হাতে বোনা



রোজ সকালে উঠে টেবিলের ওপর একটা দুটো মথের মৃতদেহ আবিষ্কার করি। রাতের ঠাণ্ডা থেকে পালিয়ে টিউবলাইটের উষ্ণতার খোঁজে এসে বেচারারা বেঘোরে মরেছে। সকাল আটটা নাগাদ যখন বেরোই, ঘন কুয়াশায় ভিসিবিলিটি তখন রীতিমত কম। দুপুরবেলা অফিসের জানালার বাইরে থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকে লোভনীয় সোনালী রোদ্দুর। আয় আয়, খানিকক্ষণ পিঠ পেতে দাঁড়িয়ে যা। অফিস থেকে বেরোতে বেরোতে চারদিক অন্ধকার, সে অন্ধকারের ভেতর হীরেচুনির মতো ঝলসায় গাড়ির ফ্রন্টলাইট ব্যাকলাইট, ইনডিকেটর।

আর বসেছে গন্ধের মেলা। ডেফ কলের অভিজাত হাওয়ায় ভাসা কাঁঠালচাঁপার গন্ধ পেরোতে না পেরোতেই মূলচন্দের ব্রিজের নিচের পরিযায়ী মানুষদের জ্বালানো অস্থায়ী উনুনের ধোঁয়া নাকেমুখে ঢুকে পড়ে। ছাতিমফুলের গন্ধের সঙ্গে লড়ে যায় বাদামের পাহাড়ে গুঁজে বসানো মেটে হাঁড়ির ভেতর জ্বলন্ত ধুনো। কেউ কাউকে একইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। বাড়ির গেটের মুখে শিউলির কার্পেট উধাও, তবে আবছা একটা সুবাস এখনও জায়গাটা ঘিরে থাকে।

শীতের নির্ভুল চিহ্ন ফুটে উঠছে শহর জুড়ে। ঠাণ্ডা লাগলে মাঝরাতে ঘুম চোখে উঠে ভাঁজ করা বেডকভার টেনে গায়ের ওপর নিয়ে ঠাণ্ডা সামলানোর দিন ফুরোচ্ছে, সত্যিকারের লেপচাদর এই বেলা বার না করলে বিপদ

এই শনিরবি সে কাজের জন্য ধার্য রেখেছিলাম। বার না করলেও, অন্তত দেখে রাখা কোনটা কোথায় আছে। পাতলা ফুরফুরে জামাকাপড়কে কাবার্ডের পেছনে চালান করে সামনের দিকটায় মোটা জামাকাপড়ের জায়গা বানানো। শখ করে এস এন মার্কেট থেকে কেনা বব মার্লির মুখ আঁকা ফুলহাতা টি শার্ট, কটস উলের পাজামা। রাজস্থান থেকে এনে দেওয়া শাশুড়ি মায়ের হালকা কম্বল। শিলং থেকে নাগা শালের সঙ্গে ম্যাচিং করে কেনা দুজনের দুখানা মাফলার, গত আট মাসে তাদের দেখিনি।

মিনিট পনেরো পর কাবার্ডের ভেতর থেকে শরীরের ঊর্ধ্বাংশ বার করে আমি বললাম, “নেই। গন। এত সুন্দর মাফলারদুটো, ছি ছি ছি ছি ছি . . .’

অর্চিষ্মান বলল, ‘আহা, আছে নিশ্চয়, মাফলারের তো হাতপা গজায়নি যে আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাড়িওয়ালার বাড়িতে গিয়ে উঠবে। সর, আমি দেখছি।’ এই বলে অর্চিষ্মান কাবার্ডে মাথা ঢুকিয়ে দিল এবং অবিলম্বে ছায়া স্টোর্সের একটা প্যাকেট হাতে বেরিয়ে এল।

'এটা কী?'

