মণির জন্য
অবান্তরে একটা ট্র্যাডিশন আছে মাদার্স ডে-তে পোস্ট লেখার কিন্তু এবছরের
মাতৃদিবস অবান্তরের লেখকের জন্য খানিক অসুবিধেজনক সময়ে এসে পড়েছে। কিন্তু সেই
অজুহাতে মায়ের ভাগের পোস্টটা ফাঁকি দেওয়া ভালো দেখায় না, তাই আজকের পোস্টটা মায়ের
জন্য রইল।
আমার চেহারায়, স্বভাবে, চরিত্রে যা কিছু ফাঁকি আছে (মানে মায়ের পক্ষে যে
ফাঁকিগুলোর ব্যাপারে জানা সম্ভব) সেই সব ফাঁকির জন্য মা সব দায় নিজের ঘাড়ে চাপান।
খাঁদা নাক, পাকা চুল, ব্রণভরা গাল তো খালি চোখে দেখাই যায়, যেগুলো যায় না সেগুলোও
নাকি সব মায়ের দোষ। আমার এই প্রায়-অন্ধত্ব, সে নাকি মা আমার জন্মের আগে কেজিকেজি
গাজর খাননি বলে। এই যে আমার সর্বক্ষণের বুকধড়ফড়ানি ভয়, নিজের সাইজের থেকে বড় কিছু
দেখলেই বাঁশপাতার মতো হাঁটুকাঁপার রোগ, এর পেছনেও নাকি দায়ী শুধু মা। আর কেউ নয়।
আমার মা ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব ভীতু ছিলেন। ভূতের ভয় তো ছিলই, তার ওপর ছিল
মানুষের ভয়। তবে মায়ের ভয় নিতান্ত অমূলক ছিল না। বাড়িভর্তি বড়দাদাদিদিদের দ্বারা
সকালবিকেল “বুলি” হতে হলে অতি বড় সাহসীরও সাহসে টান পড়বে।
যদিও মা কোনওদিন সে জায়গা চোখে দেখেননি তবু আমি জানি মা নিজের “ঢাকা ময়মনসিংহ”
উত্তরাধিকার নিয়ে মনে মনে গর্বিত। আমি মাকে কখনও বলিনি যদিও, কিন্তু আমার বিশ্বাস
মায়ের দুর্ভাগ্যের কারণও ওই ঢাকা। দাদাদিদির দল শ্যামবাজার কিংবা বর্ধমানে জন্মালে
মাকে অন্তত একশোগুণ কম দুর্ভোগ সইতে হত। শ্যামবাজারের লোকেরা জুতো মারলেও মনে হয়
আহা কী মিষ্টি আর ঢাকার লোকে গালে চুমু খেলেও মনে হয় কামড়ে দিল বুঝি। তার ওপর মায়ের
দাদাদিদিরা চুমু তো খেতেনই না, বরং দিবারাত্র তাঁদের হাতে গাঁট্টা আর চিমটি খেতে
খেতে মা আর ইতু(ছোট)মাসির গোটা ছোটবেলাটায় কালশিটে পড়ে গিয়েছিল।
তবে গাঁট্টা আর চিমটির থেকেও শতগুণে ভয়ংকর যে ব্যাপারটা ছিল তার কথা
রবীন্দ্রনাথ ‘পণ্ডিতমশাই’ গল্পে লিখে গেছেন। সেটা হচ্ছে নামকরণ। পলিটিক্যালি
যতখানি ইনকরেক্ট হওয়া সম্ভব। আমার ছোটমামার গায়ের রং সবথেকে ময়লা ছিল বলে মামার
নাম ছিল ‘কালু’, নাকচ্যাপটা মেজমামার নাম ছিল “ন্যাপলা” আর আমার মা সর্বক্ষণ
ভয়েভয়ে লুকিয়েচুরিয়ে ঘুরতেন বলে সবাই মিলে মায়ের নাম দিয়েছিল “মাছি-ভ্যান্ভ্যান্”।
অর্থাৎ কিনা কারণেঅকারণে মাকে গাঁট্টা মারলেও মা ইতুমাসির মতো চেঁচিয়ে কাঁদতেন
না। মাছির মতো ভ্যান্ভ্যান্ করে “বা রে, মারলা ক্যান্?” বলে অকুস্থল থেকে দ্রুত
সরে পড়া ছাড়া আর কিছু করার সাহস তাঁর হত না।
মায়ের মাছি ভ্যান্ভানানির আরও প্রচুর গল্প আছে। ঢাকা শহরের সচ্ছল সাবলীল জীবন
ছেড়ে, ছেলেপুলে আর প্রাণটুকু নিয়ে এপারে চলে আসতে হয়েছিল বলেই হয়তো দাদুদিদার মনে
সর্বক্ষণ হারানো প্রতিষ্ঠার পুনরুদ্ধারের আশা ঘুরে মরত। আর সে প্রতিষ্ঠা ফিরে
পাওয়ার সবথেকে সোজা উপায় আর কীই বা হতে পারে, ছেলেমেয়েরা পড়াশুনোয় ভালো হওয়া ছাড়া?
