ব্লগিং-এর ভেতরের কথা
বাকি সবরকম পেশার
মানুষদের মতো ব্লগারদেরও নানারকম তুকতাক থাকে। মঙ্গলবারে পোস্ট করলে পেজভিউস বেশি
হয়, ডানদিকে তাকিয়ে তোলা ছবির পোস্টে বাঁদিকে তাকিয়ে তোলা ছবির পোস্টের থেকে বেশি
কমেন্ট পড়ে, সোমবার সোমবার মাংস খাওয়া বাদ দিলে বছর পাঁচেকের মধ্যে বুক ডিল ঠেকায়
কার সাধ্যি, এই রকম সব গোঁড়া বিশ্বাস আছে ব্লগারদের। তাঁরা নিজেরা অবশ্য এগুলোকে
তুকতাক বলে মানেন না। অনেকদিনের অভিজ্ঞতায় তাঁরা বারবার মিলিয়ে নিয়েছেন, এগুলো
সত্যি সত্যি কাজে দেয়। আমি যদিও পেশাদার ব্লগার নই, নিতান্তই নেশাখোর ব্লগার, তবু
এই আড়াই বছরে আমিও কয়েকটা জিনিস লক্ষ্য করেছি। যেগুলোকে তুকতাক না বলে পর্যবেক্ষণ
বলাই ভালো। তার একটা দুটো আপনাদের বলি দাঁড়ান।
এক, লোকে শনিরবিবারে
ব্লগ পড়েনা। এটা অ্যাকচুয়ালি উল্টো হওয়া উচিত, তাই না? সপ্তাহের বাকি পাঁচদিন নাক
ডুবিয়ে কাজ করে শনিরবি ফ্যানের তলায় আরাম করে হাত পা ছড়িয়ে বসে কে কার ব্লগে নতুন কী
বোকামো করেছে ঘুরে ঘুরে সেসব দেখে বেড়ানো উচিত। কিন্তু সেটা হয়না। আমি পেজভিউসের
গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করে দেখেছি, লোকে অফিসে গিয়েই ব্লগ পড়তে বসে। কাজ শুরু করার
আগে ওয়ার্ম আপ করে বোধহয়। ব্লগ দেখার আরেকটা ঝোঁক আসে ঠিক টিফিনটাইমের পর। ভালো
মন্দ খেয়ে যখন সামান্য ঢুলুনিমতো আসে, তখন সবাই ঘুম তাড়াতে ব্লগ-হপিং-এ বেরোয়। কেউ
কেউ অফিস থেকে বেরোনোর সময় আরেকবার উঁকি মেরে যান, তবে তাঁদের সংখ্যাটা অল্প। বেশিরভাগই
তখন অফিস থেকে পালাতে পারার আনন্দে মাতোয়ারা। তখন আর ব্লগ পড়ে বোরডম কাটানোর দরকার
নেই তাঁদের। আসন্ন ছুটির মুহূর্তটাই শরীরে নতুন এনার্জি এনে দিয়েছে।
দু’নম্বর পর্যবেক্ষণটা
পড়ুয়াদের নিয়ে নয়। নিজেকে নিয়ে। আরও স্পষ্ট করে বললে অবান্তরের জন্য আমার সোমবারের
পোস্ট লেখা নিয়ে। শুক্রবার যখন সাপ্তাহিকী পাবলিশ করে অবান্তরের ঝাঁপ ফেলি তখন
সামনের সপ্তাহের পোস্টের আইডিয়া মাথার ভেতরে ঝাঁকঝাঁক বোলতার মতো ভনভন করে ঘুরে
বেড়ায়। ভয়ানক সিরিয়াস মুখ করে আমি গুচ্ছ গুচ্ছ ড্রাফ্ট পোস্টে সেসব আইডিয়া
লিপিবদ্ধও করে রাখি। কিন্তু রবিবার রাতে সে ড্রাফ্টগুলো নিয়ে বসলে, সেগুলো বাংলায়
লেখা না হায়রোগ্লিফিকে--- নিজেই উদ্ধার করতে পারিনা।
এই যেমন ধরুন একটা
ড্রাফ্টে লেখা আছে দেখছি “কী হতে হতে হল না”। বুঝুন। কত কিছুই তো হতে হতে হল না।
কী কী হলনা, কী কী হওয়ার কথা ছিল সেসব সত্যি বলছি আমার মনেও নেই। ভাগ্যিস। যা
হয়েছে বেস্ট হয়েছে। কেন আমি সুস্থ মস্তিষ্কে হওয়া-না হওয়ার কাদা আবার ঘাঁটতে
যাওয়ার প্ল্যান করেছিলাম পরশু রাত্তিরে, এখন তা কিছুতেই মনে পড়ছে না। আরেকটা
ড্রাফটে দেখছি লেখা আছে, “Stigma of
being the only child”---বোঝাই যাচ্ছে একসময় এটাকে পোস্ট লেখার জন্য ভালো আইডিয়া বলে মনে হয়েছিল কিন্তু
এখন ওই এক লাইন পড়েই নিজেই ঘুমিয়ে পড়ছি। শিগগিরি ডিলিট মারি দাঁড়ান।
অতএব বুঝতে পারছেন,
সোমবার সকালের জন্য আমার হাতে এখন সেই প্রবাদপ্রতিম পেনসিল ছাড়া আর কিচ্ছু নেই।
কোন সপ্তাহেই থাকে না। সপ্তাহটা কোনমতে ঠেলেঠুলে শুরু হয়, আপনাদের সাথে দু’চারটে
বাক্যবিনিময় হয়, তারপর গিয়ে আমার ব্লগিং-এর জোশ ফেরত আসে। বাজে কথার স্রোত
ফুরফুরিয়ে মগজ থেকে আঙুল বেয়ে ওয়ার্ড ফাইলে টাইপ হতে থাকে। তখন আবার তাদের থামায়
