রামগড় ১




ডাক্তারবাবুর পেন প্রেসক্রিপশনের ওপর খসখসিয়ে চলতে চলতে থেমে গেল।

এখন? পাহাড়? পাগল নাকি? মোরাদাবাদ পর্যন্ত তো ফ্লাড। তাছাড়া শরীরের এই ছিরিতে?

পেনটা কাগজ থেকে উঠে এসে বন্দুকের নলের মতো ওপরনিচে আমাকে জরিপ করল খানিকক্ষণ।

আমরা দু’জনেই মুখ মাপমতো কাঁচুমাচু করলাম। যতটুকু করলে ভুলস্বীকার হয়, অপরাধবোধ ঠিক ঠিক ফোটে। আবার যতই ভুল হোক না কেন, আপনি যতই হেলথ-শেমিং করুন না কেন, ভুলটার শেষ দেখেই যে ছাড়ব, সেই প্রত্যয়টাও বুঝিয়ে দেওয়া যায়। ডাক্তারবাবু যা বোঝার বুঝে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাকি প্রেসক্রিপশনটুকু শেষ করলেন। বললেন, ‘ওষুধ নিয়ে যেও, ডোজ মিস কোর না, সোমবার আবার এস।’

আমরা একেবারে টেবিলে মাথা ঠেকিয়ে ‘নিশ্চয় নিশ্চয়’ বললাম। ঠেলাঠেলি করে ঘর থেকে বেরোনোর আগের মুহূর্তে ভদ্রতা করে জুড়ে দিলাম, ‘আসলে অনেএএএকদিন থেকে আশা করে রয়েছি তো . . .’

ডাহা মিথ্যে কথা। বাহাত্তর ঘন্টা আগেও জানতাম না যে রামগড় যাব। কোথাও একটা যাওয়ার ইচ্ছে তো হচ্ছে সেই রণথম্ভোরের বাঘের মুখ থেকে বেঁচে ফেরা ইস্তক। সকাল বিকেল দুপুর মাঝরাত্তির ভাবছি মান্ডু? (ট্রেনের টিকিট ওয়েটিং লিস্ট একশো চুয়াল্লিশ) মুসৌরি? (দুজনেরই দেখা) মাউন্ট আবু? (যার দেখা নেই সে নাম শুনলেই ঠোঁট ছ্যাতরাচ্ছে) তারপর গত পরশু এসপার কি ওসপার ভঙ্গিতে জায়গা স্থির করে (সাড়ে চার মিনিট), দিল্লি কাঠগোদাম শতাব্দীর সিট অ্যাভেলিবিলিটি চেক করে টিকিট কেটে (সাড়ে তিন মিনিট), কুমায়ুন মণ্ডল বিকাশ নিগমের রুম অ্যাভেলিবিলিটির চার্ট পরীক্ষা করে অনলাইন ঘর বুক করে (আরও সাড়ে তিন) চ্যাটবক্সে হাই হায়ার হায়েস্ট ফাইভ।

দিল্লি থেকে রামগড় যাওয়া প্রায় তিব্বত যাওয়ার মতোই সহজ। শতাব্দী চেপে পাঁচ ঘণ্টায় কাঠগোদাম, কাঠগোদাম থেকে প্রাইভেট কারে চেপে দেড়ঘণ্টায় রামগড়। শতাব্দীযাত্রা নিয়ে কিছু বলার নেই। আমাদের পাড়ায় রায়ঠাকুমা বলে একজন ছিলেন, তাঁর সঙ্গে আমার ঠাকুমার ভাব আর ঝগড়া দুটোই সমান ছিল। একবার মনে আছে বারান্দায় থেবড়ে বসে হাতপাখা নাড়তে নাড়তে ঠাকুমা গর্ব করছিলেন যে এই তো এবার নাতনির স্কুলে গরমের ছুটি পড়লেই সবাই মিলে মথুরা বৃন্দাবন গয়া কাশী যাওয়া হবে। শুনে রায়ঠাকুমা মুখ বেঁকিয়ে বলেছিলেন, কী জানি বাবা, গরমকালে আবার তীর্থ কীসের। ‘আমরা তো যেত্তবার গেসি, শীতেই গেসি।’ আমরাও যেত্তবার শতাব্দীতে চেপেছি ট্রেন টাইমে ছেড়েছে, টাইমে পৌঁছেছে, রাস্তায় যথেষ্ট খাবারদাবার দিয়ে আমাদের মনোরঞ্জন করেছে। লোকে কতরকম লাইফ প্রোজেক্ট করে, সাইকেলে চেপে দুনিয়া ঘুরতে বেরোয়, কুকবুকের গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত সব রান্না রাঁধে, আমরা ভাবছি দিল্লি থেকে শতাব্দী চেপে যেখানে যেখানে যাওয়া যায়, সব জায়গা যাওয়ার একটা প্রোজেক্ট নেব। তা সে জায়গা যাওয়ার মতো হোক আর নাই হোক। কেমন হবে?