দাদুদিদা তাই নিজেরা আজীবন ভাড়াবাড়িতে থেকে ছেলেমেয়েকে ভালোভালো স্কুলকলেজে
পাঠিয়েছিলেন। স্কুলব্যাগ একজনকেও কিনে দিতে পারেননি, কিন্তু বইয়ের অভাব কোনওদিনও
যাতে না হয় সেদিকে তাঁদের ঠায় নজর ছিল। তবে তাঁরা শান্ত মানুষ ছিলেন, শাসন করতে
পারতেন না। সে দায়িত্ব ছিল জাঁদরেল সেজমেয়ের হাতে। বাংলা, ইংরিজি, ইতিহাস, ভূগোল,
ভৌত আর জীবনবিজ্ঞান থেকে শুরু করে সেলাই, ড্রয়িং-এ পর্যন্ত ভাইবোনেরা যথেষ্ট ভালো
নম্বর পাচ্ছে কি না সে নিয়ে সেজমাসি ভয়ানক উত্তেজিত থাকতেন।
আর তার চোট সইতে হত কচিকচি ভাইবোনেদের।
সেদিন আমার মায়ের ক্লাস ফোরের অ্যানুয়াল পরীক্ষার শেষ দিন ছিল। এযুগের মতো সেযুগেও
শেষের দিকে এলেবেলে পরীক্ষাগুলোই রাখা হত, যেমন ড্রয়িং। মা নাচতেনাচতে স্কুল থেকে
ফিরে ধার নিয়ে যাওয়া ছোড়দার ড্রয়িংবোর্ড আর বারোয়ারি প্যাস্টেলরঙের বাক্স খাটের
ওপর ছুঁড়ে ফেলে বাগানে ঘুরতে যাচ্ছেন, এমন সময় সেজমাসি মাকে খপাৎ ধরে ফেললেন।
“ওই মণি, যাস কই? পরীক্ষা কেমন হইল? কী আঁকতে দিসিলো?”
মা মিনমিন করে বললেন, “মাছ।”
“অ্যাঁ!!! সর্বনাশ!!!”
মাসির আর্তনাদে আশপাশ থেকে বাকি ভাইবোনেরা “কী হইসে কী হইসে” বলে ছুটে এল।
মাসি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে বললেন, মণির পরীক্ষায় মাছ আঁকতে দিয়েছিল, কিন্তু মাছ আঁকা তো ওকে প্র্যাকটিস্ করানোই হয়নি। না জানি মেয়ে কী কাগের ঠ্যাং বগের ঠ্যাং এঁকে এসেছে।
মণির ক্লাস ফোরের ড্রয়িংপরীক্ষায় গোল্লা পাওয়া এবং পরিণতি হিসেবে ভবিষ্যতে না
খেয়ে মরার আতংকে সকলে মিলে যখন মাথা চাপড়াচ্ছে তখন আমার বুদ্ধিমান ছোটমামা অর্থাৎ
কালু বলল, আহ্ এত গোলযোগের কী আছে, হস্ত থাকিতে মুখে কেন খামোকা কথা বল। এই না বলে
ছোটমামা একটা খাতা আর পেনসিল মায়ের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
“দেখি, কী আঁকছস্।”
পরিস্থিতিটা কল্পনা করতে পারছেন? একটা সাত কি আট বছরের মেয়ে, একবার স্কুলে
পরীক্ষায় মাছ এঁকে এসেছে, এসে বাড়িতে আরও একটা পরীক্ষার মুখে পড়েছে। চারদিক থেকে গোটা
পাঁচেক বিভিন্নবয়সী পরীক্ষক উত্তরপত্রের ওপর ঝুঁকে পড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে, ভুল হলেই দেদার
বকুনি এবং গাঁট্টা। হাতে গরম।
ওই পরিস্থিতিতে মণি তো দূরের কথা, মকবুল ফিদা হুসেন থাকলেও একটা ভদ্রস্থ মাছ আঁকতে পারতেন না।
মায়ের মাছ আঁকা শেষ হলে ছোটরা খ্যা খ্যা করে হেসে গড়িয়ে পড়ল। সেজমাসির মুখ হাঁ
হয়ে গেল। তিনি শুধু বললেন,
“এইরকম মাছ আঁইক্যা আইস তুমি? পরীক্ষকে বোঝব যে এইটা মাছ?”
