রকশম-চিৎকুল-কামরু ফোর্ট
রকশম নামটা আগে শুনিনি, সাংলা শুনেছি। আমি শুনেছি মানে সকলেই শুনেছে, সাংলা ভ্যালির ভরকেন্দ্র হচ্ছে সাংলা শহর। কিন্তু সে তো নামেও শহর, কাজেও শহর, সাইজে যা একটু ছোট, সেখানে আমাদের থাকতে ইচ্ছে করল না। খুঁজতে খুঁজতে আমরা পেয়ে গেলাম রকশম-এর নাম। ছবি দেখে, রিভিউ পড়ে পছন্দ হয়ে গেল। সারাহান থেকে ঘণ্টা চারেক সাংলা, সাংলা থেকে ঘণ্টা আধেক দূরে বসপা নদীর তীরে, আপেল বাগানের ভিড়ে, সমুদ্রবক্ষ থেকে সাড়ে তিন হাজার মিটার উচ্চতায় ছোট্ট গ্রাম রকশম।
যাওয়ার পথে টাপরিতে চা খেলাম আর কারছামে দেখলাম বিখ্যাত কারছাম-ওয়াংটু নামের বারোশো মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।
যাওয়ার রাস্তার বর্ণনা দিতে পারি, কিন্তু তার থেকে ঢের সোজা হবে বোঝানো যদি বলি গোটা রাস্তাটাই যায় কিন্নরের মধ্যে দিয়ে, স্থানীয় লোকেরা যাকে বলে কিনৌর। উত্তরে কিন্নর কৈলাস, দক্ষিণে গাড়োয়াল, আর শতদ্রু, বসপা, স্পিতি উপত্যকা জুড়ে তৈরি এই কিন্নর। বাকি পৃথিবীটা যদি মানুষের হয় তবে কিন্নর দেবতাদের। নদী, পর্বত আর জঙ্গলে ঘেরা কিন্নরে মানুষই বিরল এবং বেমানান।
রকশমের অসুবিধে একটাই। থাকার হোটেল নেই বেশি। আছে শুধু রুপিন রিভার ভিউ হোটেল। বসপা নদীর একেবারে ঘাড়ের ওপর ঝুলে আছে। আমরা মাসখানেক আগেই বুক করে রেখেছি। আপনারা গেলেও আগেভাগে বুক করেই যাবেন। ভয়ানক ডিম্যান্ড।
রুপিন রিভার ভিউ-তে পৌঁছতে দুপুর দুটো নাগাদ পৌঁছে, রুটি আলুজিরা খেয়ে, বেরোলাম। হাওয়া রীতিমত ঠাণ্ডা। অর্চিষ্মান বুদ্ধি করে সোয়েটার এনেছে, আমি পাকামো করে একটা ফিনফিনে চাদর, গায়ে দিতে না দিতে উড়ে যায়।
রকশম গ্রামে জনা সাতশো মানুষের বাস। আবহাওয়ার কারণেই এঁরা যাযাবর। শীতে বরফে ঢেকে যাওয়ার সময় এঁদের নিচে নেমে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না । এঁদের ছোটছোট বাড়ির পেছনের গলি দিয়ে আমরা বসপা নদীর তীরে নেমে গেলাম।
পাথরে ধাক্কা খেতে খেতে সরবে ছুটছে বসপা। তিব্বতের সীমানা থেকে শুরু হয়ে কারছামের কাছে গিয়ে শতদ্রুতে মিশেছে ছোট্ট নদীটা। ছোট্ট কিন্তু তেজীয়ান। গোটা রাস্তায় চিৎকুল থেকে কারছাম পর্যন্তই এর ধারে মনুষ্যবসতি, তাও বছরের শীতের সময়টা ছাড়া, বাকি সময় বসপার সঙ্গী কেবল পাহাড়, পাইন, ওক, জুনিপার, ইউক্যালিপটাস।মাঝে মাঝে বুকের ওপর পাথরের মাথা দেখে লোভ হয়, হেঁটে পেরিয়ে যাওয়ার চিন্তা মাথায় আসে। কিন্তু সে চিন্তা ভয়ংকরী। কারণ জলের নিচে খাদ থাকা বিচিত্র নয়। তাই সরকারি ব্রিজ ধরেই হাঁটা স্থির করলাম। সরকারি ব্রিজের পাশের বোর্ডে ব্রিজ তৈরির তারিখ, শেষ হওয়ার তারিখ, এস্টিমেটেড কস্ট, ইনকারড কস্ট, পপুলেশন বেনিফিটেড সব লেখা আছে। ট্রান্সপ্যারেন্সির হদ্দমুদ্দ। ব্রিজ পেরিয়ে এসে আমরা নদীর পাড় ধরে হাঁটা শুরু করলাম। পাড় মানে পাহাড় আর নদীর মাঝে চিলতে পাথুরে পথ, কিন্তু তাতেই যে থেমে থাকতে হবে এমন দিব্যি কেউ দেয়নি। নদীতে নেমে না পড়তে পারি, তবে তার যথাসম্ভব কাছে তো আসতে পারি। আমরা নদীর ধারে পাথরের ওপর পা ফেলে ফেলে চললাম। পাইনের বন ঘন হয়ে এল, পায়ের নিচে ঘন বেগুনি রঙের অসংখ্য ছোটছোট ফুল, সবুজ কুচিকুচি ঘাস, ঝরে পড়া পাইন কোণ। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। তারপর ঠাণ্ডা বাড়তে লাগল। হোটেলে ফিরে এলাম।
