কমপ্যারিজন ইজ দ্য থিফ অফ জয়
গত সপ্তাহে বিছানায় শুয়ে যখন ক্রমাগত কাশছিলাম আর হাঁচছিলাম, মায়ের কথা মনে পড়ছিল। মা কোথায়, মা থাকলে এখন মাথায় হাত বুলিয়ে দিত এই সব নয়, মনে পড়ছিল যে আমার মাকে আমি জীবনে শুয়ে থাকতে দেখিনি। মাঝেমাঝে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে দেখেছি মা পাশে শুয়ে ঘুমোচ্ছেন, কিন্তু ওইটুকুই। আমি বা বাড়ির অন্যরা বসে বা দাঁড়িয়ে আছি এবং মা শুয়ে আছেন, এরকম কোনও স্মৃতি আমার নেই।
আমার মা বাড়ির সবার পরে ঘুমোতে যান এবং সবার আগে ওঠেন, কাজেই সেটা মাকে শুয়ে থাকতে না দেখার একটা কারণ হতে পারে। কিন্তু ঘুমোনো ছাড়াও তো লোকে শুয়ে থাকে। শুতে বাধ্য হয়, যখন শরীর খারাপ করে।
তার মানে কি আমার মায়ের শরীর খারাপ হয়নি? আমার মা নিতান্ত ছোটখাট চেহারার, সকালে চ্যবনপ্রাশ বিকেলে মুক্তবায়ু সেবন ইত্যাদিও করতে দেখিনি কখনও যে স্বাস্থ্যবান বলে চালিয়ে দেব। তবু মাকে শুয়ে থাকতে দেখিনি কখনও। কাজেই ধরে নেওয়া যায় মায়ের শরীর খারাপ হয়নি কখনও। আমার মতো তিন মাস বাদে বাদে নিয়ম করে তো হয়ইনি।
কখনও দেখিনি বলব না। একবার মাকে শুয়ে থাকতে দেখেছিলাম। ওই একবার দেখেছিলাম বলেই বাকি যে কখনও দেখিনি সেটা বেশি করে স্পষ্ট হয়ে আছে। মা শুয়ে ছিলেন, বাকিরা সবাই ন যযৌ ন তস্থৌ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, কারণ এ রকম একটা অদ্ভুত ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে সে সম্পর্কে কেউই নিশ্চিত ছিল না। মা নিজেও ছিলেন না। বার বার বলছিলেন, ‘এই একটু পরেই ঠিক হয়ে যাবে মনে হয়, তোমরা চিন্তা কোরো না।” আর কিছুক্ষণ এ রকম চললে মা ঠিক হয়েও যেতেন আমি নিশ্চিত, বাদ সাধলেন সেজকাকু। ‘কই দেখি কী হয়েছে’ বলে দুমদাম করে ঘরে ঢুকলেন, মাকে এবং বাড়ির সবাইকে একবার দেখলেন, তারপর গাড়ি ডেকে সোজা মাকে নিয়ে চলে গেলেন সেবাসদন। কারও সঙ্গে আধবারও পরামর্শ করলেন না, কেউ সেজকাকুকে পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টাও করল না কারণ করে লাভ ছিল না। সবাই জানত সেজকাকু মাথাগরম, গোঁয়ার, যা মনে হয়েছে সেটা না করে ছাড়বেন না। ঘটনাটা ঘটেছিল ভোরের দিকে। একটু বেলা হতে আমি আমার লাল রঙের হিরো সাইকেল চালিয়ে সেবাসদনে গিয়েছিলাম। মা হাতে স্যালাইন গুঁজে শুয়ে ছিলেন। খাটের পাশে বসে আমি হাউমাউ করে কাঁদছি আর আমার মা সূচ বেঁধানো হাত তুলে আমার গায়ে বুলিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছেন, মনে আছে।
