চেনা ডাক্তার অচেনা ডাক্তার



ছেলেপুলেকে যদি কিছু বানাতেই হয়, তবে ডাক্তার বানানোই উচিত। বৃহত্তর সমাজের স্বার্থে, পাড়াপড়শির স্বার্থে, তাছাড়া লোককে ঢাক পিটিয়ে বলার স্বার্থটিও বেশ। কিন্তু এই কথাটা বললেই আমার ডাক্তার বন্ধুরা চটে চতুর্ভুজ হয়ে যান।

দাবি করেন ডাক্তার তাঁরা কেবল সেবার মুখ চেয়ে হয়েছেন, গাড়িবাড়িগ্ল্যামারপসার, একমানুষ উঁচুউঁচু অক্ষরে ‘সিপলা’ নয়তো ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’ লেখা বিনেপয়সার বালিশের ওয়াড়---এসব নাকি তাঁদের বিন্দুমাত্র মোটিভেট করতে পারেনি।

মেনে নেওয়া ছাড়া যেহেতু গতি নেই তাই মেনেই নিই। তাছাড়া পাগল না হলে কেউ চেনা ডাক্তারকে চটায় না। রাতেবিরেতে বিপদে পড়লে দেখবে কে?

সব বাড়িতেই এইরকম একজন করে ডাক্তারবাবু থাকেন। যেমন আমার ছোটমামা। নামের পাশে গালভরা স্কিন স্পেশালিস্ট লেখা থাকলে কী হবে, আমাদের বাড়ির মাথাধরা থেকে পেটের রোগ সবের দাওয়াই মামা দেন। আমাদের পাড়ায় এমনিতে ডাক্তারের অভাব নেই। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেদিকেই হাঁটো না কেন, পাঁচমিনিটের মধ্যে একটা না একটা ডিসপেনসারিতে পৌঁছে যাওয়া যায়, কিন্তু তাও আমরা মামাকে ফোন করি। মামা আমাদের কর্ডলেসের স্পিডডায়ালে বাঁধা হয়ে আছেন। সেই ছোট থেকে দেখে আসছি। ঠাকুমার মুখে কিছু রুচছে না? মায়ের কোমরে ব্যথা হয়েছে? সোনার কী যেন একটা কমপ্লিকেটেড অসুখ করেছে--- পড়ার বই খুলে বসলেই অকথ্য পেট কামড়াচ্ছে কিন্তু গল্পের বই পড়লে কিংবা টিভি দেখলে কিচ্ছু হচ্ছে না? মামাকে ফোন লাগাও।

এ তো গেল শুধু আমাদের বাড়ির কথা, এইবার এই একই চিত্র আমার জেঠিমা কাকিমাদের বাপের বাড়ি, আমার দুই মামা চার মাসি প্রত্যেকের বাড়ি, মামি এবং মেসোদের বাপের বাড়ির ক্ষেত্রেও কল্পনা করে নিন। তাহলে ব্যাপারটা খানিকটা আঁচ করতে পারবেন।

আমাদের সবার সবরকম রোগের চিকিৎসা করেও যে মামার হাতে অন্য রোগী দেখার সময় বা এনার্জি থাকে, সেইটাই একটা আশ্চর্যের ব্যাপার।

এছাড়াও বাঙালি সমাজে আরেকরকম ডাক্তার থাকেন যাঁদের আমাদের ফোন করতে হয় না। তাঁরা নিজেরাই যেচে ফোন করে আমাদের চিকিৎসা করেন। ঠাকুমার অরুচি হয়েছে, একটু গন্ধলেবুর পাতা কচলে ডালের জল খাইয়ে দেখেছ? মায়ের কোমরের ব্যথাটা বেড়েছে, পূর্ণিমাআমাবস্যায় ভাতরুটি ছেড়ে দেখেছ? সোনার পড়ার বই খুললেই পেট কামড়াচ্ছে, আচ্ছা করে কানদুটো মুলে দেখেছ?

বোঝাই যাচ্ছে এই ধরণের ডাক্তাররা আমার গুডবুকে নেই। কিন্তু আমি এঁদের ভয়ানক গুডবুকে আছি। ভগবানই জানে কেন। সেই ছোটবেলা থেকে এঁরা আমার পিছু ধাওয়া করে আসছেন। রিষড়া ডাউন প্ল্যাটফর্মে আমি আর মা দাঁড়িয়ে আছি। আমার পরনে খয়েরি টিউনিক, মাথার ঝুঁটিতে লালফিতের ফুল, পায়ে গুডবয় শু, চোখে মাইনাস সিক্স পয়েন্ট ফাইভ পাওয়ারের চশমা আর গালে পুরোনো ব্রণর পোলকা ডট।

আপ প্ল্যাটফর্ম থেকে একজন চেঁচাচ্ছেন, “অর্চনাদি! অর্চনাদি!”

