রুমমেটের থাকা না-থাকাঃ একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ
আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে
রুমমেট কিছুদিনের জন্য ভাগলবা হলে আমার অনুভূতি কেমন হয় তাহলে আমার উত্তর হবে,
‘ডিপেন্ডস’। সময়সীমা পনেরোদিনের এদিকে হলে কিছু যায় আসে না। ও দিকে হলে হালকা
বিরক্তি। রুমমেটের গন্তব্য মেদিনীপুর হলে একরকম উত্তেজনা, মিনেসোটা হলে আরেকরকম। উত্তেজনাটা মূলত প্যাকিংসংক্রান্ত। মেদিনীপুর হলে আধঘণ্টায় ব্যাকপ্যাকে যা হাতের কাছে পাওয়া
যায় গুঁজে হাওয়া, মিনেসোটা হলে প্যাকিং-এর পেছনে অন্তত একবেলা গচ্চা। ক্যাজুয়াল
হলে ঘুচিমুচি করে টি শার্ট, স্মার্ট ক্যাজুয়াল হলে ইস্তিরি করা কলারতোলা শার্ট। সুটকেসে শার্ট
পুরছি তো নয়, যেন নবজাতককে বেবিকটে শোয়াচ্ছি। অল্পদিনের জন্য অল্প দূরে হলে গেট থেকে হাত বাড়িয়ে টা টা
(এই ড্রেসে আর বড়রাস্তা পর্যন্ত গেলাম না, বুঝলে) বেশিদিনের জন্য বেশি দূরে হলে
ধড়াচুড়ো পরে সঙ্গে সঙ্গে যাওয়া যতখানি যাওয়া যায়। যতখানি যেতে টিকিট লাগে না।
গেট থেকে দুটো করে সিঁড়ি
টপকে উঠে হাফ-ভেজানো দরজা ঠেলেই ঘরে ঢুকি, আর ধড়াচুড়ো পরা অবস্থায় ট্যাক্সি থেকে
নেমে হাঁটু ধরে সিঁড়ি ভেঙে উঠে চাবি ঘুরিয়েই দরজা খুলি – তার পরের অনুভূতিটা এক।
আঃ, গোটা রাজত্ব এখন ক’দিন
আমার। গোটা বিছানা আমার, টিভির রিমোট আমার, সবক’টা চ্যানেল আমার, শিশির সব চানাচুর
একা আমার।
প্রথম প্রথম শিউরে উঠতাম। মনে
মনে নিজেকে কড়া করে ধমক দিয়ে চড়চাপাটি মারতাম খানদুয়েক। ছি ছি ছি। বিরহব্যথায় কোথায়
আমার সাবু খেয়ে শুয়ে পড়ার কথা, তার জায়গায় কি না উল্লাস?
বেশ কয়েক বছর আগে একবার আমি
খুব গোলমালে পড়েছিলাম। নাকের ডগায় একটা প্রেম ঘোরাঘুরি করছিল। কিছুতেই ঠিক করে
উঠতে পারছিলাম না যে সেটা করা আমার উচিত হবে না হবে-না। এখন উত্তরটা দিনের
আলোর থেকেও পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু তখন চিন্তায় আমার নাওয়াখাওয়াঘুম বন্ধ
হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। আমার মনোজগতের বিচলন যে বাইরের লোকের কাছেও প্রকট হয়ে উঠেছে
সেটা আমি টেরই পেতাম না যদি না একদিন বিকেলে স্টারবাকসে বসে স্ট্র দিয়ে গ্লাস থেকে
ফ্র্যাপুচিনোর শেষতম বিন্দুটা থেকে টেনে বার করে বান্টি আমাকে জিজ্ঞাসা করত, ‘কী ব্যাপার
বল তো?’
