ট্যাংরা মাছের ঝোল
রিংরিং রিংরিং রিংরিং . . .
হ্যালোওও, আমি সবে ভাবছি সোনাকে একখানা ফোন করি অমনি দেখি সোনাই আমাকে ফোন
করেছে। কেমন আছ সোনামা? অর্চিষ্মান কেমন আছে?
দিব্যি। কালপরশু এখানে বেশ বৃষ্টিটিষ্টি হচ্ছিল। আজ আবার খটখটে। তোমরা
কেমন ঘুরছ মা?
সোনা! নাক টানছ নাকি! গলাটাও কেমন ধরাধরা. . .
আর বোলো না। অ্যাদ্দিন গরমে কিস্যু টের পাওয়া যাচ্ছিল না, যেই বৃষ্টি নেমেছে অমনি
অফিসের এ.সি. তেড়েফুঁড়ে হাওয়া ছাড়তে লেগেছে। কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া। অফিসশুদ্ধু লোক
সারাদিন কুঁজো হয়ে ঘুরছে।
সে কী! এ.সি. ডিপার্টমেন্টকে চিঠি লেখো শিগগিরি। বল যে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে,
সত্বর এসি কমানোর ব্যবস্থা করুন।
উফ্ মা, এ কী তোমার সরকারি অফিস নাকি যে কথায় কথায় চিঠি লিখতে হবে? মুখে
বললেই হবে।
তাহলে সোমবারে গিয়ে প্রথমেই সেটা বোলো। আর এখন বাড়িতে ক্রোসিন ক্যালপল কিছু থাকলে খেয়ে নাও। জ্বর এসে যাবে নয়তো।
আচ্ছা আচ্ছা। গরুমারা কেমন লাগছে তোমাদের?
খেও কিন্তু সোনা। মাকে মিছে কথা বলতে নেই কিন্তু।
ওরে বাবা, বলছি না মা। তোমরা
কোন হোটেলে আছ গো?
আমরা? গরুমারা নেচার্স কটেজ। কী ভালো জায়গা রে সোনা। কুলকুল নদী, ফুরফুরে
হাওয়া। যেদিকে তাকাও সবুজ আর সবুজ। চোখ জুড়িয়ে যায়। তোরা সময় পেলে আসিস একবার।
ইস্, কী মজা। আর
ক’দিন থাকবে গো?
এই তো আজই সামসিং চলে যাচ্ছি। ওখানে কালপরশু থাকব, তারপর বাড়ি।
সামসিং নামটা ভালো। কেমন সিংজী সিংজী ভাব। আচ্ছা শোন না মা,
তোমাকে একটা দরকারে ফোন করেছি। বলছি, ট্যাংরা মাছ কী করে রাঁধে গো?
ট্যাংরা কিনেছ? কেটেকুটে দিয়েছে?
হ্যাঁ হ্যাঁ। নয়তো কী? কাটতে হলে আর খাওয়া হত না। এবার কী করব?
কিচ্ছু না। কালোজিরে ফোড়ন দিবি, হলুদলংকাগুঁড়ো অল্প জলে গুলে দিয়ে দিবি, দুটো
কাঁচালংকা চিরে দিয়ে, মাছ দিয়ে, ভালো করে ফুটিয়ে নামিয়ে নিবি। ব্যস।
মাছ কাঁচাই দিয়ে দেব? ভাজব না?
ও মা, সে তো ভাজতেই হবে।
উফ্ মা, ঠিক করে গোড়া থেকে স্টেপ বাই স্টেপ বল।
আচ্ছা আচ্ছা। প্রথমে মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে নুনহলুদ মেখে রেখে দেবে খানিকক্ষণ।
তারপর তেল গরম করে ভাজবে। সোনা,
খুব সাবধান, ট্যাংরা মাছ কিন্তু কড়াইয়ে ছাড়লেই একেবারে চড়বড়চড়বড় করে উঠে চোখেমুখে
তেল ছেটাবে। তুমি তেল গরম হলে গ্যাস থেকে কড়াই নামিয়ে মাছ ছেড়ে তারপর আবার কড়াই
আগুনে তুলো।
বুঝেছি। নেক্সট?
