ভালো শব্দ মন্দ শব্দ
বান্টির সঙ্গে আমার খটামটি বেধেছে অগুন্তিবার। আমাদের রোজকার
স্বাভাবিক ও সহৃদয় কথোপকথনকেই অনেকে কোমর বেঁধে ঝগড়া বলে ভুল করে, কিন্তু ঝগড়ার
মতো ঝগড়া আমাদের হয়েছে মোটে তিনবার। প্রথম ঝগড়াটা লেগেছিল আলাপের তিনমাসের মধ্যে।
বিষয় ছিল নাদাল-ফেডেরার। তৃতীয়বারের ঝগড়ার বিষয় সম্পূর্ণ ভুলে গেছি, শুধু মনে আছে
তিনদিন কথা বন্ধ ছিল।
দু’নম্বরের ঝগড়ার কারণটা এখনও মনে জ্বলজ্বল করছে, আর সেটা নিয়েই আজকের অবান্তর
পোস্ট। দু’নম্বর ঝগড়াটা হয়েছিল
শব্দের ভালোমন্দ নিয়ে।
শুক্রবারের সন্ধ্যেবেলা সবাই মিলে রেস্টোর্যান্টে বসে খাচ্ছিলাম। আমাদের
রেস্তর পক্ষে রেস্টোর্যান্টটি বেশ দামিই ছিল, তাই প্রতি সপ্তাহের বদলে আমরা মাসে
একবার করে ওই দোকানটিতে যেতাম। খুশমেজাজে খাচ্ছিলাম আর চোখের কোণ দিয়ে দেখছিলাম
আমার ডানদিকে বসা বান্টি একটা হাড়ওয়ালা চিকেনের গোবদা পিস ছুরি দিয়ে কেটে খেতে
গিয়ে গলদঘর্ম হচ্ছে। হঠাৎ ছুরিটা উড়ে গিয়ে ঠন্ন্ন্ শব্দ করে পাশের টেবিলের
পায়ের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ল আর সেই টেবিলে বসা সব-পরীক্ষায়-হায়েস্ট-পাওয়া
চেহারার মেয়েটা ভয়ানক গম্ভীর মুখ করে বান্টির দিকে চোখ তুলে তাকাল। যেই না তাকানো অমনি
বান্টি প্রশ্বাসের নিচে এমন একটা শব্দ উচ্চারণ করল যেটা লিখতে গেলে অনেকগুলো তারাচিহ্ন
খরচ করতে হবে। এমন নয় যে বান্টির মুখে ও শব্দ আমি আগে শুনিনি, কিন্তু সেদিন ঝোঁকের
মুখে ‘আঃ, এ কী ভাষা!’ বলে রিঅ্যাক্ট করে ফেললাম আর বান্টি ছুরিটুরি ভুলে আমার ওপর
ঝাঁপিয়ে পড়ল।
কেন, ভাষা খারাপ কীসে?
খারাপ নয়? তুই এক্ষুনি যেটা বললি সেটা খারাপ কথা নয়?
মোটেই নয়। ওটা তো একটা শব্দ। স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ দিয়ে তৈরি করা একটা জিনিস।
তার আবার ভালোখারাপ কীসের?
বাঃ, শব্দ কি শুধু শব্দ নাকি? শব্দের আড়ালে একটা ভাব নেই? ভাবের ভালোমন্দ নেই?
যাস্সা*, সে যুক্তিতে তো ভয় ঘেন্না লজ্জা অত্যাচার জাতপাত এইসব শব্দও বলা
বারণ হয়ে যাওয়া উচিত।
আচ্ছা, ভাব নয় তবে, ভাবপ্রকাশের উপায়? তার তো একটা ভালোমন্দ আছে মানবি?