কখনও দেখিনি বলব না। একবার মাকে শুয়ে থাকতে দেখেছিলাম। ওই একবার দেখেছিলাম বলেই বাকি যে কখনও দেখিনি সেটা বেশি করে স্পষ্ট হয়ে আছে। মা শুয়ে ছিলেন, বাকিরা সবাই ন যযৌ ন তস্থৌ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, কারণ এ রকম একটা অদ্ভুত ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে সে সম্পর্কে কেউই নিশ্চিত ছিল না। মা নিজেও ছিলেন না। বার বার বলছিলেন, ‘এই একটু পরেই ঠিক হয়ে যাবে মনে হয়, তোমরা চিন্তা কোরো না।” আর কিছুক্ষণ এ রকম চললে মা ঠিক হয়েও যেতেন আমি নিশ্চিত, বাদ সাধলেন সেজকাকু। ‘কই দেখি কী হয়েছে’ বলে দুমদাম করে ঘরে ঢুকলেন, মাকে এবং বাড়ির সবাইকে একবার দেখলেন, তারপর গাড়ি ডেকে সোজা মাকে নিয়ে চলে গেলেন সেবাসদন। কারও সঙ্গে আধবারও পরামর্শ করলেন না, কেউ সেজকাকুকে পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টাও করল না কারণ করে লাভ ছিল না। সবাই জানত সেজকাকু মাথাগরম, গোঁয়ার, যা মনে হয়েছে সেটা না করে ছাড়বেন না। ঘটনাটা ঘটেছিল ভোরের দিকে। একটু বেলা হতে আমি আমার লাল রঙের হিরো সাইকেল চালিয়ে সেবাসদনে গিয়েছিলাম। মা হাতে স্যালাইন গুঁজে শুয়ে ছিলেন। খাটের পাশে বসে আমি হাউমাউ করে কাঁদছি আর আমার মা সূচ বেঁধানো হাত তুলে আমার গায়ে বুলিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছেন, মনে আছে।
অসুখের সময় শুধু না, সুখের সময়ও মায়ের কথা মনে পড়ে। আরও বেশি করে মনে পড়ে। অফিস থেকে ফিরে শরীরের প্রতিটি গ্রন্থি শিথিল করে যখন ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকি, আমার সঙ্গে আমার ফ্রিজের চালকুমড়োটার যখন বিন্দুমাত্র তফাৎ থাকে না, তখন হঠাৎ মা এসে উপস্থিত হন। আমার আরাম মাটি করতে। ল্যাপটপের স্ক্রিনের ডানদিকের মাথার সময় জানায় আমার মা এখন বাড়ি ফিরছেন। কোথায় ওলা, কোথায় উবার। মা ঘামতে ঘামতে হাঁটছেন বিবাদী বাগ থেকে ফেয়ারলি প্লেস, মা ছুটছেন লঞ্চের ভোঁ শুনে, মা দৌড়চ্ছেন ঘেমো ভিড়ের মধ্য দিয়ে, পাখির চোখ তারকেশ্বর লোকালের লেডিস কামরা। দুই হাতে বাজারের থলি নিয়ে বাড়ি ঢুকছেন। বাজার গুছোবেন, রান্না করবেন, কাল মান্থলি টেস্ট। মায়ের না।
আমার এখন একটাই কাজ। ব্লগ লেখা। না লিখলেও কিছু এসে যায় না।
*****
অন্যদিন সকালে চা খাওয়ার জন্য দশ মিনিট, শনিরবি সকালে গড়াতে গড়াতে পঁচিশ মিনিট, এক ঘণ্টা, দু’ঘণ্টাতেও ঠেকেছে কখনও কখনও। খবরের কাগজের কোনও একটা হেডলাইন, বা সোশ্যাল মিডিয়ার সাম্প্রতিকতম তর্ক, সদ্য পড়া কোনও একটা বই, রিসেন্টলি দেখা সিনেমা…বিষয় যা খুশি হতে পারে। বেশিরভাগ সময়েই দু’জনে সম্পূর্ণ একমত হই, কখনও কখনও মতান্তর ঘটে। ক্রমাগত যুক্তির জাল বেছাতে বেছাতে, গেরো পাকাতে পাকাতে এবং ছাড়াতে ছাড়াতে আবিষ্কার করি, ছোটখাটো খুঁটিনাটিতে অমিল থাকলেও, মোটের ওপর বিগ পিকচারটা আমাদের দুজনের কাছেই এক। আশ্বস্ত হই। প্রতিটি শনিরবির চায়ের আড্ডা আমাদের সম্পর্কের গোড়ায় নতুন করে জল ঢালে, আগাছা নিড়োয়, কোথাও অগোচরে কোনও কাদা জমলে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেয়।