তারপর ভাজা মাছগুলো তুলে নিয়ে, বাকি তেলটায় কালোজিরে দেবে। একটা ছোট প্লেটে
পরিমাণমতো হলুদ আর লংকাগুঁড়ো অল্প জলে গুলে রাখবে, কালোজিরে ফুটফুট করে উঠলে সেটা ঢেলে দিয়ে নাড়বে। দুটো কাঁচালংকাও চিরে দিতে পার। মশলাগুলো একটু রান্না হয়ে
গেলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে বেশ করে নেড়েচেড়ে মশলা মাখিয়ে নিও। তারপর একটুখানি গরম জল দিয়ে
ঢাকা দিয়ে দিও। জল অল্প দিও, ট্যাংরায় বেশি ঝোল ভালোলাগে না। মাখামাখাই ভালো।
ওক্কে। তারপর?
তারপর আর কী? পুরো ব্যাপারটা গবগব করে ফুটে উঠলেই রান্না শেষ। নামিয়ে গরমগরম
ভাতের সঙ্গে খাবে। ভাতটা একটু বেশি করে খাস মা।
সে কী, এরই মধ্যে রান্না শেষ। হেবি সোজা তো।
সোজাই তো।
আর কিছু লাগবে না? আরও কী সব মশলাপাতি যেন দেয় দেখি ফুডব্লগে। চারমগজ? চাটমশলা?
নিদেনপক্ষে বাটার? জান মা, ফ্রেঞ্চ শেফরা শুনেছি সব রান্নার শেষেই একখাবলা বাটার
দিয়ে নামায়। তাতেই নাকি খাবারটা নিমেষে মর্ত্যীয় থেকে স্বর্গীয় হয়ে যায়।
ফুঃ, বাটার দিতে গেলে ফ্রেঞ্চ শেফ হওয়ার দরকার কি, বাঙালি রাঁধুনি হলেও হবে। তবে আমরা বাটার শেষে
নয়, শুরুতে দিই। গরম
ভাতে বেশ করে মেখে আলুভাজা দিয়ে খাই। অ্যাকচুয়ালি
আমি বলতে ভুলেই গেছিলাম। ট্যাংরা মাছের রেসিপির শুরুতেই বাটার আর আলুভাজা দিয়ে
বেশি করে ভাত মেখে খাওয়ার নিয়ম লেখা আছে। তারপর ডালতরকারি, লাস্টে মাছ। খেয়ে উঠে
মুখ ধুয়ে প্লেটে করে দই। এই গোটা রেসিপি ফলো না করলে ট্যাংরার মহিমাই মাটি।
আচ্ছা মা, যথেষ্ট রসিকতা করে ফেলেছ, এবার ছাড়ান দাও। ভালো করে সামসিংজী ঘুরে
এস। সাবধানে যেও।
তুমিও ওষুধ খেও। অফিসে এ.সি. কমাতে বোলো। আর তেলে মাছ ছাড়ার সময় সাবধানে ছেড়ো।
ছাড়ব মা, তুমি নিশ্চিন্তে থাক। মাছের ঝোল রেঁধে অক্ষত শরীরে তোমাকে ফোন করে
জানাব। এখন রাখি। রেসিপির জন্য থ্যাংক ইউ। তোমরা সামসিং পৌঁছে ফোন কোরো। রাস্তাটা
খুব সুন্দর লাগলে রাস্তা থেকেও ফোন করতে পার। টা টা মা।
টা টা সোনা।
kono manei hay na... kono manei hay na ...sabaike robbarer bikelbela ebhabe lobh dekhano ..:p gorumara r katha sune chute chale jete icche korche !- tinni
ReplyDeleteআরে দেখলি তো কী সোজা রান্না তিন্নি, রেঁধে ফেল। তারপর ছবি দেখা। গরুমারার শুধু গল্প শুনলে আমিও ভাবতাম মা নির্ঘাত গল্পের গরু গাছে চড়াচ্ছেন, কিন্তু তারপর মা প্রমাণ হিসেবে মূর্তি নদীর কুলকুলানিও ফোনের ভেতর দিয়ে শুনিয়ে দিলেন। সিরিয়াসলি, কী জোর আওয়াজ। কবে যে যাব।
DeleteLekhata khub i suswadu aar sohoj pachyo aar samshinger nodeer hawa batase to aaro monorom.....aami shudhu tyangra r bodole protibaae paneer er norom chouko tukro kolpona korechi aar lanchalonka ta onekgulo sorsher sathe aagei bete niyechi....baaki sob ek....kakimar bola makhon bhaat aalubhaja diye taao....ahha...kaal i khabo.
DeleteIssh..ki bhalo ..ki bhalo!
