ঢাকেশ্বরী
বিয়েবিয়ে মন হওয়ার পর আমি কতকগুলো বিদেশী ওয়েডিং ব্লগ পড়তে শুরু
করেছিলাম। তাতেই প্রথম রোগটার কথা জানতে পারি। ওয়েডিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স,
সংক্ষেপে WIC।
যদিও আজকের পোস্টের বিষয় WIC নয়, তবু ছোট্ট করে রোগটার সম্পর্কে বলে নিই। এ রোগের মূল
বীজাণু হচ্ছে, “ইয়োর ওয়েডিং ডে ইস দ্য মোস্ট ইম্পরট্যান্ট ডে অফ ইয়োর
লাইফ”। মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোনোর দিন না, প্রথম প্রেমে পড়ার দিন না, প্রথম প্রেম
কেটে যাওয়ার পর দ্বিতীয় এবং বেটার প্রেমিকের সঙ্গে দেখা হওয়ার দিন না, প্রথম চাকরি
পাওয়ার দিন না, এমনকি প্রথম ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার দিনও না---আপনার জীবনের সবথেকে
দামী, সবথেকে স্মরণীয় দিন নাকি হল আপনার বিয়ের দিন। বছরের পর বছর ধরে মুনাফালোভী
বদমাশ বিজনেসম্যানরা, মোমঘষা চকচকে পাতার লাইফস্টাইল ম্যাগাজিনরা এই মগজধোলাইয়ের মন্ত্র
লোকের (স্বীকার করতেই হবে, মূলত মেয়েদের) মাথার ভেতর গজাল মেরেমেরে ঢুকিয়েছে। যাতে
জীবনের ওই একটিমাত্র দিনকে সর্বাঙ্গসুন্দর করার জন্য, বাকি সবার থেকে বেশি নিখুঁত
করার জন্য সবাই টাকার গোছা নিয়ে বাজারে ছোটে। বিয়ের জামা, বিয়ের জুতো, বিয়ের গয়না,
বিয়ের সাজ, বিয়ের ছবি কিনতে। আর যাতে সেই টাকায় বিজনেসম্যানদের পকেট আর ভার্জিন
আইল্যান্ডের লুকোনো অ্যাকাউন্ট ফুলেফেঁপে ওঠে।
বেশিরভাগ আধুনিক রোগের মতো এ রোগেরও জন্মভূমি অ্যামেরিকা। আর বেশিরভাগ
অ্যামেরিকান রোগের মতোই এ রোগও দাবানলের মতো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল বলে।
তবে সপ্তাহের শুরুতে এই সব ভয়ের গল্প দিয়ে অবান্তরের খাতা খোলার ইচ্ছে আমার
একটুও নেই। তাই আজ কমপ্লেক্সটা বাদ দিয়ে শুধু ওয়েডিং ইন্ডাস্ট্রির গল্প বলব
আপনাদের। ইন্ডাস্ট্রি আছে যখন, কমপ্লেক্সও অচিরেই গজাবে সন্দেহ নেই, কিন্তু
উটপাখির মতো বালিতে মুখ ঢুকিয়ে যতক্ষণ পারা যায় সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে থাকা যায়
আরকি। সমাজ অন্য কেউ বদলাবে। আমার দায় শুধু নিন্দেমন্দের।
আগের বার বাড়ি গিয়ে বিয়ের বাজার করতে বেরিয়ে এই বিয়ের ইন্ডাস্ট্রিটার সম্পর্কে
বেশ করে অবহিত হওয়া গেল। এই বাজারটায় পা দেওয়ার পর সবথেকে অদ্ভুত যেটা লাগে সেটা
হল বিয়ে ব্যাপারটা এদের কাছে কীরকম জলভাত। সেটাই স্বাভাবিক অবশ্য। আমার বাড়ি আর
আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে আমাদের বিয়েটা একটা লাইফটাইম ইভেন্ট, কিন্তু এদের
কাছে আরও লক্ষলক্ষ বোরিং বিয়ের মিছিলে আর একটা পরমাণু মাত্র। কলকাতার বাসের