কালু পেট চেপে মুখ হাঁ করে কোনওমতে দম নিয়ে বলল, “মনে করব মঙ্গলগ্রহ থিক্যা
রকেটে চাইপ্যা কেউ নাইম্যা আইসে।”
আর আমার ছোট্ট, ফ্রক পরা বাটি ছাঁট চুলের বেচারা মা, দুচোখের টলটলে জল
প্রাণপণে চাপতেচাপতে বলল, “আমি তো আঁইক্যা নিচে লিইখ্যা দিসি ‘মাছ’। চিনতে ক্যান্
পারব না?”
তবে দিন কারও সমান যায় না। বেশ ক’বছর পরে বিধাতা মুখ তুলে চাইলেন। মাছি-ভ্যান্ভ্যান্
মণির সোনা নামের একটা মেয়ে হল। জন্মের পরেই সবাই দেখে বলল, এ মা এ তো মণির মুখ
কেটে বসানো। কিন্তু যেটা কেউ দেখতে পেল না সেটা হচ্ছে যে এই মেয়ে মণির থেকেও বেশি
মাছি-ভ্যান্ভ্যান্।
মণি টের পেয়েছিল অবশ্য। ক্লাস ওয়ানের মেয়েকে সন্ধ্যেবেলা অফিস থেকে ফিরে
লোডশেডিং-এ হাতপাখা নেড়ে নেড়ে “আই গো, ইউ গো”র উত্তরে লক্ষবার শেখানোর পরেও মেয়ে “হি
গো” বলত। সেই না শুনে মণি হাতপাখা ছুঁড়ে ফেলে মাথা চাপড়ে বলত, “হে ভগবান, এ মেয়ে
নির্ঘাত সারাজীবন “হি গো” বলবে আর কোত্থাও চাকরি না পেয়ে অনাহারে মরবে।” তখন মণির
মাছি-ভ্যান্ভ্যান্ মেয়ে মায়ের দুঃখে ডবল দুঃখ পেয়ে ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলে বলত, “মা,
কাল থেকে আর হবে না, দেখো। কাল আমি মনে করে হি গোজ বলব, সত্যি বলছি।”
এখন মাকে সে কথা মনে করালে মা লজ্জা পান কিন্তু স্বীকার করতে চান না। বলেন, “মায়েদের
ওরকম অকারণ ভয় লাগে, নিজে মা হলে বুঝবি।”
সে বুঝি আর না বুঝি, একটা জিনিস খুব বুঝেছি যে মাছি-ভ্যান্ভ্যান্ মণি ছাড়া
আর কেউ আমার মা হলে আমি আর বাঁচতাম না। মণির জায়গায় অন্য কোনও স্মার্ট, দুনিয়াদার
মায়ের কথা অনেকবার ভাবার চেষ্টা করেছি আর ভেবেভেবে শিউরে উঠেছি। তাঁরাও নিশ্চয়
ভীষণ ভালো মা। তাঁরা হয়তো জীবনের সব যুদ্ধে জিতে আসেন, আর সন্তানের হাতে জয়ের
চাবিকাঠি উত্তরাধিকারসূত্রে তুলে দেন। এদিকে আমি আর আমার মা, গরমের রাতে
খাওয়াদাওয়ার পরে অনেক তোড়জোড় করে বিছানাবালিশ ঘাড়ে করে ছাদে শুতে গিয়ে মশার কামড়
খেয়ে মাদুর গুটিয়ে পালিয়ে আসি।
তবু সামনের সাতজন্ম যেন তোমার সঙ্গেই ছাদে যেতে পারি মা। আগাম হ্যাপি মাদার্স
ডে।
হাসি থামাইতে পারতাসি না । কিন্তু গলাটা একটু ব্যথা করে উঠল। উজাড় করা ভালবাসা আর শুভেচ্ছা নাও কুন্তলা, এমন লেখার জন্য ।
ReplyDeleteমিঠু
নিলাম নিলাম মিঠু। তুমিও আমার অনেক ভালোবাসা আর ধন্যবাদ নিয়ো।
DeletePoRte poRte bhablam eta maa ke poRe shonabo. kintu bhyan kore kNede fyalar chance ache!
