ক্যাথরিন
ভদ্রমহিলাকে আগেই দেখেছি। চেহারা দেখে বুঝেছি ককেশিয়ান, ইংরিজি শুনে বুঝেছি এদিককার লোক। হাবভাব অবশ্য এদিককার লোকের মতো নয় খুব একটা। জার্মান বলতেই যে ছবিটা মনের মধ্যে জাগে---ঘড়ির কাঁটার তালে তালে প্যারেড করে হাঁটছে একদল লোক---এই মহিলা কোনওভাবেই সেই দলে পড়েন না। সকালে যখন কোনওমতে নাকেমুখে কর্নফ্লেক্স গুঁজে ছুটে বেরোই তখন দেখি কিচেন আর টেরাসের মাঝখানের দেওয়ালজোড়া জানালাটার সামনে বসে উদাসমুখে তিনি দূরের জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে আছেন। সামনের টেবিলে পাঁউরুটি, মিনিমাম দু’রকমের জ্যামের শিশি, এককাঁদি কলা ইত্যাদি থরে থরে সাজানো। সন্ধ্যেবেলা ফিরে দেখি তিনি স্টোভের সামনে ধ্যানস্থ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনখানা বার্নারে তিনরকমের পাত্র চাপানো। কোনওটায় টগবগ করে কিছু ফুটছে, কোনওটার চাপা দেওয়া মুখের ভেতরে না জানি কি রহস্য গুমেগুমে সেদ্ধ হচ্ছে, আর কোনওটায় তেলের মধ্যে চড়বড়িয়ে ভাজা হচ্ছে সসেজ কিংবা মাংসের প্যাটি। সব মিলিয়ে সুগন্ধ যা বেরিয়েছে, অবাক লাগে অফিসে বসেই সেটা নাকে আসেনি কেন।
খাওয়াদাওয়ার বহর দেখে হিংসেতেই হোক বা আর যে কারণেই হোক, মহিলাকে দেখে আমি
বিশেষ ইমপ্রেসড হইনি। ব্যস্ততাকে আমি ভয়ানক গুরুত্ব দিই, সারাশরীরে ঊর্ধ্বশ্বাস তাড়াহুড়োর
ছাপ না থাকলে সন্দেহ হয়, কী জানি, এত দামি মনুষ্যজন্মের যথার্থ ইউটিলাইজেশন হচ্ছে
না নির্ঘাৎ। চারদিকে
ফেলে ছড়িয়ে নষ্ট হচ্ছে। করিডরে মুখোমুখি পড়ে গেলে মহিলা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে “হালো”
বলেছেন, ভাব দেখে মনে হয়েছে কথা বলার সময় দেদার আছে হাতে, আমি একমিনিট দাঁড়ালেই
বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলবেন। কিন্তু আমি হাঁটার গতি একবিন্দু না কমিয়ে মাপা হেসে
বিড়বিড়িয়ে “হ্যালো” বলে পিঠটান দিয়েছি। অ্যালিসিয়া, টেরেসা আর থিয়াগোও থাকে আমার
বাড়িতে। তিনজনের মুখেই শুনেছি, “হ্যাভ ইউ মেট ক্যাথরিন? শি ইজ সো নাইস।”
মিটিং সেই হল, কিন্তু যারপরনাই বেকায়দায়। পৃথিবীতে সবথেকে খারাপ লাগার কাজের
লিস্টে আমার প্রথম তিনে পড়ে সুটকেস গোছানো। অখাদ্য, জঘন্য, যমের অরুচি। তাই