ট্রেনে উঠলেই এত খিদে পায় কেন কে জানে। বিশেষ করে যদি জানা থাকে যে খেতে দেবে তবে তো আর রক্ষা নেই। ক্ষণে ক্ষণে ঘাড় ঘুরিয়ে এদিক ওদিক দেখ, পাশের লোককে বলে রাখ। যদি ঘুমিয়ে পড়ি ডেকে দিও কিন্তু। ন্যাতানো কাটলেট মিস হয়ে গেলে বলা যায় না, মনের দুঃখে হয়তো মরেই গেলাম। ট্রেনে আরও একটা জিনিস ফ্রিতে পাওয়া যায়, সেটা হচ্ছে লোক পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ। ঘণ্টাপাঁচেকের নিষ্ক্রিয়তার বিনিময়ে জীবনের সারসত্য সঞ্চয়ন। এবারের ট্রিপ থেকে যে সত্যটি আহরণ করেছি সেটি হচ্ছে যে দূঊঊঊরে যে বাচ্চাগুলো বসে থাকে, মাঝে মাঝে মাবাবার কোলে চেপে পাড়া বেড়াতে বেরোয়, গোল চোখ আরও গোল করে আমাদের দিকে হাঁ করে তাকায়, যেন আমাদের ধড়ের ওপর মুণ্ডুর জায়গায় ইউ এফ ও বসানো আছে - সে বাচ্চাগুলো এত্ত মিষ্টি, এত্ত মজার, ভাবা যায় না। আর যে বাচ্চাগুলো আমাদের আশেপাশে বসে সেগুলো সব একএকখানা যন্ত্র। নৃসিংহঅবতারের ডিরেক্ট বংশধর। চেঁচাচ্ছে, কাঁদছে, ঘ্যানঘ্যান করছে, গুরুজনের কথা এককান দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বার করে দিচ্ছে, বুট পরা পা দিয়ে ক্রমাগত সিটের পেছনে লাথাচ্ছে - সে এক ভয়াবহ ব্যাপার।

টানা পাঁচঘণ্টা লাথি খেতে খেতে কাঠগোদামে পৌঁছলাম। নেমে অবশ্য নীল আকাশ, সাদা মেঘ আর সোনালি রোদ্দুর দেখে মন ভালো হয়ে গেল। পরবর্তী কর্মপদ্ধতি না বুঝতে পেরে ন যযৌ ন তস্থৌ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এমন সময় পবন সিং এসে স্যালুট ঠুকে বলল, ‘চলিয়ে সারজী, কাঁহা চলনা হ্যায়।’
আমরা অবশ্য তখনও জানি না যে আমার থেকেও হাইটে দু’ইঞ্চি ছোট এই হাসিমুখো লোকটার নাম পবন সিং। আমরা বললাম রামগড় যাব, পবন সিং একটা দাম বলল। দু’পক্ষেরই দু’পক্ষের প্রস্তাব মনে ধরল। পবন সিং অ্যাবাউট টার্ন করে সুদর্শন চক্রের মতো গাড়ির চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে চলল, আমরা পেছন পেছন দৌড়লাম। একটু দূরে রাখা একটি দুধসাদা অল্টোর ট্রাঙ্কের দরজা খুলে ওষুধের কোম্পানির নাম লেখা আমাদের লালকালো ব্যাগ ঢোকাতে যাবে, এমন সময় পবন সিং থমকে গেল।

‘রামগড় তো সমঝা, লেকিন কওনসা রামগড়? মল্লা ইয়া টল্লা?’

অ্যাঁ? এসব আবার কী?

ততক্ষণে চারপাশে গাড়িওয়ালাদের ভিড় জমে গেছে। ভারতবর্ষে এই একটা দেখার মতো জিনিস। যত না লোক, লোকের হাতে সময় তার থেকে বেশি। আমাদের গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে, দরাদরির আর সুযোগ নেই, তবু লোকজন সঙ্গে সঙ্গে এসেছে কী হয় দেখার জন্য। বলা যায় না, ইন্টারেস্টিং কিছু এখনও ঘটতে পারে। চশমাপরা মহিলার হঠাৎ মৃগী অ্যাটাক হতে পারে, লম্বা লোকটার হঠাৎ পবন সিং-এর সঙ্গে মারামারি লাগতে পারে।

পবন সিং-এর দ্বিধা দেখে ভিড় উৎসাহিত হয়ে উঠল। তেড়েফুঁড়ে জানতে চাইল, ‘হাঁ হাঁ, মল্লা ইয়া টল্লা? টল্লা ইয়া মল্লা?’