ReplyDeletekhub sundor likhecho :)
আরে থ্যাংক ইউ সুমনা।
Deleteআমার সাতজন্মে কেউ কখনো আমায় বলেনি, যে আমি কোন ব্যাপারে রেগুলার। কলেজ থেকে শুরু এই ‘গরু খোঁজা’ বছরগুলো অবধি আমি সমান অনিয়মিত। কেবল কয়েকটা ব্যতিক্রম ছাড়া... এদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সী অভ্যেস হল অবান্তর, তাই এখানে ভাল লেখা পড়লে মন্তব্য না করে পারা যায় না- অতএব মন্তব্য লিখতে বসলাম, আর বসে মনে হল- মায়ের সঙ্গে মেয়ের এই সম্পর্কটা নিয়ে আমার সিলেবাসে কিচ্ছু কমন নেই... আগেও সেটা বুঝেছি, কিন্তু পরীক্ষা নিয়ে গপ্পোটা পড়ে একটু অন্য মেজাজের একটা গল্প বলতে খুব ইচ্ছে হল।
ReplyDeleteআমার মায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অত্যাচারী আর অত্যাচারিতের...
ভয় পাবেন না, চাইল্ডহুড ট্রমা নিয়ে প্যাচাল পাড়তে বসিনি, এই ব্যাপারে ঘনঘন আমাদের রোল রিভার্সাল হত। কখনো আমি শ্যাডো ফাইট করতে গিয়ে খাট ভাঙলাম, কখনো তিনি দক্ষ শিকারীর মতো ধাওয়া করে আমায় পেড়ে ফেললেন- এই রকম।
গল্পটা বহুবার অনেককে বলেছি (কে জানে, এখানেও বলে ফেলেছি বোধহয়)-আমিও তখন পিচ্চি, বাংলা পরীক্ষা পরের দিন, আমাকে দিয়ে প্রবল চেষ্টায় একবার বিদ্যাসাগর নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ লেখাতে পেরে মা একইসাথে ধন্য এবং গলদ্ঘর্ম।
পরদিন পরীক্ষার পর বাড়ি ফিরে প্রথম প্রশ্ন- রচনা কি এসেছিল? উত্তর- বিদ্যাসাগর আর একটি সকালের গল্প। -কোনটা লিখলি? – সকালের গল্প – কেন!! কাল রাতে যে বিদ্যাসাগর লিখে গিয়েছিলি!! – কাল রাতেই তো লিখলাম, আবার কেন লিখবো?
এবার বিচার করুন, কে কার ওপর অত্যাচার করলো... :)
সর্বনাশ করেছে। বেচারা মা।
Deleteখুব মজার গল্প সুনন্দ। শোনানোর জন্য থ্যাংক ইউ।
khub shundor hoyechey post ta. tobe gatobochar er mother's day post (of strada, gaan, brishti and maa fame) ta amar kache abantorer all time fave post :)
ReplyDeleteতাই নাকি? গুড গুড শম্পা।
Deleteসেটা তো মনে হচ্ছে উপরে উল্ল্লেখ করা পুরোনো পোস্ট দুটোর মধ্যে নেই। কোন পোস্টটা একটু বলবেন প্লিজ?