প্রতিবার সে কাজটাকে ঠেলতে ঠেলতে শেষমুহূর্তে পাঠাই। শনিবার সকাল দশটায় বাড়ি ছাড়ার
কথা, আমি ব্যাগ গোছাতে শুরু করলাম শুক্রবার রাত আটটায়। পরিণতি যথারীতি মাথাগরম,
টেনশন, প্যানিক। ঘরের সমস্ত জিনিস যখন মাটিতে ছত্রাকার, হাঁ করা পাতালের গহ্বরের
মতো সুটকেসটা আমার দিকে তাকিয়ে ছেতরে পড়ে আছে, আর ঘড়ি ছুটছে ঘোড়ার মতো---তখন হঠাৎ
আমার মনে হল এক্ষুনি ডিনার খেতে না পারলে স্রেফ মরে যাব। বাইরে যাওয়ার টাইম নেই,
অগত্যা রন্ধনই ভরসা। তাছাড়া ফ্রিজ খালি করার ব্যাপারও আছে।
গোছানো ফেলে পাস্তা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, কুচোচিংড়ির প্যাকেট হাতে নিয়ে আমি
রওনা দিলাম ক্যাথরিনের সাম্রাজ্যের রান্নাঘরের দিকে। একটা পাত্রে জল গরম
বসালাম...অন্য পাত্রে তেল ঢেলে একটা রসুন থেঁতলে ফেলে দিলাম তার মধ্যে...টাইম
নেই...আঁচ বাড়িয়ে গনগনে হাই...লাল রঙের কাটিংবোর্ড পেতে পেঁয়াজ কাটছি...ক্যাপসিকাম
কুচোচ্ছি...ওদিকে জল গবগবিয়ে ফুটছে...পাস্তার প্যাকেটটা আবার কোথায় গেল...ভগবান,
কেন আমার সঙ্গেই এ’সব হয় ভগবান...ফোন বাজছে কি?...দৌড়ে ঘরে যাচ্ছি...হ্যালো
ক্যামিলা...নো আই হ্যাভ নট স্টার্টেড...আই ডোন্ট নো হাউ আই উইল ফিনিশ
এভরিথিং...আনাকে ফোন করে দেখি তো ওর কী অবস্থা...হ্যালো আনা?...ও মাই গড...আই হেট
প্যাকিং...
আনার সঙ্গে কথোপকথনের ঠিক মাঝখানে কানফাটানো আওয়াজটা শুরু হল। পিঁ পিঁ পিঁ---মনে
হচ্ছিল নরকের সবকটা প্রেশার কুকারে একসঙ্গে সিটি পড়তে শুরু করেছে। আমি ফোন হাতে
মেঝের ওপর জমে গেলাম। পাশের একটা ঘর থেকে দড়াম করে দরজা খোলার শব্দ হল, কেউ একজন
কাঠের বারান্দার ওপর দিয়ে দৌড়চ্ছে।
ক্যাথরিন আর আমি একই সঙ্গে পৌঁছলাম রান্নাঘরে। আমার তখনও হতভম্ব ভাব কাটেনি,
ক্যাথরিন ছুটে গিয়ে চিমনি অন করল, গ্যাস নেভাল, ফটাফট্ জানালা খুলে দিল, একটা
কিচেন টাওয়েল নিয়ে জোরে জোরে হাওয়া দিতে লাগল স্মোক ডিটেকটরটার নাকের ডগায়।
আওয়াজ থেমে গেল। ম্যাজিকের মতো।
ক্যাথরিন এতক্ষণে আমার দিকে তাকিয়েছে। আমি কান ধরে সোজা ওর পায়ে ডাইভ দেব বলে
তৈরি হচ্ছিলাম, এমন সময় ক্যাথরিনের মুখে হাসি ফুটল।
দ্যাট ওয়াজ ফানি, নো?