ReplyDeleteI second Tinni..kono manei hoy na! *Dirghoswas*
P.S. Sanghatik mood off chhilo, A.C. department ke chithhi lekhar katha ta poRe khub haslam!
কোয়েল, আমার মা 'অফিশিয়াল' চিঠি লেখার মস্ত বড় সমর্থক। সে চিঠি যত 'টু হুম ইট মে কনসার্ন' 'আই হিয়ারবাই ডিক্লেয়ার' ইত্যাদি ইংরিজিতে ছয়লাপ হবে ততই মঙ্গল। আমি আমার ডিরেক্টরকে রোজ যে তিরিশটা ইমেল লিখি তার ভাষা দেখলে মা ভিরমি যেতেন। ভাবতেন, এই বুঝি মেয়ের চাকরিটি গেল।
Deleteহি হি। আমার মাকে কোনও রেসিপি জিগ্যেস করলে এমনি করেই বলে। প্রথমে অর্ধেক। আসলে ওদের কাছে যেটা “অবভিয়াস প্রিরিকুইজিট” সেটাও যে আমাদের কাছে “ইম্পরট্যান্ট ইনফর্মেশন” সেটা বোঝে না।
ReplyDeleteঠিক বলেছিস রাজরূপা। তবু আমি দেখেছি, মায়েদের বলা ওইরকম আধাখ্যাঁচড়া রেসিপির রান্না যত ভালো খেতে হয়, তত ভালো আর কোনও রান্নাই হয় না।
Deletehaha...ekkebare thik!..ami to sobcheye beshi chillamilli kori jokhn ma bole "andajmoto" kichu deoar kotha bole..andaj thakle to hoei gelo!
ReplyDeleteঅদ্বিতীয়া, আমার তো ধারণা আমার মাকে চামচ মেপে মশলা বলতে বললেই মা বেশি গোলমাল করে ফেলবেন।
Deleteখুউউব মিষ্টি, বিশেষ করে একখাবলা butter এর ব্যাপারটা :)
ReplyDeleteসিরিয়াসলি কাকলি। আমি বুঝি না, অত চিজ, মাখন, চিনি ঢেলে রান্না করে এদের রাঁধুনি হিসেবে এত দেমাক কোত্থেকে আসে। একখানা পদস্থ তেতোচচ্চড়ি রেঁধে খাওয়ায় তো বুঝি।
Deletearre kaktaliyo kake bole dekhecho!! ajke robbare amio tangra mach redhechi :) usually ei kakimar bole dewa pontha tei randhi, kintu ebare bongmom er pronalee try korechi.. butter r alubhaja ta obishyi miss kore gechi :(
ReplyDeleteনাঃ, এই সমাপতনটা চমকে দেওয়ার মতোই হয়েছে স্বাগতা। আমি আসলে যে রান্নাগুলো মায়ের হাতে খেয়েছি সেগুলো রান্নার সময় কেন জানি না্ মায়েরই দ্বারস্থ হই। তার নস্ট্যালজিয়া ইত্যাদি নানারকম কারণ তো আছেই, কতগুলো ব্যবহারিক কারণও আছে। মা আজ পর্যন্ত এমন কোন রেসিপি বলেননি যার মশলাপাতি আমার ঠুকপালিশ সংসারে নেই। এটা যে কত বড় অ্যাচিভমেন্ট সেটা বলে বোঝানো অসম্ভব।
Deleteআমার মাও ঠিক এইভাবে রেসিপি বলে। "ওই তো একটু পাঁচফোড়ন দিয়ে সাঁতলে নিলেই হবে" - না তার আগের কিছু, না তার পরের কিছু। আবার প্রতিবাদ করলে বলে এটুকু তো জানারই কথা। একবার মায়ের রেসিপি ফলো করে আমি টমেটো সেদ্ধ না করে কাঁচা কাঁচা জলে চটকে সূপ বানিয়েছিলাম। যখন আশানুরূপ রস বেরলনা তখন আমার একটু সন্দেহ হলো। মা কে বলায় মা এমনভাবে হাসলো, যেন দোষটা আমারই। বলুন তো কি অন্যায়?