প্যাকেট থেকে বেরোল, মাফলার নয়, এইটা।
 

আমার মায়ের আমাকে বুনে দেওয়া শেষ সোয়েটার। মা সোয়েটারটা বুনেছিলেন দু’হাজার ছয় সাল নাগাদ। আট বছর আগে। গত আট বছরে আমি একদিনও জিনিসটা অঙ্গে ঠেকাইনি। না ঠেকানোর যুক্তির অভাব নেই, অন্তত আমার কাছে। যতই যত্ন করে বোনা হোক, আসলে তো হাতে বোনা। দেখলেই প্রোফেশনাল ফিনিশের অভাবটা চোখে পড়ে। হাতে বোনা সোয়েটারের যুগ আর নেই। ইমপ্র্যাকটিক্যাল হয়ে কী লাভ।

গোড়ার দিকে কয়েক বছর শীত পড়লে মা সোয়েটারটার কথা মনে করাতেন। অফিসে পরে যাব না বুঝতে পেরে শেষটা বলতেন, ‘বাড়িতেই পর না হয়। আমি বলতাম, ‘ধুর এত ভালো সোয়েটার বাড়িতে পরা যায় নাকি?’ তৃতীয় বছর থেকে আর বলেননি। আর কখনও বোনেনওনি আর কিছু। উলকাঁটার বোঝা পলিথিন ব্যাগে পুরে আলমারির তাকের পেছনে গুঁজে রেখে ভুলে যাওয়ার ভান করেছেন।


ভুলে কি এত সহজে যাওয়া যায়? মা উল বুনতে শিখেছিলেন আমার সেজমাসির এক বন্ধুর কাছে। মায়ের যখন স্কুলে সোয়েটার বোনার সময় এসেছিল ততদিনে বাড়িতে দিদিদের সবার বিয়ে হয়ে গেছে। দাদারা সকলেই তখন বাড়িতে, কাজেই দিদিমার মেয়ের সোয়েটার বুনে দেওয়া তো দূর অস্ত, তাকে প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে তাকে দেখিয়ে দেওয়ার সময়ও নেই। সেজমাসির এক বান্ধবীর বিয়ে হয়েছিল পাড়াতেই। মা বুনতে শিখেছিলেন তাঁর কাছে। শেখা ব্যর্থ হয়নি। মায়ের বোনা সোয়েটার পরে বাবাজেঠু অফিস গেছেন, কাকুরা কলেজে, পিসি টিউশনে, মায়ের হাতের উলের চাদর গায়ে জড়িয়ে ঠাকুমা ডিসেম্বর মাসের সকালে খালি পায়ে বাগানে দূর্বাঘাসের ওপর জমা শিশিরের ওপর হেঁটেছেন। যাতে চোখ ভালো থাকে।

জ্ঞান হওয়া ইস্তক আমি মাকে বুনতে দেখেছি। শনিরবিবার দুপুরের খাওয়ার পর আমরা সবাই ছাদে বসে কমলালেবু খাচ্ছে, মায়ের হাতে নাচছে একজোড়া কাঁটা। সাদা রঙের কাঁটার মাথায় লাল রঙের টুপি। টুপিতে নম্বর লেখা। বারো, চোদ্দ, ষোলো। বারো নম্বরের কাঁটা ষোলো নম্বরের কাঁটার থেকে মোটা। ছ’নম্বরের একটা ইয়া মোটা কাঁটা ছিল মনে আছে। আর ছিল নরম নরম নানা রঙের উলের গোলা। নতুন উল হলে সেগুলো বেশ কায়দা করে প্যাঁচানো থাকত, পুরোনো উল থাকত টাইট গোল্লায়। আমার ঠাকুমা বুনতে পারতেন না, ঠাকুমার যত কেরামতি ছিল কাঁথা সেলাইয়ে, কিন্তু ঠাকুমা পুরোনো সোয়েটার খুলে উল উদ্ধারে এক্সপার্ট ছিলেন। বড়দিনের ছুটির দুপুরে আমি ফরফর করে পুরোনো সোয়েটারের উল খুলছি আর ঠাকুমা দক্ষ হাতে সেই উল গোল্লা পাকাচ্ছেন – এ দৃশ্য আমার এখনও চোখে আঁকা আছে।


