টেশনের গায়ে। আমাদের স্টেশনের গায়ে যেমন রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। কতগুলো লোক ভ্যানে পা ঝুলিয়ে বসেছিল। আমি কখনও পা ঝোলানো ভ্যানগাড়িতে চাপিনি। আমার খুব ইচ্ছে করছিল ওই ভ্যানগাড়িতে চাপি, কিন্তু মুখার্জিদা যেই বলল, ‘দশ মিনিট হাঁটতে পারবে তো?’ অমনি মাবাবা ভীষণ ভদ্রতা করে ঘাড় নেড়ে বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, কোনও ব্যাপারই না।’ আমার মতামতটা কেউ জানতে চাইল না। মুখার্জিদা খুব খুশি হয়ে বলল, ‘হেঁটে না দেখলে কোনও জায়গা সত্যি করে দেখা হয় না।’ মাবাবা আবার ভীষণ ঘাড় নেড়ে বলল, ‘ঠিকই তো ঠিকই তো।’
রোদের মধ্যে হেঁটে হেঁটে যখন আমার পা ব্যথা হয়ে
গেছে আর আমি মা’কে ফিসফিসিয়ে দু’বার জিজ্ঞাসা করে ফেলেছি, ‘আর কতক্ষণ হাঁটব মা?’
আর মা খালি চুপিচুপি বলছে, ‘এই তো এক্ষুনি এসে যাবে, কী সুন্দর ফুল ফুটেছে দেখেছ
ঝোপটায়?’ তখন হঠাৎ মুখার্জিদা বলল, ‘এসে গেছি।’
কোথায় এসে গেছি? এ তো জঙ্গল। মাবাবার মুখ দেখেও
বুঝলাম ঘাবড়ে গেছে। একটু পর নজরে পড়ল জঙ্গলের ভেতর অনেকটা দূরে ইঁট ইঁট দেখা
যাচ্ছে। বুঝলাম ওটা একটা বাড়ি। আমাদের বাড়ির পেছনের জঙ্গলটার ভেতর একটা বাড়ি আছে
এইরকম। বাড়িটায় তিনটে ভাইবোন থাকে। একটা বোনকে আমি কখনও দেখিনি, সে বাড়ির ভেতর থেকে
বেরোয় না, খালি মাঝে মাঝে চিৎকার করে কাঁদে। আরেকটা বোন সর্বক্ষণ ম্যাক্সি পরে
থাকে আর অন্য বোনটাকে বকে। বকা খেয়ে বোনটা আরও জোরে কাঁদে, তখন মাঝে মাঝে গুম গুম
করে মারেও। ভাইটার নাম শংকর, ওর চোখে ভীষণ হাই পাওয়ারের চশমা। গাজরসেদ্ধ না খেতে
চাইলে ঠাকুমা আমাকে ভয় দেখায়, একদিন আমার চশমার পাওয়ার বেড়ে শেষে নাকি ওই শংকরের
মতো হয়ে যাবে। শংকরের নাকি খুব অসুখ, তাই ও কিছু কাজকর্ম করতে পারে না। তবে শংকর মাটি
দিয়ে খুব ভালো ঠাকুর বানায়। আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মীসরস্বতীপুজোর সময় বাবা শংকরের
বানানো ঠাকুর কিনে নিয়ে আসে। বাজারের ঠাকুরগুলো অনেক বেশি চকচকে আর উঁচু উঁচু হয়,
আমি একবার বলেছিলাম বাজার থেকে ঠাকুর কিনে আনতে, তাতে বাড়ির সবাই বলেছিল, বাজারের ঠাকুরগুলো
সব খেলনা পুতুল, শংকরের ঠাকুরই আসল ঠাকুর। অমিতকাকু আর বুচিদিদিরাও শংকরের ঠাকুর
কেনে। তবে তাতে শংকরদের বেশি রোজগার হয় না বোধহয়, কারণ শংকরের চশমার ডাঁটি সারানোর
পয়সা নেই। সুতো পাকিয়ে পাকিয়ে বেঁধে রাখা আছে।
জঙ্গলের একটু ভেতরে ঢুকে বোঝা গেল মুখার্জিদার
বাড়িটা শংকরদের বাড়ির থেকে অনেক বড়। অনেক মানে অনেক অনেক। শংকরদের বাড়ির মতো অন্তত
