নোটিস






যদিও আজকাল বিনানোটিসে হাপিশ হওয়ার বদঅভ্যেস অবান্তরের মালিকের চরিত্রে বেশ জেঁকে বসেছে, তবু সেটার প্রতিকারের চেষ্টায় এই পোস্ট। এই পোস্ট আপনারা যখন পড়বেন তখন আমরা ওলাক্যাব চেপে এয়ারপোর্টের দিকে ছুটেছি, গন্তব্য রাঁচি, উপলক্ষ্য আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ে। মামাবাড়ির দিকে আমাদের প্রজন্মে এই শেষ বিয়ে, কাজেই এ বিয়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অসীম। রাঁচি থেকে বিয়ে খেয়ে শতাব্দী চেপে কলকাতায় বৌভাত খেয়ে দিল্লি ফিরতে ফিরতে সেই রবিবার গভীর রাত।

কাল সন্ধ্যে পর্যন্তও আমি নিশ্চিত ছিলাম যে এই পোস্টটা লেখার আমার দরকার পড়বে না। আমি এও নিশ্চিত ছিলাম যে যাওয়ার আগে দুটো পোস্ট আমি শেডিউল করে রেখে যেতে পারব। একটা বই রিভিউ বৃহস্পতিবার বেরোবে, আরেকটা সাপ্তাহিকী শনিবার। রবিবার রাতে ফিরে এসে না ঘুমিয়ে আরেকটা পোস্ট লিখে সোমবার সকালে সেটা ছেপে দিলে কেউ টেরই পাবে না যে আমি আদৌ ঠাঁইনাড়া হয়েছি।

এখন আপনারাও নিশ্চয় নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে আমার জীবনের বেশিরভাগ ফুলপ্রুফ প্ল্যানের মতোই এই প্ল্যানটাও মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই বুক রিভিউ মাঝপথে বন্ধ রেখে এই নোটিস লিখতে বসেছি। জানালার বাইরে ঘোর অন্ধকার, ছটপুজো উদযাপক বোমা ফাটছে দূরে অনবরত। দেওয়ালের ওপারে আমার মতোই শেষরাতে ওঠা বাড়িওয়ালির নড়াচড়ার শব্দ পাচ্ছি। ল্যাপটপের ডানপাশে অফিসের নোটবুকের খোলা পাতায় লেখা লিস্টের বেশিরভাগ আইটেেমের পেট কাটা হয়ে গেছে। খালি টুথব্রাশ, ফোন, চার্জার ইত্যাদি যেগুলো আজ সকালে ব্যাগে ঢোকাতে হবে সেগুলো ছাড়া।

ল্যাপটপটাও সঙ্গে যাচ্ছে। বইয়ের রিভিউটা শেষ করে ফেরার ইচ্ছে আছে। অনুবাদ করার মতো একটা জম্পেশ গল্পও পেয়েছি। বিয়েবাড়িতে হল্লা করার মাঝে মাঝে দুটো পোস্টই শেষ করে ফেলব। অন্তত সেরকমই প্ল্যান।

আলো ফুটেছে পর্দার ওপারে। বোমার আওয়াজও ফিউ অ্যান্ড ফার বিটউইন। সকালে লোকের ঘুম এমনিই ভেঙে যায় কিনা,  বোমা ফাটিয়ে ঘুমন্ত মানুষের হার্ট অ্যাটাক হওয়ানোর মস্তিতে ভাঁটা পড়ছে। আমিও আসলাম। কপাল ভালো থাকলে সোমবারের আগেই, ভালো না থাকলেও সোমবার দেখা হচ্ছেই। ততদিন আপনারা সবাই ভীষণ ভালা থাকবেন, আনন্দে থাকবেন, অবান্তরকে মিস করবেন।

টা টা বাই বাই, আবার যেন দেখা পাই।


Comments

  1. Book review ki "Scarlet Pimpernel" er? Ota amar poraa. Dekhi apnar sathe amar review mele ki na..

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই রে, এটা তো সবে পড়তে শুরু করলাম রণদীপ, এখনও রিভিউ করার জায়গায় আসিনি। একটা অন্য বইয়ের রিভিউ হবে। পড়া হয়ে গেলে অবশ্য এটারও রিভিউ করা যেতে পারে।

      Delete
  2. Replies
    1. করেছি, করেছি, রুণা! এখন সেই এনজয়মেন্টের ক্লান্তি থেকে রিকভারির পালা চলছে।

      Delete
  3. jehetu ami khub materialistic ebong bokar hoddo akta meye manush, tai bolchi biyebari kirom sajle gujle setao amader sathe share koro. ar biyebari niye interesting post lekhar horek mal moshla to pawai jaye, tar modhyei guje dio na hoy koyekta photo.
    Bon voyage. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ফোটো তো তোলা হয়নি, কুহেলি। আমাদের এমনিই অনেক মালপত্র হয়েছিল, কাজেই ক্যামেরাটার ঘাড়েই বলির খাঁড়া নেমেছিল। তাছাড়া ভাইয়ের বিয়েতে ব্লগের ছবি তুললে দারুণ অপরাধবোধও হত, তাই সে ঝামেলায় যাইনি। এমনি অবিয়ে-সংক্রান্ত দুয়েকটা ইতিউতি ছবি তুলেছি, সেগুলো দেখাব না হয়।

      Delete
  4. Baah darun...khub anondo kore asun aar amader ekhane sei niye sundar ekta lekha upohar din...

    ReplyDelete
    Replies
    1. আনন্দ খুবই হয়েছে, কিন্তু লেখাটা কেমন হবে কে জানে, সুস্মিতা। বিশেষ করে এত আনন্দ করার পর মাথাটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। দেখা যাক।

      Delete
  5. Replies
    1. ভালো না? অনেকদিন জমিয়ে রেখেছিলাম, সুযোগ পাওয়া মাত্র ছেপে দিয়েছি।

      Delete
  6. uff biyebarir report ola post asche! chamatkar!

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, চমৎকারিত্বের বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, কাকলি। তবে দেখা যাক।

      Delete
  7. ভাল করে ঘুরে আসুন। রিভিউয়ের অপেক্ষায় রইলাম। :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, অরিজিত।

      Delete

Post a Comment