উলকাঁটার প্রতি আমার আকর্ষণ অবশ্য তার অনেক আগে থেকেই। তখনও আমি ‘বোনা’ কথাটা জানতাম না, ভাবতাম কথাটা বুঝি ‘গোনা’। খাটের ওপর হাতের উলকাঁটা ছেড়ে রেখে মা রান্নাঘরে তরকারি নাড়তে কিংবা ভাতের স্ট্যাটাস চেক করতে যেতেন, আমি দৌড়ে গিয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করতাম, ‘মা, আমি একটু গুনব?’ কী বিপদ ঘটতে চলেছে নিশ্চিত জানা সত্ত্বেও মা কক্ষনও মানা করেননি, ঘাড় হেলিয়ে বলেছেন, ‘হ্যাঁ সোনামা, নিশ্চয় গুনবে।’

শুধু মা নন, বাড়িতে পিসি গুনতেন, রাস্তাঘাটে ট্রেনেবাসে অগুন্তি মহিলা গুনতেন, মামাবাড়িতে ছোটমামী মেজমামী গুনতেন। আমার দুই মামিই রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী ছিলেন (ছোটমামি এখনও আছেন), তাঁদের গুণের তূণে উলবোনাও ছিল। আমার যখন বছর দুয়েক বয়স, ছোটমামী আমাকে গোটা একটা উলের ফ্রকই বানিয়ে দিয়েছিলেন। গোলাপি রঙের ফ্রকের বুকে নীল রঙের একটা হাতি আঁকা ছিল। বুদ্ধি খাটিয়ে মামী ফ্রকটা একটু বড়সড়ই বানিয়েছিলেন। তারপরের বেশ কয়েকটা শীত আমি বুকে হাতি নিয়ে বীরবিক্রমে ঘুরে বেড়িয়েছিলাম।


মা, ছোটমামীকে চমকে দিয়ে এক বছর শীতে মেজমামী একটা উলবোনার মেশিন কিনে এনেছিলেন। মামাবাড়ির দোতলার পশ্চিমদিকের ঘরটার মেঝেতে এসে পড়া সোনালী রোদ্দুরে গ্রিলের জানালা কাটাকুটি খেলেছে, সেই কাটাকুটিতে পা রেখে আমরা দল বেঁধে দাঁড়িয়ে আছি আর মেজমামী গর্বিত মুখে দেখাচ্ছেন মেশিনের কোথায় উলের গোলা রাখতে হয়, কী ভাবে কাঁটা ওঠে আর নামে, কোথা দিয়ে বেরিয়ে আসে বাহারি ডিজাইনের রংবেরঙের সোয়েটার, মাফলার, মোজা, পনচো – আমার এ দৃশ্য স্পষ্ট মনে আছে।

মেজমামী নেই, মেজমামীর মেশিনও নেই। মেজমামীর না থাকাটা এখনও হাঁ করে গিলতে আসছে মামাবাড়ির প্রতিটি জমায়েতে, কিন্তু মেজমামীর মেশিনের অভাবটা কেউ টেরও পাচ্ছে না। সে অভাব ভুলিয়ে দিয়েছে মার্কো পোলো, ইউনাইটেড কালারস অফ বেনেটন। সে সব দোকান থেকে সোয়েটার কিনে আনতে টাকা লাগে, কিন্তু সময় লাগে না। যেটার আকাল এখন টাকার তুলনায় অনেক বেশি।