উঁহু।
মানব না। ফস্ করে ভালোমন্দ ডিক্লেয়ার করে দেওয়ার আগে গোটা ব্যাপারটার পেছনের
পলিটিক্সটা বোঝার চেষ্টা কর। এই সব পরিশীলিত ভাষাটাষা হচ্ছে সবলের দুর্বলের প্রতি
ডিসক্রিমিনেশনের আরেকটা অস্ত্র। তোমার কলেজ এডুকেশন আছে, তোমার ভাষা ভালো। অ্যাকসেপ্টেবল। মুটেমজুরের কলেজ এডুকেশন নেই, তাদের ভাষা
আনঅ্যাকসেপ্টেবল।
আমি মোটেই মুটেমজুরের ভাষা নিয়ে কিছু বলিনি। আমি গালিগালাজ দেওয়া নিয়ে বলেছি।
আরে তোমার কাছে যেটা গালি মনে হচ্ছে, সেটা সবার কাছে গালি হবে মনে করছ কেন।
ভোকাবুলারির দোষগুণ সম্পর্কে তোমার মতামত ইউনিভার্সাল, এই ভাবনাটাই তো আগাগোড়া
আপত্তিজনক।
কথায় কথায় ইউনিভার্স টানিস না।
ইউনিভার্স আবার কী? আমরা প্রত্যেকে যে যার নিজের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ইউনিভার্সে বাস
করি এবং সেই সব ইউনিভার্সের নিয়মকানুনরীতিরেওয়াজ মেনে চলার চেষ্টা করি। বলিস না যে
তুই সেই চেষ্টাটা করিস না। বাকি সব বেলায় নিজের পরিশীলিত ইউনিভার্সের সবক’টি নিয়ম
মেনে চলব কারণ তাতে বিলং করতে সুবিধে হবে আর হঠাৎ ভাষার বেলায় অন্য ইউনিভার্সের
প্রতি দরদ উথলে উঠবে, এটা হাস্যকর।
সে তোমার ইউনিভার্স ক্ষুদ্র হতে পারে, আমারটাও যে ক্ষুদ্র সে রকম ভাবছ কেন?
ততক্ষণে আমার কান দিয়ে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করেছে।
তুই একটু আগে যে শব্দটা বললি, ক্যাম্পাসিং-এর ইন্টারভিউতে গিয়ে হাত থেকে পেন
পড়ে গেলে সেটা বলতিস?
অফ কোর্স, বলতাম না।
কেন? কেন বলতিস না? তোর বিশাল, উদার, অল-ইনক্লুসিভ ইউনিভার্স শুক্রবার সন্ধ্যে
আর সোমবার সকালের মাঝখানের বাহাত্তর ঘণ্টার সময়ের হেরফেরে সামান্য ভাষার ধারাবাহিকতা
বজায় রাখতে পারত না?
পারত না তোমাদেরই জন্য।
সোসাইটিটাকে যা করে রেখেছ। ভালো-খারাপ, শ্লীল-অশ্লীল,
অ্যাকসেপ্টেবল-আনঅ্যাকসেপ্টেবল। তবে আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি, অচিরেই সফল হব।
তখন ক্যাম্পাসিং-এ, বাসরঘরে, জেলখানায়, ক্লাসরুমে---বুক ফুলিয়ে যার যে রকম খুশি সে
রকম ভাষা বলবে। তোমাদের মতো জাজমেন্টালদের ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকবে না।
আমার ততক্ষণে শাটডাউন হয়ে গেছে। নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস প্রায় বন্ধ, চোখের সামনে
সর্ষেক্ষেত, কানের ভেতর ভোঁভোঁ, মাথার ভেতর রাগের তপ্ত হাওয়া পাক খেয়ে খেয়ে ঘুরছে।
চারপাশের দুনিয়াটাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে চেতনার খিল তুলে দিয়েছি। কে বান্টি,
সে কী বলছে, কেন বলছে---কিচ্ছু আর তখন আমাকে স্পর্শ করতে পারছে না।
