প্রেমপত্র
প্রেমপত্র
লেখার সুযোগ আমার জীবনে প্রথম এসেছিল ক্লাস টু-তে পড়াকালীন। প্রেমট্রেম কিছু নয়,
প্রেমপত্র লেখার যোগ্যতা আমি অর্জন করেছিলাম স্রেফ হাতের লেখার জোরে। প্রেম কথাটাই
আমি তখন জানতাম না। অন গড ফাদার মাদার। ব্যাপারটা খায় না মাথায় দেয় সেটা জানতে
আমার লেগে গিয়েছিল আরও পাক্কা এক বছর। ক্লাস থ্রি-তে ওঠার পর স্কুল ছুটি হওয়ার সময়
দুপুর দেড়টা থেকে পিছিয়ে সাড়ে তিনটে হয়ে গেল, পেনসিলের বদলে নিবপেনে লেখা শুরু হল,
আর একদিন বাংলাক্লাসের মধ্যিখানে মেজদি’ভাই যেই না একটুক্ষণের জন্য পিছন ফিরে
ব্ল্যাকবোর্ডে কী সব লিখছেন অমনি পাশ থেকে ঝুঁকে পড়ে উ আমার কানে ফিসফিস করে বলে
দিল, “জানিস, স না দ-দা’র সঙ্গে প্রেম করে।”
খুবই
অন্যায় কথা, কারণ দ-দা’র প্রেমে স-এর থেকে আমার অধিকার কিছু কম ছিল না। গোটা ক্লাস
টু-র শেষটা জুড়ে আমি গুচ্ছগুচ্ছ চিঠি লিখেছি দ-দাদাকে। লিখেছি মানে স ব্যাসদেবের
মতো আউড়ে গেছে, আমি গণেশচন্দরের মতো লিখে গেছি। দ-দাদা আমাদের এক ক্লাস ওপরে
পড়তেন। আমাদের বালিকা বিদ্যালয়ে ক্লাস ফোর পর্যন্ত ছেলেদের পড়া অ্যালাউড ছিল। দ-দাদা
ছিলেন সেই গুটিকতক ছেলেদের মধ্যে একজন, যাদের বাবামা আলসেমো করে তখনও অন্য স্কুল
খুঁজে উঠতে পারেননি। যদ্দিন থাকা যায় পাড়ার স্কুলেই থাকুক, এই বলে তাঁরা নাকে তেল
দিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন।
তাতে
অবশ্য দ-দাদার সুবিধেই হয়েছিল। দ-দাদা এমন কিছু মডেলোচিত দেখতে ছিলেন না, যদ্দুর
মনে পড়ছে কিছু কিছু শব্দ তাড়াতাড়ি বলতে গেলে সম্ভবত তাঁর জিভ আটকেও যেত, কিন্তু তা
সত্ত্বেও মেয়েমহলে, বিশেষ করে একক্লাস নিচের মেয়েদের মধ্যে, দাদার জনপ্রিয়তা ছিল দেখার
মতো। সকলেই টিফিন পিরিয়ডে লুকিয়ে লুকিয়ে দ-দাদাকে চিঠি লিখত। (সবাই লিখত না বলাই
বাহুল্য, আমার মতো হাবলুরা খালি টুকত।) কেন লিখত তার একমাত্র ব্যাখ্যা হতে পারে,
হাতের কাছে অন্য কোনও দাদার অনুপস্থিতি। পৃথিবীর বাকি সব ব্যাপারের মতোই প্রেম
ব্যাপারটাও যে স্রেফ সাপ্লাই আর ডিম্যান্ডের দড়িটানাটানির খেল, সেটা তখনই আমার
বোধগম্য হওয়া উচিত ছিল। সেটা যে হয়নি তার কারণ, আবারও, আমার অগাধ হাবলুপনা।
শুনেটুনে
বান্টি বলল, “হ্যাঃ”। বান্টি একা নয়, প্রেমপত্র আউটসোর্সিং-এর ব্যাপারটা যে আসলে
কী ভীষণ প্রচলিত, সেটা খুব কম লোকেই আন্দাজ করতে পারে। ক্লাস টু-য়ের এঁচোড়ে পাকা
বালিকারা তো বটেই, রীতিমত প্রাপ্তবয়স্করাও নিয়মিত এই কাজটা করে থাকে। কলেজে তো আমি
নিজেই কত লোকের প্রেমপত্র লিখে দিয়েছি। তবে তখন শুধু হাতের লেখায় কাজ সারা হত না,