বললাম। বান্টি উদাস মুখ করে
শুনল। তারপর বলল, ‘এ তো ইজি।’ এই না বলে মেঝেয় রাখা ব্যাকপ্যাক থেকে একটা খাতা বার
করে ফড়ফড় করে তার একখানা পাতা ছিঁড়ল। পেন বার করে পাতার মাঝখান দিয়ে একটা
ট্যাঁরাব্যাঁকা লাইন টানল। একদিকে লিখল ‘কেন করব’, অন্যদিকে ‘কেন করব না’। তারপর
পাতাটা আমার হাতে দিয়ে বলল, ‘সব সত্যি লিখো। নিজেকে ঠকিও না।’
আমি লিখতে শুরু করলাম।
চোখের পলক ফেলতে না ফেলতে একদিকে সাতসাতখানা পয়েন্ট বেরিয়ে গেল, অন্যদিকে
কেঁদেককিয়ে আড়াইখানার বেশি জোটানো গেল না।
(কোনদিকে আড়াইখানা আর
কোনদিকে সাতখানা বেরিয়েছিল বলতে পারলে হাততালি।)
রুমমেট বিহনে আমার উল্লাসটা
ন্যায্য কিনা সেটা পরখ করার জন্যই খানিকটা, আমি বান্টির টোটকাটা আরও একবার কাজে
লাগালাম। খুঁজলে আরও পয়েন্ট বেরোত নির্ঘাত, কিন্তু দুটো করে পয়েন্টেই পনেরোশো শব্দ
হয়ে গেছে দেখে আমি আর বেশি খোঁজাখুঁজির খাটনিতে গেলাম না।
রুমমেট না থাকার সুবিধেঃ
এক, চায়ের পেছনে সময় কম
নষ্ট হয়। একা একা যে চা খেতে গুনে গুনে আড়াই মিনিট লাগে সেটা দুজনে মিলে খেতে লাগে
কম করে সাড়ে বাইশ মিনিট। তার কারণ হচ্ছে একা চা খেলে সঙ্গে একপিস ক্রিম ক্র্যাকার
ছাড়া আর কিছু লাগে না, কিন্তু দুজনে মিলে চা খেতে গেলে টিভি চালাতে হয়। টিভি
চালাতে খরচ হয় দেড় মিনিট। (আমাদের বাড়িতে টিভি চালানো খুবই শক্ত ব্যাপার। সকেট এবং
প্লাগের ফিটিং ঠিক নেই। দশবারের মধ্যে ন’বার উঠে গিয়ে প্লাগের কান ধরে না নাড়লে টিভি
চলে না। আমরা পালা করে এই কাজটা করে থাকি। প্রত্যেকবার কাজটা করতে যে ওঠে সে বলে,
‘নেক্সট উইকএন্ডে খাই আর না খাই, ইউটিউব দেখি আর না দেখি, নতুন মাল্টিপ্লাগ কিনব।’
অন্য জন খাটের ওপর থেকে মর্যাল সাপোর্ট দেয়। ‘কিনবই’। গত ছ’মাস ধরে এই বাক্যালাপ
চলছে।) টিভি চলার পর সংগীত বাংলা দেখা হবে না এম টিভি, সেই তর্কাতর্কিতে যায় আড়াই
মিনিট। মোট গেল চার মিনিট। তারপর একটা বোঝাপড়ায় আসা হয় যে দুজনের ইচ্ছেই বহাল
থাকবে, আমরা একটা পাঞ্জাবী গান আর একটা বাংলা গান দেখব। গান দেখতে যায় আরও সাড়ে
সাত মিনিট। কত হল? সাড়ে এগারো। বাকি এগারো মিনিটের মধ্যে পাঁচ মিনিট অবান্তর নিয়ে
কথা বলে আর তিন তিন মিনিট করে দু’জনের দুটো অফিস নিয়ে আলোচনা করতে করতে সাড়ে বাইশ
মিনিট কাবার।
দুই, তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে
বেরোনো যায়। আমাদের দুজনকেই ছোটবেলায় অ্যাডাম স্মিথের শ্রমবিভাজনের থিওরি গেলানো
হয়েছিল এবং আমরা দুজনেই বড়বেলাতেও সে থিওরি মেনে চলার চেষ্টা করি। যেমন ধরুন, আমি
চা করলে তুমি বিছানা তুলবে, তুমি বিছানা তুললে আমি চা করব। আমি ল্যাপটপ গোটালে