যাদের শাটডাউন হয় না, তারা দেখেছি
এই অবস্থাটাকে অনেক সময় ‘হেরে যাওয়া’ অবস্থা বলে ভুল করে। ভাবে যুক্তির ভাঁড়ারে
টান পড়েছে বলে বুঝি আমার মুখ দিয়ে আর কথা সরছে না। শত্রুর থোঁতা মুখ আচ্ছাসে ভোঁতা
করে দেওয়া গেছে ভেবে তারা উল্লসিত আহ্লাদিত ইত্যাদি নানারকম হয়। কিন্তু আসল কথাটা
জানি আমরা যাদের দিনের মধ্যে অন্তত তিনবার করে শাটডাউন হয়। আমরা আর কথা বলছি না
কারণ আমরা আর প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে বোধ করছি না। বুঝে
গেছি এ জিনিস ‘লস্ট কজ’। আমার মহার্ঘ মতামত এর পেছনে বাজে খরচ করে লাভ নেই। এখান
থেকে ‘ওক্কে বস, তুমি ঠিক আমি ভুল’ বলে বেরিয়ে আসাটাই গোটা ব্যাপারটার ওপর
যথাসম্ভব সম্মানজনক দাঁড়ি টানার একমাত্র রাস্তা।
কেউ এতশত বোঝে না। কেউ কেউ বোঝে, বুঝে চুপ করে যায়। কেউ বুঝেও চালিয়ে যায়।
বান্টি বুঝে চালাচ্ছিল না না-বুঝে আমি জানি না।
সমাজসময়ভেদে একই শব্দ মেনস্ট্রিম থেকে মার্জিন্যাল হয়ে যেতে পারে, সেটা নিশ্চয়
তোমার জানা আছে। রামকৃষ্ণর মুখের ভাষা শুনলে তুমি অজ্ঞান হয়ে যেতে। আচ্ছা,
রামকৃষ্ণকে যদি তোমার যথেষ্ট ইন্টেলেকচুয়্যাল বলে মনে না হয় হুতোমপ্যাঁচার
এক্স্যামপলটাই ধর না হয়। খারাপ কথায় তোমার যে রকম অ্যালার্জি দেখছি, ওঁর সঙ্গে
ডিসকোর্সে বসলে তো তুমি পাঁচমিনিটও সারভাইভ করতে না। ‘এ কে বস?’ বলে দৌড়ে বাড়ি এসে
কানে ডেটলের ঝাপটা দিতে।
এই না বলে বান্টি স্ট্র দিয়ে খানিকটা চকোলেট শেক গুড়গুড় করে মুখের ভেতর টেনে
নিয়ে ভুরু নাচিয়ে বলল,
হুতোম পড়েছ? নাকি ভাষা আনঅ্যাকসেপ্টেবল লেগেছে বলে কাটিয়ে দিয়েছ?
আমি লেটুসপাতা মুখে পুরে জোরে জোরে কচরমচর চিবোতে লাগলাম। প্লেটের ওপর খটাস
খটাস করে কাঁটা ঠুকে খাবারদাবার বিঁধতে লাগলাম। না চাইতেও প্লেটের জায়গায় চেনা
একটা লোকের গলা ভেসে উঠতে লাগল বারবার।
অবশেষে ধীরেসুস্থে চকোলেট শেকের গ্লাস নামিয়ে রেখে, ন্যাপকিন দিয়ে মুখ
আঁতিপাঁতি করে মুছে, একখানা পিত্তিজ্বালানো হাসি দিয়ে বান্টি বলল,
এক্ষুনি আমার প্রতি তোমার মনের ভাবটা ঠিকঠিক প্রকাশ করতে হলে যে যে শব্দ দরকার
তোমার পরিশীলিত ডিকশনারি হাঁটকেও সেগুলো খুঁজে পাচ্ছ না তো? পাবেও না। ছুঁড়ে ফেলে দাও
তোমার ওই @#৳% ডিকশনারি। আমার ডিকশনারিটা ইউজ করা শুরু কর। দেখবে পৃথিবীটা একসেকেন্ডে
অন্তত তিনকোটিগুণ রঙিন আর ইন্টারেস্টিং হয়ে গেছে।
*****
এই ঘটনার অল্প কিছুদিন পরেই সেলফ ডিফেন্স ট্রেনিং-এর গুরুত্ব প্রচারের জন্য
আয়োজিত এক সেমিনার অ্যাটেন্ড করতে যেতে হয়েছিল। বক্তৃতার পর ছিল ডেমনস্ট্রেশন।