কার সাধ্যি। কী বলতে কী বলে ফেলি সেই নিয়ে সর্বক্ষণ তটস্থ থাকতে হয়।
“অথেনটিক ব্লগিং”-এর
মুখ চেয়ে আমি তাই আমার কথার অভাব নিয়েই এতগুলো কথা বললাম আপনাদের। হতাশ হবেন না
যেন। সোমের ফাঁড়া কেটে মঙ্গলে পা পড়লেই ব্লগিং-দেবী আবার প্রসন্ন হাসি হেসে আমার
পানে চাইবেন। আমি অন্তত সেই আশাতেই আছি। আপনারাও আমার সাথে থাকুন প্লিজ।
ছবি গুগল ইমেজেস থেকে
tomar blog porata amar kache nesha.drug er thekeo voyanok.......kano tumi amak neshar pothe thele dile?
ReplyDeleteওহ এটা ভালো অভ্যেস কুহেলি। যোগব্যায়ামের অভ্যেস হলে যেমন হয় প্রায় সেরকমই ভালো।
Deleteআপনি তো সাংঘাতিক পরিশ্রম করেন দেখছি... ভয়ানক শ্রদ্ধা হচ্ছে আমার! আমি এতটাই কুঁড়ে যে ল্যাপটপ বাগিয়ে ইন্টারনেট কানেক্ট করে একাউন্টে লগ ইন করার আগে পর্যন্ত এক লাইনও মাথায় আসে না... পাছে মাথার কাজ বেশি হয়ে যায়! ড্রাফট তো অনেক দূরের গপ্প...
ReplyDeleteএই সেরেছে অমিত, আমি কিচ্ছু পরিশ্রম করিনা। ওই এক লাইন টাইপ করে রাখি আরকি। সেটাকে ড্রাফ্ট বললে বেশ গালভরা শোনায় তাই বললাম।
DeleteHahaha! Darun observation...!! Amio majhe majhe draft likhe rakhi...kokhono seguloke edit kore post kori, abar kokhono mone hoy "dhyat! ki sob bhaat bokchi" bole delete kore dii.
ReplyDeleteShonibar amio blog porina/likhina. Osob amar weekdays er activities er modhyei thake.
Last week berate gechilam bole tomar onekgulo post e comment due roye geche, eke eke bhori segulo :)
ওহ কাকিমাকে নিয়ে ঘুরে এলে বুঝি? কোথায় গিয়েছিলে গো রিয়া?
Deleteএই তো আরেকজন ড্রাফ্ট লিখিয়ে পাওয়া গেছে। গুড।
এটা সত্যিই অবান্তর পরিশ্রম। মাইরি। লিখে মজা পা, আনন্দ দে (প্রথমটার ওপর দ্বিতীয়টা নির্ভরশীল), চাপ নিচ্ছিস্ কেন? :O
ReplyDeleteকী করব, চাপ নেওয়া অভ্যেস হয়ে গেছে যে।
Deleteami shoni robi bar tomar blog sab theke beshi pori...karon ofic theke fire amake ranna korte hoy.. r ofic theke ami banglay blog porte pari na :( vnaaa :( ...
ReplyDeleteami in fact bhabchhilam o tomake bolbo j abantor ingrijite porte hole section e tumi aro beshi beshi post koro :|
r shoni robi bar .. dupur belay sotti kar er fan er tolay pa chhoriye buke balish niye ami tomar blog pori...tobe motei recent ones noy...
bhison bhison purono blog gulo... ektuo purono mone hoy na ogulo..
এমা, তুমি বাংলাটা পড়তে পারো না রু? ইস আমি তো ইংরিজিটায় অসম্ভব ফাঁকি মারি। এবার থেকে ঠিকঠিক আপডেট করব প্রমিস।
Deleteএই সেরেছে রু, রিসেন্ট গুলো ভালো লাগে না?
recent gulo bhalo na to bolini :P
Deleteager gulo dher dher bhalo... sei tomader parar function, r ek kakima'r har churi..
mama barir goli hariye jaoa, aro koto ki... just durdhorsho!!
onekta Post-mela type :D
ekhn mone hochhe amr boyesh barche.. tai chhoto belar golpo gulo aro beshi kore bhalo lagche..
amar blog porar pattern ta ei post er description er sange akshare akshare miley jachhe. aamar koyekta blog addiction achey (like AP) tai kaajer phanke phanke dekhte thaki pache K abar kichu likhe phello aar amar pora holo na!
