Posts

Showing posts from September, 2014

পুজোর ছুটি

ইউ ক্যান টেক আ পার্সন আউট অফ মফস্বল, বাট ইউ ক্যান নেভার টেক মফস্বল আউট অফ আ পার্সন। চতুর্থীর রাতে যখন অর্চিষ্মান একটু হেঁটে আসার প্রস্তাব দিল আমি ভাবলাম এই অন্ধকারে কেই বা আর দেখছে, চেয়ারের কাঁধে রাখা ধুধ্‌ধুড়ি টি শার্ট আর ল্যাতপেতে জিনস গলিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ভাবলাম রাস্তায় শ্মশানের নিস্তব্ধতা বিরাজ করবে। চতুর্থীর রাতে আমার পৈতৃক বাড়ির সামনের রাস্তায় যেমন করে। সাইকেল টুংটুঙিয়ে কোচিং ক্লাস থেকে ফিরবে ছেলেমেয়ের দল, তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের আমগাছের ঘন ছায়ার তলায় থামবে খানিকক্ষণ। গুনগুন গুনগুন। যখন ঊঠে বসার শক্তি ছিল ঠাকুমা খাটে বসে মাথা নাড়বেন। সব উচ্ছন্নে গেল। ত্রিপলের প্যান্ডেলে টিমটিমে টিউবলাইটের নিচে ঘুরে বেড়াবে উদাসী গরু, ঝগড়ুটে কুকুর। ঘরের ভেতর মা শিশুকে ষষ্ঠী পড়ার আগে যতখানি পারা যায় পড়িয়ে নেবেন। ভুজুং দেবেন, পুজোর আগে পড়াশুনো করলে মা সরস্বতীর কাছ থেকে বকেয়ার বেশি আশীর্বাদ পাওয়া যায়। বাড়ি থেকে বেরিয়েই ভুল ভেঙে গেল। মনে পড়ে গেল এ তো আমার ছোটবেলার ঘুমন্ত মফস্বল নয়, এ আমার বুড়োবেলার জলজ্যান্ত শহর। চারদিকে হইহই করে অলরেডি পুজো শুরু হয়ে গেছে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে নহবৎ, গত ...

পুরোনো অবান্তরঃ মাধ্যমিক! মাধ্যমিক!

ইংরিজি হরফে লেখা পুরোনো পোস্টগুলো সারাই করতে গিয়ে যে ব্যাপারটা বিশেষ করে চোখে পড়ছে সেটা হচ্ছে পোস্টগুলোর দৈর্ঘ্য। এখনকার পোস্টগুলো হেসেখেলে বারোশো তেরোশো শব্দের হয়। দু’হাজার নয় দশ এগারোর পোস্টগুলো হত মেরেকেটে পাঁচশো কি ছ’শো। এর দুটো কারণ থাকতে পারে। এক, আমার ‘রাইটিং মাসল’ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আগে পাঁচশো শব্দ লিখে দম বেরোত, এখন বারোশো শব্দ পেরিয়ে বেরোয়। দু’নম্বর কারণটা এক নম্বরের কারণের মতো ভালো নয় আর সেই জন্যই আমার সন্দেহ হচ্ছে সেটাই সত্যি। আমার চরিত্র/ভাবনা থেকে ব্রেভিটি লোপ পাচ্ছে। দু’হাজার দশ সালের সাতই জানুয়ারি এই গল্পটা বলতে আমার খরচ হয়েছিল পাঁচশো বিরাশি শব্দ, আর আজ লাগল একহাজার দশ (তাও এই গৌরচন্দ্রিকা বাদ দিয়ে)। বয়স বাড়লে কি লোকে সত্যিই বেশি কথা বলে? ***** ‘চার্মিং’ বলতে যে ঠিক কী বোঝায় সেটা আমি অনেকদিন বসে বসে ভেবেছি। ভেবে বার করার চেষ্টা করেছি। কী থাকলে একটা মানুষ ‘চার্মিং’ হয়? সুন্দর চোখ? সুন্দর হাসি? সুন্দর ব্যবহার? কিন্তু এর একটাও নেই এমন অনেক লোকের চার্মের শিকার হতে দেখেছি আমি চারপাশের লোকদের। কাউকে দেখলেই তার সঙ্গে গিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করে কেন? কেন তার ব...

