চায়োস
রাস্তার ধারের চায়ের দোকানেও চা পাওয়া যায়, চায়োস-এও চা পাওয়া যায়। তাহলে দুটোর মধ্যে তফাৎ কী?
১। মালিকের যোগ্যতা। চায়োস-এর মালিকেরা আই আই টি পাশ। বম্বে আই আই টি-র নীতিন সালুজা আর দিল্লি আই আই টি-র রাঘব ভার্মার সৃষ্টি চায়োস।
২। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বসার জায়গা।
৩। চায়ের বৈচিত্র্য। চায়োস-এর ইউ এস পি হচ্ছে ‘মেরি ওয়ালি চায়’। দুধ (পানি কম, দুধ কম, রেগুলার, ফুল দুধ), চা পাতা (রেগুলার, কড়ক) এবং বিবিধ অ্যাড অন (তুলসী, আদা, মৌরি, এলাচ, গোল মরিচ, কাঁচা লংকা ইত্যাদি)-এর পারমুটেশন কম্বিনেশনে বারো হাজার রকমের চা নাকি বানিয়ে দিতে পারেন চায়োস-এর চাওয়ালা, থুড়ি, শেফ-রা।
৪। সজ্জা। সাধারণ চায়ের দোকানের পাশে সাইকেল সারানোর দোকান থাকে, তাদের ছেঁড়াফাটা টায়ার, ভাঙাচোরা ধাতব কাঠামো এদিকওদিক ছত্রাকার হয়ে থাকে, চায়োস-এ সে চাকা হলুদ রং হয়ে সিলিং-এ চড়েছে। চাকার ঝাড়লন্ঠন থেকে ঝুলছে ন্যাড়া বাল্ব। আমি ঠিক জানি না, তবে একেই বোধহয় ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল’ স্টাইল ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন বলে।
অবশ্য ঝাড়লণ্ঠনের আলো আমাদের না হলেও চলত। দোকান খোলে সকাল আটটায়, আমরা পৌঁছেছিলাম আটটা পঁয়ত্রিশ নাগাদ। আমরাই ফার্স্ট। বড় বড় জানালা দিয়ে পর্যাপ্ত আলো আসছিল, আমরা জানালার পাশের টেবিল বেছে বসলাম।
আমাদের ভিউ
৫। টা-এর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংগ্রহ। মুম্বাইকরের ব্রেনচাইল্ড বলেই বোধহয় মূল জোরটা বান-মাসকার ওপর, কিন্তু অন্যান্য ভ্যারাইটিও আছে। আমরা সেগুলোই চেখে দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি নিলাম এগ বান, বানের ভেতর মশলাদার মেয়োতে জটাপটি ডিমসেদ্ধর টুকরো, অর্চিষ্মান নিল বান ভুজিয়া। ওরটায় মেয়োর পরিমাণ কম, আর ডিমের বদলে সেউ ভাজা। সাহেবরা অনেকসময় ‘ক্রাঞ্চ’ এলিমেন্টের জন্য স্যান্ডউইচের ভেতর পটেটো চিপস দেয়, সেরকম। আমার কুলহড় চা, দুধ এবং আদা দেওয়া, চিনি ছাড়া। অর্চিষ্মানের কাগজের কাপে দেশী চা। কড়ক। চিনি এবং আদা সহ।
অর্চিষ্মানের দ্বিতীয় টা। কিমা পাও। আমার দ্বিতীয় চা। আগের কম্বোর সঙ্গে এবার বাড়তি শুধু হরি মির্চ। ইয়েস, কাঁচা লংকা। মেনুতে দেখা ইস্তক খাওয়ার জন্য প্রাণ আনচান করছিল। নর্ম্যাল চায়ের মতোই খেতে, খালি ঢোঁক গেলার পর গলার পেছন দিকে একটা হালকা ঝাঁজ টোকা মারে। দিব্যি লাগে। ভাবছি এবার থেকে বাড়ির চায়েও কাঁচা লংকা দেব। গম্ভীর মুখে সে কথাটা ঘোষণা করার পর অর্চিষ্মান মুখটা যেরকম করল সেটার বাংলা করলে হয় “বাঁচাও”।