দশটা বাড়ি ঢুকে যাবে মুখার্জিদার বাড়ির ভেতর। মুখার্জিদার বাড়িটা উঁচুও অনেক বেশি।
বাবামা যে বলেছিল একটা সত্যিকারের জমিদারবাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাচ্ছে সেটা তাহলে ঠিকই।
কিন্তু এত গরিব জমিদার সেটা বলেনি।
মুখার্জিদা বলল, ‘কল্যাণ, মাথা নিচু কর। অর্চনা,
ভয় পেয়ো না, একটু ক্লসটিক লাগতে পারে।’ (আমি পরে মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ইংরিজি
কথাটা কী ছিল। মা বলল ক্ল-স-ট্রো-ফো-বি-ক। বাংলায় যাকে দমবন্ধ লাগা বলে। চারদিক
বন্ধ ছোট জায়গার মধ্যে গেলে সবারই দমবন্ধ লাগে, কারও কারও সহ্যের অতিরিক্ত লাগে। তারা
সে সব জায়গায় যেতেই পারে না। আগের বছর পুরী গিয়ে আমরা মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকেছিলাম
মনে আছে? যাদের ক্ল-স-ট্রো-ফো-বি-য়া আছে তারা ওখানে ঢুকতেই পারবে না।)
ভাগ্যিস আমাদের তিনজনের কারওরই ওই অসুখটা নেই, থাকলে
আমরা কেউই মুখার্জিদার বাড়িতে ঢুকতে পারতাম না। একটা ভীষণ নিচু, এই আমার মাথার
থেকে হাতখানেক উঁচু দরজা দিয়ে ঢুকে সিঁড়ি। সিঁড়িটা এতই সরু যে পাশাপাশি দু’জন
দাঁড়াতে পারবে না। মুখার্জিদা দেওয়ালে হাত দিয়ে খুটুস করে সুইচ জ্বালাতে একটা হলুদ
বাল্বের টিমটিমে আলো ছড়িয়ে পড়ল, না হলে দিনের বেলাতেও ওই সিঁড়িতে একটুও আলো ঢুকত
না। সিঁড়িটা বেশ ঘোরানো আর ধাপগুলো ইয়া উঁচুউঁচু। ওঠার সময় মা শক্ত করে আমার হাত
ধরে রেখেছিল। সিঁড়ি দিয়ে উঠে আমরা লম্বা একটা বারান্দায় পড়লাম, আর আমার মনের কথাটা
ম্যাজিকের মতো বুঝে নিয়ে মুখার্জিদা বলে উঠল,
জমিদারবাড়িতে ঢোকার উপযুক্ত সিংদরজা একটা ছিল,
বুঝলে কল্যাণ। ওই ওদিকে।
আঙুল দিয়ে জঙ্গলের দিকে দেখাল মুখার্জিদা।
ওদিকটা একেবারে ভেঙেভুঙে গেছে। সিংদরজা দিয়ে এখন
সাপখোপেরা যাতায়াত করে, আমি এই খিড়কিদরজা নিয়েই সন্তুষ্ট।
এই যে দরজা দিয়ে ঢুকলে অর্চনা, এটা ছিল গুপ্ত
দরজা। ডাকাতটাকাত পড়লে এখান দিয়ে মহিলা আর বাচ্চাদের গয়নাটয়নাসহ বার করে দেওয়া হত।
বাবুরা গাদাবন্দুক বাগিয়ে ডাকাতদের মোকাবিলা করার জন্য থেকে যেতেন।
বারান্দা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলল মুখার্জিদা।
এদিকেরও বেশি কিছু আর নেই। খানতিনেক ঘর সারিয়ে
নিয়েছি। তাও কখনও ছাদ ভেঙে পড়ছে, দেওয়াল দিয়ে জল চুঁয়োচ্ছে। শনিরবি বাড়ি সামলাতে
সামলাতেই কেটে যায়। নিজের জন্য সময়ই পাই না।
মুখার্জিদা হাসল। হাসিটা ঠিক ঠাকুমার হাসির মতো।
ঠাকুমাও সারাদিন উবু হয়ে খুরপি নিয়ে আগাছা খোঁচায় আর হাসে। বলে, কোমরব্যথা সারার
কী উপায় আছে, এই বাগানের ঠ্যালায়?