তুমি ডিমসেদ্ধ বসাবে, তুমি ডিমসেদ্ধ বসালে আমি ল্যাপটপ গোটাব। এই পর্যন্ত থিওরি
ঠিক চলে, তারপরই গোলযোগ সৃষ্টি হয়।
সব ভারতীয় নায়িকার
কেরিয়ারেই একটা অসুবিধেজনক সময় আসে যখন তিনি শিফন শাড়ি পরে বৃষ্টিতে নাচার মতো
খুকিও নেই আবার ফেমিনিস্টের পার্ট করার মতো বুড়িও হননি। মাধুরী দীক্ষিতেরও এসেছিল।
তখন তিনি টিভিতে ‘কহিঁ না কহিঁ কোই হ্যায়’ নামের একটি রিয়্যালিটি শো সঞ্চালনা
করতেন। নাম শুনেই শো-এর উদ্দেশ্য স্পষ্ট হচ্ছে। লোকজনকে এই সান্ত্বনা দেওয়া যে
ঘাবড়িও না, তোমাদেরও বিয়ে হবে। তোমার পার্টনারও ভগবান ঠিক করেই পাঠিয়েছেন, তার
সঙ্গে দেখা হওয়া জাস্ট সময়ের অপেক্ষা।
আমার ঠাকুমাও এই কথাটাই বলেন,
কিন্তু সেটা শুনতে মাধুরীর কথার মতো মিষ্টি লাগত না। ঠাকুমার দোষ নেই। ঠাকুমার বরিশালে
জন্মানোর দোষ। ঠাকুমা বলেন, ‘বোতল যদি থাকে, সিপিও থাকবে।’ অর্থাৎ কিনা ভগবানের
কারখানায় ভুল হওয়ার জো নেই, একটা বোতল তৈরি হওয়া মানে ঠিক তার মাপে মাপে একটা
ছিপিও তৈরি হয়েছে। পৃথিবীতে আসার পর বোতল আর ছিপিরা সব গোলেমালে এদিকওদিক ছত্রাকার
হয়ে গেছে ঠিকই তবে তাতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ছিপিবোতলদের একে অপরের সঙ্গে মিলিয়ে
দেওয়ার জন্য ভগবান আর একটি খ্যাঁচাকল আবিষ্কার করে রেখেছেন, যার নাম ‘শুভবিবাহ’।
আমার আর অর্চিষ্মানের
বিবাহে ঠাকুমার ছিপিবোতল থিওরির বেশির ভাগটাই খেটেছে (আমার হারিয়ে ফেলা এবং অর্চিষ্মানের
খুঁজে পাওয়ার প্রতিভা, সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টার সময় নেহরু প্লেস মেট্রোর সামনের
মারকাটারি কমপিটিশনে অন্তত সাতশো লোককে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে অর্চিষ্মানের অটো ধরতে
না পারা এবং আমার পারা) কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার মেলেওনি। যেমন সাহসের
ব্যাপারটাই ধরা যাক। ছিপিবোতলের থিওরি সত্যি হতে
হলে আমাদের দুজনেরই এমন কোনও পার্টনার হওয়া উচিত ছিল বাড়ি থেকে বেরোতে যার ভয় লাগে
না। ভয় মানে আমি বোঝাতে চাইছি, আমি বাড়ি থেকে বেরোলেই গ্যাস বার্স্ট করবে, কল থেকে
জল পড়ে সারা বাড়ি ভেসে যাবে, চোর ঢুকে আমাদের গামছাতোয়ালে সব চুরি করে নিয়ে যাবে
গোছের ভয়। গোড়াতে আমরা এটাতেও শ্রমবিভাজন প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছিলাম। আমি গ্যাস
চেক করলে তুমি কল চেক করবে, আমি জানালা চেক করলে তুমি দরজা চেক করবে ইত্যাদি।
সে ব্যবস্থা টেঁকেনি।
বেশিক্ষণ লাগে না, দরজায়
চাবি ঘোরাতে ঘোরাতেই প্রথম সন্দেহ কামড় মারে।
ঠিক করে দেখেছিলে গ্যাসটা?