অংশগ্রহণকারীদের গোল করে দাঁড় করিয়ে পার্সোন্যাল স্পেস কী, এবং কী কী ঘটলে সে
স্পেস লঙ্ঘিত হতে পারে সেই সব বোঝাচ্ছিলেন আমার মায়ের মতোই রোগা আর মায়ের
থেকেও নিরীহ দেখতে একজন দিদিমণি।
ডেমো প্রায় শেষ হয়ে আসছে এমন সময় তিনি বললেন, ক্যারাটেকুংফু যদি একান্তই না
শিখতে চাও শিখো না, কিন্তু ছোটখাটো বিপদের জন্য যে জিনিসটা অবশ্য করে সবার জেনে
রাখা উচিত সেটা হচ্ছে ‘হাউ টু সোয়্যার’। আমার মতো অনেকেই মুখ হাঁ করেছে দেখে তিনি
আবার জোর দিয়ে বললেন, ইয়েস, সোয়্যার। যত ডার্টি তত ভালো।
এই না বলে হঠাৎ দিদিমণি চেল্লাতে শুরু করলেন। মুখ থেকে ছিটকে বেরোতে লাগল একেবারে বাছাই করা সব শব্দ। বান্টির চোদ্দপুরুষ
সে সব শব্দ জানে কি না সন্দেহ, ব্যবহার করা তো দূর অস্ত। আর আওয়াজ! ওই পাঁচফুটিয়া
চেহারা থেকে যে ওইরকম বাজডাকানো শব্দ বেরোতে পারে আমি না দেখলে কল্পনা করতে পারলাম
না। দিদিমণি ঘরের মাঝে বাঘের মতো পায়চারি করতে করতে কাল্পনিক দুষ্কৃতীর গুষ্টির পিণ্ডি
চটকাতে লাগলেন, ঘাবড়ে গিয়ে গোল ছত্রাকার হয়ে গেল।
দিদিমণি শান্ত হয়ে আবার মিষ্টি হেসে বললেন, তোমাদের মতো অত না পেলেও দুষ্কৃতী
একটু ভয় তো পাবেই। তাছাড়া কাছাকাছি অন্য লোক থাকলে তাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে।
আমি চমৎকৃত হয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। বিকেলে বান্টি চা খেতে এল। বেচারার খুব ইচ্ছে ছিল
সেমিনারে যাওয়ার। অন্য কাজ এসে পড়েছিল বলে যেতে পারেনি। চা খেতে খেতে খুঁটিয়ে
খুঁটিয়ে জানতে চাইল সেমিনারে কে কী বলেছে। ডেমো সেশনও হয়েছে শুনে বেচারার আফসোস
নতুন করে উথলে উঠল। কী শেখাল কী শেখাল বলে একেবারে অস্থির। আমি যথাসম্ভব মনে করে
করে বললাম। বললাম দুয়েকটা বেসিক মারামারির প্যাঁচঘোঁচও শিখিয়েছে, তুই চাইলে তোর
ওপর অ্যাপ্লাই করে দেখাতে পারি। দেখবি?
সে দেখায় দেখলাম ওর বেশি উৎসাহ নেই। কত কী মিস হয়ে গেল ভেবে বান্টি মনখারাপ
করে বেশি বেশি চানাচুর খেতে লাগল। যেটা ও জানতেও পারল না সেটা হচ্ছে যে ডেমোর
গালাগালি দেওয়ার অংশটা আমি ওর কাছে কেমন সম্পূর্ণ গোপন করে গেছি।
Haha...besh moja pelam pore....amar ek chotobelar khub bhalo bondhu ache...apnar odikai thake...onek unnoti koreche jibone...se ekhun kotipoti silpopoti....se Kolkatay ele amader tar notun notun updated uttor bharotio bachonsoili sonay...se sune amader bejay ullas hoy r moja moskora kori...tobe cheleti bhalo...bole rastay gari nia berole esob proyog na korle chole na..
ReplyDeleteApnar shutdown ami practice korbo sokriyo bhabe...