কন্ডাকটরদের কাছে যেমন পৃথিবীর সব মহিলাই “লেডিস”, তেমনি এদের কাছে সব বিয়ের কনেই
“বউ”।
সেজেগুজে দলবল নিয়ে গটমটিয়ে দোকানে ঢুকে চেয়ারে রানির মতো গ্যাঁট হয়ে বসে “এই
কে আছিস, বউয়ের বান্ডিলটা নামা তো” শুনতেশুনতে আমার
নিজের স্পেশাল স্ট্যাটাসের কল্পনার ফানুসটা অবশেষে চুপসে গেছে।
আমার বিয়ের শাড়ি কোথা থেকে কেনা হবে সেই নিয়ে মা আগে থেকেই সমীক্ষা সেরে
রেখেছিলেন। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর শেষমেশ আদি ঢাকেশ্বরী চুলচেরা মার্জিনে
প্রিয়গোপাল বিষয়ীকে হারিয়ে দিল। যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা আরও নানারকম কাজের টোটকা দিয়ে রেখেছিলেন। যেমন দোকানদারদের এনার্জিলেভেল হাই থাকতে থাকতে দোকানে পৌঁছে
যাওয়া, যাতে লক্ষলক্ষ শাড়ি দেখাতে তাঁদের আপত্তি না থাকে।
আমার মায়ের আবার ধরে আনতে বলে বেঁধে আনার স্বভাব আছে। মা সেফসাইডে থাকার জন্য তাড়া
দিয়ে আমার জীবন অতিষ্ঠ করে এমন সাতসকালে বাড়ি থেকে বেরোলেন যে ট্রায়াঙ্গুলার
পার্কে পৌঁছে দেখি ঢাকেশ্বরীর শাটার তখনও পাটেপাটে
বন্ধ। কাজেই আমরা ফুটপাথ বদলে প্রিয়গোপাল বিষয়ীতে খোঁজ নিতে গেলাম। উঁহু, সেও
খোলেনি।
অগত্যা ঢাকেশ্বরীর সামনে একটা লিকপিকে গাছের আড়ালে
ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় থাকল না। মা ষড়যন্ত্র ফাঁদার মতো
গলা করে বললেন, “এইখানটায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি সোনা। লোকজন এসে যখন দরজাটরজা খুলে
জলটল খাবে, তখন আমরা ধীরেসুস্থে হেঁটে এমন মুখ করে ঢুকব যেন এক্ষুনি এসেছি।”
প্ল্যানমতোই কাজ হল। আধঘণ্টা পরে খাঁখাঁ দোকানে ঢুকে
আমরা মা-মেয়ে দুখানা চেয়ার দখল করে বললাম, “বেনারসী দেখান না দাদা।”
বলামাত্র বেনারসীতে বেনারসীতে আমাদের সামনের কাউন্টার
ভেসে গেল।
কত বেনারসী বাপরে। লাল নীল সবুজ গোলাপি বেগুনি, রঙের
বাহারের কথা তো ছেড়েই দিলাম, তাদের ডিজাইনের ভ্যারাইটিরও সীমাপরিসীমা নেই। কাতান,
অরগ্যাঞ্জা, তান্চোই, বুটিদার, পাটলিপল্লু।
দোকানদারের এনার্জি তখন তুঙ্গে ছিল, কাজেই আমরা মাথা
নেড়ে হ্যাঁ-না কিছু বলার আগেই তিনি শোকেস উজাড় করে গোটাপঁচিশেক বেনারসী আমাদের
সামনে ঢেলে দিলেন। শেষে বেগতিক দেখে মা “বেঁধে বেঁধে” চেঁচিয়ে ওঠায় তাঁর সম্বিত
ফিরল।
এবার শুরু হল শাড়ির ভাঁজ খুলে খুলে তার ভেতরের
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কারুকাজ দেখানোর পালা। দোকানদার ভদ্রলোক ভীষণই ভালোমানুষ। তিনি
অক্লান্তভাবে একের পর এক বেনারসী ম্যাজিক দেখানোর মতো চোখের সামনে মেলে ধরে বলতে লাগলেন, “এই দেখুন এইটায়
আগেরটার থেকেও বেশি কাজ...এই দেখুন এটা এখন ভীষণ চলছে...”