Deleteএটা মনে হচ্ছে ১৪ মে ২০১২ এর পোস্টটা । আমারো খুব প্রিয় এটা
Deleteমিঠু
ei link ta K'r hoye aami pathalam (acting as interim caretaker while K is byastow with nizer biya)
Deletehttp://abantor-prolaap.blogspot.com/2012/05/blog-post_13.html
গোগ্রাসে পড়ে ফেললাম। সত্যিই দারুণ! আপনাদের ধন্যবাদ।
Deleteবাঃ, আমার অনুপস্থিতিতেও অবান্তর দারুণ চলছে দেখছি। ইনটেরিম কেয়ারটেকারকে আমার সশ্রদ্ধ থ্যাংক ইউ।
DeleteSotti khub bhalo lekha eta...amar moto opekhhakrito notun pathoker jonno eta barti paona...jhorer bornona ta darun...
DeletePost ta amio pore elam, Shampa ke onek dhonyabad. sottii ki darun lekha. mon bhalo hoe galo.
Deletebangal bhasa-r songlap gulo pore chotobelar baba,jetha,mejo pishi,boro pishi..eder kothopokothon chobigulo flash back er moto abcha abcha bheshe uthchilo...r kao sai bangal bhasha e kotha bole na...karon tara r kao nai..mejopishir ek gal pan chibote chibote gotgot kore behala theke eka eka chole asa...boro pishir loadsheding er rat e hariken jalia hat pakha narte narte golpo sonano...sob mone pore sob..
ReplyDeleter maa-era chele meye poribar er jonno ja kore ta amra konodin e sodh dite parbo na..kono rokom bhabe e ta somotulyo hobe na..karor karor khetre kichu pichutan toiri hoy, ebong ta khub joralo hoye othe...amar kotha bolte pari...ami jani, ami amar maa k hoyto khub beshi bochor r pabo na..maa o seta jane...tai hoyto hajar onsite ghorar hatchani,dollar kamanor ichha upekhha kore o ami maa k chere jaina..maa o jane hajar mukhjhamta,jhogra,baje kotha bolle o amar chotocheleta amay chere chole jabe na...porer din sokale pa-e hat dia office berobe thik..
uff!chokh jhapsa hoye gelo apnar post pore r comment likhe..
likhe jan...abar bolchi...apnar hobe.. :)
সৌমেশ (দা) কুন্তলাদির 'হবে' না ... হয়ে গেছে। এগুলো লেখা নয়, চালচিত্র।।
Deleteসৌমেশ, মায়েরা যদি সন্তানের খারাপ ব্যবহার সব মনে করে রাখতেন তাহলে আর দেখতে হত না। আমিই কি মাকে কম জ্বালিয়েছি? একটা কথা ঠিক করে শুনিনি, তবু মা আবার গোড়া থেকে সব বোঝাতে বসেছেন। আপনার মা আরও অনেকদিন আপনার কাছে, সুস্থদেহে থাকুন, এই কামনা করি।
Deletelekhata khub bhalo ,kakima ki porechen?
ReplyDeleteউঁহু।
Deleteদি তুমি ধন্য। বিয়ের বাজারেও তোমার ফর্মে কোনো ঘাটতি নেই। লেখাটা এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম, তারপর চুপচাপ একটু বসে থাকলাম। ভাবলাম মা-কে একটা ফোন করি, কিন্তু ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সে ইচ্ছা হতে নিজেকে বিরত করলাম। তোমার লেখার এমনই গুন। অসংখ্য মানুষ লেখাগুলোর সাথে নিজেদের মিশিয়ে ফেলতে পারে। নানা কারনে মন খুব খারাপ, তোমার এই লেখাটা ভগবানের আশীর্বাদ। মনটা খুব ভালো হয়ে গেল বলব না, কিন্তু অদ্ভুত শান্ত হলো এ কথা বলতে পারি। এভাবেই লিখে যাও দি, এভাবেই লিখে যাও।
ReplyDeleteএকটা অনুমতি চাই। এই লেখাটা আমি যত বেশি সম্ভব মানুষের কাছে পৌছে দিতে চাই। আমার ফেসবুক প্রোফাইলে এটা পোস্ট করার অনুমতি চাইছি।
আরে থ্যাংক ইউ আবির। গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টদের মন ভালো রাখাই শক্ত ব্যাপার। তবে তোমার মন ভালো শিগগিরি ভালো হয়ে যাক এই কামনা করি। আর ফেসবুকে পোস্ট করার অনুমতি দিলাম, গ্ল্যাডলি।
Deleteএই তো ধরা পড়ে গেলাম -- 'গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টদের মন ভালো রাখাই শক্ত ব্যাপার।' -- হক কথা। জোরজার করে মন ভালো করছি আরকি!!