ReplyDeleteআপনার মাছের ঝোলের বর্ণনাটা পড়ে আর ছবি দেখে জিভে জল এসে গেল। খুব ভালো হয়েছে দুটোই ।
আপনি যখন সুযোগটা দিলেনই তখন সেটার সদ্ব্যবহার করা যাক। চেহারার কথা বলতে পারি না, স্বাদের দিক থেকেও ঝোলটা উতরে গিয়েছিল মোটামুটি। মায়ের মতো হয়নি, অফ কোর্স। আমি শিওর মায়েরা রেসিপি দেওয়ার সময় একটা না একটা সিক্রেট ইনগ্রেডিয়েন্ট চেপে যান। কারণ কিছুতেই ঠিক যেমন খেতাম তেমন হয় না।
Deleteআমি কাকিমার টমেটো সুপের রেসিপি নেব। সুপ খেতে আমার এত ভালো লাগে, অথচ অনলাইন রেসিপি খুঁজতে গেলেই দেখি হ্যান্ড ব্লেন্ডার, লিকুইডাইজার, এক্সরে মেশিন---নানারকম জগঝম্পের বায়নাক্কা। ও সব আমার নেই, কেনার ইচ্ছেও নেই। কাকিমার সুপ রেসিপির এই হাত দিয়ে টমেটো চটকানোর ব্যাপারটা শুনে ভরসা পেয়েছি। নেক্সটটাইম কথা হলে মনে করাবেন প্লিজ, টুকে নেব।
heehee darun tomato soup kintu :)
Deletemayeder recipe follow korar arekta mushkil holo "andaj moto" ar "somoy moto" kotha duto.. at least shurute jokhon prothom sikhchi, tokhon ei duto shunlei raag hoye jeto! oto i jodi jani tahole r sekhar dorkar ta ki?! :\
একি, আমাদের বাড়িতেও শনিরবিবারে ট্যাংরা মাছ হয়েছিল তো! সাথে ভাপা ইলিশ আর কষা মাংস। মাংসটা আমি করেছিলাম, আর গিন্নি করেছিলেন মাছদুটো।
ReplyDeleteতার আগের দিন, শুক্রবার রাতে এক ভদ্রলোক আমাকে "ওয়ান মোর অ্যান্ড ওয়ান লেস" -এর কনসেপ্টটা বুঝিয়েছলেন। যদিও আপনার সেসবের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু কি কেলেঙ্কারি, পরদিন খেতে বসে সব কনসেপ্ট হাওয়া।
কী কাণ্ড দেবাশিস, আমাদের বাড়িতেও তো ইলিশ আনা হয়েছে। অবশ্য আমরা রাঁধিনি, যত্ন করে ফ্রিজে তুলে রেখেছি। খাওয়ার অসুবিধেতে নয়, একদিনে এত সিরিয়াস রান্নাবান্না করলে আমাদের সিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে সেই ভয়ে। খুব শখ ছিল সর্ষে দিয়ে ভাপে করব, মা'র কাছ থেকে সব জেনেও নিয়েছিলাম, শেষে আর কলজেয় কুলোয়নি। একটা শর্টকাট আবিষ্কার করে ফেলে আরও কেলেংকারি হয়েছে। দু'পিস দু'পিস করে আলাদা আলাদা প্যাকেট করে ফ্রিজারে রেখে দিয়েছি। খেতে বসার আধঘণ্টা আগে একখানা প্যাকেট বার করি, পনেরো মিনিট আগে তেলহলুদ মাখাই, পাঁচমিনিট আগে ফ্রাইং প্যানে সর্ষের তেল চাপাই। তারপর সেই তেল দিয়ে ভাত মেখে, কাঁচালংকা কামড়াতে কামরাতে মাছভাজা দিয়ে ভাত খাই। সর্ষেভাপের দুঃখ নিমেষে কোথায় যে উধাও হয়ে যায় কে জানে।
Delete*কামড়াতে
Deleteলেখাটা পড়বার পরে আর ছবি দেখে ট্যাংরা মাছ খেতে ইচ্ছে করল, তাই গতকাল নিয়ে এসেছি, এবারে জমিয়ে কালোজিঁরে-কাঁচালঙ্কা দিয়ে খেতে হবে। :)
ReplyDeleteআহা, এইরকম ইনসপিরেশনাল হতে পেরে বড় ভালো লাগছে অরিজিত। আপনাদের ট্যাংরাভোজনের জন্য শুভেচ্ছা রইল।
DeleteSaturday te ট্যাংরা মাছ amader bariteo. tobe kalojire,knachalonka ,bori ,begun,alu die jhol. Next time tomar deoa recipe... ট্যাংরা gulo thik eirakomi dim bhora chhilo... :-),
ReplyDeleteসামসিং namta shune theke jabar ichha probol... ekhono hoe otheni... namta bhari sundor .