শেষমেশ তিনি যখন একখানা শাড়ি সযত্নে মেলে ধরে সশ্রদ্ধ
গলায়, “আর এই যে এটা দেখছেন, এটা হচ্ছে কোয়েল মল্লিকের বিয়ের শাড়ির ডুপ্লিকেট। এইবেলা
কিনে ফেলুন দিদি, পরের বছর সব বউ এটাই পরবে গ্যারান্টি” বলে মায়ের দিকে তাকিয়ে
বিজয়ীর মতো হাসলেন, তখন আমাকে বাধ্য হয়েই হস্তক্ষেপ করতে হল।
আমি শান্ত গলায় বললাম, “থ্যাংক ইউ দাদা, কিন্তু আমার
শাড়ি পছন্দ করা হয়ে গেছে।”
ভদ্রলোক একেবারে প্রথমে নামিয়েছিলেন শাড়িটা। লাল
রঙের, সারা গায়ে হালকা ছোট্ট ছোট্ট সোনালি সুতোর কাজ। একসেকেন্ড লেগেছিল আমার শাড়িটাকে
চিনতে। অবিকল একরকম দেখতে আরেকটা শাড়ি, আমাদের রিষড়ার বাড়ির খাটের তলায় দিদিঠাকুমার
লোহার ট্রাঙ্কের ভেতর ন্যাপথালিনের গন্ধওয়ালা ফিনফিনে কাগজের মোড়কের ভেতর শুয়ে
আছে। আজ থেকে ছত্রিশ বছর আগে যখন এইসব বিয়ের ইন্ডাস্ট্রির ভিতপুজোও হয়নি, তখন
মেজমামা মাকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে কিনে দিয়েছিলেন। আমার মায়ের বিয়ের বেনারসী।
আমি সেই থেকে শাড়িটার ওপর হাত রেখে চুপটি করে
বসেছিলাম। শাড়ি পছন্দ হয়ে গেছে শুনে ভদ্রলোক যখন একগাল হেসে কপালের ঘাম মুছে
বললেন, “বাঃ, কোনটা শুনি?” তখন আমি কোটিকোটি বেনারসীর পাহাড়ের তলা থেকে শাড়িটা
টেনে বার করে এনে বললাম,
“এইটা।”
বলে মায়ের দিকে তাকিয়ে ভুরু নাচাতে গিয়ে দেখি মা হাঁ
করে শাড়িটার দিকে তাকিয়ে আছেন। তাকিয়ে থাকতেথাকতে পাঁচসেকেন্ড পরে মায়ের মুখটা
জ্বলজ্বল করে উঠল। আমার দিকে তাকিয়ে ভীষণ মিষ্টি একটা হাসি হেসে মা বললেন, “আমারও
খুব পছন্দ হয়েছে সোনা শাড়িটা।”
ব্যস, হয়ে গেল বিয়ের শাড়ি। বাকি রইল বৌভাত।
ছুটি ছিল মোটে তিনদিন, তাই পরদিন সকালেই কাকিমার সঙ্গে
বেরোনো হল। কাকিমারও সার্ভের রেজাল্টে ঢাকেশ্বরীর নাম উঠেছিল, কাজেই আমরা আবার
ঢাকেশ্বরীতে গিয়ে হাজির হলাম। আগের দিনের ভদ্রলোক আমার চোখে চোখ পড়াতে নিঃশব্দে
মুখ নাড়িয়ে জানতে চাইলেন, “শাশুড়ি মা?” আমি একগাল হেসে ঘাড় নাড়লাম। সেদিন বেশ
কয়েকটা সুন্দরসুন্দর শাড়ি পছন্দ হয়েছিল, দোকানদারেরা পরামর্শ দিলেন সবগুলোই একবার
করে পরে পরে দেখতে।
তারপর সালোয়ারকামিজের ওপর বেল্ট বেঁধে কী অভূতপূর্ব
দক্ষতায় যে একজন আমার গায়ে বেনারসীগুলো পেঁচিয়ে দিলেন সে আর কী বলব। আমার গায়ে
তাঁর আঙুল একটিবার স্পর্শও করল না। গোটাপাঁচেক শাড়ি পরে দেখার পর আমার আর কাকিমার
দুজনেরই একটা শাড়ি পছন্দ হয়ে গেল। কাকিমা বারবার নার্ভাস গলায় জিজ্ঞাসা করতে
থাকলেন, “কুন্তলা, সত্যি পছন্দ হয়েছে তো? মন থেকে বলছ তো?” আর আমি তাঁকে ক্রমাগত
অভয় দিতে লাগলাম যে আমার শাড়িটা সত্যিসত্যি ভীষণ পছন্দ হয়েছে।
সত্যিই শাড়িটা আমার একবার দেখেই পছন্দ হয়েছিল। আয়নার
সামনে শাড়িটা পরে দাঁড়িয়ে আমি নিজেই নিজেকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম।