ReplyDeletetumi bapu porishram kore jao.....topic bar koro, bhabo, aar lekho...pathak tow achei, tomar effort britha jabe na...tachara ektu adtu porishram na korle, effort na diley bhalo jinis beroy na.
kono effort debo na, shudhu "enjoy" korbo, atocho kolom er doga theke moni-manickya berobe, ota ektu "new agey" style.
হাহা শম্পা, ওই new agey জিনিসপত্তর দেখলে আমারও গাপিত্তি জ্বলে যায়। নিজেরা সেলফ হেল্প বই লিখে লিখে মিলিওনেয়ার হয়ে গেল এদিকে সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে do less। ধড়িবাজি আর কাকে বলে।
Deleteহ্যাঁ আমার আবার না ঘষটালে কিসু বেরোয় না। কোনদিনই না। ছোটবেলা থেকে কত লোক দেখলাম, কিচ্ছু না পড়ে নম্বর পেয়ে যাচ্ছে, গান না শিখেই প্লেব্যাক করে ফেলছে--সবটাই নাকি লাক আর হেরিডিটি। আমি তাঁদের দূর থেকে হিংসে করি। কিন্তু ঘাম ঝরানো এড়াতে গেলে আমার কিছুই হবে না। মানে ঝরিয়েও যে হবে তার মানে নেই, কিন্তু ওই আরকি।
amar blog-eo erakom asonkhyo ek line-er draft achhe, jegulo konodin puro lekha hoye berobe na! Sab lekhar jonnoi ekta bramho muhurto thake jakhon likhte bosle se lekha sesh na hoa obdi monta engine-er mato cholte thake! Anno somoi-e oi draft traft kore rakha ta keboli nijeke santona deoa!
ReplyDeleteTobe kono bishoi chhara tumi jemon lekha ta namie dile tate tomake peshadar upadhite bhushito korai jai!
আরেকজন ড্রাফ্ট লিখিয়ে! বাঃ বাঃ দিল খুশ হয়ে গেল। "লেখার ব্রাহ্ম মুহূর্ত" কথাটা দুরন্ত বলেছ রুচিরা। টুকে রাখলাম।
Deleteতোমার ব্লগের লিঙ্কটা দেবে রুচিরা? মানে যদি আপত্তি না থাকে?
mail check koro! pathie diechhi!
ReplyDeleteপেয়েছি। থ্যাঙ্ক ইউ।
Deletetomar observation to durdanto. ami sotti e office e dhuke e tomar blog e hana di.. emon ki lunch er age pore bepar tao mile gechhe.. :)
ReplyDeleteমিলেছে? যাক শান্তি।
Deletearre... hubahu milechhe amar blog porar style.. wknd e sudhu tomar blog pora keno, internet sirf korai onek somoy hoe othe na.. ota ofc eri time pass.. majhe majhe time pelei khule pori, abar refresh mere dekhi comment er uttor elo kina..
ReplyDeletetumi chaliye jao.. draft likhe, na-likhe, ja khushi... end product ta pelei amader cholbe.
গুড গুড সোহিনী। হ্যাঁ আমি অত সহজে দমছি না, তোমরা যখন ভরসা দিচ্ছই।
Deleteআপনার বর্ণনার খুরে খুরে পেন্নাম - আমি ঠিক ঐভাবেই ব্লগ পড়ি| শুধু কমেন্ট করতে দেরী হলো কারণ... গরমের ছুটি চলছে তো, সোমবারটাকেও উইকেন্ডে শামিল করে ফেলেছিলাম!
ReplyDeleteবেশ করেছিলেন। আবার করবেন।
DeleteKuntala, tomar khure khure pronam...tomar ei blogspot er proti dedication dekhle Larry Page o dhonyo hoben. Ar tomar organization skill dekhe ami bhirmi khachi. Ami kina post lekhar shomoy majhe majhei andaaj e measurment chari(bolo na kauke) ar sedin jokhon ekjon amake dhoreche je amar 2lb chicken na likhe kota drumstick ba thigh pieces lekha uchit chilo amake bolte baddho hote holo, chicken ta to ami kini ni, ota D er department.
ReplyDeleteAmi weekend e blog dekhi na, unless ki recipe khujte
ব্যথার জায়গায় পা দিয়ে দিলেন বং মম। এখানে ডেডিকেশনের অন্ত নেই আমার মানছি, কিন্তু এটা যদি জীবনের অন্য জায়গাগুলোয় থাকত (সবাই যেগুলোকে কাজের জায়গা বলে)। কী আর করা যাবে। দীইইইইর্ঘশ্বাস।
Delete