চিঠির বিষয়বস্তুও মাঝে মাঝে আমাকেই জোগাতে হত। আমিও এমন খেলিয়ে লিখতাম, যেন নিজেই
প্রেম করছি। এখন ব্যাপারটা কল্পনা করে নিজেকে সাইকোপ্যাথ মনে হয়, কিন্তু বিশ্বাস
করুন তখন আমি আক্ষরিক অর্থেই ছিলাম নিষ্পাপতার প্রতিমূর্তি। যে সব লোককে চিঠি লেখা
হত, তাদের কাউকে আমি কখনও চোখেও দেখিনি, দেখার বিন্দুমাত্র সাধও ছিল না।
ইউনিভার্সিটিতে
উঠে লোকের প্রেমপত্র লিখে দিইনি আর, কিন্তু চেক করে দিয়েছি গুচ্ছের। মনের ভাব ঠিক ঠিক
প্রকাশ পেয়েছে কি না, সেকেন্ড প্যারার স্বামী বিবেকানন্দের কোটেশনটা খাপছাড়া
শোনাচ্ছে কি না। ততদিনে অনেক ঘাটের জল খেয়ে আমার ঘটে বুদ্ধি খানিকটা খুলেছে, এটুকু
অন্তত বুঝতে পারতাম যে কেউই সত্যি কথাটা শুনতে আসেননি আমার কাছে। পত্রখানা যে ভালো
হয়েছে সে বিষয়ে লেখকের কোনও সন্দেহ নেই, কতখানি ভালো হয়েছে সেটা আরেকজনের কাছ থেকে
ভেরিফাই করে নেওয়াটাই উদ্দেশ্য। আমিও হাত খুলে প্রশংসা করতাম। বিশেষ করে স্বামী
বিবেকানন্দের কোটেশনের ব্যবহারটা তো---জাস্ট একঘর। এ জিনিস পড়ে যদি কারও প্রেম না
জাগে, তবে সে অলম্বুষের প্রেমে না পড়াই উচিত।
লোকে
প্রেমে পড়তও। আমার সমস্ত যুক্তিবুদ্ধিকমনসেন্সকে মোক্ষম ল্যাং মেরে। চিঠির রিভিউ
দেওয়ার তিনদিনের মধ্যে দেখতাম চিঠির লেখক এবং পাঠক, ডিনারের পর রিং রোডে মৃদুমন্দ
পায়চারি করে বেড়াচ্ছেন। এমনই নিবিষ্টমনে কথোপকথন চলছে যে দু-হাত দূর থেকে প্রাণপণ
হাত নাড়া সত্ত্বেও আমাকে দুজনের কেউই দেখতেই পাচ্ছেন না। কথামৃত আলোচনা হচ্ছে
নির্ঘাত।
আমার
মতো অবিশ্বাসীদের থোঁতা মুখ ভোঁতা করতেই বোধহয়, চোখের সামনে কত সাচ্চা প্রেম ভেঙে চুরমার
হয়ে যেতে দেখলাম, বিবেকানন্দের বাণী দিয়ে শুরু করা সবক’টা প্রেম এখনও হইহইরইরই করে
টিকে আছে।
পরের
প্রেমপত্র লিখে লিখে আর পড়ে পড়ে যখন সমগ্র মানবজাতির প্রতি আমার বিশ্বাস টলব টলব
করছে, এমন সময় এক কাণ্ড ঘটল। দুড়দাড়িয়ে নিজেই প্রেমে পড়ে গেলাম আমি। উঁহু, কথাটা
ঠিক হল না। দুড়দাড়িয়ে প্রেমে পড়ছি আমি সেই ক্লাস সেভেন থেকেই, এবার যেটা অন্যরকম
ঘটল সেটা হচ্ছে আমি যার প্রেমে পড়েছিলাম সেই লোকটাও উল্টে আমার প্রেমে পড়ে গেল।
সে
এক ভয়ংকর অবস্থা। ঘুম নেই, খিদে নেই, পড়াশোনার কথা তো ছেড়েই দিলাম। রাত জেগে জেগে
কথা বলে চোখের তলায় অমাবস্যার কালি, ফোনের বিল দিতে দিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি।
এসব কিছুই আমি গায়ে মাখতাম না--- স্বাস্থ্য আর টাকা, দুটোর কোনওটাই আমার প্রায়োরিটি
ছিল না তখনও, এখনও নেই---যদি না আরও বড় সর্বনাশটা ঘটত।
আমি