ট্রায়াঙ্গুলার পার্ক দিয়ে যে লক্ষলক্ষ লোক যাতায়াত করছিল তারাও অবশ্য দোকানের
কাঁচের ভেতর দিয়ে তাকালেই দেখতে পাচ্ছিল যে আমি ভরদুপুরবেলা কটকিছাপ কামিজের ওপর
বেনারসী পেঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু আমি সেসবে পাত্তা দিচ্ছিলাম না। আমার ঠিক
পেছনদিকের আয়নার সামনে আরেকজন হবু বউয়ের বেনারসী ট্রায়াল চলছিল। সে যে কী
বিতিকিচ্ছিরি সব শাড়ি শর্টলিস্ট করেছিল, ভাবা যায় না। তারপর সেসব বাজে শাড়ির
মধ্যেও সে যেটা ফাইন্যালি পছন্দ করল সেটা দেখে আমার একটু করুণাই হল। সত্যি বলছি ওই
শাড়িটার পাশে আমার নিজের শাড়িটা দেখে আমার আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছিল।
আমরা শাড়িটা কিনে নিলাম। লোকগুলো আমার অমন সুন্দর
শাড়িটা কীরকম হেলাফেলা করে ছুঁড়ে ছুঁড়ে এরওর হাতে চালান করছিল দেখে আমার ভয়ানক রাগ
ধরে যাচ্ছিল। তোমাদের দোকানে কোটিকোটি বেনারসী আছে তো কী, আমার তো ওই দুটি বই
তিনটি নেই।
তারপর বাকি রইল কাউন্টারে গিয়ে টাকা মেটানো। বেনারসীর
সঙ্গে একটা হাততোয়ালে আর একটা ভিভেল সাবান ফ্রি পাওয়া গেল। সব গুছিয়েটুছিয়ে
বেরোনোর সময় দেখি অন্য হবু-বউটিও হাতে একখানা শাড়ির ব্যাগ নিয়ে বেরোচ্ছে। আমার
সঙ্গে একবার চোখাচোখি হতেই সে চট করে চোখ সরিয়ে নিল। তারপর দেখি মহিলা সঙ্গের
লোকের কানেকানে আমার হাতের শাড়ির ব্যাগটার দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে খুব ব্যাঁকা হাসি
হাসতেহাসতে কী সব বলতেবলতে দোকানের দরজা ঠেলে বেরিয়ে গেলেন।
সে তিনি এখন যাই বলুন আর যতই হাসুন না কেন, আসল দিনে বেনারসী
পরে আমাকে যে ওঁর থেকে একশোগুণ সুন্দর দেখাবে সে নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই।
শুভ নববর্ষ!
ReplyDeleteআচ্ছা একটা কথা আমার মাথায় ঢোকেনা, সব লোকে যা পরবে সামনের বছর সেরকম জিনিস কেউ সখ করে কেন কেনে?
আমার বোনের বিয়ের বেনারসী কেনার পর আমায় বোন একটাই কথা বলেছিল: "আমাদের বাড়ির টা red and gold, আর ওদের বাড়ির টা green and silver" বাকিটা বুঝে নিন। :)
শুভ নববর্ষ সুগত। কামনা করি নতুন বছরে আপনার সব ইচ্ছে পূরণ হোক।
Deleteসুজাতার বর্ণনাটা একেবারে খাঁটি। কিন্তু ওই, ট্র্যাডিশন। মরিতে মরিতেও মরে না।
কিন্তু ওই বর্ণনার মধ্যে একটা রেফারেন্স লুকোনো রয়েছে নিশ্চয় ধরতে পেরেছেন?
Deleteসেরেছে। হ্যারি পটারের বিভিন্ন হাউসের রঙের রেফারেন্স কি?
Deleteঠিক! ঠিক!!
Deleteযাক বাবা, পাশ করে গেছি। বছরের প্রথম দিনে এইটা না পারলে আর কিছু বলার থাকত না।
DeleteIshhh prothomei nijeke Gryffindor bole esatblish kore feleche. Ar kauke no paroa.
DeleteKuntala, shubho nabo borsho'r shubhecha. Onyer sari kinte jerokom bhalo laage, nijer ta kinte toto tai baaje. Tai no comment on shopping.