Deleteছোটবেলায় কোনো একটা অজানা কারণে আমি পণ করেছিলাম আর যাই করিনা কেনো স্কুলে কোনোদিন পড়বো না। অনেক স্কুলের ফর্ম ওই বয়সেই লুকিয়ে২ ছিঁড়ে দিয়েছিলাম (তার ফল অবশ্যই সুখের হয়নি)। শেষে পাড়ার একটা স্কুলে আমাকে ঠেলে ঠুলে ভর্তি করানো হয়। তারপর প্রায় মাস ছয়েক রোজ সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে পরিত্রাহি চিৎকার করে কাঁদতাম- যেদিন২ বাবা স্কুলে নিয়ে যেতেন আমি আবার বাবার হাত ধরেই বাড়ি ফিরে আসতাম। মা বেজায় বিরক্ত হয়ে বাবাকে এই হোম-ওয়ার্ক থেকে চিরতরে ছুটি দেন। তারপর রোজ সকালে যা চলতো তা গোটা পাড়া আজ-ও মনে রেখেছে। মা আমাকে এক কাঁধে তুলে নিয়ে হন হন করে হাঁটছেন আর আমি বাবা গো কোথায় গেলে বাঁচাও বলে চেল্লাছি। মাঝে মধ্যেই পিঠে দু-চার ঘা খাচ্ছি- শূন্যে দু’পা তুলে দিয়ে লাফাচ্ছি আর কোল থেকে নামার চেষ্টা করছি। প্রায় পাঁচ-ছ’মাসের লড়াইয়ের পর আমি ‘ভদ্র’ ভাবে স্কুলে যাওয়া শুরু করি। মা না থাকলে এ জম্মে আমার আর স্কুলে পড়া হত বলে মনে হয় না...
ReplyDeleteহাহাহা, দৃশ্যটা চমৎকার কিন্তু। সংহিতা, চেঁচাতে চেঁচাতে মায়ের কাঁধে চেপে ইস্কুলে চলেছে। মা না থাকলে আমাদের বেশিরভাগেরই অনেক কিছু হত না, ঠিকই বলেছ। খুব ভালো লাগল তোমার অভিজ্ঞতার কথা জানতে পেরে।
Deleteবড্ড ভাল লেখা। কাকিমাকে নিয়ে লেখাগুলো পড়লেই আমার নিজের মা'র কথা মনে হয়। আমার মায়ের পরিবারও নিখাদ ঢাকাই বাঙাল যাকে বলে। আর মা এগারো ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট, তাই লেখাটা পড়ে সবকিছুই খুব চেনা চেনা ঠেকছিল।
ReplyDeleteহায়েস্ট ফাইভ পিয়াস। ঢাকাই বাঙাল, এগারো ভাই বোন (যদিও দুজন শিশুবয়সে চলে যাওয়ায় শেষমেষ গুনতিটা নয় দাঁড়িয়েছিল), মা সর্বকনিষ্ঠ না হলেও লাস্ট বাট ওয়ান। জাস্ট আনক্যানি, তাই না?
Deleteআরিব্বাস! লালমোহন বাবুর ভাষায় বলতে গেলে হাইলি সাসপিশাস।
DeleteAmar khub maar katha mone porchhe :(
ReplyDeleteTumi ekdin amader desher naam roshon korbe, likhe rakho.