আর অন্য দুজনের শনিরবির সকালের কথা মনে পড়ে যায়। বাকি পাঁচদিনের সকালের থেকে আরও বেশি ব্যস্ততা। অন্যদিন কলকাতা ক-তে সাড়ে ন’টার খবর শুরু হওয়া মাত্র বাকি পাঁচদিনের সকাল শেষ, শনিরবির সকাল অনন্ত। রান্না চলছে, বাজারে যাওয়া হচ্ছে, গ্যাসের দোকান, রেশন দোকান। ইলেকট্রিশিয়ান কিংবা কলের মিস্তিরি কিংবা বাগান পরিষ্কারের গোপালকাকু। কখন সকাল যায়, কখন দুপুর আসে, বিকেল পড়তে না পড়তে আবার লৌকিকতার পালা।
ওইরকম শনিরবির মধ্যে দিয়ে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর যেতে হলে কেমন হত আমাদের সম্পর্ক? কেমন হত, যদি এই নিভৃত দু’কামরার বদলে একটা হট্টমেলার মধ্যে ফেলে দেওয়া হত আমাদের দু’জনকে? কেমন হত যদি আমাদের কথোপকথনে রাজনীতি, সমাজনীতি আর বড় বড় আইডিয়ার জায়গায়, খালি অন্য লোক, অন্য লোকের সমস্যা, নালিশ, কলের মিস্তিরি, চালের দাম, ওষুধের বিল রাজত্ব করত? যদি দু’জনের গলায় হালের মতো বসে থাকত একটা আস্ত সংসার? যদি সারাদিনে কেন সারা সপ্তাহেও দশ মিনিট সময় নিজেদের জন্য আলাদা না করে পাওয়া যেত?
*****
মাসচারেক আগে ক্যাফে লোটায় খেতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ক্রাফটস-এ হস্তশিল্প মেলা চলছে। যা দেখি সবই কিনতে ইচ্ছে করে, তারপর সংযম প্র্যাকটিস করে কাগজের মণ্ড দিয়ে বানানো একখানা ল্যাম্প কিনলাম। লাল, সবুজ, হলদে, নীল দিয়ে লতাপাতা ফুল মৌমাছি আঁকা। শেডের দুটো অপশন ছিল। একটা উজ্জ্বল হলুদ, একটা ঘন সবুজ। আমাদের সবুজটা পছন্দ হল। আমার ছোট টেবিলে সে ল্যাম্প এখন শোভা পাচ্ছে। ভোরবেলা যখন টেবিলে বসি, ল্যাম্পের আলোয় রংচঙে আলপনা ঝলমল করে। টাইপ করতে করতে চোখ বার বার সেদিকে যায়। আর ভাবি বাড়ি সাজানোর জন্য আর কী কী কেনা যায়, এই ল্যাম্পের সঙ্গত হিসেবে দেওয়ালে আর কী কী শোভাবর্ধক জিনিস ঝোলানো যায়। অবশেষে যুদ্ধে ইতি দিয়ে সুইটকাউচ ডট কম-এ ঘুরতে থাকি। দেওয়ালে একটা অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট প্রিন্ট ঝোলালে কেমন হয়? ফ্রেমের এ কোণ থেকে ও কোণ পর্যন্ত লাল রঙের পোঁচ? আমার ভাড়াবাড়ির দেওয়াল আর খালি নেই, মনে মনে রিষড়ার বাড়ির দেওয়াল ধার নিই। আফটার অল, আমার আসল বাড়ি তো ওটাই, আমার পার্মানেন্ট অ্যাড্রেস। ছবি হাতে নিয়ে মনে মনে ঘুরি ঘর থেকে ঘর, দেওয়াল থেকে দেওয়াল। সামনের ঘরের দেওয়ালে নীলবর্ণা মা কালী মাথায় জবাফুল গুঁজে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর জিভের লালের কাছে আমার অ্যাবস্ট্রাক্ট লাল লজ্জা পায়। অন্য দেওয়ালে বিবেকানন্দ, হাতে হাত পেঁচিয়ে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে। অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিং সম্পর্কে তাঁর মতামত বুঝতে বেশি কল্পনাশক্তির দরকার নেই। একের পর এক দেওয়াল থেকে মধুসূদন, (কবি এবং ঠাকুর দুজনেই,) বিদ্যাসাগর এবং আমার ঠাকুরদা, আমার অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিংকে শেম করেন।