আরে শাড়ির রং দিয়ে কী প্রমাণ হয় বং মম। আমার যা চরিত্র তাতে আমাকে প্রথমত হগওয়ার্টসে নিত না, আর নিলেও হাফলপাফ বা র্যাভেনক্ল-তে ফেলে রেখে পচাত।
Deleteআপনাকেও শুভ নববর্ষের অনেক শুভেচ্ছা জানাই। শপিং-এর দুঃখ ভাগ করে নিচ্ছেন দেখে সান্ত্বনা পেলাম।
bharatborshe tradition is like a leech...charano khub kothin kaaj!!!!
ReplyDeletenabobarsher anek subhechha roilo. nutan bochore abantor fule fepe boro hoye utuk. btw, bou-bhat er benaroshi ta ki ronger?
ReplyDeleteসে তো বটেই শম্পা। সব ট্র্যাডিশন খারাপ নয় মানছি, কিন্তু বেশিরভাগই শিউরে ওঠার মতো। বিপদটা হচ্ছে, বেশি ক্ষতিকারক ট্র্যাডিশনগুলোকে ফাইট করতে গিয়ে শক্তি ফুরিয়ে যায় (মানে আমার মতো কমজোরি লোকেদের), তখন এই চুনোপুঁটি ট্র্যাডিশনগুলো, যেমন সোনার গয়না, বেনারসী, এইগুলোতে মাথা পাতা ছাড়া রাস্তা থাকে না।
Deleteতোমাকেও নতুন বছরের অনেক শুভেচ্ছা শম্পা। নতুন বছর খুব ভালো কাটুক, তুমি আরও অনেক ভালোভালো গোয়েন্দাগল্প পড়, আরও নতুননতুন জায়গায় বেড়াতে যাও, অবান্তরের প্রতি তোমার সুনজর বজায় থাকুক।
এই রে, এই তথ্যটা আমি কায়দা করে চেপে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম কারণ শাড়িটা যদিও খুব সুন্দর কিন্তু রংটা শুনলে অনেকেই মুখ ভ্যাচকাতে পারেন। আমার বৌভাতের বেনারসীটা হলুদ রঙের শম্পা।
মুখ ভ্যাচকালেই চলবে? আমার মায়ের বিয়ের বেনারসী হলুদ রঙের।
Deleteওহ, তাহলে তো হয়েই গেল। এবার থেকে বুক ফুলিয়ে আমার বৌভাতের বেনারসীর জয়গান গেয়ে বেড়াব।
Deleteএখানে অবশ্য একটা ছোট্ট ডিসক্লেমার দিয়ে রাখা ভালো: আজ বিয়ের ৩৩ বছর পরেও আমার বাবা আমার মা কে ওই সাড়িটা নিয়ে ঠাট্টা করে।
Deleteদেখেছেন, আবার ঘাবড়ে দিচ্ছেন। কী জ্বালা।
Deleteholud mane jholmole roddur aar surjomukhi! mukh bhengchalei holo naki??
ReplyDeleteআহা, মন খুশি করে দিলে শম্পা। থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ।
Delete:-) bhalo lekha ..halud e lajja paoar kichchu nei,amar boubhter benarashi ujjwal kamala,porle agun jwalche mone hoy ;-) ;-),tai pore ami may maser garame bie korechi.....otoeb bhoy pasna!
ReplyDeleteনানা আমি লজ্জা পাচ্ছি না তিন্নি। খালি বলতে একটু ভয় পাচ্ছি আরকি। তবে সবাই ভরসা দিয়েছে যখন তখন এবার থেকে সেটাও পাব না।
DeleteAmar mastuto didi'r sari kena hoyechilo Mohini mohan theke (aadi/asol/nokol konta jani na). Okhane abar salesman rai sari pore dekhachhilo... ekdom kuchi-aanchol soho... darun drishyo chilo seta.