মা এদিকওদিক তাকাচ্ছেন। আমি কনুই ধরে টেনে মাকে দেখাচ্ছি, “ওই যে ওই প্ল্যাটফর্মে, মা।” আমার মন অলরেডি কু-ডাক ডাকছে। আমার অলরেডি ভদ্রমহিলাকে একটুও ভালো লাগছে না।

“ও মা, এই আপনার মেয়ে বুঝি? কত্ত বড় হয়ে গেছে!!”

বান্টি বলে ওর নাকি খুউউউব ইচ্ছে, একবার এইধরণের পরিস্থিতিতে বক্তাকে জিজ্ঞাসা করা, “আপনি অন্য কী আশা করেছিলেন?”

মা অনিশ্চিত হাসিমুখে ঘাড় নেড়ে আস্তে গলায় হ্যাঁ বলছেন। দেখেই বুঝতে পারছি মা চিনতে পারেননি, মাথার ভেতর আকাশপাতাল হাতড়াচ্ছেন। বাড়ি? নোপ্‌। ট্রেন? উঁহু, এ তো আপে যাচ্ছে দেখাই যাচ্ছে। তবে কি অফিস? হতে পারে হতে পারে...কোন এক্সচেঞ্জ কোন এক্সচেঞ্জ...

শেষপর্যন্ত মা হাল ছেড়ে দিলেন।

উল্টোদিকের মহিলা হাল ছাড়ার পাত্রী নন। “ইস্‌ অর্চনাদি, আপনি আগের থেকেও রোগা হয়ে গেছেন। কী খারাপ দেখাচ্ছে। মেয়ে খুব দুষ্টুমি করে বুঝি। কী গো, মাকে খুব জ্বালাও নাকি?”

আমি ভুরুটা আগের থেকেও বেশি কোঁচকাই। ডাউন প্ল্যাটফর্মের লেডিস কম্পার্টমেন্টের জায়গায় দাঁড়ানো বাকি যাত্রীরা নিজেদের গুলতানির ভলিউম কমিয়ে মহিলার কথা কান পেতে শুনছেন।

মাকে ছেড়ে এবার মহিলা আমাকে নিয়ে পড়লেন। “এই বয়সেই এত হাই পাওয়ার! বাপরে! অবশ্য আপনার আর আপনার হাসব্যান্ড দুজনেরই বোধহয় চশমা তাই না? সেখান থেকেই পেয়েছে নিশ্চয়। গাজরসেদ্ধ খাইয়ে দেখবেন তো।”

“দেখব।” মায়ের এতক্ষণে গলা বেরিয়েছে। নিজের ঘাড়ের ওপর থেকে খাঁড়া সরে গেছে কি না, তাই।

“হ্যাঁ গো অর্চনাদি, মেয়ের এত ব্রণ হয়েছে কেন গো?”

কী চোখ! অতদূর থেকেও ঠিক দেখে ফেলেছে। আমি বেপরোয়া হয়ে মায়ের হাত ছাড়িয়ে প্ল্যাটফর্মের ধারে ঝুঁকে ট্রেন আসছে কি না দেখি। হে বাবা তারকনাথ, তারকেশ্বর লোকালটা পাঠাও বাবা তাড়াতাড়ি। বড় হয়ে চাকরি পেয়ে তোমার পুজো দেব।

মা হাঁহাঁ করে তাড়াতাড়ি আমাকে টেনে নিরাপদ জায়গায় ফেরত আনেন।

“পেট পরিষ্কার হয় না বোধহয়? তাই না?”

“হয় না তো।” মা স্পষ্ট গলায়, কেটে কেটে বলেন। যাতে প্রতিটি শব্দ মহিলার কানে পৌঁছোয়। আর সঙ্গে সঙ্গে আপ ডাউন প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আরও শ’খানেক লোকের।

আমি স্তব্ধ হয়ে মায়ের মুখে দিকে তাকিয়ে থাকি। এটা কী করলে গো মা? আমি কি তোমার এতবড় শত্তুর যে এই কথাটা তোমার অফিসটাইমে রিষড়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে হল? কী করে পারলে?

