Posts

Showing posts from June, 2014

শনিরবি

Image

সাপ্তাহিকী ও ক'টি অবান্তর কথা

Image
দ্য মাদার স্পোর্ট আমি না নিলেও, আমার বাবামা আমার সংগীতশিক্ষাকে যারপরনাই সিরিয়াসলি নিয়েছিলেন। গান শেখার জন্য শুধু মাস্টারমশাই খুঁজেই তাঁরা ক্ষান্ত দেননি, তাললয়ের দিকটাতেও যাতে খামতি না পড়ে সে জন্য একজন তবলার মাস্টারমশাইকেও ধরেবেঁধে নিয়ে এসেছিলেন। মাস্টারমশাই আসতেন রবিবার সকাল দশটা নাগাদ। তারপর ঘণ্টাদুয়েক ধরে তিনতাল, ঝাঁপতাল, দাদরা, ধামার, তেওড়াতে কসরত চলত। আমি গাইতাম, মাস্টারমশাই বাজাতেন, বাবা তালে তালে মাথা নাড়তেন। একই স্থান, কাল ও পরিস্থিতিতে অবস্থান করা সত্ত্বেও আমাদের তিনজনের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। মাস্টারমশাইয়ের উদ্দেশ্য থাকত যেনতেনপ্রকারেণ আমাকে তালচ্যুত করা, আমার উদ্দেশ্য হত প্রাণপণে তালের ল্যাজ ধরে ঝুলে থাকা, বাবার কী উদ্দেশ্য ছিল সেটা বাবাই ভালো বলতে পারবেন। বলাই বাহুল্য, মাস্টারমশাই তাঁর উদ্দেশ্যে সফল ও আমি আমার উদ্দেশ্যে চরম ব্যর্থ হতাম। মাস্টারমশাইয়ের আকারটি ছিল নিতান্ত ভালোমানুষ গোছের, কিন্তু প্রকারে তিনি ছিলেন নির্মম। আমি তাল থেকে সম্পূর্ণ ছিটকে গেছি দেখেও তিনি বাজনা থামাতেন না। আমি সমে ফেরার জন্য হাঁচোড়পাচোড় করতাম, আর মাস্টারমশাই ঠিক সময়ে একটা ...

একটি জরুরি শনাক্তকরণিকা

Image
অ্যানিম্যাল ক্র্যাকার আমার প্রিয়তম বিস্কুট। ব্রিটানিয়া ক্রিম ক্র্যাকারের থেকেও আমি অ্যানিম্যাল ক্র্যাকার খেতে বেশি ভালোবাসি। কিন্তু খুব অস্বস্তি হয় যখন যে জন্তুটাকে খাই সেটাকে চিনতে পারি না। সে সমস্যা এবার ঘুচল। ছবি দেখে এটাও বুঝলাম যে সমগ্র বিস্কুটরূপী-জানোয়ারকুলে আমার প্রিয়তম হচ্ছে হিপো।   উৎস

Things I am Loving

Image
১। স্মার্টফোন  বান্টি ঘরে ঢুকে বলল, ‘দেবদীপের জন্য বড্ড চিন্তা হচ্ছে গো।’ আমি ল্যাপটপ থেকে মুখ না তুলেই বললাম, ‘কেন?’ ‘আরে, ওর ক্যাব আসতে দেরি করছে, এদিকে ম্যানেজার আগের সপ্তাহেই ই-মেলে করেছে, লেট হলেই মার্ক করা হবে, নেক্সট ইয়ার অ্যাপ্রাইজালের সময় নাকি সব লেটমার্ক গুনেগুনে দেখা হবে এবং সেই বুঝে হুড়ো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।    ‘দেবদীপটা কে?’ ‘দেবদীপ? আমার সঙ্গে নার্সারিতে পড়ত। বেহালার ছেলে।’ এবার আমাকে মুখ তুলতে হল। আমি তো একবছর আগে যাদের সঙ্গে খেতামশুতাম সিনেমা যেতাম, তাদের সঙ্গেই যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি না, বান্টি নার্সারির বন্ধুর অ্যাপ্রাইজাল নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে দেখে চমৎকৃত হলাম । ‘খুব বন্ধু ছিল বুঝি?’ ‘নাঃ।’ বলে বান্টি রহস্য করে চুপ করে রইল। তিরিশ সেকেন্ড পর বলল, ‘আহা, তখন বন্ধুত্ব ছিল না বলে কি এখন ফ্রেন্ডশিপ থাকতে নেই? আমি দেবদীপের সব খবর রাখি। ঘণ্টায় ঘণ্টায় জানতে পারি ওর ক্যাব লেট করছে কি না, ম্যানেজার বকছে কি না, এ সপ্তাহে কোন কফিশপে যাচ্ছে, সামনের সপ্তাহে কোন রেস্টোর‍্যান্টে যাবে যাবে ভাবছে, গত সপ্তাহে কী খেল . . .’ ...

মন্টু মিস্তিরির জানালা

উনিশশো সাতাশি সাল নাগাদ আমাদের বাড়ির চেহারায় অনেকগুলো পরিবর্তন আসে। যোগ হয় বারান্দাসহ একটি নতুন ঘর আর বিয়োগ হয়ে যায় বাগানের প্রায় অর্ধেক। যে ক’টা গাছ কাটা পড়ে তার মধ্যে বলার মতো ছিল একখানা কাঁটাভরা কুল আর একখানা পেয়ারা। কুলগাছ নিয়ে আমার আফসোস নেই, বেঁচে থাকলেও ও গাছ আমার কোনও কাজে লাগত না, কিন্তু পেয়ারাগাছ নিয়ে বিলক্ষণ আছে। আমাদের বাড়িতে আরও একখানা পেয়ারা গাছ আছে, বছর বছর তাতে দিব্যি ফলও ধরে, কিন্তু ঠাকুমা বলেন যেখানা গেছে সেখানার জাতই নাকি আলাদা ছিল। উনিশশো সাতাশি সাল নাগাদ আমার জীবনেও একটি পরিবর্তন আসে। আমি একখানি ডায়রি প্রাপ্ত হই। ডায়রি আমাদের বাড়িতে এমন কিছু অমিল ছিল না, জানুয়ারি মাস পড়লেই গাদাগাদা ডায়রিতে ছেয়ে যেত বইয়ের টেবিল, কিন্তু তারা সবই মান্ধাতার আমলের লাল কিংবা মেরুন নকল চামড়াবাঁধাই গামবাট ডায়রি। আমার সৃষ্টিশীলতার গোড়ায় ধোঁয়া দেওয়ার মতো সূক্ষ্মতা সেগুলোর একটারও ছিল না। ও ডায়রিতে মাসমাইনের খুঁটিনাটি আর কিষাণ বিকাশ পত্রের হিসাব রাখাই চলত শুধু । এই যখন পরিস্থিতি, তখন একদিন সন্ধ্যেবেলা অফিস থেকে ফিরে মা ব্যাগ থেকে একখানা ডায়রি বার করে আমার হাতে দিলেন। প্রথমটা আমি সে...