তারপর দাঁড়িয়ে কত গল্প করল। জিজ্ঞাসা করল, তুমি কি ফুড ব্লগার? বুঝলাম, কোনও
একদিন ছাদে দাঁড়িয়ে পাগলের মতো অমলেটের ছবি তুলছি দেখে এই গুজবটা রাষ্ট্র হয়েছে।
ভুল ভাঙাতে হল। বললাম যে আমি ফুড ব্লগার নই, কিন্তু ব্লগার বটে। ক্যাথরিনের সম্পর্কেও
অনেক কথা জানা হল। অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি করার সময় অনেক ভারতীয় সহকর্মী ছিল নাকি ওর।
তাদের বেশিরভাগই অ্যারেঞ্জড্ ম্যারেজ করেছে। ইজ ইট স্টিল আ বিগ থিং ইন ইন্ডিয়া? ঘাড়
নাড়লাম আমি, ভেরি ভেরি বিগ।
পরদিন সকালে রওনা দেওয়ার সময় ক্যাথরিন বেরিয়ে এল। অ্যালিসিয়া আর আমার, দুজনের
সুটকেসই সিঁড়ি দিয়ে নামাতে সাহায্য করল। কিছুতেই মানা শুনল না। অ্যালিসিয়া আর
থিয়াগো দেখল নিজেদের প্রচুর বেঁচে যাওয়া খাবারদাবার ক্যাথরিনের দায়িত্বে দিয়ে
যাচ্ছে। আমি শেষটায় লজ্জার মাথা খেয়ে বলেই ফেললাম। একটা প্রায় নতুন অ্যাপ্রিকট জ্যামের
শিশি আমার ফ্রিজের ভেতর রাখা আছে। যদি ও চায়...ক্যাথরিন শুনে এত খুশি হল যেন ক্লাস
ফাইভের সোনাকে ক্যাডবেরি কিনে দিয়েছে সেজকাকু।
ফ্রাউ বার্শের বাড়ির মেনগেট থেকে বেরিয়ে আসার আগের মুহূর্তে ক্যাথরিন আমাকে বলল, আই উইশ উই হ্যাড মেট আরলিয়ার।
মি টু ক্যাথরিন, মি টু।
*****
কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, ব্যাগ গোছাচ্ছিলাম কেন? তার সোজা উত্তরটা হচ্ছে বন
ছাড়ব বলে। আর শক্ত উত্তরটা দিতে গেলে একটু আগে থেকে বলতে হবে। খুব বেশি কাজের কথায় না
গিয়ে এটুকু বলি, আমরা এখানে যে ট্রেনিংটায় এসেছি সেটার দুটো অংশ। এক অংশে শোনার
কাজ প্রবল, অন্য অংশে লেখার ব্যাপার মুখ্য। অ্যাদ্দিন চলছিল শোনাশুনির পালা। সে
পালা অবশেষে সাঙ্গ হয়েছে। এখন আমাকে মাথা চুলকে একখানা মিনি পেপার লিখতে হবে। সে
পেপার লেখার আবার অনেক হাঙ্গামা। লেখার বিষয় বুঝে আমাদের ইউরোপের বিভিন্ন
সংগঠনে পাঠানো হবে, যাতে লেখার সঙ্গে সঙ্গে সে সব সংগঠনের ভেতরের প্যাঁচপয়জারের
সঙ্গে খানিকটা পরিচিতি ঘটে। তাছাড়া ছ’ অক্ষরের সেই সর্বশক্তিমান শব্দটি তো
আছেই---নেটওয়ার্কিং।
এখানে আসার পরপরই সবাই যে যার পছন্দমতো ইন্স্টিটিউশনে নিজেদের নমুনা পেপার পাঠিয়ে হত্যে দিয়ে বসে ছিল। কবে ডাক আসে। ডাক আসতে শুরু করল মাসখানেক পর থেকে। একএক জনের ডাক আসে, সে খবর শুনে ক্লাসশুদ্ধু সকলে হাততালি দেয়, আন্তরিকভাবে খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরে “কনগ্র্যাচুলেশনস ডুড!” বলে, আর মনে মনে ভাবে আমার ডাক কবে আসবে। কাল সকালে আসবে কি?