দেখলাম তো। গলা কমজোরি।
তুমি আরেকবার দেখে আসবে নাকি?
সেই ভালো। দিনকাল যা পড়েছে,
কিছু বলা যায় না। দরজার বাইরে জুতো খুলে রেখে যাওয়া হল গ্যাস দেখতে। বন্ধ।
গুড। আবার জুতো পরা হচ্ছে।
কলটা দেখে এলে?
জুতো পরা থেমে গেল।
না তো। মনে তো হয় বন্ধই
করেছিলাম।
দেখে এলে পারতে আরেকবার।
আচ্ছা দাঁড়াও আমি যাচ্ছি।
আবার জুতো খোলা হচ্ছে।
ধুর আর জুতো খুলতে হবে না।
এমনিই যাও।
যাই, হ্যাঁ?
হ্যাঁ হ্যাঁ। কী আর হবে।
জুতো খুলতে হল না, খানিকটা
সময় বাঁচল।
দু’সেকেন্ড পর চিৎকার।
শোন না, বারান্দার দরজাটাও
একবার দেখে এস প্লিজ।
প্রত্যুত্তরে চিৎকার ফেরৎ
আসে।
হ্যাঁ সেটাই দেখছি।
এই করে দুজনে মিলে একই
গ্যাস, একই কল, একই দরজা তিনবার করে চেক করে করে যতক্ষণ আমরা নিশ্চিত হই যে লৌহবাসর
নিশ্ছিদ্র হয়েছে ততক্ষণে দশ মিনিট লেট হয়ে গেছে।
রুমমেট না থাকার অসুবিধেঃ
১. চা খেতেই ইচ্ছে করে নাঃ
রুমমেট চলে যাওয়ার পরদিন সকালে উঠে আমি আবিষ্কার করি যে আমার চা খাওয়ার ইচ্ছে
অন্তর্হিত হয়েছে। খবরটা মাকে দিতে মা ফোনের ওপার থেকে বললেন, ‘দুগগা দুগগা। ভালো
হয়েছে মা, চায়ের আপদ বিদেয় হয়েছে। এখন থেকে সকালে উঠে ত্রিফলার জল খেও। ত্রিফলার
শিশি কোথায় আছে জান তো? ফ্রিজের ওপর রেখে এসেছিলাম যাতে মনে থাকে। আছে তো নাকি
সরিয়ে ফেলেছ?’ আমি চট করে একবার তাকিয়ে নিয়ে বললাম, ‘আছে আছে, যেখানে রেখে
গিয়েছিলে গ্যাঁট হয়ে সেখানেই বসে আছে।’ তারপর মা হঠাৎ বললেন, ‘আহ্হ্হ্’, আমি
লাফিয়ে উঠে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কী হল কী হল, লাগল নাকি? খাটের ছত্রীর সেই বেরিয়ে
থাকা পেরেকটাতে? কতদিন বলেছি ওটা ঠিক করাও ঠিক করাও, দেখলে তো?’ মা বললেন, ‘না না
লাগেনি লাগেনি। এটা তো আরামের আহ্, চা খাচ্ছি কি না।’
মা ত্রিফলার হুকুম দিয়ে
খালাস হলেন, বিপদের কথাটা তলিয়ে ভেবে দেখলেন না। সারাদিনে আমার যে তিনটে কাজ করতে
ইচ্ছে করে তার মধ্যে একটা হচ্ছে চা খাওয়া (বাকি দুটো ঘুমোনো আর অবান্তরের কমেন্টস
চেক)। সে ইচ্ছেটাও যদি চলে যায় তাহলে বাঁচি কী করে? জোর করে ঠেলেঠুলে নিজেকে
রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে কাজে লাগালাম। চা হল, কিন্তু আমারই মতো নিড়বিড়ে হল। এ জিনিসে
ঘুম ছাড়বে না। তাই খেলাম। টিভি চালালাম। পাঞ্জাবী, হিন্দি, হাফ হিন্দি, হাফ বাংলা,
সবরকম ভাষার গান চ্যানেল বদলে বদলে শুনলাম। একটাও কানে ধরল না। অবান্তর নিয়ে আমার
উত্তেজনায় বাতাস দেওয়ার কেউ নেই, অফিস নিয়ে কান্নাকাটি শোনার কেউ নেই। চা-টা সিরিয়াসলি
আর মুখে তোলা যাচ্ছে না। ধুত্তেরি। কাল থেকে ত্রিফলাই খাব।
সকালবেলা তবু যদি বা নিজেকে
মোটিভেট করা সম্ভব, বিকেলবেলা অফিস থেকে ফিরে একার জন্য চা করার কথা মনে পড়লে ডাক