প্রেমপত্র লিখতে শুরু করলাম। নিজের জন্য, জীবনে প্রথমবার। সেই ক্লাস টু থেকে যত
অবিচার হয়েছে আমার ওপর, প্রেমহীন যত প্রেমপত্র আমাকে লিখতে হয়েছে, ক্ষমার অযোগ্য যত
প্রেমপত্র পড়ে উচ্ছ্বসিত হাততালি দিতে হয়েছে---সবের প্রতিশোধ নিতে আমি মরিয়া হয়ে উঠলাম।
চলতেফিরতে উঠতেবসতে নাইতেখাইতে আমার মাথায় কেবলই চিঠির কথা ঘুরতে লাগল, কতরকম প্যাঁচ
খেলিয়ে প্রেমকে পাতায় বন্দী করা যায় অহোরাত্র সে ফন্দি করতে করতে পাগল হওয়ার
উপক্রম হল। প্রেমপত্রকে শুধু পত্রের বেড়িতে বেঁধে না রেখে সার্থক সাহিত্য করে
তোলার সংগ্রামে, সারাদিনে যে ঘণ্টাদুয়েকের ঘুম বাকি ছিল, সেও উড়ে যেতে বেশিদিন
লাগল না।
আর
এত পরিশ্রম করে, তাড়াতাড়া সাদা কাগজের এপিঠওপিঠ ভর্তি করে আমি যে লক্ষলক্ষ শব্দ
উৎপাদন করেছিলাম, নিজে মুখে স্বীকার করছি, তার জায়গায় গোটা বিবেকানন্দ রচনাবলী
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টুকে দিলেও ক্ষতিবৃদ্ধি কিছু হত না। সে চিঠির কথা মনে পড়লেও
আমার রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে, ল্যাপটপ নিয়ে হিমালয়ে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে।
গল্পউপন্যাসে
পড়েছি পুরোনো প্রেমপত্র নাকি ডেঞ্জারাস জিনিস। ব্ল্যাকমেলের উৎকৃষ্ট অস্ত্র।
বর্তমান ভালোবাসার হাতে প্রাক্তন প্রেমের সাক্ষ্যপ্রমাণ এসে পড়লেই আর রক্ষা নেই,
গৃহশান্তির মহাপ্রস্থান। আমার কোনওদিনই ব্যাপারটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। কবে কাকে
প্রেমের ঘোরে কী লেখা হয়েছে, সেই নিয়ে অত দক্ষযজ্ঞ, সুস্থ লোকে করে নাকি? এখন
অবশ্য জানি, করে। কেন করে সে সম্পর্কেও একটা ধারণা আছে। আমাকে ব্ল্যাকমেল করার
ইচ্ছে থাকলে আমার পুরোনো প্রেমপত্র নিয়ে অর্চিষ্মানের কাছে যাওয়ার দরকার নেই, আমার
কাছে এলেই যথেষ্ট হবে। ও জিনিস লোকচক্ষুর আড়ালে রাখার জন্য আমি হেসেখেলে চড়া দাম
দিতে রাজি আছি।
আমার
সাহিত্যকর্মের বদলে অনেকগুলো চিঠি পেয়েওছিলাম অবশ্য। অনেকদিন পর একদিন বুকশেলফ
গোছাতে গিয়ে অন্ধকার কোণা থেকে সেগুলো বেরিয়ে পড়েছিল। হাতে নিয়ে অবাক হয়ে
গিয়েছিলাম। একসময় এই চিঠিগুলোর এক একটাকে ছুঁলে নিজের হৃৎপিণ্ডের শব্দ স্পষ্ট
শুনতে পেতাম আমি। আর এখন? এত যত্নে বান্ডিল করে রাখা এতগুলো চিঠি একসঙ্গে হাতে ধরে
আছি, একতাল ঠাণ্ডা কাগজের স্পর্শ ছাড়া আর কিচ্ছুটি টের পাচ্ছি না। প্রেমপত্রের
প্রেমটুকু পালিয়ে গেলে কী পড়ে থাকে? পত্র নয়, পত্রের মৃতদেহ।
সেই মরা চিঠি আর রাখিনি আমি। আমার একমাত্র আশা, আমার দিক থেকে পাঠানো চিঠিগুলোরও যথাযোগ্য সৎকার হয়ে গেছে এতদিনে। ফিরে এসে আমাকে লজ্জা দেওয়ার ক্ষমতা ওদের আর নেই।