পুজোর বাজার

Image
ঠেলতে ঠেলতে পুজোর আগের শেষ উইকএন্ড। এইবার মার্কেটিং-এ না বেরোলে আর রক্ষা নেই। অগত্যা ক্যান্ডি ক্রাশ ছেড়ে উঠতে হল। ব্রেকফাস্টের মেনু চা, চিঁড়ের পোলাও আর সংগীত বাংলা। যোদ্ধা সিনেমার একটি গানে দেভ আর মিমির ধুনুচি নাচ দেখতে দেখতে খেলাম। চিঁড়ের পোলাওয়ের বাদামগুলো একটু বেশি পুড়ে গিয়েছিল, আর ঝালও সামান্য বেশি হয়েছিল। পোলাওটা পরিমাণেও বেশ বেশি হয়েছিল, কিন্তু আমরা কষ্টমষ্ট করে সবটাই খেয়ে নিলাম। মলে ঘুরতে ঘুরতে আবার খিদে পেয়ে গেল। আমরা সবসময় এই খাব সেই খাব প্ল্যান করে মলে যাই, গিয়ে সেই একই কফি শপে ঢুকি। আমি খেলাম চা আর অমলেট, অর্চিষ্মান খেল স্যান্ডউইচ আর ক্যাপুচিনো। লাস্টে বস্টন ব্রাউনি। ফেরার পথে দেখলাম গাছের পাতায় পাতায় শরতের রোদ নাচছে, হু হু হাওয়ায় পথের ধুলো উড়ে যাচ্ছে এদিকসেদিক। চাকা বসানো হলুদ রঙের ব্যারিকেড ঠেলে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্যান্ডেলের সামনে বসানোর জন্য। প্যান্ডেল প্রায় শেষের মুখে। আমরা যখন কলকাতা থেকে ফিরব তখন সব শেষ, প্যান্ডেল হাওয়া, মেলা গ্রাউন্ড আবার খাঁখাঁ খালি। একটু দুঃখদুঃখই হচ্ছিল। ঢুকে পড়লাম। ঠাকুর দেখা হবে না, প্যান্ডেল...

সাপ্তাহিকী

Image
দ্রুত ইংরিজি বলতে পারাটাকে যখন বেসিক লাইফ স্কিলের মধ্যে গণ্য করতাম তখন এক বন্ধুর মুখে ‘আই গিভ আ ড্যাম!’ শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। যখনতখন যত্রতত্র সুযোগ পেলেই ঠোঁট উল্টে বলতাম ‘আই গিভ আ ড্যাম!’ সেই শুনে একদিন আমার রুমমেট সুরায়া বলল, ‘বাট হোয়াই? ইউ শুড নট গিভ এনি ড্যামস অ্যাট অল।’ ( গ্রাফের উৎস ) Creativity is knowing how to hide your sources.                                                                ---Albert Einstein সেপ্টেম্বর ২১ থেকে সেপ্টেম্বর ২৭ নিষিদ্ধ বই সপ্তাহ।  কোনও বই নিষিদ্ধ করার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণই থাকতে পারে না কিন্তু এই লিংকে কিছু কিছু এমন কারণ দর্শানো হয়েছে যা সব রকম যুক্তিবুদ্ধিকে ছাপিয়ে যায়। যেমন ধরুন, শেল সিলভারস্টাইনের লেখা ছোটদের বই ‘আ লাইট ইন দ্য অ্যাটিক’ ফ্লোরিডার একটি স্কুলে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এই অভিযোগে যে i t “encourag[ed] messiness and disobedience,” among other thin...

iDIOTS

Dis or Dat: পুজোসংখ্যা

Image
উৎসঃ গুগল ইমেজেস সাবেকি না আভা গার্দঃ সাবেকি প্রবাসী না পাড়ারঃ পাড়ার সপ্তমীর সকাল না অষ্টমীর রাতঃ সপ্তমীর সকাল অষ্টমীর লুচি না নবমীর পাঁঠাঃ অষ্টমীর লুচি ইঁদুর না কলাবউঃ কলাবউ কার্ত্তিক না গণেশঃ গণেশ লক্ষ্মী না সরস্বতীঃ সরস্বতী সিংহ না মহিষাসুরঃ মহিষাসুর, মহিষাসুর, মহিষাসুর। বাগবাজার না বোসপুকুরঃ বাগবাজার কলেজস্ট্রিট না কুমারটুলিঃ কুমারটুলি গাড়ি চেপে না পদব্রজেঃ পদব্রজে ফুচকা না এগরোলঃ ফুচকা প্লাস এগরোল অঞ্জলি না সন্ধিপুজোঃ অঞ্জলি জিনস না ধুতি/শাড়িঃ ধুতি/শাড়ি দেবীবরণ না ধুনুচি নাচঃ ধুনুচি নাচ কাটাফল না লুচিসুজিঃ লুচিসুজি দূর্বা না বেলপাতাঃ দূর্বা। উঁহু, বেলপাতা। বেলপাতা, ফাইন্যাল। শিউলি না কাশফুলঃ ক্লোজ আপে শিউলি, লং শটে কাশফুল লিমকা না থামস আপঃ লিমকা কর্নেটো না চকোবার না কর্নেটোঃ কর্নেটো। (চকোবারের থেকে খাওয়া শক্ত এমন কোনও খাদ্যবস্তুর সঙ্গে আমার এখনও মোলাকাত হয়নি।) সানগ্লাস না ক্যাপবন্দুকঃ ক্যাপবন্দুক কুইজ কমপিটিশন না প্রদীপ জ্বালানো প্রতিযোগিতাঃ প্রদীপ জ্বালানো প্রতিযোগিতা। যদিও আমি কোনওবা...