বোঝা গেল দুইখান রামগড় আছে। এক মল্লা, আরেক টল্লা। মল্লা খানিক ওপরে, টল্লা খানিক নিচে। জটলার মধ্যে থেকে দুয়েকজন আমাদের আগাপাশতলা দেখে নিয়ে রায় দিলেন, ‘মল্লা, মল্লা। কুমায়ুন মণ্ডল রেস্ট হাউস।’ জহুরির জাত, দেখেই বুঝেছেন আমরা সরকারি গেস্ট হাউসের পাবলিক, ক্লাব মহিন্দ্রার বাংলো বুকিং নেই আমাদের।

টল্লা না মল্লা, মল্লা না টল্লা – চরম সাসপেন্স আর গুনগুনানির মধ্যে এক কান আঙুল দিয়ে চেপে কে এম ভি এন গেস্টহাউসে ফোন করে জানা গেল জহুরি নির্ভুল। আমাদের যেতে হবে মল্লা রামগড়েই। সম্মিলিত হাঁফ ছেড়ে ভিড় অবশেষে পাতলা হয়ে গেল। পবন সিং খুব খুশি হয়ে দড়াম করে ট্রাংকের ঢাকনা বন্ধ করে দরজা হাট করে খুলে ধরল, উঠে পড়লাম। একটা প্রশ্ন বুকের ভেতর খোঁচাচ্ছিল, না জিজ্ঞাসা করে পারলাম না। বললাম, ‘টল্লা হোতা তো প্রবলেম হোতা?’ কে জানে বাবা হয়তো বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে। পবন সিং আয়না দিয়ে আমাদের চোখে চোখ রেখে হেসে বলল, ‘কেয়া প্রবলেম ম্যাডাম। মল্লা বোলে তো মল্লা চলে যায়েঙ্গে, টল্লা বোলে তো টল্লা। সাত আট কিলোমিটার কি তো বাত হ্যায়।’

গিয়ার চেঞ্জ করল পবন সিং।

‘লেকিন যানা শুরু করনে সে পহেলে কাঁহা যানা হ্যায় ইয়ে ক্লিয়ারলি পাতা হোনা চাহিয়ে, হ্যায় না?

এমন অনির্বচনীয় দর্শন শুনে সারাশরীরে কাঁটা দিয়ে উঠল। টের পেলাম বাতাসের তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমেছে অলরেডি। লালকালো নাগা শাল রেডি ছিল হাতের কাছেই, বার করে মুড়িসুড়ি দিয়ে বসলাম। জানালার কাঁচ তুলে দিলাম। আয়না থেকে ঝুলন্ত লালরঙের প্লাস্টিকের হনুমানঠাকুর এক হাতে গদা আরেক হাতে গন্ধমাদন নিয়ে দুলতে দুলতে অভয় দিতে দিতে চললেন।

রামগড় হচ্ছে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের একটি ছোট্ট পাহাড়ি শহর। রামগড়ের অসুবিধে (বা সুবিধে) হচ্ছে বেচারা পড়ে গেছে বাঘা বাঘা টুরিস্টপ্লেসের মাঝখানে। এ দিকে নৈনিতাল, ও দিকে মুক্তেশ্বর – এর মধ্যে রামগড় আর বেশি পাত্তা পাচ্ছে না। রামগড়ে কী দেখার আছে জিজ্ঞাসা করলে সবাই মাথা চুলকে বলছে, ইয়ে . . . মানে . . . এই তো চারটি আপেল বাগান আর পাহাড়। প্রশ্নকর্তা বাঙালি বুঝতে পারলে জুড়ে দিচ্ছে, আর হাঁ হাঁ, রভিন্দরনাথ টেগোর এখানেই বসে গীতাঞ্জলীর অর্ধেক লিখ্‌খা থা।