অনেক ভেবে আমি সিদ্ধান্তে এসেছি, যে সব জিনিস আমার এই ভাড়াবাড়িতে বা মিথ্যে বাড়িতে মানায়, সেটা রিষড়ার বাড়িতে মানায় না। রিষড়ার বাড়ির দেওয়ালে অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিং মানায় না। রিষড়ার বাড়ির ঘরে নিভু নিভু হলদে আলো মানায় না। রিষড়ার বাড়ির জন্য চাই ফ্যাটফেটে সাদা টিউবলাইটের আলো।
দিল্লিতে প্রথমবার বাড়িভাড়া নেওয়ার সময় মা এসে রান্নাঘর গুছিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন, মুদির দোকান থেকে আট টাকা দিয়ে লজেন্সের খালি প্লাস্টিকের বয়াম কেনা হয়েছিল, আমাদের চাল ডাল চিঁড়ে মুড়ি এখনও তাতেই রাখা চলছে। ভোরবেলা বসে কাজে ফাঁকি দিয়ে যখন সাইটে সাইটে ঘুরি, ভাবি ওই আট টাকার প্লাস্টিকের বয়াম বদলে ফ্যান্সি কনটেনার কিনলে কেমন হয়? কতরকমের যে কনটেনার পাওয়া যায় অনলাইন। সাদা সেরামিকের গলায় হলদে পোঁচ ট্র্যাডিশনাল, স্টিলের ইউটিলিটারিয়ান, টেরাকোটার গায়ে কবিতা লেখা আর্টিস্টিক।
বাড়ির জন্য কনটেনার কেনার কথা মনে হয়নি কখনও। মানেই হয় না। দু’দিনে ভেঙেচুরে ছত্রাকার হয়ে যাবে। তাছাড়া আমার এক কেজি চাল ওই সব ফ্যান্সি কনটেনারে এঁটে যেতে পারে, বাড়ির চালডাল আঁটবে না। আমাদের বাড়িতে চাল রাখা হত ড্রামে। দু’ফুট উচ্চতার, দেড়ফুট ব্যাসের লোহার ড্রাম। কীসের ড্রাম আমি জানি না, ব্যবহারে ব্যবহারে তার বাইরের লেখা চটে গেছে। ড্রামের ভেতর একটা খালি জর্দার কৌটো থাকত, তাই দিয়ে লোক বুঝে তিন বা চার বা পাঁচ কৌটো চাল নেওয়া হত। আমিও নিয়েছি। যে সব কাজগুলো আমাকে করতে দিলে মায়ের কাজ বাড়বে না, সেটার মধ্যে চালের ড্রাম থেকে চাল আনাটা পড়ত। কাজেই আমি অনেকবার ওই ড্রাম থেকে চাল এনেছি। দরকার মতো নিয়ে ছোট ছোট তিন চিমটি চাল ড্রামে আবার ফেরত দেওয়ার নিয়ম ছিল। কারণ শুধু নিচ্ছি, ফেরত দিচ্ছি না, এরকম করলে চালের ড্রামের মা লক্ষ্মী রেগে যাবেন। (চালের ড্রামে লক্ষ্মীঠাকুর থাকেন সেটা জানা ছিল, কারণ লক্ষ্মীপুজোয় সারাবাড়ির সঙ্গে চালের ড্রামের সামনেও লক্ষ্মীর পা আঁকা হত।)
এবার বাড়ি গিয়ে দেখি চালের ড্রামের ঢাকনার ওপর গুচ্ছের জিনিসপত্র রাখা। খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন, ইস্তিরি। বললাম, ‘এ সব রোজ নামাতে ওঠাতে অসুবিধে হয় না?’ মা বললেন, ‘ওহ, ওই ড্রাম আর ব্যবহার হয় না তো।’
আমি তাকালাম মায়ের দিকে। ‘চাল কোথায় রাখো তবে?’
‘একটা মুড়ির কৌটো খালি করে নিয়েছি। প্লাস্টিকের থলিতে দু’কেজি করে চাল আসে। আমি আর তোর বাবা তো একলা এখন।’
অসাধারণ হয়েছে লেখাটা। খুব খুব ভালো লাগলো। আশা করি দিওয়ালির ছুটি ভালো কেটেছে। ভালো থাকবেন
ReplyDeleteইন্দ্রানী
হ্যাঁ, ছুটি খুব ভালো কাটলো, ইন্দ্রাণী। শুক্রবার অফিস ছিল, কিন্তু এতই কম লোকজন এসেছিলেন যে প্রায় ছুটির মতোই ফিলিং। আপনার ছুটি কেমন গেল?
Deletebesh bhalo.. bhaiphnota holo.. aamaar chotto bhaijhi taar ucchomadhyomik dadake phonta dilo gombhir hoye.. aar baaki shuye bose cinema dekhe katlo..
Deleteaamaar na aapnar maa ke khub hingshe hocche.. issh.. jodi ektu discipline thakto aamaar..
এ মা, একদম হিংসে করবেন না, ইন্দ্রাণী। আমার মায়ের যা টেনশন আর বেশি ভাবার (ক্ষতিকারক রকম বেশি ভাবার) অভ্যেস, মায়ের মাথার ভেতরে যে কী চলে সর্বক্ষণ সেটা কল্পনা করতেও আমার গায়ে কাঁটা দেয়।
Deleteহ্যাঁ, ডিসিপ্লিনটা... আমারও মাঝে মাঝে আফসোস হয়, 'ভাবা'টুকু বাদ দিয়ে শুধু 'করা'টুকুতে যদি মায়ের মেয়ে হতে পারতাম...
khub sundar lekhata...pore khub bhalo laaglo. ashakori ekhon sustho hoye uthechhen.
ReplyDeleteoi chal er drum e chal rakha...tinbar ektu kore drum e chal fela....chhotobelata ekbar moner modhye unki dilo...
থ্যাংক ইউ, সুস্মিতা। আরে লিখতে গিয়ে আমারও মনে পড়ল, চাল ফেরতের ব্যাপারটা আমি কমপ্লিটলি ভুলে মেরে দিয়েছিলাম। লক্ষ্মীঠাকুর যে কী মনে করেছেন অ্যাদ্দিন কে জানে।
Deletelakshmi thakur to ja mone korar korben-i....ki aar kora jaabe!
Deleteতা ঠিক, সুস্মিতা। এত লোকের এত কিছু মনে করা সামলেসুমলে চলতে হয় সর্বক্ষণ, মালক্ষ্মীর মনে করাটাকেই অগ্রাহ্য করা ছাড়া উপায় নেই।
DeleteKhub bhalolaglo lekhata. :-)
ReplyDeleteধন্যবাদ, সায়ন।
Delete"আমি আর তোর বাবা তো একলা এখন।" - ঠাকুমাও তো আছেন?
ReplyDeleteখুব সুন্দর লিখেছেন, যথারীতি।
থ্যাংক ইউ, চন্দ্রচূড়। ঠাকুমা আছেন, কিন্তু তিনি যা খান তা আর ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না।
Deletechal er drum ar tar bhetore tiner kouto to amader bariteo chilo. sotti amader baba ma der generation ta koto onno rokom chilo.