৫। আর অবভিয়াসলি, দাম। তবুও আমার তো মনে হল সিসিডি বারিস্তার তুলনায় চায়োস অনেক বেশি পকেট-ফ্রেন্ডলি। আমাদের সংসারের বর্তমান “খরচ কমাও, সেভিংস বাড়াও” ক্যাম্পেনের পক্ষে মানানসই। মাকে ফোন করে যখন ভালো খবরটা দিলাম, একটা সস্তা চা ক্যাফের সন্ধান পেয়েছি, চা আর টা মিলিয়ে ওনলি ফোর হান্ড্রেড রুপিস ফর টু পিপল (অ্যাপ্রক্স.), মা কয়েকসেকেন্ড চুপ করে থাকলেন, তারপর বললেন, “দিল্লিতে একটা চায়ের দোকান খুলে দে না রে সোনা, ওখানে গিয়েই থাকি তবে।”
*****
এন সি আর অঞ্চলে বসে খাওয়া আর ডেলিভারি মিলিয়ে চায়োস-এর তিরিশটিরও বেশি আউটলেট আছে। আপনার বাড়ির কাছেরটা খুঁজে বার করতে হলে এই পাতাটা দেখতে পারেন।
মা কয়েকসেকেন্ড চুপ করে থাকলেন....
ReplyDeletekakima ke selam dilam.amio tai e boltam
prosenjit
আমিও সেরকমটাই বলার দলে, প্রসেনজিৎ।
DeleteBun gulo besh mota mota toh! Amader ekhane Irani cafe prochur ... oi brun (bun) maska, brun omelette, keema pao, etc. chub chole. Vada pao rakhe ni? :-)
ReplyDeleteরেখেছিল, শর্মিলা। আমরা নিইনি। ইরানিরা বানকে ব্রান বলে বুঝি? এটা জানা ছিল না।
DeletePronounced as broon.
Deletebaah.. sokalbelay chaayer golpo pore mon phurphure hoye gelo.. mumbai teo royeche dekhchi era.. ekdin gele hoi..
ReplyDeleteaami babake prothombar bangalore e CCD gotrio ek cafe te niye giye besh oproshtut hoyechilam.. kakimar reaction shune mone porlo.. :)
bhalo thakben
Indrani
বাবামারা ওই রকমই হন, ইন্দ্রাণী। আমি একবার মাকে কোন একটা কায়দার জাপানি দোকানে চা খেতে নিয়ে গিয়েছিলাম, সেখানে কী রকম টেস্টফুল পুঁচকে কেটলিতে করে চা এনে দিয়েছে, সঙ্গে মানানসই কাপ প্লেট, কেটলি থেকে চা ঢালো আর খাও, মা খাবেন কী, "একী এতো পুরো পুতুলের টি পার্টি!" বলে হাসতেই ব্যস্ত। জঘন্য।
Deleteবম্বের চায়োস কেমন, ঘুরে এসে বলবেন প্লিজ।
Eita theke bojha jasche tomar sense of humour ta uttoradhikar sutre paoya.
DeleteLanka cha ta baniye kheye recipe dio plz
উত্তরাধিকারে ছিল, প্রিয়াঙ্কা, পাইনি।
DeleteSeto amra mane tomar blog er pathok ra bolbe...jodi vote hoi ei bepare...ami sure jitbo. :):)
Deletenischoi bolbo Kuntala.
Deleteaamaar mone porlo aamaar baba kolkatai prothombar home delivered pizza kheye janiyechilen - er theke 1 kg rosogolla khele onek bhalo hoto..