রামগড়ে যেতে গেলেও ব্যাপারটা বোঝা যায়। এক একটা মোড় পেরোয় আর পবন সিং বলতে থাকে, এই গেল আলমোড়ার রাস্তা, এই গেল চারধামের, এই গেল অমুকের, এই গেল তমুকের। চলতে চলতে আমরা ভীমতাল পেরোলাম। অজ্ঞাতবাস চলাকালীন ঘুরতে ঘুরতে দ্বিতীয়পাণ্ডব এ দিকে এসে পড়েছিলেন, এমন সময় তাঁর ভয়ানক তেষ্টা পেল। আমরা হলে জলের খোঁজে এদিকওদিক যেতাম, একেতাকে জিজ্ঞাসা করতাম, ভীম ওসব হাঙ্গামায় গেলেন না। কাঁধের গদা দিয়ে মাটির ওপর ধাঁই করে মারলেন এক বাড়ি, অমনি মাটি ফুটো করে মস্ত এক দিঘি বেরোল। দিঘির নাম হল ভীমতাল। ভীমের তেষ্টা বহুদিন মিটে গেছে, ভীমতাল এখন আশেপাশের লোকালয়ের তেষ্টা মেটায়। পবন বলল, হলদোয়ানি পর্যন্ত নাকি ভীমতালের জল সাপ্লাই হয়। ব্যাপারস্যাপার দেখে হাঁ হয়ে আছি, এমন সময় পবন বলল, ‘কোই মিল গয়া দেখা থা?’ আমি দেখিনি, কিন্তু গল্পটা ওপরওপর জানি আর কে কে অ্যাকটিং করেছিল তাও জানি। কাজেই মাথা নেড়ে দিলাম। পবন বলল, ওই যে একটা সিন ছিল না যেখানে ‘প্রীতি জিন্টা হাথ মে ফুল লেকে খিড়কি কি বাহার ভাগাদৌড়ি কর রহে থে?’ প্রীতি জিন্টাকে দেখিনি, কিন্তু নায়িকাদের হাতে ফুল নিয়ে ভাগাদৌড়ি করতে ঢের দেখেছি, কাজেই বিনা সংকোচে আবারও মাথা নেড়ে হাঁ হাঁ বলে দিলাম। ওই যে ওই বাংলোর সামনে, পবন আঙুল দিয়ে দেখাল। আমরা ‘রোককে রোককে’ বলে গাড়ি থামিয়ে ছবি তুলে নিলাম।


পবন নির্ঘাত আমাকে বলিউড বাফ ঠাউরেছে, জিজ্ঞাসা করল, 'বিবাহ্‌ ফিলিম দেখা হ্যায়? উসকা ভি শুটিং লেক কে আসপাস হি হুয়া থা।’

‘বিবাহ্‌’ আমি দেখেছি। মারাত্মক সিনেমা। সটাং অস্বীকার করলাম। ও সিনেমার সঙ্গে দূরদূরান্তের পরিচয়ও আমি স্বীকার করতে চাই না।


একপাশে পাহাড়, অন্যপাশে খাদের মধ্য দিয়ে আমরা এঁকেবেঁকে চললাম। এই সময় পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়ার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে সবুজ। সবুজ কাকে বলে দেখতে হলে বর্ষাকালে পাহাড়ে যেতে হবে। কাছেদূরের যত পাহাড় একেবারে ঘন বনে ছেয়ে গেছে। সেই বনের ফাঁক দিয়ে দিয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উঠেছে চকচকে কালো পিচরাস্তা। রাস্তার দু’পাশে জ্বলজ্বলে হলুদ রঙের বর্ডার। কাঠগোদাম থেকে রামগড়ের রাস্তা অবিশ্বাস্য রকমের ভালো। পবন সিং-এর অল্টো বাতাসের মতো উড়ে চলল। রাস্তার দু’পাশে কচুপাতার মতো বড় পাতাওয়ালা বড় বড় গাছের জঙ্গল ক্রমে পাইনের বন হয়ে গেল। শহর ক্রমশ ক্ষুদে থেকে ক্ষুদেতর হতে হতে শেষটায় ঘন কুয়াশার নিচে চাপা পড়ে গেল।

আর অমনি চোখের সামনে ফুটে উঠল অন্য একটা জগৎ। হেয়ারপিন বাঁকের মুখে পাঁচ বছরের শিশুর ছবি আঁকার খাতা থেকে উঠে আসা লাল টুকটুকে ছোট মন্দির, গায়ে অতি যত্নে ডিজাইন করে ওম্‌ লেখা। ছাগলের দল নিয়ে হাঁটছে অন্যমনস্ক কিশোরী। তেরপলের ছোট্ট ছাউনির নিচে উবু হয়ে বসে ভুট্টা সেঁকছে বুড়ো। খুব ইচ্ছে হচ্ছিল নেমে গিয়ে কিনি, নিজেকে বকেঝকে সামলালাম। পাহাড়ি পথে বমি করার ট্র্যাক রেকর্ড দুজনেরই চমৎকার, যথাসম্ভব খালি পেটে মানে মানে গন্তব্যে পৌঁছতে পারলে বাঁচি।

তারপর এল ভওয়ালি। আর পাঁচটা নোংরা, ঘিঞ্জি পাহাড়ি টাউনের সঙ্গে কোনও ফারাক নেই। ভওয়ালির চৌরাহা আপনার শেষ সুযোগ, মাইন্ড চেঞ্জ করে রামগড়ের বদলে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার। কিন্তু আমরা গেলাম না। রামগড়েই যাব জেদ ধরে পড়ে রইলাম। জানালার পাশ দিয়ে হুসহুস করে ভওয়ালি পেরিয়ে গেল। যেই না পেরোল, পবন সিং আঙুল তুলে সামনের পাহাড়টার চুড়োর দিকে দেখাল। ও রহা রামগড়।