মুখার্জিদার ঘরে ঢুকে বসলাম আমরা। ঘরের সাইজ
অনেক বড়, কিন্তু তাও কেমন ঘুপচি স্যাঁতসেঁতে ভাব। ঘরের মাঝখানে একটা ভীষণ উঁচু
খাট। খাটের পায়াগুলোর নিচটা বাঘসিংহের থাবার মতো। বাবা আমাকে খাটের ওপর তুলে দিল,
না হলে আমাকে খুব কষ্ট করে উঠতে হত। ঘরের দেওয়ালে কেমন মন্দিরের মতো খোপ খোপ কাটা,
মা পরে বলেছিল ওগুলোকে কুলুঙ্গি বলে। এই ঘরেও বেশি আলো নেই। তবে সিঁড়ির থেকে বেশি
আছে। ফ্যানটা কত ওপরে বাপরে। অত উঁচু থেকে হাওয়া লাগে গায়ে? ছাদের গায়ে আবার কালো
কালো লাইনটানা। মুখার্জিদা আমাদের বসিয়ে পাশের একটা ঘরে গেল, পাঁচ মিনিট পরে তিনটে
গ্লাস বসানো একটা থালা হাতে নিয়ে ঢুকে বলল, চা কফি তো খাওই, একটা নতুন জিনিস খেয়ে
দেখ এবার।
দেখি কাঁচের গ্লাসের ভেতর টলটল করছে টুকটুকে লাল
রঙের শরবত।
আমি একটুও লজ্জা না পেয়ে সবার আগে একটা গ্লাস
তুলে নিয়ে ঢকঢক করে পুরো শরবতটা খেয়ে ফেললাম। ভীষণ ঠাণ্ডা, ভীষণ মিষ্টি।
মুখার্জিদা হাহা করে হেসে বলল, এই তো তোমার মেয়ের পছন্দ হয়েছে শরবত। আমার কাছে
একটা সবুজ রঙেরও আছে, খাবে?
আমি বুঝতে পারছিলাম মা আমার দিকে তাকিয়ে আছে,
কিন্তু আমি মায়ের দিকে তাকালাম না। ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বলে দিলাম।
মুখার্জিদা লোকটা ক্ষেপচুরিয়াস হতে পারে, কিন্তু
ভালো।
তারপর তো খাওয়াদাওয়া হল, খাওয়াদাওয়ার পর
মুখার্জিদা পাড়া বেড়াতে নিয়ে গেলেন। কচুরিপানাছাওয়া পুকুরের পাশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে আমরা
ঘুরে বেড়ালাম। আমার আর পায়ে ব্যথা করছিল না। কত গাছ। কী সুন্দর হাওয়া দিচ্ছিল।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা একটা সাদারঙের বাড়ির কাছে এলাম। বাড়িটার সামনের মাঠে আমাদের
মাঠের মতো ব্যাডমিন্টনের কোর্ট কাটা আছে। কাছে গিয়ে দেখলাম বাড়ির মাথার ওপর
দেওয়ালে বড় বড় করে ডিজাইন করে লেখা আছে ধূর্জটিশংকর মুখোপাধ্যায় স্মৃতি পাঠাগার।
বাবা, ইনি বুঝি . . . বলে মুখার্জিদার দিকে তাকাতেই মুখার্জিদা বলল, আমার ঠাকুরদা।
এর নামে কুমারডুবিতে আরও অনেককিছু আছে। হাসপাতাল, অনাথাশ্রম। ধুর্জটিবাবু ছিলেন
যাকে বলে দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ। বলে মুখার্জিদা হাসল। বাবামাও হাসল। আমি প্রহ্লাদ
নামটা ছাড়া আর কিছু বুঝতে পারলাম না বলে হাসলাম না। মনে করে রাখলাম, বাড়ি গিয়ে
ঠাকুমার কাছে বুঝে নিতে হবে।
বাড়ি ফিরে আমরা আরাম করে বসলাম। মুখার্জিদা নিচু
হয়ে বুককেস থেকে একটা চৌকো মতো বই বার করে বলল, তোমাদের কয়েকটা ছবি দেখাই। আমাদের
বাড়িতেও অ্যালবাম আছে। কিন্তু আমাদের অ্যালবামে বেশিরভাগ ছবিই মানুষের। মুখার্জিদার
অ্যালবামে একটাও মানুষের ছবি নেই, খালি আকাশবাতাসগাছপুকুর। মুখার্জিদা বলছিল, এইটা
হচ্ছে আমাদের পেছনের পুকুরটা। আর এইটা আগের বছর পুজোর সময় তুলেছিলাম। কেমন ঝেঁপে
শিউলি ফুটেছে দেখেছ?