মা কীসে দুঃখ পেয়েছিলেন বেশি? তাঁর এত যত্নে বোনা সোয়েটারটা আমি পরলাম না বলে নাকি যে তাঁর শেখা, এতদিন ধরে চর্চা করা একটা বিদ্যার প্রয়োজন চিরদিনের মতো ফুরিয়েছে এটা জেনে? হঠাৎ যদি একদিন শুনি পৃথিবীর শেষ সাইকেলের কারখানাটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অচিরেই, কেমন লাগবে আমার জেনে যে আমার আট বছর বয়সের অত আছাড় খাওয়া বৃথাই গেল, চাইলেও আর কোনওদিন আমি একটা সাইকেল চেপে মনের সুখে বেল দিতে দিতে ফাঁকা রাস্তায় উড়ে যেতে পারব না? হঠাৎ যদি শুনি ওয়ার্ড প্রসেসরের সঙ্গে দক্ষতার যুদ্ধে গোহারা প্রমাণিত হওয়ায় কাগজকলমকে চিরদিনের মতো সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে পৃথিবী থেকে, কেমন লাগবে আমার? রুলটানা খাতার পাতার পর পাতা ধরে ‘কবিদের গুরু রবীন্দ্রনাথ’ লিখে হাতের লেখা মকশো করা গরমের ছুটির অতগুলো দুপুর এক নিমেষে অবান্তর হয়ে গেল জেনেও কি বুকের ভেতরটা একটুও হুহু করে উঠবে না?



এ বছর শীতে আমি তোমার সোয়েটারটা পরব মা। বাড়িতে পরব, অফিসে পরব, দু’নম্বর মার্কেটে পরব, সিনেমা হলে পরব, শপিং মলে পরব। আশেপাশে সবাই প্রোফেশনাল লুক আর নিখুঁত ফিনিশওয়ালা সোয়েটার পরে মশমশিয়ে ঘুরবে, আমি তোমার সোয়েটারটা পরে অর্চিষ্মানের কনুইয়ে হাত গলিয়ে গটগটিয়ে হাঁটব। জানব, সারাজীবন ধরে লক্ষ লক্ষ ফাইলে সই করার পরও, রাজ্যের ধুলোমাখা কেলেকুষ্টি আমার মোজায় হাজার হাজার সানলাইট ঘষার পরও, শতশত মোচার খোলা ছাড়িয়ে সে মোচার ঘণ্ট রেঁধে আমাদের খাওয়ানোর পরও চাঁপার কলির মতো নরম তোমার আঙুল – যে আঙুল কপালে ছোঁয়ানো মাত্র আমার জ্বরের পারা অর্ধেক নেমে যায়, যে আঙুল মাথায় বিলি কাঁটা মাত্র আমার বুকের ভেতরের সব না-পাওয়ার যন্ত্রণা, সব না-পারার লজ্জা চোখ ফেটে স্রোত হয়ে বেরিয়ে আসে – তোমার সেই ম্যাজিক আঙুল আমাকে জড়িয়ে আছে।


তবে তোমার কাজ এখনও ফুরোয়নি। শুধু সোয়েটার বুনে দিলেই হবে বুঝি? সোয়েটার বোনার বিদ্যেটা আমাকে শিখিয়ে দিয়ে যেতে হবে না? আর ক’বছর পর যখন তোমার চোখের বাইরের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসবে, বাতের জ্বালায় অবাধ্য হবে তোমার ম্যাজিক আঙুল, তখনও তো দিল্লিতে শীত পড়বে, তখনও তো সকালবেলা চোখ খুলেই টের পাব আমার নাককানগলার ভেতরের সুড়ঙ্গে কে যেন লক্ষলক্ষ আলপিন গেঁথে রেখেছে। তখন আমি কোন ভরসায় সে শীতের মুখোমুখি দাঁড়াব? কোনও অজ্ঞাতকুলশীল ডিজাইনারের মেশিনে বোনা সোয়েটারের? রামোঃ।

তার থেকে বরং তুমি সব কাজ সেরে এস মা। চল্লিশ বছরের পুরোনো গোদরেজ আলমারির তলার তাকের পেছন থেকে অনেক অভিমানে লুকোনো তোমার উলকাঁটা বার করে এনে খাটের ওপর ছড়িয়ে বোস। আমি আসছি। কাজের থেকে কথা বেশি হবে, হাত চলবে যত না হাহাহিহি হবে তার থেকে বেশি, তবু তারই ফাঁকে ফাঁকে আমি মন দিয়ে তোমার কাছ থেকে উল বোনা শিখে নেব। নেবই।