আপনি যদি ভাবেন পবন সিং-এর আঙুল বরাবর তাকিয়ে আমরা দেখলাম পাহাড়ের গায়ে সবুজ বনের ভেতর জেগে থাকা পুতুলের বাড়ির মতো ছোট ছোট রংচঙে বাড়ি, তাদের সারি সারি টিনের চালের ওপর খেলা করা রোদ্দুর তাহলে ভুল ভাববেন। রামগড়ে, অন্তত মল্লা রামগড়ে, ও সব কিচ্ছু নেই। পবন সিং যেটাকে বাজার বলে দেখাল, সেটা আসলে গুনে গুনে চারটে দোকানের একটা জটলা। বাজার থেকে খাদের দিকে নেমে যাওয়া একটা রাস্তা ধরে শ’খানেক মিটার ধরে নেমে গেলেই কুমায়ুন মণ্ডল বিকাশ নিগমের গেস্টহাউস। গেস্টহাউসে না থেমে সোজা আরও সাত কিলোমিটার নেমে গেলে টল্লা রামগড়।


আমরা থামলাম। পবন সিং-কে টা টা করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে এলাম। শুক্রবার দুপুরে পৌছনোর সুবিধে হচ্ছে তখনও গেস্টহাউস খালি। আপকো যো কামরা পসন্দ হো লে লিজিয়ে। কামরার শর্টলিস্ট ওঁরাই করে দিলেন। একশো এক আর একশো দু’নম্বর কামরাই বেস্ট। আমরা দুটো ঘরই ঘুরে দেখলাম, প্রায় অবিকল। টস করে একশো দুই উঠল। আমাদের আপত্তি সত্বেও লালকালো ব্য্যগ বয়ে ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে গেলেন একজন। লাঞ্চমে কেয়া খাইয়েগা? তখন লাঞ্চের পক্ষে বেশ দেরি হয়ে গেছে। ভদ্রলোক নিজেই আগ বাড়িয়ে পরামর্শ দিলেন। এ বেলা ভেজ খেয়ে নিন, এক ঘণ্টার মধ্যে রান্না হয়ে যাবে, রাতে ননভেজ খাবেন’খন। তাই সই। ভাত, চাপাটি, ডাল, সবজির বায়না নিয়ে টুপি ছুঁয়ে ভদ্রলোক চলে গেলেন। আমরা মেন দরজার ছিটকিনি তুলে দিয়ে বারান্দার দিকের দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম।

আর বেরোনো মাত্র দুজনেরই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে গেল।


খাবারের ডাক এল। পেতলের বাটি করে ধোঁয়া ওঠা ভাত, জিরে ফোড়ন দেওয়া ডাল, আলু বিন ক্যাপসিকামের মাখোমাখো মশলাদার মিক্সড ভেজ। ফয়েল মোড়া বাহারি কঞ্চির ঝুড়ি করে হাওয়ার মতো হালকা, গরম গরম ফুলকো রুটি। একেকবারে দুটো করে। শেষ হলে পরের দুটো। মিক্সড ভেজ যে অত ভালো রান্না হতে পারে আমি না খেলে বিশ্বাস করতাম না। কৃতিত্বটা আমাদের খিদের নাকি গেস্টহাউসের রাঁধুনির হাতের তারের কে জানে।

ঘরে ফিরে কখন চোখ লেগে এসেছিল টেরই পাইনি। ঘুম যখন ভাঙল তখন ঘরের মধ্যে প্রায় অন্ধকার হয়ে এসেছে। জানালার বাইরে একটা আবছা নীল আলো লেগে আছে তখনও। সুইচ টিপে দেখি আলো নেই। চিন্তাও নেই। ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রাখা মোমবাতি আর দেশলাই আগেই নজরে পড়েছে। মোমবাতি জ্বালিয়ে চটি গলিয়ে রান্নাঘরের দিকে হাঁটলাম। চা আর পকোড়ার তেষ্টায় গলা শুকোচ্ছে মারাত্মক। ঘরের ভেতর অত বুঝিনি, দরজা খুলে বাইরে পা রাখতেই ঠাণ্ডায় শিরদাঁড়া কেঁপে উঠল। অর্চিষ্মান যখন হাফ সোয়েটার ব্যাগে পুরছিল খুব ঠোঁট বেঁকিয়ে হেসেছিলাম, নেক্সট আড়াইদিন ও-ই হাসবে মনে হচ্ছে।