একে একে ক্লাসের প্রায় অর্ধেক লোককে কনগ্র্যাচুলেট করার পর আমার সাহসে টান পড়তে শুরু করল। তাতিয়ানা আর জোহানেসের সঙ্গে যুক্তি করে আমি মোটে এক জায়গায় প্রোপোজাল পাঠিয়েছিলাম। উত্তরে এসেছে জমাটবাঁধা নিস্তব্ধতা। কফিরুমে, করিডরে---জোহানেসের সঙ্গে দেখা হলে আমার মুখটা আপনা থেকেই কাঁদোকাঁদো হয়ে যায়। জোহানেস আমার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলে, ঘাবড়াও মৎ কুন্তলা, এখনও অনেএএএক সময় আছে। আর তাছাড়া এখন ভরা সামার, সকলে ভেকেশন কাটাতে ব্যস্ত। ফিরে এসেই তোমাকে ডাক পাঠাবে।
শুনে আমার গাপিত্তি রিরি করে জ্বলে। ইয়ার্কি হচ্ছে? এদিকে আমার ভয়ে রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে, আর ওদিকে লোকজন সানস্ক্রিনের গামলায় ডুব দিয়ে উঠে রংবেরঙের ছাতার তলায় শুয়ে শুয়ে ভূমধ্যসাগরের ঢেউ গুনছে? নেহাৎ ক্ষমতা নেই তাই, না হলে আমি আইন করে দেশ থেকে সামার ভেকেশন তুলে দিতাম।
বার্লিন থেকে ফেরার পথে বাসে বসে টের পেলাম টেনশন, রাগ, গা-জ্বলুনি সব চলে গিয়ে বুকের মধ্যে পড়ে আছে স্রেফ বিশুদ্ধ ভয়। আর একটুখানি হতাশা। বাড়ি ঢুকে ব্যাগপত্তর এদিকওদিক ছুঁড়ে ফেলে ফোন আর ল্যাপটপ নিয়ে চিৎ হয়ে পড়লাম। কানের ভেতর রিং হচ্ছে, চোখের সামনে ইনবকস্ লোড হচ্ছে। ওদিক থেকে অর্চিষ্মান হাসিহাসি গলায় হ্যালো বলল, আর চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে উঠল জোহানেসের নামের পাশে কালো বোল্ড অক্ষরে লেখা সাবজেক্ট লাইন---কন্গ্র্যাচুলেশনস কুন্তলা! হিয়ার ইউ গো!
অর্চিষ্মান যে আমার জন্য কতখানি পয়া, সেটা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।
প্রোজেক্ট স্টাডির বরাদ্দ সোয়া দু’মাস (ফোর উইক্স্ টেন ডেজ) কাটানোর জন্য আপাতত আমি প্যারিসে। ট্রেনে বসেই বুদ্ধি খাটিয়ে প্যাডের সাদা পাতায় বড় বড় করে বাড়ির ঠিকানা লিখে রেখেছিলাম, ট্যাক্সিওয়ালার চোখের সামনে ধরতেই সোজা নিয়ে এল। মাঝখানে বারান্দা, চারদিকে বাড়ি। আমার বাড়িওয়ালির প্রতিনিধি আমার থেকে বয়সে ছোট, নাম ওয়াফা। ফোনে বুঝেছিলাম গলা মিষ্টি, আলাপ করে বুঝলাম মেয়েটিও ভয়ানক মিষ্টি। ঘরবাড়ি বুঝিয়ে, তালাচাবি শিখিয়েপড়িয়ে, আমাকে নিয়ে গিয়ে সুপারমার্কেট আর ফোনের দোকান দেখিয়ে দিল। সুপারমার্কেটে অভিজ্ঞতা ভালোই, কেবল একবার একজন দয়ালু দেখতে মহিলাকে জিজ্ঞাসা করতে হয়েছিল, রিডিউস্ড্ ফ্যাট দুধের বোতলের গায়ে কী লেখা থাকবে। আর কাউন্টারে এসে “Sac, S’il vous plait” একটানা বলতে গিয়ে সামান্য হোঁচট খেয়েছিলাম। ব্যস।
শহর নিয়ে লাফালাফি করাটা চরম ছেলেমানুষি জানি, তা সত্ত্বেও প্যারিসে আসা নিয়ে
উত্তেজিত ছিলাম সেটা স্বীকার না করে উপায় নেই। ইউটিউবে অ্যান্থনি বোর্ডেনের
প্যারিস সংক্রান্ত এপিসোডগুলো একধারসে দেখে ফেলেছি, 'থিংস টু ডু ইন প্যারিস' সার্চ
করে করে আঙুলে কড়া পড়ে গেছে। এত সার্চ করে লাভ যে খুব কিছু হয়েছে তা নয়। কখনওই হয়
না। শেষ পর্যন্ত মানুষের মুখের কথার থেকে ভালো আর কি কিছু হয়, না হতে পারে?
