আউট অফ স্টেশন
রাইনব্রাইটবাখ হল
বন থেকে একুশ কিলোমিটার দূরের একটা ছোট শহর। শহর না বলে গ্রাম বলাই ভালো। আমরা
গতকাল সেখানে এসেছি একটা ট্রেনিং সংক্রান্ত কাজে। বনে বেশ মন বসে গিয়েছিল, হঠাৎ
তিনদিনের জন্য ঠাঁইনাড়া হতে হবে শুনে সকলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিল। আবার কেন? এই তো
সবে শিকড় মেলে বসেছি। সুপারমার্কেটের অলিগলি এই তো সবে কণ্ঠস্থ হয়েছে।
কিন্তু কর্তার
ইচ্ছেয় কর্ম। আবার হের এহওয়াল্ড লাল বাস নিয়ে এসে গেলেন, আবার অ্যালফন্স্ আমাদের
ঝেঁটিয়ে বাসে তুলে রাইনব্রাইটবাখে এনে ছেড়ে দিয়ে, নিজে লাল বাসের জানালা দিয়ে হাত
নাড়তে নাড়তে বনে ফিরে গেল।
আমরা হোটেলের
রিসেপশন থেকে চাবি নিয়ে যে যার ঘরে ঢুকে পড়লাম। এই অজপাড়াগাঁতেও বন্দোবস্ত ভালোই
করেছে। অ্যালফন্সের তাড়ায় সকালে এক কাপ চাও খেয়ে বেরোতে পারিনি। এদিকে ট্রেনিং
শুরু হতে দেরি আছে বেশ খানিক। কড়া করে এককাপ দার্জিলিং চা গলায় ঢেলে ক্যামেরা নিয়ে
বেরিয়ে পড়লাম। বেশিদূর যাওয়া যাবে না, তবু যতখানি এক্সপ্লোর করা যায় আরকি।
জায়গাটা নেহাতই
গণ্ডগ্রাম। সরু সরু রাস্তার দু’পাশে বাড়ি। তাদের বারান্দায় লাল ফুলের টব আর
জানালায় সাদা লেসের কাজ করা পর্দা ঝুলছে। বাড়ি যখন আছে দোকানও আছে নিশ্চয়, কিন্তু
আলো জ্বলা সাইনবোর্ড নজরে পড়েনি আপাতত। বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে যে অকারণ খানিক
পয়সা খরচ করে আসব তার জো নেই। এমনিতেই জার্মানিতে রবিবার সব পাটে পাটে বন্ধ থাকে।
সুপারমার্কেট শুদ্ধু। প্রথম রবিবার না খেয়ে মরার জোগাড় হয়েছিল। সোমবার অফিসে গিয়ে হোমরাচোমরা
কেউ মরেছে-টরেছে নাকি জিজ্ঞাসা করতে অ্যালফন্স্ হো হো করে হেসে বলেছিল, বালাই
ষাট, মরবে কেন। রবিবার বলে কথা। দোকানদারেরাও ছুটি কাটাচ্ছিল, চার্চে যাচ্ছিল,
বাড়িতে বসে মুড়ি খেতে খেতে টিভি দেখছিল।
যা বুঝলাম,
সামনের তিনদিন এখানে অলিখিত রবিবার কাটাতে হবে। ভাগ্যিস ঘরে ইন্টারনেট আছে, না হলে
বাঁচা দুষ্কর হত।
ভালো লাগলো তো দেখে। বেশ হাত পা ছড়িয়ে কুঁড়েমি করে দুদিন কাটবে এই রকম একটা ফিলিং হোল ।
ReplyDeleteমিঠু
কুঁড়েমি বিশেষ হয়নি মিঠু, কিন্তু খুবই ভালো কেটেছে সময়টা।
Deleteঅলিখিত রবিবার k kaje lagan..ekta khub bhalo lekha pawar opekhhay roilam..