নিয়ম মতো

সেদিন অফিস থেকে ফিরে এঘরওঘর করছি, এমন সময় দরজায় টোকা। খুলে দেখি এক বয়স্ক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন। এক হাতে বাজারের ব্যাগ, অন্য হাতে পাকানো আনন্দবাজার। আমার বাড়িতে সাধারণত এ চেহারার অতিথি আসেন না। বিশেষ করে এই সময়। এই সময় যাঁরা আসেন তাঁদের বেশিরভাগেরই পরনে থাকে ইউনিফর্ম, কারও কারও মাথায় টুপি, আর সবারই কাঁধে ঢাউস ব্যাগ। সেই ব্যাগ থেকে নাতিশীতোষ্ণ প্যাকেট বার করে হাতে দিতে দিতে তাঁরা বলেন, ‘কেয়ারফুল ম্যাম, ইট’স হট।’ আমি একটুও না ভেবে করিডরের উলটোদিকে বাড়িওয়ালার দরজা দেখিয়ে দিলাম। আপনি যে বাড়ি খুঁজছেন সেটা এটা নয়, ওটা। ভদ্রলোক নড়লেন না। উঁহু। এই বাড়িটাই। আগেও একবার এসেছি, কেউ ছিল না। আনন্দবাজার ধরা হাতের দুটো আঙুল ব্যাগের মুখের ভেতর ঢুকে গেল। বেরিয়ে এল একটা মোটা আয়তাকার খাতা। খাতার মলাটে নীল সাদা রুইতন ডিজাইন। খাতার অর্ধেক পাতার অর্ধেক ছেঁড়া। আমার মুখ দিয়ে আরেকটু হলেই বেরিয়ে যাচ্ছিল, ‘বাবামা বাড়ি নেই, পরে আসুন,’ সামলে নিলাম। ভদ্রলোক চাঁদা কেটে বিল দিয়ে চলে গেলেন। রেখে গেলেন তিনটে কুপন। সপ্তমী অষ্টমী নবমী ভোগ ভোজনের। নট ট্রান্সফারেবল। অ্যাডমিট টু। পরে দেখলাম কুপনের স...

পুরোনো অবান্তরঃ মাবাবার রবিবার

অবান্তরের শুরুর দিকের একটা বিরাট অংশ লেখা হয়েছিল বাংলা ভাষায় , ইংরিজি হরফে। সেগুলোকে এক এক করে বাংলা হরফ করার প্ল্যান করেছি আমি। করতে গিয়ে লেখাগুলোর চেহারাও বিস্তর বদলাচ্ছে। এ সপ্তাহের পোস্টটি অবান্তরে প্রথম বেরিয়েছিল দু’হাজার দশ সালের একুশে জুন। নাম ছিল শৈশব ভ্রমণ , আয়তন ছিল মাত্র পাঁচশো ষাট শব্দ। ঝাড়তেমুছতে গিয়ে সে লেখা হয়ে গেল চোদ্দশো একাত্তর শব্দের। আশা করি তার এই বর্ধিত বপু আপনাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাবে না। *****     বছরখানেক আগে এক রবিবার সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আমার মাবাবা ঠিক করলেন তাঁরা কিছু একটা ‘ইন্টারেস্টিং’ কাজ করবেন। জলখাবারে রবিবাসরীয় পড়া, পরোটা আলুভাজা খাওয়া, মাংস রান্না করে, খেয়ে, দুপুরবেলা খবরের কাগজ মুখে করে গড়াগড়ি খাওয়ার থেকে বেশি ইন্টারেস্টিং কিছু। আমার মাবাবার সঙ্গে বেশিরভাগ বিষয়েই আমার চমকপ্রদ অমিল। নেহাত চেহারার মিল না থাকলে কেউ বিশ্বাস করত না আমি এঁদেরই যুগ্ম উদ্যোগ। সবথেকে বড় অমিলটা হল এঁরা দুজন যা করবেন বলে ঠিক করেন সেটা করেই ছাড়েন, না করা পর্যন্ত দম ফেলেন না। আমার আবার একবারে কিছু না হলে দেড়বার সেটা নিয়ে পড়ে থাকার বদভ্যেস নেই। যাই ...