আরে আরে রেস্টুরেন্ট রিভিউ ফিরে এসেছে! Good days are here again :)
ReplyDeleteহাহা, হ্যাঁ কাকলি, আমরা আবার গুটিগুটি দুয়েকখানা দোকান চেখে দেখছি।
Deleteকলকাতায় কেন যে এমন দোকানপত্তর নেই কে জানে!! যাচ্ছেতাই!
ReplyDeleteআরে কলকাতাতেও কত কায়দার দোকান আছে তো, শাল্মলী। আমি তো তাদের গল্প শুনি আর ভাবি, ইস কী লস।
Deleteএই চায়োসটা কি হৌজখাস ভিলেজে? সিনারি দেখে সের'মই মালুম হচ্ছে।
ReplyDeleteএক যুগ আগে, ২০০৪ সালে, আমরা চার বন্ধু মিলে পি ভি আরে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলুম। মা জানতে পেরে জিজ্ঞেস করলেন টিকিটের দাম কত! দুশো টাকা শুনে বললেন, চারজনের দুশো টাকা (বা একজনের পঞ্চাশ) একটু বেশি, তবে চিপস কোল্ড ড্রিঙ্কস কমিয়ে খেলে টাকাটা উঠে আসে।
যখন বললাম চারজনের টিকিটের দাম আটশো টাকা, তখন মা বললেন যে আটশো টাকায় পুরো পাড়াকে সিনেমা দেখিয়ে আনা যায়।
হাহাহা, এইটা দারুণ গল্প। গল্পটা সত্যি বলেই অবশ্য এত মজার। হ্যাঁ এটা হজ খাস, দেবাশিস।
Deleteপয়েন্টস টু বি নোটেড:
ReplyDelete১. আই আই টি পাশ করে চায়ের দোকান দিলেও দিতে হতে পারে| আমিও সেরকমই একটা মানসিক প্রস্তুতি নেব ভাবছি, পি এইচ ডি করে আর কিছু জুটবে না তো ;)
২. আপনারা আবার খাওয়াদাওয়া করতে বেরোচ্ছেন| অর্চিস্মানবাবু এখন ঠিক তো? (কিমা পাও খাচ্ছেন যখন ;) )
শুনেটুনে চায়োসকে দিব্যি লাগছে| বারিস্তার থেকে সস্তা তো বটেই, সিসিডির থেকেও, তবে সিসিডিতে কম্বো নিলে দাম একটু কম পড়ে|
আপনি দোকান খুলুন, অন্বেষা, আমরা খেতে যাব।
Deleteসাহস দিচ্ছেন? তাহলে ডাইরী আর পেন নিয়ে বসি বরং , মেনু ঠিক করতে হবে তো ;)
Deleteসবই তো বুঝলুম, কিন্তু চায়ের সঙ্গে লেড় বিস্কুট কই গো?
ReplyDeleteAmi guess korechilam .ajke sure holam. Tumi CS er anwesha di- iit kgp .tai to??
Delete@প্রিয়াঙ্কা: আমি অন্বেষাই বটি, আই আই টি খড়গপুরও ঠিক, তবে সি এস না তো :)
Deleteও হো হো। সি এস টা আমার পাকামি--- কিন্ত ু আর এল বি হোস্টেল--এটা বুল'স আই--অ্যাট লিষ্ট ২০০৯ এ তাই ছিল। :)
Deleteঅবশ্য, অবশ্য| যদিও আমি এখনো চিনতে পারছি না|
Deleteফেসবুকে থাকা হয়? তাহলে ছবিটবি দেওয়া হোক :)
আমায় চিনবে না সেটাই ন্যাচারাল।।আমি মাত্র ১ বছর ছিলাম ওখানে। ফেসবুকে আছি--- জয়িতা পুনম এদের বন্ধ ু। তবে আমি বায়োটেক এ ছিলাম।
DeleteLonka deya chaa?! issh try korar jonno pran aanchan korche. tumi nehat dure thako tai auntie ke bolte perecho 400 taka diye chaa khawar golpo. ami jodi bair ese seta boli tale ar rokkhe thakbe na.
ReplyDelete