চা আর পকোড়া এসে গেল। আমরা জানালার দিকে তাকিয়ে বসে বসে সেগুলোর সদ্ব্যবহার করলাম। চোখের সামনে কুয়াশা পাকিয়ে পাকিয়ে উঠছিল। যেন খাদের নিচে কেউ লাখ লাখ উনুন একসঙ্গে জ্বালিয়ে দিয়েছে। ধোঁয়ায় পোড়া কাঠের বদলে খালি কে জানে কত শতাব্দীর শ্যাওলাজমা পাইনবনের ভেজা গন্ধ। ধোঁয়ার ঢেউ ক্রমে নীল আলোটার শেষ চিহ্নটুকু গিলে ফেলল। টিভির নিচের লাল আলোটা জ্বলে উঠেছিল বেশ কিছুক্ষণ আগেই। তবু আমরা আলো জ্বালালাম না। অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে বসে রইলাম। অনেক দূরে টল্লা রামগড়ের রাস্তায় দুয়েকটা গাড়ির হলুদ হেডলাইটের আলো মাঝে মাঝে জোনাকির মতো টিমটিম করতে লাগল।


                                            (চলবে)


Comments

  1. Replies
    1. তারপর রোমহর্ষক ব্যাপার, বিম্ববতী। তিষ্ঠ।

      Delete
  2. রামগড় শুনেই মনে হয়েছিল যে স্টেশন থেকে টাঙ্গাভাড়া দেড় টাকা। আর বেলাপুর দু'টাকা।

    কিন্তু ক্রমশ বুঝলাম যে এখানে ব্যাপার আলাদা। শরীর সেরে উঠেছে, বেড়িয়ে এলেন, খুব আনন্দ পেলাম। লেখাটা পড়ে আরও বেশি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে দেবাশিস, আমি যেই না বাড়িতে বলেছি রামগড় যাচ্ছি, মা জিজ্ঞাসা করলেন, এই কি সেই মেঘদূতমের যক্ষের রামগড়? আর বাবা জানতে চাইলেন, এই কি সেই শোলের রামগড়?

      শরীর একেবারে চাঙ্গা। লেখা পড়ে ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম দেবাশিস। থ্যাংক ইউ।

      Delete
    2. আমার মা খুবই বিচলিত হয়ে ফোন করেছেন, কারণ মেঘদূতের যক্ষ রামগড়ে নয়, রামগিরি পর্বতে নির্বাসিত ছিল। মিসটেক মিসটেক।

      Delete
  3. আহা!

    (পাইন, ওগো পাইন মনে পড়ে গেল)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, অদিতি।

      Delete
  4. টল্লা আছে, মল্লা আছে, কেল্লা নেই? পরের পর্বে আসে কিনা দেখি!
    তাড়াতাড়ি চলুক। :)
    ইয়ে, 'বিবাহ্‌' আমিও দেখেছি। :(

    ReplyDelete
    Replies
    1. যাক, বিবাহ্‌ দুর্ভোগ আপনাকেও পোয়াতে হয়েছে জেনে খানিকটা হলেও সান্ত্বনা পাচ্ছি অরিজিত।

      Delete
  5. তুমি যখনই কোন বেড়াবার খবর বল, আমার মনটা নেচে ওঠে। অসাধারণ বর্ণনা আর সুন্দর সুন্দর ছবির দৌলতে দৃশ্যগুলো একেবারে ঘরের দরজায় উপস্থিত। মনে হয়, আরে আমিও তো পৌঁছে গেছি সেখানে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দারুণ লাগল, মন ভাল না হয়ে উপায়ই নেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, মালবিকা। রামগড় ভীষণ ভালো লেগেছে আমাদের।

      Delete
  6. darun. sesher chhobita dekhe ... ghurte jabar iachha ar sekhane gie bikele cha pakora khabar ichhao jagchhe... :-) ... porer part tar opekhai roilam

    ReplyDelete
    Replies
    1. বেড়াতে গিয়ে বিকেলবেলা পকোড়া খাওয়াটা আমাদের একটা পারিবারিক ট্র্যাডিশনে পরিণত হচ্ছে ইচ্ছাডানা।

      Delete
  7. Bhogobaan ekta dorja bondho Kore dile niden pokhhey ekta janla khule den .. Erokom kichhu ekta Loke bole, khub ekta kharap bole NA ... Apnar blog tar sondhan peyechhilam Mithai jokhon inflight mode e, ghurtey jaoa pray bondho ... Dure kothao taar por ar jaoa hoy ni ... Kintu ei je apni majhey majhey ghuriye niye asen amader ... Hingsa holeo .. Bhalo lage :)
    -- Atmodip

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহাহা মিঠাইয়ের মোডটার কথা শুনে খুব হাসছি আত্মদীপ। আমার তো সত্যি বলতে ঘুরতে যত ভালো লাগে, সে গল্প আপনাদের শোনাতেও প্রায় সমান সমানই ভালো লাগে। সে গল্প শুনতেও আপনাদের ভালো লাগে শুনে খুশি হলাম।