দিল্লিতে গালাগালির সংস্কৃতি খুবই চালু, আপনার বন্ধু ঠিকই বলেছেন সৌমেশ। আমাকে অবশ্য এখনও মুখে দিতে হয়নি, তবে মনে মনে লোকজনের পিতৃপুরুষ উদ্ধার তো করেই থাকি।
Deleteবান্টি ছেলেটা খুবই ইন্টারেস্টিং তো! তবে ভাষা সম্পর্কে ওর মতবাদ আমিও অনেকটাই সমর্থন করি। :D
ReplyDeleteশাটডাউন-এর কনসেপ্টটা নতুন, আগে শুনিনি...ওটাও বেশ অভিনব জিনিস। :)
"প্লেটের জায়গায় চেনা লোকের গলা..." - টা ফাটাফাটি। :D
বান্টির প্রচুর সমর্থক অরিজিত, অন্তত এই বিষয়ে।
Deleteei byapare ami বান্টি ke samorthon korte parchhina... mane oi "ভালো-খারাপ, শ্লীল-অশ্লীল, অ্যাকসেপ্টেবল-আনঅ্যাকসেপ্টেবল। তবে আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি, অচিরেই সফল হব। তখন ক্যাম্পাসিং-এ, বাসরঘরে, জেলখানায়, ক্লাসরুমে---বুক ফুলিয়ে যার যে রকম খুশি সে রকম ভাষা বলবে। " ... eta hoe gele marattok hobe bole amar mone hoi ... abar society r sanghatik judgement , mane oi sob byapare nak golie judgement takeo puro samorthon korina... Tobe eita mantei hobe বান্টি kintu khub interesting ar tar thekeo beshi interesting tomar ar or kathopokathon :-)
ReplyDeleteআমার অবস্থানটাও একদম আপনারই মতো ইচ্ছাডানা। বান্টির সংরাম সফল হলে যে কী হবে, সে কথা কল্পনা করলেও কান ঝাঁ ঝাঁ করে ওঠে, আবার আমার মতো লোকে দেশ ছেয়ে গেলে যে জাজমেন্টের ঠ্যালায় চারদিক অন্ধকার হবে সেটাও বুঝি।
Delete*সংগ্রাম।
Deleteআমি বান্টির দলে ;)
ReplyDeleteআমার বেশিরভাগ চেনা লোকই বান্টির দলে, কৌশিক।
DeleteChhotobelay bibhinno shobdo use kortam maaney na jenei. Maaney, nishiddho shobdo bole byabohar korte daroon lagto. Kano nishiddho seta niye bhabtam na. Ekbaar class 8 ey haat theke pen porey jaway ekti apatosadharon ingreji gaali mukh diye beronoy amar totkaleen ingreji teacher bheeshon bokechhilen. Bolechhilen na bujhe kichhu bolar cheye boro murkhami ar nei. Oi rambokunir por thekei ami ektu bujhe sujhe eisob shobdo proyog kori.
ReplyDeleteTobe mone mone ami totally Buntyr doley ekhono. :P
এই ভেবেচিন্তে কথা বলার ব্যাপারটা খুব ঠিক বলেছ বিম্ববতী। গালি দেওয়ার সাহস কোনওদিনও হয়নি, তবে এমন অনেক কথাই ছোটবেলায় বলেছি যেগুলো এখন ভাবলে শিউরে উঠি।
Deleteশ্লীল-অশ্লীল ব্যাপারটা বোধহয় স্থান, কাল, পাত্র ভেদে ভীষণ ভাবে আপেক্ষিক. ভালো শব্দ, মন্দ শব্দ ও সেরকমই.
ReplyDeleteসে তো বটেই, আত্মদীপ। আর আমি আপেক্ষিকতাবাদের ভীষণ বড় সমর্থক। আমার কাছে স্থান-কাল-পাত্রটাই সব।