সেই মরা চিঠি আর রাখিনি আমি। আমার একমাত্র আশা, আমার দিক থেকে পাঠানো চিঠিগুলোরও যথাযোগ্য সৎকার হয়ে গেছে এতদিনে। ফিরে এসে আমাকে লজ্জা দেওয়ার ক্ষমতা ওদের আর নেই।
প্রেমপত্র আমিও ঢের লিখেছি। যদ্দুর মনে পড়ে, তার মধ্যে একটি পড়ে পাঠিকা বেজায় ইম্প্রেসড হয়েছিলেন... বলা বাহুল্য সেই পত্রটি আমার নিজের, কারও জন্য লেখা প্রক্সিপত্র নয়। প্রক্সিপত্র পড়ে কোন পাঠিকা ইম্প্রেসড হয়েছিলেন কি না, সেটা আমার জানা নেই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে দুয়েকটা পড়ে হয়ত পাঠিকারা উহ লা লা টাইপের রিয়্যাকশন দিয়েছিলেন, কিন্তু আমার প্রাণের বন্ধুরা নির্ঘাত ক্রেডিটটা নিজের নামেই নিয়েছে।
ReplyDeleteকিন্তু পুরনো প্রেমপত্র ছিঁড়ে ফেললেন কেন? কৈশোরের নিষ্পাপ সব চিন্তা, কেবল মাত্র আমরা নিজেদের ভালোভাবে এক্সপ্রেস করতে পারতাম না বলেই ফেলনা হয়ে গেল? প্রেমের এক্সপ্রেশনটাই সব, সালা প্রেমটা কিছু নয়? অ্যাঁ?
আমার লাস্ট প্রেমটা লং ডিস্ট্যান্স ছিল, ফোন বিল আসত মাসে গড়ে সাত হাজার টাকা। আর এখন গিন্নিকে খুবই ভালোবাসি, কিন্তু তাঁর সাথে ফোনালাপ দু-মিনিটের চেয়ে এগিয়ে আড়াই মিনিট হতে পারে না। এখন প্রেমটা আছে, কিন্তু প্রেমের কথা ফুরিয়ে গেছে... সেই ফুরিয়ে যাওয়া কথাগুলো আপনার পুরনো প্রেমপত্র ঘাঁটলে পাবেন।
এই রে দেবাশিস, এইখানটায় এক্কেবারে মিলল না। পুরোনো প্রেমপত্র ঘেঁটে পড়া? তার থেকে আমি বরং উনিশকুড়ি ম্যাগাজিনটা গাঁটের টাকা দিয়ে কিনে পড়ব। লিখতে গিয়ে খুব শ্যালো মনে হচ্ছে নিজেকে, কিন্তু আই গেস্ আমি সবকিছুকেই খুব হারজিত দিয়ে বিচার করি। যে প্রেমটা হেরে গেছে, সে সংক্রান্ত সমস্ত স্মৃতি, চিঠি, কথা, ফোনের বিল---সবই আমার কাছে হারের রিমাইন্ডার। অফ কোর্স, প্রেমের হারজিত কীসে ঠিক হবে সে প্রশ্ন আমাকে করলে আমি বিপদে পড়ে যাব...
Deleteঅন্য আরেকদিক থেকে দেখলে আমি আপনি একই দলের অবশ্য, প্রেমটাই যখন রইল না, তখন প্রেমের এক্সপ্রেশনগুলো রেখে আর কী হবে?
ekhon prem patra noy prem txt hoy....tai no proxy, no hatey lekha, no chhinre fela!!!
ReplyDeleteএখন শুধু ডিলিট, কত ইকোফ্রেন্ডলি বল দেখি শম্পা...আমাদের সময় যদি এই টেকনোলজি থাকত, হায় রে...
DeleteAmi konodin prempotro likhini. Shudhu class eightey ishkooleri ek seniorer premey habudubu kheye diste diste kagoje shudhu kobita likhtam. Ingrejite. Sey je ki kharap kobita tomay ki bolbo. Bhablei ekhono shiure uthi.