ReplyDelete‘একটা মুড়ির শিশি খালি করে নিয়েছি। প্লাস্টিকের থলিতে দু’কেজি করে চাল আসে। আমি আর তোর বাবা তো একলা এখন।’ - thakuma o to achen
Deleteঠাকুমা তো আছেনই, কুহেলি, কিন্তু তিনি আর ভাতডালের মতো বোরিং জিনিস খান না আরকি। বাবামায়েদের জীবনটা সত্যি খুব অন্যরকম ছিল।
Deleteবড় মন ছুঁয়ে গেল লেখাটা। তিন চিমটি চাল ফেরত দেওয়ার কথা কিন্তু আমি এক্কেবারে ভুলে গেছিলাম! মানে নিজের সংসারে, কোন্ দিন করিনি, অথচ জানতাম তো! এ ভাবেই হারিয়ে যায় আমাদের ছোটোবেলা গুলো, ধন্যবাদ, আমার সেই ছোটবেলার তিন চিমটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যে। আমার একটা কথা মনে হয় জানেন...আমরা, আমাদের সংসার, আমাদের গল্প যেমন আমাদের মফস্বলী মিঠে রোদের বাড়িতে বেমানয়ান, তেমনি আমাদের বাবামায়েদের কাছেও ওই দিল্লি, বম্বে, পুনে, ব্যাঙ্গালোর ের সংসার বড় বেরঙ্গিন। সেই বেরঙ্গিন সংসারে আত্মিয় স্বজন দের ছেলে মেয়ের বিয়েতে কি দেওয়া হবে, তার আলোচনা হয় না, বরানগরের ন-পিসিমার শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখে না কেউ রাতের খাবার টেবিলে বসে; বাজার করার থলি নেই, খেতে বসার আসন নেই, এমনকি জল খাবার কাঁসার গেলাস নেই; সাইকেলের ঘন্টির পাশে কচি পালং-এর মাথা উনকি মেরে পাশের বাড়ির ঘোষাল কাকুর সাথে আলাপ করতে চায় না, ফুল মামার ছেলেকে আইবুড়োভাত খেতে ডাকা হয় না। তবে সব সংসার, সব বাড়ি-ই সত্যি, কেউই মিথ্যে নয়, হয়ত সব সংসার একই রকমের। আসলে সংসার যে রকমই হোক না কেন, সংসারের মানুষগুলো র সমীকরণ-টাই আসল।
ReplyDeleteআশা করি, আপনাদের দীপাবলী খুব ভালো কেটেছে। আমার তো জম্পেশ। ৪ বছর বাদে ভাইফোঁটা তে সত্যিকারের বাড়িতে ছিলাম এবছর। খুব আনন্দ হয়েছে, তাই। ভালো থাকবেন।
কমেন্ট পড়ে খুব ভালো লাগল, অস্মিতা। সব সংসারই নিজের নিজের মতো করে সত্যি, তা ঠিক। কিন্তু আমার বাবামায়ের (এবং জেঠুজেঠি, কাকু কাকি, ঠাকুমাপিসির) সংসার আর আমাদের সংসারের চালচলন এতই আলাদা যে দুটোকে এক জিনিস বলে চালাতে অদ্ভুত লাগে।
Deleteআমি অবশ্য দিল্লিতেই ছিলাম, তবে সিনেমা দেখেছি আর বার্গার খেয়েছি, কাজেই মন্দ কাটেনি।
Shudhu last linetar jonyai lekhata ekta onyo level e uthe gechhey. Darun
ReplyDeleteহাহা, থ্যাংক ইউ, চুপকথা।
Deleteখুব ভালো লাগলো । উপরের বক্তব্যের সাথে একমত , সব সংসারই সত্যি খালি অন্যরকম , বড় বেশী অন্যরকম হয়ত । ভালো থেকো :) ।
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ, প্রদীপ্ত।
DeleteOshadgaron laglo
ReplyDeleteধন্যবাদ, অদ্বিতীয়া।
Deleteঅসুখের সময় শুধু না, সুখের সময়ও মায়ের কথা মনে পড়ে। আরও বেশি করে মনে পড়ে। অফিস থেকে ফিরে শরীরের প্রতিটি গ্রন্থি শিথিল করে যখন ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকি, আমার সঙ্গে আমার ফ্রিজের চালকুমড়োটার যখন বিন্দুমাত্র তফাৎ থাকে না, তখন হঠাৎ মা এসে উপস্থিত হন। আমার আরাম মাটি করতে। ল্যাপটপের স্ক্রিনের ডানদিকের মাথার সময় জানায় আমার মা এখন বাড়ি ফিরছেন। কোথায় ওলা, কোথায় উবার। মা ঘামতে ঘামতে হাঁটছেন বিবাদী বাগ থেকে ফেয়ারলি প্লেস, মা ছুটছেন লঞ্চের ভোঁ শুনে, মা দৌড়চ্ছেন ঘেমো ভিড়ের মধ্য দিয়ে, পাখির চোখ তারকেশ্বর লোকালের লেডিস কামরা। দুই হাতে বাজারের থলি নিয়ে বাড়ি ঢুকছেন। বাজার গুছোবেন, রান্না করবেন, কাল মান্থলি টেস্ট। মায়ের না।