Deleteবেশ ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার| আমি ঠিক জোর গলায় বান্টিকে সমর্থন করবনা টা ঠিক - বিশেষ করে এমন দিনের ঠিক আশা করি না যখন "ক্যাম্পাসিং-এ, বাসরঘরে, জেলখানায়, ক্লাসরুমে---বুক ফুলিয়ে যার যে রকম খুশি সে রকম ভাষা বলবে।" কিন্তু আমিও গালাগালি অনেক করেছি (করি)| আর এই প্রশ্নটা - "তুই একটু আগে যে শব্দটা বললি, ক্যাম্পাসিং-এর ইন্টারভিউতে গিয়ে হাত থেকে পেন পড়ে গেলে সেটা বলতিস?" এটা নিতান্ত তর্কের খাতিরেই বলা তো? আমরা তো ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ তে অনেক কিছুই করিনা যেটা এমনিতে করে থাকি - বাঙালিদের সাথে বাংলায় কথা বলা, চেয়ার-এর ওপরে পা তুলে বসা (যেটাকে ঘরোয়া ভাষায় বলে বাবু হয়ে বসা) ইত্যাদি ইত্যাদি| অদ্ভূত ভাবে এই কাজ গুলো প্রায় সব জায়গায় করা যায় - স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, অফিস, রেস্তোরা কিন্তু ইন্টারভিউ তে করা যায় না|
ReplyDeleteআবার উল্টো লিস্ট-ও আছে, যেগুলো ইন্টারভিউ তে করি কিন্তু অন্য কথাও করি না যেমন - মাথা থেকে পা পর্যন্ত নিজেকে সাংঘাতিক প্রফেশনাল আর স্মার্ট দেখানোর চেষ্টা, সামনের লোক ভুলভাল কথা বলে গেলেও খুব জোর করে প্রতিবাদ না করা, ফাইল আর পেন কে সারাক্ষণ নিজের সাথে চিপকে রাখা যেন ওই দুটো জিনিস সঙ্গে নিয়েই জন্ম হয়েছিল ইত্যাদি ইত্যাদি|
আরে অপরাজিতা, আমি তর্কে ভীষণ কাঁচা। তর্ক নিয়ে আমাকে চেপে ধরলে মারা যাব।
Deleteআমি কিন্তু ১০০% আপনার দলে। সেরকম খারাপ গালাগালি কোনওদিন দিইনি, ভবিষ্যতে দেওয়ার ইচ্ছেও নেই। ইন ফ্যাক্ট বান্টির সংগ্রাম যে খানিকটা সফল হয়েছে সেটা চারিদিকে দেখতে-শুনতে পাই আর তাতে শিউরে শিউরে উঠি। আপনাদের দিদিমনির খুরে খুরে পেন্নাম, ওই ডার্টি সোয়্যারিং যে ভয়ানক কাজের সেটা আমি পরীক্ষা করে দেখেছি। তবে ওটা আমি পারতপক্ষে ব্যবহার করিনা, যাকে বলে ফর একাডেমিক ইন্টারেস্ট ওনলি।
ReplyDeleteমজার ব্যাপার, ওই ইন্টারভিউ-এর উদাহরনটা আমিও যেখানে সেখানে ঝেড়ে থাকি এবং লোকজন চুপ করে যায়। এই সেদিন একজন তাকে কেন তার পোশাক দিয়ে জাজ করা হবে তাই নিয়ে মহা হম্বিতম্বি করছিল। তাকে ইন্টারভিউতে বারমুডা পরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ঠান্ডা করলাম। :)
মহাশয়, ইন্টারভিউতে বার্মুডা পরে যাওয়া যায়না এই তথ্য আপনি কোথা থেকে পেলেন? :-)
Deleteঅবিশ্যি সরকারি চাকরি হলে আলাদা কথা।
আমি নিজে বার্মুডা না হলেও আধ ছেঁড়া জিনস আর ফাটা চপ্পল পরে ইন্টারভিউ দিতে গেছি। :-)
ইন্টারভিউ দিতে গেছিলেন কিনা সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো আপনি সে চাকরিটা পেয়েছিলেন কিনা। অবশ্যই চাকরিটা কিসের সেটাও একটা কথা। মেসিকে স্যুট পরে বার্সিলোনার ইন্টারভিউ দিতে হয়েছিল বলে মনে হয়না। :-)