মা-ও বলেই বুঝেছেন যে কাজটা ঠিক হয়নি। আমার রক্তশূন্য মুখের দিকে তাকিয়ে মা তাড়াতাড়ি জিভ কেটে ঠোঁট নাড়িয়ে “সরি” বলার চেষ্টা করেন, কিন্তু ততক্ষণে মাইকে চুয়াত্তর নম্বর তারকেশ্বর লোকালের অ্যানাউন্সমেন্ট শুরু হয়ে গেছে।

মা মহিলার দিকে তাকিয়ে, “আচ্ছা তাহলে আসি” বলে পর্বটা শেষ করার চেষ্টা করলেন।

“হ্যাঁ হ্যাঁ। ইস্‌ কী ভালো লাগল আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে...”

ঝম্‌ঝম্‌ করে চুয়াত্তর প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়ল। মা খুব লজ্জিত মুখে আমার হাত ধরে ট্রেনে উঠলেন। পাশাপাশি দুটো সিট খালি দেখে আমি আর মা বসে পড়লাম। কেউই কোনও কথা বলছিলাম না। আমি রাগে, আর মা কী জানি কেন। বোধহয় অনুতাপে।

কোন্নগরে সামনের একটা সিট খালি হল। ঘাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একজন বসলেন। চেনামুখ, রিষড়া থেকেই উঠেছেন। মায়ের সঙ্গে হালকা হাসি বিনিময় হল।

ঠিক দশ সেকেন্ড পর সামনের জন ঝুঁকে পড়লেন।

“আপনি তখন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে কী যেন বলছিলেন দিদি, মেয়ের পেট পরিষ্কারের ব্যাপারে? কৎবেল খাইয়ে দেখুন না। আমার চেনা দোকান আছে বাজারে। বলে রাখব, আপনাকে ফাসক্লাস বেল দেবে। সেটা গরমজলে ভালো করে চটকে...”

মাকে আমি আজ পর্যন্ত ক্ষমা করিনি। কোনওদিন করবও না।

Comments

  1. হাসতে হাসতে মাটি-তে লুটোপুটি হয়ে গেছি... সোমবারে অফিস আসার একটাই মাত্র মোটিভেশন ছিল, তোমার পোস্ট - দু দুটো পেলাম! জিও কাকা!

    লেখা চালিয়ে যাও, বাংলা সাহিত্যে দ্বিতীয় নোবেল আসবে, আসবেই... দেখে নিও!

    ReplyDelete
    Replies
    1. তোমার মুখে চপকাটলেট পড়ুক মনস্বিতা। গাজরসেদ্ধ আর কৎবেল যেন কিছুতেই না পড়ে।

      Delete
  2. Sakale uthei besh ektu haste parlam!

    ReplyDelete
    Replies
    1. শুনে খুশি হলাম রুচিরা

      Delete
  3. এছাড়াও বাঙালি সমাজে আরেকরকম ডাক্তার থাকেন যাঁদের আমাদের ফোন করতে হয় না। তাঁরা নিজেরাই যেচে ফোন করে আমাদের চিকিৎসা করেন। ঠাকুমার অরুচি হয়েছে, একটু গন্ধলেবুর পাতা কচলে ডালের জল খাইয়ে দেখেছ? মায়ের কোমরের ব্যথাটা বেড়েছে, পূর্ণিমাআমাবস্যায় ভাতরুটি ছেড়ে দেখেছ? সোনার পড়ার বই খুললেই পেট কামড়াচ্ছে, আচ্ছা করে কানদুটো মুলে দেখেছ?

    aijaygata jompesh hoyeche..:)
    apnar lekhar prosongsha kore kore hapia jachhi...r korbo na bhabchi ebar theke.. :P

    ReplyDelete
    Replies
    1. সে করতে হবে না, কিন্তু তাই বলে অবান্তর পড়া ছাড়বেন না যেন সৌমেশ। আর একটু উঁকি মেরে বলেও যাবেন যে পড়েছেন। চেনা লোকের সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে তো।

      Delete
  4. Attendance thik porbe..Abantor pora niswas newar moto hoye gache..seki r chara jay.. :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. বাঁচালেন। মনে থাকে যেন।

      Delete
  5. ha ha ha! khub maja peyechi. tomar moto experience amaro ache. ami bari'r gate e dariye bondhu der sathe golpo korchi, amar maa ese sobar samnei matha'y joba ful ghoshe diye gelo, karon tate chul bhalo hoy. Ghore giye bolar pore maa realize korlo j kaj ta thik hoyni. hasi chapte giye bondhuder chokh mukh laal hoye jachhe e ami nijei dekhechi.