তাই আপনাদের দ্বারস্থ হচ্ছি। কী কী করার, দেখার, ঘোরার, খাওয়ার জিনিস আছে এ শহরে, সে সম্পর্কে যত পারেন সাজেস্শন দিন। আমি ভালো ছাত্রীর মতো সব টুকে রাখব। তারপর টিক মেরে মেরে সিলেবাস কমপ্লিট করব। অন্তত কমপ্লিট করার চেষ্টা করব কথা দিচ্ছি।
ভাল করে প্যারিস ঘোরা হয় নি বলে একটা দুঃখ আছে । তোমার লেখার দিকে তাই তাকিয়ে আছি।
ReplyDeleteমিঠু
নিশ্চয় মিঠু। আমিও বলার জন্য মুখিয়ে আছি।
DeleteOnekdin porey swobhabsiddho boro post peye jarpornai khushi hoechhi. :D (Paris jawar ichchhe sei chhoto theke. Tai tomay besh Bidur Bidur mone hochchhe apatoto.)
ReplyDeleteহাহা, থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ বিম্ববতী।
Deleteki maja ..ebar anek chabi ar galpo toiri hobe mone hocche :)
ReplyDeleteযেন হয়, যেন হয়।
Deleteযদিও আমি প্যারিস কেন, ইউরোপের কোথাওই যাই নি, এবং যদিও জানি তুমি উডি অ্যালেন গুলে খেয়েছ, তবু আমার অল্পবিদ্যা কাজে লাগাতে ভয় পেলাম না। উডিবাবুর 'মিডনাইট ইন প্যারিস' দেখে নিও। যদি অলরেডি দেখে থাকো, তাহলে আবার দেখো। আর তা না হলে শর্মিলা ঠাকরুণের 'ইভনিং ইন প্যারিস' খানা নিদেনপক্ষে দেখো। এখানা অবিশ্যি আমিও দেখিনি, কাজেই বলতে পারবো না, কিরকম অভিজ্ঞতা হবে :)
ReplyDeleteএই রে আমি একেবারেই উডি অ্যালেন গুলে খাইনি আবির। ইন ফ্যাক্ট দুয়েকটা সিনেমাই মোটে দেখেছি। মিডনাইট অবশ্যই দেখব। থ্যাংক ইউ।
DeleteEesh tumi Paris-e? Ek basta hingshe dilam. Amar Khub priyo sahor ar amar Khub bhalo ek bondhu thake. Tintin-er merchemdise-er ekta darun dokan achhe okhane. Ektu search kore dekhe nio. Darun tintin at asterix-er characters der putul paoa jai. Ar ja ja imp dekhar jinis se to tomader guide rai dekhie debe nischoi.
ReplyDeleteটিনটিন টিনটিন। নিশ্চয় খুঁজে দেখব রুচিরা। অনেক ধন্যবাদ।
Deletebas, ebar sokal bikal uthte boste merci beaucoup sunte sunte kan jhalapala holo bole... :D :D
ReplyDeleteHa... Midnight in Paris obossoi dekho... tobe ami cinema ta dekhechhilam Paris ghure asar por... fole prothom 5-10 min bes ekta smriticharana hoye gechilo.... khub bhalo lagchhilo tokhon... r ekta kotha...Montmartre te jokhon Sacré Coeur dekhte jabe... tokhon jaiga ta paye hente obossoi ghuro....... boro bhalo legechhilo amader..