ReplyDeleteহাহাহাহাহা টিনা, এইটা জানলে আমি আদি/আসল/নকল মোহিনীমোহনেই যেতাম। ফ্রিতে মজা পাওয়া যেত। তবে না যাওয়ার পেছনে সব দোষ ঋতুপর্ণার। ওঁর ওই হাসিমুখে আঙুল নেড়েনেড়ে "আদি মোহিনী মোহন কাঞ্জিলাল" বলা দেখে আমার গোটা দোকানটা থেকেই ভক্তি চটে গেছে। আমার অনেক বন্ধুরও এটা হয়েছে শুনেছি। বিজ্ঞাপনের এরকম বুমেরাং এফেক্ট আমি আর দেখিনি।
Deleteha ha ha, eita pore khub haschhi, emon obhignota khub kom hoi :-D
Deleteভাগ্যিস কম হয় ইচ্ছাডানা। এ জিনিস ঘনঘন ঘটলে আর দেখতে হচ্ছিল না।
DeleteNabobarsher anek subhechha roilo !! sarir galpo darun. Ei jonye kobe theke bose achhi, shopping er galpo gulo kobe tumi rosie rosie abantor e likhbe :-)
ReplyDeleteআপনার আর আপনার বাড়ির সবার জন্য নতুন বছরের অনেক শুভেচ্ছা ইচ্ছাডানা। নতুন বছর খুব ভালো কাটুক।
Deleteশপিং-এর প্রাণঘাতী অভিজ্ঞতাগুলো নিজেরই হজম হতে এত সময় লেগে যাচ্ছে যে আর গুছিয়ে লিখে ওঠা হচ্ছে না আসলে।
Onek dhonyabad. :-)
Deleteha ha ha. pranoghatii bote :-)
bah! khub mishti laglo poRe! ebar ektai demand. PLEASE saRi ta poRa ek khana photo dio :)
ReplyDeleteamar Dida-r ekta benarosi ache. dudhe alta rong, halka sonali kaaj kora. Dima khub forsa, onake hebby legechilo nischoi. amake ta na lagleo, ami thik kore rekhechi, hum wohi pehnega :)
তোমার এই প্ল্যানটায় আমার সর্বান্তকরণে সমর্থন রইল সুমনা। দিদার ভিন্টেজ শাড়ি পরে বিয়ে, আহা শুনেই মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। তোমাকে দিদার মতো, কিংবা তার থেকেও বেশি সুন্দর লাগবে শাড়িটা পরে, তাতে আমার কোনও সন্দেহই নেই।
Deleteamar abar sari selection e bisesh dokhhota ache(loke bole obosso),tai ektu feminist(:P)post holeo apnar sarir golpo bhalo e laglo..
ReplyDeleter dhakeswari r sathe amar kichu golpo joria ache..tai alada bhabe pochondo holo..good good..:)
ওহ, আপনি তো তাহলে বাজার করায় মহিলাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী সৌমেশ। এটা খুব বিরল গুণ।
Deleteshubho nobo-borsho kuntaladi, prothom dinei darun ekta lekha!
ReplyDeletebaki aar ki ki shari kinle? babba! biye kora ta ekta porbo bolo?
ta biye-te porar juto pochondo holo shesh mesh?
ami bohu khunje khunje je juto ta kinechilam, biyer din sheta most of the time khule pujoe boshte holo, boubhaat er din ghagra-r ghere she juto lukie roilo aar ekhon either amar suitcase e ba ma-r divan er bhetore she juto jora poch-che!
শুভ নববর্ষ পরমা, অনেক শুভেচ্ছা নিয়ো, নতুন বছরে যা চাও তাই পেয়ো।
Deleteআর মা কী কী সব কিনে রেখেছে, তাঁত, জামদানি, এই গোছের। আমি নিজে পছন্দ করে একটা সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্ক কিনেছি নাল্লি থেকে।
জুতোও হস্তগত করে ফেলেছি পরমা। সে জুতোর কপালেও তোমার জুতোর ভবিতব্য নাচছে বলেই আমার ধারণা।
পর্ব বলে পর্ব? আমার সবথেকে কষ্ট হচ্ছে মাবাবার জন্য। আমি করছি বিয়ে, আর চরকিপাক খেয়ে মরছেন ওঁরা। কী খাটুনি বাপরে। আমি ডিসিশন নিয়ে ফেলেছি, আমার ছেলেমেয়েকে বলব, ইলোপ করে ছাড়া খবরদার বিয়ে করবে না।
wow darun to. biye te laal, r boubhaate holud. khub manabe. r tarpor chobi to dekhboi tomar oi sari gulo pore :)
ReplyDeleteshubho naboborsho :)