ReplyDeleteদেখা যাক সৌমেশ।
Deleteগ্রামে সরু সরু রাস্তা থাকতেই পারে। কিন্তু প্রতি বাড়িতে বারান্দায় লাল ফুল আর জানলায় দরজায় লেসের পর্দা - সিম্পলি ভাবা যায় না। তোমার চোখ দিয়ে গ্রামের বাড়ির এই সজ্জা আর তার উপকরণ! ফ্যান্টাস্টিক শব্দটাও আমার কাছে কম মনে হয়। এর পাশে আমাদের গ্রামের বাড়ী !
ReplyDeleteসত্যি, এদের এই ফুল দিয়ে সাজানোর ব্যাপারটা দেখে আমি মুগ্ধ মালবিকা।
Deleteঅলিখিতি রবিবার মন্দ কি? প্রচুর ছবি তুলবেন আর আমাদের সঙ্গে গল্প করবেন।
ReplyDeleteসেটা তো আমার কাছে স্বর্গের মতো হবে সুগত।
Delete'রাইনব্রাইটবাখ' jaigatar namta besh khatomato holeo jaigata mondo noi, lal phul ar tar jhuri - darun laglo.
ReplyDeleteযেমন খটমট নাম, তেমনি সহজসরল জায়গা ইচ্ছাডানা।
Deleteoi furniture ta theke ami chokh ferate parchi na.darun!
ReplyDeleteআমিও চোখ ফেরাতে পারছিলাম না টিনা। হাই ফাইভ।
Delete4 no chabita sabcheye sundar :-)
ReplyDeleteকী সুন্দর না? এমনি একটা ঝোপের মধ্যে মূর্তিটা রেখে দিয়েছে জানিস... যেমন তেমন করে।
Deletebah! haoa-badal :) amar pachando- parda :) chabi gulo besh bhalo hoechhe.
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ সায়ক। পর্দার ছবিটা ভালো লেগেছে জেনে এক্সট্রা খুশি হলাম, ওটাতে একটু কায়দা করার চেষ্টা করেছিলাম কি না।
Deleteকুন্তলা, এই আপনার ব্লগে এলেই আমি আট্কে যাই, জানেন। আজকেও সিরিয়ালি পোস্ট গুলো প্রায় এক ঘন্টা ধরে পড়ে উঠ্লাম। ঃ)
ReplyDeleteজার্মানি ভ্রমণ নিয়ে আরো কিছু গল্পগাছা হয়ে যাক। রাইনব্রাইটবাখ না হয় অজ পাড়াগাঁ, কিন্তু খোদ জুরিখের মতন শহরে রবিবারদিন টয়লেট পেপার শেষ করে যে কি ধর্মসঙ্কটে পড়েছিলাম সে আমি ই জানি।
আর রাইনব্রাইটবাখ নাম টাকে গোটা কয়েকবার রাইখেনবাখ পড়ে বেশ ফুর্তি পেয়েছিলাম।
ReplyDeleteএস জি, থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। আরে রাইনব্রাইটবাখ শুধু নয়, বন শহরেও রবিবার সব বন্ধ। কিন্তু টয়লেটপেপার ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাটা তো মাথায় আসেনি। কী সাংঘাতিক! এবার থেকে শনিবার ওটা চেক করে রাখতে হবে তো।
Deleteকেন, জুরিখে বা রাইনব্রাইটবাখে মগ আর জল পাওয়া যায়না বুঝি? (খুবই ইনোসেন্ট প্রশ্ন কিন্তু, কুন্তলা...)
Deleteজল পাওয়া যায়, কিন্তু মগ ডেফিনিটলি পাওয়া যায় না।
Deleteএ কি মগের মুলুক পেয়েছ কৌশিকদা? :-)
Deleteহাহাহা, ভালো বলেছ পিয়াস।
Delete"জল ছিল মগ ছিল না" :'( , কৌশিকদা,সব ই পাওয়া যায় হয়ত, কিন্তু এক্ষেত্রে রবিবার শব্দটি লক্ষণীয়।
ReplyDelete