সর্বনাশ করেছে মনস্বিতা। দেশের নাম রোশন করার দরকার নেই, তোমাদের মন ভরাতে পারলেই আমি বর্তে যাব। সত্যি বলছি।
Deleteমায়ের জন্য মন খারাপ করে না। যত দূরেই থাক না কেন, মা তো মনের মধ্যেই আছেন।
Likhte thako Kuntala ar amra porte thaki. Ma , ma-i , bhalo , kharap somosto somoi er porei jodi karor mukh prothom mone pore seta Ma - er . :-)
ReplyDeleteএকদম ইচ্ছাডানা। ওই জায়গাটা একেবারে স্পেশাল।
Deleteকুন্তলা, লেখাটা পড়ে আমার দুনিয়ার সব মায়েদের জন্য কষ্টে বুক ভরে গেল। আমার মা-ও যে এই রকমই। আবার সেই ময়মনসিংহের মেয়ে, থাকত ঢাকায়। আমার মা মেজমেয়ে, তাই বড় দাদাদিদিদের ফরমাস খাটার দায়িত্ব তারই। চুপ্চাপ অভিযোগহীন,সর্বদাই ভয়ে ভয়ে থাকে। মেয়েবেলায় দোর্দন্ডপ্রতাপ বাবার ভয়, কালো রোগা চেহারার জন্য বিদেশ প্রত্যাগত হম্বিতম্বিওয়ালা আত্মীয়দের সামনে বেরোবার ভয়, বিবাহিত জীবনে শ্বশুরের, ননদদের ভয়, আরো কত ভয়ের ছাপ মার মুখে দেখতে দেখতে আমি বড় হলাম,তা বলার নয়।আমি যখন বিএ পড়তাম,আমার এক বন্ধুর শিক্ষিত মার গর্বিত ধাক্কা সহ্য করতে মা বলত, আহা, উনি কত লেখা পড়া জানেন। আগেও বলেছি, আজও মাকে বলতে চাই,ভাগ্যিস্ তুমি কম শিক্ষিত তাই আমরা মুক্তমনে বড় হতে পেরেছি। আমার এই ভীতু বোকা মাকে আমি বার বার ফিরে পেতে চাই।
ReplyDeleteআরে, এই তো আরেকজন ঢাকা ময়মনসিংহ বেরিয়ে পড়েছে। কী মিল দেখেছ মালবিকা। মায়ের আবার শিক্ষিত অশিক্ষিত কী? মা ইজ মা। ব্যস।
Deleteএই প্রথম বার পরছি অবান্তর .......খুব ভালো লাগলো ...সত্যি খুব ভালো ...
ReplyDeleteআরে স্বাগত রাকেশ। অবান্তর ভালো লেগেছে জেনে খুশি। আশা করি এই ভালোলাগা দীর্ঘজীবী হবে।
Deleteশ্রীচরণেষু মাগো,
ReplyDeleteপ্রত্যেক দিন ঘুমোই যখন ... স্বপ্নে এসে জাগো।
বকুনি দাও,‘আজকেও তুই ছোটবেলার মত
দুধ না খেয়ে অফিস গেছিস। এটা কি সঙ্গত?
একটুখানি চোখের আড়াল হলেই অবহেলা,
সেই অভ্যেস থেকেই গেল। জীবন বুঝি খেলা?’
স্বপ্নে বসেই আমি তোমায় বোঝাই বারে বারে
‘বাড়ছে বয়স ... ছেলে কি আর তেমন খেতে পারে?
রক্তে এখন মারছে ঝিলিক কোলেস্টেরল ... চিনি
হৃৎপিণ্ডেও ব্লাডপ্রেশারের কঙ্কন কিঙ্কিনি।'
একটুও না ঘাবড়ে সটান অন্য পয়েন্ট ধরো।
‘আজ সারাদিন কী করলি তুই? অঙ্কে সড়োগড়ো
তেমন তো নোস। খাতায় আজও নোংরা কাটাকুটি
করলি না কি? এত খাটায়? একটুও নেই ছুটি?’
কোনওক্রমে আমি জানাই, ‘ অঙ্কে দশে দশ
পাইনি বটে। কিন্তু এখন আমিই অফিস বস!’
সব শুনেও উৎকণ্ঠায় কুঁচকে রাখো ভুরু।
সব বকুনি আবার কর প্রথম থেকে শুরু।
একই রকম থাকলে মাগো, আগের মতই ভীত...
স্বপ্নে এসেও আমার জন্য সতত চিন্তিত।
তোমার চোখে তোমার ছেলে সব ব্যাপারেই কাঁচা
তুমিই কিন্তু শিখিয়েছিলে জীবন মানে বাঁচা।
জীবন মানে ঘাম ঝরানো তীব্র জেদে লড়াই ...
প্রত্যেক দিন আশায় ভরা উৎরাই আর চড়াই।
ভাবতাম সব বাতিক তোমার। এমনি আমি বোকা!