রুপিন রিভার ভিউর ঘরবাথরুম সব পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন, কিন্তু সরকারি হোটেলের ঘরে থাকার অভ্যেস থাকলে ঘর ছোট লাগবে। খাটসর্বস্ব ঘর। টিভি আছে, যা প্রায় বাথরুমের মতোই দরকারি। খেয়েদেয়ে ঘরে ফিরে 'ডাবল অ্যাটাক টু' দেখলাম। সিরিয়াসলি, সিনেমাটা সত্যিই ওই নামের। অত অ্যাকশনেও রক্ষা হয়নি, সিনেমা শেষ হওয়ার আগেই দুজনে ঘুমিয়ে পড়েছি। মাঝরাতে উঠে টিভি বন্ধ করলাম, নিচে বসপা প্রবল গজরাচ্ছে।
চিৎকুল
পরদিন সকালে পুরিভাজি খেয়ে বেরোলাম। আজ আমরা যাব চিৎকুল। ভারত তিব্বত সীমান্তে ভারতবর্ষের শেষ গ্রাম। চিৎকুলে থাকা যায়, নদীতটে ক্যাম্প থেকে শুরু করে গ্রামে হোটেলও আছে এখন, কিন্তু রকশমে থাকার সিদ্ধান্তে আমরা অখুশি নই।
অখুশি নই কারণ রকশম থেকে চিৎকুল যাওয়ার রাস্তাটা চমৎকার। গোটা বারো কিলোমিটার, যেতে লাগে আধঘণ্টা মতো। সীমান্ত কাছে, তাই পরীক্ষানিরীক্ষার ব্যাপার আছে। মস্তরং বলে একটি জায়গায় থেমে পরিচয়পত্র দেখাতে হল। ঝকঝকে রোদ্দুর ছিল আকাশে, পাইনের ফাঁক দিয়ে সে আলো এসে পড়ছিল পাহাড়ের গায়ে, গাড়ির জানালা গলে আমাদের চশমার কাঁচে। পাহাড়ি রোদের একটা ম্যাজিক আছে, দৃষ্টি, শ্রুতি, ঘ্রাণ সব সাফ করে দেয়। পথের পাশ দিয়ে আমাদের উল্টোদিকে চলেছে কুলকুল করে ছোট নালা, নালার ধারে গুচ্ছ ফুল, হলুদ, সাদা, বেগুনি। তার ওপর ছোট্ট হলুদ প্রজাপতি ফুরফুরিয়ে উড়ছে। একবার মনে হচ্ছে হলুদ ফুলগুলোই সবথেকে সুন্দর, পরক্ষণেই মনে হবে বেগুনি ফুলগুলো বেস্ট, অমনি পাশ থেকে সাদা ফুল গলা বাড়াবে। বোরিং, কিন্তু সাদার থেকে সুন্দর আর কী কিছু হয়?
অখুশি নই কারণ রকশম থেকে চিৎকুল যাওয়ার রাস্তাটা চমৎকার। গোটা বারো কিলোমিটার, যেতে লাগে আধঘণ্টা মতো। সীমান্ত কাছে, তাই পরীক্ষানিরীক্ষার ব্যাপার আছে। মস্তরং বলে একটি জায়গায় থেমে পরিচয়পত্র দেখাতে হল। ঝকঝকে রোদ্দুর ছিল আকাশে, পাইনের ফাঁক দিয়ে সে আলো এসে পড়ছিল পাহাড়ের গায়ে, গাড়ির জানালা গলে আমাদের চশমার কাঁচে। পাহাড়ি রোদের একটা ম্যাজিক আছে, দৃষ্টি, শ্রুতি, ঘ্রাণ সব সাফ করে দেয়। পথের পাশ দিয়ে আমাদের উল্টোদিকে চলেছে কুলকুল করে ছোট নালা, নালার ধারে গুচ্ছ ফুল, হলুদ, সাদা, বেগুনি। তার ওপর ছোট্ট হলুদ প্রজাপতি ফুরফুরিয়ে উড়ছে। একবার মনে হচ্ছে হলুদ ফুলগুলোই সবথেকে সুন্দর, পরক্ষণেই মনে হবে বেগুনি ফুলগুলো বেস্ট, অমনি পাশ থেকে সাদা ফুল গলা বাড়াবে। বোরিং, কিন্তু সাদার থেকে সুন্দর আর কী কিছু হয়?