আরে বড়ি বেগুন কম্বো আমার ফেভারিট ইচ্ছাডানা। আমি নেক্সট টাইম আপনার রেসিপিটা বানাব না হয়। সামসিং ঘুরে আসুন, তারপর ছবি দেখা যাবে।
Deleteসামসিং ,সুন্তালে খোলা ,ঝালং,বিন্দু সঙ্গে নুনিয়া আতপ আর বোরোলি মাছ ।ডুয়ারস যুগ যুগ জিও ।টমেটো ভাপিয়ে,/ব্লাঞ্চ করে পাতলা খোসাটা ছাড়িয়ে মিক্সি তে ঘুঁটে নাও,পরিমান মত জল দিয়ে । এরপর
ReplyDeleteএকটা পাত্রে মাখন গলিয়ে অই লিকুইডটা ঢেলে এক্তু ফোটাও।নুন,চিনি,রসুন,সব্জি কুচি ,চিজের গুঁড়ো সব
নিজের নিজের পছন্দ । নামিয়ে গোলমরিচ দাও ।একেবারে বেসিক টমেটো সুপ রেডি
মিঠু
আরে মিঠু, ঝালং আর বিন্দুর নাম আমিও শুনেছি, সামসিং-ও ওই তল্লাটে বুঝি? গুড।
Deleteতোমার কুইক অ্যান্ড ইজি টমেটো সুপের রেসিপির জন্য একেবারে নুয়ে পড়ে থ্যাংক ইউ। বানিয়ে তোমাকে জানাব।
আমি শুধু যুগ যুগ জিও-র লিস্টে আরো দুটো জিনিস যোগ করতে চাই| মোমো আর মুরগির ঝোল-ভাত| আমার বিশ্বাস পৃথিবী-র যে কোনো চিকেন আইটেমকে বলে বলে সাত গোল দিতে পারে ডুয়ার্স-এর যে কোনো গেস্ট হাউসে রান্না মুরগির ঝোল|
DeleteAwesome conversation between a mother and a daughter ! It has a timeless value !! সেই tradition সমানে চলেছে !!!
ReplyDeleteসেই তিলকমামা, ট্র্যাডিশনের হাত থেকে পালানো যা শক্ত, বাপরে।
DeleteAmar roommate machh khay na. Tai amar ar alsemi kore machh anai hoy na. Tyangra machher chhobi dekhe monta tai hu hu kore uthlo kirom. Aha, koddin ektu machh-bhaat khai na. Kalkei Ma Tara jete hochchhe.
ReplyDeletep.s. Amar maa vague recipe bolay parodorshi. Bole, "oi toh, ektu shorsheforon ar knachalonka diye nere nibi". No introduction, no conclusion. Kono maaney hoy? Tatey ami "shorshe foroney ki ditey hoy" jigyesh koray abar khub hasahasi-o kore. Jachchhetai byapar ekebare.
উফ, মা তারার বিজনেস যা বাড়াবাড়ি রকম বেড়েছে বিম্ববতী। কবে একটা রবিবার ফার্স্ট শোয়ে সিনেমা দেখে ফেরার সময় চানাচুর কিনতে বাজারে ঢুকেছি, এমন সময় দেখছি মা তারার দিকটায় পিলপিল করছে লোক। আমরা সিরিয়াসলি ভেবেছি মারামারি হচ্ছে। দোকানদার বললেন, আরে মারামারি না, মা তারা। আমাদের পথে পড়ত না, তবু আমরা ভিড় দেখব বলে চানাচুরের প্যাকেট দোলাতে দোলাতে মা তারার সামনে দিয়ে ফিরলাম। ভেতরের সব টেবিল ভর্তি, বাইরের টেবিল ওই গরমেও ভর্তি। তাছাড়াও অন্তত পঞ্চাশজন দাঁড়িয়ে আছে। আর কী ধৈর্য যদি তাদের দেখতে। মাছের আশায় সব একেবারে বিনীত ভদ্রলোক। মা তারার মালিক, বাঙালিদের মধ্যেও অত নিরীহ চেহারা আমি আর দেখিনি, তাঁর কাছে এসে একেবারে নুয়ে পড়ে বলছে, 'আংকল, এবার কি আমাদের টার্ন?'