আজ বুঝেছি।
প্রণাম নিও।
ইতি
তোমার খোকা।
কী ভালো লিখেছেন অরুণাচলবাবু। মন ভরে গেল। মায়েরা সব ঠিক কাঁটায় কাঁটায় এইরকমই হন। যত বুড়োই হই না কেন, দুশ্চিন্তা আর ফুরোয়ই না।
Deleteআমার মাকে পড়াব আপনার কবিতাটা। থ্যাংক ইউ।
ব্যস্ , এই পোস্টের পাতাটা এবার বাঁধানোর মত হয়ে গেল- জম্পেশ লেখার সঙ্গে কাকুর একটা নিখুঁত কবিতা... খুব হিংসে হচ্ছে
Deletetomar mayer songe amar mayer o oshombhob mil, sudhu dhaka ta chhara... 8 bhai-boner last but 1... sejdi is acting-guardian... kothin shashonrota didira...opaar bangla theke sob khuiye ashar jontrona chhilo na tobe chhilo chhottobelay babake haranor oshohoyota...ek i rokom banchar lorai.. nijera darao, choto guloke tene tolo, shokto matir opor daar korao..chhotomashi tobu dan-pite, kan-mola khele protibad korte jane, ma borabor mukh-chora, onek mil go...khub sundor likehchho tumi..
ReplyDeleteei name-days guloke loke jotoi adikhyeta ar card-company r shorojontro boluk amar kintu besh lage. ma bodhhoy amader jiboner sobcheye taken-for-granted manush. ekdin jodi ektu spl. bhabe thanks bola jay to mondo ki? porikolpito mother's day palon korte na chaile, nijei kono din thik kore ek i kaj kora jay, ekadhikdin kora jay...tai na... they deserve this very much & more..
arunachalbabu r kobita tao ki bhalo..ma ke porabo
হ্যাঁ সোহিনী, সে ভাবতে গেলে তো সবই আদিখ্যেতা আর কার্ড কোম্পানির ষড়যন্ত্র। আমার হ্যাপি বাড্ডের বেলায় আমার সে কথা মনে থাকবে না, আর আমার মাকে একটু আদর দেখাতে গেলেই সিনিসিজম মাথাচাড়া দেবে, এটা আবার আমার ঠিক মনে ধরে না। তাই মাদার্স ডে, ভ্যালেন্টাইনস ডে, সবই আমার চলে।
Deleteকী মিল গো আমাদের মায়দের। খুব মজা লাগল জেনে। কবিতাটা কী ভালো না? নিশ্চয় করে কাকিমাকে পড়িয়ো।
Prothom dik ta pore muchki haslam ar akdom last line ta pore sotti sotti chokhe jol chole elo.....amar mar khub sorir kharap...jor hoyeche...akhon office e achi akchutte mayer kache chole jete ichche korche......
ReplyDeleteএ মা ছি ছি কুহেলি, এই কমেন্টটা আগে কেন দেখিনি? সরি সরি। কাকিমা নিশ্চয় সুস্থ হয়ে উঠেছেন?
Deletemukhe hasi kintu chokh diye je jol chole elo....
ReplyDeletejano amar mayerao noy bhai bon...maa chotomasir age mane sesher age sudhu mayeder bari chilo Dhaka bikrompur...amar ja kichu sekha sob amar mayer jonnyo..Maake konodin bolte parini ektu baba gyesha bole sobai jane amake..kintu ekhon bujhi maa na thakle onek kichui hotona..
ReplyDeleteওরে বাবা তোমার কাকিমারাও ন'ভাই বোন, আর কাকিমাও লাস্ট বাট ওয়ান? এ তো কাকতালীয়র ঠাকুরদাদা দেখছি। ময়মনসিংহটা ভাগ্যিস মেলেনি, তাহলে আমি অজ্ঞান হয়ে যেতাম। সে তোমাকে আর মুখ ফুটে না বললেও চলবে সুমনা। মা'রা অলরেডি জানেন তাঁরা না থাকলে আমাদের কী হাঁড়ির হাল হত।
Deletedidibhai purano post e coment korchi..aar comment ta pore khoche jeo na..meye ra roop er ninda shunte pachando kore na kina..tai....kakima ke kintu tomar chaite dher bhalo dekhte
ReplyDelete