এমন সময় গাড়ি ঘ্যাঁচ করে থামালেন ঈশ্বরজী। কিন্তু চিৎকুল কোথায়? এখনও তো রাস্তা ফুরোয়নি। বরং বাঁদিকের পাহাড়ে ধ্বসের ছাপ স্পষ্ট। এখনও ছোট ছোট নুড়ি নেমে আসছে, ধুলোর সঙ্গে সঙ্গে। ঈশ্বরজী বললেন, “ফোটো লেনা নহি হ্যায় কেয়া?”
ইগোটাও যদি অতটুকু হত
ছোটবেলায় আমার মতো যাঁরা স্টুডিওতে ফোটো তুলতে গেছেন, তাঁদের হয়তো মনে আছে। পেছনে একটা ছবি থাকত? হয় তাজমহল, নয় ওই দশ ফুট বাই তিন ফুট বোর্ডের মধ্যেই একই সঙ্গে ধপধপে পর্বত, তিরতিরে নদী, ছায়াছায়া জঙ্গল? ওই ছবিটাই চিৎকুল।
চিৎকুল অবিশ্বাস্য রকম সুন্দর। চিৎকুল হাস্যকর রকমের সুন্দর।
এই সৌন্দর্যের ভেতর সামনের তিনঘণ্টা আমরা ছাড়া গরু। নদীতে নেমে যাব, পাথরে বসে ছবি তুলব, কনকনে ঠাণ্ডা জল, আঙুল দশ সেকেন্ডের বেশি ডুবিয়ে রাখা যায় না, কিন্তু উল্টোদিকে বরফপাহাড়ের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকা সঙ্গীর গায়ে ছিটোনোর জন্য যথেষ্ট সময়। পায়ের তলায় সাদা বেগুনি হলদে ফুলের দল অবুঝের মতো ঘন হয়ে আসে, একসময় আর ডিঙিয়ে যাওয়া যায় না। হাঁটতে হাঁটতে রাস্তা আলাদা হয়ে যায় কখন, হঠাৎ দেখা যায় সেটা মাথার বিশ হাত ওপর দিয়ে বইছে। সেখানে পৌঁছোতে গেলে হয় যতদূর হেঁটে এসেছ ততদূরে হেঁটে হেঁটে যাও, নয়তো পাথুরে দেওয়াল ধরে ধরে ওঠো। পারব? অমনি একটা বীভৎস আওয়াজ, একটা গরু, এতক্ষণ দেখতে পাইনি, পাথুরে পাহাড়ের গায়ে ঘুরে ঘুরে ঘাস খাচ্ছে। অ্যাকচুয়ালি, খাচ্ছিল। এখন খাওয়া থামিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে হ্যা হ্যা হাসছে। আমাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব টের পেয়েছে নিশ্চয়। রোখ চেপে যাবে, পাথর আঁকড়ে আঁকড়ে উঠে আসব রাস্তায়, উঠে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে গরুটার চোখে চোখ ফেলতে চাইছি, কিন্তু সে হাই তুলে অদৃশ্য তুড়ি বাজিয়ে অন্য ঘাসের গোছা টার্গেট করেছে। এবার ফিরলেও হয়, কিন্তু না ফেরাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পাহাড়ের গা জুড়ে পাইনের বন। কেউ সাজায়নি, বেছে বেছে বোনেনি পাহাড়ের গায়ে, নিজেরাই কেমন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছে, কেমন ফিগার মেন্টেন করেছে নিজেদের। ছোট পাইন গাছগুলোর শ্যাম্পু করা ফুরফুরে পাতা, ওপর দিকে সবক'টা হাত বাড়িয়ে আছে। কোলে নাও শিগগিরি, চারদিকে ধেড়ে ধেড়ে সব দাঁড়িয়ে আছ, কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না। বড় গাছেদের হাতা সমান্তরাল, ছোটদের মাথায় ছাতা মেলে আছে। কী ডিসিপ্লিন, কী ল অ্যান্ড অর্ডার। এমর আম জাম সজনে? ট্র্যাফিকনিয়ম ভেঙে ছুটেছে এদিকসেদিক যেদিকে মন চায়। হোপলেস।
এই বোর্ডের ওপাশে গেলে পুলিস, থুড়ি প্যারামিলিটারি ধরবে।
কামরু ফোর্ট