ReplyDeleteAmio bidey korechhi sesob khatapotro, kobita, ityadi. Bhagyish ar kauke sei kobita porte diyini kokhono. Tahole kelenkari kando hoto. :/
আমি সরি বিম্ববতী, তোমার নিশ্চয় খুবই কষ্ট হয়েছিল সেই সময়, কিন্তু আমি যতবার ভাবছি ক্লাস সেভেনের বিম্ববতী ভীষণ গম্ভীর মুখে বিরহের কবিতা লিখছে, দুঃখের বদলে কেবলই অট্টহাস্য আসছে। তবে তুমি নিজের প্রতি বেশি কঠোর হচ্ছ, আমি যা সব প্রেমের কবিতা পড়েছি, তাদের থেকে যে তুমি একশোগুণ ভালো লিখতে সে নিয়ে কোনও সন্দেহই থাকতে পারে না।
DeleteIshh pore theke khub haschhi. Amar nijer kintu e sujog kakhonoi asheni, eto beshi rakom briddho chhilam moner dik theke je 'Prem' er proti akorshon hote hote chule pak dhore giechhilo, ete aro indhon jugiechhilo amar kora 'Girl's school' . ar je boyese gie preme porlam takhon barir lok hnaf chhere bneche preme pora loktir songe chhute eshe bie die dilo, ar loktio amar moton-i janmo buro. Amader dujoneri tai ektu afsosh theke gachhe - thikmoton kore prem kora ar e janme holona, mane oi prempatro tatro likhe tike ... :-)
ReplyDeleteবুড়ো! আপনি!! কই সে রকম কোনই লক্ষণ তো আমি হাবেভাবে টের পাইনি। অবশ্য বুড়ো হওয়াটা যে খারাপ সেটা আমি মরে গেলেও বলব না। কিন্তু এটা বলবই, যে প্রেমে পড়া (বা প্রেমপত্র লেখার) সঙ্গে বয়সের কোনও সম্পর্কই নেই। আমি বরং এটাও বলতে রাজি আছি, যে ইতিহাস, ভূগোল, ইংরিজি, চিতল মাছের মুইঠ্যা...এই সব কিছুরই মতো প্রেমটাও প্র্যাকটিসে ভালো হয়। প্র্যাকটিসের সময় বেশি পাওয়া যায় বলে, ছোকরাদের থেকে বুড়োরা উইদাউট ফেল বেটার প্রেম করতে পারে।
Deleteকাজেই আফসোসের কোনও কারণই নেই। এখনও ঢে-এ-এ-এ-এ-র সময় হাতে আছে প্রেম করার।
কেলাস টু-তে প্রথম প্রেমপত্র! ওটা টুয়েলভ লিখতে গিয়ে ভুল করে টু লিখে ফেলনি তো! তখন তো নিজেকে চেনাই সম্পূর্ণ হয় না! তার পরে বিপরীত লিঙ্গকে চিনতে পারা, আকর্ষণ অনুভব করা, প্রেমে পড়া এবং পত্র লেখা - সব ৮ বছর বয়সে! বাবা রে!
ReplyDeleteউঁহু, ওটা ক্লাস টু-ই হবে। তবে আমি তখন নিজেকে চিনতাম না, স চিনত, ওর হয়ে আমি পত্র লিখতাম। তবে প্রেম যখন করতে শুরু করেছিলাম, তখনও নিজেকে চিনতাম না। এখনও চিনি না। কাজেই সে অপেক্ষায় না থেকে ভালোই করেছি।
Deleteamar bou amar purono prempatro orte darun pachhondo kore..sutorang sei chitigulor besh kichhuta ekhono roe gechhe. :)
ReplyDeleteযাক, প্রেমপত্রগুলো তাহলে এখনও কাজে লাগছে রাজর্ষি। এটা ভালো ব্যাপার।
Deleteaaro interesting holo eta je prempatrogulo sab je ama bou-kei lekha hoechhilo, temonti noy.. :D
Deleteহোয়াট!!! এইবার সত্যি সত্যি মুখ হাঁ করেছি। আপনার স্ত্রী সত্যি অন্যরকম বলতে হবে রাজর্ষি। আমি সত্যি ইমপ্রেস্ড্।
Deleteফেলু মিত্তির একটা কথা জানতে চেয়েছেন- রাজর্ষি তাঁর স্ত্রীকে নিজের লেখা প্রেমপত্র পড়ান, খুব ভালো কথা। সেই প্রেমপত্র সবগুলো আবার স্ত্রীকে লেখা নয়। ইন দ্যাট কেস, রাজর্ষি ওই প্রেমপত্র গুলো পেলেন কোথায়? ফেলু মিত্তিরের মাথায় দুটো অপশন ঘুরছে...
