যতই অকওয়ার্ড হোক
একসময় বিজয়া এলে আতংক হত। দশমীর সকাল থেকে মাবাবা মনে করাতেন, কাকে কাকে ফোন করতে হবে। করতেই হবে। আমি যত বলি, এতদিন কথা নেই, দেখা নেই, হঠাৎ ফোন করে বিজয়ার প্রণাম করতে যাওয়াটা মহা অকওয়ার্ড হবে, কিছুতেই শুনবেন না। হোক অকওয়ার্ড। তবু করবে। ওঁরা খুশি হবেন। তাছাড়া খুশিঅখুশির ব্যাপারই না এটা। কর্তব্য পালনের মতো করে করবে।
গত বছরদুয়েক থেকে নিজেই করি। অস্বীকার করব না, ফোনের রিং হওয়ার সময় একবার মাথায় ঝিলিক দিয়ে ওঠে, কী বলব? তারপর ওপারের হ্যালো-র উত্তরে নিজের পরিচয় দেওয়ামাত্র সব অকওয়ার্ডনেস হাওয়া হয়ে যায়। সাজিয়েগুছিয়ে, ভেবেচিন্তে, আগুপিছু বেছে যে কথা বলতে হবে, একটা শব্দ এদিকওদিক হয়ে গেলে চাকরি জুটবে না, কিংবা ফ্রাইডে নাইটের আড্ডায় ইমেজ চুরমার, তেমন তো নয়, এ সব কথার নদী বইছে আমার জন্মের, কোনও কোনও ক্ষেত্রে আমার বাবামায়ের জন্মেরও আগে থেকে। আমার হাঁ করার শুধু অপেক্ষা। অমনি উল্টোদিক থেকে কথার তোড়। কোথায় আছিস, কেমন আছিস, কত মাইনে পাস। এ বছর কোনও প্রশ্নের ঘুঁষিতে কাৎ হলে কুছ পরোয়া নেই, আসছে বছর আবার হবে। কখনও ন্যায্য নালিশ। তোরা তো আর আসবি না, বলে কী হবে। তখন সত্যি লজ্জা পাওয়া। সত্যি চাই গো যেতে, কিন্তু সময় নেই। যতদিন নেই, ততদিন এই বিজয়ার ফোন আছে। খুব খুব বিরল কেসে, এতই বিরল যে সে কথা তোলাও ভুল তবু সত্যের খাতিরে লিখছি, মনে হয়েছে, হয়তো ওপ্রান্তের সুর সামান্য কাটা। মনে হয়েছে, হয়তো সুতো ধরে রাখার চেষ্টা বৃথা। সত্যি তো, আমার কী দায়? তখন নিজেকে মনে করানো, প্রশ্নটা দায়অদায়ের নয়, প্রশ্নটা কর্তব্যের। বছরে তো মোটে একটা দিন।
আজ রাতে, কাল সকালে সবার নম্বর খুঁজে খুঁজে বার করে ফোন করব। কাউকে বাদ দেব না।
আপনাদের তো দেবই না। আপনাদের সবার জন্য রইল আমার অনেক ভালোবাসা, নমস্কার, কোলাকুলি। সবাই ভীষণ আনন্দে থাকুন, যা চান তাই পান। শুভ বিজয়া।
গোটা ছোটোবেলা কেটেছে যেক'টা অভিশাপ মাথায় নিয়ে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল এই বিজয়া করতে যাওয়ার, প্রণাম করার, দেঁতো হাসি হাসার বাধ্য-বাধকতা, যাকে বঙ্গজীবনের একটি স্যাডো-ম্যাসোকিস্টিক অভিব্যক্তি বলেই ভাবতাম, ও ভাবি। বিয়ের পর বেশ কয়েক বছর শ্রীমতী আমাকে "মানুষ" করার অক্লান্ত প্রয়াস চালিয়েছিলেন, তাই সেই বছরগুলোয় এই ব্যাপারটা আবার শুরু হয়েছিল। এখন আর কেউ এসব করে না। এখন যাঁদের প্রণাম করতে ইচ্ছে হয়, যাদের মাথায় নিজের অযোগ্য হাতটা রাখতে ভালো লাগে, তাঁদের ও তাদের খুঁজে নিই এল.ই.ডি স্ক্রিনের মধ্যেই।
ReplyDeleteআমার নির্জন উৎসবের অঙ্গ হিসেবে আজ আপনাকেও প্রণাম জানালাম। শুভ বিজয়া।
আমার ভালোবাসা আর শুভেচ্ছা আপনার আর আপনার পরিবারের সবার জন্য রইল, ঋজু। শুভ বিজয়া।
DeleteShubho bijaya kuntala Di. Sotti chotobelay esob kharap I lagto...ekhon mone hoe eta o joruri.
ReplyDeleteAmra aste aste amader Baba mayeder Moto hoye jaschii
শুভ বিজয়ার প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা তোমাকেও, প্রিয়াঙ্কা। এটা একদম হাড়ে হাড়ে সত্যি, এই ধীরে ধীরে নিজেদের বাবামাতে পরিণত হওয়াটা।
Deletesubho bijoya kuntala debi.
ReplyDeleteশুভ বিজয়া আপনাকেও।
Deleteশুভ বিজয়ার নিমকি, রসগোল্লা, ঘুগনী, কোলাকুলি!
ReplyDelete😊
শুভ বিজয়া, বিম্ববতী।
Deleteশুভ বিজয়া :)
ReplyDeleteশুভ বিজয়া, প্রদীপ্ত।
Deleteশুভ বিজয়া গুরু। কোলাকুলি, শুভেচ্ছা রইল।
ReplyDeleteশুভ বিজয়ার কোলাকুলি তোমার জন্যও পাঠালাম, প্রিয়াঙ্কা।
DeleteShubho bijoya...bhalo thakben...
ReplyDeleteআপনার আর আপনার প্রিয়জনদের জন্যও শুভ বিজয়ার অনেক প্রীতিভালোবাসা রইল, সুস্মিতা।
Delete