বাবামা খুব চমকে যাওয়া গলায় বলল, আপনি এগুলো
তুলেছেন মুখার্জিদা! এ তো এক্সিবিশনে দেওয়ার মতো ছবি!
ছবিগুলো সত্যিই ভালো দেখতে। আমাদের অ্যালবামেও
কয়েকটা পাহাড়ের ছবিটবি আছে, দার্জিলিং গিয়ে তোলা হয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি সুন্দর
আর ঝকঝকে।
মুখার্জিদা হেসে বলল, আরে আমার আবার ছবি। একটা
হটশট ক্যামেরা কিনেছিলাম শখ করে, সেই নিয়ে বনেবাদাড়ে ঘুরে বেড়াই।
বাবা একেবারে আকাশ থেকে পড়ল। বলল, হটশট দিয়ে এই
ছবি?! করেছেন কি মুখার্জিদা, আপনি ফোটোগ্রাফিটা সিরিয়াসলি নিন এক্ষুনি।
তার একটু পরেই বাবামা একবার নিজেদের মধ্যে চোখেচোখে
তাকিয়ে নিয়ে বলল, এবার উঠি মুখার্জিদা, নয়তো ট্রেন মিস করে যাব।
মুখার্জিদা বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ, কিন্তু যাওয়ার আগে
একবার ছাদে চল। দেখবে, ভালো লাগবে।
সবাই উঠে দাঁড়াল। বাবা আবার আমাকে খাট থেকে
নামিয়ে দিল। আমরা সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। মুখার্জিদা কুলুঙ্গিতে রাখা
একটা ব্যাগ হাতে নিয়ে নিল। বলল ওটাই হটশট ক্যামেরার ব্যাগ। আমাদের স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে
ফেরার পথে যদি ভালো কিছু চোখে পড়ে তাহলে ছবি তুলে নেবে।
আমরা যেদিকের সিঁড়ি দিয়ে উঠেছিলাম, ছাদে যাওয়ার
সিঁড়িটা তার উল্টোদিকে। বারান্দা দিয়ে সেদিকে হাঁটতে হাঁটতে আরেকটা ঘর পার হলাম।
শিক দেওয়া জানালার ওপারে একটা ভীষণ টানটান বিছানা, বিছানার ঠিক মাঝখানে বালিশে
হেলান দিয়ে শুয়ে রয়েছে একটা ডলপুতুল। মুখার্জিদা বলল, এটা টুকটুকির ঘর। মাসির কাছে
থেকে আসলে এই ঘরেই থাকে। ওটা ওর এবাড়ির প্রিয় পুতুল, তাই সাজিয়ে রেখেছি। দেখলে
খুশি হয়। আর ওই যে, ওটা রান্নাঘর। ব্যস, এই হচ্ছে আমার বাড়ি।
রান্নাঘর কেউ দেখতে চাইল না। তার একটা কারণ হতে
পারে, রান্নাঘর আবার দেখার কী আছে, তবে আরেকটা কারণও হতে পারে। যেটা বাবামা ভাবে
আমি জানি না, কিন্তু আমি জানি। আমি হোমওয়ার্ক করছিলাম, বাবা বলছিল। মা যতক্ষণে
বাবার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপেছে ততক্ষণে আমি শুনে ফেলেছি। ওই রান্নাঘরেই জ্বলন্ত
স্টোভ ফেটে মুখার্জিদার বউ মরে গেছে।
মুখার্জিদার ছাদে উঠে বাবামার মুখ সত্যি সত্যি
হাঁ হয়ে গেল। বুচিদিদিদের তিনতলার ছাদও অনেক বড়, মাঠে কাদা থাকলে ওই ছাদেই অনেকসময়
ব্যাডমিন্টন খেলা হয়, কিন্তু সে ছাদের সঙ্গে মুখার্জিদার ছাদের কোনও তুলনাই হয় না।
আমাদের স্কুলের মাঠের অর্ধেক ঢুকে যাবে এই ছাদে। হাঁটতে হাঁটতে আমরা ছাদের ধারে
এলাম। ছাদের ধারের পাঁচিলটা মায়েরই প্রায় গলার কাছে পৌঁছে গেছে, আমি তো কিছু
দেখতেই পাচ্ছিলাম না। ভাগ্যিস পাঁচিলের গায়ে ডিজাইন করার জন্য ফুটো করা আছে, আমি
সেখান দিয়ে দেখলাম। বাড়ির পরে জঙ্গল, জঙ্গলের ওপারে বালিবালি একটা মাঠের মতো, তারও