কামরুর প্রসঙ্গ সারাহানের পোস্টে একবার এসেছিল মনে আছে? বুশেহরের রাণা/রাজাদের আদত শক্তিকেন্দ্র ছিল এই কামরু। কামরু সাংলা উপত্যকার একটি বর্ধিষ্ণু জনপদ। এখান থেকেই তাঁরা প্রথমে সারাহান এবং পরে রামপুরে সরে যান। সাংলা শহর থেকে কিলোমিটার দুয়েক দূরে কামরু দুর্গ এখনও আছে পাহাড়ের ওপর। ঈশ্বরজীর সঙ্গে আমরা চললাম সে দুর্গ দেখতে।
সাংলার প্রধান চক থেকে ডানদিকে গোঁত্তা নিয়ে খাড়াই একটা ঢাল বেয়ে উঠে গাড়ি থামল একটা বড় গেটের সামনে। দেখে আমার একটু, একটু না বেশই, অভক্তি হল। চারদিকে গিজগিজ করছে বাড়ি/ গিজগিজে বাড়ির মাঝখানে একটা চুনসিমেন্টের তোরণ, গায়ে কাঁচা হাতের ফুলপাতা ডিজাইন। তোরণের সামনে একটা তুলসী মঞ্চের মতো ব্যাপার, শ্রীকৃষ্ণ না কোন ঠাকুরের মন্দির। একটা রাস্তা তোরণের ভেতরে ওপর দিকে উঠে গেছে, বাঁধানো পাথরের রাস্তা, দুপাশে চেপে এসেছে বাড়িঘর, পাশে সরু নালা। ময়লা কাপড় পরা এক বুড়ি বসে বসে ডাল দিয়ে খুঁচিয়ে সে নালা সাফ করছে। ঈশ্বরজী আমাদের উৎসাহ দিলেন, যাইয়ে যাইয়ে।
গেলাম। উঠছি আর সন্দেহ ক্রমেই ঘনাচ্ছে, এ কীরকম ফোর্ট? গোবরে ছয়লাপ রাস্তা, দুপাশের বাড়ি থেকে জল বেরিয়ে নর্দমায় পড়ছে, কোনও বাড়ির সামনের দিক, কোনও বাড়ির পেছনের চাতাল, চাতালে বসে ব্যাজার মুখে কেউ ইট ভাঙছেন হাতুড়ি দিয়ে।
আমার বুকের ভেতরও হাতুড়ি পড়ছিল। কী খাড়াই কী খাড়াই। দশ পা চলতে না চলতে হৃদপিণ্ড দুই হাতে কেউ চেপে ধরে, ভয় লাগে ফট করে ফেটে যাবে এক্ষুনি। নাকের ডগা জ্বলতে শুরু করেছে বাতাসের কামড়ে। একেকটা মোড় ঘুরছি আর সামনে আবির্ভূত হচ্ছে প্রায় পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রি খাড়া রাস্তা। প্রতিবার থেমে শপথ নিচ্ছি বাড়ি গিয়ে যোগব্যায়াম শুরু করব। দুটো কলাবিনুনি বাঁধা মেয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে মোড়ের মাথায় রাস্তার ধারের রেলিং-এ বসে কীসব চেটে চেটে খেতে খেতে গুজগুজ ফুসফুস করছিল, আমাদের প্রশ্নের উত্তরে জানাল, ফোর্ট আরও পনেরো মিনিট। টলতে টলতে চললাম। অবশেষে হঠাৎ দুম করে চারপাশের বাড়িঘর ফুরিয়ে গেল, চোখের সামনে একখানা বাজখাঁই দরজা বেরিয়ে পড়ল, হ্যাঁ এটাকে দেখে একটু একটু কেল্লা কেল্লা মনে হচ্ছে বটে।
গেটের ভেতরে আরও একটা গেট। এই দ্বিতীয় গেটের ওপর সাঁটা কাঠের নোটিসবোর্ড।
গেটের ভেতরে আরও একটা গেট। এই দ্বিতীয় গেটের ওপর সাঁটা কাঠের নোটিসবোর্ড।
টুপি ছাড়া প্রবেশ নিষেধ।
কোমরবন্ধনী ছাড়া প্রবেশ নিষেধ।
ঋতু চলাকালীন মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ।
ওয়েল, আত্মসম্মান বলে যদি কোনও বস্তু থেকে থাকে, তাহলে এর একটা প্রতিবাদ করতে হয়। কয়েকটা অপশন মাথায় এল। এক, মারাত্মক নিরীহ দেখতে যে বুড়োটা গেটে বসে আছে, তার সঙ্গে ঝগড়া করা। যে রকম রোগাপটকা দেখতে, মারামারি লাগলে আমার জেতার একটা চান্স আছে। (তাছাড়া আশা করা যায় অর্চিষ্মানও আমার হয়ে ঘুঁষি চালাবে।) দুই, কেল্লা না দেখে ফিরে যাওয়া। এই অপশনটার কথা ভাবলাম আমি মন দিয়ে। পেছনের রাস্তাটার কথা মনে পড়ল। বুকের হাতুড়ির কথা মনে পড়ল। এর পর কেল্লা না দেখে ফিরে যাব? মাটিতে ভাত খেলেও এর থেকে বেশি ক্ষতি হয় চোরের।