    ReplyDelete
    Replies
    1. টিনা, মাগুলো জাস্ট...ইম্‌পসিবল।

      Delete
  6. ofc e boshe abantor pora is very very risky.... amake to oneke onekbar jigyes o korechhe tumi eka eka boshe hasho keno? ki muskil holo...
    ঠাকুমার অরুচি হয়েছে, একটু গন্ধলেবুর পাতা কচলে ডালের জল খাইয়ে দেখেছ? মায়ের কোমরের ব্যথাটা বেড়েছে, পূর্ণিমাআমাবস্যায় ভাতরুটি ছেড়ে দেখেছ? সোনার পড়ার বই খুললেই পেট কামড়াচ্ছে, আচ্ছা করে কানদুটো মুলে দেখেছ?
    eta just jaataa diyechho....hashi thamano jache na.

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ সোহিনী।

      Delete
  7. Replies
    1. sonar complicated asukhta just darun

      Delete
    2. তবু ভালো করে চিকিৎসা করায়নি। ভাব, মাবাবারা কী নিষ্ঠুর হতে পারে। স্রেফ কানমলা আর বকুনির ওপর রেখেছে।

      Delete
  8. 'dom phata hasi....' ki bhabe comments e bojhabo ?

    'সোনার পড়ার বই খুললেই পেট কামড়াচ্ছে, আচ্ছা করে কানদুটো মুলে দেখেছ?'... kono kotha bolar nei

    ReplyDelete
    Replies
    1. এইসব শখের ডাক্তারদের আমি এইজন্য দুচক্ষে দেখতে পারি না ইচ্ছাডানা। বদবুদ্ধি দিতে ওস্তাদ।

      Delete
    2. 'শখের ডাক্তারদের' sob upodeshi bodbudhhi bolchho?

      Delete
    3. খেপেছেন ইচ্ছাডানা, তাহলে তো আমার আপনাদের দেওয়া ঘৃতকুমারীর উপদেশও বদবুদ্ধি। কিন্তু সোনার কান মুলে দাও-উপদেশটাকে বদ্‌ ছাড়া আর কীই বা বলব বলুন দেখি?

      Delete
  9. মাঝে বেশ কিছুদিন আসা হয়নি। এরই মধ্যে কি কান্ডটাই না করেছেন! 'বারণ' থেকে 'মাস্টারমশাই আর দিদিমণিরা' ... 'জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট' থেকে 'চেনা ডাক্তার অচেনা ডাক্তার' ... সবরকমের ফরম্যাটে আপনার এই তুখোড় ফর্ম যেন চিরস্থায়ী হয়! বোঝাই যাচ্ছে বিয়েটা একটা জব্বর ক্যাটালিস্ট হয়েছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ হ্যাঁ, তুমি ফর্ম মেন্টেন করার আশীর্বাদটা ভালো করে দাও তো পিয়াস। তুমি দিলে কাজে লাগতে বাধ্য।

      Delete
  10. offff daruuun.. mon valo hoye gelo :-)

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভেরি গুড স্বাগতা।

      Delete
  11. হা হা হা হা... আজকের লেখাটা শেয়ার করতেই হবে- ঘ্যাম লেখা!
    "সোনার পড়ার বই খুললেই পেট কামড়াচ্ছে, আচ্ছা করে কানদুটো মুলে দেখেছ?"--- অসাধারণ ভাল ডাক্তার সন্দেহ নেই।
    আমি 'পিয়াস'এর সঙ্গে একমত- যে রেটে আর যে রেঞ্জে লেখা চলছে- একজন দু'জন নয়, একসঙ্গে অনেক লোকের ভাত মারা যাবে খুব শিগগির, আর সে জন্য বিয়েটা একটা দারুণ অনু'ঘটক' হয়েছে অবশ্যই! :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ সুনন্দ। ভালো লাগলেই ভালো।

      Delete
  12. দারুণ! তোমার ব্লগে প্রথমবার এলাম। এক্কেবারে মানিকভান্ডার। :)

    ReplyDelete
    Replies
    1. স্বাগতম পৌষালী। আশা করি অবান্তর তোমার ভালো লাগবে।

      Delete
  13. খুব ভালো লাগছে সব লেখাগুলোই । আর এটা নতুন করে তোমাকে বলার কিছু নেই । সেই bonding টা তৈরি হয়ে গেছে বলে আমি মনে করি।

    মিঠু

    ReplyDelete
    Replies
    1. অবশ্যই হয়ে গেছে মিঠু। আমরা তো এখন আর লেখক পাঠক নই। আমরা এখন পছন্দের মানুষ। এই অকাজের আর অপ্রয়োজনীয় দুনিয়া যে ক'টা হাতে গোনা মানুষের সঙ্গে মন খুলে কথা যায়, তেমন মানুষ।