Delete১ রাজর্ষি তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকাদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে পুরনো প্রেমপত্র গুলো জোগাড় করেছেন
২ রাজর্ষি আগে যখন প্রেমপত্র লিখতেন, তখন নিজের কাছে একটা জেরক্স কপি রেখে দিতেন
Exactly ei kotha-ta amaro mathay ghurchhilo....tobe uni onake lekha premikar chithigulor kotha bolchhen ki ? :....eta Topsher proshno ?
DeleteJaak, prempotro ghotito rohoshyeo Pheluda sheshmesh namchhen dekhe bhalo laglo :):)
hya, eta sadharonoto sherlock holmes er area..
Deletelekhata pore khub maja pelam,ami konodin prempatro likhini,jathesto berashik bolei mone hocche nijeke :( :( ...tor class 2 r prempatro ta khuje ber kar :)o jinish hariye jaoa paap, :p
ReplyDeleteওহ্ ওটা তো আমার কাছে নেই, তিন্নি।
DeleteApni to moha denpo chilen bolte hobe..class 2 te prem potro likhten!!oi boyese ami nijer nam e banglay thik kore likhte partam kina sondeho, tay abar prem potro...
ReplyDeletelekhata ekdom ekghor hoyeche...sudhu last e oi kanondebi type na hole just jome khir!!
আমি চিরকালই ডেঁপো সৌমেশ।
Deletedaroon prem patra likhechen jean paul sartre simone de beauvoir ke. tumi ekhon paris e achho...enader tow paris er "power couple" bola hoto. eder priyo hangout joint chilo le dome cafe near eiffel. parle ekbar okhane jeo....coffee ta besh bhalo kintu khabar besh baje!
ReplyDeleteতাই? আচ্ছা যাব তো।
Deleteতোমার কেলাস-টু র প্রক্সি প্রেমের গল্প শুনে আমারও ইঁচরে পাকামির কিছু গল্প মনে পরে যাচ্ছে। আর আমারও কেলাস টু। আমার এক সম্পর্কিত পিসি (মোটে ১ বছরের বড় আমার থেকে) তখন তৃতীয় শ্রেনী। একদিন ফিস্ফিস্ করে বলল, "জানিস, বি না, গো-র সাথে 'পেম' করে।" পেমটা কি বস্তু জানিনা ঠিকই কিন্তু সেটা তো পিসিটিকে জানতে দিলে চলবে না। তাই ঔৎসুক্য দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "কি করে জানলে?" উত্তর এল, "দেখিস না, কুয়োতলায় বসে বি ওর টিপিন গো-কে দেয়"। আমি ভাবলুম হবেও বা। কিন্তু 'পেম' কি সেটা জানতে হবে তো। তাই ইস্কুল থেকে ফিরেই মাকে প্রশ্ন, "মা 'পেম' কি?" মা কি উত্তর দিয়েছিল মনে নেই, কিন্তু এটা মনে আছে, আমার ছোটকাকীমা রুটি সেঁকতে সেঁকতে তার বড় জা (মানে আমার মা-কে) বলেছিলেন, "অই দ্যাখো কি বলছে!"