ছেড়ে কান্না পায়। ত্রিফলার শিশি হাতে নিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকি। তারপর সেই
পাপটা করি যেটা একসময় আমার সামনে কেউ করলে আমি মনে মনে তার চোদ্দপুরুষকে জাজ করে
ফেলতাম। টি ব্যাগ। স্বাদগন্ধ চুলোর দোরে দিয়ে কোনওমতে অভ্যেসটার ল্যাজ ধরে ঝুলে
থাকি। যাতে রুমমেট ফিরে আসলে আবার ফিরে যেতে অসুবিধে না হয়।
২. সারাদিন টেনশনঃ দুজোড়া
চোখ দিয়ে বাড়িঘরদোর পরীক্ষা করা একরকম, একজোড়া চোখ দিয়ে পরীক্ষা করা আরেকরকম। প্রথমটা
করতে সময় বেশি লাগে ঠিকই, কিন্তু ব্যাপারটা হয়ে যাওয়ার পর আত্মবিশ্বাসে টান পড়ে
না। অটোয় বসে মানসচক্ষে দেখতে হয় না যে বারান্দার দরজার ছিটকিনি তোলা নেই। অফিসে
বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে কাঁপতে হয় না যে গ্যাসের নব ঘোরানো নেই। ফিরতে ফিরতে
সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ভাবতে হয় না যে বাড়ি গিয়ে দেখব সব পুড়েঝুড়ে একশা, বাড়িওয়ালি
কোমরে হাত দিয়ে পুলিশসহ দাঁড়িয়ে আছেন আমার অপেক্ষায়।
অথচ এই আমি একটা অতি দীর্ঘ সময়
ধরে একা থেকেছি, একা হাতে সব পরীক্ষা করে বেরিয়েছি, কোনওদিন কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।
ঘটতে যে পারে এই সম্ভাবনায় সারাদিন আধমরা হয়েও থাকতে হয়নি। বিবাহে ছিপিবোতল এক হয়
কি না জানি না, কনফিডেন্স যে মাটিতে মিশে যায় সে নিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছি।
কিন্তু যা ঘটে গেছে তাকে অস্বীকার করে লাভ নেই। মা বলেন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করাটাই আসল বুদ্ধিমানের লক্ষণ। আমিও তাই করব। আর করব বলেই আর কখনও রুমমেট চলে গেলে উল্লসিত হব না। হাড়ে হাড়ে বুঝে গেছি, রুমমেট বাড়ি থাকলেই আমার সুবিধে।
কিন্তু যা ঘটে গেছে তাকে অস্বীকার করে লাভ নেই। মা বলেন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করাটাই আসল বুদ্ধিমানের লক্ষণ। আমিও তাই করব। আর করব বলেই আর কখনও রুমমেট চলে গেলে উল্লসিত হব না। হাড়ে হাড়ে বুঝে গেছি, রুমমেট বাড়ি থাকলেই আমার সুবিধে।
Uff, ei post ta...jaake bole giye...daroon sweet. Porte porte ami money money baar chhoyek "awwwww" bollam. :-)
ReplyDeleteহাহা বিম্ববতী, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ।
DeleteDarun Post. ar ei sujoge boleni je oi "শ্রমবিভাজনের" asubidhata amar moton knure loker sobcheye boro asubidha roommate na thakle. sob শ্রম nijeke korte hochhe bole du bela skype te kannakati kora chhara ar kono upai thakena.... er theke roommate er songe TV nie jhograta kom koster.