      Delete
  14. আজকাল ছোটোরা এম্নিতেই ইনোভেটিভ, জন্মেই R&D।

    আমাদের ওপরের ফ্ল্যাটে একটি দম্পতি আর তাদের ৪-৫ বছরের ছেলে থাকে। আরিয়ান। বারান্দার রেলিংএর মধ্যে ছোট্ট মাথাটা গুঁজে দিয়ে, খুব আস্তে আস্তে, প্রায় ফিস ফিস করে, "অনির্বাণ, অনির্বাণ" বলে ডাকে। জোরে ডাকলে তার মা এসে তাকে বকবেন, আঙ্কল বলে ডাকতে বলবেন। তাই এই লুকোচুরি।

    ক'দিন আগে সে বুলেটিন জানালো, "অনির্বাণ, আমার হাঁটুতে সরদি হয়েছিল। তাই কাল স্কুল যাই নি। আজ থেকে গরমের ছুটি পড়েছে, তাই সেরে গেছে।"

    ReplyDelete
    Replies
    1. সর্বনাশ, একেবারে হাঁটুতে সর্দি? সাংঘাতিক শক্ত অসুখ তো। আশা করি আরিয়ান আপাতত সুস্থ আছে।

      Delete
  15. Eta nischoi tomar Dis or Dat-e achhe, kintu khunje dekhar dhoirjo nei, tai - Leela Majumder Na Ashapurna Debi?

    ReplyDelete
    Replies
    1. সর্বনাশ শীর্ষ, এ তো অনেকটা সেই ছোটবেলার ফাঁদে ফেলা প্রশ্নের মতো হল, বাবা না মা কাকে বেশি ভালোবাসো? যার নামই বল, বিপদ।

      দেখ, মোটের ওপর যদি দেখি তাহলে আমাকে লীলার নাম বলতে হবে। সেটা লেখার হাতের জন্য। কিন্তু আশাপূর্ণার কিছু লেখা, অ্যাকচুয়ালি অনেক লেখা, প্রথম প্রতিশ্রুতি ট্রিলজি ছেড়েই দিলাম, তাছাড়াও ছোটদের জন্য লেখা কিছু গল্প আশাপূর্ণা আমার মতে লীলার থেকে ভালো লিখেছেন। আশাপূর্ণার সেসব লেখার গুরুত্ব আমার কাছে অনেক বেশি।

      এইবার তুমি বুঝে নাও।

      Delete
  16. Ei dharoner daktarder upodrobta mone hoy station ei beshi. Amar mone achhe, ek alpo-porichito bhadrolok amader station e dhore amar bon er daant je katokhani unchu ar faank faank, ebong oke shiggiri daktar dekhiye braces na porale bhobishyote ki ki samosya hote pare tai niye anek gyan diye giyechhilen. Bolai bahulyo, amar bon tarporeo braces na porei dibyi achhe.

    Osadharon hoyechhe lekhata. Kakimake ashesh dhonyobaad erakom ekta situation toiri korar jonyo, nahole amra aj ei lekhata petamna!

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি অনেক ভেবে বুঝেছি, বুঝলেন। ক্ষুধা তৃষ্ণা মৈথুন, শুধু এই তিনটে নয়। মানুষের বেসিক নিডস্‌ আসলে চারটে। চতুর্থটা হচ্ছে উপদেশদান।

      লেখা ভালো লেগেছে জেনে খুশি। তবে আপনি মা'কে থ্যাংক ইউ দিলেন বলে একটুও খুশি নই।

      Delete
  17. কৎবেল টা কিন্তু বেশ ভালো, তবে গরম জলের বদলে তেল, লঙ্কা আর নুন দিয়ে মেখে খেতে হবে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সর্বনাশ, কৎবেলকেও সুস্বাদু করে রাঁধার রেসিপি আছে দেখছি। থ্যাংক ইউ অভীক।

      Delete
  18. 15th আগস্টের ছুটিতে বাড়ি এসে মাকে এই পোস্টটা পড়ালাম। হাসির তোড় কমতে মা এর মনে যে প্রশ্নটা এল তা হচ্ছে, "যা: । শেষ পর্যন্ত তো চিনতেই পারল না ঐদিকের ভদ্রমহিলাটি কে ছিলেন!"
    ময়ূরী

    ReplyDelete
    Replies
    1. থ্যাংক ইউ, ময়ূরী। উনি অচেনা ডাক্তারের গোত্রে পড়েন।

      Delete

Post a Comment