Comments

  1. Kuntala ei lekhata r janyo anek dhanyabad..
    Baddo bhalo laglo pore...tinni

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, তিন্নি।

      Delete
  2. Replies
    1. আরে শীর্ষ যে, থ্যাংক ইউ।

      Delete
  3. "তোমার সেই ম্যাজিক আঙুল আমাকে জড়িয়ে আছে" .. kichhu bolar nei... darun lekha. ul bona (gona) amaro sekha hoeni... ei boyese eshe ar sahoso hoina... sweater ta darun Kuntala.. khub sundor rong ar darun design..

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, ইচ্ছাডানা। সোয়েটারটা দ্রুত পরতে শুরু করতে হবে মনে হচ্ছে। হইহই করে ঠাণ্ডা পড়ে গেছে দিল্লিতে। একদিন কায়দা করে সারারাত জানালা খোলা রেখে শুয়েছিলাম, এখন নাক টানতে টানতে প্রাণ বেরোচ্ছে।

      Delete
  4. porte porte keno jani na chokhe jal eshe gelo...shab kichui khub shundor...

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, দেবশ্রী। লেখাটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে আমার খুব ভালো লাগছে।

      Delete
  5. Sotti re amader mayera koto dhaiya niye ul bunto... amra ei boyeshe eseo sikhte parlam na.. Bodh hoi amader sei dhairya tai nei... Tor lekhata pore amar o mone porlo mar bune deoa ekta sweater amio porina.. Ebarer site porbo.. Lekhata khub sundor hoyeche.. Bises kore ma er adorer kotha ta.. Ma ra sotti e magical.. - Mousumi Bhattacharya

    ReplyDelete
    Replies
    1. মায়েদের মতো ধৈর্য তো নেই, অত কাজ করার ইচ্ছে বা গায়ের জোর, সেও নেই। কাকিমার সোয়েটারটা এই শীতে পরিস, ভট্টা।

      Delete
  6. না এটা খুব অন্যায় হয়েছে, হয়েছেই - এরম সুন্দর নরম তুলতুলে মজাদার সোয়েটার টা তুমি কি বলে আট বছর শিকেয় তুলে রেখেছিলে? :( মনস্বিতা

    ReplyDelete
    Replies
    1. অন্যায় তো হয়েছেই, মনস্বিতা। এবার প্রাচিত্তির করতে হবে।

      Delete
  7. এইটার প্রিন্টআউট কাকিমার হাতে না পৌঁছলে অন্যায় হবে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেটা খুব রিস্কি। মা ঝাঁপিয়ে পড়ে বলবেন, 'অ্যাঁ! এইসব পারসোন্যাল কথাবার্তা লিখছ! দুঃখের গল্প লেখ সোনামা, দুঃখের গল্প লেখ।'

      Delete
  8. Porte porte chokhe jol elo. Ar nimeshe onek tukro tukro kotha bhir kore elo maa-ke niye.
    Onek dhyobaad lekhatir jonyo...

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ আপনার আমাকে নয়, আমার আপনাকে দেওয়ার কথা, সায়ন।

      Delete
  9. Replies
    1. তোমাকে ধন্যবাদ, কুহেলি।

      Delete
  10. Ami amar Ma er kache bona shikhechilam ar sheta amar nesha hoye dariyechilo. Koto jon ke bune diyechi. Ekhon kono karone amar bona nishedh ... shokh kore kena onek wool ekhono jotno kore rekhe diyechi ... jodi abar konodin pari.
    Tomar Ma er haater bona ki nikhut ... ami toh eta machine bona bhebechilam ... eto fine!
    Ekhon hand knitted bole boro boro dokane prochur daam e bikri hoye.
    Ma er bona sweater ta nischoi poro ... ekta haate bona jinish e onek onek porishrom ar ador dutoi bhora thake.