ReplyDeleteওইরকম শনিরবির মধ্যে দিয়ে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর যেতে হলে কেমন হত আমাদের সম্পর্ক? কেমন হত, যদি এই নিভৃত দু’কামরার বদলে একটা হট্টমেলার মধ্যে ফেলে দেওয়া হত আমাদের দু’জনকে? কেমন হত যদি আমাদের কথোপকথনে রাজনীতি, সমাজনীতি আর বড় বড় আইডিয়ার জায়গায়, খালি অন্য লোক, অন্য লোকের সমস্যা, নালিশ, কলের মিস্তিরি, চালের দাম, ওষুধের বিল রাজত্ব করত? যদি দু’জনের গলায় হালের মতো বসে থাকত একটা আস্ত সংসার? যদি সারাদিনে কেন সারা সপ্তাহেও দশ মিনিট সময় নিজেদের জন্য আলাদা না করে পাওয়া যেত?
aar sesh bakyo duto......
Kurnish!
Kurnish!!
Kurnish!!!
আরে, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, অরিজিত।
Deleteআবার মনখারাপ এর ভাল লাগা টা জাগিয়ে দিলে কুন্তলা। ধন্যবাদ
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ-টা পুরোটাই আমার দেওয়ার।
Deletetomar ei lekhagulo porle ami onyo jogote chole jai Kuntala, eto kichu identify korte pari bolei bodhoy....
ReplyDeletema baba der sangsar khub alada chhilo. amar baba ma ekhon bangalore e achhen. ami bhebe dekhlam je last 18 yrs e (exactly half of my lifetime) ei prothom ami ma ke at a stretch more than 7 days dekhchi-ekta adbhut feeling jano! ami 2017 summer theke already bhabte suru korechhi je i hardly have another 13 summers which I could spend with Shree, bolai bahulyo setar utpotti ekdin o chuti na nite para to spend time with her and she went to daycare each and every day of the summer even though she had 2 months vacation. i seriously contemplated "bigyan bekar, i should be staying at home"...
kakimar office kore bari fire abar kaj kora (plus tomar monthly test!) r dutoi efficiently samlano- tomar ei acknowledgment ta amar boro mon kharap kora bhalo lage... r bhabi je amar meyetao hoyto mone rakhbe konodin emon bhabe and not the travel and sleepless nights jegulo amake peter daye korte hoy...anek kichhu likhe fellam- Bratati.
রাখবে রাখবে, ব্রততী...রাখবেই রাখবে। আর একটা কথা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, তুমি যে বাইরে যাচ্ছ, কাজ করছ, সেটা শ্রীকে একটা ট্রিমেন্ডাস, ট্রিমেন্ডাস প্রেরণা দিচ্ছে। যেটা সান্নিধ্যের থেকে কোনও অংশে কম নয়।
Deleteকাকুকাকিমার সঙ্গে তোমার সময় ভালো কাটছে আশা করি...শ্রীও নিশ্চয় মজা করছে খুব।
কি অপূর্ব লেখা! কি ভাবে যেন অবান্তর আমার নতুন ল্যাপটপ এর বুকমার্ক এ ট্রান্সফার হয়নি, আমি ভাবতে পারছিনা প্রায় এক মাস আমি অবান্তর পড়িনি! তাই কি যেন একটা নেই নেই মনে হচ্ছিলো জীবনে!
ReplyDeleteআরে নতুন ল্যাপটপ! কনগ্র্যাচুলেশনস কাকলি। কী ব্র্যান্ড কিনলে?
Deleteঠিক ল্যাপটপ নয়, chromebook - শুধু সার্ফিং করার জন্য শস্তায় পুষ্টিকর :D
Deleteওহ, বেশ ভালো তো। আমি জিনিসটার কথা জানতাম না।
Delete