Pros and Cons
আর সাত দিন বাদে কেউ ভোরবেলা চায়ের জল বসিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে আমাকে ঘুম থেকে ডাকবে না। আর সাত দিন বাদে কেউ
আমার বাড়িওয়ালার গলা হু-ব-হু নকল করে হাসিয়ে পেটে খিল ধরাবেনা। ধরিয়ে বাড়িভাড়া বাড়ার দুঃখ নিমেষে অর্ধেক করে দেবেনা।
আর সাত দিন বাদে সর্বশক্তি আর হাফ বোতল ব্লিচ দিয়ে ঘষলেও রান্নাঘরের কাউন্টার আর ক্যাবিনেটগুলো এত ঝকঝকে হবেনা, এই মুহূর্তে যেমন আছে। আর
সাত দিন বাদে কেউ ফ্রিজে পাঁচ রকমের শাক ঝেড়ে বেছে ধুয়ে থরে থরে সাজিয়ে
রাখবেনা। আর সাত দিন বাদে কেউ আমাকে তেতো থেকে চাটনি পর্যন্ত ফাইভ কোর্স মিল, ফ্রম
স্ক্র্যাচ রেঁধে খাওয়াবেনা। আর সাত দিন বাদে পথ ভুলে মাঝে মাঝে রান্নাঘরে ঢুকে পড়ে
বাটির ঢাকা তুললেই গুপ্তধনের মতো গরম গরম মাছের ডিমভাজা বেরিয়ে পড়বেনা। কিংবা ডালের জন্য ভেজে সরিয়ে রাখা মুগডাল। আর সাত দিন
বাদে শনিরবির দুপুরগুলোয় কার্বোহাইড্রেট কোমায় আচ্ছন্ন হয়ে সুখনিদ্রায় ডুবে মরা যাবেনা। আর সাত দিন বাদে আকাশে রুপোর থালার মতো চাঁদ উঠলে আমার পাশে
বসে কেউ এখনও কিশোরীর মতো মিষ্টি গলায় “চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে” গেয়ে উঠবেনা। আর
সাতদিন বাদে যত বৃষ্টিই নামুক না কেন সে বৃষ্টি আমার বুকের ভেতরটা এমন করে ভেজাতে পারবেনা কিছুতেই।
আর সাত দিন বাদে
আমাকে স্মোক অ্যালার্মের নিচে রবিবারের নিউজপেপার মুঠো পাকিয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না
যাতে ফোড়নের সাথে ডালের সংযোগ ঘটা মাত্র প্রবল বেগে সে পেপার নাড়িয়ে অ্যালার্মকে
শান্ত রাখার একটা চেষ্টা অন্তত করা যায়। আর সাত দিন বাদে শহরের রাস্তায় হাঁটতে
হাঁটতে উল্টোদিক থেকে ন্যাড়ামাথায় অর্ধেক বেগুনি আর অর্ধেক হলুদ রঙ করা কাউকে আসতে
দেখলে দাঁতের ফাঁক দিয়ে চাপা গলায় হুমকি দিতে হবে না, “উফফ ওভাবে হাঁ করে তাকিও না
বলছি। জঘন্য।” আর সাত দিন বাদে রোজ প্রায় বিয়েবাড়ির জামাকাপড় পরে অফিস যেতে
হবেনা। আর সাত দিন বাদে ফ্রিজের গা, আয়নার কাঁচ, ল্যাপটপের ঢাকনা, আরও নানারকম বিশ্বাস্য অবিশ্বাস্য জায়গায় সেঁটে রাখা খয়েরি টিপ আবিষ্কার করতে হবেনা। আর সাত দিন
বাদে আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে অবান্তর লিখতে হবেনা, কারণ দেখতে পেলে কেউ বলবেনা, "লিখতে হলে দুঃখের
গল্প লেখা প্র্যাকটিস কর সোনা, এসব চুটকি লিখে বালিতে দাগ টেনে লাভ কী?" আর সাত দিন
বাদে কেউ মিনিটে মিনিটে আগাথা ক্রিস্টি থেকে মুখ তুলে সদর্পে ঘোষণা করবেনা, "এইবার
এক্কেবারে বুঝে গেছি, নির্ঘাত এ-ই খুনী, ঠিক কিনা?" আর সাত দিন বাদে রোজ সকালে দুধ
চিঁড়ে গোছের কালাআদমি ব্রেকফাস্টের বদলে সাহেবদের মতো ব্ল্যাক কফি গিলে অফিস চলে যাওয়া যাবে।
আর সাতদিন পর থেকেই ফের দিন গোনা শুরু করা যাবে, মা কবে আসবেন। কী মজা হবে বলুন তো?
issh! tomar maa phire jachhen. ekhon ko din khub kharap lagbe. satyi maa'era ele ki moja y na hoy. aamr oi paanch rokom er saag bechey dhuye thore thore sajano ta porey, maa er gotobochar er trip ta mone pore gelo :)))
ReplyDeleteতোমরা আছ তো শম্পা, ভুলিয়ে রাখবে।
Deletekakima to ei elen, chhuti shesh? ki korben eto taratari ferot giye? ofc er pat to nei ekhon , tai na?
ReplyDeleteআরে সোহিনী, মা এখনি অধৈর্য হয়ে গেছে। বলছে বাড়ি নাকি ভণ্ডুল হয়ে গেছে এতদিনে। ঠাকুমাও বোরড হয়ে গেছে বোধহয় ওদিকে। ফোনে খালি জিজ্ঞাসা করে, "কবে আসবা?"
DeleteAmar ma aboshyo aseni e deshe kakhono, kintu Hyderabad e jakhon ami eka thaktam, takhon ma-baba ekbar gechhilo, kajei kichhuta andaj korte parchhi uni ele apnar lifestyle-e katota poribarton ghote taar. Jak, abar din gona shuru.
ReplyDeleteহ্যাঁ। একেবারে আকাশ আর পাতাল তফাৎ হয়ে যায় মা থাকা না থাকার দিনগুলোর মধ্যে।
Deleteish mon kharap kore dile kuntaladi...ake ami egaro maas barimukho hoini, bose bose din guni december aste ar koddin, tar opor erokom post!!!! valo hobe na kintu, kede debo bhya kore!
ReplyDeleteএই রে স্বাগতা, কাঁদে না কাঁদে না। আরে ধুর একা থাকার কত মজা বল দেখি। কত স্বাধীনতা, কত নির্ঝঞ্ঝাট। এটা একেবারে মন থেকে বলছি কিন্তু।
DeleteEesh amar maa-o ei robibar phire jachhen :( jodio Tomar list-er hobena gulor Sathe amar gulo melena kintu dukkho ta mele.
ReplyDeleteরুচিরা, মা চলে যাওয়ার দুঃখ সার্বজনীন।
DeleteMaa ke lekha ta pore shuniechhilam. Maa tomar maa-er sange kichhuta holeo ekmat. Blog mane balite daag kata! Dukkher galpo na likhleo cholbe abosso! Modda katha holo, emon jaigay lekhar cheshta karo jeta internet chharao pora sambhob. robibashoriyo anoandabazar ba desh hole sabcheye bhalo hoi. Emonki tumi sanonda-te likhle maa setao kine porte raji ei message ta tomake pouchhe dite bolechhen.
ReplyDeleteযাক, একজন পাঠিকা তাহলে প্রিন্ট মিডিয়ায় নিশ্চিত পাওয়া যাচ্ছে। কাকিমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Delete