ওপারে চকচক করছে জল। ওটাই নাকি গঙ্গানদী।
মুখার্জিদা বলল, গঙ্গার পশ্চিমকূল বারাণসী সমতুল
ভেবে বাড়ি বানানো হয়েছিল, এখন গঙ্গা কতদূরে চলে গেছে দেখ।
আমরা গঙ্গার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে
তাকালাম। মাঠের মতো ছাদের ওপারে আকাশের দিকে। এত বড় আকাশ আমি আগে কোথাও দেখিনি।
আকাশের রংটা টকটকে লাল হয়ে গেছে। সূর্য ডুববে আর একটু পরেই। খুব সুন্দর একটা হাওয়া
বইছে। আমাদের বাড়ির কাছের গঙ্গার ঘাটেও এরকম হাওয়া দেয়। আমরা সবাই চুপ করে আকাশের আলোর
দিকে তাকিয়ে রইলাম। মুখার্জিদা হঠাৎ বলল, সবাই এত খরচ করে এত পাহাড়সমুদ্রমরুভূমির
সূর্যোদয় সূর্যাস্ত দেখতে যায়, আমি বিশ্বাস করি না, আমার কুমারডুবির থেকে সুন্দর
সূর্যাস্ত পৃথিবীর আর কোথাও হয়। হতে পারে।
আমি ঘাড় উঁচিয়ে মুখার্জিদার মুখের দিকে তাকালাম।
মুখার্জিদা আমার ঠিক পাশেই দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু মনে হচ্ছিল আসলে অনেক দূরে কোথাও
আছে। যেন হাত বাড়িয়েও আমি মুখার্জিদাকে ছুঁতে পারব না। মুখার্জিদা যেন ভুলেই গেছে
আমরা ওখানে আছি। সেই লালেকমলায় মেশানো আলোটা মুখার্জিদার মুখের ওপর পড়েছে। সেই
আলোয় আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম মুখার্জিদার সারামুখ জুড়ে ফুটে উঠেছে দুঃখের অগুন্তি আবছা
লাইন। মুখার্জিদাকে হঠাৎ ভীষণ বুড়ো দেখাচ্ছে। বাবার থেকে অনেক অনেক বেশি বুড়ো।
বাবা বলল, দাদা এবার এগোই।
মুখার্জিদা চমকে উঠে আমাদের দিকে ফিরে তাকাল।
বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ, তোমাদের আবার ট্রেন . . . কিন্তু যাওয়ার আগে তোমাদের একটা ছবি
তুলে দিই, দাঁড়াও। এক মিনিট লাগবে।
আমরা কাছাকাছি ঘেঁষে দাঁড়ালাম। বাবামা দুদিক থেকে
আমার কাঁধ জড়িয়ে ধরল। মুখার্জিদা গলায় ঝোলানো হটশট ক্যামেরা চোখের কাছে তুলে অল্প
ঝুঁকে দাঁড়িয়ে ‘রেডি’ বলছে, মুখার্জিদার ঝুঁকে থাকা ছায়াছায়া শরীরের পেছনে সূর্যাস্তের
রঙে রাঙা হয়ে গেছে কুমারডুবির অনন্ত আকাশ, এই ছবিটা আমার চোখে সারাজীবনের মতো আঁকা
হয়ে রইল।
*****
ছবিটা এখনও আছে আমাদের অ্যালবামে। মুখার্জিদা
প্রিন্ট করে পাঠিয়েছিলেন। অন্য ছবিদের থেকে মাপে বড়, তাই অ্যালবামের একটা পাতায়
একাই সাঁটা আছে ছবিটা। এত ঝকঝকে সুন্দর ছবি, দেখলে সত্যি বিশ্বাস করা শক্ত হটশট
ক্যামেরায় তোলা। উঁচু পাঁচিলটার গায়ে আমরা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছি, বাবামা
আমাকে জড়িয়ে আছেন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সূর্যাস্তের আলো আমাদের মুখে ঠিকরোচ্ছে আর আমরা
তিনজনেই খুব হাসছি।
কুর্নিশ!
ReplyDeleteমিঠু
হাহা, আরে থ্যাংক ইউ, মিঠু।
Deleteekhuni "কুমারডুবির অনন্ত আকাশ" dekhar khub ichhe korchhe... ar tomader oi chhobita dekharo :-).