ReplyDeleteহাই ফাইভ ইচ্ছাডানা। রুমমেটের সঙ্গে ঝগড়া করা পৃথিবীর সব কাজের থেকে কম শক্ত।
Deleteআজকের লেখাটা দারুণ। এক নিশ্বাসে পড়ে ফেললাম। তারপর এবার কাঁটাছেড়া। প্রথমেই বলি, আবার চানাচুরের নাম? তোমার এখন এই নামটা cut and paste elsewhere করে ফেলা উচিত। লজ্জাও নেই নাকি?
ReplyDeleteএবার বলি আসল কথাটা। রুমমেটটা তোমার বর না? মরি, মরি, এইরকম একটা ভাল ছেলের পিছনে নাকি এই ভাবনা? যা হোক, শেষ পর্যন্ত পথে ফিরেছো।
এবার জনান্তিকে। আমি আমার বরকে একদম পছন্দ করি না। কী বিরক্তিকর সঙ্গে চল্লিশটা বছর কাটিয়ে দিলাম দেখ। খালি অপেক্ষা কখন বেরোবে। বেরোলেই একটা ঘুম লাগাব, নয় সেলাই করবো, নয় অন্য যা কিছু। কিন্তু কি গেরো বল? বেরোবার পর মনে হতে থাকে উফ্,জলের বোতলটা হাতের কাহে রেখে গেল না কেন? মন দিয়ে কিছু লিখছি, উঠলেই ভাবনাগুলো এলোমেলো হয়ে যাবে, এখন গ্যাসটা বন্ধ করে কে? কাকে বলব, চানের জলটা একটু বসিয়ে দাও না প্লীজ্? ইত্যাদি হাজারো সমস্যা সামনে। পরিসমাপ্তিতে মনে হতে থাকল, এখন কি না বেরোলেই চলত না?
এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে, আজ তুমি যেখানে, তোমার ডবল বয়সে আমিও সেইখানে। আমরা দুজনেই কিচ্ছু এগোইনি।
ভালো তো, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকাই ভালো মালবিকা। না হলেই পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা। লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। আপনার লেখাটা পড়েও খুব মজা লাগল।
Deletejabbaba "roommate"??
ReplyDeletedarun lekha ta :)
থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, স্বাগতা।
DeleteKi nidarun sotti katha ki darun bhabte lekha. Oi triphalar shishi hate nie Bose thakatakei to kobi biroho bolechhen! Biroho je eto hasyakar hote pare seta ei triphalar jog chhara same hob hoto na.
ReplyDeleteSambhob ta same hob hoye gechhe ager comment-e.
ReplyDeleteনো প্রবলেম রুচিরা। তুমি কবির নাম করে বিরহের যে সংজ্ঞাটা দিলে তাতে আমি ধরাশায়ী। দারুণ বলেছ।
Deletehahaha ... ki sweet kore prem er kotha lekha.. :) oi 2.5 ar 7 ta bujhte parini..