Deleteসুগত, বান্টির সংগ্রাম থিওরেটিক্যালি যে মারাত্মক সফল সেটা এই কমেন্ট থ্রেড দেখলেও বোঝা যায়। তবে প্রয়োগের দিক থেকে কতখানি কী হয়েছে সে ব্যাপারে আমি চিরকাল সন্দেহবাতিক ছিলাম, এখনও নিঃসন্দেহ হওয়ার কোনও কারণ ঘটেনি। মানে গালি দিতে অনেকেরই ভালো লাগতে পারে, তার মানে যে তারা নিয়মিত গালি দেন তা নয় কিন্তু। বেশিরভাগ লোকেরই গালি দেওয়ার আইডিয়াটা ভালো লাগে। রাস্তাঘাটে, হাটেবাজারে, বস বা রিকশাওয়ালার সঙ্গে কথোপকথনে সে গালি গুঁজে দিতে গেলে বাস্তববুদ্ধি নাক গলায়। গালি দেওয়ার ধুমটা থাকে যৌবনের শুরুর দিকটায়, কলেজে তো মারাত্মক। তারপর যত বয়স বাড়ে রঙিন কথা বলার সঙ্গ কমতে থাকে, একটা বয়সের পর আর লোক পাওয়া যায় না। মধ্যবয়স্ক বাবা/ মা/ আঁকার স্কুলের মাস্টারমশাই/ দোকানদার/ পার্কিং লট পরিচালকরা যেদিন থেকে রোজকার কথোপকথনে রঙিন শব্দ ব্যবহার করতে শুরু করবেন সেদিন আমি বুঝব বান্টির সংগ্রাম সফল হয়েছে। ততদিনে অবশ্য বান্টির ভাষাটা কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাও একটা দেখার বিষয়।
Deleteমেসির মত ক্যালি থাকলে ইন্টারভিউ দিতে হয়না। চাকরি বাড়িতে এসে কড়া নাড়ে। ;-)
Deleteপ্রথম যখন কলকাতা ছেড়ে বাইরে কলেজে পড়তে গেছিলাম, জাঠ ও পাঞ্জাবি ছেলেদের মুখের ভাষা শুনে বেশ কিছুদিন কালচার শকের মত হয়েছিল। কিন্তু একবার অভ্যেস হয়ে যাবার পর কিন্তু পৃথিবী অনেক বেশি রঙীন হয়ে গেছিল। যে সব সিচুয়েশনে আগে মুখে কথা খুঁজে না পেয়ে তোৎলাতে থাকতাম, সেখানে দেখি দিব্যি মুখ চলতে লাগল। তার ফলও হাতেনাতে। যারা আগে বাচ্চা ছেলে বলে অবহেলা দেখাবার সাহস করত, তারা দেখি স্পিকটি নট। তাই আপনার বন্ধুর সঙ্গে আমি মোটামুটি একমত। তবে অবশ্যই স্থান কাল পাত্র বিচার করে। :-)
ReplyDeleteমেয়েদের যে দরকারে এ ভাষা প্রয়োগ করা প্রয়োজন, তাতে কোন সন্দেহ নেই। মেয়ের মুখে ওরকম ভাষা শুনলে যে কোন উড বি মোলেস্টার কিছুক্ষণের জন্য ব্যোমকে যাবে। সে সুযোগে পিঠঠান দেওয়াটা সোজা।
লেখার সময় এই মণিমুক্তোগুলো কতখানি ব্যবহার করা উচিত, সেটা এখনো অমিমাংসিত প্রশ্ন। আমি সম্প্রতি ব্যবহার করার কিছুটা চেষ্টা করেছি। দেখা যাক পাবলিক কিরকম খায়।
তথাগত, মুখ খারাপ করাটা 'চমকে' রাখার একটা সোজা উপায় সেটা আপনি ঠিকই বলেছেন। আপনার লেখাটা পড়লাম, খুব ভালো লাগল।
Deleteধন্যবাদ, কুন্তলা। কথাগুলো মনের মধ্যে ঘুরছিল অনেকদিন ধরেই। অবশেষে লিখলাম। লেখার সময় ভয় ছিল মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে কিনা। আপনার যখন ভাল লেগেছে, তখন আশা করছি ছাড়ায়নি।
Deleteপ্রয়োজনে গালি দেওয়া আর অপ্রয়োজনে শুধু অভ্যাসের বশে কথার মধ্যে প্রাকৃত শব্দ গুঁজে দেওয়ার মধ্যে একটু তফাৎ আছে। বাংলায় মুখ খারাপ করা বলে একটা চালু শব্দবন্ধ আছে, যেটা শুনলেই বোঝা যায় সে স্বাভাবিক বাচনশৈলীতে অশালীন কথার ব্যবহার প্রত্যাশিত নয়। মানে না বুঝে মুখ খারাপ করাটা আরোই সাংঘাতিক। আগে বাংলায় সবাই যে সব পরিস্থিতিতে ধ্যাত্তেরি বা দুত্তোর বলত এখন সেটার জায়গায় বয়স নির্বিশেষে একটা ইংরিজি চার অক্ষরের শকারাদ্য শব্দ ব্যবহার হয়। ওই একই পরিস্থিতিতে ওই একই শব্দ বাংলায় বা হিন্দিতে কেউ বলে না কিন্তু! এবারের কোনো এক শারদীয়া সংখ্যায় একজন খ্যাতনাম্নী সাহিত্যিক তার কিশোর উপন্যাসে একটি প্রাপ্তবয়স্ক চরিত্রের সংলাপে এমন একটি শব্দ রেখেছেন যেটি অত্যন্ত অশ্লীল একটি হিন্দি গালি (সাধারণত বুদ্ধিহীন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়)। আমার মনে হয় না অর্থ জানলে অন্তত কিশোর উপন্যাসে তিনি ওই শব্দটি লিখতেন।
ReplyDeleteওরে বাবা, শিটের কথা আর বলবেন না, অদিতি। সেদিন কফি খাচ্ছি সি সি ডি-তে, লাইম সোডার গ্লাস নামিয়ে রাখতে গিয়ে সামান্য চলকে পড়েছে, যিনি পরিবেশন করছিলেন, তিনি বললেন, 'শিট!!!!', লিফট মাঝরাস্তায় আটকে গেছে, পেছন থেকে কেউ একজন বলছে, 'সিট!!' আমার অফিসের গবেষকরাও কিছু কম যান না। দিনের মধ্যে অন্তত তিরিশবার 'শিট'!!' শুনতে পাই। আর স্কোয়্যার কম এসেছে? শিট!, সেভ করার আগেই পাওয়ার উড়ে গেছে? শিট!
Deleteএই কথাটা একদম ঠিক। অর্থ না জেনে শব্দ ব্যবহার করলে সেই ছেলেটির মতন অনর্থ হবে, যে কিনা নতুন একটি শব্দ শিখে সেটিকে "কতিপয় পিতাঠাকুর" হিসেবে ব্যবহার করেছিল। :D
ReplyDeleteসাংঘাতিক।
Deleteপরপর কয়েকটি লেখা পড়লাম আপনার। আমার পড়তে খানিক সময় লাগে, কেননা পড়তে বসলেই লেখা অনুসরণ করে নানাবিধ ছবি বা দৃশ্যকল্প ভর করতে থাকে, লেখাটা ভাল লাগতে শুরু করলে ছবিগুলো জমাট বাঁধতে শুরু করে, পড়ার দৈর্ঘ ও বাড়তে থাকে। তখন মনে হয় যতক্ষন সেই সময়টায় থাকা যায়, ততই ভাল। যাহোক... আমার এক বন্ধুর (চুপিচুপি বলে রাখা ভাল, সে আপনার লেখায় সাংঘাতিক রকমের মজে রয়েছে) রেফারেন্স (এবং এইসব ক্ষেত্রে যার রেফারেন্স আমাকে নিরাশ করে নি এযাবত) এ ব্লগটায় এসেছিলাম আজ সকালে। বলাবাহুল্য, হতাশ হইনি এবং তাকেও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি...
ReplyDeleteরাজনীতির কচকচি, আর অক্টোপাস পল কে সরিয়ে রেখে (সঙ্গে পড়ুন, তথাকথিত আঁতলামি) ভাল লেখা যে সম্ভব, যে কয়েকটি লেখা পড়লাম, তা তার নিদর্শন হতে পারে বইকি। ভাল লেগেছে আমার, সময় করে আরো পড়ার ইচ্ছা রইল। ভাল থাকুন, আর এইরকম ভাবেই লিখতে থাকুন।
ভালবাসা নেবেন।
আরে শুভময়, কী ভালো লাগল আপনার মন্তব্য পেয়ে। থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। আপনার বন্ধুকেও আমার তরফ থেকে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে দেবেন। অবান্তরকে আমি নিজে খুবই পছন্দ করি, যখন শুনি অন্য কারুরও তাকে মনে ধরেছে, আমার বড্ড ভালো লাগে। আপনিও আমার আর অবান্তরের পক্ষ থেকে অনেক অনেক ভালোবাসা নেবেন।
Deleteআশা করি আপনার অবান্তরকে আরও অনেকদিন ভালোলাগুক। অক্টোপাস জিনিসটার কথা এক সেকেন্ডের জন্য মাথায় এলেই আমার সারা শরীর কেমন করতে থাকে, তাকে নিয়ে যদি আবার পাঁচশোঁ শব্দের ব্লগপোস্ট লিখতে হয় তাহলেই গেছি আরকি।