আরে আত্রেয়ী, মানালেই ভালো। ছবি যদি ভালো ওঠে, তবেই দেখাব কিন্তু, আগে থেকে বলে রাখলাম।
Deleteতোমাকেও শুভ নববর্ষের অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা জানাই।
যেটা তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে তা তোমার খুঁজতে খুব বেশি সময় লাগে না । কেনাকাটির ব্যাপারে এটা আমার সঙ্গে খুব ঘটে যায় । তোমার ও তাই হয়েছে দেখলাম। খুব সুন্দর দেখাক তোমাকে ওই দিনগুলোতে ।
ReplyDeleteমিঠু
যা বলেছ মিঠু। দুখানা শাড়িই আমি দুমিনিটে পছন্দ করেছি। আমার বাবার প্রিয় প্রবাদ এইটাই, দানে দানে পে লিখখা হ্যায় খানেওয়ালে কা নাম। আমারও তেমনি বেনারসীর গায়ে নাম লেখা ছিল আরকি।
Deleteদেখেছেন! এটা আমার দাদুরও প্রিয় প্রবাদ ছিল।
Deleteওই যে কী একটা কথা আছে, গ্রেট মেনদের ভাবনাচিন্তা নিয়ে, এখানেও সেরকমটাই ঘটেছে আরকি সুগত।
Deleteএমা, সত্যি সত্যিই কাকীমা 'বেঁধে বেঁধে' বলে উঠেছিলেন নাকি? আর তুমি নিশ্চিন্ত থাকো দি, ঐদিন ঐ শাড়ি পরে তুমি মোটামুটি ডানাকাটা পরীর চেয়ে কম কিছু লাগবে না।।
ReplyDeleteশুভ নববর্ষ দি।
শুভ নববর্ষ আবির। নতুন বছর খুব ভালো কাটুক। আর তুমি যে আমাকে ডানাকাটা পরী দেখাবে বললে, সেই জন্য তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
Deleteআরে না আবির, আমার মা খানিকটা পাগল হলেও পুরোটা হতে এখনও দেরি আছে। আমি একটু রং চড়িয়ে বলেছি আরকি। মা "থাক থাক, এতেই হবে" গোছের কিছু বলেছিল বোধহয়।
Shubho naboborsho... bochhorta emni e spl. [jiboner sob theke spl. din ta achhe bole], aro spl. hoye uthuk jate tomar ar oi "sottiy spl. kina" sei status niye kono sondeho thake...
ReplyDeleteei saree choice er byapare tumi amar kachhakachhiy achho dekhchi.. ami gariahat er select stores e giye one of the totyer saree kinte giye bolechhilum, "dada bomkai achhe - rust colour - black par" jeta bar kore diyechhilo, setai pack kore dite bolay dokandar i thotomoto kheye aro kota dekhun bole aro ducharte combination ber korechhilo... sesob bhokti bhore dekhe ami amar 1st choice tai kine beriye eshechilum.. similary pink-sada dhakai, baby pink jamevar etc. kinechhilum... mohila shopper der nam e kolonko puro..
হাহাহাহা, তোমার শাড়ি পছন্দ করার গল্পটা দারুণ সোহিনী। একেবারে প্রিসাইজ চাহিদা। আমাদেরও দোকানদারেরাই ঝুলোঝুলি করছিল, আরও দেখুন আরও দেখুন বলে। কী বিপদ বল দেখি?
Deleteতোমাকেও আমার আর অবান্তরের তরফ থেকে শুভ নববর্ষের অনেক অনেক প্রীতি শুভেচ্ছা জানাই সোহিনী। তোমার আর তোমার পরিবারের সবার নতুন বছরটা খুব ভালো কাটুক।
Subho Noboborsho Kuntaladi.Biyer somosto golpo e besh mojar hoche, bhalo bapar. tomay bole rakhi amar o benarasi dhakeshwari theke kena.Aar haan jotoi bolo na kano dinta kintu sotti e special hoy, sobichu ayojon tomar jonyo, sobar attention tomar dike, sobar ashirbaad tomar jonyo besh bhalo bapar go. biyer din sokale aro beshi kore bujhbe....hehe. tomar jonyo oneek oneek suvecha r bhalobasha roilo.
ReplyDeleteরাখী, তোমাকেও শুভ নববর্ষের অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা সত্যি খুব ভালো জিনিস কিন্তু "sobar attention tomar dike" পার্টটাই প্রাণঘাতী। তবে যুগযুগ ধরে সবাই যখন দিব্যি সব অ্যাটেনশন সামলে দিচ্ছে তখন আমিও নিশ্চয় পারব। কী বল?
Delete