শনিরবির ছবি



অন্যদিনের থেকে আলাদা। মূলচন্দ ফ্লাইওভারে ওঠার আগে গাছপালার আড়ালে ঝুপড়িগুলো আগে কোনওদিন চোখেই পড়িনি।ঝুপড়ির সামনের খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁত মাজতেও দেখলাম একজনকে। ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে সন্তর্পণে নামছেন একজন। মাদারির বাচ্চাগুলো মাথায় ডমরু বেঁধে বনবন ঘোরাচ্ছে। অফিসের পাঁচিলের বাইরে ঠিক যে জায়গাটায় রোজ ওলা থেকে নামি, সেখানে ঝাঁকবাঁধা কতগুলো বেগুনি ফুল। এতদিন না দেখে থাকলাম কী করে রহস্য। বা রহস্য নয়। আজ নামলে আজকেও দেখা হত না। পাশ দিয়ে হুস করে চলে গেলাম বলে দেখা হল। সফদরজং টুম্বের পাঁচিলের বাইরে শুকনো পাতা জড়ো করে একটা চাদরে তুলে সেটার চার কোণা তুলে ধরে নিয়ে চলেছেন দু’জন। 

সারা শহরটাই ঝরা পাতায় ভরে গেছে। আন্টিজির দোকানে আমার ট্রিপের সংখ্যা বেড়েছে, কারণ জানালা দিয়ে ওইরকম রোদ দেখেও সিটে বসে থাকাটা ক্রাইম। শনিরবি বাড়ি থেকে না বেরোনোটা আরও বড় ক্রাইম। তাছাড়া অনেকদিনের সংযমপালনের পর কতগুলো রিওয়ার্ড পয়েন্টস জুটেছিল, ছোটবড় উদযাপনও জমেছিল কয়েকখানা। আজ বেরোতেই হত।

সিনেমা আগের সপ্তাহেই দেখেছি (নাকি তার আগের?), ব্লেড রানার ২। বেশ ভালো লেগেছে। উইকি থেকে অরিজিন্যাল ব্লেড রানার সম্পর্কে জানতে গিয়ে মূল বইটাও পড়ে ফেলা গেছে। ফিলিপ কে ডিক-এর ‘ডু অ্যান্ড্রয়েডস ড্রিম অফ ইলেকট্রিক শিপস?’ অক্টোবর মাসের বইয়ের পোস্টে বিশদে লিখব। মিউজিয়াম কিংবা পার্কে যাওয়া যেত, কিন্তু আমার শনিবার সকালেই সব কাজের কথা মনে পড়ে কি না, তাই আউটিং সংক্ষিপ্ত রাখা স্থির হল। যাব, খাব, চলে আসব। 

কোথায় যাওয়া যায় সে নিয়ে একটু দোলাচল ছিল। নিত্যনতুন খাবার জায়গা খুলছে আশেপাশে। লোকজন যাচ্ছে, হইহই করে রেটিং দিচ্ছে জোম্যাটোয়। এক্সাইটিং! ইনোভেটিভ! অ্যাডভেঞ্চারাস! আমাদের দুজনের অনেক মিলের মধ্যে একটা মিল হচ্ছে, অ্যাডভেঞ্চারের থেকে আমরা আরামকে বেশি গুরুত্ব দিই। অ্যাডভেঞ্চারাস দোকানে আরাম হবে না তেমন কোথাও লেখা নেই, তবে অকারণ ঝুঁকি না নেওয়ার ব্যাপারেও আমরা একমত। কাজেই আরামের গ্যারান্টিওয়ালা দোকানে, যেখানে আগেকার আরামের স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বলে, সেখানে যাওয়াই স্থির হল।

মালচা মার্গের আমোর বিস্ত্রোয়।


ওপরের ছবিটা গত বছরের জুন মাসে তোলা। আজ বাইরের ছবি তুলতে ভুলে গেছি।


কী খাব জানাই ছিল। গ্রিন টি মোহিতো, কোলরাবির ঘ্যাঁট, মাশরুম এবং সেঁকা রসুন সহযোগে স্টেক। প্রোভোলোন ও মোৎজারেলা সহযোগে মাশরুম পিৎজা। আমোর-এ পিৎজার বিক্রি বেশ ভালো। যখনই যাই আশেপাশে সবাইকে পিৎজা খেতে দেখি, আজও ব্যতিক্রম নয়। পুরোটা শেষ করতে পারিনি, অর্থাৎ আজ ডিনারটাও ভালো হবে। 

আর অফ কোর্স,  চা।

আমোর-এর খাবার সম্পর্কে এটুকুই বলতে পারি, খাবার আসার আগেও মুখের হাসি যেমন ছিল, পরেও তেমনই ছিল, একটুও টসকায়নি। বরং আরও প্রশস্ত হয়েছিল।



Comments

  1. Replies
    1. কাল সত্যি খুব মজা হয়েছে আমাদের, কুহেলি।

      Delete
  2. Bah, emnie ghurte, khete ar likhte thako. ami lyad khete khete porte thaki.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, গুড প্ল্যান, চুপকথা।

      Delete
  3. bah.. onekdin por khabar dabar... ami hoyto konodin e Delhi giye esob jaygay khabona.. tao keno bhalo lage.. haha..

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ, এটা কিন্তু ভেবে দেখার মতো ব্যাপার, ঊর্মি।

      Delete

Post a Comment