Montmartre আমার বাড়ির বেশ কাছে গোবেচারা। যাব ঘুরতে সময় করে। সিনেমাটা দেখতে হচ্ছে তো, সবাই তোমরা রেকমেন্ড করছ।
Deletearrre darun to, ebar to tahole Paris er galpo ar chhobi. Opekhai roilam :-)
ReplyDeleteআমিও গল্প বলার অপেক্ষায় আছি ইচ্ছাডানা।
Deleteথিংস টু ডু ইন প্যারিস
ReplyDeleteপ্রেম-
অর্চিষ্মানকে ডেকে নিন। তারপর একদিন সন্ধেবেলা "অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস" গানটা গুনগুন করতে নবদম্পতি পায়ে হেঁটে বেড়িয়ে আসুন
আইফেল টাওয়ারের চুড়ায় ওঠে অর্চিষ্মানকে বলুন, তুমি আমাকে ভালোবাসো? কতখানি ভালোবাসো? আমাকে পিঠে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে পারবে না?
সাহিত্য-
ঠিক দুপুর বারোটায় নতরডেম দেখতে যান। বারোটায় গির্জার ঘন্টা বাজলে মনে পড়বে যে কোয়াসিমোদো গির্জার ঘন্টা শুনেই বধির হয়ে গিয়েছিল
পেপারব্যাক সাহিত্য-
দ্য ভিঞ্চি কোডের প্রথম পঞ্চাশ পাতা পড়ে ল্যুভর মিউজিয়ম দেখতে যান। পাতি ট্যুরিস্টদের মত শুধু মোনালিসা দেখে চলে আসবেন না। আমার মত আকাট মূর্খ অবধি এ কাজটা করিনি। প্রচুর সিডনি শেলডন আর ফ্রেডরিক ফরসাইথ পড়ে থাকলে আরও কিছু মশলা বেরোবে
ইতিহাস-
সন্ধেবেলা পায়ে হেঁটে Champs Elysees (এটি বাংলায় লেখা যাচ্ছে না) চক্কর দিন। হিটলারের জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হল এই রাস্তায় জার্মান সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ। চাইলে প্রেম আর ইতিহাস মিশিয়ে একটা heady cocktail বানিয়ে নিতে পারেন
সংস্কৃতি-
প্যালেস গারনিয়ারে অপেরা দেখে আসুন। যদিও অপেরার টিকিটের দাম দিল্লি-প্যারিস রিটার্ন এয়ারফেয়ারের চেয়ে বেশি, এবং মানানসই জামা কাপড়ের দাম আরও বেশি পড়বে, তবু...
অপসংস্কৃতি-
Moulin Rouge
লিডো
খেলা-
Rolland Garros
সিজন চলছে, তাই একটা ফুটবল ম্যাচ। যদিও আপনি বোধহয় আমেরিকান ফুটবল বেশি পছন্দ করেন
বিচিত্র-
ইন্টারনেট ঘেঁটে দোকান খুঁজে হ্যাদ্দেহোয়া
নদীবক্ষে নৌকাবিহার
বাঃ, একেই বলে এক্সটেনসিভ অ্যান্ড ইনটেনসিভ লিস্ট। ফুটবল খেলা দেখতে গেলে ঘুমিয়ে পড়ব নির্ঘাৎ, কাজেই ওটা বাদ। বাকিগুলো করা যেতে পারে। আর ল্যুভর দেখতে যাওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্যই তো দ্য ভিঞ্চি কোড মিলিয়ে নেওয়া। মোনালিসা লাইনে অনেক পরে। ইন ফ্যাক্ট, অনেক "হোয়াট নট টু ডু ইন প্যারিস" লিস্টে দেখেছি লিখেছে মোনালিসা না দেখতে। কুলনেস কোশেন্ট নাকি তাহলে চড়চড় করে বেড়ে যাবে।
Deleteযারা ল্যুভর গিয়ে মোনালিসা না দেখে ফিরে আসে, তার কুল না। তারা নামাকুল