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেকী! হ্যান্ড নিটেডের দোকান আছে জানতাম না তো? দেখেছ, শর্মিলা, আমি ভাবছি আমার মায়ের বোনা সোয়েটার যথেষ্ট ফ্যাশনেবল নয়, এদিকে ওইটাই যে মহার্ঘ ফ্যাশন হয়ে উঠেছে সে খবরই রাখিনি। আমি কামনা করছি তুমি দ্রুত নিষেধমুক্ত হও, হয়ে আবার বোনাবুনি শুরু কর।

      Delete
  11. সবাই লেখার গুণগান করছেন, আর আমি বসে আছি কবে আপনি নিজের হাতে বোনা সোয়েটারের ছবি আমাদের দেখাবেন। লেখাটা অবশ্যই ফাটাফাটি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেরেছে, ওই অপেক্ষায় না থাকাই মনে হয় ভালো, দেবাশিস।। লেখা ভালো লেগেছে জেনে হ্যাপি হলাম। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  12. Aami aapnar Abantar er notun pathika. Abantar er golpo-gachha gulo boroi upobhogyo-----aajker haate bona sweater er golpo ti khub bhalo laaglo. Haate-bona sweater bangali jibone prak-computer juge otoproto bhabe joriye chhilo.

    aaro anek sundar sundar lekhar apekkhai roilam---

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ, সুস্মিতা। অবান্তরে স্বাগত। এই কম্পিউটার আর ইন্টারনেট এসে আমাদের কত কাজ যে মাটি করেছে, সে আর বলার কথা নয়। হাঁ করে ইউটিউবে অন্যকে সোয়েটার বুনতে দেখছি, অথচ গাত্রোত্থান করে নিজে যে একটা বুনব, সে ব্যাপার নেই।

      Delete
  13. আমার বেশিরভাগ হাতেবোনা সেয়েটারগুলো বড়মাসির বুনে দেওয়া। বড়মাসির এখন আশির উপর বয়স। বোনাবুনির পাট চুকেছে। আজকাল একটু অসময়ে বাড়ি থেকে ফোন এলে সবার আগে বড়মাসির কথা ভেবে বুকটা কেঁপে ওঠে।
    মনটা খারাপ হয়ে গেল। বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করছে খুব !

    ReplyDelete
    Replies
    1. তোমার বড়মাসি আরও অনেকদিন সুস্থদেহে তোমাদের মধ্যে থাকুন, সেই কামনা করি পিয়াস।

      Delete
  14. Esob lekha bharo onnai .... bisesh kore jokhon eto dur e achi :(

    ReplyDelete
  15. Replies
    1. শুভব্রত, কাছেদূরের সংজ্ঞা বদলে গেছে। আমি তো মায়ের ঘাড়ের কাছেই আছি, তাও তো অবস্থা দেখছ। কাজেই মন খারাপ কোর না।

      Delete
  16. আচ্ছা তোমার লেখাগুলো কি কাকু কাকিমার পড়ার সুযোগ হয়? এখনো না হলে অবশ্যই পড়া উচিত। খুব ভালো লাগলো.. আর সোয়েটার টা দেখে কিন্তু নিখুঁত প্রফেশনাল ফিনিশ মনে হচ্ছে.. নীল জিন্সের সাথে পরলে তোমায় সুন্দর লাগবে। একটা ছবি দেখিও। .. ম্যাজিক আঙ্গুলের জবাব নেই ...

    ReplyDelete
    Replies
    1. কাকু কাকিমার পড়ার সুযোগ না হওয়াই ভালো রে ঊর্মি। বেশ প্রাণের সুখে যা চাই লেখা যাবে। তোর নীল জিন্সের আইডিয়াটা ভালো। শিগগিরি অ্যাপ্লাই করব। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  17. Tuktuk Jodi amar bona sweater gulo hate nie bhobishyate er 1/4th-o feel kore amar bona sarthok! Lekha ta khub bhalo ar sweater taro jabab Nei.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওয়ান ফোর্থ কেন বালাই ষাট, চারগুণ বেশিই করবে, এই আমি বলে রাখছি, রুচিরা। তোমার লেখা ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। থ্যাংক ইউ।