      Delete
  8. কুন্তলা, আপনার লেখা যে ভালো লাগে সে কথা তো নতুন করে বলার কিছু নেই। আপনার সব লেখার মত ভ্রমণ কাহিনিও অনবদ্য। কিন্তু আজকের লেখাটা আমার কাছে স্পেশাল, কারণ ওই কুমাযুন অঞ্চলে আমরা বেড়াতে গেছিলাম বোর্ডের পরীক্ষার পর, আর সেটা আমার জীবনের সবথেকে স্মরণীয় বেড়ানো। আমরা অবশ্য রামগড় যাইনি, নৈনিতাল-আলমোড়া-কৌসানি-রানিক্ষেত ইত্যাদি ঘুরেছিলাম, কিন্তু তাও আপনার লেখায় আর ছবিতে সেই জায়গার আমেজটা আবার যেন পুরোপুরি ফিরে পেলাম। এমনিতেই কাঠগোদাম আমার অন্যতম প্রিয় জায়গার নাম। আর ওই যে হেয়ারপিন বাঁক ওয়ালা রাস্তা, ভীমতাল, অন্ধকার পাহাড়ের গায়ে রাস্তায় গাড়ির আলোর ওঠানামা, পাহাড়ি রাস্তায় বমি হওয়ার ভয়, সবই আরেকবার করে ষোলো বছর আগেকার সেই দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিল। তখন তো আর ব্লগ লিখতামনা, আর ফটোও তোলা হত সীমিত সংখ্যায়, কাজেই সেই অভিজ্ঞতার সিংহভাগটা স্মৃতির মধ্যেই ধরা আছে, আর তার সঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতা মিলছে। এর বেশি প্রশংসা করার ভাষা আমার নেই। ভীষণ ভালো লাগছে, পরের অংশের অপেক্ষায় রইলাম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. স্মৃতিতে যেটুকু ধরা থাকে অভিজ্ঞতার সেই পার্টগুলোই সবথেকে ঝকঝকে হয়। ক্যামেরা কিংবা এম এস ওয়ার্ডে বন্দী করতে চাইলেই ছবির রং খানিকটা ফ্যাকাশে হয়ে যায় আমি দেখেছি। যাই হোক, আমার বেড়ানোর সঙ্গে আপনার বেড়ানো মিলে যাচ্ছে দেখে খুব ভালো লাগল। কাঠগোদাম নামটা আমারও ভীষণ পছন্দের। আসলে এই জায়গাগুলোর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার ব্যাপারটা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে থাকে বলে বোধহয়। আমার আরেকটা প্রিয় স্টেশনের নাম টনকপুর। টনকপুরে নেমেও অনেক পাহাড়ে যাওয়া যায়।

      Delete
  9. Kothai vablam ramgarh sune ya boro joler tank fank dekhaben, boro boro gonf wala lokjon...ta na prokiti!!! Chooo!!!

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, অর্ণব। হতাশ করার জন্য সরি। তবে একবার আইকনিক স্ট্যাটাস পেয়ে গেলে শোলে মার্কা সিনেমাও যে এতদিন এত প্রভাব বিস্তার করে রাখতে পারে সেটা সত্যি দেখার মতো ব্যাপার। ক'বছর হল? চল্লিশ? তোমার কথা জানি না, আমাকে যদি কেউ বলে না দিত যে ওই জলের ট্যাঙ্কের সিনটায় হাসতে হবে, তাহলে আমার হাসি পেত কি না সন্দেহ। সেটা অবশ্য শুধু শোলে নয়, বেশিরভাগ কমেডি সিনেমার ক্ষেত্রেই খাটে।

      Delete
  10. কুন্তলা লেখাটা দারুন. পরের অংশটার জন্য হা পিত্যেশ করছি. আমি এখন অফিস-বাড়ি সব মিলিয়ে বড় লেজে গোবরে দশায়. বেড়াতে যাওয়া জানি না কবে হবে. তোমার লেখা দিয়ে অনতত মানস ভ্রমণ টুকু হোক. আর হ্যাঁ আমি একসময় বম্বে-পূণের ভল্বো বাসের সাপ্তাহিক যাত্রী ছিলাম. আর তার সব ট্রিপের বিনোদন (পড়ো অত্যাচার) ছিল মুভি দেখানো. সেখানে আমিও বিবাহ দেখেছি. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাঃ বাঃ, এত লোক বিবাহ দেখেছে শুনে খুশি হচ্ছি খুব। লেখাটা ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল। থ্যাংক ইউ, দেবশ্রী।

      Delete
  11. ki anando ...darun berano hoyeche mone hacche- tinni

    ReplyDelete
    Replies
    1. দারুণ বলে দারুণ তিন্নি, দুর্দান্ত ঘুরেছি। অবশ্য ঘোরার কৃতিত্ব কিছু নেই, জায়গাটারই কৃতিত্ব।

      Delete
  12. Ki je bhalo lekho tumi.porlei aram.grishmer dupure bari phirei fridge er na, kNujor thanda jol golay dhalar moto

    ReplyDelete
    Replies
    1. সর্বনাশ, সত্যি সত্যি এত আরাম লাগলে তো দারুণ ব্যাপার। থ্যাংক ইউ, Tinker Bells.