ReplyDeleteনা বোঝাই ভালো ঊর্মি। লেখাটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে হাঁফ ছাড়লাম। থ্যাংক ইউ।
Deleteপ্রথম প্রথম শিউরে উঠতাম। মনে মনে নিজেকে কড়া করে ধমক দিয়ে চড়চাপাটি মারতাম খানদুয়েক। ছি ছি ছি। বিরহব্যথায় কোথায় আমার সাবু খেয়ে শুয়ে পড়ার কথা, তার জায়গায় কি না উল্লাস? he he he khub hesechi...Khub sundor lekha.......tumi jokhon osustho chile roj abantor khultam ar notun lekha na peye khub mon kharap lagto...Abantor roj pora ta amar nesha.
ReplyDeleteআরে কুহেলি যে, কেমন আছ? সাধারণত আমি নেশা করার বিপক্ষে, তবে চা আর অবান্তরের নেশা করলে আমি তাকে উৎসাহই দিই। কামনা করি তোমার অবান্তরের নেশা দীর্ঘজীবী হক।
DeleteKaal theme room-mate k nun er chala bolbey ki? ... vebe dekho.
ReplyDeleteAmr paanch bochorer meye jesob kichu jinish lokkhyo more bhoyanok regey jaay, taar ekta holo, ek botoler mathay onno botoler "sipi". emn dekhlei shey tokkhuni seta paltay.
Gobhir daRshonik totWo .....
তোমার মেয়ে কিন্তু সত্যিই একটা গভীর তত্ত্ব আবিষ্কার করে ফেলেছে। বুদ্ধিমান মেয়ে।
Deleteএটা অসাধারণ লাগলো। :) খুব হাসলাম। :)
ReplyDeleteধন্যবাদ, অরিজিত।
Deleteখুব ভালো লাগলো. :-)
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ।
DeleteEbare "roommate" kotodine phirbey?
ReplyDeleteহাহা, রুমমেট ফিরে এসেছে রুণা। সকালে আবার আমরা অন্যায় রকম বেশি সময় নিয়ে চা খাচ্ছি।
Deleteaha too cute. biroho bethaye sabu khaoni botey, bt tea bag er cha kheye felecho ar thakte na pere.
ReplyDeleteamar chipi ta ke je kobe khuje pabo go...already kuje peye gechi kina tao not sure. ki jala..
আরে তুমি যখন আছ, তোমার ছিপিও আছে। ঘাবড়িও না, কুহেলি। আর ছিপি পেয়ে গেলে তুমি বুঝতে পেরে যাবে, কোনও রকম কনফিউশন থাকবে না।
Deleteছিপি না থাকুক, আমরা মাজাভাঙ্গা, কানা দোমড়ানো বোতলের দল একসাথে বসে ঠুনুক ঠুনুক করি । আর কেউ বাড়ি গেলেই মনে মনে গাল পেরে ভুত করে দিই। বোরিং লাগে ...
ReplyDeleteবোরিং বলে বোরিং, হীরক?
Deleteভার্চুয়াল জগতে ঘুরতে ঘুরতে কি মিষ্টি একখানা " প্রায় জিনিস" পড়ে ফেললাম। আর পড়ে মনে হলো এই তো..এতদিন এ পাওয়া গ্যাছে এমন লেখা যা পড়ে আমার যাদবপুর এ মগজ ধোলাই হওয়া মাথা দেরিদা ফুকো ইত্যদি অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে কাটা ছেড়া করার পর ও কি নির্ভেজাল এক খানা আরাম পেতে পারে তাই আমার কলেজ বালিকা সুলভ ল্যাধ ( ওটি ভাষার ক্রম বিবর্তন) বিসর্জন করে আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে বসলাম।
ReplyDeleteআলাপ হলে খুব ভালো লাগবে।