      Delete
  18. lekha ta porey bari'r jonye khub mon kharap korlo. amio maa er bona sweater porte chaitam na kichutei... ekhon besh aporadhbodh hochhe shei jonye.
    -Ramyani.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে মায়েদের কাছে করা অপরাধ, অপরাধ নয়, রম্যাণি। আমরা দোষ করার আগেই মায়েরা আমাদের ক্ষমা করে দিয়ে বসে আছেন।

      Delete
  19. লেখাটা অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। সোয়েটারটা দেখে কিন্তু হাতে বোনা মনেই হচ্ছেনা। আমার মাও অনেক সোয়েটার বুনেছে একসময়ে, আমার, বোনের, বাবার। আত্মীয়-স্বজনের বাচ্চা হলে টুপি-মোজা বানিয়ে দিয়েছে রাতারাতি। আমার বোন্ও উলবোনা কে উল 'গোনা' বলত। আমি অবশ্য মায়ের বোনা সোয়েটার এখনও পরি। এখানে আমার কাছে দুটো আছে, একটা হাফ, একটা ফুল হাতা হাই নেক। ওই ফুলহাতাটা খুব মোটা উলে বোনা, আর ওটাই আমার একমাত্র সোয়েটার যেটা এখানকার শীতের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। দুটোই আমার খুব প্রিয়। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল, এ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাবা একবার লন্ডন গেছিল। মা বাবাকে বলেছিল একটা উলবোনার প্যাটার্নের বই পেলে কিনে আনতে। বাবা দোকানে গিয়ে খোঁজ করেছে, আর দোকানদার বলছে, আজকাল আর কেউ হাতে উল বোনেনা, ও আপনি পাবেননা। বাবা তাও তর্ক করে বলে, কেউ বোনেনা বললেই হলো? ওই তো একজন আসছে, তার সোয়েটারটা হাতে বোনা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। দোকানদার সেটা দেখে বলল, "কেউ বোনেনা মানে কি আর একেবারে কেউ বোনেনা? Probably some old Indian lady made it for him." বাবা অবশ্য শেষ পর্যন্ত একটা বই এনেছিল।

    এই লেখার সঙ্গে আরও দুটো জিনিস চাই, এক, আপনার ওই সোয়েটার পরে একটা ছবি, আর দুই, কাকিমার লেখা পড়ে রিঅ্যাকশন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। লেখার প্রশংসা পেয়ে খুব খুশি হলাম। আরও খুশি হলাম, ওল্ড ইন্ডিয়ান লেডিদের দেশেবিদেশে এমন সুখ্যাতি দেখে। উল 'গোনা'র ভ্রমটা আরও কারও ছিল জেনে বেজায় খুশি হচ্ছি। কাকিমার বোনা সোয়েটার ওখানের শীত সামাল দেয় শুনে চমৎকৃত হচ্ছি, দোকানের কেনা হলে দেখতেন মিনিমাম তিনটে চাপাতে হত।

      Delete
  20. khub sundor likhecho kuntala di.. sweater tao darun..

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, স্বাগতা। সোয়েটারের প্রশংসা যথাস্থানে পৌঁছে দেব।

      Delete
  21. ato emo lekha..ami to kedei fellam. ki ar boli. kudos.
    sweater ta kintu chorom sundor dekhte. atodin na pora tomar bhari onyay hoyeche. u shud wear it.
    amar moto snootyass fashionable meyeo hatey bona sweater er die hard fan. koti koti kena sweater, but tao mashi, mami, didibhai der hatey bona sweater, pullover, coat, chador amar sobcheye beshi bhalo lage porte. akhono. in fact ami ghyan ghyan kore matha kharap kore di, so that they knit something new for me every year.
    eta pore akta photo o post kore dio. aunty khubi khushi hoben.