ReplyDeleteকুমারডুবির আকাশ দেখতে আমার মাঝে মাঝেই ইচ্ছা করে ইচ্ছাডানা।
DeleteUff, ki bhalo ki bhalo. Leela Majumdar er moto lekha ekkebare. :)
ReplyDeleteভালো লেগেছে বিম্ববতী? থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। ( তোমার মন্তব্যের লীলার অংশটুকু অগ্রাহ্য করলাম।)
Delete@march hare, Ektu beshi hoye gaelo na? Kuntala is a very talented writer, no doubt. I feel immensely proud and lucky that the next gyanpith winner might be in the making through this blog. Kintu, ei lekha ta leela majumdar er shomotulyo?! Hotey o paarey hoyeto.. leela majumdar er kota lekha I ba poRechhi?
Delete@Kuntala,
Please ignore the 'lila ongsho tuku' as you have gracefully done. You are damn good. Greatness is a little distance away though. All the best. I wish from the bottom of my heart that your wish of gyanpith comes true. The journey ahead is long though.
সম্বরণ, আমি আপনার সঙ্গে দেড়শো শতাংশ একমত। সত্যি কথাটা সোজা করে বলার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
Deleteএটা কি ফ্যাক্ট না ফিকশন? ওপরের কমেন্ট পড়ে ফ্যাক্ট বলেই মনে হল। যাই হোক, লিখেছেন বড় ভালো।
ReplyDeleteইয়ে, লীলা মজুমদারের মত হয়নি, কুন্তলা ব্যানার্জির মত হয়েছে (মারাদোনাকে পেলের সাথে তুলনা করলে দুজনকেই অপমান করা হয়)
ধন্যবাদ, দেবাশিস। একেবারে হান্ড্রেড পার সেন্ট ফ্যাক্ট। আমার বয়সটাতে সামান্য জল মিশিয়েছি, তবে সামান্য মানে সামান্যই।
Delete(আপনার কমেন্টের লীলা, মারাদোনা, পেলে, তিনজনকেই অগ্রাহ্য করলাম।)
খুব মন-ভাল-করে-দেওয়া লেখা, পড়তে পড়তে কুমারডুবি না গিয়েও বেশ একটা মানসভ্রমণ হল। এরকম লেখাকেই মনে হয় মায়াবী লেখা বলে। :)
ReplyDeleteআপনার মন্তব্য পড়ে আমারও মন ভালো হয়ে গেল অরিজিত। থ্যাংক ইউ।
Deleteখুব সুন্দর লেখা...মনে মনে কুমারডুবি ঘোরা হয়ে গেল
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, দেবশ্রী।
Deletekumardubi kono din jaini,,jaowa hobeo na hoyto..kintu apnar lekhay to dibbi ghure elam..ekta prosno..... mukherjee da ki ekhno achen?photography ta ki pursue korechilen pore?
ReplyDeleteঋতম, মুখার্জিদা যাকে বলে রেডারের একেবারে বাইরে চলে গেছেন। কোনও খবরই নেই। কে জানে ফোটো মন দিয়ে তুলেছিলেন কি না কখনও। তবে উনি যে ধরণের লোক, তুললেও সে ফোটো প্রদর্শনীতে দেবেন না বলেই মনে হয়।
Deleteঅসাধারণ লিখেছেন। আমি অবশ্য কেন জানিনা গল্পই ভাবছিলাম শেষ অবধি। স্টেশন, জঙ্গলের মধ্যে জমিদারবাড়ি, দরজা, সিঁড়ি, খাট, ছাদ সবই চোখের সামনে দেখতে পেলাম। লীলা মজুমদারের সঙ্গে আপনার লেখার মিল আছে ঠিকই, তবে আপনার নিজস্বতাও আছে।
ReplyDeleteকিন্তু শংকরের মতন চশমা তাহলে আপনার সত্যি-সত্যিই হলো?
শংকরের মতো হল তো চশমা পরে। এদিকে ঠাকুমা ভুজুং দিয়ে একগাদা গাজরসেদ্ধও খাইয়ে দিল। জঘন্য। লেখা ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।
DeleteGaye knata dilo. E je leela majumdar!
ReplyDeleteঅনেক থ্যাংক ইউ, Tinker Bells.
Deletemon kharap holo..abar bhalo oo laglo..asole ki holo bolun to!!!