Deleteজার্মানির শেষ ছবিটা (ওই জানালা দিয়ে গাছপালা) কী সুন্দর গো! আশা করি প্যারিস তোমার দারুণ কাটুক। আমার তো এখন যাওয়া হচ্ছে না, তোমার ক্যামেরা আর কীবোর্ড দিয়েই দেখব।
ReplyDeleteওটা হচ্ছে আমার জার্মানির ভাড়াবাড়ির বারান্দার ছবি প্রিয়াংকা। নিশ্চয়, আমিও তোমাদের গল্প বলার জন্য মুখিয়েই আছি।
Deleteওকে, একটা ভয়ানক অন্যায় করে ফেলেছিলাম, ব্যস্ততার ছুতোয় এই পোস্ট টা আগে পড়িনি। এখন পুরনো অবান্তর ঘাঁটতে বসে এটা চোখে পড়ল। চোখ বুলিয়ে ছেড়ে দিতাম হয়ত, কমেন্ট করতামনা, কিন্তু একটা জায়গা পড়ে কমেন্ট না করে থাকতে পারলামনা।
ReplyDelete"একে একে ক্লাসের প্রায় অর্ধেক লোককে কনগ্র্যাচুলেট করার পর আমার সাহসে টান পড়তে শুরু করল। তাতিয়ানা আর জোহানেসের সঙ্গে যুক্তি করে আমি মোটে এক জায়গায় প্রোপোজাল পাঠিয়েছিলাম। উত্তরে এসেছে জমাটবাঁধা নিস্তব্ধতা। কফিরুমে, করিডরে---জোহানেসের সঙ্গে দেখা হলে আমার মুখটা আপনা থেকেই কাঁদোকাঁদো হয়ে যায়। জোহানেস আমার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলে, ঘাবড়াও মৎ কুন্তলা, এখনও অনেএএএক সময় আছে। আর তাছাড়া এখন ভরা সামার, সকলে ভেকেশন কাটাতে ব্যস্ত। ফিরে এসেই তোমাকে ডাক পাঠাবে।
শুনে আমার গাপিত্তি রিরি করে জ্বলে। ইয়ার্কি হচ্ছে? এদিকে আমার ভয়ে রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে, আর ওদিকে লোকজন সানস্ক্রিনের গামলায় ডুব দিয়ে উঠে রংবেরঙের ছাতার তলায় শুয়ে শুয়ে ভূমধ্যসাগরের ঢেউ গুনছে? নেহাৎ ক্ষমতা নেই তাই, না হলে আমি আইন করে দেশ থেকে সামার ভেকেশন তুলে দিতাম।
বার্লিন থেকে ফেরার পথে বাসে বসে টের পেলাম টেনশন, রাগ, গা-জ্বলুনি সব চলে গিয়ে বুকের মধ্যে পড়ে আছে স্রেফ বিশুদ্ধ ভয়। আর একটুখানি হতাশা।"
পড়ে মনে হল এ কার লেখা? এই একই অবস্থা তো আমারও হয়েছিল এই গরমের ছুটির মধ্যে - আর পাঁচজনের থেকে কম জায়গায় পোস্ট-ডক এপ্লাই করেছিলাম, আর লোকজন সব সামার ভেকেশনে গিয়ে বসে আছে, একমাত্র আউট অফ অফিস অটো রিপ্লাই ছাড়া উত্তর আসে না। যাই হোক, আপনার সমস্যাও মিটল, আমারটাও মোটামুটি কেটেছে। আমার মতন অবস্থা যে আরো লোকের হয় সেটা জেনে ভালো লাগল (স্বার্থপরের মতন শোনালো জানি, কারণ অবস্থাটা ভালো কিছু নয়, কিন্তু তাও) তাই ভাবলাম কমেন্টটা করেই ফেলি।
আর বলাই বাহুল্য, ছবিগুলো অনবদ্য।
উফ্ ওই অটো রিপ্লাই দেখলে মনে হয় না, কাউকে এক্ষুনি একটা খুন করতে পারলে আরাম লাগবে? আরে মিল কি শুধু ভালো জিনিসের হবে, খারাপ অভিজ্ঞতাও তো মিলবে, না হলে আর মিল কীসের সুগত।
Deleteছবির প্রশংসা শুনে যথারীতি খুশি। থ্যাংক ইউ।