সাপ্তাহিকী






এবারে নারীবাচক শব্দগুলোর দিকে তাকাই। একটু ব্যুৎপত্তির দিকে যেতে হবে, একটু সহ্য করবেন এই অনুরোধ। অঙ্গনা, রমণী, কামিনী, ললনা, প্রমদা, যোষা, যোষিৎ, বনিতা কত নামই তো আছে নারীর। কিন্তু নারী হিসেবেই নারীর মর্যাদা সেখানে নেই। 'অঙ্গনা' শব্দে অঙ্গসৌষ্ঠবের আকর্ষকতাই বড়। 'রমণী' তো রমণেরই ইঙ্গিতবাহী (রমণে রমণী মরে কোথাও না শুনি - কবিকঙ্কণ)। 'কামিনী' - কম্ ধাতুজ, কামনারই ধন, ব্যাখ্যা করা হয়েছে অত্যন্ত কামুকী হিসেবে (কামিনী দেখিয়া কামে হইল বিভোল - কাশীরাম)। 'ললনা' মানে বিলাসিনী - পুরুষকে যে লুব্ধ করে ছলাকলায় (লালয়তি পুমাংসম্‌)। 'প্রমদা'য় আছে মাদকতার অর্থ। 'যোষা' 'যোষিৎ' ললনার অর্থবাহী। 'স্ত্রী' শব্দে গর্ভধারণের ব্যাপারটাই বড়। স্তৈ ধাতু এর মূলে, স্ত্যায়তে শুক্র শোণিতে য়ম্যাস্‌ (শুক্রশোণিত যাতে কাঠিন্য পায়)। লাতিন sator-এর সঙ্গে 'স্ত্রী'র উচ্চারণসাম্য লক্ষণীয়। লাতিন শব্দটির অর্থ begetter। স্ত্রী-বাচক 'দার' শব্দটির মূল অর্থ ('দার' পুংলিঙ্গ শব্দ) কৃষ্টভূমি। নারীও ভূমিকল্পা, বীজ-বপনে সন্তান-শস্য-উৎপাদিকা। একটা মনগড়া ব্যাখ্যা পাওয়া যায় - দারয়ন্তি ভ্রাতৃন্‌ ইতি দারাঃ অর্থাৎ ভাইদের যারা বিচ্ছিন্ন করে দেয় তারাই 'দার' - পদবাচ্য। কী অবমাননাকর কল্পনা। 'ভগিনী' শব্দটি (ভগযুক্তা) সরাসরি স্ত্রীচিহ্ন-ইঙ্গিতবাহী বলে ধরেন অনেকে। আলংকারিক-কবি দণ্ডী তো ভগিনী শব্দটিকে জুগুপ্সাব্যঞ্জক বলেছেন, সাহিত্যে শব্দটির ব্যবহার থেকে বিরত থাকতেও বলেছেন - 'ভগিনী-ভগবত্যাদি গ্রাম্যকক্ষাং বিগাহতে'। 'কন্যা'র মতো একটি শব্দেও দেখি কামনার গন্ধ। মহাভারতে ব্যাসদেবের ব্যাখ্যা - সর্বান্‌ কাময়তে যস্মাং ৩.৩০৬.১৩। তার মানে 'কন্যা' মানে 'কাম্যা'। 'কন্‌' আর 'কম্‌' কুটুম্ব-ধাতু। নারীবাদীরা যদি প্রতিবাদী হন ইংরেজ মহিলাদেরও সঙ্গে পেতে পারেন, কারণ woman, mistress, madam কোনওটিরই ইতিহাসই ভাল নয়। woman আসলে wifeman অর্থাৎ নারীর স্বতন্ত্র পরিচয় নেই, তার পরিচয় কারও স্ত্রী হিসেবেই। mistress আসলে ছিল অবৈধ প্রেমিকা, বর্তমান অর্থে আসতে বেশ সময় নিয়েছে। madam (ma dame=my lady) আগে স্ত্রীলোকের প্রতি প্রণয় সম্বোধন হিসেবেই চলত, চসার-এর সময়েও তার অর্থের অবনতি ঘটেনি। Restoration আমলে ১৬৬০ সাল থেকে শব্দার্থের অবনতি ঘটে, অর্থ দাঁড়ায় বেশ্যাবাড়ির মালকিন, অর্থাৎ আমরা যাকে 'মাসি' বলি। এখন অবশ্য শব্দটির অর্থোৎকর্ষ ঘটেছে।