ReplyDeleteতবে তোমার বিবেকানন্দের কোটেশন ওয়ালা প্রেমপত্রের নমুনা পেতে হেভি ইচ্ছে করছে। ছাড়ো না দু-একটা।
প্রথমেই কান ধরে জিভ কাটছি আবির। কোটেশনগুলোর কথা তোলাই যথেষ্ট ব্রিচ অফ কন্ট্র্যাক্ট হয়েছে, সেগুলো কোট করলে নরকের আগুনে জ্বলে মরতে হবে।
Deleteতবে তোমার পেমের গপ্প শুনে খুব হাসছি। এটা কিন্তু সাচ্চা পেম। টিপিন ভাগ করে খাওয়ার থেকে আপন আর কিছু হয় কি? তোমার পুঁচকে পিসি এক্কেবারে ঠিক আইডেনটিফাই করেছিলেন।
Amar bhai class 1 e porar somoye ekdin school theke ese maa ke bollo, jano maa A na B ke 'love' koreche. Ami toh shunei lafiye uthechilam, kintu maa nirbikar bhabe proshno korlo, tai naki, kothay? Bhai bollo, gaal e. Maa abar nirbikar bhabe bollo, achha. Abir er ghotona ta porey amar eta mone pore gelo. :)
Deleteহাহাহাহা, সাংঘাতিক কথোপকথন কিন্তু।
DeleteAmi jokhon class 3 te, paarar 'P' da amake bollo ekta kagoj 'C' ke diye dibi, bhishon joruri. Ami bollam, hyaan, amar bag e dhukiye dao. School e 'C' didi ke bollam, 'P' da tomar joruri kagoj ta diye pathiyeche. 'C' didi seta haate niyei bollo, 'O baba go, eta ki enechis tui?!!!' Byas, school jure hoichoi, guardian call, jibone oi ekbaar e ami maar kheyechi. Ami tokhon jantam o na, prem ki r prempotro kaake bole. Tobe poroborti kaale ami anek prem potro likhechi bondhuder jonye. Nijer jonye ekhono obdi lekha hoye otheni.
ReplyDeleteকী অন্যায় কথা টিনা! তোমার দোষ কোথায়? চিঠি লিখল P, পড়ল C, তুমি মার খেলে কীরকম? তাছাড়া দূত যে অবধ্য সেই নিয়মটা লোকজনের জানা নেই বুঝি? জঘন্য।
DeletePrem potrer ei post tar opekkhay chilam....thank you....Aj tomar ei lekhata pore ekta purono gan mone pore gelo.....ekhono shunle oshombhob prem prem bhab jäge...tokhon tomar ekush bochor bodhhoy ami tokhon oshtadoshir choyay...
ReplyDeleteওই গানটা পৃথিবীর সেরা দশটা টিনএজ প্রেমের গানের মধ্যে পড়বে, সিরিয়াসলি। আরে থ্যাংক ইউ তো আমার তোমাকে দেওয়ার কথা, তুমি বললে বলেই তো আমার প্রেমপত্র নিয়ে লেখার কথা মনে এল।
Deleteপুরো চমচম ১খানা লেখা পড়লুম এদ্দিন বাদে!
ReplyDeleteইস, চমচমের নাম শুনে খিদে পেয়ে গেল। কদ্দিন খাইনি। থ্যাংক ইউ স্মৃতিলেখা।
Deleteভালোবাসতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম আমি,,,,,,মেয়েরা যে কী মায়াবী তা প্রেমে না পরলে জানতাম না,,,?? আমার সেই ভালোবাসার মানুষটিকে দেখলে যেনো আমি হারিয়ে যেতাম,,,,এভাবে চলতে থাকে আমাদের ভালোবাসো অনেক দিন ওকে দেখার জন্য আমি প্রতিদিন বাজারে যেতাম যাতে একবার হলেও ওকে আমি দেখতে পাই,,,,আর বাজার থেকে রাত ৭ টা বাড়ি ফেরতাম, ,,,প্রতিদিন আম্মু আমার কাছে শোনতে চাইতো বাবা তুমি কোথায় গেছেলে,,,!! তাকী আর বলা যায় আম্মর কাছে যে আমি তোমার বেটার বৌকে দেখতে গেছিলাম আম্মু,,,,,বলতাম আম্মু বন্ধু ফোন দেছিলো তাই দেখা করতে গিছিলাম আমি,,,এভাবে আব্বুর চোখে ও পরা দরলাম আমি,,,,আব্বু জানতে চাইলো কউ গেছিলে বাবা ঐ যো বলতে পারতাম না ,,তখন ও বলতে পারি নাই আব্বু কাছে এভাবে আব্বু একদিন আমার পিছু পিছু গেছে যে ছেলে কী করে আজ দেখি পড়া সোনা বাদ দিয়া শুধু ঘুরা গুড়ি,,,,আমি দারিয়ে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে দেখছিলাম আব্বু দেখছিলো আসলে তখনো আমি আব্বুকেকে দেখতে পাইনাই,,,,পরে আব্বু আমার কাছে এসে বলছে বাবা আমার বেটারবৌ নাকি,,, ,,এই বলে দিলাম এক দোর আমি,,,,আর বলতে পারলাম পরে আবার বলবো কোনো দিন,,,,???
ReplyDelete