Deleteতোমরা যখন আসবে তখন যেন ফাঁকাফাঁকা থাকে সেই কামনা করি।
তোমার ফোড়ন নিয়ে ঝামেলা শুনে আরও একটা গল্প মনে পড়ে গেল। না বললে ভীষণ কষ্ট হবে তাই বলছি। আমাদের বাড়িতে দিদিসোনা বলে একজন সদস্য আছেন, তার ছোটবেলা থেকেই ফোড়নের ওপর ভয়ংকর রাগ। রাগ হওয়ারই কথা। এক মুসুরডালে যে একশো আট রকম ফোড়ন দেওয়া যায় সে শুনে তার চক্ষুস্থির। সে আবার পড়াশোনায় ভীষণ ভালো, টপাটপ নম্বর পায়, কিন্তু একটার জায়গায় দুটো ফোড়ন মনে রাখতে গেলে গলদঘর্ম। সেই দিদিসোনা ছোটবেলায় শপথ করেছিলেন শুনেছি, আমি বড় হয়ে শুধু সেই রান্নাই করব, যাতে কোনও ফোড়ন নেই।
শপথরক্ষা হয়েছে কি না জানি না অবশ্য। জিজ্ঞাসা করে দেখতে হবে।
ট্যাংরা মাছের একটা গল্প বলি? তোমার ব্লগ হাইজ্যাক হয়ে যাচ্ছে যদিও। না বলেও পারা যাচ্ছে না। বড়ই করুণ কাহিনী কিনা।
ReplyDeleteবছর দুয়েক বিয়ে হয়েছে। মাছ মোটামুটি রেঁধে নামাতে পারি, কিন্তু কাটাকাটি বিশেষ "আইয়ে" না। যাই হোক, একদিন শারদপ্রাতে স্নানে গেছি, কর্তা গেছেন নিকটবর্তী বাজারে। স্নান করে বেরোতেই সহাস্য ঘোষণা, দারুণ ট্যাংরা পেয়েছি আজ, তুমি তো ভালোবাসো। রান্নাঘরে রেখে এসেছি দেখে নিও। তা বেশ।
বেসিনে থলি উপুড় করে চক্ষুস্থির। মোটা মোটা ডিম্ববতী ট্যাংরা...এবং গোটা গোটা।
কাটিয়ে আনো নি?
কাটার লোকটা আজ ছিল না।
একটাই লোক বসে নাকি?
অন্যটার সামনে অনেক ভিড়, দেরি হয়ে যেত। কেটে নাও না, কী হয়েছে?
ট্যাংরা মাছ কী করে কাটব? ভীষণ শক্ত তো। কাকীমার হাতে কাঁটা ফুটে সেপটিক হয়ে গিযেছিল জানো!
ঠিক পারবে। (টিভির দিকে চোখ রেখে)।
অতঃপর আমার রন্ধনশালার উদ্দেশ্য প্রস্থান এবং সিংকের সামনে মাটিতে পা ছড়িয়ে বসে সশব্দে ক্রন্দন (সে দিন আবার আমার জন্মদিন ছিল, যেটা বলাই বাহুল্য আরেকজন ভুলে মেরে দিয়েছিলেন)...ও বাবা গো, কেন আমাকে বিয়ে দিলে গো, জন্মদিনের দিন আমায় দিয়ে লোকটা ট্যাংরা মাছ কাটাচ্ছে গো, হাউ মাউ ভেউ....
বাকিটা উহ্যই থাক।
হাহাহা দারুণ গল্প অদিতি। ট্যাংরা মাছ তোমার সেই জন্মদিনটা কেমন স্মরণীয় করে রেখেছে বল?
DeleteThis comment has been removed by the author.
DeleteKuntala, Tangra machta radhte partam na oi tel chitkanor bhoye... Bhalo holo recipe tao aj sikhiye dili....
ReplyDeleteরেঁধে ফেল শিগগিরি মৌসুমী। ওই পুঁচকে মাছকে ভয় পাস না। কেমন খেতে হল আমাকে জানাস কিন্তু।
Deleteএই সুজোগে ট্যাংরা মাছের একটা ঝাল ঝাল রান্নাও শেখা হয়ে গেল আমার। আর ওই ছবিগুলো আর সহজ, সাবলীল লেখাটা উপরি পাওনা।
ReplyDeleteআহা এটাকে রেসিপি বোলো না পৌষালি। এটা হচ্ছে গিয়ে ক্যানভাস, এর ওপর যথার্থ শিল্পীরা তুলি চালাবেন। তবে আমার মতো মোটাদাগের রাঁধুনিদের জন্য এই ক্যানভাসই যথেষ্ট। লেখাটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। থ্যাংক ইউ।
Delete