ReplyDeleteমনের মতিগতি বোঝা দুষ্কর প্রিয়াঙ্কা। আমারও হয় এ'রকম মাঝে মাঝেই। ভালোখারাপের মাঝখানে গিয়ে মন হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকে, ফাইন্যালি কোন দিকে যাবে ঠিক করতে পারে না। মহা মুশকিলের ব্যাপার।
DeleteChotto meyer diary-r pata porlam jeno...Bhalo hoyeche lekhata..
ReplyDeleteগুড গুড, সৌমেশ।
Deleteফিরে এলাম অনেকদিন পরে কমেন্ট করতে... তোমার বই ও কেনা হয়ে গেছে... আমি আর আমার হাবি দুজনেই তোমার ফ্যান জানো! মাঝে অনেক ঝুট ঝামেলায় রেগুলার পড়া না হলেও মাঝে মাঝেই সুযোগমত গোগ্রাসে পড়তাম... মাকে তোমার বই টা গিফট করব এবার
ReplyDeleteমনস্বিতা
আরে মনস্বিতা, কেমন আছ? সত্যি, অনেকদিন পর কথা হচ্ছে। অবান্তর কিনেছ শুনে খুব খুশি হলাম। থ্যাংক ইউ।
Deleteলেখাটা বেশ! মন খারাপের লেখা - এই যা।
ReplyDeleteএকটা প্রশ্ন করছি - কুমারডুবি জায়গাটা ঠিক কোথায়?
Kumardubi holo asansol-dhanbaad line er ekta chhotoo station ... jodi na eta annyo kono kumardubi hoy.
Deleteকৌশিক, ধন্যবাদ। আত্মদীপকেও ধন্যবাদ, ঠিক উত্তরটা দিয়ে দেওয়ার জন্য।
Deleteআসলে মাইথন যাওয়ার কুমারডুবি / কুমারধুবি আর "গঙ্গা" টা মিলছিলো না। পরে সে আলোচনা হয়েছে দেখলাম।
Deleteহ্যাঁ কৌশিক, বরাকরটা বিশ্রী ভুল করেছি। লেখাটায় এখনও শুধরে দেওয়া হয়নি, প্রোক্র্যাস্টিনেশনের আক্রমণে।
Deletedarun ....khub bhalo laglo
ReplyDelete-tinni
Deleteথ্যাংক ইউ, তিন্নি।
DeleteAnake din pore abar apnar ekta lekha, jeta sudhui pore jaoa jai, jeta portey portey sudhui bhalo lagar abeshe bhese jaoa jai, jekhane khotomoto shabdo ar kokhono na bhaba chinta gulo ke jor kore khuchiye bar kore bebak hochot khaiye bhabtey hoy na .. tai tow - ......
ReplyDeleteAr ajker lekha ta amar kachhey anek ta Abantor er prochhod er moto, smriti tey paloker norom sursuri tey sara mone romancho laglo.. chokh bondho kore bose thaklam besh khanikkhon, uki jhuki marlam ekhane, okhane, chhoto belar fele asa pothey.
Amar babar chittarajan e kormo, sekhanei amar jonmo. Tai dhoya , dhulo, kada makha kledakto srirampur e asar por oi puro saotal porogonar choyach laga jaigata keno jani na boro nijer money hoy .. ar tar katha portey anek beshi bhalo lage.
Ekta katha sudhu bolar chhilo, Nadi ta gonga noi, barakar nodi.
থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, আত্মদীপ। আপনিও ওদিককার লোক? গুড গুড। লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। সে ভালোলাগার কথা বলেওছেন আপনি সুন্দর করে।
Deleteবরাকরটা একেবারে যা তা ভুল। একটাই সাফাই গাইতে পারি, যে বয়সে দেখেছিলাম, সে বয়সে বড় নদী বলতে গঙ্গাই বুঝতাম, তাই হয়তো মনের মধ্যে গঙ্গা থেকে গেছে। যদিও বুড়ো বয়সে সে স্মৃতির জাবর কাটতে বসে সেটা চেক করে নেওয়া উচিত ছিল। সংশোধন করে দেওয়ার জন্য অনেক অনেক থ্যাংক ইউ।
iss didivai....emni likhte ache???? amar chosmar kach vije gelo, ami fach fach kore nak fak muchte laglam....mane ritimoto mon ton var hoye gelo....kintu lekhata ekghor...