এতক্ষণ যা বললাম তা নিছক পরিহাসবিজল্পিতং নয়। শব্দের মধ্যে সামাজিক মনোভাবটি যথার্থই ধরা আছে। শব্দ তো মনেরই দর্পণ।
---জ্যোতিভূষণ চাকী, বাগার্থকৌতুকী


উনিশশো ষোল সালের এক ডকুমেন্টে প্রথম এক লিটারেরি ক্লিনিকের উল্লেখ পাওয়া গেছে, যেখানে বিবলিওথেরাপি-র মাধ্যমে আর্তকে সেবা করা হয়। আমি মোটামুটি নিশ্চিত তার আগেও এ থেরাপি ছিল, তবে হয়তো সেটার কোনও নাম ছিল না। আমি আরও বেশি নিশ্চিত যে এ থেরাপি আরও অনেকদিন ধরে অনেক মানুষকে সুস্থতার খোঁজ দেবে।

জানালা দিয়ে মেঘ আমরা সকলেই দেখি। মেঘের মধ্যে ভালুক, উট, রেলগাড়ি, ক্লাসটিচারের খোঁপা - সেও অনেকেই দেখতে পায়। কিন্তু এসব দেখতে দেখতে তাদের গোত্রবিচার করার কথা বেশি লোকে ভাবে না। সেই বিরল লোকদের মধ্যে একজন ছিলেন লুক হাওয়ার্ড। তাঁর সম্পর্কে জানতে হলে ভিডিওটা দেখতে পারেন।

অস্বীকার করার কোনও জায়গাই নেই। নিজের জীবন দিয়ে জানি। People Who Live Alone Have Pretty Terrible Diets.

মাঝে মাঝে মনে হয় মৃত্যুর থেকেও ভয়ের যদি কিছু থেকে থাকে তবে তা হল অন্তর্ধান। হারিয়ে যাওয়া। ইতিহাসের বিখ্যাত কয়েকটি অন্তর্ধান রহস্যের কথা জানতে হলে ক্লিক করুন।

ম্যাগো।

ক্যামেরা রাখুন, খাতা পেনসিল ধরুন। কথাটা ভালো, তবে কানে গেলে হয়।

পাখির চোখে চিন।

কী দেখছেন সেটা কথা নয়। কে দেখছে সেইটাই কথা। আবারও তার প্রমাণ পাঠিয়েছেন সাপ্তাহিকীর পরম বন্ধু সুতীর্থ।

এরা যদিও ফিজিক্সের সেমিনার নিয়ে হেসেছে, তবে একটু ঘুরিয়েফিরিয়ে নিলে এই একই হাসি ইকনমিক্সকে নিয়েও হাসা যায়। লিংক পাঠিয়েছে হীরক।

সাপ্তাহিকীর শুরুতে সাইলেন্ট ফ্রেন্ডসদের কথা দিয়ে সাপ্তাহিকী শুরু হয়েছিল, শেষে আরেকরকম ফ্রেন্ডসদের কথা বলা যাক। এরা সাইলেন্ট নয়, কিন্তু ফ্রেন্ড নিসন্দেহে। কী করে বুঝলাম? কারণ এদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ করারও দরকার পড়ে না, স্রেফ ছবি দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। নিজেই পরীক্ষা করে নিন।

এ সপ্তাহের গান।
 

Comments