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, কুহেলি। এইটা তুমি খুব ভালো করেছ, কুহেলি। এই লোকজনকে দিয়ে জিনিসপত্র বুনিয়ে নিয়ে। এগুলো সারাজীবন থাকবে। সোয়েটার পরে ছবি তুলে মাকে দেখাব নিশ্চয়।

      Delete
  22. Amar fer bari peye gelo!!! Esob kanna katir lekha ekdom valo na.

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, বাড়ি পেয়ে যাওয়া কথা ভালো, অর্ণব।

      Delete
  23. পরিযায়ী মানুষ.... Kathata Daarun Laaglo... Lekhatao Daarun hoyechhe... Mon kamon kore dewa lekha...

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, চন্দ্রচূড়।

      Delete
  24. etao sei chhotobelar memory niye elo.. amar Maa o khub bhalo bonen,, chhotobelay sei notun design sekhar sokh.. anek asto maar kachhe design/bona sikhte.. ei sweater ta dekhte ekdom professional der motoi.. r haat e bonar modhye j jotno-bhalobabsar gondho achhe.. seta oi MC te nei..:Papiya

    ReplyDelete
    Replies
    1. সে তো নেই-ই, পাপিয়া। সেই জন্যই তো এবার থেকে মায়ের বোনা সোয়েটার পরব ভাবছি। আপনি কমেন্ট করতে পারলেন দেখে খুব ভালো লাগছে। ধন্যবাদ।

      Delete
    2. amar chhotobelay keu kena cardigan porle mone kora hoto tar maa sweater bunte paren na! amar anek frind k amar maa school er sweater bune diyechhe.. r ekhon amar maa i bole oirokom nami co r sweater ki amra haat e bunte pari? somoi er sathe sathe sob i palte jai.. :Papiya

      Delete
    3. হ্যাঁ, পাপিয়া। কিছু ভালো হয়, কিছু খারাপ। এই সোয়েটার সংক্রান্ত ব্যাপারটা আমার মতে খারাপ হয়েছে।

      Delete
  25. Kuntala debi, ei haate bona sweater markin deshe ek sho goon beshi daame bikri hochhe (with label "luxury hand made apparel"). future e erokom haate bona jinis na porar ichhe holey pliss ektu edike pachhar kore deben :)))))

    ReplyDelete
    Replies
    1. হাহা, শম্পা, সে রকমই শুনলাম তো। না শুনলে যদি বা পাচারের সম্ভাবনা থাকত, এখন আর নেই। এখন আমিই এই সোয়েটার পরে ঘুরব আর কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলব, এটা হচ্ছে লাক্সারি হ্যান্ডমেড অ্যাপারেল।

      Delete
  26. আপনার মেজমামি কে নিয়ে লেখা পোস্ট টা পড়ে অবান্তর কে সেই বুকমার্ক করেছিলাম ... তারপর থেকে আপনার লেখা, আমার ( আমি নিশ্চিত বাকি অনেকর ও ) কত ভুলে যাওয়া ছোট ছোট ছোটবেলার ঘটনা , বড়বেলার কত বড় বড় ভুল চোখে আঙ্গুল (নতুন পোস্ট )দিয়ে দেখিয়ে দেন , জ্বালা করে চোখে ....

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, আত্মদীপ। বড়বেলার ভুলের কথা আর বলবেন না। দাদাঠাকুরের গানটা একটু এদিকওদিক করে নিয়ে গাওয়া যেতেই পারে, 'বড়বেলা কেবল ভুলে ভরা'।

      Delete
  27. Ami ekhane fail! Amar ma khub komei sweater bunechhen ar ami toh ekebarei pari na! Amar familyte sweater bonar expert holen amar boromamima.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আজকাল বাড়িতে একজন উলবোনা এক্সপার্টও পাওয়া মুশকিল, রুণা।

      Delete
  28. bood mon kamon kora boddo bhalo likhecho...sudhu ki hate bona sweater ro koto jotner jinis obohela korechi atodure ese ter pai ...sweater ta darun dekhte akkebare professional :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. সে তো করেছিই, প্রদীপ্তা। সব অবহেলার মাশুল গুনে গুনে দিতে হবে। লেখাটা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।

      Delete

Post a Comment