      Delete
  13. তুমি কোই মিল গয়া দেখোনি আর বিবাহ দেখেছ আর আমি ঠিক উল্টো টা| হরে দরে সবই সমান|
    ভীষণ সুন্দর লেখা| পড়ে যত ভালো লাগে তত মন খারাপ হয়| ছবি গুলোও ভীষণ ভালো| তাড়াতাড়ি পরের পার্ট গুলো লিখে ফেলো| আর অপেক্ষা করতে ভালো লাগছে না|

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, অপরাজিতা। আরে অপেক্ষা করতে কি আমারই ভালো লাগছে, কিন্তু জীবনসংগ্রাম না কী সব বলে, তাতে ফেঁসে আছি।

      Delete
  14. https://www.google.co.in/search?q=megamalai&source=lnms&tbm=isch&sa=X&ei=N-_YU8-DKNDg8AWXnYGoDA&ved=0CAcQ_AUoAg&biw=1366&bih=668


    ei jayga ta holo megamali..tamil nadur onyotomo sundor pahari gram..gota gram e kulle 50 ta lok thaake..ekta bsnl er tower,ekta girja,ekta sorkari bunglow ar ekta dokan...ei niye megamalai..amio ei weekend e gechilam amar pg er bondhu der sathe nie..apnake to facebook e chhobi dekhate parlam na..tai google images ei dekhachchi..

    ReplyDelete
    Replies
    1. আহা, অপূর্ব জায়গা, ঋতম। দেখেই ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করছে। খুব ভালো লেগেছে নিশ্চয়? থ্যাংক ইউ।

      Delete
    2. bhalo mane...? oshadharon legeche didi

      Delete
  15. khub bhalo lagche

    mithu

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, ধন্যবাদ মিঠু।

      Delete
  16. khub bhalo lekha porte porte akta jinis hoy amar. kichu kichu line ato bhalo lege jaye, 2-3 bar kore seta porte hoy, to maximize the effect of bhalolaga. tomar lekha porte giyeo exactly etai hoy. bar bar.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওরে বাবা, কী ভালো কমপ্লিমেন্ট। ধন্যবাদ, কুহেলি। তুমি যে আমার পুরোনো লেখাগুলো এত মন দিয়ে পড়ছ আবার কষ্ট করে কমেন্টও করছ, এই দেখে আমি মুগ্ধ।

      Delete
    2. ki je bolo. tomar lekha ami ghuriye firiye pori. lokjon keo porte utsahito kori. ekhane abar akta comment korlam, jeta agerbar bolte bhule gechilam. tumi Vivah dekhecho?! my god! tarporeo tomar sanity intact ache? ami to trailer tuku dekhei khanto diyechilam. :D :D

      Delete
    3. হাহাহা, বিবাহটা সিরিয়াসলি . . .

      Delete
  17. baba ma esheche dilli, kothay jabo thik korte apnar ghoraghuri abar o porlam... r ramgarh-mukteshwar ghure elam last weekend e.... ki bhalo, ki bhalo.... apnar lekha pore rasta gulo besh chena chena lagchilo... malla na talla bhabteo hoe ni :) thank you...

    r ekta jinisher sandhan dile khub bhalo hoe... summer e 1 mash moton kothay gie thaka jae? kono homestay? cha khabo, porbo r baire dekhbo... dyotona.

    ReplyDelete
    Replies
    1. অবান্তরের পোস্ট বেড়ানোর শুভকাজে লেগেছে জেনে ভালো লাগল, দ্যোতনা। একমাস থাকার মতো জায়গা তো বলতে পারব না, ল্যান্ডোরে কয়েকটা হোম স্টে-তে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন, ওখানে ফরেনার ছাত্ররা থাকেটাকে সেখানে দীর্ঘকালীন থাকার সুযোগ থাকা অস্বাভাবিক নয়। খুবই দুঃখিত এর থেকে প্রিসাইজ তথ্য দিতে না পারার জন্য। তবে আপনি যদি খুঁজে পান, আমাকে জানাবেন, আমিও গিয়ে থেকে আসব।

      Delete

Post a Comment