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, অর্ণব।
Deleteকাকলি,
ReplyDeleteআপনার কমেন্টটা আমি ভুল করে ডিলিট করে দিয়েছি। সিরিয়াসলি সরি। প্লিজ রাগ করবেন না। কিন্তু আমার মনে আছে আপনি কী লিখেছিলেন। আপনি আসানসোলের মেয়ে? আমি কখনও ওদিকে যাইনি। মানে ছোটবেলায় কুমারডুবি গিয়েছিলাম, ব্যস, তারপর আর যাইনি। আপনার ছোটবেলায় শোনা রাজবাড়ি আর রাজপুত্রের গল্পের মতো আমারও অনেক গল্প আছে, সেগুলো যত সময় যাচ্ছে, মনের ভেতর তত স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আমার ভীষণ ভীষণ আফসোস হচ্ছে কমেন্টটা ভুলবশত মুছে ফেলে, আপনি প্লিজ কিছু মনে করবেন না।
আরে না না। . কি মনে করব.. এমন একটা লেখা উপহার দিলে আর মনে করার স্কোপ থাকেনা :)
DeleteKuntala, tui amar Bondhu chili's , chetone kotota maapini kokhono obochetan jaanan dey sobsomoy. Dekha hoyna kothao na. Onek rationalise Kore nijeke bujhiye niyechi. Boro hole emon hotei paare; kintu se sob smriti swartho periye tor lekhagulor saathe amar bondhutto gorhe utheche. Nibirotoro. Khub valo laglo mukherjidaa r monkemon aar ekta Meyer miner kotha.
Deleteসাহানা, বড় হলে যে কত কিছু হয়। সেগুলোর ব্যাখ্যা খুঁজতে গেলে মুশকিল। আমি তাই সে ব্যাখ্যা খোঁজা বা দেওয়ার চেষ্টায় ক্ষান্ত দিয়েছি। তবে এখন কথা না হওয়া মানেই তো তখনকার বন্ধুত্বটা মিথ্যে হয়ে যাওয়া নয়। তখন যেটা ছিল সেটাও ভালো, এখন যেটা নেই সেটাও। তবে তুই যে নতুন বন্ধুত্বের কথা বললি, সেটা জেনে মারাত্মক আরাম আর স্বস্তি পেলাম। থ্যাংক ইউ। নতুন দেশে তোর কাজকর্ম ভালো চলছে আশা করি।
DeleteNOTUN desher haal hakikat jaante chinte din kete jachche re. Aar ekhane Meyer sathe saradin.......nare kono kichui mithye hoyni. Sottyi I sobtuku r nijoswa soundorjyo ache. Tui hoyto for tagid e likhis aar amra amader tagide pori.....er cheye sundor setu aar ki hoy ! Dekha hoy kothao hoy....khub aramer.
DeleteEta ki sotti tomar chotobelar golpo? Na ki kolpona? Jetai hok, asadharon!
ReplyDeleteএমা না না, একেবারে সত্যি ঘটনা। মানে কিছু কিছু জায়গায় একটু কল্পনার আশ্রয় নিয়েছি, খানিকটা ভুলে গেছি বলে (ভুলে গিয়ে বরাকর নদীকে গঙ্গা বানিয়ে দিয়েছি যেমন) আর খানিকটা 'সাহিত্য' করার অছিলায়, কিন্তু মুখার্জিদা সত্যি, মুখার্জিদার মারাত্মক ছাদ সত্যি, আমাদের ছবিটাও সত্যি। লেখাটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে সুখী হলাম রুণা। থ্যাংক ইউ।
Deleteদিদি, বড়ো ভালো হয়েছে লেখাটা - আগেই পড়েছি, কিন্তু আরো বারকয়েক পড়ে কমেন্ট'টা লিখলাম।
ReplyDeleteআমি 'দিদি' পড়ে ভাবলাম এ আবার কোন অনির্বাণ, তারপর দেখলাম চেনা লোক।
Deleteব্লগের আমি ব্লগের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা:)
Deleteনিজের জীবনের গল্প নিয়ে লেখা তো অনেক'ই আছে। কিন্তু নতুন জারা লিখছেন, তাঁদের মধ্যে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের 'বুনো স্ট্রবেরি' দুর্দান্ত লাগছে। এই সময়ের রবিবারোয়ারি তে ধারাবাহিকভাবে বেরোচ্ছে। না পরে থাকলে অবশ্যই দেখো - http://www.epaper.eisamay.com/epapermain.aspx?queryed=9&eddate=6%2f1%2f2014 (page 18 and 19)
লিংক দেওয়ার জন্য থ্যাংক ইউ অনির্বাণ। নিশ্চয় পড়ব।
Delete