আমার মতো নিড়বিড়ে মেরুদণ্ডহীন মানুষদের জন্য আরেকরকম প্রতিবাদ হয়, সেটা হচ্ছে গোটা ব্যাপারটাকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শন। তুমি উন্মাদ তাই বলিয়া আমি সুস্থ হইব না কেন।
ঢুকে পড়লাম। টুপি পরে ছবিও তুললাম দাঁত বার করে।
কামরু নাম এসেছে কামাখ্যা থেকে। কেল্লার মধ্যে আছেন দেবতা বদ্রীনাথ, দেবী কামাখ্যা। নাকি আসাম থেকে আনা। এই সেই দেবী, বছর বছর অম্বুবাচীতে একবার করে যার ঋতু হয়, এবং সেই নিয়ে একমাস ধরে আদিখ্যেতার অনন্ত হয়। সে মন্দিরেও ঋতু চলাকালীন মেয়েদের প্রবেশাধিকার নেই। পুরুষ পুরোহিতদের মা স্বপ্নে আদেশ দিয়েছেন সম্ভবত।
মা মাগো, তুলে নাও মা।
মা মাগো, তুলে নাও মা।
(চলবে)
aha ki jayga ^_^ , delhi theke pahar bodd kache , choto hingse dilum ektu .
ReplyDeleteeta make niye jetei hobe , jodio fort ta hobe na :) - Pradipta
দিল্লির কয়েকটা সুবিধের মধ্যে পাহাড়ের নৈকট্যটা একটা বিরাট, প্রদীপ্ত। সময় পেলে যেও কখনও। গোটা রাস্তাটাই গাড়িতে যাওয়া যায়, কাজেই নো অসুবিধে।
Deleteএকি? কামাখ্যা মন্দিরে ঋতু চলাকালীন মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ? উঁহু, কেউ আপনাদের টুপি পরিয়েছে, এই তথ্যটা ভুল।
ReplyDeletese ki ma jadi satti katha sone tabe avaga pathakder ki gati hobe
ReplyDeleteKi shundor jayega Kuntala! Ki bhishon shundor! Ek baar jetei hobe. Khub bhalo chobigulo.
ReplyDeleteজায়গাটা সত্যি খুব সুন্দর, শর্মিলা। সুযোগ হলে যেও একবার। খুবই সোজা যাওয়া।
DeleteKhub sundor jayega! Ami hole nodir dhare patharer opor boshe katiye ditam! Ekta boi nitam oboshyo!
ReplyDeleteএটা ভালো আইডিয়া, রুণা।
DeleteAmi ei route er onek photo dekhechi.. onek golpo sunechi.. Tobe chitkul jawar eto probol icche age hoyni... :) mondire probeshadhikar kom hole onno dike bhalo hobar chance ache.. Meye gulo sei time ta boi pore Ba berate giye katak..adikhyeta korar theke better.. Zottosob..
ReplyDeleteএইটা ভালো বলেছিস, ঊর্মি। চিৎকুল ঘুরে আয়। পস্তাবি না।
Deleteuff ki bhalo jayega. bucket list berei choleche.
ReplyDeleteআমার বাকেট লিস্টে যে সিকিম কতদিন ধরে আছে, কুহেলি।
Deleteki sundor ki sundor... ami delhi te thakina keno bole prochur aakhep korlam... Bratati.
ReplyDeleteহাহা,দিল্লিতে থাকার এটা একটা সুবিধে, ব্রততী, ঝট করে পাহাড়ে পৌঁছে যাওয়া যায়।
Delete